#বৈধ_সম্পর্ক
#সিজন_২
#পর্ব_১১
#Saji_Afroz
.
.
.
-কি হলো বল?
.
মুনিরার ধমকের সুরে কথাটি বলতেই আরাফ মিনমিনে স্বরে বললো-
ইয়ে মানে, প্রেম কি বলে বলে করে নাকি?
-তার মানে তুই করছিস প্রেম?
-আগে বলো কে বলেছে এসব?
-তোর প্রেমের কথা কে জানে?
-রুমানা ছাড়া কেউ তো না।
.
কথাটি বলেই মাথায় হাত দিয়ে দিলো আরাফ।
মায়েদের সামনে যেনো মিথ্যে মুখ দিয়ে আসেই না তার।
.
সায়নী ও মুনিরা হেসে উঠলো তার অবস্থা দেখে।
তারা ইশারায় ডাকলো আরাফকে।
সোফার উপরে দুই মায়ের মাঝে গুটিসুটি মেরে মাথা নিচু করে বসে আছে আরাফ।
সায়নী শান্ত গলায় জিজ্ঞাসা করলো-
মেয়ের নাম কি?
-উপমা।
.
মুনিরা জিজ্ঞাসা করলো-
কি করে?
-প্রিমিয়ার ভার্সিটি তে বিবিএ ২য় বর্ষের ছাত্রী।
-বাবা কি করে?
-রাজনীতি।
-ছবি আছে?
-বাবার ছবি তো নেই।
-আরে উপমার?
-হু।
-দেখা।
.
আরাফের মোবাইলে উপমার ছবি দেখে মন ভরে গেলো সায়নী ও মুনিরার।
আরাফের পছন্দ আছে বলতে হবে।
সায়নী হেসে জিজ্ঞাসা করলো-
কতোদিন হলো মেয়েটিকে ফাঁসিয়েছিস?
-১বছর।
.
মুনিরা ভ্রু জোড়া কুচকে বললো-
দেখেছো আপু? আমাদের ছেলে এক বছর আগেই পর হয়ে গিয়েছে।
-বিয়ে তো করতেই হবে তাইনা? বিয়ে করলে কি আর পর হয়ে যায়!
-হয়না। তবে আরাফ আমাদের একমাত্র ছেলে। আমাদের পছন্দ হলেই সে বিয়ে করতে পারবে মেয়েটিকে। কি বলো আপু তুমি?
-হ্যাঁ তা অবশ্যই।
-এবার বলো তোমার পছন্দ হয়েছে উপমাকে? নাকি মেয়েকে সরাসরি দেখে নিবো একবার?
.
সায়নীর উত্তর জানার জন্য আকুপাকু করছে আরাফের মনটা। সে অসহায় দৃষ্টিতে সায়নীর দিকে তাকাতেই হেসে দিলো সায়নী।
.
আরাফ নিচের দিকে তাকিয়ে বললো-
হাসছো কেনো বড় আম্মু?
-তোর অবস্থা দেখে। যাক তোর যখন উপমাকে পছন্দ, ১বছরের সম্পর্কও আছে। আমি আর কি বলবো। আমার দেখার কিছু নেই। তোর লাইফ তোর ডিসিশন। এবার মুনিরা তুই তোর মত জানা?
.
-উম্ম….
.
মুনিরার ডিসিশন কি হবে! এটা নিয়ে আবার দুই মায়ের মাঝে দ্বন্দ্ব বেজে যাবে নাতো?
এসব চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে আরাফের মন।
আরাফের ভয় কাটিয়ে মুনিরা বললো-
ছেলে আর বড় মা যখন রাজি আমি আর কি বলবো! আমিও রাজি। এবার আরাফ তুই বল কখন আমরা প্রস্তাব নিয়ে যাবো উপমার বাসায়।
.
আরাফ খুশিতে দুহাতে দুমাকে জড়িয়ে নিয়ে বললো-
ওহ আম্মুগণ! তোমরা আসলেই গ্রেট।
.
সায়নী বললো-
ছাড় ছাড়। বউ তাড়াতাড়ি ঘরে আনতে চাই। আমার আর মুনিরার যে একটা মেয়ের অনেক শখ জানিসই তো তুই।
-হু জানি। কিন্তু আব্বু?
