#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_2
কপি নিষিদ্ধ ❌
মেয়েটি আহাদের গায়ে ঢলে পড়তেই আহাদ মেয়েটিকে ধরে ফেলে,হঠাৎ আহাদ অনেকগুলো পায়ের শব্দ শুনতে পায়,ওর মনে হচ্ছে কয়েকজন দৌড়ে এই দিকে আসছে,আহাদ চোখ তুলে সামনে তাকায়,ও দেখতে পায় ৬ টি ছেলে এদিকেই দৌড়ে আসছে,ছেলেগুলো ওদের সামনে আসতেই আহাদকে দেখা মাএই থেমে যায়,ওরা আহাদের বুকে মেয়েটিকে দেখা মাএই সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
কারণ ওরা জানে আহাদের খপ্পরে পড়লে ওরা কখনো বেঁচে ফিরতে পারবে না।
আহাদ ওদের থেকে চোখ সরিয়ে মেয়েটির দিকে তাকায়,মেয়েটিকে বুক থেকে উঠিয়ে মেয়েটির মুখ দেখা মাএই আহাদের বুক ধক করে উঠে আর অস্পষ্ট স্বরে বলে “ঐশী “!
আহাদ ভাবতে পারেনি এটা ঐশী হবে ও দ্রুত ঐশীকে কোলে তুলে নেয়।
শাহীন শুনো সিয়ামকে কল করে লোকটাকে আমার গোডাউন নিয়ে যেতে বলো।
ওকে স্যার।
গার্ড দরজা খুলে দেয় আহাদ ঐশীকে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসে,আহাদ বসা মাএ ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়।
আহাদ ঐশীর দিকে তাকিয়ে আছে,মেয়েটা কেমন নিশ্চিন্তে ওর বুকের মাঝে চুপটি করে ঘুমিয়ে আছে,
হঠাৎ আহাদ অনুভব করলো ঐশীর শরীর বেশ ঠান্ডা হয়ে আছে,ও একজন গার্ডকে কল করে ঐশীর জন্য ড্রেস কিনে আনতে বলে।
আহাদ ঐশীর হাত ঘষছে,ঐশীর শরীর অনেক ঠান্ডা হয়ে গেছে,শরীর কি রকম ফ্যাকাশে বর্ণ ধারণ করেছে,
আহাদ যতটা সম্ভব ঐশীর শরীর গরম করার চেষ্টা করছে।
ড্রাইভার খুব স্প্রিডে ডাইভ করছে,ওরা বাড়ির সামনে চলে আসে,গাড়ি থামতেই আহাদ ঐশীকে কোলে করে গাড়ি থেকে বের হয়,সদর দরজার সামনে আসতেই সার্ভেন্ট দরজা খুলে দেয়।
আহাদ ঐশীকে নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়,ঐশীকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে একজন মেয়ে সার্ভেন্টকে ঐশীর ড্রেস চেঞ্জ করে দিতে বলে।
মেয়েটি রুমের ভেতরে আসে আহাদ বাহিরে চলে যায়।
আহাদ ওর গার্ড শাহীনের কাছে যায়,
শাহীন।
ইয়েস স্যার।
তুমি কি ঐ ছেলে গুলোর মুখ দেখে ছিলে?
জ্বী স্যার দেখেছি।
আমি শিউর ওরা ঐ দিকের কোনো গলিতে থাকে,
তুমি ওদেরকে ঐ দিকের আশেপাশের সব গলিতে খুঁজবে,একটি গলিও বাদ রাখবে না,আমার ওদেরকে চাই,যেখান থেকে পারো ওদেরকে আমার কাছে নিয়ে আসো।
ওকে স্যার।
যাও।
জ্বী স্যার।
মেয়েটি ঐশীর ড্রেস চেঞ্জ করে ভেজা কাপড় নিয়ে বের হয় আর আহাদ ডক্টরকে নিয়ে ভেতরে আসে।
ডক্টর ওর চেকআপ করে মেডিসিন দিয়ে চলে যায়।
আহাদ ঐশীর গায়ে কম্বল দিয়ে রুমের হিটার অন করে দেয়,ডক্টর বলেছে ওর শরীর এখনো অনেক ঠান্ডা ওর শরীর গরম করতে হবে নাহলে পরে সমস্যা হবে।
আজ রাত ওর জ্ঞান ফিরবে না,রাতে জ্বর আসতে পারে তাই আহাদকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলেছে,
আজ রাতে আহাদকে ঐশীর পাশে থাকতে বলেছে।
আহাদ ঐশীর পাশে বসে ঐশীর দিকে তাকিয়ে আছে,
রুমের হিটারের জন্য আহাদের প্রচুর গরম লাগছে তবুও ও ঐশীর কাছ থেকে সরছে না।
আহাদ ঐশীর গালে হাত রেখে বলে,
ঐশী তুমি এতো সুন্দর কেন?
