স্বপ্নের প্রেয়সী ২ পর্ব ২+৩

#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2
#ফাতেমা_তুজ
#part_2
#post_time_রাত_11_28

ঝুম দুপুর , বাইরে জুন মাসের তপ্ত রোদ্দুর তবে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে ও ঘামছে ফারাবি।
মাথায় নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। কি হতে চলেছে এবার ?
বাইরের গুমোট পরিবেশ টা যেন আর ও বেশি অসহায় করে তুলেছে ফারাবি কে।
ঝড় হওয়ার আগে যেমন নিঠাল পরিবেশ ঠিক তেমনি অবস্থা এখন।
দরজায় একের পর এক ঠক ঠক করেই যাচ্ছে রিমি।
দরজা ভেদ করে ফারাবির কর্নপাতে সে আওয়াজ পৌছাতে পারছে নাহহ।

পাশে থাকা ফোন টা বেজে চলছে অনড়গল।
ফোনের অপর পাশের ব্যাক্তি টি চরম বিরক্ত তবু ও ফারাবির ভাবনার কোনো নড়চড় হচ্ছে নাহহ।
হাঁটু তে মুখ গুঁজে আছে ফারাবি।
বুক টা ধুকপুক করছে , সব কেমন উলোট পালোট লাগছে।
সব ই তো ঠিক ছিলো হঠাৎ কেন তার আগমন হচ্ছে ?
সময় কেন এতো তাড়াতাড়ি প্রবহমান ।

ফারাবি থমথমে পায়ে হেঁটে দরজার লক খুলে দিলো।
সঙ্গে সঙ্গে হুরমুরিয়ে ঢুকে পরলো রিমি।
ফারাবির দু বাহুতে হাত রেখে একের পর এক কথা বলেই যাচ্ছে রিমি।
কিন্তু ফারাবির ধ্যান আদৌ কি আছে তাতে ?

রিমি সামান্য ভ্রু কুঁচকে ফারাবির মুখের সামনে তুড়ি বাজাতেই ফারাবি চমকে তাকালো।
ঠিক যেন পাক্কা ক্রিমিনাল।

আশে পাশে তাকিয়ে কাঙ্খিত ব্যক্তি টি কে খুঁজে হতাশ হলো ফারাবি।
অথচ তার ই মুখের সামনে দাড়িয়ে আছে রিমি।

রিমি ছোট্ট করে উচ্চারন করলো
_ এই ফারাবি।

রিমির কন্ঠস্বর ফারাবির কান অব্দি যেতেই ফারাবি মৃদুকম্পন স্বরে বলল
_ হুমম

রিমি বেশ কিছুক্ষণ ফারাবির দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে রইলো।
মেয়েটার মুখে চোখে স্পষ্ট ভয়।
যেন ক্ষুধার্ত বাঘ তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।

রিমি ফারাবির মুখে দু হাত গুঁজে দিয়ে বলল
_ কি হয়েছে তোর ? মুখ টা এমন শুকনো দেখাচ্ছে কেন ?

_ এমনি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেছি তো তাই এমন দেখাচ্ছে।

_ মিথ্যে কেন বলছিস ?

_ মিথ্যে কেন বলবো ?
হয়তো শরীর টা খারাপ লাগছে তাই।
চিন্তা করিস না ঠিক হয়ে যাবে।

রিমি মলিন হেসে বলল
_ সিউর ?

_ ড্যাম সিউর।

রিমি হালকা হাসলো সাথে ফারাবি ও।
রিমি আর ফারাবি ডিবাইনে বসে কিছুক্ষণ গল্প করলো।
ফারাবি বার বার অন্যমনস্ক হয়ে যাচ্ছে যার ফলে বিরক্ত হচ্ছে রিমি।
গসিপের সময় একজন অন্যমনস্ক সঙ্গি সব থেকে বেশি পীড়াদায়ক।

রিমি রগরগা কন্ঠে বলল
_ বোঝা শেষ, আজ আর তোর সাথে আড্ডা জমবে না আমার।

ফারাবি মলিন হাসলো। রিমি আবেগী গলা তে বলল

_ নিজের খেয়াল রাখিস জানু।
হঠাৎ ই কেন এমন বিহেভ করছিস তুই ?
ভাইয়া আসবে এতো বড় করে পার্টি হবে আর তুই কি না অসুস্থ হয়ে বসে আছিস।

ফারহানের কথা স্মরণে আসতে ই মৃদু কেঁপে উঠলো ফারাবি।
ভয় যেন গলায় এসে আটকে রয়েছে।
বহু কষ্টে ছোট্ট করে উচ্চারন করলো

_ একটু রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবো।

রিমি মিষ্টি হেসে ফারাবির দু বাহু টেনে নিলো।
ফারাবি মুচকি হাসলো , মেয়েটা পাগল পুরো।