-তোর আব্বুও প্রেমিক মানুষ আফরান। না করবেনা। আর আমরা থাকতে এসবের চিন্তা করতে হবেনা তোকে।
-আগে যাই রুমানার বাচ্চা রুমানাকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে আসি। ওর জন্যই আজ এটা সম্ভব হলো। নাহলে আমি কিভাবে কথাগুলো তুলবো ভেবেই পাচ্ছিলাম না।
.
.
.
-ওই রুমানার বাচ্চা?
.
রুমানার বাসায় এসে আরাফ হুংকার ছেড়ে ডাকছে তাকে।
সোফার উপরেই বসে ছিলো রুমানা।
আরাফের গলার স্বর শুনে লুকিয়ে পড়লো রুমানা।
রুমানার মা এসে হেসে বললো-
রুমানা কিভাবে রুমানার বাচ্চা হবে রে আরাফ?
.
আন্টি রুমানাকে ডাকো। ওর সাথে হিসেব নিকাশ আছে আমার।
.
-এই রে! আজ আমাকে আলু ভর্তা, পাইন্না ডাল সব বানাবে এই আরাফ ভাইয়া। তার প্রেমের কথা ফাঁস করে দিলাম কিনা!
.
ভাবতে ভাবতেই কাধে কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করলো রুমানা।
পেছনে তাকিয়ে দেখলো আরাফ।
দাঁড়িয়ে পড়লো রুমানা।
আমতাআমতা করে বললো-
আমি ইচ্ছে করে বলিনি। আসলে মুখ ফুসকে বলে ফেলেছি।
-কি! আমি আরো ভেবেছি আমার মায়েদের তুই রাজি করিয়ে এসেছিস৷ আমি বলতে পারছিলাম না তাই।
তোকে তাই ধন্যবাদ দিতে এসেছিলাম।
-রাজি হয়েছে আন্টিরা?
-হ্যাঁ।
.
রুমানা মিটমিট করে হেসে বললো-
হ্যাঁ হ্যাঁ! আমিই তো রাজি করিয়েছি। কতো পাম্প মেরেছি তাদের। কতো ইমোশনাল হয়ে বুঝিয়েছি।
.
রুমানার কথা শুনে হেসে উঠলো আরাফ।
রুমানা তার দিকে তাকিয়ে ভ্রু জোড়া কুচকে বললো-
হু…
ভুলেই বলেছি ভাইয়া। আমি গিয়েছিলাম আমার আর রাকিবের বিয়ে ঠিক হয়েছে এটা জানানোর জন্য। কথার মাঝেই এটাও ভুলেই…
-কি! সত্যি তোদের বিয়ে ঠিক হয়েছে?
-হুম সত্যি।
.
রুমানার হাত ধরে ঘুরতে থাকলো আরাফ।
রুমানা বললো-
ভাইয়া মাথা ঘুরছে আমার ছাড়।
-ওহ হো! আজকে আমাদের খুশির দিন।
-তাই বলে ঘুরতে হবে?
.
রুমানাকে ছেড়ে দিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে আরাফ বললো-
তুই তোর রাকিব কে পাচ্ছিস আর আমি আমার উপমা কে।
.
-উপমা কে নিয়েই থাকবা নাকি বাপের মতো আরেকটা বিয়ে করে আনবা?
.
সীমা আক্তারের কথা শুনে রুমানা বললো-
তুমি সবসময় কেনো এসব বলো তো দাদী?
-হুম আমি কিছু বললেই খারাপ। কিন্তু হক কথা বলি আমি।
.
বলেই সীমা আক্তার তার রুমের দিকে এগিয়ে গেলেন।
.
আরাফ রুমানার উদ্দেশ্যে বললো-
বাদ দে রুমানা। আমি এখন আসি।
-ভাইয়া তুই রাগ করেছিস?
-নারে। সারাদিন বাইরে ছিলাম তো, ক্লান্ত লাগছে।
.
.
.
বাসায় আসতেই আফরানকে দেখতে পেলো আরাফ।
আফরান তার উদ্দেশ্যে বললো-
আমার রুমে আয় একটু। কথা আছে তোর সাথে।
.
