#মিশে_আছো_আমার_অস্তিত্বে❤️
#মেঘ পরী🍀🍀
#Part-১৮💞
তৃষা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে,,তার নজর দূরের আকাশের দিকে হলেও মনের নজর তার আকাশের কাছে আছে।কিছুক্ষণ আগের কথা মনে পড়তেই তৃষা নিজেরই খুব খারাপ লাগছে।কি দরকার ছিল আকাশকে এমন কড়া কথা বলার?উফ্ ওইসব কথা ভাবতেই তৃষার নিজের উপরই প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।আকাশ তো তার কাছে বারবার ক্ষমা চেয়েছিল,,সে কি পারতো না আকাশকে ক্ষমা করতে।এটা কি করলো সে??রাগের মাথায় আকাশকে কষ্ট দিয়ে দিল না তো।
কিছুক্ষণ আগে,,,
তৃষা ওয়াশরুম থেকে এসে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছছিল।ঠিক তখনই আকাশ তৃষাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো-;
-:হেই মিসেস আকাশ খান আপনি পারেন না আপনার এই একমাত্র স্বামিটিকে ক্ষমা করতে।
আকাশের কথায় তৃষা তার কঠিন চাহনি আয়নার মধ্যে ফেলে,,যার মাধ্যমে সে আকাশকে দেখতে পাচ্ছে।আকাশের চোখের উপর চোখ রেখে বলে উঠলো-;
-:আকাশ আপনাকে আমি একটা কথা আজ ক্লিয়ার ভাবে বলে রাখছি আপনি আমার কাছে আসার চেষ্টা কোনোদিনই করবেন না।
আকাশ তৃষা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,,মুখে হাসির একটা চওড়া রেখা টেনে বলে উঠলো-;
-:কেনো করবো না।একশো বার করবো,, হাজার বার করবো।যতই হোক বউ তুমি আমার।আমার অধিকার আছে তোমার উপর।
আকাশের এই শেষের কথাটা তৃষা কোনোভাবেই সহ্য হলো না।তাই তো আকাশকে নিজের কাছ থেকে ঝটকা মেরে সরিয়ে জোর গলায় বলে উঠলো-;
-:কিসের অধিকার?কার উপর আপনার অধিকার আছে মিস্টার আকাশ খান??সম্পর্কে আমি আপনার কেউ লাগি না।আর এমনিতেই আপনি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিতেন,,আপনি শুধু অপেক্ষা করছিলেন মায়ের মরে যাওয়ার,,আর…
-:তৃষষষষষষষা(চিৎকার করে)
তৃষা কে মাঝ পথে থামিয়ে আকাশ বলে উঠলো,,তারপর তৃষার দিকে তাকিয়ে করুন গলায় বলে উঠলো-;
-:প্লিজ এইভাবে বলো না। হ্যাঁ এটা ঠিক আমি তোমাকে ডিভোর্স দিতাম কিন্তু তাই বলে এটা ও তো নয় যে আমি আমার মায়ের মরে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।তৃষা আমি আমার মা কে খুব ভালোবাসি এখনও।
তৃষা একটা তাচ্ছিল্য হাঁসি দিয়ে বলে উঠলো-;
-:তাই না কি??তাহলে এটাও নিশ্চয় জানতেন যে মা রিনাপু কে সহ্য করতে পারতেন না। শুধু মা নয় ইনফ্যাক্ট বাবা ও সবসময় আপনাকে রিকোয়েস্ট করতেন রিনা আপুর সাথে কোনো সম্পর্কে না জরানোর জন্য। কিন্তু আপনি কি শুনেছিলেন তাদের কথা??
-:তৃ..তৃষা আ..আসলে আমি তখন রিনাকে খুব বেশি ভালোবাসতাম,,তাই বাবা-মায়ের কথার তেমন গুরুত্ব দিই নি।
-:ওওও তা এখন আপনি রিনাপু কে ভালোবাসেন না??
-:না আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি।তৃষা আই লাভ ইউ সো মাচ।
-:তাই না কি??আপনি এতো তাড়াতাড়ি আমাকে ভালোবেসে ফেললেন?রিনা আপুকে এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন কি করে??
