#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৫
,
,
,
,
আমি দরজা লাগাতে যেতেই এক বলিষ্ঠ হাত এসে বাধা দিলো।আমি খানিকটা পিছিয়ে গেলাম ভয়ে।আমি কি সত্যি দেখছি নাকি সম্পূর্ণ্যটা আমার মনের ভুল।সিধান্তহীনতায় রেখেই আসফি ভাইয়া আমাকে সরিয়ে নিজে ঢুকে পড়লো।আমি অবাক হলাম তাকে এই মহূর্তে আমি আশা করিনি আমি তো মনে করেছিলাম তার আসতে সময় লাগবে জোড় হলেও দুই ঘন্টার কাছাকাছি কিন্তু তিনি আমাকে ভুল প্রমান করে আমার বাসায় পৌছানোর সাথে সাথে এসে হাজির হলেন আচ্ছা তিনি কি আমার পিছনেই ছিলো কিন্তু তাকে যে আমি দেখলাম,,,,,
;আপনি এখানে আপনাকে না অনুষ্ঠানে থাকার কথা
;আমার বাসা আমি কখন কোথায় থাকবো নিতান্তই আমার ব্যাপার
আমি চমকালাম উনার এমন ধ্বনিতে। উনার মুখ ঠিক আগের মতোই গম্ভির ঠিক আগের যে আসফি ভাইয়া উর্ফে হিটলার ভাইয়া বলে পরিচিত ছিলাম হাসলাম আমি মৃদু আমার হয়তো বুঝতে ভুল ছিলো উনাকে। আমি উনার এক দিনের মিষ্টি দুইটা আচরণ আর কথাতে ভুলে গেছিলাম উনি আসলে কি।আমি আর কোন কথা না বলে ব্যাগ গুছাতে লাগলাম। কালকে সকালেই এই জায়গা ছেড়ে যেতে হবে চেনা সেই শহরে কিন্তু এই অচেনা শহরের প্রতি হঠাৎ একটা মায়া কাজ করছে।ইচ্ছা করছেনা যেতে।।
______
দেখতে দেখতে আমার যাওয়ার প্রহর এগিয়ে এলো।দূর থেকে দেখতে পেলাম বড় আব্বু দাঁড়িয়ে আছে।পাশে আলিফ ভাই ও দাঁড়িয়ে আছে।আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম মনে মনে নিজেকে শক্ত করার চেষ্টা করার প্রচেষ্টাই কখন আখিজোড়া বন্ধ হয়ে গেছে বুঝতে পারিনি।হঠাৎ হাতে টান পরায় আখি জোড়া মেলে তাকায়। শক্ত কোন আবরণে নিজেকে আবদ্ধ বুঝতে পেরে হচকচিয়ে উঠলাম। কানে এসে বাড়ি খেতে লাগলো কারো দ্রুত বেগে ছুটে যাওয়া হৃদপিণ্ডের আওয়াজ।
মিনিট এক না পেরুতেই ছুটে গেলো সে বাধন কিন্তু আমার ঘোর কাটলোনা আমি নিজেকে ধাতস্থ করতে পারলাম না কিছুক্ষনের হওয়া যাওয়ার মহূর্তের পরে।
এরই মাঝে আসফি ভাইয়া আমার হাত জোড়া টেনে সামনে এগুতে লাগলো।আচ্ছা সত্যি কি বাসের আড়ালে আসফি ভাইয়া নামক ব্যাক্তিটা আমাকে নিজের বুকের বাম পাশটাই জায়গা দিয়েছিলো কিন্তু কেনো
;এতো বেশি ভেবে নিজের ছোট মাথায় চাপ দিস না তুই চোখ বন্ধ করে হাটছিলি একটু হলে চলন্ত বাসের সাথে ধাক্কা খেতি সেজন্য তোকে ওইভাবে নিজের কাছে নিয়ে এলাম
আহা সে কি সহজ শিকারউক্তি কি সুন্দর করে সব দোষটা আমার উপর দিয়ে নিজে ঘটনার শিকার বলে কথা কেটে নিলো।আর এদিকে কিশোরী বয়সে প্রথম কারো আলিঙ্গনে যে কিশোরীর মনে নতুন অনুভূতির জোয়ার তুলে দিলো তার বেলায় তার হৃদপিণ্ডের ধ্বনি যে এখনো এই কান থেকে যে সরলোনা।
