এই রাত তোমার আমার পর্ব ২১

#এই_রাত_তোমার_আমার
#সানজিদা_ইসলাম
#২১তম_পর্ব

গান শেষ হতেই নুহা চোখ বন্ধ করলো।কেউ হয়তো জানেই না মাহিয়াত যে অনুভূতি গুলো গোপন করে এসেছে এতো কাল তা অনেক আগেই তার জানা হয়ে গেছে। নিজের স্বামীর মনে অন্য কারো জন্য কোন প্রকার অনুভূতি থাকবে তা হয়তো পৃথিবীতে কেউ মেনে নিতে চাইবে না। কিন্তু সে মেনে নিয়েছে, মাহিয়াতের মত সেও অভিনয় করে চলছে।করণ এমন পরিস্থিতির জন্য একপ্রকার সে নিজেই দায়ী,

মাহিয়াত তো নিষেধ করেছিলো তাকে। তার বাচ্চার প্রয়োজন নেই তাকে নিয়েই ভালো থাকবে। কিন্তু সে মানেনি তাকে বাধ্য করেছে বিয়ে করতে।মাহিয়াত বারবার বলেছে একদিন পস্তাতে হবে কিন্তু সে কথা শুনে নি,মাহিয়াতকে বাধ্য করেছে ফিমার কাছাকাছি যেতে আর সেখানেই ক্ষ্যান্ত হয়নি বাচ্চার ভালো করতে গিয়ে দুজনে মিলে একটা মেয়ের মন নিয়ে খেলেছে,আর অভিনয় করতে করতে মাহিয়াত তার প্রতি সত্যিই দূর্বল হয়ে পরেছে যার জের মাহিয়াতের সাথে সাথে নুহাকেও হয়তো সারা জীবন টানতে হবে।

মনের উপর কারো জোর থাকে না কখন কার দিকে ঝুঁকে যায় তা সে নিজেও জানে না।মাহিয়াতের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে সে নুহাকে ভালোবাসে এটা সত্যিই কিন্তু তার মনে ফিমারও একটা বিশেষ স্থান আছে। কিন্তু এই জিনিস টা যদি সে আগে বুঝতো তাহলে ঠিকই মাহিয়াতকে মুক্ত করে দিতো। কারণ সে চায়না তার ভালোবাসার মানুষটির মনে আরো একজন থাকুক তাকে মনে করে কষ্ট পাক। দরকার হলে সে নিজে সরে যেতো তাদের জীবন থেকে।ফিমার জন্য মাহিয়াতের মনে একটা বিশেষ অনুভূতি তো ছিলোই, হয়তো সময়ের সাথে সাথে তাদের ভালোবাসাও হয়ে যেতো।

কিন্তু যখন সে এ ব্যাপারে বুঝতে পারে তখন অনেক দেরী হয়ে যায়।দেশ ছাড়ার পর আস্তে আস্তে সে কিছুটা স্বাভাবিক হলেও সম্পূর্ণ সুস্থ হতে কয়েক বছর সময় লেগেছে, তার মধ্যে আবার মাহিরের অক্ষমতা জানার পর আরো সে বেশি ভেঙে পরেছিলো। সে কোনোদিন মা ডাক শুনতে পারবে না তা প্রথমে সে মেনে নিতে পারেনি।তারপর মাহিয়াত তাকে বোঝায় আবার স্বাভাবিক করে।তখন সে মাহিরের আরো বেশি বেশি খেয়াল রাখতে শুরু করে, চোখের আড়াল হতে দিতো না। এসবের মধ্যে সে মাহিয়াতের দিকে একদমই নজর দিতে এক প্রকার ভুলেই গিয়েছিল।আর ঠিক সেই সময়টাতেই মাহিয়াত আরো বেশি একাকীত্ব ফিল করে আর ফিমার দিকে পুরোপুরি ডুবে যায়।