-:তৃষা আমি উপলব্ধি করতে পারছি,,আমি রিনাকে কোনোদিনই ভালোবাসি নি,,রিনা শুধু আমার জীবনের একটা মোহো ছিল আর কিছু নয়। কিন্তু আমি এতটুকু বলতে পারবো এ কয়দিনে তোমাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি।আই লাভ ইউ তৃষা আই লাভ ইউ।
-: কিছুদিন পর আপনার অন্য কোনো মেয়েকে ভালো লাগবে না আর আমার কাছে এসে এটা বলবেন না যে আমিও আপনার জীবনের একটা মোহের অংশ ছিলাম,,তার কি গ্যারান্টি দিতে পারবেন আপনি?
-:তৃষা এমনটা বলো না প্লিজ। তুমি আমার জীবনের মোহ নয়।
-:আসলে কি জানেন আপনার মতোন একজন মানুষ কাউকে ভালোবাসতেই পারে না।আপনি শুধু নিজের স্বার্থ বোঝেন। শুধুমাত্র আপনার জন্য আপনার বাবা মারা গিয়েছেন আর শুধুমাত্র আপনার জন্যেই আজ মাও আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে।এর পড়েও কি করে বলেন আপনি কাউ কে ভালোবাসেন??
আকাশ তৃষার একদম কাছে এসে তৃষাকে শক্ত করে নিজের সাথে মিশিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো-;
-:ওয়াট রাবিশ তৃষা!!তখন থেকে উল্টোপাল্টা কথা বলেই যাচ্ছো।আমি তখন আমার বাবা-মায়ের কথা শুনিনি তাই বলে এটা তো নয় যে তাদের মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী।বাবার ব্রেন স্টোক হয়েছিল আর মা তো ক্যান্সারের জন্য মারা গিয়েছে।তাহলে এতে আমার দোষ কি?
-:দোষ আছে আকাশ,,দোষ আছে। সবথেকে বেশি দোষ আপনার।আপনি এটাই জানতেন যে আপনার বাবার ব্রেন স্টোক হয়েছিল ঠিকই কিন্তু এটা কি জানতেন কেনো বাবার ব্রেন স্টোক হয়েছিল?? আপনার জন্য।বাবা জানতে পেরে গিয়েছিলেন রিনা আপু আর চাচার কথা তাই তিনি চাননি আপনি রিনা আপুর মতোন একজন মেয়ের সাথে নিজের বাকি জীবনটা কাটান।তাই আপনাকে অনেকবার দেশে ফিরিয়ে আনার ট্রাই করেছিলেন কিন্তু আপনি আসেন নি।এই চিন্তা বাবা কে কুরে কুরে খেত প্রতিনিয়ত,,আর একদিন এই চাপ সহ্য করতে না পেরেই ব্রেন স্টোকে তিনি মারা যান।আর মা তো আপনার চিন্তায় খাওয়া দাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল,,তাই তো এই ভয়ঙ্কর রোগ কখন যে তার শরীরে বাসা বেঁধেছিল তা জানতেই পারে নি।এসব মা নিজে আমাকে বলেছে।এবার বলুন আকাশ কে বেশি স্বার্থপর??
বাবা-মা কখনও সন্তানের খারাপ চাই না।বাবা যখন ওতবার বলেছিলেন তখন আপনার উচিৎ ছিল অন্তত একবার বিষয়টাকে খুঁটিয়ে দেখার।জীবনে কাউকে বিশ্বাস এতটা ও করবেন না যাতে সে আপনাকে ক্ষতি করার একটা সুযোগ পেয়ে যায়।
তৃষার কথা শুনে আকাশ স্তদ্ধ হয়ে গেল।তার আজ কোনো কথা বলার ভাষা নেই।নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট সন্তান মনে হচ্ছিল তার। আকাশ একবার ছলছল চোখে তৃষার দিকে তাকিয়ে,, কাঁদো গলায় বলে উঠলো ন-;
-:তৃষা সত্যি বাবা-মা আমার জন্যে মারা গিয়েছে।না না এ হতে পারে না।
এই বলে আকাশ রুম থেকে বের হয়ে গিয়েছিল আর আসেনি এখানে। কথাগুলো মনে পড়তেই তৃষার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো।আকাশের নম্বরে অনেকবার কল করেছে সে কিন্তু প্রতিবারই ফোন সুইচ অফ বলছে।তৃষার এবার টেনশন হচ্ছে।
.
