ভালোবাস কি আমায় পর্ব ৫

#ভালোবাসো কি আমায়🍁
#Part:05
#Writer#Saima islam Mariam❤
.
🍁
.
– মায়া ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ওড্রায়প থেকে একটা ব্ল্যাক কালয়ারের টপস হোয়াইট কালারের জিন্স প্যান্ট পড়ে নেই, চোখে গাড়ো কাজল,ঠোঁটে রেড লিপস্টিক….চুল গুলো ব্যান্ড দিয়ে উঁচু করে বেঁধে নেয়। সম্পূর্ণ রেডি হিয়ে ব্রেকফাস্ট করার জন্য নিচে নেমে আসে।

-ডাইনিং টেবিলে মায়ার মাম্মি পাপ্পা ব্রেকফাস্ট নিয়ে বসে আছে। মায়া একটা চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলে,
– গুড মর্নিং মাম্মি পাপ্পা

-গুড মর্নিং মায়া মামনি (মাম্মি পাপ্পা দুইজনি)

তারপর ব্রেকফাস্ট করে আশা চৌধুরী আর সায়ন চৌধুরী মায়াকে নিয়ে ষ্টেশনের যাওয়ার উদ্দেশ্য বেড়িয়ে যায়।
.
ষ্টেশনে এসে পৌছতে ৩০মিনিট লাগে এই ৩০মিনিটে মায়া আর তার মাম্মি পাপ্পা কেউ কারো সাথে কথা বলেনি।
.
– মায়া তুমি তোমার নিলিমা আন্টির বাসায় পড়তে যাচ্ছো বেড়াতে না, এইটা মাথায় রাখবে, কোনো দুষ্টুমি করবে না ওনারা
যে ভাবে চলতে বলবে ঠিক সে ভাবে চলবে,,,আমাদের যে ভাবে মেনে চলো ওনাদেরও সে ভাবে মেনে চলবে। (মায়ার পাপ্পা)

– ওকে পাপ্পা(মায়া)

– আর হ্যাঁ,আমি যেনো নামে ওনাদের কাছ থেকে কোন কমপ্লেন না পাই(পাপ্পা)

-ওকে পাপ্পা(মায়া)

মায়া তার মাম্মির দিকে তাকিয়ে দেখে তার মাম্মি তার থেকে দূরে দাঁড়িয়ে নিরবে কান্না করতেছে

– মাম্মি কান্না করতেছো কেনো?তুমি জানো না তুমি কান্না করলে আমারও কান্না পাই!(জড়িয়ে ধরে)

– কান্না করছি কি সাধে! তুমি তোমার আন্টির বাসায় চলে যাচ্ছো,আমি তো সারা বাসায় একা হয়ে যাবো,সারাদিন আমার কি করে সময় কাটবে? কে আমার দুষ্টামি করবে?(কান্না করে)

– মাম্মি তুমি এমন করে কান্না করলে আমি কি যাবো বলতো!!! আমি চলে গেলে কি হবে, তোমার জন্য তো পাপ্পা আছে
তাই না!

– হুহ!(মাম্মি)

– এই বার একটু হাসো তো (মায়া)। (মায়ের মুখে হাত দিয়ে)

মায়া অনেক কথা বলেছো এখন ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে গেছে (পাপ্পা)

মায়া ট্রেনে উঠে নিজের কেবিনে গিয়ে বসে পড়ে। জানালার দিকে তাকাতে দেখে তার আম্মি পাপ্পা তার দিকে আছে

-সাবধানে যেও আর বাসায় পৌছে একটা কল দিও(পাপ্পা)

-ওকে (পাপ্পা)

ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। মায়া হাত তুলে তার মাম্মি পাপ্পাকে বিদায় জানাচ্ছে। একটু দূরের দিকে তাকাতে মায়া দেখে আনিতা দাঁড়িয়ে মায়াকে দেখে কান্না করছে। মায়া তৎক্ষণাৎ আনিতা কে ডাক দেয় কিন্তু ততক্ষণে আনিতার থেকে ট্রেন অনেকটায় দূরে চলে আসে। মায়া দুই গালে হাত ভাবছে। শাঁকচুন্নি টা ষ্টেশনে এলো কিন্তু আমার সামনে এলো না কেনো। আর কাঁদছিলো কেনো? ব্যাপার টা কেমন জানি সন্দেহ জনক! যাক এখন এইসব বাদ এইসব নিয়ে পরেও ভাবা যাবে।।