;বাবা বাসায় গেলেনা এখান থেকে এসে এখান থেকে যাচ্ছো
;শুধু আমরা না তুই ও যাচ্ছিস আমাদের সাথে।
;তা হয়না বাবা কলেজে ছুটির এপ্লিকেশন দেওয়া হয়নি
;সেটা কিছু আমি জানিনা ভাই কালকে আমার বৌ ভাত সেখানে আমার বড় উপস্থিত না থাকলে কেমন দেখায়
বৌ ভাত মানে কালকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আলিফ ভাইয়ার নামের সাথে অন্য কারো নাম লিখা হবে।অন্য কেউ স্বীকৃতি পাবে তার বউ হিসেবে। কি এক নিদারুন কষ্ট না আছে এই কষ্টের কোন ঔষধ না আছে কাউকে জানানোর উপায়।
;আহ আলিফ তুই তো বুঝ
;নাহ আমি কিছু জানিনা আমি আমার বড় ভাই কে আমার সাথে নিয়ে যেতে চায় ব্যাস
;আচ্ছা কালকে সকালে আমি পৌছে যাবো।
;কেন আমাদের সাথে গেলে কি হবে।
;কাজ আছে আর জেদ করিস না তোদের কথা তো শুনলাম এবার আমার টাও শুন
;বেশ কালকেই এসো কিন্তু আমাদের সবার ঘুম ভাংগার আগে।
আলিফ ভাই এর কথায় আসফি ভাইয়ার ঠোঁটের কোনে ফূতা হাসিটা বেশ লাগলো।সবাই উঠে পড়লাম বাসে।আমি বড় আব্বুর পাশে জানালার পাশে বসলাম আর আলিফ ভাইয়া বড় আব্বুর পাশে।আসফি ভাইয়া কই থেকে দৌড়ে এসে আমার হাতে একটা হ্যান্ড ব্যাগ ধরায় দিলো আমি অবাক হলাম কারণ ব্যাগটা আমার না তাহলে
;ভুলাক্কার পনা ছাড়বিনা তুই তাইনা ব্যাগ ফেলে থুয়ে চলে যাচ্ছিলাম নির্ঘাত আমি দেখেছিলাম।নে ধর আর একটা কথা বলবিনা চুপচাঅ যাবি
;আহা আসফি কি হচ্ছে আমার মা টাকে এইভাবে ধমক দেওয়ার মানে টা কি
বড় আব্বুর গম্ভির সুরকে তোয়াক্কা না করে আসফি ভাইয়া পুনরায় বলে উঠলো
;তোমার মেয়ে আস্ত অকর্মার ঢেকি সেটা কি জানো তুমি বাবা
আসফি ভাইয়ার এমন কথায় ফিক করে হেসে দিলেন আলিফ ভাই বড়আব্বুর মুখ দেখে বুঝলাম তিনি হাসতে চাইছেন কিন্তু তার গম্ভীরর্য সেটার অনুমতি দিলেন না তাই তো তিনি হাসিটাকে চেপে গেলাম রাগে আমি গাল দুইটা ফুলিয়ে অন্যদিকে চাইলাম।
বাস ছেড়ে দিলো কি মনে করে জানালার বাহিরে উকি দিলাম আর যা দেখলাম তাতে আমি অবাক হতে বাধ্য হলাম ভাইয়ার চোখে পানি তিনি হয়তো খেয়াল করেন নি আমি উনার দিকে তাকিয়েছি উনার চোখ আমার দিকে পড়তেই তিনি পিছনে ঘুরে গেলেন। আচ্ছা সত্যি কি সেটা উনার চোখের অশ্রু কোণা ছিলো নাকি আমার দৃষ্টির ভুল বুঝলাম না পুনরায় তাকালাম সেদিকে এবার যেনো আমার অশান্ত হয়ে উঠা মনটা শান্ত হলো কারন তিনি সেই গম্ভির রুপে চলন্ত গাড়ির দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু উনার চোখে কিসের এক বেদনা ফিটে উঠেছে।আচ্ছা আমি কি একটু বেশি ভাবছি। কি মনে করে হাতে থাকা ব্যাগ টাকে শক্ত করে ঝাপটে ধরলাম
