গল্পঃ ডাক্তার_বউ পার্ট_৩_৪

গল্পঃ ডাক্তার_বউ
পার্ট_৩_৪
আমি বিছানা থেকে উঠতে চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলামনা।শরীরটা কেমন দুর্বল অনুভব করলাম।তাই আর বিছানা থেকে না উঠে শুয়ে থাকলাম।শুয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতে পারিনি।আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙলো।
–সাগর এই সাগর আর কত ঘুমাবি এবার ওঠ।
–আ মা ঝামেলা করোনা।ঘুমুতে দাও।
–পুরাদিন ঘুমিয়েছিস।আর কত ঘুমাবি এবার ওঠ।
–আচ্ছা উঠছি।
–শোন।
–আবার কি হলো??
–ঘুম থেকে উঠে আরিয়ার কাছে যাবি।
–ওকে তো কাছে পেলে।
–চুপকর।মেয়েটা সকাল থেকে এখনো খায়নি।
–খায়নি কেন??
–আমি কি জানি।তুই যা ওর থেকেই শোন গিয়ে।
–আচ্চা
বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে।আরিয়ার বাড়ির দিকে গেলাম।ওর বাসায় যেতে আরিয়ার ছোট ভাই
–আরে সাগর ভাইয়া কেমন আছেন এখন??
—আমি তো ভালোই আছি।তোমার কি খবর।
–আমার খবর ভালো।আপুর খবর খারাপ।
-বতোমার আপুর কি হয়েছে??
–কাল রাতে আপনাকে ভয় দেখানোর পর থেকে এখন পর্যন্ত খায়নি।শুধু কান্না করছে।
–তোমার আপু কোথায়??
–আপুর রুমে
আমি আরিয়ার রুমের দিকে গেলাম।রুমে ঢুকে দেখি পুরা ঘর এলোমেলো।আর আরিয়া জানালার ধারে বসে আছে।আমি আরিয়ার কাধে হাত রাখতেই চমকে উঠে পিছনে তাকায় আরিয়া।
–সিনিয়র আপু আপনি বলে কাল থেকে খাননি??
–কোন কথা নাই।কান্না শুরু।
–আবার কি হলো এখন আবার কান্না করছেন কেন??
–আমার জন্যই তোমার আজ এমন হলো।আমি বুঝতে পারিনি তুমি এত ভিতু।
–ঐ আমাকে ভিতু বলবেন না আমি মেলা সাহসি।
–ওরে আমার সাহসিরে যে ভয়ে জ্ঞান হারায় বলেই হাসতে লেগেছে আরিয়া।
আমি তার হাসিটা এক ধ্যানে দেখছি।ওর হাসিটা অনেক সুন্দর।আর কান্না মিশ্রিত হাসিটা আরো বেশি সুন্দর।যেকোনো ছেলের হৃদস্পন্দন থমকে যাবে।ভাবনার দেশে তার পৃথিবি জয় করা হয়ে যাবে কয়েক সেকেন্ডে।
–ঐ হ্যালো এক ধ্যানে তাকিয়ে কি ভাবছো?
–হকচকিয়ে।কিছুনা।আপনার হাসিটা অনেক সুন্দর।
–কেন আমি সুন্দর না??
–না আপনি পেত্নির মতো দেখতে।বলেই দৌড় দিলাম।
আরিয়া আমার পিছেপিছে দৌড়াতে লাগলো আমাকে ধরতে।কিন্তু আমাকে ধরা এত সহজ নয়।আমি দৌড়ে বাড়ি চলে এসেছি।রুমে ঢুকে হাফ নিচ্ছি।এমন সময় আম্মুর ডাক।
–সাগর এদিকে আয়
আম্মুর আবার কি হলো।
আম্মুর কাছে গিয়ে দেখি আরিয়া আম্মুর কাছে।
–তুই আরিয়াকে কি বলেছিস??
–কই কিছু বলিনি তো।
–মিথ্যা বলছে আন্টি।
–আমি মিথ্যা বলিনা।
–তুই চুপকর।সত্যবাদি উঠে আসছে।
–মা একটা মেয়ের সামনে এভাবে বললে ইজ্জত থাকবে আমার??
