#অজানা_তুমি
#রুবাইতা_রুহি (ছদ্ননাম)
#পর্ব -২৩
আমি একা একা সারাটা রুম জুরে পাইচারি করছি আর ভাবছি অনেক কিছু।অবশেষে চোখ পড়লো রঙিন রঙিন লাইট জ্বলতে থাকা বেলকোনির উপরে।এটা যেনো বেলকোনি না ছোটখাটো ছাদ।ওইখানে গিয়ে দাঁড়ালাম।নিচে গ্লাসের রেলিং।গ্লাসগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা যেনো আর একটু সামনে এগোলেই সোজা নিচে পড়ে যাবো।উপরে কিছু গাছপালা ঝুলে আছে।তারসাথেই সবুজ,হলুদ লতাপাতা ঝুলছে।সাইডে সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ।সামনে থেকে ঠান্তা বাতাস আসছে।খুব ভালো লাগছে।মনের কোথাও হয়তো এই ইচ্ছেটাও ছিলো।যে একদিন আয়রানের স্ত্রী হিসেবে এই বাড়িতে পা রাখবো।কিন্তু সেটা এভাবে নিশ্চই চাই নি।আমি জানি আয়রানের দাদি এতে কিছুটা রাগ হয়েছেন বটে।
হঠাৎ কাধে কারো হাতের ছোঁয়ায় পিছনে ফিরে দেখি আয়রান মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে।আমি আবার মাথা ঘুরিয়ে প্রকৃতি দেখায় মনযোগ দিলাম।
-“হুম।ভালোভাবে বাতাস খাও।ওই বাসায় তো বন্দি ছিলে।”
বলে আয়রান আমার পাশে দাড়িঁয়ে হাসতে লাগলো। আড়চোখে একবার তাকিয়ে আর কিছু বললাম না।আয়রান হাসি থামিয়ে আমার দিকে তাকালো।আমার দৃষ্টি এখনো সোজা বরাবর একটা কাকের দিকে।আয়রান বাম হাত দিয়ে রেলিং এর উপরে থাকা আমার বাম হাতের উপর রাখলো।তারপর কিছুটা গা ঘেঁষে দাড়িঁয়ে বললো
-“হেই সরি।”
-“কেনো?”
-“তোমাকে এভাবে জোরজবরদস্তি করে বিয়ে করার জন্য।আমার উপরে রাগ করে আছো তাই না?”
-“না!”
-“তাহলে ভালোভাবে কথা বলছো না কেন?”
-“বলছি তো।”
-“না আমি শুধু যেই প্রশ্নগুলো করছি সেগুলোর শর্টকাট উত্তর দিচ্ছো।নিজে থেকে কিছুই বলছো না।এছাড়াও কথা বলার সময় আমার চোখের দিকে তাকাচ্ছো না।”
চুপ করে মাথা নামিয়ে আয়রানের ধরে থাকা হাতের দিকে তাকালাম।অদ্ভুত রকমের ভালোলাগছে।কবে এতো দূর্বল হয়ে গেলাম এই অচেনা মানুষটার উপর?খালা ঠিকই বলে।আমি প্রচন্ড দূর্বল,সহজ মনের মানুষ।কেউ একটু আদর দিয়ে কথা বললেই গলে যাই।তাকে ভালো লাগতে শুরু করে।আর সেদিক থেকে আয়রান নরম গলায় কথা বলেছে,আমাকে বিভিন্নভাবে কেয়ার করেছে।ধমকও দিয়েছে কিন্তু সেগুলো দশ মিনিটের বেশি সময় মনে থাকে না।এতেই আমার মনে এতো জায়গা করে কবে নিলো?আচ্ছা আমার কলেজ যাওয়া কি আর হবে না?আমার এনজিও?ওনারা যেতে দেবেন তো?আয়রানের দাদি মানবেন?আমি মলিন চোখে তাকালাম আয়রানের দিকে।সেও আমার দিকে শূন্য অনুভূতি নিয়ে তাকিয়ে ছিলো।চোখের চাহনি একদম শীতল আর স্বাভাবিক ছিলো।বাতাসে চুল গুলো মৃদু দোল খাচ্ছিলো।ধূসর চোখগুলো গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছিলো।চোখের পাপড়িগুলো মিটমিট করছিলো।ওনার প্রায় মিলে যাওয়া ভ্রুদুটি কতটা নিখুঁত।মনে হবে উনিও মেয়েদের মতো ভ্রু প্লাক করেছেন।পরনে হালকা আকাশী রংয়ের শার্টের কলারে কিছুটা ধুলা দেখা যাচ্ছে।শার্টের উপরে দুইটা বোতাম খোলা।ভেজা অধরযুগল দেখে মনে হচ্ছে তারা আমার কাছে কিছু চাইছে।আয়রান মুখটা আমার মুখের কাছে এগোতে নিলেই আমি অন্যদিকে তাকালাম।ধুকপুকানি শুরু হয়ে গেছে বুকে।আয়রান দূরে সরে গিয়ে বললো
-“সরি!”