মাহির কিছুটা বড় হলো সে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ শিখল,কিছুটা নিজের কাজ নিজে করতে শুরু করলো, আর নুহার ব্যস্ততাও কমলো।ঠিক তখন নজর পরলো তার মাহিয়াতের দিকে। অনেক পরিবর্তন এসে গেছে তার। নুহা আবার মাহিয়াতের সাথে আগের মত সময় কাটাতে শুরু করলো সাথে যোগ হলো মাহির। দিন গুলো আগের চেয়ে বেশি পরিপূর্ণ মনে হতে লাগলো, কিন্তু কিছু একটা আছে যা তার কাছে স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল না। কারণ সে তার মাহিকে রগে রগে চেনে সে‌ সামান্য কোনো বিষয়ে চিন্তিত বা কষ্ট পেলেও নুহা তা ধরে ফেলতে পারে।

কিছু দিন সরাসরি জিজ্ঞাস করার পরেও যখন সে কিছু বললো না তখন সেও আর জোরাজুরি করলো না। কিন্তু একদিন ঠিকই সব জেনে গেলো। তার ইচ্ছে করছিলো সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে চলে যেতে। কিন্তু ততদিনে মাহিরকে ছাড়া বেঁচে থাকা তার কাছে অসম্ভব হয়ে উঠলো। আর মাহিয়াতে ছাড়ার কথা ভাবলেও বুক ফেটে যেতো। তাঁদের দু’জনকে নিয়েই যে তার দুনিয়া কিভাবে থাকবে তাদের ছাড়া?আর এমনও না যে মাহিয়াত তাকে ভালোবাসে না,সে ভালোবাসে তাকে কিন্তু ফিমাও তার মনের একটা অংশে আছে। অপরাধ বোধ,মায়া আর শূন্যতা থেকেই তা সৃষ্টি হয়েছে আর এসব কিছুতে সৃষ্টিতে মাহিয়াতের পাশাপাশি নুহাও অংশীদার।

সে পস্তাচ্ছে কিন্তু কিছু করার নেই,আজ এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য হয়তো কিছুটা সে নিজেও দায়ী। তাই সেও নিয়তি মেনে নিয়েছে।

নুহা উঠে বসলো, আর না অনেক হয়েছে লুকোচুরি এবার সব সামনে আনবে। আর এমনিতেও একদিন না একদিন সত্যি সামনে আসবেই। সে চায়না তার ছেলে সব সত্যি অন্য কারো কাছ ‌থেকে জানুক তার বাবা মাকে ঘৃণা করুক।এই ভয়ে এতো গুলো বছর পরিচিত কারো সাথে যোগাযোগ রাখেনি নুহা। ভিনদেশে লুকিয়ে ছিলো। কিন্তু আর কতদিন একদিন না একদিন আপন গৃহে ফিরতেই হবে। তখন কি আর কথাগুলো চেপে থাকবে?মাহির ঠিক সব জেনে যাবে সে অত্যন্ত বুদ্ধিমান ছেলে।

আর সব কিছু জানার পর তার ছেলে যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে। কিন্তু আর না সে অভিনয় করতে করতে ক্লান্ত।

নুহা উঠে এলো সাবধানে বারান্দায় গিয়ে বাবা ছেলের দিকে একবার তাকালো। কি সুন্দর বন্ধন তাদের!আর ছলেটাও কত বড় হয়ে গেলো।মনে হচ্ছে এইতো সেদিন শরীরে ধরার মতও জায়গা ছিল না আর আজ নুহার থেকেও বেশি লম্বা হয়ে গেছে বাবার সমান প্রায়। হঠাৎ নুহাকে দেখে মাহিয়াত আর মাহির চমকে গিয়েও নিজেকে সামলালো।নুহা‌ মাহিরের পাশে বসে তার মাথার চুল এলোমেলো করে দিয়ে মুচকি হাসলো জবাবে সেও মুচকি হেসে মায়ের কোলে মাথা রাখলো,

ফিমা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে মাহিরের সাথে কথা বলা শুরু করলো,

—আজ তোমাকে একটা গল্প শোনাবো শুনবে?