–ওরে আমার ইজ্জতদার রে।
–হুহু
–আন্টি আমার খুব খুদা লাগছে খেতে দিন।
–আচ্চা মা তুমি দাড়াও আমি খাবার নিয়ে আসি।
বলে আম্মু খাবা আন্তে গেছে।
–তোমার আজ খবর আছে সাগর সাহেব।
–কি খবর?
–সময় হলেই দেখতে পাবে।
আম্মু খবার নিয়ে চলে এসেছে।
–এই নাও মা তোমার খাবার।
–আন্টি সাগর আমাকে পেত্নি বলছে।চিকনা চামেলি বলেছে।আর বলেছে ঝড়ে নাকি আমি উড়ে যাব।তাই শাস্তি হিসেবে এখন ও আমাকে খাওয়াই দিবে।
—অ্যা।সখ কত।বললেই হলো।
–না হলে আমি আজও খাবনা কিন্তু।
–সাগর তুই আরিয়াকে খাওয়াই দে।মেয়েটা কাল থেকে না খেয়ে আছে।
–পারবনা।
–তাহলে আজ থেকে তোর খাবার বন্ধ।
–এটা কেমন বিচার মা??
–হ্যা।যদি কথা না শুনিস তাহলে খওয়া বন্ধ।
–ঠিক আছে দিচ্ছি।
আমি আরিয়াকে খওয়াই দিচ্ছি আর ও চেয়ারি বসে ৩২ পাটি দাত বের করে হাসছে আর খাচ্ছে।আমার তো গা জ্বলে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে তুলে এক আছাড় দেই কিন্তু কিছু বলতে পারছিনা।কিছু বললে আমার খাবার বন্ধ হয়ে যাবে।
–উহু।হাতে কামড় দিলেন কেন??
–ইচ্ছা করে দিছি নাকি এমনিতে লেগে গেছে।
–আপনি ইচ্ছা করে দিছেন।
–ইচ্ছা করে দিলে তুমি কি করবে শুনি?
–আর খওয়াই দিবনা।
–আন্টিইইই
–আম্মুকে ডাকতে হবেনা আমি খাওয়াই দিচ্ছি।
–গুড বয়।
খাওয়া শেষ করে।আম্মুর সাথে কি আজিবাজি কথা বলে বাসায় যাচ্ছে।আর যাবার সময় বলে গেল।
–ছোট।এটা মাত্র শুরু।বহত কুস বাকি হে।
বলে মুখ দিয়ে ভেংচি কেটে চলে গেল।
চলবে…….
লেখাঃ Sagor Islam Raj( ভালোবাসার কবি)

গল্পঃ ডাক্তার বউ
পার্ট ৪
আমি আমার রুমে চলে এলাম।মেয়েটা আমার ইজ্জত পাংচার করে দিল??শেষমেশ আমি একটা মেয়েকে খাওয়াই দিলাম??না এটা হয়না এর প্রতিশোধ আমি নিবই নিবো।দেখে নেব আমি আরিয়াকে।আমাকে চিনেনা আমি কি জিনিস। একবার খালি সুযোগ আসুক হাতে।আমি কথাগুলো ভাবছি আর আম্মুর ডাক
–সাগর এদিকে আয়
–কি হয়েছে মা??
–আজ কলেজে যাবিনা??
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

–দেখছোনা আমি কত অসুস্থ তাহলে কি করে যাবো??
–খালি বাহানা খোজা তোর।একটা বাহানা পেলেই হলো তাহলেই কলেজ অফ।
–সত্যি বলছি তো আজ আর যাবনা কাল থেকে যাবো।
–আচ্ছা ঠিক আছে।এক কাজ কর।
–কি কাজ??
–আরিয়ার গাড়িতে সমস্যা হয়েছে ওকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আয়।
–আমি কিজন্য ওকে নিয়ে যাব??
–এলাকাতে অনেক বোকাঠে আছে যানিস তো।মেয়েটা একা যেতে ভয় করছে।
–তো আমি কি করবো??