এত মায়া কেন তোমার মাঝে?
কেন বার বার তােমার কাছে টানছো আমায়?
কেন তোমার গাওয়া গানে আমি পাগল হয়ে গেলাম?
কেন তোমার মায়ায় জড়িয়ে গেলাম?
কেন এতো দিশেহারা হয়ে গেলাম?
আচ্ছা এতো গুলো কেনোর উওর কি তোমার কাছে আছে,আদৌও কি আমি আমার এই প্রশ্ন গুলোর
উওর খুঁজে পাবো?
ভেবেছিলাম তোমাকে আমার জীবনে আসতে দিবো না কিন্তু বার বার তোমার সাথেই দেখা হয়ে যাচ্ছে,আমার অভি’শপ্ত জীবনে আমি কোনো নারীর পদচরণ চাইনি,
কাউকে আমার জীবনের সাথে বাঁধতে চাইনি,আমার অনিশ্চিত জীবনে কারো নাম জড়াতে চাইনি।
কিন্তু দেখো ঘুরে ফিরে আমাকে সেই তুমিটার কাছেই ফিরে আসতে হচ্ছে,বার বার তোমার সাথে দেখা হচ্ছে আর আমার বুকের ঝড় খনে খনে বেড়ে যাচ্ছে।
আচ্ছা কেন করছো এমন?
ঐশী আমার এই অভি’শপ্ত জীবনে আমার কাউকে প্রয়োজন,#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন,
হ্যাঁ #আমার_তোমাকে_প্রয়োজন।
ঐশী তুমি কি সব সময় থাকবে আমার সাথে?
ভালোবাসবে আমাকে?
আচ্ছা আমার এই অভি’শপ্ত জীবনটাকে মেনে নিতে পারবে তো,তুমি কি আমার অভি’শপ্ত জীবনটাতে আশার আলো নিয়ে আসতে পারবে?
সারাজীবন থাকবে আমার সাথে?
হ্যাঁ থাকতে হবে,তোমাকে আমার সাথেই থাকতে হবে হয় তো ভালোবাসার মানুষ হয়ে নয় তো ব’ন্দি’নী হয়ে।
আহাদ ঐশীর কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রয়।
রাত যত বাড়ছে ঐশীর জ্বরও ততই বাড়ছে,
আহাদ ওর মাথায় জলপট্টি দিয়ে দিচ্ছে,হাতে পায়ে তেল মালিশ করে দিচ্ছে,যতোটা সম্ভব ওকে সুস্থ করার চেষ্টা করছে,আহাদ সারা রাত ঐশীর সেবা করেছে।
ভোর চারটার দিকে আহাদের চোখ লেগে আসে ও ঐশীর পাশে বসে বিছানার সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকাল সাতটায়,
আস্তে আস্তে চোখ মেলছে ঐশী,চোখ মেলে নিজেকে একটি রুমে আবিষ্কার করে,অজানা এক রুমে নিজেকে পেয়ে ঐশী ভয় পেয়ে যায়,ও শোয়া থেকে উঠে বসে,
ডান দিকে তাকাতেই আয়না দেখেতে পায়,
নিজের গায়ে অন্য পোশাক দেখতে পেয়ে ঐশীর ভয় আরো বেড়ে যায়,ও দ্রুত নিজের হাত পা,গলা সম্পূর্ণ
শরীর চেক করে।
না সব ঠিক আছে ভয়ের কোনো কারণ নেই,কিন্তু এটা কোথায় এলো ও,আর কেই বা এখানে আনলো ওকে।
ঐশী মাথা চেপে ধরে মনে করার চেষ্টা করছে কাল
কি হয়েছিলো,
৫ টায় ঐশী ভার্সিটি থেকে বের হয়ে ওর এক স্টুডেন্টের বাসায় যায়,স্টুডেন্টের মা বার বার ফোন করে আসতে বল ছিল,বাচ্চাটার কাল পরীক্ষা তাই তার মা ঐশীকে বার বার রিকুয়েষ্ট করছিল আসার জন্য,ঐশী আর ওনাকে মানা করতে পারলো না চলে গেল তাদের বাসায় সেই বাচ্চাটাকে দেড় ঘন্টা পড়িয়ে আরেকটা বাচ্চাকে পড়াতে যায় ঐ বাচ্চাকে দেড় ঘন্টা পড়িয়ে বাসায় যাওয়ার জন্য বের হতেই বৃষ্টি পড়তে শুরু করে।
