‘নিশীথচিত্র'(৩৪)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে
____________
গাড়ি নদীর পারে এসে থামলো।সাবধান পায়ে নেমে দাড়ালো চারজন।ভাড়াটা তনয়ই মেটালো দিহান বাধসাধার পরও।দীপ্তি প্রচুর উশখুশ করে চলছে।রিনির হাতের আঙুল টানাটানি করছে।দিহান খানিক থেমে থেমে হাত এদিক ওদিক হাত ঘোরাচ্ছে।তনয় আস্তে করে বললো
–“হাটি তাহলে?”
দিহান খাপছাড়া ভাবে বললো
–“হ্যা হ্যা নিয়ে যা শয়তানিটাকে।দক্ষিণ দিক টায় যাবি।আমি যাবো উত্তরে।”
তনয় থতমত খেয়ে বললো
–“আমি তো সবাই যাবার কথা বলছিলাম।”
–“আরে যা ওর সাথেই যা।বুঝি সব।তবে হ্যা আমার বোন সাবধানে।”
তনয় কিঞ্চিত হাসলো।হুশিয়ারি কথা শুনে দীপ্তির উশখুশ বেড়ে গেলো।
তনয় দীপ্তির দিকে হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে বললো
–“আসো তাহলে।”
দীপ্তি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দিহান বললো
–“দীপ্তু ভাইয়ের সামনে লজ্জা পাচ্ছিস নাকি সত্যিই লজ্জা পাচ্ছিস?আমি না জানলে নিশ্চয়ই দেখা করতি একারা?করতি কিনা? একদিন না একদিন তো করতিই।আর যদি সত্যি লজ্জা পাস তাহলে বলবো শোভন, রফিক ওদের দেখে যেভাবে সাভাবিক থাকিস সেভাবেই সাভাবিক থাক।”
রিনির ঠেলাঠেলিতে দীপ্তি এক পা দু পা আগালো।তনয়ও হাটা শুরু করলো পিছু পিছু।রিনি দিহান হাটছে উত্তরের রাস্তার দিকে।অনাবিল সিন্ধ বাতাস।সারি সারি ছোট বড় গাছের সমাহার। বহুদূর হেটে খাটো মোটা ছাউনির মতো ডালপালা ছড়িয়ে পরেছে সেই বট গাছটা রিনির মনে ধরলো।ব্লক দেয়া পুরো নদীর পার। সেখানেই বসে পরলো।দিহানও আসোন কুটে বসে পরলো।নদীর পানি বড্ড শান্ত।নড়চড় নেই যেনো।
দিহান চকলেট ছিড়লো।
–“রিনি হা করো।”
রিনিও প্রসস্থ করে মুখ হা করে।দিহান চকলেট মুখে ছুড়তে চাইলেও বাতাসের বেগে তার জায়গা হয় নিচে।রিনি ঠোঁট উল্টে মন খারাপ করে ফেলে।এ যেনো বিশাল পরাজয়।দিহান দুই পকেটে হাত দিয়ে অনেকগুলো চকলেট বের করে দেখায়।রিনির মুখে আবার অনাবিল হাসি আছড়ে পরে।রিনি হাতের কোষ পেতে সবগুলো চকলেট নেয়।হাতের ব্যাগের মধ্যে সব ভরে ফেলে শুধু একটা চকলেট দিহানের হাতে। দিহান হেসে চকলেটটা ছুলে আবার রিনির মুখে ছুড়ে মারে।এবার তারা জয়ী।একটা চকলেট যেনো খুশির বন্যা এনে দিয়েছে তাদের।দিহানের বুকে তোলপাড় শুরু হয় ওই হাসি তে।ভাবে,ভালোবাসি কথাটা বলে দিলে কি ই বা হবে?বলবো কি বলবো না করেও দমে গেলো সে।ভেতর দমলো না যেনো।শেষ পর্যায়ে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে সে।রিনির রেজাল্ট ভালো হলেই সেই খুশির উপহার হবে এটা।দৃঢ়সংকল্প করলো দিহান।
রিনি হাত পাততে বললো।ব্লকের উপর দিহানের দুই হাত রেখে নিজেরও একটা হাত রাখলো।এরপর অভাবনীয় কাজটা শুরু করলো রিনি।
“ইটকুরি মিটকুরি চামের দাড়া, লঘু গেলো পাটপারা…….
