#মাতোয়ারা
#পর্ব_১০
ইরিনের জন্য কি কেনা যায়? কি কেনা যায়? চিন্তা করতে করতে আমি অস্থির । মনে হলো কারও সাথে পরামর্শ করলে ভালো হয়। আর তখনই আমার মনে হলো, মারপিট আর রাজনীতি করে করেই দিন কেটেছে আমার। নিজের সমস্যা শেয়ার করা যায়, এমন কোনো বন্ধুই তো নেই আমার। জীবনে এই প্রথম একজন বন্ধুর খুব দরকার মনে হলো। বন্ধু বিষয়টা যে কত জরুরী সেই মুহূর্তে টের পাচ্ছিলাম খুব।
বাধ্য হয়ে ইরিনকেই ফোন করলাম।
ইরিন ফোন ধরেই বললো,
—আমি জানতাম আপনি এখন ফোন করবেন।
—তুমি জানতে আমি ফোন করবো?
—হুঁ।
—কিভাবে জানতে?
—জানি, ব্যস জানি…বলবো না। আমার লজ্জা করছে।
আমি সোজা প্রসঙ্গে চলে গেলাম।
—তোমার কি কিছু লাগবে ইরিন?
—কিছু লাগবে মানে? জিনিসপত্র?
—হুঁ সেরকমই…
—লাগবে তো…. আপনার কাছে পেন আছে না? একটু লিখে ফেলুন।
—লিখে ফেলবো?
—হুঁ। লিখুন, নাহলে মনে থাকবে না।
—-তুমি বলো ইরিন।
—-ওকে লিখুন, একডজন কলম, দুটো খাতা, একটা ক্যালকুলেটর, আগেরটা মাঝে মাঝে লিখা চলে যায়… একটা শ্যাম্পু কালো রংয়ের, একটা পাপোশ নীল রংয়ের, একটা মাকড়সার ঝুল ঝাড়ন লম্বা ডাটের আনবেন। আমি তো আর আপনার মত লম্বু না। একটা লাল হিট, কালোটা না। কালোটায় লুকানো তেলাপোকা মরে না। দোকানীকে বলবেন লাল হিট… একশ পঁচাত্তর টাকা নেবে। একটা গুড নাইট, যেটা কারেন্টে লাগালে চলে… একটা মিনি শেলফ, একটা পেনস্ট্যান্ড।
আমি ফোনের লাইন কেটে দিলাম। এই মেয়ে বদ্ধ উন্মাদ। এর সাথে কথা বলার কোনো মানে হয়না।
সাথে সাথেই দেখলাম ইরিন কলব্যাক করেছে।
—কি ব্যাপার বলুন তো? কল ড্রপ করলো না আপনি কেটে দিলেন? এঁই এঁই.. টাকা নেই বুঝি… আমি তো বুঝি, টাকা থাকবেই বা কোথা থেকে? আমার তো তাও দুটো টিউশনি আছে। আপনার তো কিছুই নেই… আছা থাক, পকেটের টাকায় যা হয় তাই নিয়ে আসবেন…
আমি নিশ্চিত, ইরিন যদি তখন আমার সামনে থাকতো, শিওর আমার থাপ্পড় খেতো। ভাগ্যিস সামনে ছিলোনা।
এই মেয়ে শ্রেয়ান চৌধুরীকে টাকা দেখায়… আরে শ্রেয়ান চৌধুরী টাকায় ঘুমানো মানুষ। বিল দেখে এই শ্রেয়ান চৌধুরী কোনোদিন কোনো জিনিস কিনে নি।
আমি ইচ্ছে করেই ইরিন যা বললো, তা সবকিছু তিনটে করে কিনে নিয়ে গেলাম।
বাড়িতে যেতেই মা সব জিনিসপত্র দেখে বললেন,
—এতগুলো ঝুল ঝাড়ন দিয়ে আমি করবোটা কি? তোর কি হয়েছে বলতো বাবু?
—এগুলো ইরিনের মা, ও চেয়েছিলো।
—ইরিন তিনটে শেলফ দিয়ে কি করবে? ক্যালকুলেটরও তিনটে? তিনটায় কি তিনরকম হিসেব হয় নাকি?