ঐশী প্রথমে ভেবেছিলো কিছু সময় এখানে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি থামার জন্য ওয়েট করবে কিন্তু রাত বাড়ছিলো তাই ও সিদ্ধান্ত নিলো বৃষ্টিতে ভিজে ভিজেই বাসায় যাবে আর এমনিতেও ও অনেক খানি ভিজে গেছে।
তো যা ভাবা তাই কাজ ও বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে যাচ্ছে,
ও এখন যাকে পড়াতে এসেছিলো তাদের বাসা মেইন রোড থেকে অনেক ভিতরে,মেইন রোডে যাওয়ার জন্য অনেক গুলো গলি পাড় করতে হয়।
ঐশী শুনেছে এই গলিতে নাকি কয়েকটা বখাটে ছেলে আছে যারা প্রতিনিয়তই মেয়েদের ইভটিজিং করে মেয়েদের উত্যক্ত করে।
ওদের কথা মনে পড়তেই ঐশীর মনে ভয় বাসা বাঁধে,
ও খুব সাবধানে হাঁটছে,হাটতে হাটতে সেই গলিটাতে চলে আসে।
ঐশী দেখতে পায় ৬ টা বখারেটে ছেলে একটা ছাউনি দেয়া ছোট জায়গাটাতে বসে ম’দ খাচ্ছে।
ঐশী আস্তে আস্তে সেখান থেকে যাচ্ছিল যাতে করে ওরা যেন টের না পায়।
ছেলেগুলো হাসাহাসি করছিল আর ম’দ খাচ্ছিল ঐ ছেলেগুলোর মধ্যে একটি ছেলে ঐশীকে দেখে ফেলে
ও বাকি ছেলেদের বলে,
ওই দেখ একটা মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
আরে হ্যাঁ তাও আবার ভেজা শাড়ীতে।
ইস কি ফিগাররে।
একে যে আমাদের আজ লাগবে।
হ্যাঁ আমাদের মনোরঞ্জন করার জন্য,কি বলিস।
হ্যাঁ।
হাহাহা ওরা সবাই ঐশী দেখছে আর বিশ্রি ভাবে হাসছে।
চল মেয়েটাকে ধরি।
ওরা সবাই ঐশীর পিছু পিছু হাঁটছে আর বাজে বাজে কথা বলছে,ঐশী যতো দ্রুত সম্ভব হাটছে,একটা সময় আর না পেরে দৌড়াতে শুরু করে ছেলে গুলোও ওর পিছে দৌড়াতে শুরু করলো ঐশী দৌড়াতে দৌড়াতে মেইন রোডে এসে ওদের বাসার রোডে না গিয়ে উল্টো রোডে দৌড়াতে শুরু করে,ছেলেগুলোও ওর পিছনে দৌড়াচ্ছে আর ওকে দাড়াতে বলছে।
একটা সময় ঐশী দৌড়াতে দৌড়াতে সামনে দুটো লোককে দেখতে পায়,তারা উল্টো দিকে ঘুরে ছিল,
ঐশী আরো জোড়ে দৌড়াতে শুরু করে ও প্রায় লোকটার সামনে চলে আসে,লোকটা পেছনে ফিরতেই ও লোকটাকে জড়িয়ে ধরে আর আতঙ্কিত গলায় বলে,
“আমাকে বাঁচান,প্লিজ আমাকে ওদের হাত থেকে বাঁচান।”
কথা বলতে বলতেই ঐশী লোকটার গায়ে ঢলে পড়ে।
তারপর ওর আর কিছু মনে নেই।
আচ্ছা ঐ লোকটা কে ছিল,আমি কাকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম,কে আমাকে ওদের হাত থেকে বাঁচিয়ে ছিল,
আর কেই বা আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে,
ঐ লোকটা না তো?