.
.
সারারাত আকাশের টেনশানে তৃষা একটুও চোখের পাতা এক করতে পারেনি।সকাল বেলা তৃষা জামা-কাপড় নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেল।ফ্রেশ হয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখলো আকাশ চলে এসেছে।আকাশের চোখগুলো লাল বর্ণ ধারণ করেছে,,মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে,,দেখেই বোঝা যাচ্ছে সারারাত অনেক কান্নাকাটি করেছে সে।তৃষা কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে,, আকাশ জামা কাপড় নিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকে গেল।তৃষা তাড়াতাড়ি করে নিচে নেমে গেল আকাশের জন্য ব্রেকফাস্ট বানাতে,,আকাশ কালরাতে কিছুই খাইনি।
তৃষা চটপট করে রুটি আর ভাজি বানিয়ে ফেলল,,আকাশের জন্য কফি নিয়ে উপরে উঠতে যাবে এমন সময় দেখলো আকাশ অফিস ড্রেস পড়ে নীচে নামছে।আকাশকে ফরমাল গেটআপে দেখে তৃষা জিজ্ঞাসা করল-;
-:আপনি অফিসে যাবেন??
-:হুম।
-:ওও,,আচ্ছা ব্রেকফাস্ট বানিয়েছি খেয়ে নেবেন চলুন।
-: আমার খিদে নেই,,আমি খেয়ে এসেছি।
-: মিথ্যা বলবেন না।আমি জানি আপনি কিছু খাননি,,প্লিজ খাবেন চলুন।
-:আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
এই বলে আকাশ তৃষা কে আর কিছু বলতে না দিয়ে বেরিয়ে গেল।তৃষার এবার কান্না পাচ্ছে কেনো যে সে আকাশকে বলতে গেল কথাগুলো।যদি আকাশের কিছু হয়ে যায় তাহলে সে কখনোই নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না।
.#মিশে_আছো_আমার_অস্তিত্বে❤️
#মেঘ পরী🍀🍀
#Part-১৯💞
ছাদের এক পাশে দাঁড়িয়ে আকাশে সজ্জিত তারাগুলোর দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে আকাশ।নিজেকে এই মুহূর্তে শেষ করে দিতে ইচ্ছা হচ্ছে তার কিন্তু সে নিরুপায়… আত্মহত্যা করা যে মহাপাপ যদি এটা পাপকার্য না হতো,,,তাহলে সে নিজেকে এতক্ষণে শেষ করে দিত।এই জীবন রেখে কি লাভ তার??যে জীবনে সে তার বাবা মার হত্যাকারী হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে,,সেই জীবন না রাখাই ভালো।
বেশ অনেক্ষণ ধরে আকাশ আসছেনা দেখে তৃষা গুটি গুটি পায়ে ছাদে এসে দেখলো আকাশ উপরের দিকে তাকিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন।আস্তে করে আকাশের পাশে এসে দাঁড়িয়ে আলতো করে আকাশের কাঁধে নিজের হাত রাখল।এতক্ষণ গভীর চিন্তায় মগ্ন ছিল আকাশ হঠাৎ কাঁধে কারোর কোমল স্পর্শ পেয়ে ঘুরে তাকালো।তৃষাকে এক পলক দেখে আবার পুনরায় নিজের নজর ঘুরিয়ে ফেলল।
তৃষা আকাশের দিকে তাকিয়ে করুন কণ্ঠে বলে উঠল-;
-:সরি আকাশ আমি আপনাকে হার্ড করতে চাইনি।আসলে তখন আমার মাথা গরম ছিল তাই আপনাকে ওইসব উল্টোপাল্টা কথা বলে ফেলেছি।
আকাশ একটা মলিন হাসি দিয়ে বলে উঠলো-;
-:জানোতো তৃষা রাগের বশে মানুষ নিজের মনের কথাই বলে আর সেটা বেশিরভাগ সময় সত্যি কথা হয়।আর তুমি ক্ষমা কেন চাইছো??তোমার জন্যই তো আমি জানতে পারলাম যে আমি নিজের অজান্তেই দু দুটো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছি।
তিশা এবার কাঁদো গলায় বলে উঠলো-;
-:প্লিজ আকাশ এমন করে বলবেন না।আই এম সো সরি।
আকাশ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে উঠলো-;
-:তৃষা তুমি আমার কাছে প্লিজ ক্ষমা চেওনা। তোমার জন্যই আমি আমার জীবনের সত্যগুলো উপলব্ধি করতে পেরেছি।আর সত্যিই তো কিছুদিন পর অন্য কোন মেয়েকে মনে ধরলে তোমাকে আমি আমার জীবনের মোহ হিসাবে চিহ্নিত করব না তার কি কোন গ্যারান্টি আমি দিতে পারবো তোমাকে??
