সত্যি তোকে অনেক ভালোবাসি পর্ব -০৭

#সত্যি_তোকে_অনেক_ভালোবাসি💖💖
#Part : 7
#ইসরাত_জাহান_প্রভা

বড় একটা রেস্টুরেন্টে আসলো সবাই।।নিশানের পাশে বসে আছে অনু।।মিরা আগে ভাগেই শুভর পাশে বসে পড়েছে।।মালিহা আর পায়েল তাদের সামনের সারিতে বসে পড়লো।।

নিশান: কী খাবে সবাই?অডার করো।।

শিলা: ভাইয়া আপনি আমাদের সকলের জন্য অডার দিন।

নিশান:আমি দিবো?

সবাই মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো।খাবার আসার আগে সবাই হালকা গল্পে মেতে উঠলো।।মালিহা শুভকে মিরার পাশে দেখতে পারছে না।।

মিরা মনে মনে রাজ্য জয়ের হাসি দিয়ে বলছে,আমার অধিকার আমি ঠিক নিয়ে নেবো।।কাউকে ভাগ দেবো না আমার শুভকে।।

খাবার এসে গেলো।।সকলে খেতে লাগলো।।মালিহা একটু একটু করে খেতে লাগলো।।

মিরা শুভর দিকে তাকিয়ে বললো,বাবু আমাকে খাওয়ায় দেবে??

শুভ: আচ্ছা দিচ্ছি সোনা।।(মৃদু হেসে)

শুভ মিরাকে খাওয়ায় দিতে শুরু করলো।।আশেপাশের সকলে তাদের মধুর ভালোবাসা দেখে সত্যি বিমোহিত হয়ে গেলো।।একটু পর মিরা পরম যত্নে শুভকে খাওয়ায় দিতে লাগলো।।মালিহা মাথা নিচু করে রাগে ফুলতে লাগলো।।।
…..
ঘড়িতে প্রায় ১২ টা বাজতে চললো।।শুভ মিরার কোলে ঘুমাচ্ছে।।মিরা শুভর মাথায় ভালোবাসার ছোঁয়ায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।।শুভ পুরোপুরি ঘুমিয়ে গেলে মিরা শুভর কপালে একটা মিষ্টি পরশ এঁকে বেরিয়ে নিজের রুমে গেলো।।

রুমে গিয়েই দেখলো মালিহা চুপ করে বসে আছে।।

মালিহা: এসো মিরা।। তোমার জন্যই তো অপেক্ষা করছি আমি।।(সুরে সুরে তাল মিলিয়ে)..

মিরা: কিছু বলবে?(আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে)

মালিহা: নিজেকে বিশ্বসুন্দরী মনে করো তুমি তাই না?(রাগী গলায়)

মিরা: কৈ না তো।।বিশ্বসুন্দরী না হলেও তোমার থেকে সুন্দরতায় কোনো অংশে কম নই আমি।।(শান্ত গলায়)

মালিহা: তুমি যেই হও না কেনো সেটা আমার দেখার বিষয় না।।আমি সাফ সাফ কথা বলতে পছন্দ করি।।তাই বলছি আমি শুভকে ভালোবাসি।।তুমি আমাদের মাঝে থেকে সরে যাও।।(একটু ভাব নিয়ে)

মিরা: ও তাই বুঝি!!শুভর খেয়াল রাখি আমি,শুভকে পাগলের মতো ভালোবাসি আমি আর তোমার কথায় ওকে ছেড়ে চলে যাবো??শুনে রাখো শুভ আমার সব কিছু।।ওকে ছেড়ে কখনই আমি চলে যাবো না।।

মালিহা: তোমার কী যোগ্যতা আছে ওর সামনে দাড়াবার?(ভাব দেখিয়ে)

মিরা: সত্যি ভালোবাসার যোগ্যতা আছে আমার।।যেটা দ্বারা শুভর প্রতিটা স্নায়ুতন্ত্রে আমি জড়িত আছি।।প্রতিটা শ্বাসে আমি আছি,প্রতিটা হাসিতে আমি আছি।।প্রতিটা ভালোবাসার ছোঁয়ায় আমি আছি।।