–তুই নিয়ে যাবি।
–আমি পারবনা
বলেই ঘরের দিকে যাচ্ছিলাম তখন দেখি আরিয়া দরজার কাছে দাড়িয়ে ছিল।সেখান থেকে চলে গেল।
আজকে আমি ঠিক প্রতিশোধ নিয়ে নিয়েছি।আমার সাথে মাস্তানি??আজকে যাও বাবা দেখো রাস্তা কি জিনিস।
রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ি।বিকালের দিকে পাড়ায় খেলতে বের হয়েছি।অনেকদিন পরে আবার খেলাধুলা করবো।বন্ধুদের সাথে অনেক খন আড্ডা দিলাম।আম্মুর ফোন পেয়ে বাসায় গেলাম।কি একটা জরুরী দরকার আছে বললো।বাসায় এসে দেখি আমার বাড়িতে নতুন আঙ্কেল আন্টি তার ছোট ছেলে।মানে আরিয়ার বাবা মা আর ভাই।
–কি হয়েছে আম্মু??
এক চড়।তাও ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে যতজোরে ঝড় হয়েছিল তার থেকে দ্বিগুণ জোরে।মনে হচ্ছে গালটা অবস হয়েগেছে।
–বলবে তো কি হয়েছে।না বলেই মারতে শুরু করলে।
–তোকে কত করে বললাম মেয়েটাকে তার কলেজে নিয়ে যা সময় ভালো না।মেয়েটা নতুন কিছু চিনেনা।এখনো বাড়িতে আসেনি।
–বন্ধুদের সাথে হয়তো আড্ডা দিচ্ছে একটু পরে হয়তো চলে আসবে।
–ওর আজকে দুপুরেই চলে আসার কথা ছিল।কিন্তু এখনো আসেনি।(আরিয়ার মা)
—আরেকটু দেখেন চলে আসবে।
–বিকাল থেকে ফোন সুইচ অফ বলছে।তুমি একটু যাওনা বাবা।
–আচ্ছা আন্টি আমি দেখছি।
বাড়ি থেবে বের হয়ে কয়েকজন বন্ধুকে ফোন দিলাম।তাদের সবকিছু খুলে বললাম।ওরাও আমার সাথে যেতে রাজি হলো।আরিয়ার বন্ধু বান্ধবদের বাসার ঠিকানা জোগার করে তাদের বাসায় গেলাম।কারো বাসায় নেই।
বাসায় ফোন করলাম কিন্তু এখনো আসেনি মেয়েটা।রাত ৯টা বাজে।
এখন একটু চিন্তা হতে লাগলো। যদি আমি আসতাম তাহলে এমন হতোনা।
আরিয়া যেসব রেস্টুরেন্টে যায় তা তার ব্ন্ধুদের থেকে শুনে সেখনেও খোজকরলাম কোথাও নেই আরিয়া।রাত ১০টা বেজে গেছে।
পাগলের মত শহরের অলিগলি খুজে বেড়াচ্ছি কোথাও পাচ্ছিনা।কোথায় গেল কিছু বুঝতে পারছিনা।মাথাতা কেমন ভারি হয়ে আসছে।আমার দোষ।আমার কথা গুলো আরিয়া শুনে ফেলেছিল।আর তখন একাই কলেজে যায়।আমি কেন এমন টা করলাম।আমি যদি এমনটা না করতাম তাহলে এসব কিছু হতোনা।
শহরের সব জায়গা খোজা শেষ।কি করব আমি এখন??বাসায় ও যেতে পারছিনা।সবাই আমার অপেক্ষাতেই আছে।আমার মাথাটা ঠিকভাবে কাজ করছেনা।আমি জিবনে এত চিন্তিত হয়নি আজ যতটুকু হয়েছি।হৃদস্পন্দন শতগুন বেড়েগেছে।।
–দোস্ত সব জায়গায় তো খুজলাম কোথাও পেলাম না।এখন কি করবো??
–আমি নিজেও যানিনা।
–চল পুলিশের কাছে কমপ্লেন করে বাসায় যাই।
–আজকে আমি বাসায় যেতে পারবনা।আমার জন্য সব হয়েছে।আমিই দায়ি।বলে মাটিতে বসে পড়লাম।
–এভাবে ভেঙে পড়িসনা।দেখিস আমরা আরিয়াকে ঠিকি খুজে পাবো।
আমার চোখ দিয়ে তখন টুপটুপ করে পানি পড়ছে।নিজেকে কেমন ঘৃনা হচ্ছে।কেন আমি এলামনা।
–শান্ত হো দোস্ত।রিদয় শাকিল পুলিশের কাছে যাক।আর আমি আর তুই টিপু ভাই এর কাছে যাই।
–টিপুর কাছে কেন?
