#সন্ধ্যায়_সন্ধি
#মম_সাহা
পর্বঃ৪
একটু আগে তুহা আপু, হৃদি বাসায় গেলো।রাতের খাবারের জন্য আমাদেরও ডাক পরলো।আমি খেতে না চাওয়া সত্যেও আপু হেনতেন বুঝিয়ে খেতে নিয়ে গেলো।
অন্য দিকে তেজের খাওয়া, ঘুম হারাম হয়ে গেছে চাঁদের কী হয়েছে জানার জন্য। তার মা জোড় করে খাবারের কাছে নিয়ে গেছে।
রাত প্রায় বারোটা।প্রহেলিকা আর চাঁদ শুয়ে আছে এক সাথে। চাঁদের চোখে ঘুম নেই।বোনের এই করুন অবস্থা দেখে ঘুমাতে পারছে না প্রহেলিকাও।কিন্তু প্রহেলিকার এটা ভেবে খটকা লাগছে যে চাঁদ তেজ ভাইয়ার ব্যাপারে এতটা সিরিয়াস কেনো? সেও তো একই জিনিস দেখেছে তার খারাপ লেগেছে কিন্তু এত করুন অবস্থা তো হয় নি।তাহলে কি চাঁদ…..
না সে আর ভাবতে পারছে না।বরং তার ভয় হচ্ছে চাঁদকে নিয়ে।মেয়েটা প্রচুর ভেঙ্গে পড়েছে।তার মাথা কাজ করছে না।চাঁদ এখনো দু এক ফোটা চোখের জল ফেলছে।প্রহেলিকা বর্তমানে স্বান্তনার বাণী খুঁজে পাচ্ছে না। সে বোনের মাথার কাছে বসে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।কিন্তু চাঁদের ঘুম আসার কোনো নাম নেই।
অন্যদিকে তেজও বারান্দায় বসে আছে এক ঝলক চাঁদকে দেখার আশায়। সেই সন্ধ্যাবেলা মেয়েটাকে দেখেছে এখনো দেখে নি।তার মন বলছে চাঁদ একবার কবুতর গুলাকে দেখার জন্য বারান্দায় আসবে। তখনই সে চাঁদকে মন ভরে দেখে নিবে।
চাঁদের ঘুম আসছে না।অনেকক্ষণ এপিঠ ওপিঠ করে নড়াচড়া করছে।ঘুমানোর চেষ্টা করছে কারণ সে জানে সে না ঘুমালে তার আপু ও ঘুমাবে না।কিন্তু যখন সে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো তখন সে আপুকে বলল বারান্দায় যাওয়ার জন্য। একসাথে দুজন আড্ডা দিবে।প্রহেলিকাও রাজি হলো।দুজন বারান্দায় যায়।চাঁদ বারান্দায় গিয়েই পাখি গুলোকে আদর শুরু করলো।
তেজ তো চাঁদকে দেখে ভীষণ খুশি কিন্তু পাশে প্রহেলিকাকে দেখে তার ভ্রু কুচকে গেলো। চাঁদের সাথে আজ বেশিই প্রহেলিকা ঘুরঘুর করছে ব্যাপার কি।তেজের সন্দেহ গাড়ো হলো।তবুও সে চাঁদের সাথে কথা বলার লোভ সামলাতে না পেরে ডাক দিয়ে ফেলর,
– এই চাঁদ, এত রাত অব্দি না ঘুমিয়ে বারান্দায় কি করছিস?আর প্রহু (প্রহেলিকার ডাকনাম) তুই না ওর বড় বোন জানিস ওর শরীর অসুস্থ তাও এত রাত জাগছে কেনো ও?
– ভাইয়া আমি তো ওরে ঘুমাতেই বলেছিলাম কিন্তু ওর ঘুম আসছে না দেখে নিয়ে আসলাম বারান্দায়। কাচুমাচু হয়ে বললো প্রহেলিকা।
এখান নিরব শ্রোতার ভূমিকা পালন করছে চাঁদ।সে পাখি গুলোর দিকেই ধ্যান দিয়ে রেখেছে জেনো আশেপাশে কি হচ্ছে সে জানেই না।
তেজ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে প্রহেলিকাকে ইশারা দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,”ম্যাডামের কী হয়েছে?”