রিমির ফোন বাজতেই রিমি চলে গেল।
ফারাবি দরজা লক করে বসে রইলো।
হঠাৎ ই তার ফোনে ম্যাসেজ এর টুং করে আওয়াজ হলো।
ফারাবি সামান্য চমকে ভ্রু যুগল কুঁচকে নিলো।
এই অসময়ে কারো সমাগম ই ভালো লাগছে না তার।
তবুও একবার দেখা উচিত তাই অনিচ্ছা থাকা সত্যে ও ফারাবি ফোন অন করলো।
আননোন নাম্বার থেকে ম্যাসেজ দেখেই ফারাবির বুক চমকে উঠলো।
আননোন হলে ও এই নাম্বার বড্ড চেনা তার।
কারন প্রতি বছর নিয়ম করে ম্যাসেজ আসে এই নাম্বার থেকে।
কিন্তু গত নয় মাস যাবত কোনো ম্যাসেজ আসে নি এই নাম্বার থেকে।
ফারাবির বুক ধুকপুকানি বেড়ে গেল।
হাত দুটো কাঁপছে, ফোন হাতে নিলে ও লক খুলতে পারছে না সে।
কি আশ্চর্য নিজের ফোনের লক নাম্বার ই ভুলে গেছে সে।
ফোনটা বেডের উপর ছুঁড়ে ফেলে দৌড়ে বাথরুমে চলে গেল ফারাবি।
মুখে অনবরত পানির ছিটে দিতে লাগলো।
চোখ দুটো কেমন ঘোলাটে দেখাচ্ছে।
ফারাবি দু হাতে চুল খামচে ধরে বসে পরলো।
কষ্টের পাহাড় ভারী হচ্ছে, বেশ তো ছিলো সে তাহলে কেন ফিরে আসছে ফারহান ?
কোন জ্বলন্ত শিখায় জ্বালাতে চায় তাকে ?

ফারাবি নিজেকে যথাসম্ভব স্বাভাবিক রেখে বাথরুম থেকে রুমে চলে আসলো।
ফোনের লক খুলে ম্যাসেজ চেইক করতেই দু চোখ বেয়ে অঝোরে বর্ষন নেমে গেল।

কয়েক ওয়ার্ড এর ছোট্ট ম্যাসেজ টা ফারাবির চিত্ত কাঁপিয়ে তুলেছে।

ফারাবির হাত থেকে ধুম করে ফোন পরে গেল।
বেডের কাছে হাঁটু ভেঙ্গে বসে পরলো ফারাবি।

ফোনের স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে আননোন নাম্বার থেকে ফারহানের সেই ম্যাসেজ

” Be prepared for punishment ”

*

দুপুর তিনটের সময় সিঙ্গাপুর টু বাংলাদেশের স্পেশাল ফ্লাইট ল্যান্ড হয়েছে।
এয়ারপোর্ট এর কাছে দাঁড়িয়ে আছে ক্রস ব্ল্যাক রঙের 5 টি গাড়ি সাথে নেভি ব্লু রঙের একটি গাড়ি।
হোয়াইট রঙের ফরমাল ড্রেস আপ এ পাঁচ জন লোক ঝুঁকে আছে তাদের কাঙ্খিত ব্যক্তি টির জন্য।
3’20 মিনিট হতেই এয়ারপোর্ট এর মেইন গেট দিয়ে বের হয়ে আসলো ফারহান।
ব্ল্যাক শার্ট এর ওপরে ব্লু সুট সাথে ব্যান্ড এর ব্লু প্যান্ট চোখে রোদ চশমা হাতে Rolex submariner ওয়াচ।
ঠিক যেন কোনো দেশের রাজকুমার।
চুল গুলো এক সাইট করে জেল দিয়ে সেট করা।
ফারহান কে বের হতে দেখেই পাঁচ জন লোক ই দৌড়ে ফারহানের কাছে গেল।
ফারহান বাঁকা হাসলো , এই ঘায়েল করা হাসি তে মুগ্ধ হয়েছে আশে পাশের শত নারী।
ড্যাপ ড্যাপ করে চেয়ে আছে ফারহানের দিকে।
লোক গুলো এসে ফারহান কে ওয়েলকাম জানালো।
ফারহান কে ঘিরেই সবাই হেঁটে চলেছে।
পার্কিং এর সামনে আসতেই একজন লোক বলল
_ স্যার আমি ড্রাইভ করবো ?

ফারহান ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল
_ নো। তোমরা বাড়ি ফিরে যাও।
তার আগে এয়ারপোর্ট থেকে সমস্ত কিছু কালেক্ট করে নিও।

_ ওকে স্যার। কিন্তু আপনি যাবেন নাহহ ?

ফারহান রহস্য ময় হাসি দিয়ে বলল
_ obviously .
বাট এখন নাহহ সন্ধ্যা তে।
এতো জাঁক জমক করে আসলাম এভাবে যাওয়ার জন্য নাকি।
তোমরা যাও কাউকে বলার দরকার নেই আমি যে এখনি এসেছি।
সবাই জানে 7 টায় ফ্লাইট ল্যান্ড করবে।

_ ওকে স্যার।

ফারহান ব্লু কার টাতে উঠে বসলো।
লোক গুলো চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো।
ফারহান পকেট থেকে একটা চেক বের করে দিয়ে কার স্টার্ট করলো।
মুহুর্তেই ধুলো উড়িয়ে কার চক্ষু দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেল।

ফারহান মুখে রহস্যময় হাসি টানিয়ে কার ড্রাইভ করতে লাগলো।
একটা ফ্লাওয়ারের দোকানে এসে ব্রেক কষলো।
অর্কিড ফুল আর ব্ল্যাক রোজ কিনে নিজ হাতে সাজালো।
এই ফুল গুলো শুধু মাত্র তার প্রেয়সীর জন্য স্পেশাল তো হতেই হবে।
ফারহান বাঁকা হেসে আবার গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগলো।
আপন মনে আওরাতে লাগলো
_ খুব বড় ভুল করেছিলি তুই তার জন্য ও কিচ্ছু বলি নি।
কিন্তু এবার যে ভুল করতে চাইছিস সেটা ভুল নাহহ অন্যায়।
আর এই অন্যায়ের জন্য পানিসম্যান্ট তো পেতেই হবে জান।
সবাই দেখবে ফারহান তার ভালোবাসার জন্য কতো দূর যেতে পারে।