আরাফ মায়েদের দিকে তাকিয়ে ইশারায় জিজ্ঞাসা করতে চায়লো, তারা কি সব বলে দিয়েছে আফরানকে?
কিন্তু জিজ্ঞাসা করতেই পারলো না।
.
.
বাবার পাশে বসে আছে আরাফ।
আফরান তার হাত ধরে বললো-
আমার ব্যবসা টা আমার বাবার হাতে গড়া জানিসই তো।
-হ্যাঁ।
-আমার একমাত্র বংশধর তুই। এখন যে হাল তোর ধরার সময়। তবে…
-কি আব্বু?
-তুই বুয়েট পাস করা ছাত্র। তোর যদি নিজের কিছু করার ইচ্ছে থাকে তাহলে বলতে পারিস।
.
মৃদু হেসে আরাফ বললো-
ট্যালেন্ট ছিলো কাজে লাগিয়েছি। এখন সে ট্যালেন্ট দিয়ে তোমার ব্যবসাও বড় করবো ইনশাআল্লাহ।
.
ছেলের কথা শুনে তাকে জড়িয়ে ধরলো আফরান।
সত্যিই আরাফ তার গর্ব।
.
.
.
বাবার সাথে কথা বলেই নিজের রুমে এসে আরাফ ফোন দিলো উপমাকে।
-হ্যালো সোনাটা?
-না শয়তান টা।
-উহু উপমা! তুমি সবসময় এতো খিটখিটে মেজাজে থাকো কেনো বলো তো?
-এখন ফোন দিয়েছো কেনো? এখন আমার পড়ার সময় জানো না?
-জানি তো। কিন্তু একটা গুড নিউজ আছে যে।
-কি?
-আম্মুরা তোমাকে পছন্দ করেছে।
-তো?
-তো মানে? তুমি খুশি হওনি?
-আমাকে পছন্দ করবেনা এমন টা আমি ভাবিনি কখনো। আমার ভয় তোমাকে নিয়ে।
.
অবাক হয়ে আরাফ বললো-
আমাকে নিয়ে কেনো?
-আরে প্রেমের ক্ষেত্রে মেয়ের মা বাবারা একটু আলগা পার্টে থাকে জানোনা?
-না।
-জেনে রাখো।
-তুমি তোমার বাসায় আমাদের কথা জানাও।
-পাগল নাকি! এখন আমাকে তারা বিয়ে দিবেনা।
-জানিয়ে রাখলে তো অসুবিধে নেই? আমার আম্মুরা যেতেও রাজি তোমাদের বাসায়।
-না না পাঠিও না তাদের। এখন যখন বিয়ে দিবেই না তাদের পাঠিয়ে লাভ কি বলো।
-বিয়ে তো একদিন হবে।
-সে একদিন দেরী আছে। আগে আমি পড়াশোনা কমপ্লিট করি।
-আমাকে বুড়ো বানানোর পর বিয়ে করলে লোকে বলবে উপমা বুড়ো বিয়ে করেছে।
-আমার বর তাদের কি!
-তুমি বিষয়টা সিরিয়াসলি নাও উপমা। পড়াশোনা আমার কাছেও করতে পারবে তুমি। আমার মায়েরা তোমাকে মেয়ের মতোই রাখবে। কোনো কিছুর কমতি হবেনা তোমার।
-আমার গুলো আমি আদায় করতে জানি।
-কি বললে?
-কিছুনা। এখন রাখো আরাফ।
-তুমি ভেবে দেখো উপমা৷ অন্তত এনগেজমেন্ট হলেও করে রাখা তো যায়?
-হু, জানাবো আমি। এসব ডিসিশন তো আর হুট করে নেয়া যায়না।
-হুম।
.
আরাফ ভেবেছিলো উপমাকে জানালে তার মায়েরা তাদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছে সে খুশি হবে। কিন্তু এমন একটা আচরণ করলো যেনো মেনে না নিলেও তার কিছু যায় আসতো না।
মেয়েটাকে মাঝেমাঝে এতোটা ভাবলেশহীন মনে হয় কেনো!
.
.
.
সকাল ১১টাই ঘুম ভাঙলো আরাফের।
ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে দরজা খুলেই তাসুকে দেখে যেনো ধাক্কা খেলো।
-এতো সকালে তুমি?
.