মাহির জোরে জোরে মাথা ঝাকালো মানে সে শোনতে ইচ্ছুক।নুহা মাহিয়াতের দিকে তাকালো মুহূর্তে মাহিয়াতের হাসি হাসি মুখের রং পাল্টে গেলো সেখানে ভয় উপস্থিত হলো সে নুহাকে নিষেধ করলো কিন্তু সে শুনলো না। আস্তে আস্তে পুরো কাহিনী তাকে বলতে শুরু করলো,

মাহির চরম বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে নুহার দিকে,নুহার চোখে পানি ফুঁপিয়ে কান্না করছে সে আর মাহিয়াত মাথা নিচু করে আছে,মাহিরের চোখেও জল হঠাৎ তার জম্মদাত্রী যার সম্পর্কে সে অবগত ছিলো না এতগুলো বছর তার জন্য অদ্ভুত টান অনুভব করলো সে……





গাল ফুলিয়ে বসে আছে ফিমা,রাগে একটু পর পর ফুস ফুস করছে আর ঘড়ির দিকে দেখছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে মনে মনে কারো গুষ্টি উদ্ধার করছে। তার চেহারার এমন ভয়াবহ অবস্থা দেখে তার শাশুড়ি অনেক আগেই স্থান ত্যাগ করেছে।আর ছেলের জন্য দোয়া করতে শুরু করেছে,না জানি আজ কয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখা দেয়। পাশেই সোফায় বসে অষ্টাদশী দুই তরুণী কুইন, এলিন‌ মাকে এমন রাগ হতে দেখে মিটমিট হাসছে।আজ তার বাবার কপালে কি আছে তা ভাবতেই আর হাঁসি চেপে রাখতে পারলো না হা হা করে একে অপরের উপর গরিয়ে পারে হাসতে শুরু করলো।আর এই হাঁসিই যেনো আগুনে ঘি এর মত কাজ করলো।ফিমা তেড়ে এসে বললো,

—এতো হি হি হা হা কিসের? কয়টা বাজে?তোরা এখনো ঘুমাতে যাচ্ছিস না কেনো?এখনো এখানে কি তোদের?উঠ ঘরে যা কাল ভার্সিটি নেই? সকালে উঠতে হবে না নাকি?

—আর কিছুক্ষণ থাকি না মা আজকের সার্কেসটা দেখে ঘুমাতে যাই।

কুইনের কথা শুনে ফিমা চোখ বড় বড় করে বললো,

—সার্কেস মানে?কিসের সার্কেসের কথা বলছিস তুই?তোরা কি বলতে চাইছিস?আমি প্রতিদিন সার্কেস করি?তবে রে, আজ আসুক তোদের বাবা। থাকবোই না তোদের বাড়িতে। কালই আমি বাপের বাড়ী চলে যাবো।কারো কাছে আমার কোনো মূল্যই নেই। একজন কথা দিয়ে কথা রাখে না আর অন্য জনেরা বলে আমি নাকি জোকার সার্কেস করি।ঠিকই তো বলেছে জোকার না হলে কি আর সারাদিন তাদের জন্য খাটি?বলে নেকা কান্না শুরু করলো।

মায়ের কথা শুনে হা হয়ে গেলো কুইন এলিন। কিন্তু খুব বেশি আবাক হলো না কারণ তারা জানে তার মা কেমন,আর কুইন তো মায়ের নেকা কান্না দেখে ফট করে বলেই বসলো,

—আমি তোমাকে জোকার কখন বললাম আমি তো সার্কাস…

আর কিছু বলার আগেই এলিন কুইনকে কুনুই দিয়ে ধাক্কা দিয়ে থামিয়ে দিলো তারপর মায়ের কাছে গিয়ে বলল,

—আহা মা কে বলেছে তুমি জোকার? তুমি তো আমাদের সুইট মা। দুনিয়ার সবচেয়ে ভালো মা। কুইন তো টিভির সার্কেসের কথা বললো,ওটা শেষ হলেই ঘুমাতে যাবো।এর মধ্যে বাবা এসে পরলে তার সাথেও দেখা হয়ে যাবে সেটাই বলছিলাম। তুমি শুধু শুধু আমাদের ভুল বুঝে কষ্ট পাচ্ছো।আমরা কি আর বাবার মত নাকি‍?আমরা তোমাকে কত ভালোবাসি।বলে মাকে জরিয়ে ধরলো ফিমাও তাকে বুকে জড়িয়ে নিলো দূরে দাঁড়িয়ে কুইন এলিন আর তার মায়ের ড্রামা দেখছিলো হা করে। কি নিখুঁত অভিনয়! ফিমা তাকেও হাতে ইশারা করতেই সেও হাসি মুখে ঝাঁপিয়ে পরলো মায়ের বুকে।