এই সব ভাবতে ভাবতেই ডেভিল স্মাইল দিলো ফারহান।

*

বিকেল থেকে রিমি বসে আছে ফারাবির কাছে।
এখন সন্ধ্যা হতে চললো , কিন্তু ফারাবি রেডি হওয়া তো দূরে থাক রুমের বাইরে যেতে ও নারাজ।
ফারাবির এমন উদ্ভট কান্ডের কারন কারোই বোধগম্য হচ্ছে নাহহহ।

রিমি বিরক্তি নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
ফারাবির কোনো হেলদোল হলো না তাতে।
মিনিট পাঁচেক পর রিমির সাথে মনিকা আসলো ।
মনিকা কে দেখে সামান্য হাসলো ফারাবি।
কিন্তু মনিকা গম্ভীর কন্ঠে বলল
_ এই সব কি ফারাবি?
এমন করছিস কেন ? সকাল থেকে নিজেকে ঘর বন্দী করে রেখেছিস। এখন আবার পার্টি তে যেতে চাইছিস নাহহ।

_ ভালো লাগছে না আপু। তোমরা যাও নাহহ আমি ঘরেই থাকি ।

মনিকা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলল
_ এখনি রেডি হবি তুই। না হলে ভাববো আমাকে ভাবি হিসেবে পছন্দ নয় তোর।

ফারাবি ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে রইলো।
এরা কেন বুঝতে চাইছে নাহহ বাইরে বেরোলেই বিপদ।
এই মহাবিপদের সম্মুখীন হতে চায় নাহহ ফারাবি।

মনিকা ফারাবির দু বাহু তে হাত গুঁজে বলল
_ লক্ষ্মী বোন টি আমার , তোকে ছাড়া ভালো লাগছে না রে।

ফারাবি মলিন হাসলো।
মনিকা আর রিমি প্রশস্ত হাসতেই ফারাবি বলল
_ যাও তোমরা আমি রেডি হয়ে আসছি।

রিমি নাছোড় বান্দা কারন সে জানে ফারাবি আসবে নাহহ।

ফারাবি গোমড়া মুখ করে বলল
_ পাক্কা প্রমিস আসবো আমি।

_ পাক্কা তো ?

_ আরে হ্যাঁ এবার যা প্লিজ চেন্স করতে হবে তো।

_ ওকে কিউটি, সাজ গোঁজ টা কম করিস প্লিজ না হলে তো আজকের পার্টির মেইন আকর্ষণ ফারহান ভাইয়া কে ছেড়ে সবাই তোকেই দেখবে।

ফারহানের নাম শুনেই ফারাবির মুখ টা ছোট হয়ে গেল।
ফারাবি মুখ গোমড়া করে এক প্রকার টেনে ই দুজন কে বের করে দিয়ে ডোর লক করে দিলো।
সব কিছু অসহ্য লাগছে ওর।
না পারছে গিলতে আর না পারছে উপ্পরে ফেলতে।
বিষাক্ত এ জীবনে ফারহান নামের অভিশাপ থেকে কখনো কি মুক্তি পাবে না ও ?

ফারাবির ভীষন কান্না পাচ্ছে , কেউ ওর পরিস্থিতি বুঝতে পারছে নাহহ।
কেউ নেই তার পাশে সব কেমন ধোঁয়াশা লাগছে।

*
জয়েন করুন আমার গ্রুপ এ এবং ফলো করুন পেজ এ
👇
Fatema’s story discussion
&
Fatema tuz – ফাতেমা তুজ

#বোনাস_পার্ট

কালো হুডি পরে আপাদমস্তক ঢেকে বাড়ির পেছনের গেট দিয়ে ঢুকছে ফারহান।
মেইন গেটের কাছে মানুষে ভরপুর তারউপর চেকিং গার্ড ও বসানো হয়েছে।
বাসার সামনে দিয়ে যাওয়া এক প্রকার ইমপসিবল।
ফারহান ব্লু টুথ অন করে একজন কে কল করে বলল
_ ফাস্ট পেছনের সিঁড়ি টার লক খুলে দাও।
আমি ডান বলার সাথে সাথেই আবার অফ করে দিবে।

_ ওকে স্যার।

মুহূর্তেই বাসার পেছনের সিঁড়ির লক খুলে গেল।
ফারহান যথাসম্ভব দ্রুত উঠে গিয়ে ডান বলে দিলো।
সঙ্গে সঙ্গে আবার লক হয়ে গেল।
ফারহান সস্তির নিশ্বাস ফেলল।
বাঁকা হেসে এগিয়ে যেতে লাগলো।