প্রহেলিকাও ঠোঁট উল্টিয়ে উত্তর দিলো সে জানেনা।কারণ চাঁদ তাকে বলতে না করেছে।
তেজ এবার দৃষ্টি ঘুরিয়ে চাঁদের দিকে চেয়ে সোজাই বলে উঠলো,
– আমাকে ইগ্নোর করছিছ আবার আমার দেওয়া পাখির সাথেই এত ভাব করচ্ছিস।
তেজ মজা করে বললেও চাঁদেে কথাটা ইগোতে লেগেছে।তাই সে রুমে দিকে যেতে যেতে বললোঃ
– তাহলে আপনার পাখি গুলো আপনি নিয়ে যাবেন দয়া করে।
– আমি কাউকে কিছু দিলে তা ফেরত নেই না।দুষ্টুমির সুরে বলল তেজ।
চাঁদ রুমে গিয়েও ফিরে এসে প্রহেলিকা আর তেজ বুঝে উঠার আগেই কবুতরের খাঁচা খুলে কবুতর গুলোকে উড়িয়ে দিলো।
তেজ আর প্রহেলিকা আহাম্মক ভাবে চেয়ে রইল।চাঁদ এবার তেজের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলল,
– যে জিনিস আমার না সেটা আমি কখনোই ধরে রাখি না সেটা আমার যতই প্রিয় হোক না কেনো। এই বলে চাঁদ রুমে ঢুকে যায়।চাঁদের পিছে প্রহেলিকাও চলে যায়।আর তেজ বোকার মতন চেয়েই থাকে কারণ সে এই চাঁদকে চিনেই না।এমন ব্যবহারও সে আশা করে নি।কি থেকে কি হযে গেলো।তেজ মাথায় হাত দিয়ে বারান্দায় সোফায় বসে পরে।
অন্যদিকে চাঁদ রুমে এসেই কান্না জুড়ে দেয়। কারণ সে কবুতর গুলোকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু তেজের কথায় তার ইগো হার্ট হয়েছে তাই সে উড়িয়ে দিলো।কবুতর দেওয়া মানুষটাই যেহেতু তার না তো কবুতর গুলোও তার হবে কীভাবে।
__________________________
আরো একটি রাত কাটলো বিষন্নতায়।পরের দিন সকালে উঠেই চাঁদ তৈরী হয়ে নিলো ভার্সিটিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। একবারে রেডি হয়ে বের হয়ে দেখে হৃদি বসে আসে আগে থেকেই।
চাঁদের মা চাঁদকে দেখেই খাবার খেতে ডাক দেয়।কিন্তু চাঁদ তাড়া দেখিয়ে ক্যান্টিনে খাবে বলে বের হয়ে যায় হৃদির হাত ধরে।তারা হৃদিদের গাড়ি দিয়েই কলেজ যায় কারণ এটাও তেজের নির্দেশ।কখনো তেজ নিয়ে যায় কখনো আহান।মাঝে মাঝে ফেরার পথে রিক্সা দিয়ে ফিরে।
আজও ব্যাতিক্রম হয় নি।চাঁদ নিচে গিয়ে দেখে তুহা আপু আর তেজ দাড়িয়ে আছে।আজ প্রহেলিকা ভার্সিটিতে আগেই চলে গেছে।চাঁদ,প্রহেলিকা,তুহা,হৃদি একসাথেই যায়।মাঝে মাঝে একটু নড়চড় হয়।সবাই এক ভার্সিটিতে পড়ে বিধায় সমস্যা হয় না।
চাঁদ আর হৃদি আসার সাথে সাথে তুহা আর হৃদি পিছনের সিটে বসে পরে। চাঁদ করুন দৃষ্টিতে চেয়ে সামনের সিটে গিয়ে বসে।আজ তেজও ভীষন চুপ।কারণ কাল চাঁদের ব্যবহার তাকে আঘাত করেছে প্রচুর।যে মেয়ে কবুতর প্রচুর ভালোবাসে সে মেয়ে কিনা কবুতর গুলো উড়িয়ে দিলো।তার সন্দেহ আরো গাড়ো হলো।সে একমনে ড্রাইভ করছে।হৃদিও আজ চুপ আছে কারণ সবাই জানে চাঁদের মন খারাপ।নাহয় বকবক করার জন্য কত বকা খায় তেজের কাছে।
সবাই যার যার মতন নেমে গেছে।চাঁদ নামার সময়ই তেজ দৃঢ় কন্ঠে বলে উঠলোঃ
– আমাকে কী একবারো সমস্যা টার কথা বলা যায় না?আমি কি এত অযোগ্য তোর সমস্যা দূর করার জন্য?
– আজব যেখানে কোনো সমস্যা হয়নি সেখানে কি বলবো আমি?
– আমার অপরাধ টা বলবে দয়া করে।আমি নিতে পারছি না চাঁদমনি।প্লিজ বলো।
– তেজ ভাইয়া সত্যিই আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে।এটা বলেই হনহন করে চলে গেলো চাঁদ।তেজ বিষ্ময়ে হতবাক।
__________________
বিকেলে ছাদে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে তুহা,চাঁদ,হৃদি আর প্রহেলিকা। কথার একপর্যায়ে হৃদি বললোঃ
– জানিস চাঁদুজান কাল রাহা আসবে আমাদের এখানে।
– চাঁদ বললো তো আমি কি করবো?
