#হবে-কি-আমার(২)💞
#writer-Ruhi-mondal
#পর্ব_11
আকাশে আজ মস্ত বড় চাঁদ ওঠেছে,তারা গুলো পুরো আকাশটাকে সাজিয়ে তুলেছে, চাঁদের আলো জানালা গলে রুমে প্রবেশ করছে। রুমে লাল বাতি জ্বলছে বাহিরে কোলাহল পূর্ণ হলেও রুমে শুধু নিঃশ্বাসের আনাগোনা ছাড়া আর কিছুই নেই। অনু বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার দিকে। তার এমন অদ্ভূত আচরনের কারন বোঝার চেষ্টা করছে। আর অরিন্দম বা হাত নিজের কোমড়ে আর ডান হাত নিজের কপালে দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে বেশকিছুক্ষণ ধরে। অনু পিটপিট করে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই অরিন্দম তার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে কুচিতে হাত দিয়ে একটা একটা করে ঠিক করে দিতে থাকে। অনু কিংকর্তব্যবিমূঢ়ৎ সে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। অরিন্দম কুঁচি গুলো যত্ন সহকারে ঠিক করে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো। অনু চরম অবাক হয়ে বলল,
___ “এসব কি হলো?”
অরিন্দম কিছু বললো না পকেট হাতড়ে কিছু খুঁজতে লাগলো। অনু এখনও তার মুখপানে চেয়ে রয়েছে। অরিন্দমের ঠোঁটের কোনে হঠাৎ সুক্ষ্ম হাসি ফুটলো সে যেটা খুঁজছিল হয়তো তা পেয়ে গিয়েছে। হাত পকেটে থেকে বার করতে অনুর চোখ চড়কগাছ। সে বিষ্ময়ভড়া কন্ঠে বলল,
__”এটা!”
অরিন্দমের হাতে গোল্ডেন কোমড় বিছা। সে সেটাকে দুহাতে নিয়ে অনুর কোমড়ে পড়িয়ে দিতে যায়। অনু চমকে পিছন দিকে যায়। তারপর কম্পিত গলায় বলল,
__”কি করছেন কি এগিয়ে আসছেন কেন?”
অরিন্দম থামলো না সমান তালেই এগিয়ে গিয়ে দুহাতে অনুকে নিজের বন্ধনে নেয়। অনু ভড়-কালো সে ভীত গলায় বলল,
__দেখুন এমন ভাবে… অরিন্দম তাকে চুপ করাতে মিহি কন্ঠে বলল,
__একটা ও কথা বলবে না। আমাকে এটা পড়াতে দাও।
__আপনি দিন আমি পড়ে নিচ্ছি!
অরিন্দম ততক্ষণে অনুর কোমড়ে বিছা পেঁচিয়ে দিয়েছে। অনু তার উন্মুক্ত কোমড়ে শীতল স্পর্শে পেয়ে কেঁপে উঠলো। সে অরিন্দম কে বাঁধা দিতে গিয়ে ও পারলো না। অরিন্দম খুব সন্তপর্নে তার কাজ সম্পন্ন করে এক পা পিছিয়ে যায়। অনু এখনও ফ্রিজড হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার সমস্ত কিছু মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে,সে এবার নিজের কোমড়ের দিকে তাকালো কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল! অতঃপর তার ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি ফোটে! সে ডান হাত দিয়ে বিছাটায় হাত রাখে, গোল্ডেন এর ওপরে সাদা স্টোন গুলো চকচক করছে। অনুর হাসির রেখা গাঢ় হয় সে খুশি হয়ে অরিন্দমের দিকে তাকালো অরিন্দম তখন তার মুখপানেই চেয়ে ছিল। অনু এক গাল হেসে বলল,
___ওয়াও এত সুন্দর একটা গিফ্ট আপনি আগে কেন দেননি? জানেন আমার কোমড় বিছাটা খুঁজে পাইনি। কিন্তু আপনি যখন এনেছিলেন এতক্ষণ পর কেন দিলেন? এসেছেন তো অনেক আগেই।
অরিন্দম গমগমে গলায় বলল,
__আসার পর থেকে আমার কাছে কি এবার ও এসেছিলে তুমি?
অনু ও তেজি গলায় বলল,
__তা আপনি আমার কাছে আসেননি কেন? আমিই বা কেন আপনার পিছু পিছু ঘুরবো। বাই দ্যা ওয়ে সাডেননলি আপনি কেন আমাকে গিফ্ট দিলেন? কিছু স্পেশাল আছে নাকি আজ?