______
বাসায় পৌঁছাতেই বড় আম্মু ছোট আম্মু ছায়া আপু সবাই এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো।তাদের দেখে মনে হচ্ছে সে কবে থেকে দেখে না আমায়।
আমি মনে মনেই হাসলাম আচ্ছা তারা যে এতোটা আমাকে ভালোবাসছে কোন দিন যদি জানে ঠিক তাদের ছেলের জন্য আমার অনুভূতিটা কি হয়তো জানলে এই আদর এই ভালোবাসা সব উবে যাবে।।।
দূর থেকে দেখলাম কিচেনে আফরা নামক যুবতীটা কি যেনো তৈরি করছে পাক ঘরে। আমি সেদিকে আর তাকালাম না কারন আলিফ ভাইয়া সেদিকটাই গেছে।
______
রুমে এসে শুতেই আফরা ভাবি হাতে করে কেক নিয়ে দরজার কড়া নাড়লেন আমি চমকালাম উনাকে ভিতরে আসতে বলে উঠে বসলাম
;কিছু বলবেন
;এই আপনি টাপনি বাদ দেও তো আজকে থেকে তুমি করে বলবা আচ্ছা
;হুম
;কেক টা খেয়ে বলোত কেমন হয়েছে আজকে সবার পছন্দের খাবার তৈরি করেছিলাম কিন্তু তোমার পছন্দের খাবারের নাম জিজ্ঞেস করতেই সব কেক পেস্ট্রি আইসক্রিম চকলেট এগুলোই বললো তাই ভাবলাম কেক বানানো যাক সবাই খাবে
ভাবি নামক ব্যাক্তিটির কথায় মৃদু হাসলাম।ধন্যবাদ জানিয়ে একটা পিস মুখে তুলে নিলাম খেতে দারুন হয়েছে।
;দারুন স্বাদ হয়েছে
;সত্যি আমি জানো ভয়ে ভয়ে ছিলাম তোমার পছন্দ হবে কি না
; নাহ সত্যি অসাধারণ হয়েছে বাকিদের দেও
; বাকিদের দিয়েছে এটা শুধু তোমার
কেক এর ট্রে টা নিজের হাতে নিতে চলে গেলেন ভাবি।ক্লান্ত থাকায় বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতেই ঘুম এসে চোখ জোড়ায় ভর করলো।
_______
ঘুম হালকা হতেই টের পেলাম কলিং বেল এর আওয়াজ। বিছানা ছেড়ে হামি দিয়ে নেমে এলাম নিচে। দরজা খুলতেই চোখ গেলো সামনে থাকা মানব অর্থ্যাৎ আসফি ভাইয়ার দিকে অগোছালো চুল কুচকানো শার্ট লা এক জোড়া আখি মনের ভিতরে উত্থাল পাথাল শুরু করে দিলো।আমি ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলাম মাত্র সাড়ে ৬টা বাজে। এমন সমিয় টের পেলাম কারো মাথা নিজের ঘাড়ে নিশ্বাসের গতি বৃদ্ধি পেলো
;ওহে শ্যামাঙ্গিনী কেন এতো আমাকে তোর এই সুগন্ধি টানে তোর কাছে।নিজেকে সামলানো যে দায় পরে যায় বদ্ধ রুমটাই তোর সুগন্ধে তুই বিহীন আমার দম টাও যেনো বন্ধ করে দিচ্ছিলো তাই তো ছুটে এলাম তোর বাহুতে,,,,
পারলাম না আর নিজের শরীরে জোর রাখতে নিচের দিকে পড়তেই আসফি ভাইয়ার হাতের শক্ত বাধনে আবদ্ধ হয়ে পড়লাম।।
#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৬
,
,
,
,
,