ঐশী ওর প্রশ্ন গুলোর উওর খুঁজে পাচ্ছে না।
ঐশী যখন এত এত ভাবনায় মশগুল ছিল তখনই ও দরজা খোলার শব্দ শুনতে পায়,ও সে দিকে তাকিয়ে আহাদকে দেখতে পায়,আহাদকে দেখে ঐশীর ভয় আরো বেড়ে গেল ও ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিলো।
#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_3
কপি নিষিদ্ধ ❌
আহাদকে দেখা মাএই ঐশীর ভয় বেড়ে গেল ও ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিলো।
আহাদ হাতে করে খাবারের ট্রে নিয়ে এসেছে,ও ঐশীর বেডের পাশে রাখা চেয়ারটায় বসে।
তোমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসলাম,
তোমার এখন কেমন লাগছে?
ঐশী ভয়ে কিছু বলছে না চুপটি করে বসে আছে।
কি হলো বললে না যে?
আব হ্যাঁ ভালো লাগছে।
ভয়ের কিছু নেই আমার সার্ভেন্ট তোমার ড্রেস চেঞ্জ করে দিয়েছে,তোমার শাড়ী তো ভিজে গিয়েছিল তাই ড্রেস চেঞ্জ করতে হয়েছে।
আমি এখানে কি ভাবে এসেছি?
আমি তোমাকে নিয়ে এসেছি,যাও আগে ফ্রেস হয়ে কিছু খেয়ে নাও তারপর কথা বলবো।
ঐশী মাথা নেড়ে বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে আসে।
বিছানার কাছে আসতে কার্পেটে পা বেজে পড়তে নিলে আহাদ ধরে ফেলে,ঐশী খিঁচে চোখ বন্ধ করে রেখেছে,
ও ভেবেছে ও পরে যাবে,কিন্তু নিজেকে হাওয়ায় অনুভব করতেই ও চোখ মেলে তাকায়,আহাদ ওর দিকেই তাকিয়ে ছিল,আহাদের সাথে চোখাচোখি হতেই ঐশী হন্তদন্ত হয়ে উঠে দাঁড়ায়।
সরি।
ইটস ওকে,বসো খেয়ে নাও।
না না আমি কিছু খাবো না।
তা বললে তো হবে না তোমাকে খেতে হবে এমনিতেও তুমি উইক,কাল রাত থেকে কিছু খাওনি তাই আমি কোনো এক্সকিউজ শুনবো না বসে চুপচাপ খেয়ে নাও।
আহাদের কথার উপর ঐশী আর কোনো কথা বলতে পারে না ও যেয়ে বিছানায় বসে।
আহাদ খাবারের উপর থেকে ঢাকনা সরিয়ে দিচ্ছে।
ঐশী ভদ্রতার খাতিরে বলে,
আপনি খেয়েছেন?
আহাদ মুচকি হেসে “না” বলে।
তাহলে আমার সাথে খেয়ে নিন।
সমস্যা নেই তুমি খাও।
ঐশী খাচ্ছে না,ওকে খেতে না দেখে আহাদ বুঝতে পেরেছে ঐশী খেতে ইতস্তত বোধ করছে।
তাই সার্ভেন্টকে কল করে ওর খাবার উপরে নিয়ে আসতে বলে।
একটু পর সার্ভেন্ট দরজায় নক করে আহাদ ভেতরে আসতে বলে,উনি খাবার রেখে চলে যান।
এবার খেতে পারো।
অাহাদের কথা শুনে ঐশী খাওয়া শুরু করে,ঐশীকে খেতে দেখে আহাদও খাওয়া শুরু করে।
খাওয়ার মাঝে আহাদ বলে,
আচ্ছা ঐ ছেলেগুলোকে তুমি চেনো?
জ্বী না,ওরা এলাকার বখাটে ছেলে।
তুমি বৃষ্টির রাতে বাহিরে কি করছিলে?