আর এমনিতেও এমন নিকৃষ্ট মানুষের সাথে তোমার না থাকাই ভালো।সামনে তোমার ব্রাইট ফিউচার পড়ে রয়েছে।নিজেকে স্টাবলিশ করার জন্য,,তুমি আবার স্টাডি শুরু করো।নিজের জীবনকে বেঁধে রেখো না চার দেয়ালের মধ্যে।আর সত্যি কথা বলতে আমি একটা ডিসিশন নিয়েছি আশা করি তোমারও একই মত হবে।
আসলে তৃষা আমি সত্যি বুঝতে পারছি না আমি তোমাকে ভালোবাসি কি না।দেখো এতদিন আমি রিনাকে ভালবাসতাম পরে উপলব্ধি করতে পারলাম রিনা আমার জীবনে একটা মোহ মাত্র।তাই আমি চাইনা আবার ভালোবাসা ভেবে কোন মোহে জড়াতে।এমনিতেও আমার মত মানুষদের জীবনে ভালোবাসা বলতে কিছুই নেই যা আছে তা কেবল স্বার্থ!! অনেক রাত হয়েছে যাও গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।কাল তোমাকে তোমাদের বাসায় ছেড়ে আসবো।
এই বলে আকাশ হন হন করে নিচে নেমে গেল। এতক্ষন সে সামনের দিকে তাকিয়েই তৃষাকে কথাগুলো বলছিল,,তৃষার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার সাহস তার নেই।কিন্তু যদি সে একবার তৃষার দিকে তাকাতো তাহলে বুঝতে পারত তার নেওয়া ডিসিশনে তৃষা কতটা ভেঙে পড়েছিল।
আকাশের কথাগুলো শুনে তৃষা কিছুতেই নিজেকে সামলাতে পারছেনা।অবাধ্য অশ্রুগুলো বারবার চোখের থেকে বেরিয়ে আসছে তৃষা কিছুতেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না আস্তে আস্তে করে রেলিং ধরে নিচে নেমে এলো সে।রুমে ঢুকে দেখল আকাশ নেই।তৃষা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিচে বসে পড়লো।ভবিষ্যতে কি হতে চলেছে তৃষার পরিণতি??
বেশ অনেক রাত করে তৃষা ঘুমিয়েছে,, কাল রাতে আকাশ আসেনি এ ঘরে।পরের দিন সকালে আকাশ হন্তদন্ত হয়ে রুমে এসেই,,তৃষার সামনে দাঁড়িয়ে বলে উঠলো-;
-:তাড়াতাড়ি রেডি হও তোমাকে ছেড়ে অফিসে যেতে হবে।
তৃষা করুন চোখে আকাশের দিকে একবার তাকালে,,উস্কোখুস্কো চুল পাংশু চেহারায় আকাশকে একেবারে বিধ্বস্ত লাগছে।তৃষার চাহনি উপেক্ষা করে আকাশ বলে উঠলো-;
-:কুইক তৃষা কুইক।আই এম সো লেট।
তৃষা আর কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে নিল। আকাশ অফিস ড্রেস পড়ে তৃষাকের জিজ্ঞাসা করল-;
-:ব্রেকফাস্ট করবে না??
