#রঙধনুর_রঙ_কালো(৪)
***********************
মিলা যেন তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে । আমার পেছনে লোক লাগিয়েছো তুমি?
না, অতোটা নীচে নামতে পারিনি এখনো । তুমি এই লোকের সাথে আর কোনো যোগাযোগ রাখতে পারবে না । এই বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না আমি ।
তুমি না করার কে?
আমি না করার কে মানে! আমিই তোমাকে না করবো । আজকের পর আর কোনো যোগাযোগ না । গান করবে তুমি? কেনো অসুবিধা নাই, করো । কোথায় কোথায় যেতে হবে বলো আমি যাবো । তবু ঐ খারাপ লোকের থেকে দুরে সরে আসো মিলা । লোকটা ভালো না ।
তোমার সার্টিফিকেট নিয়ে আমাকে মিশতে হবে নাকি?
হ্যাঁ, আমার সার্টিফিকেট নিয়েই তোমাকে মিশতে হবে ।
এসব ফালতু কথা শোনার একদম মুড নাই এখন। সাইফের সাথে আমার একটা সম্পর্ক তৈরী হয়েছে । আর এটার জন্য আমি মোটেও কোনো অপরাধবোধে ভুগছি না । শুধু বুঝতে পারছিলাম না, তোমাকে কীভাবে জানাবো । তুমি নিজেই যখন কথা তুলেছো তখন তো সব পরিস্কার হয়েই গেলো ।
মিলা, তুমি ঠিক আছো তো? তোমার মাথা খারাপ হয়ে যায়নি তো? বুঝতে পারছো কী বলছো তুমি?
আমি বুঝেই সব কথা বলছি । এই তুমি তো বিয়েই আগে এমন ছিলে না, ছিলে বলো? বিয়ের পর থেকে তোমার কারণে আমার সব স্বপ্নগুলো চাপা পড়ে গেছে। সারাক্ষণ শুধু বাচ্চা আর বাচ্চা ।
মিলা, বাচ্চাগুলো তোমারও!!
বাচ্চা চেয়েছো, বাচ্চা দিয়েছি । আমার কথা কী কখনো ভেবে দেখেছো আমি কী চাই?
আমি সত্যি বুঝতে পারছি না তুমি আসলে কী বলতে চাইছো । আমাদের বাচ্চাদের নিয়েই তো আমাদের পৃথিবী । আমার তো কখনো এর বাইরে কোনো কিছুই চাওয়ার ছিলো না । আমি তো বুঝিনি তুমি যে অন্য কিছু চাও ।তোমাকে গান ছাড়তে বলেছি আমি? আর তোমার কোনো কাজে কখনো বাধা দিয়েছি আমি? তাহলে এসব কথা আসছে কেন?
বলতে হবে কেন? আমার স্বপ্নগুলো তুমি জানতে না বলো?
আমি আলাদা করে তোমার স্বপ্ন নিয়ে কিছু চিন্তা করিনি মিলা । আমি আমদের পুরোটা নিয়ে সবসময় ভেবেছি । কীভাবে বাচ্চাদের সাথে নিয়ে আমাদের পৃথিবীটা সাজাবো সেই স্বপ্নই দেখেছি সবসময়। আচ্ছা ঠিক আছে যাও, আমার অন্যায় হয়েছে । এখন থেকে তোমার চাওয়া গুলোই আমার চাওয়া । তবু তুমি এমন অলক্ষুণে কথা বলো না মিলা প্লিজ । বাচ্চারা আছে পাশের রুমে । ওরা এগুলো শুনলে কী ভাববে বলতো ।
আমার কিচ্ছু যায় আসে না ।
অবশ্যই তোমার যায় আসে । এরচেয়ে বেশী আর বাড়তে চেয়ো না বলছি ।
ভয় দেখাচ্ছো? মারবে আমাকে?
মিলা!! আমি তোমাকে ভালবাসি । আমাদের বাচ্চারা তোমাকে ভালবাসে । এসব কী মাথায় আছে তোমার?