আসলে আমি টিউশন পড়াই কাল তো ভার্সিটির ইভেন্ট অনেক লেট করে শেষ হয়েছে তাই আমার ভার্সিটি থেকে বের হতে দেরি হয়ে যায়,ওদের পড়াতে চাইনি বাট ওদের আজ পরীক্ষা ছিল তাই পড়াতে যেতে হয়েছে,পড়ানো শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে অনেক লেট হয়ে যায়,তখন বৃষ্টিও পড়তে শুরু করে রাত বাড়ছিল অনেকখানি ভিজেও গিয়েছিলাম তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ভিজে ভিজে বাড়ি যাবো,কিন্তু ঐ গলিতে আসতেই ওরা আমাকে দেখে ফেলে আর,
আর তোমাকে ধরার জন্য তাড়া করে।
হুম,থ্যাঙ্ক ইউ,আপনি যদি আমাকে কাল না বাঁচাতেন তাহলে,
হুসস রিলেক্স কিছু হতো না,আর থ্যাঙ্ক ইউ দিতে হবে না
আহাদের ফিসফিস করে বলে,
আমি তোমাকে নয় আমার জীবনকে বাঁচিয়েছি।
কিছু বললেন?
না কিছু বলিনি তুমি খেয়ে নাও।
আর খাবো না।
কি বলো তুমি তো কিছুই মুখে দাওনি।
আসলে খেতে ভালো লাগছে না।
হুম শরীরে জ্বর তো তাই খেতে ভালো লাগছে না।
আহাদ চেয়ার থেকে উঠে ড্রেসিং টেবিলের সামনে যেয়ে মেডিসিনের বক্স থেকে দুটো ট্যাবলেট নিয়ে ঐশীর কাছে আসে।
নাও মেডিসিন গুলো খেয়ে নাও।
এগুলো কিসের মেডিসিন?
জ্বর ও মাথা ব্যাথার,নাও খেয়ে নাও।
ঐশী আহাদের হাত থেকে মেডিসিন নিয়ে খেয়ে নেয়।
আব আসলে আমি বাসায় যাবো।
হ্যাঁ যাবে,আগে কিছুক্ষণ রেস্ট করো।
না আসলে আম্মু টেনশন করবে,আর আমার ফোনটাও রাস্তায় পরে গিয়েছিলো তাই ফোন বন্ধ পেয়ে আম্মু হয়তো টেনশন করছে,আমাকে যেতে হবে।
আচ্ছা চলো।
আমি একা যেতে পারবো আপনাকে কষ্ট করতে হবে না।
আমি তোমাকে একা ছাড়ছি না,আমি তোমাকে নিয়ে এসেছি আমিই তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসবো।
আচ্ছা।
চলো।
ওরা রুম থেকে বের হয়ে নিচে আসে।
আহাদ ঐশী গাড়িতে উঠে বসে ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়,ঐশীদের বাড়ির কাছে আসতেই ড্রাইভার গাড়ি থামায়,ঐশী দরজা খুলে বের হয়।
আহাদ ওর দিকে একটা শপিং ব্যাগ বাড়িয়ে দেয়,
তোমার শাড়ি।
ঐশী ব্যাগটা হাতে নেয়।
থ্যাঙ্ক ইউ আমার হেল্প করার জন্য।
ওয়েলকাম।
ড্রাইভার গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে চলে যায়।
ঐশী আহাদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রয়,ওদের গাড়ি চোখের আড়াল হতেই ঐশীর বাড়ির ভেতরে চলে আসে।
দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে ঐশী,কলিংবেলে চাপ দিতেই আমেনা দরজা খুলে দেয় ঐশীকে দেখে কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরে।
আহ আম্মু কাঁদছো কেন?
তুই কোথায় ছিলি মা,আমার খুব ভয় ও টেনশন হচ্ছিল,সারাটা রাত আমি দু চোখের পাতা এক করতে পারিনি,তোর ফোনও বন্ধ ছিলো।
আচ্ছা ঘরে চলো বলছি আর কান্না বন্ধ করো।
আমেনা ঐশীকে ছেড়ে দেয়,ঐশী দরজা লাগিয়ে হল রুমে চলে আসে,আমেনাকে সোফায় বসিয়ে নিজেও ওনার সামনে বসে।
এবার বলো তো মা তুমি সারারাত কোথায় ছিলে,আর তোমার গায়ে এ পোশাক কেন?