ব্ল্যাক রঙের সিফন জর্জেট এর উপর পুতি বসানো শাড়ি লেহেঙ্গা পরেছে ফারাবি।
যার দরুন চিক চিক করছে পুরো শরীরে।
দুপুরের দিকে একটা শপিং ব্যাগ ধরিয়ে দিয়েছেন ফারনাহের মা মিসেস রোমা চৌধুরী।
হালকা মেইক আপ করে চুল গুলো ডিজাইন করে খোঁপা করে নিয়েছে ।
পায়ের স্লিপার খুলে হিল পরতে যেতেই রুমের লাইট অফ হয়ে গেল।
ফারাবি সামান্য চমকে উঠলো।
তিনটে লাইন অন করা ছিলো , সব গুলো এক সঙ্গে ই কি করে কেঁটে যেতে পারে।
তাছাড়া বারান্দার লাইট টা ঠিক ই জ্বলছে তার মানে লাইনে কোনো সমস্যা হয় নি।
ফারাবি মাথা থেকে সমস্ত চিন্তা ঝেরে নিয়ে ডিবাইন থেকে ফোন নিতে যেতেই লম্বা শক্ত পোক্ত এক টা হাত পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো ওকে।
আচমকা কেউ একজন ফারাবি কে এভাবে জড়িয়ে ধরায় ফারাবি চিৎকার করে উঠলো।
কিন্তু সাউন্ড প্রুফ রুম হওয়ায় সে আওয়াজ চার দেওয়ালেই আটকে গেল।

ফারাবির বুকের ভেতর ধুকপুক করছে।
শক্ত হাতের সপর্শ গাঢ় হতেই ফারাবি চমকে উঠলো।
কড়া পারফিউম এর গ্রান নাকে আসতেই ফারাবি গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল।
ফারাবির ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিচ্ছে তাকে জড়িয়ে আছে ফারহান।
চোখ ফেটে কান্না আসতে চাইছে কিন্তু কি আশ্চর্য চোখ থেকে এক ফোঁটা পানি ও পরছে নাহহ ওর।

ফারহানের হাত ফারাবির পেটের ডান সাইটে লাগতেই কেঁপে উঠলো ফারাবির সমস্ত শরীর।
ফারাবি নিজেকে ছাড়ানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টা করতে লাগলো।
কিন্তু ফারহানের এক হাতের কাছেই ফারাবির সমস্ত শক্তি নুইয়ে গেল।

ফারাবির অর্ধ উন্মুক্ত পিঠের দিকে হাত বাড়ালো ফারহান।
হালকা স্পর্শ করতেই কেঁপে উঠলো ফারাবি।
ফারাবি কে পেছন থেকে জড়িয়ে ই ঘাড়ে নাক ঘষতে ঘষতে ফারহান বলল
_ ওয়েলকাম জানাবি না আমায় ?

ফারাবির গলায় সমস্ত কথা আটকে গেছে।
ভয়ে দম বন্ধ হয়ে আসছে।
আজ ও একি রকম ভয় পায় ফারহান কে ,গত তিন বছরে ও কোনো পরিবর্তন আনতে পারে নি সে।

ফারাবির শরীর কাঁপতে লাগলো।
ফারহান বাঁকা হেসে আলতো হাতে ফারাবি কে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।
বারান্দায় থাকা লাইটের আলো আঁচড়ে পরছে ওদের দিকে।
মৃদু আলো তে ও দুজন দুজন কে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে।
ফারাবির চোখের সাথে ফারহানের চোখের চোখাচোখি হতেই ফারাবি চোখ খিচে বন্ধ করে নিল।
ফারহান আলতো হাসলো আজ ও তার প্রেয়সী সরাসরি তার দিকে তাকাতে অক্ষম।
ফারহান এক হাতে ফারাবির কোমর জড়িয়ে ধরে খানিকটা নিজের কাছে টেনে নিলো।
ফারহানের বুকের সাথে স্পর্শ লাগতেই শিউরে উঠলো ফারাবি।

ফারাবির নাকের সাথে নাক ঘষতে ঘষতে ফারহান বলল
_ ওয়েলকাম টু মাই ওয়ার্ল্ড জান।
যে যন্ত্রণা আমাকে দিয়েছিস এর শাস্তি তো তোকেই পেতেই হবে।
তিন বছর আগে ছোট ছিলি ছেড়ে দিয়েছিলাম।
এখনো কি করে একি ভুল করতে যাচ্ছিস তুই ?

ফারাবি কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল
_ ছাড়ুন আমায়।

_ এতো সহজে তো তোর মুক্তি নেই জান।

ফারাবির ঠোঁট দুটো কাঁপতে লাগলো।
ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে, শরীর ও অস্বাভাবিক ভাবে কাঁপছে।

ফারহান ধীর গতিতে ফারাবির ঠোঁটের দিকে আগাতে লাগলো।
সেটা ফারাবি স্পষ্ট অনুভব করতেই, চোখ দিয়ে দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।
ফারাবির চোখের পানি দেখে ফারহানের বুকের ভেতর মোচর দিয়ে উঠলো।
ফারাবি কে শাস্তি দেওয়ার কথা বললে ও কোনো ভাবেই যে তা সম্ভব না তা খুব ভালো ভাবেই জানে ওহ।
ফারহান আবেদনের স্বরে বলল
_ কাঁদছিস তুই তাও আমি স্পর্শ করতে যাওয়ায় ?
আমার অধিকার নেই এতে ?

ফারাবি চোখ খিচে বন্ধ করে নিল।
অধিকার কিসের অধিকার দেখাতে আসছেন ওনি ?

ফারাবি কে ছেড়ে খানিক টা দূরে সরে গেল ফারহান।
চোখ মুখ খিচে নিজের রাগ কে নিয়ন্ত্রণ করে ফোস করে শ্বাস ফেলে বলল
_ কতোটা ঘৃনা করিস আমায় ?