—আচ্ছা তাহলে এই ব্যাপার আমার নামে মা বেটিরা মিলে বদনাম করে তারপর আদর খাওয়া হচ্ছে?ঠিক আছে সমস্যা নেই আমার দলেও একজন আছে। আমরা দু’জনই তোমাদের তিনজনই জন্য যথেষ্ট। কোথায় কোথায় আমার ছোট সৈনিক? ঘুমিয়ে গেছে নাকি?

এলিন মার বুকে থেকেই জবাব দিলো,
—হ্যা তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলো এতক্ষণ আর আমরাও জেগে ছিলাম। দেখা হয়ে গেছে এখন তোমার ঘরের ঘূর্ণিঝড় সামলাও,অল দা বেস্ট বাবা। চল কুইন।

বলে তারা দৌড়ে ঘরে চলে গেলো।ফিমা রাগি চোখে তাদের দিকে তাকিয়ে বললো,
—তবে রে আমি ঘূর্ণি ঝড়?দাড়া আজ তোদের হচ্ছে। বলে তাদের পিছু নিতে নিলেই ভারি পুরুষালী হাত তাকে আটকে দিলো,

—আরে আরে ঐ দিকে কই যাচ্ছো? আমার দিকেও তো একটু নজর দাও সারাদিন শুধু ওদের পেছনেই পরে থাকো।আর বেচারা ভোলা ভালা স্বামী তার খোঁজ খবরই নাও না।

ফিমা ১০০ডিগ্রি রাগ নিয়ে পুরুষ অবয়বের দিকে ঘুরে তাকালো। তাকে কিছু কড়া কথা বলবে বলে ঘুরে দাঁড়াতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পরলো উদ্বিগ্ন হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল,

—এই কি হয়েছে?তোমার মাথায়, হাতে ব্যান্ডেজ কেন? আল্লাহ তুমি এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছো? আমাকে তো কিছু বলবে নাকি?কি করে হলো এসব?তুমি বসো আমি পানি নিয়ে আসছি আমিও কতক্ষণ যাবৎ তোমাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছি নিশ্চই কষ্ট হচ্ছে ?সব আমার দোষ।

বলে ফিমা চোখের পানি ছেড়ে দিলো,

—হেই হেই কান্না করছো কেনো? কিছু হয়নি আমার সামান্য ব্যাথা পেয়েছি। এতো ব্যাস্ত হওয়ার দরকার নেই। এমন ফেচফেচ কান্না রেখে এদিকে আসো তো আগে শরীরে এনার্জি নিয়ে নেই।

ফিমা এগিয়ে গেলো কাঙ্খিত পুরুষের দিকে।আর সেও নিবিড় ভাবে তার বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখলো বেশ কিছুক্ষণ। এদিকে ফিমার নাকের পানি চোখের পানিতে একাকার হয়ে যাচ্ছে তার শার্ট।

পুরুষটি ভরাট কন্ঠে বললো,

—কান্না থামাও ফিম।

ফিমা কান্না থামালো না বরং আর একটু শক্ত করে তার গলা জড়িয়ে ধরে বললো,

—কি করে হলো এই সব? আমাকে কি একবার জানানোর প্রয়োজনও মনে করলে না?

—সামান্য আঘাত ফিম। বড় কিছু না।বাইকটা হঠাৎ আউট অফ কান্ট্রোল হয়ে গিয়েছিল। শুধু শুধু চিন্তা করছো।আর তোমাকে আগে বললে বুঝি তুমি চুপ চাপ থাকতে?বরং সব গুলো সুস্থ মানুষ কে অসুস্থ করে দিতে সাথে আমাকেও।

—তুমি কোনো দিন ভালো হবে না তাই না? তোমাকে হাজার বার নিষেধ করেছি বাইক চালানো বন্ধ করে দাও এতে অনেক রিস্ক। আমার প্রচন্ড ভয় করে। এখন দেখলে তো? আল্লাহ বাঁচিয়েছে অল্প আঘাত পেয়েছো। বেশি কিছু হলে আমি তো মরেই যেতাম। জীবনে অনেক কিছু হারিয়েছি কিন্তু তোমাকে হারাতে পারবো না। আমি মরেই যাবো। আমাকে প্রমিস করো আজকের পর আর তুমি বাইক নিয়ে বের হবে না। আমাকে ছুঁয়ে কথা দাও।

—আরে বাইক দিয়ে যাওয়া আসায় সুবিধা হয় সময় ও কম লাগে তাইতো ইউজ করি এটা ছাড়া চলাচল করবো কিভাবে?