– ওমা তুই রেডি হবি ঝগড়ার জন্য।
এ বলেই হাহা করে হেসে উঠলো সবাই।চাঁদও যোগ দিলো সেই হাসিতে।কারণ রাহা আসলেই পা এ পা দিয়ে লাগে ঝগড়া।
সারাটা বিকেল সবাই মিলে চাঁদকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করেছে।চাঁদও বুঝতে পেরেছে তার এমন মন খারাপ করে থাকাটা কেউ পছন্দ করেছে না।তাই সেও সবার তালে তাল মেলাচ্ছে।চাঁদের মা,খালা,হৃদির মা ও যোগ দিয়েছে তাদের দলে।সবাই হাসাহাসি করছে।এর মাঝেই কথায় কথায় তেজের বিয়ের কথা উঠে তখনই তেজের মা জাহানারা বেগম বলে উঠে এমন কথা যা চাঁদের মনে ক্ষতটা আরো বড় করে দেয়।
রাহার মা রাহার জন্য তেজের বিয়ের কথা বলেছে।এতটুকু শুনেই চাঁদের দুনিয়া আধার করে আসে।তারপর চাঁদের মা জিজ্ঞেস করে,
– আপা তারপর তুমি কি বললে? তেজ বাবাইকে দিবে রাহার সাথে?
– আরো না না কি বলিস নিলীমা আমার ছেলে এতবছর অপেক্ষা করেছে কি ঐ মেয়েকে বিয়ে করার জন্য নাকি।কেমন হিংসুটে মেয়ে।আমার ছেলের বউ তো হবে মিষ্টি ছোট্ট চঞ্চল। আর আমার বউমাও ঠিক করা আছে তোকে কি নতুন করে বলতে হবে নাকি? আমার বউমা আরেকটু বড় হোক তারপর আনবো আমার ঘরে।এটুকু বলে তৃপ্তির হাসি হাসলো তেজের মা জাহানারা।
তেজে মায়েে কথায় মুচকি হেসে সমর্থন জানালো চাঁদের মা ও হৃদির মা সাথে তুহা।কিন্তু বাকি সবার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।তারমানে তেজ ভাইয়ার পছন্দ আছে?
এই কথা গুলো সব থেকে এফেক্ট করেছে চাঁদকে।যার জন্য সে চেয়েও আর হাসিখুশি থাকতে পারে নি। চলে আসে নিচে।তখন অবশ্য সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। তাই সবাই নেমে আসে।প্রহেলিকাও বোনের মনোভাব বুঝতে পারে।চুপ হয়ে থাকে সেও।
___________________
সন্ধ্যা বেলা চাঁদ ছাদ থেকে নেমে শুয়েছে আর উঠে নি।সবাই ভাবছে ঘুমে কিন্তু আসলে তা না।চাঁদ হিসেব মিলাতে ব্যস্ত। তার কষ্ট হচ্ছে কেনো তেজের জন্য সে হিসেব মেলাতে সে ব্যস্ত।
রাতে তেজ একবার এসে দেখে গেছে।তখন চাঁদ ঘুমের ভাব ধরে পড়ে ছিলো।সে চায় না দুর্বলতা প্রকাশ করতে।তার এমন অনুভূতির জন্য তো তেজ দ্বায়ী না সে নিজেই দায়ী।
অন্যদিকে তেজ চাঁদকে দেখতে এসে চাঁদের ফোলা ফোলা নাক চোখ দেখেই বুঝতে পেরেছে মেয়েটা অনেকক্ষণ যাবত কান্না করেছে।আজ তেজ নিজেকে অসহায় ভাবছে।না হয় তার সামনে তার জান কান্না করছে সে চেয়েও কিছু করতে পারছে না।কীভাবে করবে মেয়েটা তাকে পাত্তাই দিচ্ছে না।
রাতে চাঁদকে অনেক বার খাবারের জন্য ডাকা হয় সে ঘুমাবে বলে খেতে যায় না।আহান,প্রহেলিকা, নিলিমা বেগম জোড় করেও খাওয়াতে পারে না।প্রহেলিকা বুঝে বোনের মন।তাই সে সবাইকে ম্যানেজ করে। আর মনে মনে ভাবে তাকেই কিছু করতে হবে।
_________________________
রাত দুইটা,
ঘুম নেই চাঁদের চোখে।তাই প্রহেলিকা তাকে ছাতে যাওয়ার কথা বলে চাঁদও রাজি হয়।কারণ ছাঁদে কত গুলো কবুতর আছে সে গুলো দেখতে পারবে।নিজের কবুতর গুলোর জন্য তার শরীর জ্বলছে কি আর করার।
প্রহেলিকা আর চাঁদ ছাদের দরজায় এসে দ্বারায়।এর মাঝেই প্রহেলিকা বলে,
– চাঁদ ছাদে বসে থাকার জন্য একটা পাটি নিয়ে আসি।ভালো হবে কি বল?
