নিজের বরকে অন্য নারীর সাথে ঘনিষ্ঠতায় দেখে মনটা ধুক করে উঠলো। চোখের পানি গাল বেয়ে পড়ছে। জানি না কেনো এমন হচ্ছে আমি তোহ তাকে ভালোবাসি না তাহলে কেনো এতো কষ্ট হচ্ছে আমার।
মনের মাঝে এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। এক অজানা_অনুভূতি। আমি ইনসিয়া আহমেদ হায়াত। দাড়িয়ে আছি নিজের বরের কক্ষের সামনে । আর এর ভেতরেই এক নারীকে নিয়ে ব্যস্ত আমার বর। খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে এতোদিন তোহ হয়নি কিন্তু আজ কেনো এতো কষ্ট পাচ্ছি আমি হয়তো বাঙ্গালী নারী বলে। বাঙ্গালী নারী আর যাই করুক নিজের স্বামীর ভাগ অন্য কাউকে দিতে চায় না।
নিজেকে স্বাভাবিক করে দরজায় নক করলাম। আমাকে দরজার বাহিরে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আরহাম চৌধুরী (আমার বর) তার প্রেমিকা জেসিকাকে ছেড়ে আমার দিকে তাকালো। এতে জেসিকার হালকা রাগ হয়ে গেলো।
জেসিকাঃ এই মেয়ে কোনো কমন সেন্স নেই এইভাবে হুট করে এসে আমাদের ডিস্টার্ব করলে কেনো। আরহাম বেবি এমন থার্ডক্লাস মেয়েকে বিয়ে করেছো কিন্তু কিছু শিক্ষা দেওনি কখন কোথায় আসতে হয়।
আরহাম স্বাভাবিক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি জেসিকার কথা শুনে রুমে ডুকে জেসিকার সামনে দাড়ালাম।
হায়াতঃ মিস জেসিকা প্রথমত এটা কলেজ/ভার্সিটি যেখানে আমার বর টিচার। আর আমি জানি তাকে একটা আলাদা কক্ষ দেওয়া হয়েছে এর মানে এই নয় যে কক্ষে দরজা খোলা রেখে নোংরামি করবে। তার উপর আপনাকে একটা ইনফরমেশন দিয়ে নেই আমাদের এখনো ডিভোর্স হয়নি। তাই আমি এখনো মিসেস আরহাম চৌধুরী। আর আপনি(আরহামকে উদ্দেশ্য করে) আমাকে কি এইসব নোংরামি দেখানোর জন্য ডেকেছেন।
আরহাম কিছুক্ষন আমার দিকে চেয়ে তারপর হালকা হেসে বলল।
আরহামঃ খুব কথা বের হচ্ছে মুখ থেকে তাই না। হঠাৎ এতো সাহস আসলো কোথা থেকে। আমি কি করবো না করবো সেটা তোমাকে বলতে হবে( আমার বাহু শক্ত করে ধরে বলল)
নিজেকে তার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিলাম। কারন এটা নতুন নয় প্রায়ই জেসিকার সামনে আমাকে নানা ভাবে অপমান করে যাচ্ছে আর আমি মুখ বুঝে সব সহ্য করছি কিছুই যে করার নেই। এরপর স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দিলাম
হায়াতঃ কি জন্য ডেকেছেন সেটা বলুন আপনার ফালতু কথা শোনার সময় নেই আমার।
আরহামঃতোমাকে ডেকেছি আমাদের দুজনের জন্য কফি বানানোর জন্য।
হায়াতঃ কেনো পিয়ন কি নেই আমাকে ডাকতে হবে কেনো (হালকা রেগে)
আরহামঃ তুমি থাকতে পিয়নকে কেনো ডাকবো বলো (বাকা হেসে)
রাগে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে। আমি তোহ এমন ছিলাম না অত্যাচার সহ্য করতাম না কিন্তু আমার কাছে যে আর উপায় নেই।জানিনা এর থেকে কবে মুক্তি পাবো।
হায়াতঃ ঠিক আছে নিয়ে আসছি।
কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে গেলাম। বের হয়ে দুজনের হাসির শব্দ পেলাম। মানুষ এতো নিষ্ঠুর কেনো হয়। মানুষের দূর্বলাতার সুযোগ নিয়ে তাকে দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করাতে চায়। দুজনের কফি দিয়ে ক্লাসে এসে বসলাম। এতো মানুষের ভিড়ে নিজেকে একা মনে হচ্ছে। পাশেই আমার বান্ধুবিরা বসে আছে ওরা হয়তো আদৌ জানবেনা কি হচ্ছে আমার সাথে।
অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী আমি। ভাবছি সেই অতীতের কথা হঠাৎ করেই আমার জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেলো।
অতীত★★
কলেজে টিফিন টাইমে মাঠে ফ্রেন্ডসরা মিলে কানামাছি খেলতে গিয়ে কলেজে আসা নতুন স্যারকে জরিয়ে ধরে বর্তমানে বাথরুমে লুকিয়ে আছি।
কিছুক্ষন পর বের হয়ে ক্লাসের দিকে যাচ্ছিলা। ওমা দেখি আমার বান্ধুবিরা ক্লাসের সামনে কান ধরে দাড়িয়ে আছে তা দেখে দৌড় দিয়ে আবার বাথরুমে ডুকে বসে আছি। ভাবিছি কিছুক্ষন আগের কথা।
আমি হায়াত। এবার নতুন কলেজে উঠেছি। আমি আর আমার বেস্ট ফ্রেন্ডসরা এই এলাকারই বাসিন্দা। আমার ৪ টা বান্ধুবি আছে। সেখান থেকে একজন আমার চাচাতো বোন হয়।
তোহ আমাদের কলেজে মেয়েরা মর্নিং সিফট আর ছেলেরা ডে সিফট। তাই আমরা দৌড়াদৌড়ি মারামারি যা খুশি করে বেরায়। কলেজে আমরা একটু বেশি দৌড়াই কেউ কিছু বলেনা। তেমনি একদিন টিফিন টাইমে আমরা মাঠে কানামাছি করছিলাম। আমি হলাম চোর আর খেলা শুরু হলো সবাই আমাকে মারছে। আর আমি কাউকে ধরতে পারছি না। হঠাৎ মনে হলো আমার সামনে কেউ। কিছু না বলে ঝাপ্টা মেরে ধরে ফেলছি। ধরে মনের মধ্যে খটকা লাগলো। কারন আমি মুখ খুজে পাচ্ছি না। আমার বান্ধুবিরা এতো লম্ব হলো কেমনে। ড্রেসও কেমন পালটা পালটা হঠাৎ মুখে হাত দিয়ে আমি অবাক
হায়াতঃ এমা মুখে কার দাড়ি উঠে গেলো (মনে মনে)
ঝটপট করে চোখ খুলে টাস্কি খেয়ে গেলাম পেছনে তাকিয়ে দেখি আমার বান্ধুবি অর্পা,আনিশা,প্রিসা,আয়াত মুখে হাত দিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আয়াত আমার চাচাতো বোন হয়। আমি একবার ওদের দিকে তাকায় আরেকবার সামনে তাকাই কারন সামনে একটি ছেলে দাড়িয়ে আছে যাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম। চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
হায়াতঃ এই মিয়া কানা নাকি এইভাবে আমাদের খেলার মাঝে আসলেন কেনো। দিলেন তোহ খেলাটা নষ্ট করে। কেমন মানুষ আপনি হ্যা এটা কোনো সময় হলো আসার জানেনা মেয়েরা এইটাইমে কলেজে থাকি যদি আসতে মন চায় তাহলে ডে সিফটে আসবেন। আর আসলেও মাঠের মাঝে আমার সামনে এসে দাড়ালেন কেনো এখন আবার আমার চোর হতে হবে। তেলাপোকা জানিকোথাকার। (রেগে)
ছেলেটা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। তা দেখে আমার আরো রাগ হলো।
হায়াতঃ ওই মিয়া আপনি এইভাবে দেবদাসের মতো দাঁড়িয়ে আছেন কেনো হ্যা। সরেন এখান থেকে। আর….