মালিহা: ও প্লিজ মিরা এসব ন্যাকামো করিও না আমার সামনে।।

মিরা: ন্যাকামো আমি করি না।।ন্যাকামোটা তুমি করো।।(জোড় গলায়া)

মালিহা: আমি ওসব বুঝি না কালকের মধ্যে তুমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে আর কখনো শুভর সাথে যোগাযোগ করবে না।।

মিরা: এই তোমার কী মাথা খারাপ?আর এটা কী তোমার বাড়ি?আমি আমার শুভকে ছেড়ে কোথাও যাবো না।।

মালিহা: মিরা আমি তোমাকে যেতে বলেছি মানে তুমি যাবে।।(প্রচন্ড রেগে)

পায়েল: মালিহা আপু তুই কিন্তু বাড়াবাড়ি করছিস।।(মিরার রুমে প্রবেশ করে)

মালিহা: তুই এখানে কী করছিস?(পায়েলকে দেখে)

পায়েল: সেটা বড় কথা না।।মিরা আপু কোথাও যাবে না।।আর বাবা মা দেশে ফিরলে INSHALLAH ভাইয়ার সাথে মিরা আপুর বিয়ে হবে।।তাই তুই এখানে বাড়াবাড়ি করিস না।।(রেগে গিয়ে)

মালিহা: আমিও দেখবো আসলে কাকে বিয়ে করে শুভ।।(রাগে বের হয়ে গিয়ে)

পায়েল: আপু তুমি ওর কথা একদম শুনবে না।(মিরার দিকে তাকিয়ে)

মিরা: আমার মৃত্যুর আগ পযন্ত আমি আমার শুভকে কারোও হতে দিবো না।।(জোড় গলায়)

পায়েল: হুম।।(একটু হেসে)

মিরা: তবে তোমার মা বাবা কী আমাকে মেনে নেবেন?(চিন্তিত স্বরে)

পায়েল: অবশ্যই মেনে নেবে।।না হলে আমি,নিশান ভাইয়া আর তোমার হবু বর আমরা তো আছিই।।(মিষ্টি হেসে)

মিরা: আমার ভাগ্যটা ভালো যে তোমাদের মতো একটা পরিবারের সাথে থাকতে পারছি।।

পায়েল: আমারও ভাগ্যটা ভালো যে তোমার মতো একটা মিষ্টি ভাবিকে পেতে যাচ্ছি।।

মিরা আর অনু দুজনেই হাসতে লাগলো।।

দেয়ালের আড়াল থেকে সব শুনে ফেললো মালিহা।।
মালিহা: (দেখা যাক কে কার হয়)
……
সকালে মিরা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে শুভর জন্য নাস্তা বানিয়ে ফেললো।।আনু আর শিলা আসলো তাকে হেল্প করতে।।

শিলা: শুধু শুভর জন্য নাস্তা?আমাদের নেই?(ইয়াকির ছলে)

অনু: তাইতো।।কী রে মিরা আমাদের নাস্তা নেই?

মিরা: ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে রে।।নাহলে সবার জন্য বানাতাম।।অনু একটু সামলে নে না প্লিজ।।(তাড়াহুড়া করে)

অনু: আচ্ছা ঠিক আছে।।তুমি জলদি যাও উপরে তোমার সোনা বাবুটা ঘুম থেকে উঠলো বলে(অনু আর শিলা হাসতে লাগলো)

মিরা: ধ্যাত!!(নাস্তা নিয়ে উপরে যেতে যেতে)

শুভর রুমে প্রবেশ করলো মিরা।।মিষ্টি বাচ্চার মতো ঘুমিয়ে আছে শুভ।।মিরা শুভর কাছে গিয়ে শুভর কপালে,দু গালে আর ঠোঁটে মিষ্টি পরশ এঁকে দিলো।।

মিরা: বাবু!!উঠো।।দেখো আমি তোমার জন্য নাস্তা এনেছি।।উঠো সোনা আমার।।(মায়া দিয়ে)