জানালার সাথে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছি আনমনে তাকিয়ে আছি দূর ওই আকাশের চাঁদ টার দিকে। কি বিশাল চাঁদ কিন্তু বড্ড একা ঠিক আমার মতো৷ চাঁদ কে ঘিরে হাজারো তারা থাকলেও যেমন চাদের নিজেস্ব কেউ নেই ঠিক তেমনি এতো বড় পরিবারের নিজেস্ব বলতে কেউ নেই।যাকে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে ভালোবাসলাম সে অন্যকারো অন্যকারো সাথে ঘড় বেধে জীবনটাকে সুন্দর করে গুছিয়ে নিয়েছে আর আমার জীবন টা করে গেছে অগোছালো এলোমেলো।
হঠাৎ কের কের আওয়াজ করে দরজা খুলতেই চমকে উঠলাম আমি। আমি যে রুমে সেটাতো কারো জানা নেই সবাই তো কমিউনিটি সেন্টারে আলিফ ভাই আর আফরা ভাবির বৌ ভাত এ তাহলে। অন্ধকার রুমে আলো জ্বালাতে কেউ লাইট দিতেই আমি চোখ জোড়া বন্ধ করে নিলাম। অনেকক্ষন অন্ধকারে থাকার ফলে আলোটা সহ্য হয়েছিলোনা৷
হঠাৎ আসফি ভাইয়ার গম্ভির ভরাট গলা কানে আসতেই চোখ দুইটা আপনা আপনি খুলে যায়।হালকা গোল্ডেন পাঞ্জাবী পরে দাঁড়িয়ে আছে আসফি ভাই। বুকে হাত গুজে চোখ জোড়া কুচকে কিছু একটা বলছে কিন্তু সেটা আমার কান অব্দি পৌঁছাতে অক্ষম হচ্ছে।কারন আমার চোখ দুইটা স্থির হয়ে আছে আসফি ভাইয়ার ঠোঁট জোড়ায়।
হঠাৎ করে মন মস্তিষ্কে খেলে গেলো একটা সুর
ছেলে তোর গোলাপ গোলাপ ঠোঁটে
যখন বিড়ির ধোয়া উঠে(২)
সে ধোয়া দেখিতে বড় ভাল লাগে
সে ধোয়া দেখিতে বড় ভাল লাগে
আচ্ছা আসফি ভাইয়া ও কি সিগারেট খাই আচ্ছা তখন তাকে দেখতে কেমন লাগে। আমার ভাবনার মাঝেই হাতে জোরে একটা চিমটি খেয়ে আমি ব্যাথায় চিৎকার করে উঠি
সাথে সাথে আসফি ভাইয়ার ধমক কানে আসে আমি তার দিকে চোখ মেলতেই দেখি রাগী দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
;কি ঠোসা হয়ে গেছিস শুনতে পাচ্ছিস না ঠিক কখন থেকে তোকে আমি ডেকে চলেছি
আমি অসহায় ফেস করে তার দিকে তাকালাম।কিন্তু সেটাতে কি আর এই পাষান লোকটার পাথরের ন্যায় শক্ত মন গলে
;এখানে একা একা কি করছিস ওইখানে সবাই তোর খোজ করছে
;আমি না গেলে কি বা হবে আসফি ভাই বধূ তো সেখানে উপস্থিত আছেই।
আমার ভারি কন্ঠের জবাব শুনে তিনি থমকালেন আমার দিকে গভির দৃষ্টি দিয়ে নিজের হাত দ্বারা আমার মুখটি তুললেন চোখ জোড়া তখন আমার ছলছল করছে।
আমি আর পারলাম না নিজেকে সামলাতে জড়িয়ে ধরলাম ভাইয়াকে শক্ত করে জানিনা কিসের জন্য মনে হয় এটাই আমার সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গা এখানে থাকলে কেউ আমার ক্ষতি করতে পারবেনা।।
