প্রেম তুফান পর্ব -০৩

#প্রেম_তুফান
#পর্ব_৩
#writer_Sabiha_Sultana_Mohima
দেয়ালের সাথে মিশিয়ে ধরে রেখেছেন হিমেষ ভাই। মুখ দিয়ে শব্দও বের করতে পারছি না। মুখের উপড়ে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছেন। বর্তমানে সে আমার এতটাই কাছে যে, একে অপরের শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ পন্ত শুনতে পারছি।
ভয়ে আমার আত্না বের হয়ে যাবে এমন অবস্থা। আর হিমেষ ভাই কত সুন্দর করে কফির মগে চুমুক দিচ্ছে যেনো তার কোনো চিন্তাই নে ই।
আমি হাত সরানোর জন্য চেষ্টা করছি ঠিক তখনি হিমেষ ভাইয়ের মুখের কথা শুনে আমি চমকে যাওয়ার মতো তাকিয়ে আছি।
কফিটা শেষ করতে দে হেমা দেখি কোনটা বেশি টেষ্ট, তুই না তোর কফি।
আরে ভাই দাড়িয়ে আছিস ভালো কথা তাই বলে হাতটা তো সরাবি, আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে তো। মনে মনেই কথা বলছি, জোরে বলরেই জান চলে যেতে পারে।
তখন দরজা খুলতেই দেখি হিমেষ ভাই শুধু একটা টাওয়েল পড়ে দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে, আমি চিৎকার করবো তার আগেই তিনি মুখ চেপে ধরে আমার হাত থেকে মগটা নিয়ে আমাকে চেপে ধরে দাড়িয়ে যান। এতো দ্রুত ঘটনাটা ঘটেছে যে আমি বুঝতেও পারি নি।
কফি খাওয়া শেষ হলে ামাকে চেড়ে দিয়ে বললেন মন্দ বানাস না, কিন্তু দিয়েছিলি তো আজকে আমার কানের পর্দা ফাটিয়ে। আর এ এজন্য তোকে শাস্তি পেতে হবে৷
এই রে এখন আবার কি শাস্তি দিবে আমায়। কান ধরে উঠবস করাবে নাকি। এই বয়সে আমি কোনো ভাবেই কান ধরে উঠ বস করতে পারবো না।
তোর শাস্তি হচ্ছে প্রতিদিন যখন যখন ামি কফি চাইবো তোকে বানিয়ে দিতে হবে।
আমি মুখ ভেংচে বললাম আহারে বেচারা আমি পারবো না।
তুই পারবি না তোর হাত পারবে। যা এখন আমার রুম থেকে।

ওনার বলতে দেরি কিন্তু আমার বের হতে সময় লাগলো না।
হাপ ছেরে বাচলাম যেনো। এত সময় নিজেকে বাগের খাচায় বন্দি লাগছিলো, মগটা কিচেনে রেখে এসে ধপ করে বিছানায় শুয়ে ভাবছি, াহা কত হেনসাম আমার হিমেষ ভাই। প্রসশ্ত বুক ভরা লোম। মুখে হারকা চাপ দাড়ি, গায়ের রংটাও মাশাল্লাহ। এরকম স্বামি যদি পেতাম।
ছি ছি আমি এসব কি ভাবছি। হিমেষ ভাই আমার কত বড়। আর সে তো আমার ফুপির ছেলে। ছি হেমা ছি। তোর নজরও কেমন ভেহায়া হয়ে গেছেরে।
এসব ভাবতে ভাবতে ককন ঘুমিয়ে গেছি নিজেরই খেয়াল নেই। সকালে ফোনের এলামের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম থেকে উঠেই মনে পড়ে আজ কলেজে আগে যেতে হবে । কোনো গেষ্ট আসবে। তাকে সংবর্ধনা দিতে হবে।
ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখি সারে সাতটা বাজে। তরিঘরি করে উঠতে গিয়ে টেবিলের সাথে বেধে নিচে পড়ে যাই।
কোমরে ব্যাথা পেয়েছি। কিন্তিু এখন এসব ভাবলে চলবে না। রেড়ি হয়ে বের হচ্ছি তখন মনে হলো যে আমার রুমের পাশেই হিমেষ ভাইয়ের রুম। যাই তো দেখি কি করছে।
রুমের ভিতরে ডুকে দেখি পুরো রুম ফাকা। গেলো কই মানুষটা। এদিক ওদিক উকি তিয়ে দেখছি। এমন সময় নিজের পেছনে হিমেষ ভাইয়ে গম্ভির কন্ঠ শুনে থমকে দাড়ালাম।
কি রে এরকম চোরের মতো কি খুজছিস তুই আমার রুমে। উকি দিচ্ছিস কেন এধারে ওধারে।
আমি চোর। কথাটা শুনতেই মেজাজ চটে গেলো। ঘুরে দাড়িয়ে কিছু বলার জন্য মুখ খুলেছি, কির্তু হিমেষ ভাইয়ের দিকে নজর পরতেই যেনো আমার সব কথা বন্ধ হয়ে গেলো।
কি ড্যানিশ লুক। সাদা শার্ট কোট পেন্ট পড়ে কোথাও যাওয়ার জন্য যে রেডি হয়েছে তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তৃতীয় বারের মতো আসি তার উপর ক্রাশ খাইলাম।
আমাকে এভাবে হা করে তাািয়ে থাকতে দেখে হিমেষ ভাই বলরেন, কি মেম এরকম হা করে তাকিয়ে আছেন কেনো।মুখে মাছি ডুকবে তো। মুখটা বন্ধ কর।
না কিছু না ভাইয়া। তা কই যাচ্ছেন?