—রিক্সায় যাবে, বাসে যাবে কিন্তু বাইক আর না। তোমার সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি। আমার জীবনে তোমার মূল্য যে কি তা তোমাকে আমি বলে বোঝাতে পারবো না। তুমি আজ থেকে আর বাইক চালাবে না বেস।

—আরেএএএ আমার কথাটা তো…

—হ্যা হ্যা আমার কথা শুনবে কেনো?আমি তোমার কে? আমার কোনো দাম আছে নাকি?কাল সকালেই বাড়ি চলে যাবো। বলে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে শুরু করলো, কিন্তু তার স্বমী আনাস তাকে ছাড়লো না বরং হেঁসে আবার কাছে টেনে নিয়ে বললো,

—হয়েছে আমার ড্রামা কুইন আর আমাকে বাবা বাড়ির ভয় দেখানো লাগবে না।আজ থেকে আমি আনাস শেখ আমার স্ত্রী ফিমা নওরিন ওরফে ফিমের কথায় বাইক চালানো বয়কট করলাম। এবার খুশি?

ফিমা পা উঁচু করে ভালো ভাবে গলা পেঁচিয়ে ধরে বললো,
—খুব খুশি।

সাথে সাথে আনাস ‘আহ্’ করে উঠলো,

ফিমা উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করলো,

—কি হয়েছে?

—এভাবে কেউ গলায় ঝুলে পরে?ব্যাথা পেয়েছি না?

—তো আমি কি করবো?তোমাকে এতো লম্বা কে হতে বলেছে?মেয়ে দুটোও আমাকে ছাড়িয়ে গেছে নিজেকে কেমন ছোট ছোট লাগে।

ফিমার কথায় আনাস হেঁসে দিলো,
—আমার তো ছোট বউই চলছে চলবে।জরিয়ে ধরলে‌ একবারে বুকে এসে গেথে যাও কি যে শান্তি আহহ…

—এবার ছাড়ো,ফ্রেস হয়ে এসো আমি খাবার দিচ্ছি।

—ওকে,

—আমার হেল্প লাগবে?না তুমি পারবে?

আনাস কিছু একটা ভাবার মত ভঙ্গি করে বিজ্ঞদের মত বললো,
—উমম তুমি আসলে অবশ্য মন্দ হয় না! দুজনের একসাথে গোসল হয়ে যাবে।

—যাহ অসভ্য,বুড়ো হয়ে যাচ্ছে দুদিন পর মেয়ে বিয়ে দিবে তবুও অসভ্য পানা যাবে না।

আনাস হাসতে হাসতে রুমে চলে গেলো আর ফিমা খাবার গুলো গরম করে টেবিলে সাজানো শুরু করলো।

সব খাবার সাজানো শেষ হতেই ফিমা আনাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো, লোকটাকে ছাড়া কিছু ভালো লাগে না তার।যতক্ষণ পাশে থাকে কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায়।বয়স দশ বছর কমে যায়।অথচ তাদের প্রথম দেখাটা না কতই না ভয়াবহ ছিলো আর আজ লোকটাকে ছাড়া এক বেলা খাবার খেতে পারে না সে।

ফিমা চলে যায় প্রায় সতেরো বছর আগের দিনগুলোতে,

চলবে…

(এখান আর শেষ পর্ব তেও শেষ লেখবো না হুহ😤।লেখা শুরু করলে আর শেষ হইতেই চায় না। বড় হইতেই থাকে হতেই থাকে। আপনারা কিছু মনে করবেন না প্লিজ। দেখি গল্প কতদূর যায়🙃🙃)

10 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here