“ফেমাস_বর🙈 পার্ট_১৪

0
1075

#ফেমাস_বর🙈
#পার্ট_১৪
#লেখিকা_রামিসা_মালিয়াত_তমা

এই তমা,আদনানের বিয়ের কার্ড দেখেছো?

কথাটা বলে উঠল আয়েশা।

আদনানের বিয়ের কার্ডের কথা শুনে তমার খুব খারাপ লাগল।

তমা-যতোই এসব ভুলে থাকার চেষ্টা করছি ততোই বোধহয় এসব আরো বেশি সামনে এসে পরছে!(মনে মনে)
নাহ তো!

আয়েশা -এই দেখো আদনানের বিয়ের কার্ড!আচ্ছা,তুমি কার্ডটা দেখতে থাকো,আমি বরংচ অন্যদেরকেও দেখিয়ে আনি!

তমা কার্ডটা হাতে নিয়ে বসে আছে!কিন্তু খুলছেনা।খুলছেনা বললে ভুল হবে,খুলতে যেয়েও পারছেনা।

তমা-সামান্য একটা কার্ড খুলতে আমার এতো কষ্ট হচ্ছে কেন?আদনান ভাইয়ের বিয়ের কোনোকিছুই কেন আমি সহ্য করতে পারছিনা?আমার কেন এতো খারাপ লাগছে?

নিজেকে অনেক কষ্টে শান্ত করে কার্ডটা খুলল তমা!কার্ডটা খুলে যেন রীতিমতো শক খেলো তমা।

তমা-এহ?একি?এতো আমার নাম লেখা কার্ডে?ব্রাইডের নামে আমার নাম কেন?তারমানে….

এতোক্ষন আয়েশাসহ বাকিরা দরজার ওপাশ থেকে সবকিছু শুনছিল!

সবাই-হুমমমমম,আচ্ছা আয়েশা ভাবিমনি এর মানে কী গো?(মজা করে)

তমা-আসলেও তো এটার মানে কী?ওহ,ভাবিমনি!বলো না গো এর মানে কী?

আয়েশা-আমিও তো বুঝতে পারছিনা।বিয়ে তো হওয়ার কথা ছিল মামার কলিগের মেয়ের সাথে!সেখানে তমার নাম!(মজা করে)

তমা-সেটাই তো!কী হচ্ছে টা কী?

সবাই-গাধী তোর মাথায় আর কবে বুদ্ধি হবে শুনি?এতোকিছু দেখার পরও কী বুঝতে পারছিসনা যে তোর আর আদনান ভাইয়ের বিয়ে?

তমা-কীহ?(জোরে চিৎকার দিয়ে বলল)

সবাই-হুম!আর এই সহজ বিষয়টাকে এতক্ষন তুই ঘাটছিলি বসে বসে!ছাগল একটা!

তমা যেন এখনো বিশ্বাস করতে পারছেনা যে ওর আর আদনানের বিয়ে!

সবাই-তুরিন আপু,তোমার বোনটা এতো বোকা কেন গো?কিছুই বুঝেনা কেন?

তমা এখনো থ মেরে বসে আছে!বিশ্বাসই করতে পারছেনা কী থেকে কী হচ্ছে!

তমার অবস্থা দেখে আয়েশা ইশারা করে সবাইকে বাহিরে নিয়ে আসলো!শুধু তুরিন বাদে!

সবাইকে বের হয়ে যেতে দেখে তমা তুরিনকে কঠিন গলায় বলল,

তমা-তরুিনপু কাজটা কী ঠিক হচ্ছে?

তুরিন তমার কথা বলার ভয়েজটা শুনে অবাক হলো।কেননা,তমা কখনো এভাবে কথা বলেনা।

তুরিন-তমা,কী হলো তোর?এতো রিয়েক্ট করছিস কেন?

তমা-দেখ,তুরিনপু আদনান ভাই আমাদের সম্পর্কে মামাতো ভাই।তাকে কীভাবে আমি বিয়ে করতে পারি?আর তাছাড়া এটা শুনলে যে কেউ বলবে যে আমরা আদনান ভাইয়াদের প্রপার্টি দেখে ওদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করছি।

তুরিন-তমা,তুই এভাবে কেন ভাবছিস?আর তাছাড়া আমরা তো ওদেরকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেইনি।আদনান নিজে সবাইকে বলেছে।

তমা-আর আমরাও রাজি হয়ে গেছি,তাইনা।

তুরিন-তমা তুই এমন…

তুরিন কথা শেষ করতে পারল না!তার আগেই আদনান ঘরে ঢুকে পরল আর তুরিনকে ইশারা করল বাহিরে চলে যাওয়ার জন্য।

তমা-দেখ আপু,অত ভেবে আমাদের কাজ নেই।আমি এইখানে বিয়ে করবনা,আমি আম্মু-আব্বকেও বলে আসছি।

তমা ঘুরে ঘর থেকে বের হতে নিলেই আদনানের সাথে ধাক্কা খেলো।

তমা-একি আপনি?
ইয়াল্লাহ,এই হাতি আবার কিছু শুনে নাই তো?তাইলে তো আজকে গেসি!(মনে মনে)

আদনান-কী বলছিলি তুই?