_ জানি নাহ।

_ কথা বলার সাহস হয়েছে দেখছি।
আগে তো মাথা নিচু করে থাকতি , চোখ তুলে তাকানোর সাহস ও পেতি নাহহ।

_ সময় বদলে গেছে।

ফারহান বাঁকা হেসে বলল
_ আচ্ছা। এডাল্ট না হয়েই সাহস বেড়ে গেছে।
তো একটা পরীক্ষা হয়েই যাক।
বয়স কতো যেন 17+, জানিস তো কতো বছরের বড়ো আমি ?
পুরো আট বছরের, আমার চোখে চোখ রাখার সাহস নেই।
পুঁচকে মেয়ে সে আবার আমার কথার উপরে কথা বলে।

ফারহান এক পা এক পা করে ফারাবির দিকে এগোতে লাগলো আর ফারাবি শুকনো ঢোক গিলে পিছাতে লাগলো।
ফারাবি ভয়ার্ত কন্ঠে বলল
_ ভয় পাই না আপনাকে।

ফারহান ঠোঁটের কোনে রহস্যময় হাসি টানিয়ে বলল
_ দেখা যাক।

ফারাবির পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।
পেছনে যাওয়ার জন্য আর এক চুল ও জায়গা নেই।
ফারহান বাঁকা হেসে ফারাবি কে টেনে নিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।
ফারাবি চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো।
ফারহানের চোখ দুটো ফারাবির দিকে ঘোর লাগিয়ে টানছে।
ফারহানের এক হাত ফারাবির কোমরে স্পর্শ করলো।
মুহুর্তেই ফারাবির সমস্ত শরীর জুড়ে শিহরন জেগে উঠলো।
রন্ধে রন্ধে শীতল তরল নেমে গেল ।
ফারাবির হাত ফারহানের বুকে আবদ্ধ আছে।
দুজনের মাঝে এক চুল ও ফাঁক নেই। অথচ ফারাবি দু হাত দিয়ে দুজনের মাঝে দুরুত্ব সৃষ্টি করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে ।
আর ফারহানের হাত ধীর গতিতে ফারাবির কোমর পেরিয়ে উপরে উঠতে লাগলো।
ফারাবির শরীর কাঁপছে, ফারহান বাঁকা হেসে ফারাবির ব্লাউজের জিপ খুলে দিলো।
ফারাবি কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল
_ ফারহান ভাইয়া প্লিজ।

ফারহান তাচ্ছিল্য হেসে জিপ লাগিয়ে দিলো।
ফারাবি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো।
ফারহান তাচ্ছিল্যর স্বরে বলল
_ ভুল কিছু করছিলাম আমি ?
আছে তোর কাছে কোনো উত্তর ?
অধিকার পেরিয়ে যাচ্ছি কি আমি?
নেই তো কোনো উত্তর , আমাকে যত ই ঘৃনা করিস না কেন আমার থেকে তোর মুক্তি নেই।
ফারহান ভালো করেই জানে তার অধিকারের দিকে কেউ হাত বাড়ালে তার কি অবস্থা করতে হয়।
গট ইট খুব খারাপ হয়ে যাবে।

ফারহান দরজার লক খুলে গটগট করে চলে গেল।
ফারাবি মেঝে তে বসে পড়লো।
ছলছল নয়নে ফারহানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
কিসের অধিকার দেখাচ্ছেন ওনি ?
কেন ফিরে আসলেন ওনি , সব ই তো ঠিক ছিলো তাহলে কেন বিষাক্ততা নিয়ে আবার ফিরে এলেন।
ফারাবি চিৎকার করে উঠলো।
সমস্ত কিছু ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে ।
নিজেকে যতটা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে ঠিক ততোটাই অস্বাভাবিক হয়ে পরছে।
এভাবে আর কতোদিন চলবে ?
#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2
#ফাতেমা_তুজ
#part_3

থম থমে মেজাজে বাগানে দাড়িয়ে আছে ফারাবি।
ওর সাথে যেই কথা বলতে আসছে তাকেই ধমকে দিচ্ছে।
অথচ ফারহানের সামনে টু শব্দ অব্দি করতে পারে নাহহ ওহহ।
পুরো বাগান টাকে এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যেন স্বপ্নপুরি।
রঙিন আলোয় ঝলমল করছে সব টা।
চারিদিকে নানান মানুষের সমাগম।
যে যার মতো ব্যস্ত , কেউ বা জুস হাত কেউ বা সেলফি নিতে।
আজকাল সেলফি হলো যে কোনো occasion এর মূল কার্য।
কাজ কম সেলফি বেশি।
ফারাবি ধুম করে শ্বাস ফেলল।
যেন ভেতর থেকে চিরে দীর্ঘশ্বাস বের হচ্ছে।

বাসার কেউ ই জানে নাহহ ফারহান যে দপুরেই এসে গেছে।
সবাই অপেক্ষা করছে ফারহানের জন্য।
ফারহান কে রিসিপ করার জন্য ফরহাদ চৌধুরী লোক পাঠিয়েছেন বেশ কিছুক্ষণ ।
একটু আগে রাফাজের সাথে ফারহানের কথা হয়েছে।
ফারহান রাস্তায় আছে , ফারাবির মাথায় আসছে নাহ ফারহানের এই রকম কান্ডের কারন।
সব কেমন গড়মিল পাকিয়ে যাচ্ছে।
বাসায় এসে ও ফারহান আবার এয়ারপোর্ট এ কেন গেল।
ফারাবির ছোট্ট মস্তিষ্কে এই শক্ত পোক্ত বিষয় টা ঢুকছে নাহ।
ফারাবি সমস্ত চিন্তা বাদ দিয়ে সবার মতো কাঙ্খিত ব্যক্তি টির জন্য ঝুঁকে রইলো।
তবে তফাত একটাই সবাই খুশি তে আর ফারাবি ফারহান কে গালি দিতে।
আধ ঘন্টায় কয়েক শ গালি দেওয়া শেষ।