ধ্যাত, সারাদিন পর ফিরে কী সব ঘ্যানর প্যানর কথাবার্তা । যথেস্ট হয়েছে, আর ফালতু কথা বলার ইচ্ছে নেই একদম । তোমাকে সোজা বাংলায় একটা কথা বলছি, মন দিয়ে শোনো, আমি আর সাইফ একটা রিলেশনের মধ্যে আছি । আমি আমার নিজের মতো করে সাইফের সাথে থাকতে চাই।
মামুনের মাথায় যেন আগুন ধরে যায় হঠাৎ । জোরে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে মিলাকে ধাক্কা দেয় । মিলা যেয়ে বিছানার ওপর পড়ে যায় । মিলা উঠে এসে ততটাই জোরে ধাক্কা দেয় মামুনকে । মামুন পাশে রাখা চেয়ারসহ পড়ে যায় মেঝেতে । ঘটনার আকর্ষিকতায় বোকা হয়ে যায় একদম । ওভাবেই বসে কেটে যায় কতগুলো মুহূর্ত । মিলাও চুপ করে বসে থাকে বিছানায় । কতোটা সময় পার হয়েছে বুঝতে পারে না মামুন । পূর্বার ডাকে সম্বিত ফিরে পায় । বন্ধ দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে বাচ্চাটা । কিছু কী শুনলো ওরা, নিজের মনেই কথা বলে মামুন । দরজা খোলার আগে শুধু বলে, নিজেকে শুধরে নাও মিলা । খবরদার আমার বাচ্চারা যেন এই কান্ড জানতে না পারে ।
দরজা খুলতেই ছুটে এসে মিলাকে জাপটে ধরে পূর্বা, মা কী হয়েছে তোমাদের? তোমরা এতো জোরে কথা বলছো কেন?
পূর্বার হাতটা নিজের শরীর থেকে সরিয়ে দেয় মিলা । যাও পড়তে বসো, এখানে এসেছো কেন তুমি?
আমি তো আওয়াজ পেয়েই আসলাম । তোমরা কী ঝগড়া করছিলে বাবা?
মামুন সাথে সাথে মেয়েকে টেনে নেয় কোলে । না মা, ঝগড়া করবো কেন? এই একটু অফিসের কথা বলছিলাম।
কিন্তু আমি যে শুনলাম বাবা ।
যাও মা পড়তে বসো । আচ্ছা চলো তো দেখি তোমার পড়ার কী অবস্থা । মামুন পূর্বার হাত ধরে বেরিয়ে যায় রুম থেকে । যাওয়ার আগে কটমটে চোখে একবার তাকায় মিলা’র দিকে ।
রাতে আর কোনো কথাই হয় না মিলা মামুনের । পরদিন অফিস যাওয়ার জন্য একসাথেই বের হয়। মিলাকে নামিয়ে নিজের গন্তব্যে চলে যায় মামুন । তবে কাজে একদম মন বসে না । সারাদিন অস্থিরতার মাঝে কাটে মামুনের । এ কী জটিলতার মধ্যে পড়লো সে? মিলা কেন এমন করছে? ঐ খারাপ লোকটা কী মিলাকে কোনো কিছুর জন্য ব্ল্যাকমেইল করছে? আজ মিলা’র সাথে ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে হবে । মিলা ছাড়া তার পৃথিবী, ভাবা যায়! এই যে এতো সুন্দর করে সাজানো তার পৃথিবী, এতো সহজেই নষ্ট হতে দেবে সে? কক্ষনো না । কাজে মন দেয়ার চেষ্টা করে মামুন। দিনটা এলোমেলো ভাবনাতেই কেটে যায় । কোনো কাজ আর হয়ে ওঠে না সেদিন ।