অরিন্দমের বুক দ্রিম দ্রিম করছে সে এই ফার্স্ট টাইম কাউকে প্রোপোজ করতে যাচ্ছে তাও আবার এই তারকাটা মেয়েটাকে যে কিনা সে যখনি তার কাছে আসতে চায় তখনই মেয়েটা কিছু অদ্ভুত কথা বলে তার মুড নষ্ট করেছে। অরিন্দম লম্বা শ্বাস নেয় অতঃপর মনে সাহস নিয়ে সে অনুর নিকট দাঁড়ায়। অনু তাকে এতটা কাছে আসতে দেখে পিছিয়ে যেতে নেয় তখনি অরিন্দম তাকে নিজের কাছে টেনে নেয় অনু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে অরিন্দম পাঞ্জাবী মুঠো করে ধরে। অরিন্দম অনু’র মুখশ্রী খুব গভীরভাবে দেখতে থাকে। পটল চেরা চোখে সুন্দর করে কাজল আয়লেনার দিয়ে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে মেয়েটা, তার দিকে সেই ভয়ঙ্কর চোখজোড়া নিয়ে ভীত ভাবে তাকিয়ে আছে, অরিন্দম অবাক হয় বারংবার সে মেয়েটার কাছে আসলেই মেয়েটার চোখে মুখে এমন ভয়ের ছাপ পড়ে যায় কেন? কিন্তু অন্য সময় তো ঠিকই চঞ্চলতা ভরপুর থাকে। জানালা গলে মৃদু বাতাসে অনুর কুচো চুল গুলো চোখে এসে পড়লো অনু চোখ বুজিয়ে নেয়। অরিন্দম তা দেখে খুব নিবিড় ভাবে চুলগুলো কানের পাশে সরিয়ে দিতেই অনুর মুখমন্ডল লজ্জায় রক্তিম লাল হয়ে ওঠে। অরিন্দম তা মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকে ফর্সা গোলুমোলু গাল দুটো কি সুন্দর লাল বর্ন ধারন করেছে। উঁচু লম্বা নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে রয়েছে,আর তার সরু অধরে লাল লিপস্টিক দিয়ে তার মাথা নষ্ট করে তুলেছে অরিন্দম দৃষ্টি সংযত করে নিজেকে ধাতস্থ করে অনুর কানের কাছে গিয়ে বলল,
___আমি তোমাকে ভা… তার কথা শেষ হওয়ার আগে অনু বলল,
___আলুরদম আপনার পকেটে এখনো কি আছে? এত সফ্ট সফ্ট।
অরিন্দম মুখটা চুপসে গেল সে অতি কষ্টের মনে সাহস নিয়ে কথা বলতে গেল আর মেয়েটা তার বারোটা বাজিয়ে দিলো। অরিন্দম অনুর কাছ থেকে সরে যেতে অনু শ্বাস নেওয়ার জায়গা পের তার যেনো এতক্ষণ দম বন্ধ হয়ে আসছিল ভয়ে। অরিন্দম পকেটে হাত দিয়ে তপ্ত শ্বাস ফেললো এটার কথা একেবারে ভুলে গিয়েছিল সে। অনু আবার অরিন্দমের দিকে তাকিয়ে বলল,
___কি ওটা।
অরিন্দম পকেট থেকে হাত গলিয়ে জিনিষ বার করল। আর তা দেখে অনুর চোখমুখ চকচক করে উঠল কারন অরিন্দমের হাতে বেলি ফুলের মালা, অরিন্দম ফুলগুলো দিকে তাকিয়ে বলল,
___তোমার জন্য এনেছিলাম কিন্তু একেবারেই ভুলে গিয়েছি।
অন্য খুশি হয়ে কাছে গিয়ে বলল,
___ দিন খোঁপায় গুঁজে দিন। বলে পিছন ঘুরে দাঁড়াল। অরিন্দম ফুলটা দুহাতে নিয়ে অনুর বড় খোঁপায় সুন্দর করে সাজিয়ে দিতে লাগল। অনুর পড়নে নীল শাড়ীতে অভ্র দেওয়া সাদা সরু পাড়ের শাড়ী পড়েছে সাথে সাদা চকচকে অভ্র দেওয়া ব্লাউজ যার ব্যাক সাইটটা একটু বেশি কাটা। অরিন্দম এতক্ষণে তা লক্ষ্য করলো। আর তার দৃষ্টি গেল অনুর ঘাড়ের কাছে একটা কালো কুচকুচে তিলের কাছে। অরিন্দম তা দেখে একটানে খোঁপা খুলে দেয়। অনু ভড়কে কিছু বলতে যাবে অরিন্দম কড়া গলায় বলল,
___একটাও কথা বলবে না। আমার এলোকেশী বেশি পছন্দের। বলে ফুল গুলো ক্লিপ দিয়ে সাজিয়ে দিল। অনু তার দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে লাজুক হেসে বলল,
___বিয়ের পর আপনি মাঝেমধ্যে এমন ফুল আমার জন্য উপহার আনবেন কেমন। আর হ্যাঁ নিজের হাতে সাজিয়ে ও দেবেন।
অরিন্দম হালকা হাসে তারপর অনুর রিয়েকশন দেখবে বলে বলল,
____আর যদি না নিয়ে আসি তখন কি করবে?
___আপনাকে রাতে খাটে ঘুমাতে দেবো না আর আমার সাথে রোমান্স ও না।
অরিন্দম অনুর শাস্তি শুনে হাসে অতঃপর সে অনুকে টেনে কাছে নিয়ে আসে! অনু এবার যেন কম লজ্জা পেল সে দুহাতে অরিন্দমের বুকে হাত রাখে। অরিন্দম অনুর কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলল,
___ আমাদের বিয়ে হবে তো? তুমি আমাকে বিয়ে করবে তো?
অনু অরিন্দমের কথা শুনে হালকা মাথাটা দূরত্বে এনে অরিন্দমের দিকে চোখমুখ কুঁচকে বলল,
__আপনি কি পাগল। আমি আপনাকে ছাড়া কাকে বিয়ে করবো শুনি। আমার যখন বিয়ে হবে শুধুমাত্র আপনার সাথে হবে বুঝেছেন? মিস্টার “বরবাবু”!
অরিন্দম হেসে অনুর দুগালে হাত রেখে বলল,
___ তা কবে বিয়ে হবে আমাদের?কবে আমার ঘরে এই চঞ্চল মেয়েটা তার দুষ্টু মিষ্টি হাসি ছড়াবে প্রতিটি কোনায় কোনায়?কবে সে বুঝবে আমার না বলা কতশত কথা! বলো? কবে সব পূর্ন হবে? কবে তুমি আমার হবে?”
অনু লাজুক হাসলো অরিন্দমের প্রতিটি কথায় প্রবল আবেগ মেশানো,সে যে ওকে ভালবাসি কথাটা না বললেও আরও বেশী কিছু বলে দিয়েছে,অনু ভালো করেই বুঝতে পাচ্ছে দুজন দুজনের অস্তিত্বের সাথে মিশে যাচ্ছে, কিন্তু অরিন্দম যেটা চাইছে সেটা এখন তো সম্ভব না,সে এখন কিছুতেই বিয়ে করতে পারবে না। মুখে যতই বিয়ে বিয়ে করুক না কেন আসলে তো সে মামির মত নিয়েই অরিন্দম কে বিয়ে করবে। কিন্তু সে শুধু এই মানুষটার ই হবে। অরিন্দম অনুর কপালে দ্বীতিয় বারের মতো অধর ছোঁয়াল। অনু সেই স্পর্শে লজ্জায় নেতিয়ে লতা গাছের মত নিজের অজান্তেই সে এই প্রথম অরিন্দমের বুকে মুখ গুঁজলো!
_______
একটু আগেই শুভদৃষ্টি সম্পন্ন হয়েছে কিছুক্ষনের মধ্যেই সিঁদুর দান হবে।অনু অরিন্দম পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বিয়ে দেখছে। তিশা অনুরাগ দুজন হাসি মুখে বিয়ে দেখছে আর নিজেদের বিয়ের স্বপ্ন বুনছে। অনুরাগ তিশার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকালো। এই মেয়েটাই তার শক্তি তাকে এতগুলো বছর সামলে রেখেছে তার ভালো খারাপ সমস্ত সময়ে শক্ত হাতে তার হাত ধরেছে। তার মা মারা যাওয়ার পর সে যখন একা হয়ে পড়েছিল এই মেয়েটাই দিনের পর দিন তার পাশে থেকেছে সে যখন অসুস্থ হয়ে পড়তো,পিসিমনি তাকে সামলাতে না পারলে এই মেয়েটাই সারাদিন সেবা করে তার মাথার ধারে বসে দিন পার করেছে। এই ঋণ এ জনমে পূর্ন করতে পারবে না। কিন্তু সে এই মেয়েটাকে নিজের জীবন মনে করে তাকে ছাড়া বাকি জীবনে আর কিছু চায় না সে। কিছু চায় না।
তিশা হঠাৎ করে অনুরাগের দিকে তাকিয়ে থতমত খেয়ে গেল। কারণ অনুরাগ তার দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে আছে তিশা কনুই দিয়ে পেটে ধাক্কা দিয়ে বলল,
__কি হলো তাকিয়ে আছিস কেন?
অনুরাগ স্মিত হেসে বলল,
___”ভালোবাসি হৃদ! ”
তিশা চমকালো আচমকাই তার চোখ ছলছল করে উঠলো, এমন নয় যে অনুরাগ আজ প্রথম তাকে ভালোবাসি কথাটা বলল। অনুরাগ প্রতি একঘন্টা ছাড়া যখন মন হয় তখনই বলে। কিন্তু আজ কেমন অদ্ভুত লাগলো। তিশা ঢোক গিলে কান্না আটকে বলল,
__”আমি ও তোকে খুব ভালোবাসি ডাফার!”
______
বিয়ে বাড়ীর আনন্দ মুখরিত পরিবেশে হঠাৎ করেই গুমোট ভাব চলে আসে অলকা দেবী হঠাৎ করেই অনুকে টেনে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কষিয়ে একটা চড় বসিয়ে দেন। এমন একটা কাজে অনু সহ বাকি সবাই চমকে উঠে উনার দিকে তাকায়,এই মাএ বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তনুশ্রী মৃন্ময় হতভম্ব। অলকা দেবী তীব্র ক্রোধ নিয়ে অনুকে বললেন,
__ছিঃ অনু। ছিঃ! তুই এভাবে আমার মুখে কালি মাখালি। আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি যে তোর জন্য আমাকে এত নিচু হতে হবে এত অপমান সহ্য করতে হবে!
অনু কিছু না বুঝে ছল ছল চোখে মামীর দিকে তাকিয়ে বলল,
__মামি আমি কি করেছি?
অনুর কথায় অলকা দেবী আরো যেন ক্রোধ বেড়ে গেল তিনি ঘৃণা ভরা কন্ঠে বললেন,
__তুই কি করেছিস? তুই জানিস না! তাই না? কিন্তু গ্রামের অর্ধেকের বেশি লোক তা জেনে গেল!
অনু আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে আছে মামির দিকে। অরিন্দম প্রায় মূর্তি হয়ে গিয়েছে এমন ভাবে অনু’কে মারায়। অলকা দেবী চোখের জল ছেড়ে বললেন,
__যে অলকাকে আজ পর্যন্ত কেউ বদনাম করার সাহস দেখাতে পারেনি। তার শিক্ষা নিয়ে কেউ কথা বলেনি। যে অলকার গর্ব ছিল তার এই দুই মেয়ে, সেই অলকার ছোট মেয়েকে আজ দুশ্চরিত্রা বলার সাহস দেখাতে পারল সবাই!