-“হুম!”
-“চলো রুমে?ফ্রেশ হবে না?”
-“হুম!”
-“তাহলে চলো!”
-“হুম!”
আয়রান আচমকা আমার বাহু ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে রাগি চোখে বললো
-“কি সমস্যা তোমার?এরকম করছো কেন আমার সাথে?জোর করে বিয়ে করেছি বলে এরকম করবে?আমি কিন্তু জানি সবই!”
আমি আতঁকে ওনার দিকে তাকালাম।।কি জানার কথা বলছেন?কাপাকাপি মুখে জিগ্যেস করলাম
-“কি করছেন?ছাড়ুন!আর কি জানার কথা বলছেন?”
-“সেটা তোমাকে কেনো বলবো?আমার সাথে স্বাভাবিক বিহেভ করো।আমি ইগনোর সহ্য করতে পারি না।মাইন্ড ইট।চলো রুমে!”
বলে হাতের কবজি ধরে বাথরুমের সামনে দাড় করালো।
-“কি হলো যাও!নাকি আমাকেও ভিতরে দিয়ে আসতে হবে?”
-“কিন্তু ফ্রেশ হয়ে পড়বো কি?”
আয়রান থেমে আমার হাত ছেড়ে দিলো।সত্যি তো!মেয়েটা পড়বে কি?আয়রান কিছুটা থেমে বললো
-“আমার গেন্জি আর ট্রাউজার পড়তে পারবে?”
-“কিহ?”
-“আচ্ছা আচ্ছা ওয়েইট।ব্যবস্থা করছি।”
বলে আয়রান বেরিয়ে গেলো।পাঁচ মিনিট পর আবার এলো।হাতে একটা লেডিস লং শার্ট আর পিংক লেডিস ট্রাউজার।আয়রান এইটা আমার হাতে দিলো।
-“হেই শোনো নূরানির কাছে থেকে এনে দিয়েছি।ওতো এই শার্ট আর ট্রাউজারই পড়ে।প্রবলেম হবে?হলেও এখন কিছু করার নেই।আমারই দোষ।আচ্ছা শোনো কালকে তোমাকে নিয়ে শপিং করতে যাবো।এখন একটু ম্যানেজ করে নাও!হুম?”
-“আচ্ছা।”
বলে ওয়াসরুমে চলে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে ওরনাটা গায়ে পেঁচিয়ে নিলাম।তঁবে শার্টের হাতার কাধের দুইপাশে ছেঁড়া।কিন্তু করার?তাকিয়ে দেখি আয়রান ফোন নিয়ে ব্যাস্ত।আমি ওনাকে গিয়ে বললাম
-“উঠুন।আপনার শার্টেও তো ধুলোবালি লেগে আছে ফ্রেশ হয়ে আসুন।”
-“হুম।শোনো তুমি আগে নিচে যেও না।একসাথে যাবো আমরা ওকে?”