শুভ: আর একটু ঘুমাতে দাও তো মিরা।।(ঘুমের ঘোরে)
মিরা: নাহ!একদম না।।উঠো বলছি।।তাড়াতাড়ি উঠো।।উঠো বাবু।।(শুভকে ধাক্কা দিতে দিতে)

শুভ ধুপ করে উঠে পড়লো।।মিরা: যাও ফ্রেশ হয়ে এসো।।

শুভ গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এলো।।মিরা নিজ হাতে শুভকে খাওয়ায় দিতে লাগলো।।শুভ খাচ্ছে আর টিভি দেখছে।।

মিরা: তাড়াতাড়ি খাও বাবু।।(কলাটা শুভর মুখের সামনে নিয়ে)

শুভ: তুমি খেয়েছো?(মিরার দিকে তাকিয়ে)

মিরা: তুমি খেলেই আমি খেয়ে নেবো।।

শুভ আপেলের পিচ নিয়ে মিরার মুখে তুলে দিয়ে বললো,এখনি খেয়ে নাও সোনা।।

মিরা মিষ্টি হেসে খেতে লাগলো।।

……
ছাদে উঠে মালিহা তার মা কে ফোন দেয়।।

মালিহা: হ্যাঁলো মা!!

মালিহার মা: কেমন আছিস?

মালিহা: ভালো নেই মা।।তুমি?

মালিহার মা: আমি তো ভালো আছি।।কী হয়েছে তোর মা?

মালিহা তার মাকে সব খুলে বললো।।

মালিহার মা: দেখ মা ওরা একে অপরকে খুব ভালোবাসে।।ওখানে তুই তো আর তোর ভালোবাসাকে জয়ী করতে পারবি না।।তুই বরং শুভকে ভালো বন্ধু বা ভালো ভাইয়ের চোখে দেখ।।

মালিহা: না মা আমি শুভকে ভুলতে পারবো না।।আমি শুভকেই বিয়ে করবো।।

মালিহার মা: তুই কেনো বুঝতেছিস না….

মালিহা: মা আমি সব বুঝি।।ভালো থেকো।।

মালিহা ফোন কেটে দিলো।।

মালিহা: (আমার ভালোবাসার কী কোনো দাম নেই?)
…..
প্রায় ১ টার দিকে কলিংবেল বেজে উঠলো।।সবাই ছাদে গল্প করছিলো।।শুধু মালিহা বসে বসে টিভি দেখছিলো।।মালিহা উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিতেই একটা অপরিচিত ছেলে তাকে জড়িয়ে ধরলো।।

: আপু,আপু,আপু আমি ভাসিটিতে টপ করেছি।।(খুশির আনন্দে )

মালিহা: এই ছেলে ছাড়ুন আমায়।।(ধাক্কা দিয়ে ছাড়িয়ে দিয়ে)

: ওহ সরি সরি।।মাফ করবেন আমায়।।আমি তো আমার মিরা আপুর কাছে এসেছি।।

মালিহা: সুন্দরী মেয়ে দেখলেই জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে তাই না?(প্রচন্ড রেগে)

: আপনি ভুল ভাবছেন।।আমি মোটেও বুঝে কাজটি করিনি।।(ক্ষমাপ্রাথী হয়ে)আমাকে মাফ করে দিবেন প্লিজ।।

মালিহা কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না ছেলেটির কথা শুনে।।

মালিহা: আচ্ছা ঠিক আছে।।মন খারাপ করবেন না।।আপনি কে?(মৃদু ও আশ্চয স্বরে)

: আমি নিলয়।।মিরা আপু আমার নিজের বোন।।(খুশি হয়ে)

মালিহা: ওহ! ঐ মিরার ভাই আপনি?(আশ্চয হয়ে)

নিলয়: ঐ মিরা বলতে?

মালিহা: না কিছু না।।আচ্ছা আপনি এত খুশি কেনো??(প্রশ্ন করে)

নিলয়: আসলে আজকে ভাসিটির রেজাল্ট দিয়েছে।।পুরো ভাসিটিতে আমি প্রথম হয়েছি।।

মালিহা: বাহ!!খুব মেধা তো আপনার!!(আশ্চয হয়ে)

চলবে,,,

(Sorry aj ai smy dite holo)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here