দিহান অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।ঠোঁটে হাসি উপচে পরছে।অনুভব করলো ধারালো ভালোবাসার অনুভূতি তাকে আরও গ্রাস করছে।মন খুলে প্রণয়ে মনোনিবেশ করতে চাইছে।তবুও দমলো সে, অনেক হয়েছে।রেজাল্টটা দিলেই খুশিতে ভাসবে দুজন।
_____________
দীপ্তি তনয় হাটছে।কথাবার্তাবিহীন হাটছে।তনয় সময়টাকে উপভোগ করছে।ভাবেই নি ব্যাপারটা এতো সহজ হয়ে যাবে। দিহান তাকে বিশ্বাস করবে এটাই ছিলো সবচেয়ে অধিক অবাঞ্চিত ভাবনা।আজ সেটা সত্যি হয়েছে।চার পাঁচ বছরের ধৈর্য্য আজ সফল হতে চললো।ভালোবাসাকে সে যথেষ্ট ভালোরাখার চেষ্টা করবে। মাথায় দুষ্টমি বুদ্ধি খেলে।বলে,
–” দীপ্তি তুমি আমাকে কি বলে ডাকবে? তনয় ভাইয়া?”
দীপ্তি থতমত খায় যেনো।সেদিন তনয় ভাইয়া সম্মোধনটা মুখে মোটে উচ্চারণই হচ্ছিলো না, আর না তনয় বলে সম্মোধন।কি ডাকবে?শুধু আপনি আপনি করেই যাবে আজীবন?
–“তুমি আমাকে তনয় ভাইয়া বলে ডাকবে কেমন?”
দীপ্তি হাটা থামিয়ে পেছনের দিকে তাকায়।বিস্ময় লাগে তার।প্রেমিকরা নাকি নাম ধরে ডাকতে বলে, আরও কতোশত আদুরে ডাক।আর এই লোক?দীপ্তি আবার হাটছে।তার ভারী অসস্তি লাগছে।
তনয় আবার দীপ্তির মনোযোগ কারার চেষ্টা করে
–“না মানে তুমি সেদিন ভাইয়া বলতে দাড়ুন চেষ্টা করছিলে।আমি ভাবলাম আমি অনুমতি দিয়ে দিলে তোমার চেষ্টা আরও সফল হবে।সারাক্ষণ তনয় ভাইয়া তনয় ভাইয়া ডাকবে কেমন?”
স্পষ্ট লজ্জা দেবার চেষ্টা। দীপ্তির রাগ হয়।অসস্তিতে তার প্রাণ যায় আর এই লোক মজা লুটছে?
তনয় চট করে হাত পাকড়ে ধরে।হঠাৎ কাজে দীপ্তি নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না।সাথে সাথে হাত ছিটকে ছাড়িয়ে নেয়।তনয় থতমত খায় যেনো।দীপ্তিও তার ব্যবহারে ইতস্তত বোধ করে।হুট করে এমন হওয়ায় ভাবাভাবির সময় পায় নি সে।তনয় কি মনে করলো না করলো!
–“ইট’স ওকে প্রবলেম নেই।”থেমে আবার বললো”তোমার কাছে যা কমফোর্টবল না তা আমি করবো না।”
তনয় সুক্ষ্ম মন খারাপ অনুভূতি হলো যেনো।এতক্ষণের ধারালো অনুভূতি কিছুটা ভোতা ভোতা লাগলো।সে তো খারাপ উদ্দেশ্যে ধরে নি।অবশ্য দোষ তারই।
তনয়ের ইতস্তত অবস্থা দীপ্তির ভালো লাগলো না।নিচু গলায় বললো
–“আসলে হুট করে হলো তো, আমি খেয়াল করতে পারি নি। দুঃখীত।ভয় পেয়ে গেছিলাম আমি।আপনি চাইলে হাত ধরতে পারেন।”
একনাগারে কথাগুলো বলে নিশ্বাস টানলো।হাসফাস লাগছে তার।
–“সমস্যা নেই।বুঝেছি আমি।সাভাবিক হও,আমাকে আরও চেনো আরও জানো। সময় আছে হাতে।” তনয় বললো।
দীপ্তির কেন জানি খারাপ লাগছে।ভুলে অপমান করে বসলো না তো?