আর কিছু বলার আগেই আয়াত,অর্পা আনিশা আর প্রিসা দৌড়ে এসে আমার মুখ চেপে ধরে একটু সাইডে নিলো।
আয়াতঃ হায়াত কি করছিস। ইনি আমাদের নতুন স্যার অর্পার চাচাতো ভাই হয়।(ফিসফিস করে)
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি বলে কি ইনি আমাদের স্যার হায় আল্লাহ। এখন কি হবে।
হায়াতঃ অর্পা ডাইনি তুই আগে বলবি না যে এই কালোশার্টওলা পোলা তোর ভাই ।
অর্পাঃএখন কি করবি (ফিসফিস করে)
হায়াত সবার দিকে তাকিয়ে এরপর ছেলেটার সামনে গিয়ে তার দিকে তাকিয়ে
হায়াতঃ স্যরি স্যার। (বলে এক দৌড়)
হায়াতকে দৌড় দিতে দেখে ওর পেছন পেছন বাকিরাও দৌড়। ওদের দৌড় দেখে ছেলেটা অবাক হয়ে গেলো।
হায়াত দৌড়াচ্ছে ওর পেছনে অর্পা, আয়াত, আনিশা, প্রিসাও দৌড়াচ্ছে। ওদের দৌড় দেখে কলেজের ইনচার্জও ওদের পেছনে দৌড়।
ইনচার্জঃ আরে বাচ্চারা আস্তে দৌড়াও। এভাবে দৌড়াচ্ছো কেনো।
হায়াত পেছনে তাকিয়ে দেখলো ইনচার্জ স্যার ওদের পেছনে তা দেখে আরো জোড়ে দৌড়ে বাথরুমের দিকে দৌড় দিলো।
হায়াতঃ বাপরে এতো তারাতারি বিচারও দিয়ে দিছে। হায়াত জোড়ে দৌড় দে।
দৌড়ে বাথরুম এ লুকিয়ে আছে। আর ওইদিকে হায়াতের বান্ধুবিরা কোথায় তা জানা নেই।
——————————– ———————————–
হায়াত বাথরুম থেকে বের হয়ে ক্লাসের দিকে যাচ্ছে।
হায়াতঃ না এতো ভেবে লাভ নেই দোষ যখন করেছি শাস্তিও পাবো। হায়াত সাহস রাখ। ( এমন হাজারো বকবক করতে করতে ক্লাসের সামনে এসে দেখলো ওর বান্ধুবিরা এখনো কান ধরে দাড়িয়ে আছে। হায়াতকে এদিকে আসতে দেখে মাথা দিয়ে ইশারা করছে)
হায়াতঃ এইগুলো এমন পাগলের মতো মাথা দুলাচ্ছে কেনো। (মনে মনে বলে ওদের কাছে গেলাম)
কি হয়েছে এইভাবে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো। সয়তান স্যার কি আমার জন্য তোদের শাস্তি দিছে নাকি। চল ক্লাসে যাই যাই আর হাত নামা।
আয়াতঃ তুই আরেকটু পরে আসলেও পারতি।(আস্তে করে)
হায়াতঃ কেনো আমি কি অনেক বড় পাপ করে ফেলছি যে বাথরুমে সারাদিন বসে থাকবো (ভ্রু কুচকে)
অর্পাঃ আরে তুই…..
” কি হচ্ছে এখানে। এতো কথা কিসের।”
কন্ঠ শুনে দরজার দিকে তাকালাম। তাকে দেখে সাথে সাথে কান ধরে আয়াতদের সাথে দাড়িয়ে পরলাম।
হায়াতঃ আব আসসালামু আলাইকুম আরহাম স্যার।
আরহামঃ আমি তোহ ৪ জনকে বাহিরে পাঠিয়েছিলাম এখানে তোহ ৫ জন। তোমাকে(হায়াতকে) তোহ ক্লাসে দেখিনি। ক্লাস না করে ঘুরাঘুরি করো আর মানুষকে যা নয় তাই বলা কি তোমার কাজ নাকি।
তার গা জ্বলানো কথা শুনে রাগ লাগলো অনেক। ইনি হলেন আরহাম চৌধুরী। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড অর্পা চৌধুরীর চাচাতো ভাই আর এই কলেজের ট্রাস্টির বড় ছেলে যিনি আজ জয়েন্ট করলেন।তোহ নিজেকে স্বাভাবিক করে উত্তর দিলাম।
হায়াতঃ আসলে আমি ওয়াসরুমে ছিলাম আর আমাদের আইসিটি ক্লাস হওয়ার কথা ছিলো না কারন আমাদের আইসিটি স্যার তোহ চলে গিয়েছে তাই একটু দেরি হলো।
আরহামঃ আচ্ছা একটু দেরি ( ঘড়ি দেখে) তুমি প্রায় ১০ মিনিট পর আসছো। আর ওদের সাথে কান ধরে দাড়িয়ে আছো বুঝলাম ম্যাথ করোনি। অর্পা কলেজে কি চেহারা দেখাতে আসো নাকি।পড়াশোনা ঠিক মতো করোনি কেনো( রেগে)
অর্পাঃআসলে ভাইয়া আমি….
আরহামঃ স্যার?