-“ওকে।”
বলে আয়রান আলামারি থেকে কালো রংয়ের টি-শার্ট আর ট্রাউজার নিয়ে ওয়াসরুসে দৌড় লাগালো।আর আমি বসে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম।হঠাৎ সোফার উপর নজর পড়লো।খুব সুন্দর নীল রংয়ের একটা গিটার রাখা।দেখেই মনটা ভরে উঠলো।উনি গান গাইতে পারেন?বাহ!তাহলে তো একবার শুনতেই হয়।আয়রান ওয়াসরুম থেকে বের হলো চুল মুছতে মুছতে।আমি গিটারটা হাত ধরে ওনাকে জিগ্যেস করলাম
-“আপনি গান গাইতে পারেন?”
-“ওই টুকটাক একটু একটু।জানো এইটা আমার 11th বার্থডে টে বাবা আমাকে গিফট করেছিলো।সেইদিন এত্তোটা খুশি হয়েছিলাম যা তোমাকে বোঝাতে পারবো না।কিন্তু সেই খুশি বাবা বেশিক্ষণ টিকতে দিলো না।”
-“কেন?”
-“আচ্ছা ছাড়ো তো এইসব কথা।চলো খেতে যাই।নিশ্চই খিদে পেয়েছে তোমার?চলো!নিচে দাদু অপেক্ষা করছে।বাই দ্যা ওয়ে লুকিং গুড!”
-“হুম!”
বুঝলাম উনি কথা এড়িয়ে গেলেন।নিচে গেলাম।দেখি টেবিলে আয়রানের দাদি অপেক্ষা করছে।সাথে নুরানিও আছে।সে হাসিমুখে আমার দিকে তাকিয়ে খেতে আসতে ইশারা করলো।
সবাই খেয়েদেয়ে উপরে যে যার রুমে চলে গেলাম।আমি দাদি শ্বাশুড়ির রুমে গিয়ো কিছুক্ষণ তার সাথে গল্প করে রুমে এসে দেখি আয়রান গিটার নিয়ে টুংটাং করে সুর তুলছে।আমার উপস্থিতি টের পেয়ে মুচকি হেসে আমাকে তার পাশে বসতে ইশারা করলো।
#অজানা_তুমি
#রুবাইতা_রুহি (ছদ্ননাম)
#পর্ব -২৪
আমি গিয়ে ওনার পাশে বসলাম।
– “বারান্দায় যাবে?”
– “হুম চলুন।”
বলে আমরা বারান্দায় চলে এলাম।উনি বেলকোনির সোফার উপর বসলেন।আর আমি টুল নিয়ে ওনার বরাবর বসে তাকিয়ে রইলাম।গিটারে টুংটাং করতে করতে উনি আমাকে উদ্যেশ্য করে বললেন
-“গান শুনতে চাও?”
শুনে মনটা ভরে উঠলো।হ্যা আমি তো এটাই চাইছিলাম।ফটাফট বলে উঠলাম -“হ্যা হ্যা শুনবো।”
আমার এতো আগ্রহ দেখে মুচকি হাসলেন।ইশ কি মিষ্টি করে মুচকি হাসেন।তারপর সুর তুললেন গিটারে।আমি টুল নিয়ে আরো একটু এগিয়ে বসলাম।
তোমার নামের রোদ্দুরে!
আমি ডুবেছি সমুদ্দুরে,
জানি না যাবো কতদ্দুরে এখনো!
আমার পোড়া কপালে!
আর আমার সন্ধ্যে সকালে,
তুমি কেনো এলে জানি না এখনো!!
ভন্দি আটে মন পালালাম!
বন্দি আছে কাছে সে তোমার!!
যদি সত্যি জানতে চাও!
তোমাকে চাই!!
তোমাকে চাই!!
যদি মিথ্যে মানতে চাও,
তোমাকেই চাই!!
-(অরিজিৎ সিং “তোমাকে চাই” গানটি নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন।)
এই পুরোটা যেনো উনি কতটা আবেগ,অনুভূতি দিয়ে গাইলেন সেটাই উপলব্ধি করার চেষ্টা করছি।একদম হারিয়ে গেছি ওনার গাওয়া প্রতিটি বাক্যে।কি মধুর সেই কন্ঠ!মনে হচ্ছে গানটির যে আসল গায়ক তার থেকে আমার সামনের এই মানুষটা বেশি ভালো গেয়েছে।আয়রান গানের মাঝে মাঝে আমার দিকে কোমল দৃষ্টিতে তাকিয়েছে যা আমাকে তীব্রভাবে তার সুরের প্রতি আসক্ত করে তুলেছে।মাঝে মাঝে যে উচ্চস্বরে গলা ছেড়ে টান দিয়েছেন তাতে আমার হৃদয়টাও কাঁপতে বাধ্য হয়েছে।গলার আওয়াজ আটকে আসছিলো। ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম হা করে।আয়রান গাল ধরে টান দিতেই হুশ ফিরলো।আমার তাকানো দেখে আয়রান গিটার নিয়ে একটা পোজ দিয়ে বললো
-“কি ম্যাডাম?এতোক্ষন তো দেখলাম চোখ বন্ধ করে খুব মন দিয়ে শুনছিলেন।তা কেমন গাইলাম?একটু প্রশংসা করুন!”
কিছু চিন্তা ভাবনা না করে ফট করে বলে দিলাম
-“খুব সুন্দর।”
-“তাই?”
আয়রান ব্লাশিং হতে লাগলো।আমি কি বললাম সেটা আবার মনে করে বুঝলাম ওনার এই ব্লাশিং এর কারণ।তাই একটু জ্বালানোর জন্য বললাম
-“উহুম।একটুও ভালো হয়নি।আপনি ভালোভাবে গাইতেই পারেন না।শুধু শুধু এই কাকের গলা দিয়ে গেয়ে গানটার সম্মানটা নষ্ট করলেন।হুহ!আপনার থেকে কাকও ভালো গায়।”
-“ম্যাডাম দেখি গিরগিটির মতো কথা পাল্টায়।”
-“কিহ?আমি তো জানতাম গিরিগিটী রং পাল্টায়!কথা পাল্টায় তা তো শুনি নি!”
-“তোমার শোনা লাগবে না।সব বুঝে গেছি আমি!”
-“কি বুঝলেন?”
-“তোমার শোনা লাগবে না।চলো ঘুমাবে না?নাকি আরো গান শোনার ইচ্ছা আছে?”
-“না নেই।তঁবে একটু……..”
-“কি?”
-“একটু একটু যদি দিতেন!”
-“আরে কি দিবো বলবে তো?”
-“আপনি বোঝেন না?”
বলে কপাল কুঁচকে তাকালাম।আয়রান কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে বললো
-“গিটার?”
আমি চোখ ঘোরাতে লাগলাম।
-“হেই এইটুকু বলতে এতো ইনিমিনি করা লাগে?বললেই পারো যে গিটারটা নিতে চাই।নাও ধরো!দেখো ফেলে দিও না!তাহলে খবর আছে তোমার!”
বলে খুব সাবধানে আমার হাতে দিলেন।আমি নিলাম।দুই হাত দিয়ে ধরতে নিলেই পড়তে পড়তে বেচে গেছি।কি ভারি রে বাবা!
-“হেই টুলে বসে ভালোভাবে ধরতে পারবে না।এছাড়া তুমি যে পিচ্চি গিটার সহ উল্টিয়ে পড়ে যাবে।এর জন্য বলি বেশি বেশি খাও একটু গুলুমুলু হও।তাহলে গিটার সহ গিটারের মালিকেও ধরতে পারবে।”
বলে দুষ্টু হাসি দিলেন।আমি চোখ নামিয়ে মুখ ভেঙচি দিয়ে গিটারটাকে ভালোভাবে ধরার চেষ্টায় আছি।যেভাবে আয়রান ধরেছিলো।আয়রান হাসতে হাসতে বললো
-“সোফায় বসো।তাহলে পড়ার ভয় থাকবে না।আসো!”
বলে নিজে একটু সরে সাইডে গিয়ে আমাকে বসার জায়গা করে দিলেন।আমিও গিয়ে পাশে বসে পড়লাম।তখনই আবার আমার পাশ ঘেঁষে বাম হাত আমার ডান কাধে রেখে পায়ের উপর পা তুলে বললেন
-“দেখি তো একটু সুর তোলো।পারো কি না দেখি!”