তনয় আবার বললো
–“আসলে বিষয়টা ইমবেরেসিং।যাই হোক হাটবে কিনা দাড়াবে কোথাও?”
দীপ্তি কথা বলে না।হাটার গতি কমিয়ে তনয়ের পাশে আসে।কনিষ্ঠা আঙুল দিয়ে তনয়ের কনিষ্ঠা আঙ্গুলটি আটকায়।বিস্ময়ে তনয় সামনে চলা ভুলে যায়।থেমে যায় তার পা দুটো।আপনখেয়ালে বোজানো ঠোঁট দুটো মেলে যায় তার।কনিষ্ঠা আঙুল দিয়েই দীপ্তির আঙুল যত শক্ত করে ধরা যায় ততটা শক্ত করে ধরে।
চলবে,
‘নিশীথচিত্র'(৩৫)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে
____________
শূন্য হাওয়ায় নিস্তব্ধ তুমি
আর আমি নিস্তব্ধ তোমাতে।
তুমি বুঝছো,তবু দেখছো না যে?
তোমার মনোযোগ আমাতে, তবুও কেন এতো আত্মগোপনে?
ভেবেছো কি বুঝি নি?নাই যখন বুঝবো তো কিসের প্রণয়াকাঙ্ক্ষী আমি?
লজ্জায় গলা শুকিয়ে আসছে দীপ্তির। ফিসফিস করে বলা কথাগুলো পুরো অঙ্গ গিলেছে তার।শুকনো ওষ্ঠদয় জিহ্বা দিয়ে ভিজিয়ে সিক্ত করলো।তনয় আবার বললো
–“তাহলে কিসের নিরলস হলাম আমি?বছর গুনেছো, মাসগুলো কি গুনেছো?সপ্তাহ,দিন,ঘন্টা,মিনিট,সেকেন্ড গুনেছো কি?
দীপ্তি চোখ তুলে তাকায়।শাড়ির আচল টানে,কানের পেছনে চুলগুলো গুজে নেয়।নৌকা দোল খায়।অপ্রতিভ ছিলো দীপ্তি। ভয়ে তনয়ের হাটু চেপে ধরে।
–“আর একটু দোল দেই?” তনয় বললো।
দীপ্তি হাটু ছেড়ে দেয়।প্রত্যেকটা দিনই তার লজ্জা পাওয়া দিবস হয়ে যাচ্ছে।রিনি নৌকায় উঠছে, বসছে। খুশিতে লাফও দিচ্ছে মাঝে মাঝে।ভয়ে নিজেই আবার নৌকা খিচে বসে পরে।তার চপলতা উল্লাসে হাসে দিহান।মাঝে মাঝে আবার শাড়ি সামলে দিচ্ছে দিহান।নৌকা চলছে, দুপাশে দুজন মাঝি হিসেবে আছে দিহান আর তনয়।মূলত তনয়ের বাড়িতেই এসেছে।তনয়ের বাবার বড় নৌকা আছে।আগের দিন ফেরার পথে নৌকা ভ্রমণের দাওয়াত রেখেছিলো তনয়।বিকালের পরিবেশে নিজেদের বিশাল মাছের ঘেরেই জোয়ার ভাটায় নৌকা চালাচ্ছে তারা।দিহানের গায়ের হালকা ঠেকনা দিয়ে দু হাত মেলে প্রকৃতির মাঝে ডুবছে।বাঙালী নারীরা স্বাভাবিক যেভাবে শাড়িতে থাকে সেভাবেই সেজেছে রিনি,দীপ্তি। ।দিহান, তনয় শার্টেই আছে। রিনি পানিতে পা ডুবিয়ে ছল ছল আওয়াজ তুলছে।রিনির মুখের প্রত্যেকটা ভঙ্গি বলে দিচ্ছে সে কতোটা আনন্দিত।
–“রিনি এতো লাফালাফি কেন? মার চেনো? পরে গেলে সব আনন্দ মাটি হয়ে যাবে তোমার পানি গিলতে গিলতেই।”
