ভালোবাসি হয়নি বলা পর্ব ৩৫

#ভালোবাসি হয়নি বলা
#সাদিয়া নওরিন

পর্ব— ৩৫

মেহেদী আর আরাফ বসে বসে নিজেদের ডান্সের প্ল্যান করতে লাগলো. হার তারা মানতে পারবে না…. হঠাৎ হাসনাত ধুপ করে তাদের সামনে বসে ব্রু কুঁচকে তাকলো তাদের দিকে !!!
মেহেদী হালকা মাথা উঁচিয়ে বলল– আপনি এখানে কেন ভাই? আপুর পাশে বসুন..
হাসনাত হতাশজনক লুক দিয়ে বলল– তোদের হার দেখার জন্য??
ইফতি কাচুমাচু করে বলল– ভাই,, ওরা চিটিং করে ভাই… ওরা খারাপ..
হাসনাত ডোন্টকেয়ার ভাব নিয়ে বলল– তো মুড়ি খা তুই.. ওদের থেকে শিখ কিছু…. তোরাও করবি…
মেহেদী মাথা দোলিয়ে বলল— সেইটারই প্ল্যান করেছি আমি…
আরাফ মুখ কুঁচকে বলল– আমি কোন ধরনের টাচ এ নাই.. আমার ভাল লাগে না এইসব..
ইশান অধৈর্য ভঙ্গিতে বলল– কিন্তু আরাফ…
আরাফ মাথা ঝাকিয়ে ওঠে চলে গেল… হাসনাত চিন্তায় পড়ে গেল….

রোদেলা অনেক্ষন ধরে মুনিরাকে বুঝিয়ে চলেছে.. কিন্তু মুনিরার একটাই কথা.. সে এইসবের মধ্যে নাই.. শেষে আশা ছেড়ে দিল রোদেলা!!!

দুইজন পাশাপাশি মুখে মেকি হাসি ঝুলিয়ে বসে আছে ঠিকই কিন্তু শুধু তারাই জানে তাদের ভিতরে টেনশনে অবস্হা কতোটা খারাপ.. হাসনাত বারবার ঢুক গিলে রোদেলার দিকে তাকাচ্ছে.।। হারার পর রোদেলা তার কি নাম দেয় আল্লাহই জানে।। আকাশ বাতাশ না রাখলেই হয়!!!! মেয়েটার কোন বিশ্বাস নেই!!!কেন যে এমন চ্যালেন্জ করেছে সেইটা নিয়ে আপাতত দুঃখ হচ্ছে তার…

tere samne ajanese mere dil kiu daraktihe,,,
eia galti nehihe tera , kasor najarka he…
jis batko tera darhe,, wo karke dekadogga….

(মেহেদী মাহিয়ার দিকে তাকিয়ে ঠোট নেড়ে নেড়ে গান করতে লাগলো.. আর মাহিয়ার হাত ধরে ডান্স করতে করতে হাতে স্লাইড করতে লাগলো…মাহিয়ার অন্যরকম অনুভব হচ্ছে.. এ অনুভূতি তার কাছে নতুন.. সে নিজের স্বাভাবিক করার প্রানপন চেষ্টা চালাচ্ছে)

ase na moje tom deko,, sinece lagalogga,,,
tomce coralogga tomce…dilme copalogga..)

( মেহেদী নাচের তালে তালে মাহিয়ার চোখের দিকে স্হির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো.. মাহিয়া বারবার চোখ সরিয়ে নিতে নিতে শেষে মেহেদীর চোখের নেশায় ডুবে গেল সে আর এতে পা পিছলে গেল তার.. আর সোজা মেহেদীর বুকে আছড়ে পড়লো … আর এইভাবেই হেরে গেল সে)

এখন খেলা ড্র.. মুনিরা আর আরাফের ডান্স হবে এখন.. রোদেলা টেনশনে দাত দিয়ে নখ কাটছে!! মনে হচ্ছে তাকে কেউ দুদিন ধরে কিছুই খেতে দেয় নি… হাসনাত স্হির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মঞ্চের দিকে!!!

(asmape jese badal.horahihe,,
hum deere deere deere pagol.ho rahi he…2..

me to marjana hai
owwo na jo milne aiya,,,..2..
sasome bas jatihe vooo,,

yaad priya ki…o mere priya ki lagi.
hi vigi vigi ratome…)(

নিজেদের মধ্যে সামন্জস্য রেখে নাচছে তারা. এবং এতে খেলা ড্র হয়ে গেল…

কেউ কেউ হতাশ হলেও কারো রাগ ওঠলো না রেজাল্ড দেখে।। আরাফ মুনিরাকে চোখ টিপ দিয়ে দিল… মুনিরা হেসে আরাফের দিকে তাকিয়ে বলল– তোমার প্ল্যান সাকসেসফুল ভাইয়া।। আরাফ মুচকি হেসে দিল…

রোদেলা মুখ বাঁকিয়ে বলল– হু.. আমরাই জিততাম.. মেহেদী চিটিং করেছিল… হাসনাত মুখ ভেঙ্চিয়ে বলল– দেখ কথাটা কে বলছে.. স্বয়ং চিটিং রানী…