তিনি কাপা কাপা হাত রাখলেন আমার বাহুতে আমি বুঝিনা এই মানুষ টার আমার সংস্পর্শে এলে এমন অদ্ভুদ আচরণ করে কেনো যেনো আমি মানুষ নই বা আমার ছোয়াই অন্য কিছু আছে কারেন্ট এর মতো।।।।
কেনো বার বার নিজের প্রতি আমায় এতোটা দুর্বল করে তুলিস প্রতিবার যতো চায় তোর থেকে অনেক অনেক দূরে থাকবো ততোই তোর মায়ায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলি বড্ড কষ্ট নিয়ে ঘুরি রে এই মন পাঞ্জরের যার একমাত্র ঔষধ তুই শ্যামাঙ্গিনী কিন্তু সেটা কি তুই আদৌ বুঝবি বুঝবি কি এই কাতর হৃদয়ের রক্তক্ষরণ যেটা প্রতিনিয়ত তোর চোখে অন্য কারো জন্য ভালোবাসা দেখে হয়।উহু তুই যে আমার বেলায় বড্ড অবুঝ হয়ে থাকিস তাই তো বুঝিস না ঠিক কতোটা ইচ্ছা করে তোকে নিজের বুকের মাঝখান টাই ঢুকিয়ে রাখতে(মনে মনে কথা গুলো আওড়ায়ে আয়রা কে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নি)
আসফি ভাইয়া নিজের শক্ত হাত দিয়ে যখন ধীরে করে চোখের পানি গুলো মুছে দিচ্ছিলো জানিনা আমার কি হয়েছিলো ভাইয়ার হাত ধরে চোখ বন্ধ করে বলে উঠি
;আমাকে এখান থেকে নিয়ে যান প্লিজ আমার এখানে দম বন্ধ হয়ে আসে আমি পারি না নিজেকে সামলাতে বড্ড কষ্ট হয় নিজেকে শেষ করে দিতে মন চায় প্লিজ এখান থেকে আমাকে নিয়ে চলুন
আসফি ভাইয়া কোন কথা না বলে আমার চুল গুলো আলতো হাতে কানের পিছনে গুজে দিয়ে আমার গালে হাত রাখে। আমার চোখ স্থির হয় উনার চোখের কালো মনিতে। শান্ত সে চোখের দিকে তাকালেই মনে হয় এই চোখ আমাকে কতো কথা বলতে চায়।
;এই গভির চোখ জোড়ায় অশ্রু বড্ড বেমানান এই গভির চোখে একমাত্র সোভা দেয় কাজল। যে এই নয়নের মূল্য বুঝে তাইতো কাজল কালো চোখ আরও সুন্দর করে তুলে এই গভীর আখিজোয়ায়।
আমি নিশ্চুপ হয়ে গেলাম তাকিয়ে রইলাম সে চোখ জোড়ায়। আজকে কেন যেনো ভয় হচ্ছেনা এই চোখের গভীরতাই হারানো বরং বড্ড ইচ্ছা করছে এই চোখের গভীরতাই ডুব দিয়ে এর বিশালতা মাপার
__________
অন্ধকার রাস্তাই আপনমনেই হেটে যাচ্ছে ২০ বছরের এক রমনী। গায়ে তারা সাদা মাটা শাড়ি এক পাশে ঝুলিয়ে রাখা আছে লম্বা বেনুনি।পায়ের গতি অস্বাভাবিক যেনো এই বুঝি পরে যাবে চোখের কোণ বেয়ে বেরিয়া আশা অশ্রু চোখের কাজল কে চোখের নিজে স্থির থাকতে দিচ্ছেনা বরং চোখের কৌটা থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করছে।এতে যেনো রমনীর চেহারার সৌন্দর্য বারছে বেয় কমছেনা।
দ্রুত গতিতে গাড়ি নিয়ে কোথাও পাগলের মতো ছুটে চলছে আধার চৌধুরী। যেনো কোন মূল্যবান জিনিস হারিয়ে এখন সে নিস্ব সে মূল্যবান জিনিস টা না খুজে পায় তাহলে এই মহূর্তে তার মৃত্যু অনিবার্য এক হাতে ড্রাইভ করছে অন্য হাতে কানে ধরে রেখেছে দামী এন্ড্রোয়িড ফোন যেটার স্ক্রীণে শুধু একটা নামই জ্বলজ্বল করছে “পাখিটা”