সুক্ষ্ম ধমকে ভয় পায় না রিনি।কিন্তু পানিতে ডোবা বড্ড ভয় পায়।আবার পা উঠিয়ে নেয়।দিহানের সাথে টুকটাক ছবি তোলে।এর মধ্যেই ছোট্ট নোকায় করে ফারদিন আসে।তনয়ের ভাই সে।নবম শ্রেণিতে কেবল।তনয়ই তাকে আসতে বলেছে।শখ করে কেনা ডিএসএলআর ক্যামেরাটার আজ সঠিক ব্যবহার করবে সে।নৌকা থামালো বৈঠা কুপে। তনয় দিহান দুপাশে দীপ্তি রিনি তাদের মাঝে পানিতে পা ডুবিয়ে হাস্যজ্বল মুখ।বেশ কিছু ছবি তুলেছে ফারদিন।ফারদিন রুচিশীল মানুষ। সবুজ ভাবটা ছবিতে খুব একটা পাচ্ছে না।দূরের কিছু গাছ দেখা যাচ্ছে তাতে তার মন ভরছে না।ছবি তোলা বাদ দিয়ে নৌকা চালিয়ে বেশ কিছু ডালপালা ভেঙে আনলো।তনয়দের নৌকায় সাজিয়ে দিতে বললো।সবাই অবাক।এরপর দুজন দুজন দুপাশে পা ডুবিয়ে।নৌকা ঘুড়িয়ে টুরিয়ে যেভাবে সম্ভব প্রাণপণ ছবি তোলার চেষ্টা করছে ফারদিন। নৌকার দুপাশের কিনারায় দুই জুটি গেলো।রিনি দিহানের গায়ে হালকা ঠেকনা দিলো, দীপ্তি স্থির।বেশ কিছু ছবি হলো।আরও কিছুক্ষণ নৌকায় চলে নিস্তব্ধে বাড়ি ফিরে এলো তনয়কে বিদায় দিয়ে।
________
ক্লান্তি কাটাতেই অল্প সময়ের ঘুম।রাতের খাবারের সময় হাফসা ঠেলে গুতিয়ে সবাইকে উঠায়।ঘুম ঘুম চোখে খায়।দীপ্তি ফোন অন করতেই দেখে তনয় ছবিগুলো পাঠিয়েছে। রিনিও মনোযোগী হয়।একটা ছবিতে দীপ্তি হাসি হাসি লজ্জা মুখে নিচের দিকে তাকানো তনয় পাশেই আস্তে আস্তে হাত ধরছে এমন একটা সিচুয়েশন আর তার পাশেই দিহান রিনির চুল কানে গুজে দিচ্ছে পরম যত্নে আর রিনি প্রেমময় দৃষ্টিতে তাকানো দিহানের দিকে।দীপ্তির কাছে বেশ লজ্জাজনক আরও ছবি দেখতে পেলো।তার ভাই দেখলে বিশাল লজ্জায় পরবে সে।
রিনির ফোনে মেসেজের শব্দ।চেক করে দেখে
–“ছাদে আসো।”
রিনির তর সয় না । দীপ্তি সাবধানে ছাদে উঠিয়ে দিয়ে চলে আসে। তবে তনয়কে এসব কখনোই বলে নি সে।জিজ্ঞেস করলে বলে রিনি পাশেই ঘুমাচ্ছে।কিছু পারসোনাল কথা নিজের মাঝেই রাখতে হয়।সব খোলাসা করা প্রিয়জনের কাছেও অনুচিত।
রিনি যায়। কিন্তু ছাদে দিহানকে পায় না।ভয় কাজ করে তার মাঝে। তখনই দিহান আসে।রিনি যেন আস্থা পায়।
এভাবেই প্রত্যেকটা বিকাল, প্রত্যেকটা রাত, প্রত্যেকটা সকাল চন্দ্রবিলাশ,গল্পবিলাশ,তমসাবিলাশ,সুখবিলাসের মধ্যেই কেটে যায়।দিহানে একটু ধমক, লুকানো ভালোবাসা সব মিলিয়ে রিনি সুখেই ভেসে বেড়ায়।
____________
ঢাকা ফেরার শেষ রাত আজ।পরের দিন বিকালেই বাস।ভালো লাগছে না রিনির।হাফসা ফিরোজ আজ ঘুমিয়েছে একটু দেরিতেই।দীপ্তির জন্য টুকটাক আসবাব গুছিয়ে দিতে দিতেই যত দেরি।শোবার ঘন্টা পর সুযোগ খুজে রিনি টুক করে দিহানের রুমে ঢুকে পরে।দরজা আটকাতেই দিহান হকচকিয়ে যায়।অসাভাবিক ভাবে তাকিয়েও নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয়।বই গোছাতে গোছাতে স্বাভাবিক কণ্ঠেই বলে,
–“আমিই ডাকতাম ছাদে।এখানে আসার কি দরকার ছিলো?”