মা আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলেন। আমি চট করে মায়ের সামনে থেকে সরে পড়লাম।
সারা সন্ধ্যারাত নিচের ঘরে থাকলাম। খাওয়ার টেবিলে ইরিনের সাথে দেখা।
—আপনি কই ছিলেন বলুন তো?
—কেন? বাড়িতেই তো!
—আমি তো ভাবলাম ফিরেন নি। কাউকে দিয়ে জিনিসপত্রগুলো পাঠিয়ে দিয়েছেন। কখন ফিরলেন? ওহো… আপনি সব জিনিস এত বাড়িয়ে কেন নিয়ে এসেছেন বলুন তো?
তারপর মায়ের দিকে তাঁকিয়ে বললো,
—-আন্টি খুব বকলেন আমায়। বলুন আন্টি, আপনি আমাকে কি কি বলে বকেছেন?
মা পানি খাওয়ায় ছিলেন। বিষম খেয়ে গেলেন।
—কখন বকলাম?
—ওই যে তখন। বললেন না, তুমি ছেলেটাকে পেয়েছো কি? ফতুর করে ফেলবে নাকি? এত বেহিসেবী কেনো তুমি?
আমি প্রসঙ্গ পাল্টাতে বললাম,
—তুমি সব জিনিস ঠিকঠাক পেয়েছে তো ইরিন?
—হুঁ, সব তিনটে করে। জানি তো, একটা করে মায়ের জন্য, একটা করে আমার জন্য, আরেকটা আপনার জন্য।
আমি গম্ভীর কণ্ঠে বললাম,
—এগুলো সবগুলোই তোমার জন্য ইরিন। আমার বা মায়ের এসব লাগবে না।
ইরিন আমার পাতে ভাত বাড়তে বাড়তে বললো,
—আপনাকে টাকার খোটা দিয়েছি বলে রাগ করেছেন? আসলে আপনি তো কিছু করেন না। ছাত্র মানুষ। আমি ভাবলাম হয়তো সাথে অত টাকাও নেই..
আমার মেজাজ সপ্তমে চড়ে গেলো। চেঁচিয়ে বললাম,
—-তুমি হয়তো জানো না ইরিন, আমাদের একটা ফ্যামিলি বিজনেস আছে, ফেব্রিকের। আমার বাবা সেটা যথেষ্ট ভালো পর্যায়ে রেখে গেছেন। অর্থনৈতিকভাবে আমার পরের তিন জেনারেশনও অনায়াসে খেয়ে পড়ে যেতে পারবে।
—বাবার তো? বাবার বিজনেসে কি আপনার কোনো কন্ট্রিবিউশান আছে?
—কন্ট্রিবিউশানের কোনো দরকারই নেই। যেটা বাবার, একমাত্র ছেলে হিসেবে সেটা আমার…
মা ইরিনকে চোখ ইশারায় থামতে বললেন।
ইরিন সেই ইশারার কোনো তোয়াক্কা করলো না। বরং গলার জোর বাড়িয়ে বললো,
—যেটা বাবার সেটা বাবারই। যেমন, আমার বাবা জনতা ব্যাংকের পিয়ন, বেতন ষোলো হাজার টাকা। এছাড়াও লাঞ্চ পান, আরো কিছু। তাই বলে এটা কি আমার টাকা হয়ে গেলো? হয়নি তো? ওখান থেকে বাবা আমাকে মাসে মাসে হাতখরচা দেন, আমি নিই। কিন্তু টাকার নামটা কি? সেই হাতখরচার নামটা কি?
মা কৌতূহলী গলায় জিজ্ঞেস করলেন,
—হাতখরচার আবার নামও আছে?
—হুঁ আছে আন্টি। সেই হাতখরচার নাম হলো, বাবার দেওয়া পকেট মানি! এখানে নিজের কি নাম আছে? বলুন আমার কি নাম আছে?
মা গম্ভীরমুখে বললেন,
—তোমার বাবার টাকায় তোমার নাম থাকবে কেন?