অর্পাঃ স্যরি আরহাম স্যার আসলে…
আরহামঃ আমি কোনো কৈফিয়ত চাইনা যাও ক্লাসে যাও সবাই।
সবাই যাচ্ছিলাম। তখনি আরহাম স্যার এর ডাকে থামলাম।
হায়াতঃ জিই স্যার।
আরহামঃ নাম কি তোমার।
হায়াতঃ জিইই আমি ইনসিয়া আহমেদ হায়াত।
আরহামঃ ঠিক আছে যাও ক্লাসে আর কোনো ফাকি আমার ক্লাসে চলবে না গট ইট।
হায়াতঃ জিই স্যার। আয়ায়া আসলে স্যরি স্যার তখন মাঠের ওই ব্যবহারের জন্য। আমি বুঝতে পারিনি আপনি স্যার হবেন।
আরহামঃ স্যার না হয়ে অন্য কেউ হলেও কি এমন ব্যবহার করতে নাকি? এনিওয়ে বাচ্চামি স্বভাব ছেড়ে পড়াশোনায় মন দেও। যাও ক্লাসে।
হায়াতঃ আচ্ছা ( সয়তান স্যার মুখে তোহ রসকস নেই মনে হয় ছোট বেলায় মধু এর জায়গায় করলা দিছিলো হুহহ মনে মনে বকবক করে নিজের বেঞ্চে গিয়ে বসলাম)
স্যার ক্লাস করাচ্ছে সবাই মন দিয়ে ক্লাস করছে। আসলে ক্লাস করছে না স্যারকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। যতসব লুচু মাইয়া।
হায়াত বিরক্ত হয়ে আয়াতকে খোচা দিলো।
হায়াতঃ এই তোরা আমায় রেখে ক্লাসে আসলি কেন তোদের কারনে কত কথা শুনতে হলো।
অর্পাঃ চুপ এখন কথা বলিস না ধরা পড়লে আরো কথা শুনবি।
হায়াতঃ হ্যা এখন আমার কথার উত্তর নেই তোহ তাই এই কথা বলছিস।
প্রিসাঃ আরে টাকলা ইনচার্জ আমাদের পেছনে দৌড় দিয়েছে দেখিসনি। স্যারের কারনে তোকে খুজে পাইনি।(ফিসফিস করে)
হায়াতঃ সত্যি তোহ ( ভ্রু কুচকে)
আনিশাঃ হ্যা স্যার মনে করছে আমরা টিফিন বক্স নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছি তাই স্যার আমাদের পেছনে পড়ে ছিলো। (ফিসফিস করে)
“থার্ড বেঞ্চের ৫ জন দাড়াও ” (আরহাম)
হায়াতঃ আমাদের বলছেন স্যার।
আরহামঃ নাহ আপনাদের কেনো বলবো এইখানে তোহ থার্ড বেঞ্চে অন্য কেউ বসেছে আর তিনজনের বেঞ্চে তোহ অন্য কেউ ৫ জন বসেছে।(রেগে)
হায়াতঃ অহো স্যার আমদের কথা বলছেন। তোরা বসে আছিস কেনো দাড়া তো।
আমরা ৫ জন দাঁড়িয়ে আছি।
আরহামঃ আপনারা সামনে এসে যা যা পড়িয়েছি তা সুন্দর করে বুঝিয়ে দিন।
হায়াতঃ এইরে এখন কি হবে। সব তোদের দোষ । এতো কথা কেনো বলিস চুপ থাকতে পারিস না।
অর্পাঃ হয়েছে হয়েছে এবার সামনে যা আজ যা মান সম্মান ছিলো তাও যাবে তোর কারনে।
আমরা সামনে দাড়িয়ে আছি এক পায়ে।
স্যার এর প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় আমাদের এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বলা হয়েছে আর বলেছে ৫ জন ৫ বেঞ্চে বসতে।
স্যার যাওয়ার ১০মিনিট হয়ে গিয়েছে। অন্য স্যার না আসা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছে। পা নামালেই নাকি যা পড়া দিয়েছে তা ডাবল বার লিখে আসতে হবে। ক্লাসের টপ গার্ল আফিফাকে বলেছে আমাদের উপর নজর রাখতে আমরা পা ফেললেই যেনো স্যারকে খবর দেয়।
★★★
ক্লাস শেষ করে একটা ফুসকার দোকানে গেলাম।
হায়াতঃ এই তোর ভাই এমন সয়তান কেন বল তোহ। বিদেশ থেকে পড়ে এসে গিয়ে সব মায়া দয়া ওইখানেই রেখে এসেছে নাকি।
অর্পাঃ আরে রাগ করিস না। আরহাম ভাইয়া একটু কঠোর কিন্তু আরনাব ভাইয়া অনেক নরম।