আমি অপ্রস্তুত হয়ে ওনার দিকে আড়চোখে তাকালাম।ইশারা করলেন গিটারের তারে হাত দিতে।আমি গিটারটা দুই হাত দিয়ে ধরে এক পা ভাজ করে বসলাম।তারপর টুংটাং করতে লাগলাম।কিন্তু কোনো সুর তুলতে পারছি না।আশাহীন দৃষ্টিতে আয়রানের দিকে তাকালাম
-“কি?আমি পারবো না।কি ভেবেছো সিনেমার মতো তোমাকে হাতে ধরে গিটার শিখাবো?তাহলে তোমার ভাবনা ভুল।নিজে চেষ্টা করো।”
বলে আরো গা ঘেঁষে আমাকে চেপে ধরে বসলেন।পারলে আমার ভিতরে ঢুকে যান।আমি কিছুটা ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই কানে কানে বললো
-“হেই আজকে কিন্তু আমাদের বাসর রাত।”
শুনে সারা শরীর কেপে উঠলো।কান ঝা ঝা করছে।লজ্জায় মাথা নুইয়ে নিলাম।উনি এবার আমাকে ছেড়ে বললেন
-“আচ্ছা এখন চলো ঘুমাতে।আর বাজাতে হবে না।পরে কোনো একদিন শিখিয়ে দেবো!ঠিক আছে?এখন অনেক রাত হয়ে গেছে।চলো!”
বলে আমার হাত থেকে গিটারটা নিয়ে এক হাতে ধরে আরেক হাতে আমার হাত চেপে ধরলেন।মাথা নুইয়ে ঠোঁট প্রসারিত করে হাসলাম।উনি বেলকোনির লাইট বন্ধ করে রুমে ঢুকে গিটারটা রেখে বিছানা থেকে ফুলের পাপড়িগুলো ঝেড়ে ফেলে দিলেন।তারপর মোমবাতি এক শ্বাসে সবগুলো ফু দিয়ে নিভিয়ে ডিম লাইট জ্বালিয়ে আমাকে উদ্যেশ্য করে বললেন
-“হেই আমার সাথে বিছানা শেয়ার করতে সমস্যা হবে তোমার?”
আমি কাচুমাচু হয়ে তাকিয়ে দেখি উনার দৃষ্টি অন্যকিছু বলছে এখন।আমি মাথা নুইয়ে না বোধক ইশারা করলাম।উনি মুচকি হেসে সরে গিয়ে আমাকে জায়গা দিলেন।আমি ধীর পা ফেলে ওনার পাশে একটু দূরত্ব বজায় রেখে শুয়ে পড়লাম।মাঝখানে কোনো কোলবালিশ নেই।কেমন কেমন লাগছে।চোখ বন্ধ হচ্ছে না।সারারুমে আবছা আবছা আলো।বারান্দা থেকে মৃদু আলোতে রুমের সবকিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।এসি মিডিয়াম গতিতে রুমকে শীতলতা দিচ্ছে।কিন্তু এই হীমশীতল এসির কৃতিম বাতাসও যেনো আমার হাতে পায়ের লোমকূপকে বরফ বানিয়ে দিয়েছে। আয়রানের দিকে পিঠ দিয়ে শুয়ে আছি আর হাত দিয়ে বিছানার চাদরে আঁকিবুঁকি করছি।আমার পাশে একটি পুরুষ শুয়ে আছে এটা ভাবতেই লজ্জায় লাল নীল হয়ে যাচ্ছি।আচ্ছা সে কি আমার দিকে তাকিয়ে আছে?কি করছে সে?নাকি ঘুমিয়ে গেছে?মনে তো হচ্ছে না ঘুমিয়েছে।কারণ মাঝে মাঝে তার নড়াচড়ার আওয়াজ পাচ্ছি।কি করবো একবার ঘুড়ে দেখবো?কিন্তু আমার লজ্জা লাগছে।
-“নুরিপাথর!”
শুনে চমকে উঠলাম।উনি ঘুমান নি এখনো?আমি কি ঘুরবো?
-“হেই ঘুমিয়ে গেছো?”
মৃদু সুরে বলে উঠলাম -“না।”
-“আমার দিকে ফিরতে পারবে?”
__চলবে__