চাঁদেরও মনে হলো বুদ্ধিটা ভালোই।তাই সে মাথা নেড়ে হ্যাঁ জানালো।এতেই প্রহেলিকা ছুট লাগালো পাটি আনার জন্য। আর চাঁদ ছাদে পা বাড়ালো।
চাঁদ ছাদে ওঠেই অপরপাশে এক ছায়া দেখতে পায়। তার ভয় হয় তবুও জিনিস বুঝার জন্য আরেকটু আগায়।এবার স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ছায়াটা।আর চাঁদ জানো ছায়া টা কার তাই সে রুমে ফিরে আসার জন্য ফিরে আসতে নিলেই কেউ বলে উঠে-
– দ্বারা চাঁদ আমার কথা আছে তোর সাথে। বল আমি কি এমন অন্যায় করেছি যে ইগ্নোর পাওয়ার মতন শাস্তি পাচ্ছি?
– আপনি কোনো অন্যায় করেন নি তেজ ভাইয়া। আর আপনাকে নিশ্চয়ই আপু আসতে বলেছে?যাই হোক আমার এত রাতে কোনো কথা নেই আপনার সাথে।
এই বলে চাঁদ চলে আসতে নিলে তেজ খপ করে হাতটা ধরে ফেলে আর তার বাহু ধরে চেঁচিয়ে বলে,
– ইউ স্টুপিড গার্ল, আমাকে ভাব দেখাচ্ছিস, ইগ্নোর করছিস এই তেজস্ব আবরারকে? আমার রাতের ঘুম হারাম করে বলছিস কিছুই করিস নি আমার সেটা মানতে হবে? ড্যাম ইট আনসার দে?
চাঁদের ও মাথায় রাগ উঠে যায়।সে ঝাটকা মেরে তেজের হাতটা ফেলে দেয় আর বলে,
– উত্তর চাই আপনার উত্তর এই দেখেন উত্তর। এই বলেই চাঁদের হাতের মোবাইল টা থেকে ভিডিও টা দেখায়।তেজের তো পায়ের নিচ থেকে মাটি সড়ে গেছে। এ কি দেখছে সে।তাহলে মেয়েটার রাগ করাটা স্বাভাবিক ছিলো?
#সন্ধ্যায়_সন্ধি
#মম_সাহা
পর্বঃ৫
তেজের হাতে মোবাইলে একটা নিকৃষ্ট ভিডিও। আর তার একহাত দূরে চাঁদের চোখে তাচ্ছিল্য হাসি।তেজের আজ নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে অসহায় মানুষ মনে হচ্ছে। মেয়েটাকে অজান্তেই কত কষ্ট দিয়ে ফেলল।
ভিডিও তে একটা মেয়ে আর তেজ খুব কাছাকাছি। মেয়েটার গালে, কপালে তেজের ঠোঁট বিচরণ করছে।ভিডিও টা তেজ যখন বিদেশ গিয়ে ছিলো তখনের।আর ভিডিও টা যখন করা হয় তখন তেজ ড্রাঙ্ক ছিলো।আর ভুলবশত এটা হয়ে যায়।তবে বেশি কিছুই হয় নি এর আগেই তেজের বন্ধুরা তেজকে নিয়ে যায়।মেয়েটা তেজের মতন ছেলেকে হাত ছাড়া করতে চায় নি বলেই এমন বিশ্রী কান্ড করেছিলো যেটা সে পরে স্বীকার করে।
সেই ঘটনা কত আগের চার বছর তো হবে।তেজ ভাবতেও পারে নি এমন একটা ঘটনা তার জীবনে আবার এমন জঘন্য প্রভাব ফেলবে।তেজকে অতিরিক্ত নেশা খাওয়ানোর ফলে তার হিতাহিত জ্ঞান ছিলো না তবে সে এটুকু করার জন্য ও লজ্জিত ছিলো।কারল ছোট বেলা থেকেই তার মনে একজনই ঠাঁই পেয়েছে সেটা চাঁদ।কিন্তু আজ সেই চাঁদেরই কষ্টের কারণ তেজ।
______________________________
ছাঁদের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে দুই মানব মানবী।তেজ চাঁদকে সব টুকু খুলে বলেছে।এতে চাঁদের কান্না আরো বেড়ে গেলো।তার বড্ড রাগ উঠছে মেয়েটার প্রতি আর তার চেয়েও বেশি রাগ তেজের প্রতি।সে জানে তেজ এখানো দ্বায়ী না সে পরিস্থিতির স্বীকার কিন্তু তবুও রাগ উঠছে।কারণ তেজের একটু অসাবধনতার কারণে মেয়েটা তেজের চরিত্রে কালি লেপন করতে পেরেছে।তেজ কেনো সাবধান হলো না।