হঠাৎ আতশবাজির শব্দে পরিবেশ গমগমা হতে লাগলো।
আতশবাজি শূন্যে উঠে গিয়ে ওয়েলকাম টু ডিয়ার ফারহান আকার ধারন করছে।
যার দরুন সবাই বুঝে গেল ফারহানের গাড়ি এসে পরেছে।
ফারাবি ভেঙ্চি কেঁটে বুকে হাত গুঁজে চোখ বাকিয়ে দাড়িয়ে রইলো।
সবাই চকচকে চোখে তাকালে ও ফারাবির চোখ থেকে আগুন ঝরছে।
যেন এই দাবানলে ফারহান কে ধ্বংস করে দিবে।
কিন্তু সে কি জানে এই চোখের ভয়ার্ত চাহনি তেই কবে জ্বলে পুরে ছাই হয়ে গেছে ফারহান।
ফারাবি কোনো কালেই বুঝতে পারে না ফারহান নামের হনুমান টার জন্য সবার এতো আদিখ্যেতা কেন ?

ব্লু কার থেকে ফরমাল লুকে বের হচ্ছে ফারহান।
পরনে ব্ল্যাক শুট যার একটা বোতাম ও লাগায় নি।
ভেতরে থাকা ডেমিনের টি শার্ট ভেদ করে মেদ হীন বডি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।
তার কারনে আর ও বেশি আকর্ষণীয় দেখাচ্ছে ফারহান কে।
ভ্রু টা বাকানো , ঠোঁটে রহস্যময় হাসি চোখের সানগ্লাস টা বুকে স্থান পেয়েছে।
স্লিকি চুল গুলো মৃদু বাতাসে দোল খেয়ে যাচ্ছে।
ফারহান যতো টা এগোচ্ছে ফারাবির বুক ধুকপুক ততো বেড়ে চলছে।
ফারহান কে ফুলের সংবর্ধনা জানানো হচ্ছে।
ফুল গুলো ও বেহায়ার মতো ফারহানের গায়ে লেপ্টে যাচ্ছে।
যেন ওর গাঁয়ের সাথে লেগে থাকার জন্য ওদের সৃষ্টি ।
যার দরুন ফারাবি ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
ফারহানের দৃষ্টি সবার মাঝে হলে ও মনদৃষ্টি শুধু তার প্রেয়সীর দিকেই।

ফারাবি আনমনে ফারহান কে গালি দিচ্ছে।
ফারহান বাঁকা হেসে ফারাবির কাছে এসে নিজের চুলে হাত দিয়ে মিনমিনিয়ে বলল
_ বকলে ও সমস্যা নেই।
সবটাই আমার

ফারহান আর এক মুহূর্ত না দাড়িয়ে সবার সাথে ভেতরে চলে গেল।
ফারাবি থম মেরে গেল।

ফারহান কেন তার পেছনেই পরে আছে ?
এইসবের মানে কি ?
এগুলো করে কি প্রমান করতে চায় ওনি ভালোবাসেন।
এ কেমন ভালোবাসা যার প্রতি কোনো খেয়াল ই নেই।
ভালোবাসা দেখায় অথচ তিন বছরে কোনো খোঁজ ও নেয় নি।

ফারাবি তাচ্ছিল্য হাসলো।
সে আর ভয় পাবে না ফারহান কে।
যতোটা সম্ভব ইগনোর করে চলবে।
কোনো অধিকার নেই ওনার।

ফারাবি উপর দিকে তাকিয়ে চোখের পানি আটকে ধরলো।
কিছুক্ষণ গেটের কাছেই দাড়িয়ে থেকে ভেতরে চলে গেল।

*
জয়েন Fatema’s story discussion 👈
And follow Fatema tuz – ফাতেমা তুজ 👈

অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে।
ফারহান সবার সাথে দাড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলছে।
কিছু মেয়ে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে ওকে।
ফারাবি ভেঙ্চি কেঁটে সেখান থেকে চলে গেল।

যেতে যেতে একা একাই বির বির করতে লাগলো।
_ ভাব দেখলে আর বাঁচি নাহহ।
উফফ আসছেন কোন নবাবপূত্রুর রে। যত্তসব এই বজ্জাত হনুমান টাকে নিয়ে সবাই নাচা নাচি শুরু করে দিয়েছে।
ইচ্ছে তো করে বেটার ঘাড় টা ধরে

বাকি টুকু আর বলতে বলতে পারলো নাহহ।
তার আগেই ফারহান এসে ফারাবি কে হেচকা টান মেরে বাড়ির পেছনের দিকে নিয়ে গেল।
একটু দূরে কিছু মানুষ দাড়িয়ে থাকলে ও ফারাবি কিছু বলতে পারছে নাহহ।
কেউ ওদের এভাবে দেখলে ও বিপদ।
পুরো অনুষ্ঠানে ই কেলেঙ্কারি রটে যাবে।
ফারাবির ছোট্ট মস্তিষ্ক ভয়ে নেতিয়ে যাচ্ছে।
সামনে ও বাঘ পেছনে ও বাঘ কি করবে ওহহ।
ফারাবি এক হাত দিয়ে ফারহানের হাত ছাড়াতে ব্যস্ত।
কিন্তু বরাবরের মতোই ব্যর্থ সে।
ফারাবি কে টেনে বাসার একদম পেছনে নিয়ে এসেছে।
এখানে কোনো মানুষ নেই , একটু দূরে লাইট জ্বলে আছে।
যার দরুন সব কিছু স্পষ্ট।

