গল্পঃ ডাক্তার_বউ পার্ট_১_২

গল্পঃ ডাক্তার_বউ
পার্ট_১_২
সকালে ঘুম আছে এমন সময় ট্রাকের শব্দে ঘুমটা গেল ভেঙ্গে।বুকের ভিতর ধকপক ধকপক করছে।এত জ্বরে কেউ হরেন বাজায়?/তাও বাড়ির সামনে এসে।আম্মুকে ডাক দিলাম
—কি হয়ে ডাকিস কেন??
—এই সকাল বেলা ট্রাকের শব্দ কেন??
–মাথা মোটা এখন ১১ টা বাজে।সারা রাত শুধু মোবাইল টিপা আর দুপুর পর্যন্ত ঘুমানো।।
—তোমার খালি এক ডাইলোগ।আজ ছুটির দিন বলে এতো ঘুমাচ্ছি।
—ছুটির দিন বলে সারা দিন ঘুমাতে হবে।
–যাই হোক। ট্রাক কেন এখানে???
–পাশের বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া আসলো তাই।
—ও।আচ্ছা। এই জন্যই।
–তাড়াতাড়ি ওঠ।নতুন ভাড়াটিয়া একটু কাজে হেল্প কর গিয়ে।
—আচ্ছা চেষ্টা করি।
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে খাবার খেয়ে বাইরে গেলাম।ট্রাকটা এখনও আনলোড চলছে।আমি গিয়ে নতুন ভাড়াটিয়াকে ডাক দিলাম
—এই যে আঙ্কেল এদিকে আসেন।
—কি হয়েছে বাবা??
–আমি পাশের বাসাতেই থাকি।আপনারা নতুন তো আপনাদের কি কাজে হ্যাল্প করবো??
—করলে ভালো হতো।অনেক জিনিসপত্র নামাতে হবে।
—আচ্ছা আঙ্কেল আমি হ্যাল্প করছি
—ঠিক আছে।
তারপর পুরা ২ ঘন্টা কাজ কলমান।হাত পায়ের আবস্থা শেষ।সালার আঙ্কেলেরর যদি একটা মেয়ে থাকতো তাও ভালো লাগতো।তাও নাই মনে হয়।১০-১২ বছরের একটা পিচ্চি ছেলে আছে।একটা মাইয়া থাকলে তাও এত কাজ করলাম এটার শোধ উঠতো।আঙ্কেল আমার কাজে খুশি হয়ে কাধ চাপড়িয়ে একটু প্রশংসা করলো।
আমি আর প্রসংশা বেশি খেতে পারিনা।তাই চলে আসলাম।বিকালে ছাদে বসে মোবাইল টিপছি আরামে।এমন সময় দেখি একটা মাইক্রো এসে থামলো। মাইক্রো থেকে একটা মেয়ে নামলো।আঙ্কেলকে দেখে বাবা বলে ডাকদিল।
আমার হার্টবিট তখন এত জ্বরে চলছে যে বুঝতেই পারছিনা।আমার তো আনন্দের শেষ নাই।মনের ভিতর তখন লুঙ্গি ড্যান্স বেজে উঠলো।তাই একটা ড্যান্স দিয়ে দিলাম।
লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স
–এই যে মিস্টার ছাদ থেকে পড়ে যাবেন সাবধান।
তাকিয়ে দেখি ওই মেয়েটা…….
—আপনি আমার জন্য কত ভাবেন।
–আরে আপনার জন্য ভাবার কি আছে আজব।আপনি আপনি টাওজার পড়ে লুঙ্গি ড্যান্স দিতে দিতে ছাদের পাশে চলে গেছেন সেদিকে তো খেয়াল নাই তাই বললাম।
—আপনি কত ভালো।আপনার মতো মেয়েই তো দরকার।
–আপনার কথা ঠিক বুঝলাম না।
–বুঝা লাগবেনা।এনি ওয়ে আমি সাগর অনার্স ১ম বর্ষ।
—ওহ।আমি আরিয়া মেডিকেল ৩য় বর্ষ।সো আপু বইলা ডাকবা।
মনের সব বাত্তি ধক কইরা নিভা গেল।সালার আঙ্কেল মেয়ে জন্মম দিছেন আমার বয়সের দিতে পারেননি।বড় মেয়ে থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো ছিল তাও মুখের সামনে দিয়ে এমন সুন্দরি মাইয়া ঘুইরা বেড়াইতো না।কি পুড়া কপাল আমার।
–এই যে ছোট কথাই হারাই গেলে??