রোদেলা রেগে তেড়ে বলল– কি?? আমি চিটিং রানী.. নাক ফাটিয়ে দিব তোমাকে কালো বান্দর কোথাকার…
হাসনাত দাড়িয়ে কোমড়ে হাত গুঁজে বলল– কি.. স্বামীকে সম্মান কর না!!!! বেয়াদব মেয়ে।। হ্যাসবেন্ড হয় আমি তোমার…
রোদেলা মুখ ভেঙ্চিয়ে বলল– হ্যাসবেন্ড না.. বল হাল্ফ পেন্ট হও তুমি আমার…

কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুাইটার মাঝে হাতাহাতি লেগে গেল.. মায়া ও মিতা এসে দুইজনকে আলাদা করে দুইজনকে দুই রুমে বন্ধি করে রাখলো..ভয়ে তাদের গা কাঁপছে…
হাসনাত সেখান থেকে চিৎকার করে বলল– গর্দভ, গাধা মেয়ে.. কি সব বলে… তোলে আছাড় দিতে মন চায় আমার….
রোদেলা আরো তীব্র গর্জে বলল– তোমাকে চাইনিজ কুড়োল দিয়ে ফালাফালা করে ফেলবো আমি হাসনাত আরিয়ান…

হাসনাত — ওপেন ট্রেট দিচ্চিস.. দেখি সামনে আয়.. কার গায়ে কতো জোর দেখবো আমি…
রোদেলা—- ট্রেটের আর দেখেছো টা কি.. তোমাকে বার্বিকিউ সিকে গেঁথে আগুনে ঝলসে খেয়ে নিব আমি…

শামীম আর হিমেল বেকুবের মতো গালে হাত দিয়ে বসে আছে.. এগুলো কি আদো মানুষ।। নাকি বনের পশু তিনি কনফিউস্ট।। এমন সিরিয়াল কিলার তার বাসায় আছে ভাবতেই শামীম শিউরে ওঠলো…

হিমেলের যেন মাথায় কাজ করছে না।। বাইরে মেয়ে ছেলেরাও নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব করছে কার বেশি দোষ সেইটা নিয়ে…

শেষে শামীম চিৎকার করে বলল— বিয়েটা ক্যান্সেল করে দিলাম আমি..এমন কুকুর বিড়ালের মতো স্বামী স্ত্রী হওয়ার চেয়ে একা থাকা ঠের ভাল।।

সাথে সাথে দুইজন চুপ.. শুনশান নিরবতা বিরাজ করছে চারদিকে.. যেন সবাই কথা বলা ভূলে গেছে…
হাসনাত আমাতাআমাতা করে বলল– আন্কেল আমার কোন ছোট বোন নেই তো.। আর কোন শালীও নেই তাই ওকে শালী আর ছোট বোন ভেবে জালায় একটু…

শামীম হিমেলের দিকে তাকালো.. হিমেল পরম আফসুসে মাথা দোলাল.. এই ছেলেটা পাগল হয়ে গেছে.. শেষে কিনা তার বংশের বাতিটা পাগল হয়ে গেল!!!
শামীম গলা খাকিয়ে বলল– সানিয়া মুনিরা… তো ওরা তোমার কে??
হাসনাত নিজে বলে নিজেই আফসুস করছে..কি সব বলছে সে যা তা.. শেষে তার বিয়েটাই ক্যান্সেল হয়ে যাবে এইসব আবোলতাবোল কথায়…. সে তাড়াতাড়ি বলল– ওরা তো আমার বোন…

রোদেলা অন্যরুমে বসে সব শুনছে.. এই ছেলে তাকে ডুবাবে.. এইসব বলে শেষে বিয়েটাই দিবে না তার বাবা.। যা করার তাকেই করতে হবে…

সে গলা খাকিয়ে বলল– ওগো,, ওগো আমার প্রানের স্বামী… আমাকে ক্ষমা কর গো…
হাসনাত অবাক হয়ে শুনছিল.. ভূতের মুখে রাম জপ শুনে সে কনফিউস্ট!!! হঠাৎ তার মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল– এই নটাঙ্কিবাজ,,, এই নাটক কোথা থেকে শিখলি রে…

সাথে সাথে নিজের মুখে হাত দিয়ে দিল সে… ইশ্ কি বলল সে.. সে তাড়াতাড়ি বলল– শশুর ফাদার,,, আমি তেমন মিন করিনাই গো….

হিমেল পরম আক্ষেপের সাথে বলল– দুইটাকে পাগলাগারদে পাঠিয়ে দে.. আর পরশু কোন বিয়ে হচ্ছে না….
রোদেলা আর হাসনাতের মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়লো… রোদেলা কাদতে কাদতে বলল— যখন কোন কিউট প্রিন্সেস তার গাধা প্রিন্সকে বিয়ে করতে পারবে না শুনে তখন সে টুপ করে মারা যায় বাবা…
হাসনাত ও সুর মিলিয়ে বলল– হু.. আর তখন সেই গাধা প্রিন্সটা সেই বেকুব প্রিন্সেস ছাড়া বাচতে পারে না…

শামীম হিমেলের দিকে তাকালো… এগুলো কোন দেশি প্রপোজাল.. সে হতাশ স্বরে বলল– যাই হোক কোন গাধা আর বেকুবের বিয়ে দি না আমি… হিমেল তোর গাধাটাকে নিয়ে যা…

চলবে…

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here