গেলেই দেখতে পাবি।
হঠাৎ মনে হলো আমি ফোন রুমে রেখেই চলে এসেছি, মোবাইল আনতে গিয়ে দেখি মনি, মেহেদির বিশটা মিস কল। হায় হায় আজতো আমার কপালে খারাপি আছেরে। আবার ফোন বেজে উঠতেই রিসিভ করলাম। আর ওমনি শুনতে হলো মেহেদীর মার্কা মারা বকা টা।
ও ছেমরি তুই কই থাকস, ফোন যহন ধরবার পারবি না তহন ফোন চালাস কেন হ্যা। শ*য়*তা*ন বেডি। তাড়াতাড়ি নিচে আয়। আমরা সেই কোন সকাল থেকে তোর লাইগা বইসা রইছি। সেই খবর কি রাখছোস তুই।
ওকে ার বকা দিতে দেয়া যাবে না তাই ফোন কেটে হাওয়ার বেগে নিচে নেমে গেলা ম।এখন খাওয়ার টাইম নেই। খেতে গেলে দেরি হবে। তাই না খেয়েই বের হওয়ার জন্য দিলাম দৌর। আম্মু পেছন থেকে ডাকতে লাগলো। কে শোনে কার কথা। হাপাতে হাপাতে গেটের সামনে এসে দেখি তুলিও আমার মতো হাপাচ্ছে।
এবার তুলি কে নিয়ে দিলাম দৌড়। এক দৌড়ে কলেজ। কলেজ বাসা থেকে মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা। তাই আমি আর তুলি কখনো রিক্সা নেই না। হেটেই যাই।কলেজে ডুকরা সাথে সাথে পিঠের মধ্যে কিল পড়লো আমার আর তুলির। ঘুরে দাড়িয়ে দেখি মেহেদি সাদাফ, আর মনি। দাত কেলিয়ে হাসছে ওরা।
ওই দাত কেলাবি না। সকালে দাত মাজোস নাই। এখন আবার হাসতেছে।
হ মাজি নাই, কিন্তু তুই এতো দেরি করলি কেন হ্যা। তোরে না কইছি আগে আসতে।
আর বলিস না রে ভাই কালকে আমাদের তুলির শ্রদ্ধেয় বড় ভাই
মানে আমার ফুপির ছেলে কানাডা থেকে বাড়ি আসছে। তাই আর কি।
মনি এই কথা শুনেই বলে বসলো, তুলি তোর ভাইয়ের সাথে আমারে সেটিং করাই দে।
এহ্ আইছে কত শখ আমার ভাইয়ের বউ হবে রে। আমার ভ্ইয়ের বউ ঠিক করাই আছে বুঝলি।
তুলির কথা শুনে মনির মুখটা একেবারে চুপসে গেলো যেনো। এদিকে আমার মনে খটকা লাগলো কে হতে পারে হিমেষ ভাইয়ের বউ।
ক্লাসের বেল পড়ে গেছে তাই আমরা পাঁচ জন আর কোনো কথা না বাড়িয়ে ক্লাসের দিকে চলে গেলাম।
ক্লাসে ডুকার কিছু সময় পড়ে দেখি হিমেষ ভাই আমাতের প্রিনসিপালের সাথে আমাদের ক্লাসের দিকে আসছে।
তুলি আমার কানে কানে বলে কি রে হিমেষ ভাই কলেজে কি করে। আর এতো সাজ পোশাক পড়েছে, মনে হচ্ছে যেনো চিপ গেষ্ট।
কি জানি আমাদের খোজ নিতে আসছে মনে হয়। কালকে কেবল দেশে আসলো, আর এসেই আজকে দেখ কেমন আমাদের উপর নজর রাখা শুরু করেছে।
কি আর করবো বড় ভাই থাকলে যা হয় আর কি।
এখন চুপ যা বইন স্যার রা এদিকেই আসছে। বলতে বলতেই হিমেষ ভাই সহ সকল স্যার রা ক্লাসে ডুকে পড়লো।