ফারহান ফারাবি কে ছিটকে ফেলল।
ফারাবি নিজেকে সামলে নিয়ে ফারহানের দিকে দৃষ্টি দিয়ে দাড়িয়ে রইলো।
ফারহানের চোখ দুটো রক্তবর্ন ধারন করেছে।
সাথে রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে যাচ্ছে।

ফারহানের দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেল ফারাবি।
জড়োসড়ো হয়ে দাড়িয়ে রইলো।

ফারহান দাঁত কিড়মিড় করতে করতে বলল
_ শরীরের ভাঁজ দেখানোর খুব শখ ?

ফারাবি থম মেরেই দাঁড়িয়ে রইলো।
ফারহান ফারাবির দু বাহু চেপে ধরে রগরগা কন্ঠে বলল
_ কথা আসছে না কেন ?
শরীর দেখানোর জন্য পার্টি টে এলাও করেছি তোকে ?
মসৃন তুলতুলে পেট দেখিয়ে কি প্রমান করতে চাইছিস ?
তুই খুব হট ?

ফারহানের প্রতি টা কথায় রাগ স্পষ্ট।
যেন ফারাবি কে এখনি মেরে দিবে।
ফারাবি ছলছলে নয়নে তাকিয়ে রইলো।
ফারহানের কোনো কথাই তার বোধগম্য হচ্ছে নাহহ।

ফারাবির চোখের কোন ঘেঁষে এক ফোঁটা পানি ফারহানের হাতে গিয়ে পরলো।

ফারহানের রাগ আর ও বেড়ে গেল।
ফারাবির দু বাহু আর ও শক্ত করে চেপে ধরে বলল
_ হাউ কুড ইউ ?
আমি বার বার বলি চোখ থেকে যেন এক ফোঁটা পানি না ঝরে।
তোর সাহস কি করে হয় ?

ফারাবি ভয় পেয়ে গেল , হাতে বেশ ব্যাথা পাচ্ছে এতো জোড়ে ধরেছে যে ডিজাইন করা হাতা টার ফাঁক দিয়ে ফারহানেয নখ দিয়ে খানিকটা ছিলে ও গেছে।
ফারাবি ব্যথায় কুঁকড়ে উঠলো।
ফারহানের কানে সে শব্দ যেতেই ফারাবি কে ছেড়ে খানিকটা দূরে চলে গেল।
মাথার চুল খামচে ধরে রাগ সংবরন করে ফারাবির কাছে আসলো।
ফারাবি ভয় পেয়ে খানিক টা পিছিয়ে গেল।
ফারহান অসহায় মুখ করে বলল
_আম সরি।
আমি Hurt করতে চাই নি তোকে।

তুই কেন বুঝিস নাহহ, আমার রাগ হয় যেটা সেটাই কেন করিস ?

ফারাবি ডুকরে কেঁদে উঠলো।
ও কি করেছে তার এক চুল ও বুঝতে পারছে নাহহ।

ফারহানের ইচ্ছে হচ্ছে নিজের গালে নিজেই চর বসিয়ে দিতে।
এর জন্যই তিন টে বছর দূরে ছিলো।

ফারহান শান্ত দৃষ্টি নিয়ে ফারাবির দিকে এগিয়ে গেল।
ফারাবি ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো।
ফারাবি যখন এভাবে কাঁদে তখন তার ঠোঁট গোল আঁকার ধারন করে।

ফারহান আগাতেই ফারাবি পিছিয়ে গেল।
ফারহান দু হাত দিয়ে আশ্বস্ত করে বলল
_ কাম ডাউন। আমি আর কষ্ট দিবো নাহহ।

ফারাবি তবু ও কেঁদে যাচ্ছে।
ফারহান ফারাবি কে নিজের দিকে ঘুরিয়ে হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো নখের আঁচড়ের কারনে রক্ত বের হচ্ছে।

ফারাবির হাত ধরে
পেছনের গেট দিয়ে বাসার ভেতরে নিয়ে আসলো ফারহান।
নিজের রুমে এনে দরজা লক করে দিলো।
যার কারনে ফারাবি বেশ ভয় পেয়ে গেল।
আজকাল ফারহান কে এক বিন্দু ও বিশ্বাস হচ্ছে নাহ ফারাবির। কখন কি করে বসে, নিজের রাগ দেখাতে গিয়ে তিন বছর আগে ভাবতেই ফারহানের ধমক পরলো।
ফারাবি ভয় পেয়ে চুপ হয়ে দাড়িয়ে রইলো ।
ফারহান চোখ দিয়ে ইশারা করতেই ভদ্র মেয়ের মতো বেডের উপর বসে পরলো।
এখনো একি ভাবে কেঁদে যাচ্ছে ফারাবি।
একটা সেভলন আর তুলোর বল এনে ফারাবির কাছে হাঁটু গেড়ে বসে পরলো ফারহান ।

ফারাবি নাক ফুলিয়ে অন্য দিকে মুখ করে নিলো।
ফারহান আলতো হাতে ফারাবির হাত ,তুলোর বলে সেভলন লাগিয়ে পরিষ্কার করতে লাগলো।
কাঁটা জায়গায় সেভলনের ঝাঁঝ লাগতেই ফারাবি উঁহু করে উঠলো।
ফারহান আস্তে করে ফু দিয়ে মলম লাগিয়ে দিলো।