অসাবধানতার কারণে গাড়ি যেয়ে লাগে শাড়ি পরিহিত সে রমনীটার সাথে ধাক্কা। পিছন দিকে থাকায় রমনীটা ছিটকে পরে কিছুটা দূরে।চোখ বেয়ে পানি গরিলে পড়লেও ঠোঁটের কোণায় তার হাসি। মৃত্যু টার যে বড্ড প্রয়োজন এই মহূর্তে হৃদয় ভাংগা ব্যাথার চেয়ে মৃত্যুর ব্যাথা অধিক শ্রেয়।
আধার তাড়াহুড়ো করে গাড়ি থেকে নেমে পড়লো সিটে ফেলে রেখে দিলো ফোনটা। হুট করে বুকের বাম পাশটাই শূন্যতা অনুভব করতে লাগলো।সিটে ফেলে আসা ফোনে তখন ও রিং বেজেই চলেছে। আধার রমনীকে নিজের দিকে ফিরাতেই দুই কদম পিছনে চলে যায়।সে ভাবেনি তার ছোট্ট একটা ভুলের কারণে তার প্রান পাখিটা এই ভাবে উড়াল দিতে চাইবে।
ওটির বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে আধার। সাদা শার্ট জুড়ে তার রক্তের ছোপ ছোপ দাফ।৬ বছরে হাজারো বার রক্তে এই ভাবেই নিজেই শুভ্র শার্ট টাকে রঙ্গিন হতে দেখেছে কিন্তু কোন দিন ও সেই রক্ত দেখে ভয় লাগেনি আর না তীব্র ব্যাথায় বুকটা চিনচিন করে উঠেছে।তার একটা ভুল যে এই ভাবে তাকে মৃত্যু যন্ত্রণা দিবে সে কল্পনা করেনি কোনদিন।।।। তার দৃশটি অস্থির হয়ে পর্যবেক্ষণ করছে অপরেশান থেয়াটার এর লাইট টাকে কখন এই লাইট বন্ধ হবে আর কখন তারা জানাবে তার প্রান পাখি ঠিক আছে এক্ষনি উড়াল দিয়ে আসবে তার বুকের বাম পাশটাই নিজের মাথা এলিয়ে দিতে।।।
__________
পাশাপাশি দুই কপোত কপোতিকে কি দারুণ মানাচ্ছে।যেনো দুইজনের জন্যেই দুইজন তৈরি হয়েছিলো আল্লাহর আরশে।কি করে পেয়ে যেতাম তোমাকে আলিফ ভাই তুমি যে আগেই নিজেকে কে অন্যকারো নামে বাধিয়ে এসেছিলা ভুল করে এই মন পিঞ্জরে তোমাকে পাওয়ার অবৈধ ইচ্ছা জেগে উঠেছিলো কিন্তু তুমি আমার ভাগ্যতে ছিলেনা তাইতো হাজার চেয়েও কোন দিন পারিনি তোমাকে নিজের ভালোবাসার কথা জানাতে আর যেদিন নিজের মন আর মস্তিষ্কের সাথে যুদ্ধ করে তোমাকে মনের কথা জানাতে চায়লাম সেদিন ই তুমি নিজের সাথে নিয়ে এলে নিজের অর্ধেকঅংশ কে
তাদের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছিলাম এমন সময় আমার ছোট হাতটা পুনরায় নিজের শক্ত হাতে পুরে নিলেন আসফি ভাইয়া একপ্রকার টেনে আমাকে নিয়ে গেলেন আলিফ ভাই আর আফরা ভাবির সামনে।
;নে এটা আমাদের তরফ থেকে
আসফি ভাইয়ার কথায় চমকালাম আমাদের উনি কি ভুল করে বলে ফেলেছে আমার আর তার কে মিলিয়ে আমাদের।তিনি না হয় ভুল করেই বলেছেন তাহলে আমার এই অনূভুতির মানে কি!!
চলবে!