অনু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল মামির মুখের দিকে। সে কি এমন করেছে যে তাকে দুশ্চরিত্রার বলেছে?সে তো এমন কিছু করেনি। তনুশ্রী মন্ডপ থেকে নেমে এসে মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে বলল,
___” মা তুমি ওকে এমনভাবে মারলে কেন? আর এমন বলছ বা কেন?ও কি করেছে?
প্রতিবেশী এক মহিলা এগিয়ে এসে বললেন,
__তোর গুনধর বোন মুখ কালো করেছে। তোমার বোন ঘরে ছেলে নিয়ে গিয়ে সোহাগ দেখায়। এমনিতেই তো সব সময় ওই অনুরাগের সাথে নেচে গেয়ে বেরায়! কথাটা শুনে অনুর চোখ বড় বড় হয়ে গেল অরিন্দমের রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় সে কিছু বলতে যাবে তনুশ্রী চিৎকার করে বলল,
__কি বলছ কি কাকি মুখ সামলে কথা বলো। আমার বোনের নামে আর একটাও কথা বললে আমি কিন্তু ভুলে যাব তুমি আমার থেকে বড়।
আর এক মহিলা এগিয়ে এসে বললেন,
__কজন কে চুপ করাবি তনু। মন্টুর মা যা বলছে তা সত্যি। আমি সকালেই দেখিছি তোর বোনের ঘর থেকে একটা ছেলে কে বেরিয়ে আসতে,আর একটু আগেও। কে জানে ওটা অনুরাগ না অন্য কেউ! আর এত প্রমান নিয়েই আমরা কথা বলছি। অলকা দেবী গর্জে ওঠে বললেন,
___ব্যাস অনেক হয়েছে আর না। আমার মেয়ে আমি সিদ্ধান্ত নেব ওকে কি শাস্তি দেওয়া যায়। দয়া করে সবাই এখন আস্তে পারেন!
অনু হুহু করে কেঁদে চলেছে তাকে এত বড় অপমান সহ্য করতে হবে সে কখনো ভাবেনি। অন্য সময় হলে ও হয়তো তেড়ে গিয়ে মুখের ওপর কথা বলতে পারত। কিন্তু চরিত্র নিয়ে বলায় সে ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। অরিন্দম স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কারণ তার জন্যই মেয়েটাকে এত কথা শুনতে হলো। সে এগিয়ে গিয়ে অলকা দেবীকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই অলকা দেবী অনুরাগ বলে চিৎকার করে উঠলেন। তিশা ভয়ে অনুরাগের হাত আঁকড়ে ধরল। অনুরাগ তা দেখে তিশাকে আশ্বস্ত করে বললো যে সে সবদিক সামলে নেবে।
______
পরিবেশটা একেবারে শান্ত হয়ে আছে। কারোর মুখে টু শব্দ নেই,প্রবল ঝড়ে যেমন সমস্ত কিছু তছনছ করে দিয়ে সমস্ত কিছু একেবারে ধ্বংস করে দিয়ে চলে যায় ঠিক তেমনি অবস্থা হয়ে আছে বন্ধ ঘরে চারিপাশে। তিশা দেওয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে অঝোরে কেঁদে চলেছে। তনুশ্রী ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কাঁদছে তাকে মৃন্ময় ধরে দাঁড়িয়ে আছে। অলকা দেবী পাথর চোখে মেঝেতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছেন। অনু ভাবমূর্তি হয়ে মেঝেতে বসে আছে তার পাশে অনুরাগ মাথা নিচু করে বসে নিজের হাত ভর্তি সিঁদুরের দিকে তাকিয়ে আছে।
আর অরিন্দম ব্যাথাতুর দৃষ্টিতে অনু’র সিঁদুর রাঙা মুখপানে চেয়ে রয়েছে।
#চলবে
[