—এক্সাক্টলি। তেমনিভাবে আপনার বাবার রেখে যাওয়া বিজনেসের কোনো টাকায়ই আপনার নাম নেই। একদমই নেই… আমার যেটা, সেটা শুধু আমার। এখানে জামা আমার, পায়জামা তোমার। এরকম কিছু নেই। আপনার জীবন আপনার, বাবার জীবন বাবার। বাবার বউ বাবার, আপনার বউ আপনার।
মা আবার বিষম খেয়ে ফেললেন।
ইরিন মায়ের পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
—আন্টি, কোথায় মনোযোগ দিয়ে খান বলুনতো? এই নিয়ে দু-বার বিষম খেলেন। আমি তো শিওর আরেকবার গলায় ভাত বাঁধবে আপনার।
মা একাধারে কাশতে লাগলেন।
আমি একবার ভাবলাম, খাবার ফেলে উঠে যাই। পরে ভাবলাম ইরিনের কথায় রাগ করার কোনো মানে হয়না…
মায়ের বিষম থামতেই, ইরিন আগ্রহী গলায় বললো,
—আন্টি আমি কিন্তু আজকে তিনটা রোস্ট আর তিনটা ডিম নিবো; আজকে আমার “তিন দিবস”! আপনার ছেলে আর আমি খুব শীঘ্রই তিন হবো।
মা আবার বিষম খেলেন।
ইরিন আবার উঠে গিয়ে মায়ের পিঠে হাত বুলালো।
—বলেছিলামনা না আন্টি, আপনি আবার বিষম খাবেন। খেলেন তো!
রাতে শোবার আগে ঘরে এলাম। আমার মনে মনে চলছে আজ আর একঘরে শোবো না। এত অপমান যে আমায় করেছে, তার সাথে এক কামড়ায় বাস অসম্ভব। আমি আস্তে আস্তে নিচের ঘরে শিফট করে যাবো।
ঘরে ঢুকে দেখলাম ইরিন মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে বাচ্চাদের মত করে পড়ছে। গায়ে আমার টি-শার্ট। তাও একটু করে পেটের উপরে তুলে গিট দেওয়া। নাভি বেড়িয়ে আছে। পায়জামা হাঁটু অবধি তোলা। চুল উপরে করে খোঁপা করা, গলায় ভিজে গামছা।
আমি ভাবলাম কথা না বলে চলে যাই।
ইরিন ফট করে ডাকলো।
—কি জনাব, আমার উপর রেগে গেছেন? টিশার্ট পরেছি বলে? হু? হু?
ইরিন এগিয়ে এসে আমার সামনে দাঁড়ালো। আমার কথা না শোনা চোখ বারবার ইরিনের পেটের দিকে চলে যাচ্ছিলো। নাভির ডানপাশে একটা গাঢ় কালো তিল, যাস্ট মাথা ঘুরিয়ে দেয়া।
—রাগ করেছেন, ভালো কথা। সেটা পেটে রাখতে পারেন না.. মুখ ফুলিয়ে সেটা আমাকে দেখাতে হবে নাকি?
—আমি রাগ করিনি ইরিন।
—তাহলে মুখ এমন গম্ভীর কেন? হাসি হাসি নয় কেন? ভাত খাবার সময়ই আমি বুঝতে পেরেছি, জনাব রেগে গেছেন…
—আশ্চর্য! আমি রাগ করবো কেন? তাছাড়া আমার রাগ এত ফালতু ব্যাপার নয় যে, যখন তখন রাগ করবো…
—তো, মুখের হাসিটা উবে গেলো কেন?
—আমি সবসময় হাসি না ইরিন।
ইরিন বই বন্ধ করে রেখে এসে বিছানায় বসলো,
—জোক্স শুনবেন? জোক্স শুনলে হাসি পাবে… বলি?
—আমি হাসবো না এবং জোক্স শুনবো না, ঘুমোবো। তুমি পড়ছিলে না?