তমা একটু আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো যে তুরিন কোথায়।কোথাও তুরিনকে দেখতে পেলোনা!

আদনান-তুরিন নেই!ওর শরীর খারাপ লাগছিল,তাই ও নিজের রুমে চলে গেসে।এখন বল কী বলছিলি তুই?

তমা-ককইই?আমমি তো কিচ…আমি তো কিছু বলতেছিলাম না!(তোতলাতে তোতলাতে বলল)

আদনান-তো তোতলাচ্ছিস কেন?

তমা-এমনি!

আদনান-আমার সাথে শুধু শুধু মিথ্যা কথা বলছিস কেন তুই?কী জানি বলছিলি,বিয়ে করবিনা আমাকে?

তমা-খাইসে রে!শুনে ফেলসে তার মানে!(মনে মনে)
তো যখন জানেন তাহলে আস্ক করছেন কেন?

আদনানের এবার রাগ উঠে গেল।তমার গাল চেপে ধরে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে বলল,

আদনান-খুব বুলি ফুটেছে না তোর মুখে?খুব বুলি ফুটেছে?বুলবুলি,বেশি বুলি ফুটাসনা মুখে!নাহলে কখন যে ডানা চিরে পরে যাবি তা তুই নিজেও জানিস না।আর আমাকে বিয়ে করবি এটা জানলে মানুষ কী বলবে?ফর মাই প্রপার্টিস,তুই আমাকে বিয়ে করবি?এটা যদি মানুষ ভাবে তাহলে সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।তোর সেটা নিয়ে না ভাবলেও চলবে!

তমার দম আটকিয়ে আসছে।কোনোমতে আদনানের হাত নিজের মুখ থেকে সরিয়ে বলল,

তমা-অবশ্যই এখানে আমার ভাবনার বিষয় আছে।কেননা,বিয়ে হচ্ছে আপনার আমার সাথে।আর মানুষ যখন অপবাদ দিবে তখন আমাকে আর আমার পরিবারকেই দিবে।আর,আমি কখনোই চাইনা আমার মা-বাবা আমার জন্য সারাটাজীবন মানুষের কাছ থেকে কথা শুনুক।আর ঘরের মানুষরাই তো সবার আগে এসে কথা বলবে।তাদের কথা কীভাবে এভয়েড করব বলুন?

আদনান তমার কথায় কিছুটা অবাক হলেও কিছু বললনা।

আদনান-ঠিকাছে যা তুই যেখানে যাচ্ছিলি।আর যাকে যা বলতে যাচ্ছিলি।

তমা আর কিছু না ভেবে ঘর থেকে বের হলেও আবার ঘরে ফিরে এলো।

আদনান-কীরে,ফিরে এলি কেন?বলিসনি কিছু?

তমা কিছু না বলে চুপচাপ বেডে বসে পরল।

আদনান-আমি জানতাম তুই ফিরে আসবি!মানিন এবং বাকিদের মুখের হাসিটা দেখেছিস?সবাই কত খুশি দেখেছিস?কেউ তোর মতো করে ভাবেনি আর না ভাবছে।

এবার আদনান তমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসল।আর বলল,

আদনান-দেখ তমু,আমাদের জীবনের চলার পথে অনেক বাঁধা আসবে।অনেক বিপদ আসবেঁমানুষ চেষ্টা করবে তোর আর আমার সম্পর্ক নষ্ট করে দেওয়ার।আমাদের মধ্যে দুরত্ব বাড়ানোর।তোকে কিন্তু সবকিছু মেনে,সব বাঁধা-বিপদ কাটিয়ে আমার পাশে থাকতে হবে।কী পারবিনা আমার পাশে থাকতে?বল পারবিনা?

তমা কিছু না বলে শব্দ করে কেঁদে দিল।আদনান কিছুক্ষন তমার দিকে তাকিয়ে থেকে তমাকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিল।

আদনান-আমার তমু❤️

সবাই ঘরের ভিতরে প্রবেশ করল।সবাই যেন ওদের ভালোবাসা দেখে আজ মুগ্ধ!

আবরার,আয়েশা,অরিত্রি(তমার ছোট মামার মেয়ে)-শুভ বিবাহ অফ

তুরিন,আরহাম,ওয়াসিম(তুরিনের হাসবেন্ড)-আদনান এন্ড তমা!!

সবাই-ইয়েহহহহহহহহহ!

এদিকে কেউ একজন সবাইকে দেখছে আর ডেভিল স্মাইল দিয়ে বলছে,

হওয়াচ্ছি শুভ বিবাহ!

শুভ বিবাহ পর্ব😜
তমা ওয়েডস আদনান❤️

চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here