🍁

মায়া জানালা দিয়ে বাহিরের পরিবেশ টা মুগ্ধ হয়ে দেখছে আর ট্রেন নিজের আপন গতিতে চলছে। দীর্ঘ ৭ঘন্টা জার্নি করে খান ভিলা তে এসে পৌছায়। বাসার ডোরবেল বাজাতে নিলামা খান দরজা খুলে দেয়। মায়া নিলিমা খান কে দেখে জড়িয়ে ধরে।

– কেমন আছো নিলু আন্টি?(মায়া)

– এই তো ভালো, তুমি কেমন আছো মায়া পরী?(নিলিমা খান)

– আমিও ভালো,

মায়া বাসার ভিতর প্রবেশ করে দেখে রিফাত খান সোফায় বসে আছে ওনার পাশে রিফতি । দৌড়ে গিয়ে রিফতা খানের পাশে বসে
– আঙ্কেল কেমন আছো?(মায়া)
– আলহামদুলিল্লাহ্‌। তুমি কেমন আছো(মায়ার মাথায় হাত রেখে)
-জ্বী ভালো।

মায়ার রিফতির সাথও কিছুক্ষন কথা বলার পর নিলিমা আন্টি বলে

– রিফতি যাও তোমার মায়া আপুর রুমটা দেখিয়ে দাও।আর মায়া পরী তুমি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও অনেকটা পথ তো জার্নি করে এলে। ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করে নিবে

– ওকে আন্টি(মায়া)

-উমম, আন্টি না আজ থেকে খালামনি বলে ডাকবে ওকে (নিলিমা)

– মায়া হুহু করে হেসে দেয়,আচ্ছা ঠিক আছে আজ থেকে তোমাকে আর আন্টি বলে ডাকবো না খালামনি বলে ডাকবো।

তারপর রিফতে মায়াকে নিয়ে উপরে চলে যায় কিছু দূর যেতে মায়া একটা রুম দেখিয়ে বলে রিফতি এটা কার রুম
– এটা রেহান ভাইয়ার রুম। তোমার রুম পাশের টা(রিফতি)

-ওহ!! রেহান ভাইয়া কথায়? তাকে তো দেখলাম না(মায়া)

– ভাইয়া একটু বাহিরে গেছে লাঞ্চের সময় চলে আসবে।তুমি এখন রুমে যাও ফ্রেশ হয়ে নাও

মায়া রুমে গিয়ে স্যুইটকেস থেকে একটা ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। অনেক সময় শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে আসে। মাথা থেকে টাওয়াল টা খুলে…মোবাইল হাতে নিয়ে পাপ্পার নাম্বাররে কল দেয়

– হ্যালো পাপ্পা

– হুম, মায়া মামনি ঠিক মতো বাসায় গিয়েছো তো! কোনো অসুবিধা হয় নি তো?

– না পাপ্পা, আমি একদন ঠিক মতো বাসায় এসেছি এন্ড কোনো প্রবলেম ও হয়নি.

মায়া তার মাম্মি পাপ্পা সাথে কিছু সময় কথা বলে কল কেটে দেয়।
!
খুব খিদে পেয়েছে সকালে যে বাসায় ব্রেকফাস্ট করছি আর তো কিছু খাওয়া হয়নি (পেটে হাত দিয়ে)

নিচ থেকে খাবারের গন্ধ মায়া আসতেই মায়া দৌড়ে কিসেনে চলে যায়

– খালামনি কি রান্না করতেছো(মায়া)

-পোলাও, চিকেন, রুইমাছ আর সব শেষে তোমার পছন্দের পায়েস (নিলিমা)

-উফফফফফফ,,,খালামনি তোমার এখনো মনে আছে আমার পায়েস পছন্দ যে

– হুম মনে আছে। তুমি এখন ডাইনিং টেবিলে যাও আমি লাঞ্চ দিচ্ছি।

মায়া ডাইনিং টেবিলে গিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ে।কিছুক্ষন পর নিলিমা খান লাঞ্চ নিয়ে ডাইনিং টেবিলের উপর রাখে।

রিফতি তোমার পাপ্পাকে নিয়ে খেতে আসো খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে (নিলিমা)

ওকে মাম্মা আসছি(রিফতি)