আর অন্যদিকে তেজ প্রাণহীন চোখে চাঁদের কান্না দেখছে। কি আর করার। মেয়েটাকে থামাতে গেছিলো তখন হুংকার দিয়ে উঠেছিলো সে।
তেজ ভাবলো এবার চাঁদকে চুপ করাতে হবে।মেয়েটা বেশি কান্না করলে অসুস্থ হয়ে পরে।তাই সে ধমকের সুরে বলল,
– চুপ করবে চাঁদ, আর কত কাঁদবে,এই তিন দিন যাবত তো কেঁদেছো এবার চোখের জল থামাও।আমার মরার পর কেঁদো।
চাঁদের কলিজাটা জেনো আৎকে উঠলে তেজের কথাটা শুনে।সে সাথে সাথে তেজের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে চড়, ঘুষি দিচ্ছে আর বলছে,
– আপনি খুব খারাপ তেজ ভাইয়া, খুব খারাপ।আমি কত কষ্ট পেয়েছি জানেন? মরা তো আমার উচিত। হ্যাঁ সেটাই করবো আমি দাঁড়ান, এই বলে চাঁদ ছুট লাগালো ছাদের কিনারে যেখানে রেলিং নেই।তেজের শরীর ভয়ে জমে গেছে।সেও চাঁদের পিছে ছুট লাগায়। চাঁদ কিনারে আসার আগেই তেজ ছুটে চাঁদের হাত ধরে দেয় এক চড়।
– তুই কি করতে ছুটছিলি চাঁদ!তোর সাহস কীভাবে হলো এমন জঘন্য চিন্তা মাথায় আনার?তুই কি জানিস একটুর জন্য আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয় যাচ্ছিল।দোষ আমার আমাকে শাস্তি দে মার কিন্তু তুই এটা কেনো করতে গিয়েছিলে চাঁদ।আমার এখনো হাত পা কাঁপছে।
চাঁদ ফুফিয়ে কেদেঁ বলে উঠল,
– আরে তেজ ভাইয়া আপনি এত বেশি বুঝেন কেনো?আমি কি করতে গেছিলাম ঐ খানে সেটা না জেনেই চড় লাগালেন! দেখেন ছাদের কোনায় কারা আছে…আমাদের সন্ধ্যা আর সন্ধি। দেখছেন?ওদের ধরতেই তো ছুটে গেছিলাম।ওদের ছাড়া আমার কি কষ্ট লাগছিলো।আর আপনি কিনা শুধু শুধু চড় লাগালেন?
তেজ সত্যিই কিনারে চেয়ে দেখে তাদের কবুতর গুলা।সে তখন খেয়াল করে নি।মেয়েটা হঠাৎ অমন কথার মাঝে দৌড় দিলো সে তো ভয় ই পেয়ে গেছিলো।কিন্তু তেজ এখন অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।মেয়েটাকে শুধু শুধু চড় মারলো।চাঁদও তেজের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে হেসে দিলো।আজ মন থেকে একটা পাথর সরলো।
হঠাৎ হাসতে হাসতেই তেজ চাঁদকে বলল,
– কিরে চাঁদ ভালো কথা মনে পরলো, তুই এই ভিডিও টা দেখে এত কান্নাকাটি করেছিস কেনো? এমনও হতে পারতো এটা আমার গার্লফ্রেন্ড আর গার্লফ্রেন্ডের সাথে এমনটা তো স্বাভাবিক তাই নয় কি? কিরে তুই জেলাস নাকি! কিরে তোর মনে কি চলছে? সামথিং সামথিং?
– ধূর ভাইয়া আপরি সবসময় উল্টা পাল্টা বলেন তেমন কিছুই না।
এ বলেই চাঁদ ছুট লাগায় নিচে।আর তা দেখে মুচকি হাসে তেজ।আর ভাবে” মেয়েটা আমাকে নিয়ে কত ভাবে,আর কখনোই তোমাকে কষ্ট পেতে দিবো না চাঁদ”।
কিন্তু এই জঘন্য কাজটা করলো কে?যাই হোক এসব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে চাঁদের পিছে পিছে নিচে আসে তেজ।এসে দেখে চাঁদ তাদের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।তাই সে চাঁদকে ভ্রু কুচকে ইশারা করে বলে, কি হয়েছে?