রিনি পেছন দিকে নিজের দুই হাত বেধে ভিন্ন ভঙ্গীতে আটকে থাকে।বিছানার কোণায় বসে।দিহানকে পাশে বসায়।দিহান ভ্রু নাচিয়ে বলে
–“কি?”
রিনি হাত ঘোরাতে ঘোরাতে বলে
–“আমাদের মনে মনে কিন্তু পাকাপোক্ত প্রেম চলছে তা কি জানেন তুমি?”
দিহান জামার কলার ঠিক করতে করতে বলে,
–“যেমন?”
–“বুঝেও যে বুঝতে চায় না তাকে আমি বুঝাই না।কারণ তাকে বোঝানো যায় না শত চাইলেও। ”
দিহান উত্তর দেয় না।
উঠে টেবিল থেকে পানি খায়।বলে,
–“যাও এবার।ঘুমাও বা ছাদে গেলে যাও আসছি।”
রিনি দিহানকে টানতে টানতে বিছানায় বসায়।রিনির চোখের দৃষ্টি অসাভাবিক লাগে দিহানের কাছে।
–“মনের প্রেম ভালোবাসা বারংবার হলে সব ভালোবাসা কেন বারংবার হতে পারবে না?”
রিনির কথা পেচানো। মুখে জড়িয়ে যাচ্ছে।বিস্ময়ে মুখ হা হয়ে যায়।রিনির কাধ ঝাকায় দিহান।
–“ঠিক আছো?কি হয়েছে?নরমাল হও।”
দিহানের হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলে
–“আমার কেমন কেমন লাগছে দিহান ভাই।কাছে পেতে… ”
কথা শেষ করে না রিনি । শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।দিহান মাথার চুল টানে।জোর করে ছাড়িয়ে নেয় রিনিকে।গম্ভীর আওয়াজে বলে
–“রিনি এক ই ভুল দুইবার হলে প্রথম বারেরটা হয় অনিইচ্ছাকৃত ভুল আর দ্বিতীয় বারেরটা হয় ইচ্ছাকৃত ভুল।যেটা বিশাল ভুল।”
রিনি চুপ করে শোনে তবুও অদ্ভুত কর্মকান্ড করে বসে।দিহান শক্ত করে নিজেকে।ছাড়িয়ে হাত টানতে টানতে দরজা খুলে দীপ্তির রুমে যায়।রিনি স্থির হয়ে যায়।দিহান কপালের চুল গুলো টেনে সরিয়ে চুমু খায়।বলে,
–“একটু আগে যেটা তোমার খুব জুরুরি মনে হয়েছিলো ঠিক একটু পরে অহেতুক, অর্থহীন আর তোমারই লজ্জা লাগবে বেশি।ভুল মনে হবে।গেলাম।মন খারাপ করো না মায়াবতী। সব ক্ষেত্রেই সঠিক সময়ের দরকার তাই না? আসবে একদিন।”
রিনি মাথা নাড়ায়।
–“যাও ঘুমাও।”
চলবে,