—না কোথাও না।আপনি আমাকে ছোট বলবেননা।আমার ভালো লাগেনা।
—১০০বার বলবো।কারন তুমি তো আমার ছোটই।
আম্মু ডাকছে তাই বদমাস মাইয়ার কাছ থেকে চলে আসলাম।আইসাই ছোট ছোট লাগাই দিছে।
পরের দিন সকালে কলেজে যাব বলে বের হয়েছি।কলেজ কাছে হওয়ায় সাইকেল নিয়ে যাই।রাস্তাই বের হয়েছি আর দেখি বদমাস মাইয়া ডাকছে।
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

—এই যে ছোট কলেজে যাচ্ছ নাকি।
মনে হয় কইসা একটা চড় দিয়ে আসি।কিন্তু তাও পারবনা।তাই মনের রাগ মনের ভিতরেই রেখে দিলাম।
–জ্বি।
—আমাকে একটু ড্রপ করে দাও তো।
–আপনার মাইক্রো থাকতে আমার সাইকেলে কেন ড্রপ নিবেন?
—তুমি ছোট মানুষ। চুপচাপ থাকবা।যা বলছি তাই করো।
আমি কিছু বলার আগেই সাইকেলে চেপে বসেছে।তাই আর কিছু করার নাই।যেতেই হবে এখন।
–আরে এতো ধিরে চালাও কেন?আমার দেরি হয়ে যাবে।তাড়াতাড়ি চালাও।
–পড়ে যাবেন তো তাহলে।
—তোমারে না বলছি তুমি ছোট মানুষ। কম কথা বলবা।যা বলছি তাই করো।
আমিও দিছি হাওয়াই বেগে টান মনের রাগে।মেডাম দেখি আমাকে এবার শক্ত করে ধরেছে।
চলবে……
লেখাঃSagor Islam Raj(ভালোবাসার কবি)

গল্প ঃ ডাক্তার বউ
পার্ট ২
আমি সাইকেল অনেক জ্বোরে চালাচ্ছিলাম।আর আরিয়া আমাকে শক্ত করে ধরে আছে।এলাকার লোক গুলো সবাই আমার দিকে হা করে চেয়ে আছে।সবাই ভাবছে যে ছেলে রাস্তায় মেয়েদের সাথে কথাও বলেনা।সে আজ একটা মেয়েকে সাইকেলে নিয়ে চালাচ্ছে।আমার কেমন লজ্জা লাগছিল।কিন্তু কিছু করতে পারছিনা।
সবচেয়ে অবাক বেশি হয়েছে এলাকার বখাটে ছেলেরা।তারা যেভাবে হা করে আছে মনে হচ্ছে নিজে নিজেই ওদের মুখের ভিতর ঢুকে যাই।
আমার কলেজের কিছু আগেই আরিয়াকে সাইকেল থেকে নামিয়ে দিলাম।
–ঐ পিচ্চি এখানে নামালে কেন??
–আপু আপনাকে নিয়ে আরেকটু গেলে আমি আর কাওকে মুখ দেখাতে পরবনা।
–আসছে আমার লজ্জাবতি রে।
–হুম।এইবার আপনি আপনার রাস্তা মাপেন আমি আমারটা।
—যাও যাও।আর লজ্জা পেতে হবেনা।
—হুম।এবার যান।
—সাগর?
—আবার কি হলো??
—তোমার কলেজ শেষ হবে কখন?
–আপনাকে বলবো কেন??
—না একসাথে যাব তাই।
—এক সাথে যেতে পারবনা।আমি আমার মতো চলে যাব আপনি আপনার মতো যাবেন।
—আমি এখানকার কিছুই ভালো ভাবে চিনিনা।আর শুনছি ওখানকার বখাটেরা খুব খারাপ।আমার ভয় করে।
—বুড়ি মাইয়ার আবার ভয়।
—এই পিচ্চি কথা কম।যা বলছি তাই।আমি ৩ টার সময় এখানে অপেক্ষা করবো।
—যানতো আমি পারবনা।
বলেই সাইকেল নিয়ে দড় দিছি।আর কিছুক্ষন থাকলে কারো চোখে পড়ে যেতে পারে।কলেজে গিয়ে ক্লাস করলাম।বন্ধুদের সাথে ঘুরা ফেরা করতে করতে ৩.৩০ বেজে গেছে।তাই দেরি না করে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় রওনা দিলাম।
বাসায় আসার পথে একটা তেতুলের আচারের প্যাকেট নিলাম।আমার খেতে ভালোই লাগে।সাইকেলে চড়ে প্যাডেল করছি নড়ছে না।কি ব্যাপার আমার হেলিকাপ্টার তো ৫ জনকে নিলেও এমন আটকায়না।আজ এমন করছে কেন।সাইকেলটা চেক করতে নিটে নেমে দেখি আরিয়ে পিছনে দাড়িয়ে।আর ও সাইকেলের চাকার নিচে ইট দিয়েছে।
—কি ব্যাপার সাগর সাহেব চোরের মতো পালাচ্ছেন কেন?