আয়াতঃ আরনাব ওইযে এই আরহাম স্যারের জমজ ভাই তাই না। যার ছবি দেখিয়েছিলি অনেক আগে।
হায়াতঃ তোহ এই সয়তানটাকে পাঠিয়েছে কেন ভালোটা আসলো না কেন। আরনাব ভাইয়া থাকলে আরামে থাকতাম।
অর্পাঃ আসবে আসবে যলদি আসবে। হায়াত তোর ভাই ইভানকে বলবি আমাকে যেনো কল না দেয়। আমি গেলাম।
অর্পা চলে গেলো।
প্রিসাঃ নে তোর ভাই এর সাথে আবার ঝগড়া করেছে। কতো লাকি মেয়ে যে তোর ভাইকে পটিয়ে ফেলেছে। আর আমি এক হতভাগী নারী যে কি না হায়াতের ভাই ইশানকে পটাতে পারলাম না।
সবাই আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে গেলো।
বাসায় এসে আমি অবাক আমার চোখ কপালে উঠে গেছে এ আমি দেখছি। সপ্ন দেখছি না তোহ কিভাবে সম্ভব। আজ সূর্য কোন দিকে উঠছে। আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আয়াত সামনে তাকিয়ে অবাক।
আয়াতঃ আজ সূর্য কোন দিকে উঠলো। এটা কিভাবে সম্ভব।
হায়াতঃ আমিও তাই ভাবছি মেঝো ভাই ঘর মুছতেছে।
আমাদের দুজনকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মেঝো ভাই ইশান ভ্রু কুচকে তাকালো। আমরা সেদিকে খেয়াল না দিয়ে সামনে পা বাড়ালাম আর ওমনি মেঝো ভাই ইশানের চিৎকারে ওখানেই দাঁড়িয়ে পরলাম। ভাইয়ার চিৎকারে বাড়ির সবাই এসাথে জড়ো হয়ে গেলো।
হায়াতঃকি হয়েছে ভাই এমন ভাবে চিৎকার দিয়েছো কেনো।
হায়াতের বাবাঃকি হয়েছে কিসের চিৎকার চেচামেচি হচ্ছে এখানে। আর তোমরা(হায়াত ও আয়াতকে) এভাবে এক পা উচু করে দাড়িয়ে আছো কেনো।
আমরা পায়ের দিকে তাকিয়ে সাথে সাথে বসে পড়লাম।
হায়াতঃওমা আমার পা গেলো।
আয়াতঃ আমার পা ব্যাথায় মঙ্গল গ্রহে চলে যাচ্ছি।
সবাই আমাদের দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো।
আয়াতের মাঃ কি হয়েছে পায়ে।
ছোট মায়ের কথা শুনে ঝট করে উঠে আয়াতকে টেনে তুলে কানে কানে বললাম কলেজের ব্যাপারে কাউকে বলা যাবে না নয়তো মান সম্মান যা আছে তাও যাবে। তাই নিজেকে স্বাভাবিক করে ইশু ভাই এর দিকে তাকালাম।
হায়াতঃ ইশু ভাই এইভাবে হাবলা মতো তাকিয়ে আছো কেনো।
আয়াতঃ আর এতো জোড়ে চিৎকার দিলে কেনো আমি এখনি স্ট্রোক করতাম হলে।
এইবার ইশু ভাই হালকা রেগে উঠে দাঁড়িয়ে ঘর মোছার ডান্ডাটা ঢিল মেরে রেখে দিলো।
আমরা সবাই ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি।
ইশানঃ মাত্র এই যায়গা মুছলাম আর তোরা পা দিয়ে নষ্ট করে দিবি তাই।
আয়াতঃওহ আচ্ছা এই ব্যাপার তোহ আজ কোন খুশিতে ঘর মুছতেছিস।
“লুডু খেলায় ইভান ভাইয়ার কাছ থেকে হেরে যাওয়ায় ইভান ভাইয়া এই কাজ দিয়েছে” (ইফাত)
হায়াতঃ ছোট ভাই আজ তোমার ভার্সিটি নাই (ভ্রু কুচকে)
আয়াতের মাঃ ভার্সিটির কিভাবে যাবে তিন ভাই লুডু খেলতে বসে ইভানের কাছ থেকে হেরে একজন ঘর মুছতেছে আরেকজন তোদের বাথরুম পরিষ্কার করে আসলো।
এই কথা শুনে হায়াত আর আয়াত বাথরুমের দিকে দৌড় দিলো।
বাথরুমে ডুকে চারপাশ দেখে।
হায়াতঃ ইফায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়াত ভাইয়া(প্রচন্ড রেগে)
চলবে
#অজানা_অনুভূতি
#পর্ব_১
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat