পতিতা স্ত্রী পর্ব ৩

#পণ্যস্ত্রী #Part_3
#লিখা- #Yasira_Abisha
চুমকি দরজা খুলে দেখে নিপা দাড়িয়ে আছে,,
চুমকি- কোনো কাম আসে আপা?? আমারে ডাক দিতেন,,
নিপা- যা তৈরি হয়া আয় তোর তো আজকা এখানে শ্যাষ দিন,,
চুমকি- মানে?
নিপা- মানে তুই এই সাহেবের লগে যাবি এখনি
চুমকি- কেন আপা?
নিপা- এখন থেকা তুই তার সাথেই থাকবি রে,,
তোর কপাল খুইলা গেসেগা জলদি যা,,
তখনই ইরাদ ফ্রেশ হয়ে বেড় হয় নিপা ইরাদকে দেখে একটা হাসি দিয়ে বলল
” সাহেব কালকে রাতে কোনো কষ্ট হয়নাই তো?”
ইরাদ- না,, অনেক দিন পর শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছি। আমরা এখন বেড় হতে পারি রুহি তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো তাড়াতাড়ি।
নিপার দিকে তাকালো চুমকি নিপা ইশারায় বলল যেতে.
চুমকি ফ্রেশ হতে গেলো আর ভাবছে নিপা এত সহজে আমাকে ছেড়ে দিলো? নিশ্চয়ই এই সাহেব অনেক টাকা দিয়েছে নাহলে নিপা এত ভালো না,, কিন্ত উনি আমাকে নিতে কেন চাচ্ছে? আমার মত এমন একটা মেয়ে প্রতি রাতে কিছু টাকা দিলেই উনি পেয়ে যাবে,, তবে একবারে কেন নিতে চাচ্ছে?
কারণটা কি? কিছুই বুঝতে পারছিনা।
প্রায় ১০ মিনিট পরে চুমকি ফ্রেশ হয়ে এলো
হলুদ একটা শাড়ি পরা ভেজা চুল গুলো কোমরের নিচ পর্যন্ত কোন সাজ নেই চেহারায় কিন্ত এতই সুন্দর লাগছে যেন একটা পরী দাড়িয়ে আছে,,
ইরাদ ফোনে কথা বলছিল তখনই চুমকি বেড় হয়েছে ইরাদ ফোন রেখে এক দ্রিষ্টিতে চুমকিকেই দেখছে আর আশে পাশে কি হচ্ছে না হচ্ছে এসব কিছুই যেন মাথায় খেলছে না,,
চুমকি এর মাঝে একবার ও তাকালো না ইরাদের দিকে বাথরুম থেকে বেড় হবার পরে একবার আড় চোখে ইরাদের দিকে শুধু একবার তাকিয়েছিলো তারপর আর তাকায়নি,,
চুমকি আলমারির কাছে গেল সব কাপড় গুছানোর জন্য
ইরাদ ওর কাছে যেয়ে হাতটা ধরলো
চুমকি তাকিয়ে দেখলো ইরাদের দিকে প্রশ্নবোধক নজর নিয়ে তখন ইরাদ বলল কি করছো?
রুহি- কাপড় গুছাই,, যাওয়া লাগবেনা??
ইরাদ- হুম জান,, যাওয়া লাগবে। তবে এগুলো কিছুই নেওয়া লাগবে না। ওই যে দেখ তোমার নতুন একটা শাড়ি আমি আনিয়ে রেখেছি সাথে ব্লাউস, এক সেট গহনা আর কিছু মেকাপ এর জিনিস ও আছে তুমি তৈরি হয়ে নাও কেমন?
এই বলে ইরাদ আবার কাকে যেন ফোন দিলো।
চুমকি ব্যাগটা খুলে দেখলো কি সুন্দর শাড়ি,, গহনা,, বেশ দাম ও জিনিসপত্র গুলোর,, সব জিনিস বেড় করে দেখার পর ইরাদের দিকে ও আবার তাকিয়ে দেখলো আর মনে মনে বলল আসলেই কি ও এগুলো আমি নিজে পরবো?
ইরাদ কান থেকে ফোনটা সড়িয়ে বলল
তুমিই পরবে এগুলো পরে আসো তাড়াতাড়ি,, প্লিজ জান?
চুমকির খুব অবাক লাগল,, ও মনে মনে বলল যে সাহেব শুনলো কিভাবে,,
থাক আপাতত মনে মনে কথা বলা বন্ধ করে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে আসি নাহলে এবার বকা দিতে পারে ঠিক ১০মিনিটে চুমকি তৈরি হয়ে গেলো,,
আবার ওদের বেড় হবার সময় হয়ে গেলো,,
চুমকি রুম থেকে বেড় হয়েই দেখলো আঁখি দাড়িয়ে আছে চোখে পানি এসে গেছে ওর
আঁখি- বু! তোমারে অনেক মনে পরবো, আমারে ভুইলা যাইবা?
চুমকি- (কান্না করতে করতে) না রে আঁখি আমি তোরে কিভাবে ভুলবো? তুই তো আমার সুখে দুখে ছিলি সাড়া জীবন তুই আমার আপন বোনের মতন বলেই জড়িয়ে ধরলো আঁখি কে।
আঁখি- সাহেব রুহি বু এর খেয়াল রাইখেন,,
ইরাদ- থানক্স আঁখি। তুমি চিন্তা করো না।
নিপা- ভালোভাবে থাকিস,, সাহেবের খেদমত করিস ঠিক মত।
চুমকি মাথা ঝাকিয়ে হুম বলল।
ইরাদের গাড়ি এসেছে ওরা ২জন এবং ইরাদের ম্যানেজার সহ বেড় হয়ে গেলো নষ্ট পাড়া থেকে
চুমকির জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে।এখন তো আর এই চুমকি নামের প্রয়োজন নেই কেননা ওকে যিনি নিয়ে গিয়েছেন তাঁর কাছে ও রুহি,,
তবে ইরাদের ম্যানেজার কে চুমকি আগে থেকেই চিনে এই লোক প্রায় আঁখির কাছে আসতো।
এই মুহুর্তে রুহির খুব ভালো লাগছে আবারও একই চিন্তা লাগছে যে আসলে ওকে এই নিয়ে কই যাচ্ছে উনি?
আবার উনি ওকে নিজের প্রেমিকার মত করে স্মবোধণ কেন করছে?কিছু কি জিজ্ঞাসা করবো তাকে? নাকি করবো না?
একদম দ্বিধায় পরে গেলো রুহি।
পরে ও ভাবলো যাই হবে আল্লাহ ভরসা যেই নরকে ছিলাম এর চেয়ে তো খারাপ আর কিছু হতে পারে না।
ম্যানেজার ইরাদকে বলল স্যার আমি খাবার নিয়ে আসছি আপনি আর ম্যাডাম তো কিছু খান নি এখনো।
ইরাদ- না খাইনি। খাবার দাও।
ইরাদ খুব যত্ন করে খাবারের প্যাকেটটা খুলে রুহির মুখের সামনে নিয়ে বলল আমি তোমাকে খাইয়ে দেই?
রুহি কি বলবে বুঝে পাচ্ছেনা,, ইরাদের চাহনিতে এতো মায়া রুহি না বলতে পারলোনা মাথা ঝাকিয়ে হুম বলল,,
ইরাদ রুহিকে খাইয়ে দিচ্ছে,, রুহির ভালো লাগছে কেউ তার মত একটা মেয়ে কেও এভাবে যত্ন করছে সকাল থেকে যেন শকই পাচ্ছে ও।
ওকে খাইয়ে ইরাদ নিজে খেয়ে নিলো
ম্যানেজার কেও ইরাদ জিজ্ঞেস করলো ও খেয়েছে কি না?
ম্যানেজার বলল খেয়েই এসেছে সকালে,,
প্রায় ১২টার দিকে বিশাল এক বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামলো
ইরাদ রুহিকে বলল বেড় হও রুহ আমাদের বাসা এসে গেছে।
রুহি দেখলো কি বিশাল বাড়ি বাইরে থেকেই লাগছে যেন এক মহল।
ম্যানেজার বলল ছোট সাহেব আপনি খুশি তো?
ইরাদ আই এম রিয়েলি হ্যাপি আজকে তুমি না থাকলে আমি আমার রুহিকে কখনও খুজে পেতাম না থ্যাংকস এলট।
রুহি তাকিয়ে আছে ও কিচ্ছুই বুঝতে পারছেনা
ইরাদ রুহি আর ম্যানেজার সবাই বাসার ভেতরে গেল।বাড়ির ভিতরটা বেশ গুছানো সুন্দর,,
রুহি বুঝতে পারলো ইরাদ খুব ধনী একজন মানুষ,, কিন্ত বাসায় শুধু মাত্র ২টা কাজের মানুষ আছে আর কেউ নেই,, তারা আগেই ফুল দিয়ে গেইট সাজিয়ে রেখেছে রুহি ঢুকতেই ফুল দিয়ে ওকে বরণ করা হলো,,
কাজের লোক গুলো ও বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন,, দুই জনই রুহিকে ভালোভাবে দেখছে এর মধ্যে বুড়ো একটা কাজের মহিলা আছে উনি বলে উঠল
“সুবহানাল্লাহ আগে শুনেছিলাম আজ দেখেও নিলাম এমন ও হয়”
ম্যানেজার তার দিকে ইশারা দিয় চুপ করতে বলল,, বুড়ি চুপ করলো কিন্তু খুশিতে ওর চোখ গুলো যেন চিকচিক করছে,,
বুড়ি এসে রুহির হাত ধরে নিজের গালে লাগিয়ে বলল মালকিনের সুস্বাগতম।
আপনি সাহেবকে আর কান্না করতে দিয়েন না আর কোনো কষ্ট পেতে দিয়েন না। আর কখনও সাহেবকে ছেড়ে যাবেন না।
রুহি তাকিয়ে দেখছে কিছু বলার মত খুজে পাচ্ছে না,,
তখনই অন্য কাজের মেয়েটা একটা থালি নিয়ে আসলো আলতা ভরতি
এবং রুহির পায়ের কাছে রেখে বলল এখন প্রবেশ করুন ভাবি।
রুহি চমকে উঠে ভাবি ডাক শুনে
তখনই ইরাদ ওর হাত ধরে এবং ওরা একত্রে প্রবেশ করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here