সবাই মিলে লাঞ্চ করে নেই, যে যার যার রুমে চলে রেহান তখনও আসেনি, মায়া রুমে যাওয়ার সময় রেহানের রুমের কথা মনে পড়তেই, রেহানের রুমে ডুকে যায়।

রুম টা খুব সুন্দর করে সাজানো, বেডের পাশে সোফা আছে, আরেক কর্ণারে একটা স্টাডি টেবিল তার মধ্যে অনেক গুলো বই সুন্দর করে সাজানো, বই এর পাশে একটা কম্পিউটার, এসি ও আছে , বেডের উপর একটা ল্যাপটপ ও আছে মায়া বেডের উপর উঠে ল্যাপটপ টা অন করতেই,পিছন থেকে কেউ একজন বলে উঠে

– হাউ ডিয়ার ইউ! এই মেয়ে এই কে তুমি? তোমার সাহস কি করে হয় আমার রুমে ডুকে, আমার বেডের উপর উঠে আমারি ল্যাপটপ নিয়ে ঘাটা ঘাটি করছো।(চেঁচিয়ে)

– মায়া পিছন ফিরে তাকে শকড, একটা খুব সুন্দর ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।লম্বা ৬ফুট এর মতো হবে গায়ের রং ফর্সা চুল গুলো স্পাইক করা কাপলে কিছুটা ঘাম,সাদা কলারের শার্ট পড়া শার্টের হাতা কনু অব্দি ফোল্ড করা। সব মিলিয়ে একটা সুদর্শন পুরুষ। মায়া করে হা করে তাকিয়ে আছে

– আরে মায়া তুই এইখানে।কখন এলি?

– রেহান ভাইয়ায়য়!!!!

-হুম। কখন এলি আমাদের বাসায়?

– আরো ঘন্টা খানিক আগে।বাই দ্যা ওয়ে রেহান ভাইয়া তোমাকে তো চেনাই যাচ্ছে না!! আগের থেকে অনেক সুন্দর হয়ে গেছো!!

– রেহান হু হু করে হেসে দেয়। তুইও!!

ওরা কিছুক্ষন কথা বলার পর রেহান বলে

– মায়া আমার রুমে আমার পারমিশন ছাড়া একদম আসবি,এই খানে অনেক ইম্পরট্যান্ট জিনিস পত্র আছে।

– উমম, কি এমন ইম্পরট্যান্ট জিনিস আছে যার জন্য আমি তোমার রুমে আসতে পারবো না।(ভ্রু কুঁচকে)

– সেটা তোকে এখন না জানলেও চলবে।এখন নিজের রুমে যা

মায়া মুখ ভেংচি দিয়ে চলে যায়

🍁

পরের দিন মায়া রেহানের কলেজে ভর্তি হয়ে যায়। মায়া রেহানের ফ্রেন্ড, রাফি, ফাহাদ,মাহিম,লিজা, মিথিলার সাথে পরিচিত হয়ে নেয়।

মায়ার সাথে তাদের ক্লাসের কয় এক জনের সাথে পরিচয়,নেশা,নুসরাত,শিলা।

#২মাস পর🍁

মায়া ঢাকাই এসেছে ২মাস কেটে গেছে।মায়ার দিন খুব ভালোয় কাটছে,,,,,,,,,, সারাদিন কলেজ বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডা।বাসায় এসে রিফতি, নিলিমা খালামনি, আঙ্কের সাথে আড্ডা। এই দুই মাসে রেহানের সাথে বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে মায়ার। নেশা কে পেয়ে মায়া তো রিতিমতো আনিতাকে ভুলেই গেছে।

-একদিন রাতে মায়ার ফোনে কল আসে। মায়া হাতে নিয়ে ফোন স্ক্রিনে নাম্বার টা কে খুব অবাক হয়। আজকে অনেক দিন পর আনিতা কল করেছে।কয় একবার রিং হওয়ার পর কল রিসিভ করে।

– হ্যালো আনু শাঁকচুন্নি কেমন আছিস??

-……………………..

– কিরে শাঁকচুন্নি কথা বলিছস না কেনো?

আনিতা আর চুপ করে থাকতে পারেনি,কেঁদে দেয়….

চলবে…
(লেখায় ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏)

( আর দুই এক পার্টের মধ্যে ফ্লাশব্যাক শেষ করে দিবো। অনেকে বলে মূল কাহিনি কখন দিবো আরে আগে তো অতীত জানেন তারপর তো মূল কাহিনি বুঝবেন)

পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here