ফেরার পথে মামুন নিজেই প্রথমে কথা বলে । মিলা একটু পরে বাসায় যাই । চল কোথাও একটু বসি । মিলা উত্তর দেয় না । মামুন গাড়ি ঘোরায় বনানীর দিকে । রেস্টুরেন্টে ঢুকে কোনার দিকের নির্জন জায়গাটায় যেয়ে বসে ওরা । কাঁচের বাইরে দিয়ে দেখা যাচ্ছে প্রচুর যানজট তবে পুরু কাঁচ ভেদ করে শব্দ পৌঁছাতে পারছে না ওদের কাছে । মামুন আলতো করে মিলা’র হাতটা ধরে থাকে –
মিলা কাল রাতে যা কিছু হয়েছে চল আমরা দু’জনেই সব ভুলে যাই । অমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি কাল । আমি ভুলে গেছি, প্লিজ মিলা তুমিও ভুলে যাও । কোনো জটিলতা থাকলে আমরা কথা বলে তার সমাধান করে নেবো । মিলা তুমি শুনছো আমার কথা? হাতটা ধরে ঝাঁকুনি দেয় মামুন ।
মিলা কোনো কথা বলে না । মুখটা কঠিন করে বসে থাকে । মামুন আবার বলে, এই ধরনের লোকগুলো ভালো হয় না মিলা । আমি সাইফকে দেখেই বুঝেছিলাম ও মানুষ ভালো না । ও তোমাকে কোনো বিপদে ফেলতে চাচ্ছে মিলা । লোকটা চাইছে, আমাদের সংসারের শান্তি যেন নষ্ট হয়ে যায় । এই ধরনের লোকগুলো, যারা নিজেদের লাইফে কখনো শান্তি পায় না, তাদের কাজই হলো অন্যের সংসার ধংস করা ।
এতক্ষণ পর কথা বলে মিলা – শোনো মামুন তুমি অকারণে এতো কথা বলে যাচ্ছো । আমি অনেক ভেবেই সিদ্ধান্তটা নিয়েছি । আমার মনে হয়েছে আমাদের একসাথে থাকার সময় ফুরিয়েছে । তুমি তো আমাকে বাধ্য করতে পারো না, তাই না? সাইফের মাঝে আমি নতুন করে বাঁচার প্রেরনা পাই।
কেমন গা ঘিনঘিন করতে থাকে মামুনের তবু সে হাল ছাড়ে না । এখন তার রাগের সময় না । তার সংসারটা বাঁচাতে হবে সবার আগে । তুমি ভুল করছো মিলা । তুমি একটা মোহে পড়েছো । যখন ওর মুখোশ খুলে পরবে তোমার সামনে তখন খুব দেরি হয়ে যাবে মিলা । খুব কষ্ট পাবে তুমি । আর আমি তো এতো সহজে তোমাকে ছাড়বো না । আমাদের দু’জনার স্বপ্নগুলো, যেগুলো আমরা একসাথে দেখেছিলাম, তা কী আমি একা পূরণ করতে পারবো? মিলা একবার ভালো ভাবে চিন্তা করো প্লিজ । এখনো কিছুই হয়নি ।
তুমি খুব কথা প্যাঁচাচ্ছো মামুন । একদিন তোমার হাত ধরে স্বপ্ন দেখেছিলাম ঠিক আছে তবে স্বপ্নও তো পাল্টায় । স্বপ্নরা আরো বড় হয়৷। আমি তোমাকে আর সহ্য করতে পারছি না । তুমি আমাকে জোর করে তোমার সাথে ধরে রাখতে পারো না ।
মামুনের মাথায় আর কোনো কথা ঢোকে না । একটা কথাই ফিরে ফিরে আসে- তোমাকে আর সহ্য করতে পারছি না ।