—আরে… আমার ব্রেইন ভালো। সারা রাত আছে; পড়ে নেবো…
ইরিন আমার হাত ধরে টেনে বিছানায় বসিয়ে দিলো।
—একটু অশ্লীল জোক্স। তবে আপনাকে অশ্লীল জোক্স বলা যায়… আপনি তো সব বুঝেনই তাই না?
ইরিন চোখ টিপলো।,
আমি নার্ভাস ফিল করতে লাগলাম।
—এটা কিন্তু বাসর রাতের জোক্স।
আমি সাথে সাথেই উঠে দাঁড়িয়ে পড়লাম। ইরিন আবার টেনে বসিয়ে দিলো।
—শুনুন, বিয়ের রাতে বর বাসর ঘরে বউয়ের কাছে গেছে। বউ বিছানায় লম্বা ঘোমটা টেনে বসে আছে। বর আস্তে করে বউয়ের ঘোমটা তুললো। বউ তো লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছে। বর যেমনি বউয়ের থুতনি ধরতে গেলো বউ পেছন সড়ে গেলো। বর এগোয়, বউ পেছোয়। বর আরো এগোয়, বউ পেছোয়…
ইরিন পুরো ঘটনা অভিনয় করে দেখাচ্ছে।
—-বর একসময় খপ করে বউকে ধরে ফেললো। বউ তো লজ্জায় মরি মরি….
ইরিন আমায় হুট করে জড়িয়ে ধরলো, আমি হাত ছাড়িয়ে দিলাম।
—স্টপ ইট ইরিন, আমি যাচ্ছি। নিচের ঘরে শোবো আজ…
—শোবেনই তো। আর একটুই বাকি জোক্সটার.. প্লিজ একটু বাকি… একটু…
ইরিন হাত দিয়ে চিমটি মতন দেখালো।
আমি অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বললাম,
—ওকে…
—তো বউকে জড়িয়ে ধরে বর বললো, জানপাখি, তুমি কেন শুধু শুধু ভয় পাচ্ছো? আমি তো তোমাকে শুধু আদর করতে কাছে এসেছি। আজ সারারাত আমি তোমায় আদর করবো, পৃথিবীর সেরা আদর। বউ চোখ খুললো এবার বললো, ও…তাই? বর গদগদ হয়ে বললো, হু তাই। আদর করতে করতে তোমায় আমি ভিনদেশে নিয়ে যাবো। অন্য পৃথিবীতে নিয়ে যাবো। বলো তুমি কোথায় যাবে, চাঁদে নাকি মঙ্গলে? জবাবে বউ বললো, আপনি কোনটায় নিয়ে যাবেন সেটা তো আপনি বলবেন। বর বললো, না, না বউ তুমি বলো। বউ তখন কি বললো জানেন?
ইরিন আমার দিকে চোখ বড় করে তাঁকিয়ে আছে। আমি না সূচক মাথা নাড়লাম।
—জানেন না তো, আমি বলছি… বউ তখন মাথা চুলকে লাজুক কণ্ঠে বললো, আপনি চাঁদে নিয়ে যেতে পারবেন নাকি মঙ্গলে নিয়ে যেতে পারবেন, সেটা তো আমি আপনার রকেট না দেখলে বলতে পারবো না৷ হিহিহি রকেট, রকেট বুঝলেন তো?
ইরিন হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আমার কান দিয়ে গরম ধোঁয়া বেরুচ্ছে তখন। এই মেয়ে তো আমার কল্পনার বাইরের সাবজেক্ট!
ইরিন অনেক কষ্টে নিজের হাসি থামালো। থামিয়ে আমার কাঁধে চাপড় মেরে বললো,
—আপনি হাসলেন না কেন? রকেট ব্যাপারটা বুঝেননি? নাকি এখনো রাগ?
আমি জবাব না দিয়ে ‘থ’ হয়ে বসে আছি।
ইরিন গান ধরলো,
“অলিরও কথা শুনে বকুল হাসে…
কই! তাহার মত তুমি আমার কথা শুনে… কভু হাসো না তো….