তাসু মৃদু হেসে জবাব দিলো-
১১টা বাজে এতো সকাল! যাই হোক, শুধু আমি না। আমরা সবাই এসেছি।
-ওহ!
.
আরাফ ত্রি-কোয়াটার প্যান্ট পরে রয়েছে দেখে হাসতে লাগলো তাসু।
ভ্রু জোড়া কুচকে আরাফ বললো-
এতো হাসির কি আছে শুনি?
-বাংলাদেশে এসব প্যান্ট চলে?
.
তাসুর দিকে তাকিয়ে আরাফ দেখলো সে লং জিন্সের সাথে ফুল হাতা শার্ট পরেছে।
মাথা নেড়ে আরাফ বললো-
লম্বা পরেছো তো সব। চলে চলে এসব।
-আরে আমার কথা বলছিনা আমি। বলছি তোমার কথা।
.
নিচের দিকে তাকিয়ে দরজা লাগাতে লাগাতে আরাফ বললো-
নিজের রুমের ভেতরে সব চলে।
.
আরাফের কান্ড দেখে হাসতে হাসতেই তাসু বললো-
ইশ! এত্তো কিউট কেনো এই ছেলে টা!
.
.
ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমেই মিশিকাদের সাথে দেখা হলো আরাফের।
মেহেনুবার দিকে চোখ পড়তেই দেখলো সাদা রঙের একটা গাউন পরেছে সে।
দুধে আলতা গায়ের রঙের সাথে তার জামার রঙ যেনো মিশে যেতে চাইছে।
কানে ঝুমকো, হাতে চুড়ি, খোলা চুল, চোখে কাজল, ঠোঁটে গোলাপি রঙের লিপস্টিক। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই লাগছে তাকে৷ কিন্তু এতো সাজগোজের কারণ কি!
মিশিকা আরাফের উদ্দেশ্যে বললো-
আজ আতিকের সাথে লাঞ্চ করবি তোরা।
-ভালোই তো। আসুক সে।
-আসবেনা৷ তোরা যাবি রেস্টুরেন্টে।
আজ প্রথমবারের মতো মেহেনুবা ও আতিকের দেখা হবে। তুই নিয়ে যাবি মেহেনুবাকে।
.
এতোক্ষণে আরাফ বুঝতে পারলো মেহেনুবার এতো সাজগোজের কারণ।
সে মৃদু হেসে বললো-
ঠিক আছে নিয়ে যাবো।
.
-আমি যাবোনা?
.
তাসুর কথা শুনে মিশিকা বললো-
মোটেও না।
-হবু দুলাভাই কে তো দেখবো?
-পরে দেখিস। তুই যে বকবক করিস না!
.
তাসুর উদ্দেশ্যে মুনিরা বললো-
তুমি আমাদের সাথে গল্প করো। আমেরিকার গল্প করো।
.
মুখটা ফ্যাকাসে করে তাসু বললো-
কি আর করার!
.
.
.
রেস্টুরেন্টে সামনাসামনি বসে আছে মেহেনুবা ও আতিক।
আরাফ একটু দূরে অন্য দিকে বসে আছে।
মেহেনুবার খুবই অস্বস্থি লাগছে।
আতিক তার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যে নিজেকে জোকার ছাড়া কিছুই মনে হচ্ছেনা তার।
নীরবতা ভেঙে আতিক বললো-
আমি কিন্তু বিয়েটা তাড়াতাড়ি করে ফেলতে চাই। তোমার কোনো অমত নেইতো?
.
মাথা নেড়ে মেহেনুবা বললো-
না।
.
.
দূর থেকে তাদের দেখছে আরাফ।
মেহেনুবাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে সে ভীষণ নার্ভাস।
এখন যদি উপমা তার সামনে থাকতো কথার ঝুড়ি খুলে দিতো। আর এই মেহেনুবা?
সারা রাস্তায় তার সাথে একটা কথাও বললো না। এখন দেখছে নিজের হবু বরের সাথেও এমন!
মাথাটা নিচু করে আছে। আতিক কে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে আর মেহেনুবাকে মাথা নাড়তে।
ভাবতে ভাবতেই অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসলো আরাফের।
-হ্যালো?
-আমি তাসু। এটা আমার নিউ নাম্বার।
-ওহ তাসু! হ্যাঁ বলো?