চাঁদ ঠোঁট উল্টিয়ে দেখায় তাদের ঘরের দরজা ভিতর দিয়ে আটকানো সে ভিতরে যাবে কীভাবে। তেজও খেয়াল করলো এটা।সে বুঝতে পেরেছে প্রহেলিকা হয়তো দরজা আটকিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। তাই সে প্রহেলিকাকে কল লাগালো ততক্ষণে ভোর হয়ে এসেছে।মেয়েটা সারা রাত জেগে ছিলো আজ সারাদিন মাথা ব্যাথায় পড়ে থাকবে সেটা তেজের ভালো জানা আছে।
প্রহেলিকার ঘুম ভেঙ্গে গেলো ফোনের শব্দে।তাকিয়ে দেখে তেজ ভাইয়ার নাম্বার।সে ছুট লাগায় মেইন গেইটের দিকে।যা ভেবেছিলো তাই।চাঁদ দাঁড়িয়ে আছে।সে তাড়াতাড়ি দরজা খুলে চাঁদকে বাসায় ঢুকায়।চাঁদ তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকে গোসল করতে চলে যায়। গোসল করে এসে শান্তির ঘুম দেওয়ার উদ্দেশ্যে।
অন্যদিকে তেজ তাদের রুমের দিকে যেতে নিয়ে ও ফিরে এসেছে চাঁদের দরজায়।প্রহেলিকা মাত্র দরজা আটকাতে নিছিলো কিন্তু তেজকে দেখে থেমে যায়। তেজ এসেই বলে উঠলো- ধন্যবাদ প্রহু,আমাকে সাহায্য করার জন্য নাহয় এই মেয়ে মরেই যেতো এমন থাকলে।
প্রহেলিকা ও সন্তুষ্টির হাসি দিয়ে বলল- রাগ কমেছে তাহলে মহারানীর,,দুইটা রাত মেয়েটা না ঘুমিয়ে কাটিয়েছে তাও আবার কেঁদে কেঁদে।তাই তো কাল বিকালে তোমাকে সব খুলে বললাম ওর সাথে আলাদা কথা বলার জন্য।
তেজও বোনের কথায় তৃপ্তির হাসি হেসে বলল- হ্যাঁ রে অনেক ধন্যবাদ তোকে।আমি তো এই মেয়ের কি হয়েছে ভেবেই ভয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম।
প্রহেলিকা মুচকি হাসি দিলো হঠাৎ কিছু মনো হতেই সে সন্দিহান কন্ঠে বলল- আচ্ছা তোমাদের ব্যাপার কি বলো তো! এক একজন এক একজনের কষ্টে এত ব্যাথিত কেনো?
তেজ এবার একটু শব্দ করে হেসেই বলল- যা ধরেছিস তাই,কিন্তু তোর বলদ বোন বুঝতে পারে না এখনো। আর কিছু দিন পরই তোর তেজ ভাইয়ার ঘড়ে তাকে নিয়ে আসা হবে আগে তোকে বিদায় করি।
এবার প্রহেলিকা আর তেজ দুজনই হেসে উঠলো। তেজ হাসি দিয়েই বলল- আমি যাই, তুই ও গিয়ে ঘুমা আর ওর খেয়াল রাখিস।
প্রহেলিকাও মাথা নারিয়ে দরজা আটকে দেয়।বোনের কথা ভেবে তার শান্তি লাগছে। তার বোন একজন সঠিক মানুষের কাছে যাবে।কিন্তু কোথাও জেনো বুকে ব্যাথা হচ্ছে।তাহলে কি সেও তেজ ভাইয়াকে,
না না সে কি ভাবছে এগুলো।নিজের মাথায় নিজে চড় দেয় প্রহেলিকা। বোনের এত সুন্দর ভবিষ্যতে সে কীভাবে বিষন্নতার শ্বাস ছেড়েছে এটা ভেবেই খারাপ লাগছে তার। কিন্তু কি করার ছোট বেলা থেকে মানুষটার ব্যাক্তিত্বের পখরতা দেখে একটু দুর্বলতা তো সৃষ্টি হয়েছে কোথাও। কিন্তু প্রহেলিকা এগুলো পাত্তা না দিয়েই রুমের দিকে পা বাড়ালো।রুমে গিয়ে দে চাঁদ গুটিশুটি হয়ে বিছানায় শুয়ে আছে।
প্রহেলিকা এগিয়ে যায়।চাদর টা বোনের উপর টেনে দেয়।কপালে হাত বুলিয়ে দেয়।বড্ড আদর করে যে এই পিচ্চিটাকে।পিচ্চিটার অনেক ভালো থাকুক সেটাই চায় সে।বোনের পাশেই শুয়ে পড়লো প্রহেলিকা।
____________________________
সকালে,
হৃদি চাঁদকে ডাকছে- ঐ চাঁদুজান ওঠে পর দেখ না কে এসেছে তাড়াতাড়ি ওঠ।
চাঁদের কোনো হেলদুল নেই।সে উল্টো ফিরে আবার ঘুম।হৃদি না পেরে চাঁদকে হেঁচকা টানে উঠিয়ে দরজার কাছে নিয়ে গেলো।
চাঁদ ঘুমঘুম চোখে সোফায় বসে থাকা মানুষ গুলোকে দেখে ঘুম উবে গেলো।কারণ সোফায় বসে আছে……..
#সন্ধ্যায়_সন্ধি
#মম_সাহা
পর্বঃ৬
চাঁদ ঘুম থেকে উঠেই দেখে সোফায় রাহা আর রাহার মা বসে আছে।রাহা হলো তেজের ফুফাতো বোন।চাঁদের জনম কালের শত্রু।
চাঁদ হৃদিকে ধাক্কা দিয়ে বলল-
এই শাঁকচুন্নি কি দেখানোর জিনিস গাঁধি!আমার এত সুন্দর ঘুম ভাঙ্গালি পেত্নি দেখানোর জন্য। সারারাত পর সকালে ঘুমালাম তাও তোর সহ্য হলো না।এটা বলে চাঁদ মুখ চেঁপে ধরলো।মুখ ফসকে রাত জাগার কথা টা বলে ফেলেছে সে এবার হৃদি তাকে ছাড়বে না।
হৃদিও রাত জাগার কথা শুনে চাঁদের দিকে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বলে-
“কিরে তুই রাত জেগেছিস কেনো?কি ব্যাপার বলতো?