আমি বিড়বিড় করে বললাম,
—ইরিন, তুমি খুব ভালো গান গাও। গানটাকে সিরিয়াসলি নিচ্ছো না কেন?
—ধুর, গান সিরিয়াসলি নিলে পড়াশোনা হবে না। আগে পড়াশোনা, তারপর বাকি সব….
—মানে, আজকাল তো অনেকেই গানটাকে সিরিয়াসলি নিচ্ছে….
—নিক। কিন্তু আমি নেবো না। আমি বুদ্ধিমতী। আমি জানি কোনটা আগে করতে হয়।
—মানে?
—মানে হলো, আচ্ছা দাঁড়ান। আপনাকে এক্সাম্পল দিয়ে বুঝাই। আপনি বলুন তো, যখন আপনার প্রচন্ড ক্ষুধা পায় আর তখন রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে প্রথমে আপনি কি খান, মানে কোনটা অর্ডার করেন? মেইন কোর্স না ডেজার্ট?
—অবশ্যই মেইন কোর্স… ডেজার্ট তো না হলেও চলে।
—গুড, এটাই তো। ভালো জীবনের জন্য পড়াশোনাটা হলো মেইনকোর্স আর বাকি সব ডেজার্ট। নাচ, গান, খেলা… সব.. আপনি যদি ভালোভাবে পড়াশোনাটা করে নেন তাহলে ডেজার্টটা তখন আরামসে বানাতে পারবেন। ধরেন আমি যদি ভালো একটা চাকরি করি, তারপর গান গাইলে নো টেনশান। ক্লিক করলেও ভালো না করলেও, আই হ্যাভ দ্য জব; বেবি! পড়াশোনা হলো জীবনটাকে আরামে রাখার সহজ উপায়। বিষয়টা কি ক্লিয়ার?
আমি ভেবেছিলাম আলাদা ঘরে শোবো। ঠিক তক্ষুনি মনে হলো, নাহ্! এঘরেই শুই…
ইরিন মুখের সামনে আবার বই ধরলো।
আমি বিড়বিড় করে বললাম,
—শুভরাত্রি ইরিন।
ইরিন বোধহয় সেটা শুনলো না কারণ চেঁচিয়ে বললো,
—আপনার পড়তে ইচ্ছে করে না? পড়লে তো ওই নোটওয়ালীর কাছে ধরা খেতেন না।
আমি ঢোঁক গিললাম। আবার “রিয়া” কেন?
ইরিন বই রেখে আবার আমার বিছানায় এসে বসলো।
—এবার আমি আপনার জন্য এমন একটা জিনিস এনেছি যেটা কোনোভাবেই ছোট হবে না।
—কখন আনলে আবার?
—আপনি বেরিয়ে যাবার পর বাইরে গেলাম আরেকবার। সব এত বেসাইজ হলো আপনার। আমার মন খারাপ লাগছিলো খুব।
আমি উঠে বসলাম।
—কি সেটা?
ইরিন উঠে গিয়ে প্যাকেট আনলো।
—এই যে লুঙ্গি। লুঙ্গি ছোটো হবার কোনো চান্সই নেই। হা হা…
—আমি লুঙ্গি পরি না ইরিন।
—এখন থেকে পরবেন, আপনার রকেট আরাম পাবে।
আমি বিস্মিত চোখে তাঁকিয়ে আছি।
ইরিন লুঙ্গির ভাঁজ খুলতে খুলতে বললো,
—এখন থেকে আমি বেতন পেয়ে প্রতিমাসে আপনাকে একটা করে লুঙ্গি কিনে দেবো।
আমার সেই মুহূর্তে মনে হচ্ছিলো এই পৃথিবীর ভেতরেই আরেকটা পৃথিবী আছে। অনুভূতির তরঙ্গ বোঝাই সেই পৃথিবীর নাম “ইরিন”, যে বাকি পৃথিবীটার কোনো তোয়াক্কা করে না।
(চলবে)
#তৃধা_আনিকা
বি:দ্র: কাল থেকে নতুন পর্ব যাবে। তবে নতুন পর্ব প্রতিদিন পাবেন না। ধইন্নাবাদ। 😑