কী করে গাড়ি চালিয়েছে মামুন নিজেও জানে না । ঘোর লাগা একটা ভাব নিয়ে সে বাড়ি ফিরলো । বিনুকে এক কাপ চায়ের কথা বলে বাচ্চাদের রুমে যেয়ে বসলো । পূর্বা ছবি আঁকছে আর অপূর্ব গভীর মনোযোগে ফেলুদা পড়ে যাচ্ছে। দু’ছেলেমেয়ের এই বিষয়টা খুব ভালো লাগে মামুনের । মোবাইল নিয়ে ওরা একদমই ঘাটাঘাটি করে না । অনেক বন্ধু আর আত্মীয়ের বাড়িতে অথবা কোনো অনুষ্ঠানে যেয়ে দেখেছে, বাচ্চারা একটা করে মোবাইল হাতে নিয়ে এটাতেই নিজের দুনিয়া বানিয়ে নিয়েছে । বিষয়টা খুব বিরক্তিকর লাগে মামুনের কাছে আর একই সাথে টেনশনেরও। তার বাচ্চাদের বই পড়ার প্রতি খুব নেশা । সে আর মিলা দুজনেই একসময় অনেক বই পড়তো । অপূর্ব’র খাটে যেয়ে বসে মামুন। ওর পিঠে হাত বুলিয়ে দেয়। উপুড় হয়ে গল্পের বই পড়তে থাকা অপূর্ব একবার ঘুরে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে আবার বইয়ে মনোযোগ দেয় ।
বিনুর কাছ থেকে চায়ের কাপ নিয়ে ফ্যামিলি লিভিং এ যেয়ে বসে মামুন । ঘরের এই কোনাটা খুব পছন্দ মামুনের । এখান থেকে অনেকটুকু আকাশ দেখা যায় । সে আর মিলা কতো রাত এখানে বসে গল্প করেছে চায়ের কাপ হাতে । চাঁদের ওপর থেকে মেঘের সরে যাওয়া দেখেছে দু’জন। চাঁদের কথা মনে হতেই উঁকি দিলো আকাশের দিকে । ইশ,,, আজ তো পূর্ণিমা ! এতক্ষণ তো খেয়ালই করেনি সে । চাঁদের পাশ দিয়ে আলাদা একটা আলোক দ্যুতি ছড়াচ্ছে । উপচে পড়ছে চাঁদের আলো । মিলাকে ডাকার জন্য ফিরতেই মনে হলো, মিলা আর তার সাথে চাঁদের আলোর লুটোপুটি খাওয়া দেখতে চায় না । ভেতরটা যেন কষ্টে দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে । এমন কষ্ট তো আগে কখনো হয়নি জীবনে । তার বাবা যেদিন মারা গেলেন সেদিন ভীষন কষ্ট পেয়েছিলো সে । রাতে খুব কেঁদেছিলো সবার আড়ালে । মনে হয়েছিলো, জীবনটা বুঝি থেমেই গেলো বাবা ছাড়া । কিন্তু আজকের কষ্টটা কেমন যেন অন্যরকম । মনে হচ্ছে, পথ হারিয়ে ফেলেছে সে । কোথাও কেউ নেই । চারপাশের দুনিয়াটা কেমন যেন ঝাপসা । এতো ঝাপসা লাগছে কেন সবকিছু? নিশ্বাস নিতে এতো কষ্ট হচ্ছে কেন?
কয়েকটা দিন এভাবেই কাটে । মামুন চেষ্টা করে যায় মিলা যদি কোনো কথায় মনটা আবার ফেরায় । ভীষন রাগ, তীব্র ঘেন্না কতো কিছু যে হচ্ছে কিন্তু মাথায় শুধু একটা চিন্তাই কাজ করে, সংসারটা বাঁচাতে হবে আগে । কী করবে, কারো সাথে শেয়ার করবে কী না বুঝতে পারে না । বিষয়টা এমনই স্পর্শকাতর যে সবার সাথে বলাও যায় না । অনেককিছু চিন্তা করে মামুন শ্বাশুড়িকে জানানোর জন্য মনস্থির করলো ।
মামুন বিয়ের পর একা কখনো মিলা’দের বাসায় যায়নি । যাওয়ার প্রয়োজনই পড়েনি । আজ যখন লাঞ্চ আওয়ারে সেখানে হাজির হলো, তার শ্বাশুড়ি ভীষন অবাক হলেন । তাঁর এই মেয়ের জামাইটাকে তিনি খুব পছন্দ করেন । আর অন্য জামাইদের চেয়ে ভালোও বাসেন বেশী । সেই যখন মিলার সাথে পড়তো তখন থেকেই মামুন এ বাড়িতে আসে । তখনও মিলা’র সাথে প্রেম হয়নি মামুনের । ভীষন আদর কাড়তে পারে ছেলেটা । মামুনকে খাওয়ানোর জন্য অস্থির হয়ে গেলেন । অনেক বুঝিয়ে ওনাকে থামানো গেলো । মামুন আমিনার বেগমের সাথে ওনার রুমে যেয়ে ঢুকলো –
