#গল্পঃ_ভালোবাসত_বারণ💔
#লেখাঃ_মেহেদী_হাসান_রিয়াদ💔
#পর্বঃ__২……💔
🥀
বাবার কথাটা শুনতেই বুকটা কেপে উঠে তার। অজানা কিছু ভয় এসে হানা দেয় তার মনে। এতো বড় একটা শত্য কিভাবে বলবে বাবাকে?
আদিত্য বাবার পাসে গিয়ে বসে সোফায়। আজমল চৌধুরি ফোনটা রেখে আদিত্যকে বলে উঠে,
— কিরে কিছু বলবি?
— না বাবা এমনি।
— শুন, তৃষ্না আসছে আগামি মাসে। তাই ভালো দিন খন দেখে তোদের বিয়ের কথা এগিয়ে রাখছি আগে থেকেই।
এই কথা বলেই হা হা করে হেসে উঠে আজমল চৌধুরি।
আদিত্য কিছু না বলে গাল টেনে একটু হাসার চেষ্টা করে। আদিত্যের চোখের হাসি আজ তার ঠোট অব্দি পৌছাচ্ছেনা। চার দিকের মানসিক প্রেসার যেনো তাকে হারিয়ে দিচ্ছে এক ভিন্ন জগতে।
মাস টা ফাল্গুন, শীত তেমন একটা নেই বললেই চলে। রাতে গায়ে হালকা একটা চাদর জড়িয়ে ছাদের কর্নিশে দাড়িয়ে আছে শুভ্রতা। দুশ্চিন্তায় যেনো কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে তার। অসস্থিতে চাদরটা খুলে আগুছালো ভাবে এক হাতে নিয়ে নিশ্চুপ হয়ে দাড়িয়ে আছে সে।
পেছন থেকে পাসে এসে দাড়ায় বৃষ্টি।
— একা একা কি করছিস আপু?
— না এমনি দাড়িয়ে আছি।
— শরির খারাপ?
— না,,,
— তাহলে?
— এমন ভাবে বলছিস যেনো কিছুই জানিস না?
— ওইসব নিয়ে যত ভাববি ততোই দুর্বল হয়ে পরবি আপু। প্রব্লেম যেহেতু হয়েই গেছে। এর একটা সলুশন ও আছে। আজতো আর সব শেষ হয়ে যায়নি তাই না? এখনো অনেক সময় আছে ভাবার। এইসব চিন্তা ভাবনা নিজের থেকে কিছুটা দুরে রাখ। তাতেই ভালো।
— আজ এই চোখ যা দেখলো তা তো আর মিথ্যা না। এই কান যা শুনলো তাও মিথ্যা না। তাহলে?
— একটু বেশিই চিন্তা করছিস আপু ভুলে যা ওইসব। ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নে এখনো অনেক সময় পরে আছে।
গভির রাত, সবাই গভির ঘুমে বিভোর। ঘুম নেই শুভ্রতার চোখে। জীবনে প্রথম বার মা হওয়ার অগ্রিম বার্তা। তাও আবার এমন একটা পরিস্থিতি তে।
নিন্দ্রাহিন রাত্রী যাপন করায় সকালে কিছুটা চোখ লেগে এসেছিলো শুভ্রতার। নাস্তা তৈরি শেষে শুভ্রতা ও বৃষ্টিকে ডেকে গেলো তাদের মা আদ্রিতা বেগম। ফ্রেস হয়ে নাস্তার টেবিলে চলে যায় শুভ্রতা।
আজ শুক্রবার,
ছাদে ফুল গাছ গুলোতে পানি দিয়ে নিচে নেমে এসে দেখে। সাগর ভাই। তার পাসে তার বাবা আসিফ স্যার।
শুভ্রতা বুঝতে বাকি নেই এখানে কি কথা হচ্ছে। কারন, সাগর ভাই শুভ্রতার ফুফাতো ভাই। তার ফুফির ইচ্ছে তার ভাইয়ের মেয়েকে তার ঘরের বৌ করে নিয়ে যাওয়া। এই তো বছর খানেক আগে ফুফি নিজেই বাবাকে বলেছিলো সাগরের বৌ হিসেবে তার একটা মেয়েকে সে নিতে চায়। ফুফির কথাও ফেলতে পারেনি বাবা। আর সাগরও নাকি শুভ্রতাকে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করে। তবে বাবা কথা দিয়ে রেখেছে শুভ্রতার পড়াশুনা শেষ হলেই তার বিয়ে। তখন শুভ্রতার আপত্বি থাকলেও সাহস করে বলতে পারেনি। আর তখন আদিত্যের সাথেও নতুন প্রেমে জড়িয়ে গিয়েছিলো শুভ্রতা।
শুভ্রতাকে দেখে তার বাবা বলে উঠে। শুভ্রতা এদিকে আয়। দেখ কে এসেছে।
বাবার ডাকে এগিয়ে যায় শুভ্রতা। সামনে গিয়ে বলে, আসসালামুআালাইকুম ভাইয়া।
একটু হাসি মুখে সালামের উত্তর দেয় সাগর।
হাসি মুখে সাগর প্রশ্ন ছুড়ে দেয় শুভ্রতার দিকে,
— কেমন আছো শুভ্রতা?
চাপা মুখে উত্তর দেয় শুভ্রতা,
— জ্বী ভাইয়া আলহাম্দুলিল্লাহ্।
সাগর ২য় বার প্রশ্ন করার আগেই শুভ্রতা বলে উঠে,
— বাবা তোমরা কথা বলো, আমি চা নিয়ে আসি।
শুভ্রতা যাওয়ার পর মাথা ঝাকিয়ে একটু হেসে উঠে আসিফ স্যার।
তার মাঝে সাগর বলে উঠে,
— মামা বলুন তো, শুভ্রতার আমাকে দেখে এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে?
হেসে উঠে বে উঠে আসিফ স্যার,
— বুঝলা সাগর, প্রত্যেক মেয়েই বিয়ের আগে এমন লজ্জা লজ্জা ভাব থাকে। বিয়ের পর দেখবা সব ঠিক হয়ে গেছে।
কথা শুনে একটু মুচকি হাসিতে লজ্জা আড়াল করার চেষ্টা করে সাগর। আজ নাকি সাগর এখানেই থাকবে। পর দিন সকালে এখান থেকেই বেড়িয়ে পরবে সাগর ডিওটিতে। একটা মাল্টিন্যাসনাল কম্পানিতে চাকরি করে সে।
আদিত্যের সাথে আজ একবার কথা হয়েছিলো শুভ্রতার।
দুপুরে সকলে বসে আছে খাওয়ার টেবিলে। সকলকে খাবার বেরে দিচ্ছে শুভ্রতা।
আসিফ সাহেব খেতে খেতে বলে উঠে,
— কি রে মা তুই খাবি না?
— আমি পরে খেয়ে নিবো বাবা, তোমরা খাও।
— এটা কেমন কথা? বসে পর।
সাগরের মুখুমুখি শুভ্রতা। কেমন একটা অসস্থি বোদ হচ্ছে তার। এটা কি লজ্জা নাকি অন্য কিছু তা বুঝতে পারছেনা সে।
,
,
,
তৃষ্নার সাথে ফোনে কথা বলছে তার ভাই রকি।
— এইতো ভাইয়া আর মাত্র একটা মাস বাকি। এর পরই তোমাদের কাছে চলে আসছি। অনেক দিন তোমাদের দেখিনা। এক মাস পর আসছি, ভাবতেই মনটা খুশিতে হকচকিয়ে উঠে। তোমার বিয়েতে তো থাকতে পারিনি,,, তোমাকে আবার জ্বালাতে চলে আসছি ভাইয়া।
— তোর সেই পূর্বের ছেলে মানুষি গুলো খুব মিস করছি রে।
— আচ্ছা ভাইয়া, বলছিলাম কি,,,,,,,
— কি বল,,,,,
— আসলে,,,
— বুজছি আদিত্যের কথা তাইতো?
— হুম অনেক দিন হলো কথা হয় না। ভালো আছে তো ও?
— হুম ভালো আছে।
— ওকে ভাইয়া, বিয়ে অনুষ্ঠান কোনো কিছুতেই ছিলাম না আমি। এসে কিন্তু বড় করে একটা পার্টি হবে। তার সাথে তোমাকে জ্বালানো তো ফ্রি।
— তুই আগে আয় না, তার পর দেখ তোর ভাই তোর জন্য কি করে। তোর ভাই কি এখনো ছোট আছে, যে তোর সব কিছুতে ভাগ বসাবে। তোর খুশির জন্য যা প্রয়োজন সব তোর পায়ের কাছে হাজির থাকবে। আগে শুধু এসেই দেখ না।
,
,
,
পড়ন্ত বিকেল, সূর্যটা হেলে পরেছে পশ্চিম দিকে, প্রায় লাল বর্ন ধারন করেছে সে ও।
ছাদে হাটাহাটি করছে শুভ্রতা। আর বৃষ্টি রুমে বসে পাবজি নিয়ে ব্যাস্ত।
সাগর এসে দাড়ায় শুভ্রতার পাসে।
প্রকৃতির দিকে চেয়ে বলে উঠে সাগর,
— এই পড়ন্ত বিকেলে, মুগ্ধতায় ছেয়ে থাকা পরিবেশে, পরিস্কার খোলা আকাশের নিচে, খালি পায়ে এভাবে একা ছাদে হেটে বেড়াচ্ছে কেনো, শুভ্রতায় ছেয়ে থাকা রুপালি পরীটা?
সাগরের এমন কথায় কিছুটা হাসি আসে শুভ্রতার৷ নিজের অজান্তে হেসেও ফেলে সে।
— এই প্রসারিত হাসিটা শুধু তোমারই মুখে মানায় শুভ্রতা। আমার ইচ্ছে পুরণে কি আরেক বার এই পসারিত হাসিটা দিবে কী?
সাগরের দিকে একটু আড় চোখে তাকায় শুভ্রতা। তার মাঝেই হাতে থাকা ফোন টা বেজে উঠে শুভ্রতার। ফোনের স্কিনে ভেসে উঠলো আদিত্যের নাম।
ফোন রিসিভ করে সেখান থেকে চলে যায় সে। প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকে সাগর।
,
,
পর দিন সকালেই সাগর কে বিদায় দেয় তারা। তার বাবার কথায় নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে শুভ্রতা। মাথাটা তুলে সাহস করে বলে উঠে,
— বাবা একটা কথা বলি?
— হ্যা বল,
— তোমরা কি সত্যিই সাগর ভাইয়াকে নিয়ে সিরিয়াস?
— তা নয়তো কি?
— আমি বিয়ে করতে পারবো না সাগর ভাইয়াকে।
— কেনো সমস্যা কোথায়?
— আমি ছোট বেলা থেকে তাকে শুধু ভাইয়ের নজরেই দেখি।
হা হা করে হেসে উঠে তার বাবা।
— আরে ধুর পাগলি, এটা কোনো কথা? বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যাবে দেখিস।
— বাবা কারণ ওটা না,,, আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।
— তো বলনা আমি শুনছি,,,,,,
— বাবা আমি আসলে,,,,,,,
To be continue,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ইচ্ছে আছে গল্পটা বড় করার। আপনাদের সাপোর্ট পেলে বড় করবো নয়তো সম্ভব হবে না। কারণ, সাপোর্টে আগ্রহ বাড়ায়।💖💖💖💖