–কোথাও তো খুজে পেলামনা।যদি আরিয়া কিডন্যাপ হয়।তাহলে টিপু ভাই এর কাছে জানতে পারবো।এই শহরে যত কিডন্যাপ হয় সব তার জানা থাকে।
–ঠিক আছে চল।
ওরা দুজন পুলিশের কাছে গেল।আর আমরা টিপু ভাই এর কাছে যাচ্ছিলাম।রাস্তায় বাইকের তেল ফুরিয়ে যায়।তেল ভরতে পাম্পে যাই।তারপর তেল ভরি।তারপর টিপুর কাছে যাই।এতরাতে দেখা করতে চাচ্ছিলনা।তাও অনেক বলে কয়ে দেখা করলাম।টিপু ভাইকে সব খুলে বললাম।তারপর টিপু ভাই ওর লোকদের কাছে ফোন করলো।তারপর বললো
–আমার লোকেরা আজকে কোন মেয়েকে তুলেনি।
–তাহলে উপাই??
–শহরে একটা নতুন গ্যাং এসেছে।যারা ডাক্তারি পড়া মেয়েদের কিডন্যাপ করে তাদের আফ্রিকাতে পার করে দিচ্ছে।আর এদের দিয়ে চিকিৎসার কাজ করানো হয়।আর আমার লোকরা বললো তারা আজ তিনটা মেয়েকে তুলেছে।এখন তাদের মধ্যে থাকলেও থাকতে পারে।
আমার পায়ের নিচের মাটি মনে হচ্ছে শরে যাচ্ছে।আমার বাক শক্তি ভাবনা শক্তি কিছু কাজ করছেনা।নড়তে পারছিনা।
–তোমরা দেরি না করে বেড়িয়ে পড়।তোমাদের হাতে আজকের রাতটাই আছে।আজ রাতে মনে হয়না তারা শহর ছেড়ে বের হবে।তাই যত তাড়াতাড়ি পারো বেড়িয়ে পড়ো।
আমরা টিপু ভাই এর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছি।কোন কথা বলতে পারছিনা।রাস্তার এক পাশে দাড়িয়ে আছি।পাশে একটা ছোট দোকান আছে।এক কাপ চা খাচ্ছি আর ভাবছি কোথায় যাব আর কি করবো।কিছু মাথায় আসছেনা।হাতে সময় এক রাত।
হঠ্যাৎ একটা মাইক্রো এসে থামলো তারাও চা খাচ্ছে।তাদের একটা কথায় আমার ধ্যান ভেঙে গেল।তাদের কথা এমন ছিল।
–ভাই মাল তিনটা কিন্তু দেখতে হেবি।
–হ ঠিকি কইছোস।মেলা মাল পাওয়া যাবে।
–ভাই আমারনা ঐ চিকন করে মেয়েটাকে হেবি লাগছে।
–তো কি হয়েছে?
–আপনি যদি অনুমতি দিতেন তাহলে আজে রাত??
–আচ্ছা ঠিক আছে রাতে তোর ঐটা।
–আপনার পায়ের ধুলা দিন ওস্তাদ।
তাদের চা খাওয়া শেষে চলে যাচ্ছিল।আমার কেমন লাগলো।টিপু ভাই বললো তিনটা মেয়েকে তুলেছে।এরা বলছে তিনটা।চিকন মেয়েকে পছন্দ?রাতে সে তার।
হিসাব মিলে গেছে আরিয়াও চিকন। এরাই ঐ কিডন্যাপার।আরিয়ার কিছু করার আগে তাকে উদ্ধার করতে হবে।আমরা দুজন তাদের মাইক্রোকে ফলো করছি।
চলবে……
লেখাঃ Sagor islam raj( ভালোবাসার কবি)

#আপনারা ঠিক মতো অন্য গল্প পড়ছেন না এবং লাইক কমেন্ট করেন না, তাই গল্প দিতে দেরি হবে। যত বেশি বেশি লাইক কমেন্ট করবেন তত তাড়াতাড়ি গল্প পাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here