আসলে আম্মু কাল আমি আমার বান্ধবীর বাসায় ছিলাম।
বান্ধবী?
কিন্তু ভার্সিটিতে তোমার কোনো ফ্রেন্ড নেই?
আম্মু কলেজের ফ্রেন্ড,বাচ্চাদের পড়ানো শেষ করে বাসায় আসার সময় ওর সাথে দেখা হয়,ও আমাকে জোর করে ওর বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলো,আমার শাড়ি ভিজে গিয়েছিল তাই ও ওর ড্রেস দিয়েছে আমাকে,
এটা ওর ড্রেস।
তোমার কোন ফ্রেন্ড এটা?
ওর নাম কি?
রিতা।
ওহ রিতা।
হ্যাঁ আম্মু।
শুনো মা কাল ওদের বাসায় ছিলে ঠিক আছে কিন্তু আর কখনো রাতে কারো বাসায় যাবে না,জানোই তো এখন দিন কাল খারাপ যেকোনো সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে,তাই সাবধানে চলবে ঠিক আছে।
আচ্ছা।
যাও রুমে যেয়ে ফ্রেস হয়ে আসো।
হুম।
ঐশী ওর রুমে যেয়ে দরজা লাগিয়ে দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে জোরে শ্বাস নেয়।
ওর এতক্ষণ মনে হচ্ছিলো ওর দম বন্ধ হয়ে যাবে।
অনেক কষ্টে আহাদের সামনে নিজেকে শক্ত রেখে কথা বলেছে,আহাদকে দেখলেই ওর ভয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়,আজ অনেক কষ্টে নিজেকে সামলেছে ও।
ঐশীর একটা বিষয় ভেবে খারাপ লাগছে আজ প্রথম বার ও ওর আম্মুকে মিথ্যে কথা বললো,অবশ্য মিথ্যে না বললেও হতো না ও যদি সত্যি কথা বলতো তাহলে হিতের বিপরীত হয় যেতো।
ও যখন ওর ভাবনায় মশগুল ছিল তখনই নিচ থেকে আমেনার চিৎকার ভেসে আসে,ঐশীর বুক কেঁপে উঠে,
ও দরজা খুলে দৌড়ে আমেনার রুমে চলে যায়।
ঐশী যেয়ে দেখে আমেনা বুকে হাত দিয়ে ব্যাথায় আর্তনাদ করেছে।
আম্মু আম্মু কি হয়েছ তোমার?
আমেনা ব্যাথায় কথা বলতে পারছে না।
ঐশী দ্রুত মেডিসিনের বক্স থেকে ব্যাথার ঔষধ বের করে আমেনাকে খাইয়ে দেয়।
বেশ কিছুক্ষণ পর আমেনার বুকের ব্যাথা কমতে শুরু করে।
আম্মু এখন ব্যাথা কমেছে?
হুম কমেছে।
কাল তোমাকে হসপিটালে নিয়ে যাবো।
দরকার নেই মা বাঁচবো আর কয়দিন শুধু শুধু টাকা নষ্ট করার দরকার নেই।
কি বলো এসব,আমি তোমাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবো আর তুমি চুপচাপ যাবে।
আচ্ছা তুমি যাও ড্রেস চেঞ্জ করে আসো।
আচ্ছা।
ঐশী রুম থেকে ড্রেস চেঞ্জ করে এসে রান্না ঘরে চলে যায়,দুপুরের রান্না করে আমেনার সাথে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরদিন সকালে,
ঐশী রেডি হয়ে ভার্সিটিতে যায়।
আজ প্রথম ক্লাসটা হবে না তাই ঐশী ক্যাম্পাসে বসে পড়ছে,ঐশীর ভিষণ মাথা ব্যাথা করছে,এখন একটু চা পেলে ভালো হতো মাথা ব্যাথা কমতো।
মামা একটা চা দিয়েন তো।
মা মাএ চা বসিয়েছি চা হতে সময় লাগবে।
ঐশী মাথা চেপে ধরে,কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রাখে।
চোখ খুলতেই সামনের চেয়ারে আহাদকে দেখতে পায়।
#চলবে
[