সীমাহীন ভালোবাসার নীড় পর্ব -০৯

#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড় ২
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৯
,
,
,
,
জ্ঞান।ফিরতেই হাত পা বাধা অবস্থায় নিজেকে পেয়ে রেগে গেলো আদ্রি।চোখের পর্দায় ভেসে উঠলো জ্ঞান হারানোর পূর্বের কিছু মহুর্র।

ধূসর রঙ্গের নেশালো চোখের মালিক কে চিনতে খুব বেশি সময় লাগেনি আদ্রির। কিছু ক্ষন শান্ত থাকলেও কিছু মহূর্ত অতিক্রম হতেই ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দেয় সে নির নামক ব্যাক্তিটাকে।নির আলতো হাসে ঠোঁট মুছে পকেটে দুই হাত পুরে ডেভিল এক স্মাইল দিয়ে এগিয়ে আসে আদ্রির দিকে সেটা দেখে বাকা হাসে আদ্রি

—উফফ বার্বিডোল দেটস নোট ফেয়ার কেবল ই তো একটু ফিল আসা শুরু হয়েছিলো ওমনি দিলা। রোমান্সে ডিস্টার্ব করলে নেক্সট জেনারেশান কেমন আনবো বলো তো

নির এর লাগামহীন কথায় চোখ মুখ শক্ত হয়ে গেলো আদ্রির ইচ্ছা করছে এক ঘুষিতে নির এর খারা নাক টা ভেংগে রক্তাক্ত করে দিতে।

—এই সব অসভ্যমার্কা কথা নিজের সো কোল্ড বেড পার্টনার দের বলবেন আমি আপনার ওই সব প**** মেয়ে দের মতো নই যে আপনার এক।ইশারায় আপনার বিছানায় যাবে

—ইকজেকলি ইউ আর নোট মাই ওয়ান ডে বেড পার্টনার। আই ওয়ান্ট ইউ লাইফ লং এজ মাই বেড পার্টনার

রাগে থর থর করে কাপতে শুরু করলো আদ্রি।নির এর মুখে লেগে থাকা হাসিটা তার মোটেও সহ্য হচ্ছেনা

—মুখে লাগাম টানেন মিস্টার চৌধুরী নয়তো আপনার লাশ ও পাবেনা আপনার পরিবার

পরিবার শব্দটা শুনে হাসলো নির সে হাসিতে অবাক হলো আদ্রি রাগ টা কেমন যেনো উবে গেলো। নির এর হাসিটে স্পষ্ট কষ্ট হারানোর বেদনা। এই কষ্ট আদ্রির থেকে ভালো আর কে বা চিনবে।

—পরিবার শব্দ টা আমাদের জন্য নই বার্বিডোল।

ধুক করে উঠলো আদ্রি বুকের বাম পাশটা দম বন্ধ হয়ে আসার জোগার শরীর অতিরিক্ত মাত্রাই কাপতে শুরু করলো। হঠাৎ নিজের টেনে আদ্রিকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো। ঘটনা এতো দ্রুত ঘটে গেলো যে আদ্রিতা এর বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারলোনা। গলায় চিন চিন করতেই নির কে ধাক্কা দিয়ে সরায় দিলো দৃষ্টি গেলো নির এর হাতের ইঞ্জেকশন এর সিরিজ এর দিকে তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো পুনরায় ধোকা।

কিছু মহূর্ত অতিবাহিত হওয়ার পূর্বেই জ্ঞান শুন্য হয়ে পরে গেলো আদ্রি।

বর্তমানে,,
ক্যার ক্যার শব্দ তুলে দরজা খুলতেই আলোর ছোটা এসে পড়লো আদ্রির মুখে। অন্ধকার ঘরে হঠাৎ আলোর ছোটা পড়তেই চোখ মুজে নিলো আদ্রি। ধীরে ধীরে চোখ খুলতেই দৃষ্টি পরলো উদম শরীরের নির এর উপরে চোখ অন্যদিকে ফিরিয়ে আনমনেই বলে উঠলো

—নির্লজ্জ

শব্দটা শ্রবণ হতেই নির এর লাল খয়েরী ঠোঁট জোড়া আপন মনেই বেকে গেলো।যাকে বলা হয় বাকা হাসি।

—আমি নির্লজ্জ আর আপনি কি মিস আদ্রি চোরের মতো তো ঠিক তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন

নির এর এমন ত্যাড়া কথা শুনে জ্বলে উঠলো আদ্রি নির এর দিকে তাকিয়ে তেজী কন্ঠে বলে উঠলো
—মৌটেও আমি আপনার দিকে আড় চোখে তাকায় নি মিস্টার অভদ্র

—এখোন সরাসরি দৃষ্টি দিচ্ছো বহুত ধান্দাবাজ মেয়েতো তুমি

আদ্রি আর কিছু না বলে হাতের বাধন খুলতে শুরু করলো নির আরামসে কফির মগে চুমুক দিতে দিতে কান্ড দেখতে লাগলো।নির ভেবেছিলো আদ্রি হয়তো ছুটতে পারবেনা কিন্তু তাকে ভুল প্রমান করে আদ্রি বাধন খুলে পাশে থাকা ফ্লাওয়ার বাজ ভেংগে নির এর গলাতে ঠেকালো। সামান্য আচর লেগে নির এর গলার চামড়া কেটে রক্ত বেরিয়ে পড়তে শুরু করলো সেদিকে চোখ যেতেই আখিদ্বয় মুঝে নিলো আদ্রি।
সাথে সাথে নির হাত ঘুরিয়ে আদ্রির পিঠ নিজের বুকের সাথে ঠেকিয়ে দাড় করালো আলতো হাতে ভাংগা কাচের টুকরো ফেলে দিলো।আলতো হাতে আদ্রির চুল গুলো পিঠ থেকে সরিয়ে আদ্রির ঘাড়ে নিজের অধর জোড়া স্পর্শ করতেই কেপে উঠলো আদ্রি অদ্ভুদ শিহরণে সেখানেই থমকে গেলো সে।

ধীরে ধীরে নির এর হাত যেয়ে ঠেকলো আদ্রির কোমড়ে।চোখ জোড়া মুঝে নিলো আবেশে। এক টানে আদ্রিকে নিজের দিকে ফিরিয়ে আদ্রির গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। হঠাৎ করে আদ্রিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে চলে গেলো রুম থেকে। আদ্রি ধপ করে বসে পড়লো ফ্লোরে। নিজের চুল নিজে খামচে ধরে কেদে উঠলো।

হুট করে তার মোবাইলের ম্যাসেজ টোন বেজে উঠতেই আশেপাশে দৃষ্টি দিতেই তার চোখ গেলো টেবিলের উপরে রাখা ফোনের উপরে নিজেকে শান্ত করে ফোন হাতে নিয়ে ম্যাসেজ ওপশেন ওন করতেই চোখে পড়লো ড্যানির ম্যাসেজ

—ম্যাম আপনি দ্রুত কোথাও লুকিয়ে পড়েন কিছুদিনের জন্য নিহাল এবং নাহিদ খান আপনাকে খুজছে হন্য হয়ে এই মহূর্তে তাদের সামনে না পড়াটাই শ্রেয়। কারন নিলি ম্যাম এর মৃত্যুর খবর তাদের কানে পৌছে গেছে।

ম্যাসেজ টা পড়তেই হাসলো আদ্রি। সে জানে নিহাল এর পাওয়ার তার থেকে বেশি এই মহূর্তে। কিন্তু ভয়ে সে নিহাল এর থেকে লুকিয়ে থাকার মমতো ভিতু মেয়ে সে নয়। সে এই জন্য এখনো নিহাল আর নাহিদ কে কিছু।করে নি কারন সে চায় আগে তাদের পাওয়ার পজিশন টাকা কেড়ে নিয়ে তাদের নিশ্ব করে দিতে।সে টাকা পাওয়ার পজিশনের জন্য এতো কিছু আগে সেগুলো ধূলিসাৎ না করে মারতে চায় না সে।

আদ্রি বেরুতে নিলেই তার সামনে এসে দাঁড়ায় রিয়াজ
—নির ভাই তোমাকে এটা পড়ে নিতে বললো

—আপনার নির ভাইকে যেয়ে এটা দিন আমি এই মহূর্তে এখান থেকে যেতে চায়

—নির ভাই নিজের শিকার এতো সহজে যেতে দেন না আর না। নিজের জিনিসের উপর অন্য কারো আঘাত সহ্য করেন এই মহূর্তে বাহিরে যাওয়া তোমার জন্য সেফ না নিহাল চৌধুরী লোক তোমাকে খুজছে হন্য হয়ে।

—আমাকে মরার ভয় দেখাচ্ছেন

—উহু শুধু এটা বুঝাচ্ছি নির ভাই ছাড়া আর কেউ চেয়েও তোমাকে স্পর্শ করতে পারবেনা সে এটা হতেই দিবেনা

আদ্রি চুপ থাকলো।

—আমার বাবার শোধ আমার থেকে মিটাতে চান সেজন্যই এতো আওয়জন বুঝি নাকি আপনার ফ্যাক্টরি জ্বালানোর প্রতিশোধ।কোন অন্যায়ের শাস্তি হিসেবে এতো আয়োজন ডক্টর সাহেব

মনে মনে কথা গুলো আওড়ে ভিতরে চলে গেলো। রিয়াজ ও কিছু না বলে চলে যেতেই অত্যন্ত মিষ্টি এক যুবতী রুমে প্রবেশ করলো।

—তুমি আদ্রিতা

মিষ্টি এক গলা কানে আসতেই মাথা উঠিতে চাইলো আদ্রি। ঘন পাপড়ির আড়ালে লুকানো চোখ জোড়া মহূর্তে নজর কেড়ে নিলো আদ্রির। নিজের অজান্তেই মাথা দুলালো সে। মেয়েটা এগিয়ে এসে আদ্রির পাশে বসলো

—আমি মেহের। মেহের চৌধুরী।

আদ্রি চৌধুরী শব্দটা শুনে অবাক হলো। তার জানা মতে চৌধুরী বংশের ৩টা সন্তান নির রিয়াজ আর নওমি। মেহের নামক কোন মেয়ের কথা ত্র মানস পটে না থাকার কারণ ধরতে পারলোনা সে।

মেহের নিজের মতো কথা বলতে ব্যাস্ত কিন্তু আদ্রির সেদিকে খেয়াল নেই সে তো ব্যাস্ত হিসাব কষতে কিছু একটা আড়ালে থেকে গেছে কোন এক পাতা তার চোখের সামনে কিন্তু সে সেটা দেখতে পাচ্ছেনা নাকি সে দেখার চেষ্টা করছেনা সেটা বুঝতে পারছেনা সে।

আদ্রি বাহিরে আসতেই অবাক হয়ে গেলো এটা কোন বাড়ি না বরং ৩ তালার একটা বড় জাহাজ। যেটার অবস্থান বর্তমানে সমুদ্রের মাঝখানে।

—আমাকে শেষ করতে চান আবার আমাকে হেফাজত করার জন্য এতো আয়োজন। সত্যি নির আপনাকে বুঝা বড় দায়

—আমাকে একমাত্র বুঝার উপায় তুই মায়াবিনী আমার সবটাই যে তুমিময়।আমি এখনো তোর সেই নীড় আছি যে নীড়ে দিনশেষে এসে থেমে যেতি। হাজারো অভিযোগের পোটলা খুলে বসে পড়তি। এখনো তোর সে নীড় ওরকুম ই আছি তোর #সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড় এখনো তোর ই আছে।

জাহাজের কিনারায় দ্বাড়িয়ে উড়ন্ত চুলের অধিকারী রমণীর দিকে তাকিয়ে আপন মনেই বির বির করে বলে উঠলো কথাগুলো নির,,,

চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here