চাঁদ পড়ে গেলো মহা মুশকিলে।তার এখনই মুখ ফসকাতে হলো।চাঁদ কথা কাটানোর জন্য বলল
-আরে তুই ও না কি বলছিস।জানিস না আমি ঘুম থেকে উঠলে উল্টাপাল্টা বকি।বাদ দে আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
হৃদি কিছু বলার জন্য উদ্যত হলেই চাঁদ তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমে চলে যায়।
চাঁদ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে হৃদি ঘরে নেই।সে হাফ ছেড়ে বাঁচলো।তাড়াতাড়ি চুল না আঁচড়ে বাহিরে গেলো না হয় রাহার মা কথা শুনাতে পিছপা হবেন না।
চাঁদ বাহিরে এসেই রাহার মাকে সালাম দিলো।রাহার মা সালামের উত্তর না দিয়েই চাঁদের মা নীলিমা বেগমকে বললেন
– আজকাল কার মেয়েরা কেমন হচ্ছে।এত বেলা করে কেউ ঘুম থেকে উঠে।এত বড় মেয়ে কেমন একটা গেঞ্জি আর প্যান্ট পড়ে আছে।এত বড় মানুষ কি চুলে দুই বেনী করে কখনো।আপা মেয়েকে শাসন করুন।আরো কিছু বলতো কিন্তু এর মাঝেই হাজির হয় তেজ যার জন্য চুপ হন রাহার মা।
তেজ বাহির থেকেই রাহার মায়ের কথা গুলো শুনে চাঁদের ফ্লাটে আসে।কারণ জানে সে না আসলে এ মহিলা আরো শুনাবে কয়েকটা কথা চাঁদকে।
চাঁদ তেজকে আড় চোখে দেখেই ডাইনিং টেবিলের দিকে চলে যায়।কারণ সে জানে এখন আর রাহার মায়ের মুখ দিয়ে একটা কথাও বের হবে না।
চাঁদের মা চাঁদকে দুটো পরোটা প্লেটে বেড়ে দিতেই চাঁদের চিৎকার। কারণ সে এত পরোটা খেতে পারবে না।তেজ দেয় এক ধমক তাই সে দুটো পরোটা নিয়েই নিজের ঘরে চলে যায়।এখানে থাকলে রাহার মা হয়তো আরো কথা শুনাবে আবার তেজ ভাইয়া ও পরোটা সব গিলাবে তাই সব কিছু ভেবেই সে রুমে চলে যায়।
আর অন্যদিকে তেজের চাঁদকে এ রুপে দেখে হুশ চলে গেছে। বরাবরই সে চাঁদের এই ঘুুমু ঘুমু মুখ আর ঢোলা জামা প্যান্ট আর দুই বেনীতে ঘায়েল হয়।তবে চাঁদের এ রূপ কমই দেখা যায়। শুধু সকাল আর রাত বাদে।
তেজ তার ফুপু আর খালামনিকে কথা বলতে দেখে চাঁদের রুমে চলে যায়।
আর এদিকে চাঁদ খাবারের প্লেট টেবিলের উপর রেখে সোফায় হেলান দিয়েই ঘুম।তেজ যে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে তার খবরই নেই।
আর অন্য দিকে তেজ চাঁদকে এ অবস্থায় দেখে হেসে ফেলে।চাঁদের সামনে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে ডাকে- জান ওঠো,খাবার কমপ্লিট করে আবার ঘুমিয়ো।
নিজের মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে ঘুম হালকা হয়ে এলো চাঁদের।পাশ ফিরে দেখে তেজ বসে আছে তার থেকে একটু দূরে আর ফোন হাতে।চাঁদ মনে মনে বললোঃ আমি কি স্বপ্ন দেখছিলাম এতক্ষণ? তেজ ভাইয়া তো জীবনেও মাথায় হাত বুলাবে না জান তো দূরে থাক।
অন্য দিকে তেজ চাঁদকে নড়তে দেখেই একটু দূরে গিয়ে বসলো। যা চাঁদ বুঝেও নি।চাঁদকে নিজের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে তেজ মনে মনে হেসে উঠলো ভাবলো এবার চাঁদকে একটু লজ্জা দেওয়া যাক।যেমন ভাবনা তেমন কাজ।সে চাঁদকে বললোঃ
-আমাকে দেখা হলে খাবারটা ফিনিশ কর চাঁদ।
– আপনাকে আমি দেখছি কোথায় আমি তো এমনি তাকিয়ে ছিলাম, থতমত খেয়ে বললল চাঁদ।
– এমনি তাকাছ আর যেমনি তাকাছ তাকিয়ে তো ছিলি।