ফারাবি চোখ মুছে উঠে চলে যেতে নিলেই ফারহান হাত আটকে ধরলো।
ফারাবি চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে রইলো।
ফারহান আলতো হেসে ফারাবির দু গালে হাত রেখে অনুযোগের স্বরে বলল
_ আম সরি।

ফারাবি মাথা ঝাঁকিয়ে চলে যেতে নিলো।
কিন্তু ফারহান হেচকা টান মেরে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।
ফারাবি শুকনো ঢোক গিলতেই ফারহান বাঁকা হাসলো।
যার কারনে ফারাবির ভয় আর ও বেড়ে গেল।
ফারাবির কোমর এক হাতে জড়িয়ে আলতো করে লেহেঙ্গার ঘেরা টা উপরে উঠিয়ে দিলো ফারহান।
ফারাবি বুঝতে পারলো ফারহান কেন এতো রাগ করেছিলো।
এখন ফারাবির বেশ লজ্জা লাগছে।
ফারহানের হাতের ছোঁয়া লাগতেই ফারাবি শিউরে উঠলো।
না চাইতে তো ফারাবির দু হাত ফারহান কে খামচে ধরলো।
ফারহান মুচকি হেসে ফারাবি কে খানিক টা উচু করে ধরলো।
দুজনের মাঝে কোনো দুরুত্ব ই নেই।

ফারহান ফারাবির নাকে নাক ঘষতে ঘষতে বলল
_ আই মিস ইউ জান।

ফারাবি চমকে তাকালো। নিজেকে ফারহানের এতো কাছে ভাবতেই লজ্জায় লাল হতে লাগলো।

ফারহানের উষ্ণ ঠোট ফারাবির চোখে ছুঁইয়ে দিতেই ফারাবি চোখ বন্ধ করে নিলো।
প্রতি টা হার্ট বিট দ্বিগুন উত্তেজনা নিয়ে চলছে।
ফারহান আবার ও ফারাবির ব্লাউজ এর জিপ খুলে দিলো।
ফারাবি চমকে তাকালো, ফারহান রাগি কন্ঠে বলল
_ পিঠের অর্ধেক অংশ তো দেখাই যাচ্ছে তাই পুরো টাই খুলে দিলাম।
ফারাবির ভীষন লজ্জা লাগছে।
এখন তার রাগ করার কথা থাকলে ও সে লজ্জায় নুইয়ে পরছে।
ফারহান জিপ লাগিয়ে দিয়ে ফারাবির খোঁপা খুলে দিলো।
সঙ্গে সঙ্গে ফারাবির ঘন চুল গুলো পুরো পিঠ জুড়ে পরলো।
ফারহান শক্ত গলায় বলল
_ চুল যেন খোলাই থাকে।
আর ডিনার কমপ্লিট করে সোজা রুমে চলে আসবি।

ফারাবি অনিচ্ছা থাকা সত্তে ও মাথা ঝাঁকালো।
ফারহান শান্ত কন্ঠে বলল
_ এবার যাহহ।

ফারাবি দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে লাগল।
কিন্তু ফারহান শক্ত গলায় বলল
_ আর একটা কথা।

ফারাবি থেমে যেতেই ফারহান ফারাবির কাছে এসে ধীর কন্ঠে ফিসফিস করে বলল
_ এই যে হাতের আঁচড় টা এটা আড়াল করে রাখিস।
না হলে পরে আমাকেই এসে বলবি আপনার চরিত্রের দোষ আছে।
এই আঁচড় অনেক কিছু বুঝায়।
আর যখন তখন লজ্জায় পরতে পারিস। বড় দের সামনে পরলে তো যাহ হবার তা হয়েই যাবে।

ফারাবি প্রথমে না বুঝলে ও পরে কথা টা বুঝতে পারলো।
ফারাবির চোখ জোড়া রসগোল্লার আকাড় ধারন করলো। ফারহানের মুখে কোনো কথা আটকায় নাহ।
ফারাবি আর এক মুহুর্ত ও দেরি না করে দ্রুত দরজা খুলে বের হয়ে গেল।
ফারাবি চলে যেতেই ফারহান বিগলিত হাসতে হাসতে বেডের উপর বসে পরলো।
মেয়েটা নিজেকে শক্ত করতে চাইলে ও পারছে না ফারহানের সামনে।
বার বার লজ্জায় আর ভয়ে নুইয়ে যাচ্ছে।

ফারহান দু হাত মেলে দিয়ে বলল
_ আই মিস ইউ জান , মিস ইউ ।
বুকের ভেতর টা কেমন যেন করে।
তোকে আগলে না রাখলে বিষাক্ত মানুষ গুলো যে তোর দিকে শক্ত নজর ফেলবে।
আর ফারহান তার জানের দিকে নজর দেওয়া পছন্দ করে নাহহ।
আর তার জন্য ই তো তোকে নিজের বুকে আগলে রাখতে চাই।

তুই শুধু আমার , খুব তাড়াতাড়ি সেটা সবাই কে জানানোর ব্যবস্থা করছি আমি।

বলতে বলতেই ফারহান রহস্যময় হাসলো।
বেশ কাঠ খড় পোড়াতে হবে, তবু ও প্রেয়সী যেন তার ই থাকে।
অবশ্য চাইলে ফারাবি কে ওর থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে নাহহ।
ফারাবি শুধুই ফারহানের।

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন ।

হ্যাপি রিডিং

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here