—আমি চোর হতে যাব কেন।যানেন আমার কতো সাহস।
–তাই নাকি তা শুনি কত সাহস।
—আমি রাত ১০ টা পর্যন্ত এখান থেকে একা একা বাসায় যেতে পারবো।
—ওরে বাবারে আপনি অনেক সাহসি দেখছি।
–হুম।সব মেয়েরাই এই কথা বলে।
–পিচ্চি পোলার ঢং দেখো।একা একা বাসায় পালাচ্ছে আর বলে খুব সাহস।
–আমি মেয়েদের সাথে রাস্তাই চলিনা তাই।
–হুহু।আসছে সাধু বাবা।এখন চলো পিচ্চি।
বলেই সাইকেলে চেপে বসলো।সাইকেল চালাচ্ছি।এমন সময় আরিয়া বলে
–তোমার হাতে কি??
–তেতুলের আচার।
—আমার খুব পছন্দ তেতুলের আচার।
বলেই আমার হাত থেকে প্যাকেট টা নিয়ে নিল।
–আপনি এটা নিলেন কেন??
—আমার যেটা পছন্দ হয় আমি সেটা নিয়ে নিই।
–হুহু
–কথা কম।সাইকেল ভালো করে চালাও।
–হুম
বাসায় আসলাম।আর ভাবছি এতো বড়লোক মাইয়া তার মাইক্রো রেখে আমার সাইকেলের পিছনে পড়লো কেন??কিছুই মাথায় ঢুকছেনা।
অযথা চিন্তা করে লাভ নাই।কার মাথায় কি আছে কে জানে।রাতে আমার আকাশ দেখতে খুব ভালো লাগে।তাই রাতের খাবার খেয়ে ছাদে গেলাম।আকাশের তারা দেখছি।
হঠাৎ দেখি আরিয়াদের বাসার ছাদে আগুন জ্বলছে।আমি তো ভয়ে গেছি।আবার আগুন নিভে গেল।আমি বাচলাম।আজ আর ছাদে থাকা ঠিক হবেনা।বলে ছাদ থেকে নামতে যাবো।এমন সময় দেখি ছাদের দরজার কাছে সাদা কাপড় পড়ে কে যেন দাড়িয়ে আছে।
আমি বললাম কে ওখানে?কোন উত্তর দিলোনা।কেমন বিশ্রি হাসি হাসছে আর আমার দিকে এগিয়ে আসছে।হঠাৎ আরিয়াদের ছাদে আবার আগুন জ্বলে উঠলো।আগুনের আলোতে দেখি সাদা কাপড় পড়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।আর তার পা যেখানে দিচ্ছে সেখানে রক্তের ছাপ পড়ছে।
ভয়ে আমার জান বুক থেকে হাতে চলে এসেছে।আমি ভয়ে থরথর করে কাপছি।কাছে চলে এসেছে ভুতটা।ভয়ে আমি কথা বলতে পারছিনা।বিশ্রি হাসি হাসছে আর তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।আমি শুধু একবার মা বলে চিৎকার দিছি।আর কিছু মনে নাই।
যখন চোখ মেললাম।দেখি আরিয়া পাশে বসে আছে।আরিয়ার চোখ কেমন ফোলা ফোলা।এমনিতেই চিকনি চামেলি।মনে হহচ্ছে আরো চিকন হয়ে গেছে।আমার চোখ খোলাতে আরিয়া সবাইকে ডাকলো।আর আরিয়া চলে গেল।কি ব্যাপার চলে গেল কেন।
আমি কি মইরা গেছি নাকি?
–মা আমার কথা শুনতে পাচ্ছো?
–কি বাজে বকছিস।শুনতে পাবনা কেন?
–আমি সত্যি বেচে আছি তো?
—তোর মাথা মনে হয় গেছে।
—ভুতে আমাকে খেয়ে ফেলেনি?
–ভুত কিসের ভত।কোন ভুত নাই।ওই সাজে আরিয়া তোর কাছে গেছিল।
—কি এত বড় সাহস আমাকে ভয় দেখায়।
আরিয়াকে খুজছি।পাইলে আজ খবর আছে।সিনিয়র ফিনিয়র দেখবনা।
চলবে……..
Sagor Islam Raj(ভালোবাসার কবি)

#আপনারা ঠিক মতো অন্য গল্প পড়ছেন না এবং লাইক কমেন্ট করেন না, তাই গল্প দিতে দেরি হবে। যত বেশি বেশি লাইক কমেন্ট করবেন তত তাড়াতাড়ি গল্প পাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here