– না তো।মানে ইয়ে,
– আচ্ছা হয়েছে এবার থাম আর খাবার খা।
– আমি ঘুমাব এখন।পরে উঠে খাবো।
– আর একটা কথা বলবি তো চড় পরবে।এখানে আসো। এটা বলেই তেজ পরোটার একটু ছিড়ে চাঁদের মুখের সামনে ধরলো।
-চাঁদও কিছু না বলে মুখে পুরে নিলো।
একটা পরোটা খাওয়ার পরই চাঁদ আর খাবে না বলেই শুয়ে পরে।তেজও আর জোড় করে নি।
চাঁদ আবারো তলিয়ে গেলো গভীর ঘুমে। কত দিন পর সে নিশ্চিন্তে ঘুমানোর সুযোগ পেলো।
____________________
এখন বিকেল নেমেছে আকাশে,,চাঁদ দুপুরে আর খেতে উঠে নি।সবাই তেজেদের বাসায় আড্ডা দিচ্ছে।চাঁদ আর তেজ শুধু চাঁদদের বাসায়।তেজও আজ অফিস যায় নি।ওদের বাসায় অতিরিক্ত মানুষ দেখে সে আহানের রুমে এসে ঘুমিয়েছে।
চাঁদ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলো। এখন এক কাপ চা হলে মন্দ হয় না।তাই সে রান্নাঘরের দিকে অগ্রসর হলো।যাওয়ার পথে আহানের রুমে তেজকে দেখে তার আর বুঝতে বাকি নেই যে তেজ ও ঘুমাতেই আসছে এ বাসায়। কিন্তু আজ তেজ ভাইয়া অফিস গেলো না কেনো?
সব ভাবনা বাদ দিয়ে চাঁদ দুকাপ চা বানিয়ে তেজের রুমে গেলো।ততক্ষনে তেজও ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে বের হয়েছে।চাঁদকে দেখেই মিষ্টি হাসি উপহার দিলো চাঁদও এর পরিবর্তে হাসলো।
চাঁদ তেজের দিকে চা এগিয়ে দিলো।তেজ খুশিই হলো।দুজনই চা এ চুমুক দিলো।তখনই চাঁদের ফোন সশব্দে বেজে উঠলো।চাঁদ ফোন আনতে রুমে গেলো।
প্রায় পনেরো মিনিট পর ফিরলো।একবারে রেডি হয়ে।বাসার জামা বদলানো চুল গুলো কাঠি দিয়ে বাধাঁ।তেজ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলোঃ কোথায় যাচ্ছিস এই বিকালে?
– আসলে ভাইয়া নীলের সাথে একটু শপিং এ যাবো। নীল ওর আম্মুর জন্য শাড়ি কিনবে তো তাই।
– নীল কে?ওহ্ ঐ যে তোর বেষ্ট ফ্রেন্ড টা।তো তোর ওর সাথে গিয়ে কী কাজ।খালামনি জানে যে তার মেয়ে এই বিকেলে এক ছেলের সাথে ঘুরতে যাবে।
– হ্যাঁ ভাইয়া জানে। মুখ ভেংচি দিয়ে বললো চাঁদ।
তেজ ভ্রু কুচকে বলে উঠে,- আমিও যেতাম কিন্তু আমার আজ বাসায় কাজ আছে।
– ভালো হইছে কাজ আছে।এই বলে ভৌ দৌড় চাঁদ।
তেজও হেসে ফেলে।তারপরই কাকে জেনো একটা কল লাগায় আর চাঁদের খেয়াল রাখতে বলে।
______________________________
শপিং করে ফিরেছে চাঁদ।নিজের বাসা ফাঁকা দেখে অবাক হয় সে।এতক্ষণ তো ঐ বাসায় থাকার কথা না।সে ফ্রেশ না হয়েই খালাদের ফ্লাটে যায়।
সেখানে গিয়ে চাঁদ অবাক। পুরো বাসা মানুষে গিজগিজ করছে।খাবার দাবারের আয়োজন চলছে।সে তো অবাক।আজ কোনো অনুষ্ঠান আছে সেটাই সে জানে না।
তার মায়ের কাছে যায় দৌড়ে কি অনুষ্ঠান জানার জন্য। কিন্তু যা শুনে তার জন্য প্রস্তুত ছিলো না চাঁদ।আজ ছেলে পক্ষ আসবে দেখতে পছন্দ হলে আংটি পরিয়ে যাবে।
চাঁদ অবাক হয়ে বলল- তোমরা একবারও কেউ আমাকে বলার প্রয়োজন বোধ করলে না।আর তেজ ভাইয়া জানে সব?
চাঁদের মা – হ্যাঁ তেজ জানে বলেই তো অফিস গেলো না।সব ব্যবস্থা তো ও ই করছে।আর আজ তোর আব্বু ও আসবে ওনার কাজ শেষ।
চাঁদের অভিমান জমলো সবার উপর। এত বড় খবর কেউ তাকে জানালো না এমনকি তেজও।তাহলে কি তেজ,,,,,,
চলবে,,,,,,