স্যারদের দেখে আমরা দাড়িয়ে সালাম দিলাম। হিমেষ ভাই দেখি কেমন করে আমার আর তুলির দিকে তাকিয়ে আছে।
হেড স্যার বললেন পরিচিত হও।
ও হচ্ছে আমাদের কলেজের কৃতি ছাত্র হিমেষ যার কথা গত কাল বলা হয়েছিলো তোমাদের। হিমেষ তোমাদের ভিজিটিং লেকচারাল। সপ্তাহে দুই দিন ও তোমাদের ক্যামেষ্টি ক্লাস নিবে।
আমি আর তুলি একে অপরের দিকে তাকিয়ে বুঝালাম এবার আমরা ফেসে গেছি।
পিছনে দেখি সুক্তা নামের এক মেয়ে তার বান্ধবিদের কে বলছে দোস্ত কত জোস দেখ, এই নিউ লেকচারাল রে পটাই তে হবে। তুলি মুখে ভেংচে বলে আহ্ আইছে নেকা ষষ্ঠী। বলরো আর হয়ে গেলো নাকি।
আমার ভাইয়ের জন্য একটা মিষ্টি মেয়ে ঠিক করাই আছে। তুই দিনে স্বপ দেখ। বলে আমরা ক্লাসে মনোযোগ দিলাম।
*************★**★************★*******************★**
বিকেলে বাড়ি ফিরে দেখি ফুপির ননদের মেয়ে এসেছে। এই মেয়েকে আমার একদমি সহ্য হয় না। বেশি ডং করে। এমন কি তুলি নিজেও দেখতে পারে না।
ডইং রুমে বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছি তখন রিতু এসে বলে হিমেষ চলো না তোমাদের গ্রামটা একটু ঘুরে আসি। ডং দেখলে বাচিনা মেয়ের।
হিমেষ ভাই বললেন তুলি হেমাকে নিয়ে যাও, আমি ক্লান্ত। আজকে কলেজে স্যারদের সাথে অনেক জরুরি মিটিং ছিলো।আর তুমি আসাকে হিমেষ ডাকো কেনো, ভুলে যেও না আমি তোমার চাইতে তিন বছরের বড়।
রিতুর মুখটা দেখার মতো ছিলো।
হিমেষ ভাই উপড়ে যেতে যেতে বলরেন হেমা কুইক আমার কফিদিয়ে যা। আমার মাথা ব্যাথা করছে।
আমি জানি এখন রিতু চাইবে কফি করতে, আর হলোও তাই, আমি কফি নিয়ে হিমেষ ভাইয়ের রুমের সামনে গিয়েছি ঠিক তখনি রিতু এসে বলে হেমা কফিটা আমাকে দাও। আমি হিমেষ কে দিয়ে আসি। এই অধিকার শুধু আমার। বলেই একরকম ছিনিয়ে নিলো মগটা।
আমার ভিষন মন খারাপ হলো, যদিও আমি হিমেষ ভাইয়ের সামনে যেতে চাই না কিন্তু রিকু অধিকারের কথা তুলছে কেন। আমি কি হিমেষ ভাইয়ে লাভার নাকি। আশ্চর্য!
এবার আমার মনে হলো তুলি বলা সকালের সেই কথা যে হিমেষ ভাইয়ের জন্য মেয়ে ঠিক করা আছে, তবে কি রিতু সেই মেয়ে, তাহলে আমার কি হবে। আমি তো সেই কৈশোরের প্রথম যখন ভালো লাগা কি বুঝতে শিখেছি তখন খোেই জিমেষ ভাইকে ভালোবাসি।
যদিও কখনো মুখ ফুটে বলতে পারি নি।
মন খারাপ করে সাদে গিয়ে দাড়িয়ে ছিলাম, তখন শুনতে পেলাম হিমেষ আর রিতুর কখা,,,,,,,,
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here