-আপু কই?
-হবু দুলাভাই এর পাশে।
-কি করছে?
-মাথা নাড়ছে।
-মানে?
-মানে কথা বলছে আর কি।
-আতিক ভাইয়া দেখতে কেমন?
-সেই।
-আর আপুকে দেখে তার রিয়াকশন কেমন ছিলো?
-জাস্ট ও মাই গড।
-ইশ! আমি এসব মিস করছি।
-তুমি চাইলে দেখতে পারো।
-কিভাবে?
-ছবি তুলে দিচ্ছি তোমাকে।
-ঠিক আছে।
.
আরাফ দূর থেকেই তাদের ছবি তুলে পাঠিয়ে দিলো তাসুকে।
.
.
লাঞ্চের পরেই রেস্টুরেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে পড়লো মেহেনুবা ও আরাফ।
গাড়ি ছাড়ার কিছুক্ষণ পরে আয়নায় চোখ পড়তেই আরাফ দেখতে পেলো, মেহেনুবা তার হাতের চুড়ি, কানের দুল সবই খুলে ফেলছে।
আরাফ তাকে উদ্দেশ্যে করে বললো-
খুলে ফেলছো যে?
-আম্মুর জোরাজুরি তে পরেছিলাম। আতিক কে দেখানো শেষ তাই খুলে ফেলছি।
.
হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে দিলো আরাফ।
মেহেনুবা কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই গাড়ি থেকে নেমে পড়লো সে।
একটি পথ শিশু হোচট খেয়ে রাস্তায় পড়ে গিয়েছে।
তাকে উঠাতেই গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়লো আরাফ।
আরাফ তাকে তুলে জামা কাপড়ে লেগে থাকা ময়লা ঝেড়ে দিচ্ছে।
মুগ্ধ চোখে এই দৃশ্যটি দেখে চলেছে মেহেনুবা।
আরাফের এমন ব্যবহার গুলি খুব ভালো লাগে তার।
আরাফ কে সে ভালোবাসেনা, কিন্তু আরাফের চোখে প্রথম যেদিন তার চোখ পড়ে মনে হয়েছিলো অন্য একটা জগত সেই চোখে দেখেছে মেহেনুবা।
তাসুর মতে আরাফ এমন একটা ছেলে, যে কেউ তার প্রেমে পড়তে বাধ্য।
তাই মেহেনুবা দুরত্ব বজায় রেখে এসেছে প্রতিবারই আরাফের কাছ থেকে। প্রেমে পড়ার ইচ্ছে তার নেই।
ভাগ্য বিশ্বাসী মেহেনুবা। প্রেম ভালোবাসায় নয়।
.
.
গাড়িতে উঠে কিছুদূর যাওয়ার পরেই ফোন বেজে উঠলো আরাফের।
ফোনে হ্যাডফোন লাগিয়ে সে রিসিভ করলো কল। উপমার ফোন এসেছে, না ধরলে পরে হাজার টা প্রশ্ন করবে। তার চেয়ে বরং ড্রাইভ করছে জানায় দেয়া শ্রেয়।
কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে উপমা বললো-
আম্মু আমাদের ব্যাপারে সবটা জেনে গিয়েছে আরাফ! রেগেমেগে আব্বুকে ফোন দিতে গেলো এখন।
-কি করে জানলো?
-সে পরে বলবো। এখন কি করবো!
.
আরাফ তাকে অভয় দিয়ে বললো-
-এই পাগলি মেয়ে কিছু হবেনা। সবটা সত্যি জানাবে।
দেখবে মেনে নিবে তারা।
-সত্যি?
-হু সত্যি।
-আচ্ছা রাখছি এখন। আম্মু কি করছে দেখে আসি।
-নিজের খেয়াল রেখো।
.
হ্যাডফোন কান থেকে সরাতেই মেহেনুবা জিজ্ঞাসা করলো-
স্পেশাল কারো সাথে কথা বলছিলে?
-হুম।
.
আরাফের মুখে হুম শুনে তাসুর কথা মনে পড়ে গেলো মেহেনুবার। আরাফের জীবনে স্পেশাল কেউ আছে শুনলে তাসুর রিয়াক্ট কেমন হবে!
.
(চলবে)