বললাম, বাবা কিছু খেয়ে নে আগে । কথা যে শুনিস না, এইটা ভালো লাগে না ।
আরেক সময় খাবো আম্মা । আম্মা আমি বুঝতে পারছি না কী করব । আমার মাথা কাজ করছে না, তাই আপনার কাছে আসলাম । আপনি কিছু একটা করেন আম্মা। মিলা’ কে থামান । কথাগুলো বলতে বলতে কন্ঠ ভারী হয়ে যায় মামুনের ।
আমিনা বেগম বুঝতে পারেন না কী হয়েছে । মিলা তোর সাথে ঝগড়া করছে নাকি মামুন? এতো মন খারাপ করছিস কেন বাবা? ঠিক করে বলতো কী হয়েছে? মিলা’কে ফোন দেবো, আসতে বলবো?
না আম্মা, মিলা থাকলে আমি আপনাকে সব বলতে পারবো না, ঝগড়া বেধে যাবে । গত কিছুদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মামুন বলতে থাকে শ্বাশুড়ির কাছে ।
আমিনা বেগম খুব অস্থির হয়ে ওঠেন। এ কী কথা শুনছেন তিনি! টিভি নাটকগুলোতে ইদানিং খুব দেখায় এইসব অবৈধ প্রেম । কিছুদিন আগে সকালে হাঁটতে যেয়ে শুনেছেন তাদের বাড়ির সাত তলার আসমা আপা’র ছেলে এমনই এক কান্ড করেছে । কী সব পরকীয়া করে শেষে থানা পুলিশ অবস্থা। যে মহিলার সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে, তার স্বামী পুলিশ পাঠিয়েছে । সেটা নিয়ে সবার কী মুখরোচক গল্প । হায় আল্লাহ, যেসব জিনিষ শুনতেও এতো ঘেন্না করেন, আজ মামুন এইসব কী বলে তাঁর মেয়ের নামে । আমিনা বেগমের হাত পা যেন ঠান্ডা হয়ে আসে । যদি সত্যি এই নোংরা কাজ তাঁর মেয়ে করে থাকে তো থাপ্পড় দিয়ে মেয়ের দাঁতগুলো ফেলে দেবেন ।
অফিসে ফিরে জরুরী একটা মিটিংয়ে ঢুকে গেলো মামুন । মিটিং শেষে নিজের রুমে এসে খানিকটা সময় চোখ বন্ধ করে বসে থাকলো । আজ সারাদিন মোটামুটি কিছুই খাওয়া হয়নি । খেতে ইচ্ছেও হচ্ছে না । ফোনটা অন করে দেখলো শিহাবের মিসড কল । শিহাবকে ফোন দিলো মামুন –
হ্যালো, দোস্তো মিটিংয়ে ছিলাম । কী অবস্থা বল?
আরে ব্যাটা তোর কী অবস্থা? একটা ফোন তো দিবি নাকি!
ঝামেলায় মনে ছিলো না রে ।
আমি জানি তুই ঝামেলার মধ্যে আছিস কিন্তু একবার জানাবি তো । আমিও তো টেনশনে ছিলাম৷। মিলা’র সাথে কথা হয়েছে । অবস্থা কী বলতো?
কয়দিনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো শিহাবের কাছে খুলে বলে মামুন ।
তুই এখনো চুপ আছিস । মার দিস নাই কেন?
আরে কী বলিস! রিক্সাওয়ালা নাকি?
আরে মামা, বিপদে পড়লে রিক্সাওয়ালা কী আর পাইলট কী, সব এক ঘাটে জল খায়…………