তৃষা অভিমানী কন্ঠে বলে উঠল-;
-:না তার কোন দরকার নেই।এমনিতেই আপনি আমার অনেক উপকার করেছেন।
আকাশ তৃষ্ণার দিকে একবার তাকিয়ে বলে উঠলো-;
-:আমি নিচে ওয়েট করছি তাড়াতাড়ি এসো।
আকাশ চলে যাওয়ার পর তৃষা একবার রুম টাকে ভালো করে দেখে নিল।হয়তো তার আর কোনদিনও এই রুমটাকে দেখা হবে না।
আকাশ নিচে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তৃষার জন্য অপেক্ষা করছিল।তৃষাকে নিচে নামতে দেখে গাড়িতে উঠে পরল সে।তৃষা ও এসে আকাশের পাশে এসে বসলো।আকাশ আর কিছু না বলে গাড়ি স্টার্ট দিল।কিছুক্ষণ পর তৃষাদের বাসার সামনে এসে গাড়ি থামলো,,তারপর তৃষা কে বলল-;
-: যাও তোমার বাসা এসে গেছে।
তৃষা আকাশকে কোন কথা না বলে গাড়ি থেকে নেমে নিজের বাসার ভিতর চলে গেল।আকাশ ছলছল চোখে তৃষার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নিজের গাড়ি স্টার্ট দিল।
তৃষাকে এই মুহূর্তে নিজের বাসায় দেখে নাজমুল সাহেব প্রচন্ড পরিমানে অবাক হলেন।জামাইয়ের সাথে কিছুদিন আগেই কথা হয়েছিল তার,,তখন সে তাকে জানিয়েছিল খুশির খবর নিয়েই তারা এ বাসায় আসবে।তাহলে কি সে নানা হতে চলেছে??
নাজমুল শেখ বেশ হাসি খুশি মুখ করে তৃষা কে কিছু বলবে,,তার আগেই তৃষা তার বাবাকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করলো।মেয়েকে এমন কাঁদতে দেখে নাজমুল শেখ প্রচন্ড পরিমাণে অবাক হয়ে,,জিজ্ঞাসা করলেন-;
-:কিরে কি হলো?আরে বলবি তো কি হল?এমন ভাবে কাঁদছিস কেন??দূর এত দেখছি মহা মুশকিল জামাই বাবাজি আমার খুশির সংবাদ দিতে গিয়ে দেখছি দুঃখের সংবাদ দিয়ে ফেলেছে।
নাজমুল সাহেবের শত প্রশ্ন এড়িয়ে তৃষা উপরে চলে গেল নিজের রুমে।রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ কাঁদতে লাগলো অনেকক্ষণ ধরে তার চেপে রাখা কষ্টগুলো অশ্রুবর্ষণের আকারে বাইরে নির্গত হচ্ছে।নাজমুল সাহেব এবং তার স্ত্রী শত চেষ্টা করেও সেই দিন তৃষা রুমের দরজা খুলতে পারেননি।এদিকে আকাশকেও ফোনে পাচ্ছে না তারা।
প্রায় এক মাস হয়ে গেল তৃষা নিজের বাবার বাসায় আছে।একবারও আকাশ তার খোঁজ নেয়নি।তৃষার মনেও এক চাপা অভিমান জেকে বসেছে।সেও ঠিক করে নিয়েছি আর কোনদিনও সে আকাশের সাথে যোগাযোগ রাখব না।না হয় সে রাগের মাথায় আকাশকে দু চার কথা শুনিয়ে দিয়েছি,,তাই বলে সরাসরি তাকে তার বাবার বাসায় দিয়ে আসবে??আবার এত দিন হয়ে গেল একবারও ফোন করেনি।কি ভেবেছে নিজেকে?করবো না তো ফোন আমিও করবো না।
এই কয়দিন তৃষা কারো সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলেনি।সব সময় চুপচাপ ঘরে বসে থাকতো আর রাতে বেশিরভাগটাই ব্যালকনিতে বসে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতো অনেকক্ষণ।তৃষার চেহারায় বেশ পরিবর্তন এসেছে এ কয়দিনে।আগের থেকে অনেক রোগা হয়ে গিয়েছে,,চোখের নিচে কালি।এই বাসার কেউ তার মুখে এক টুকরো হাসি দেখি নি এই এক মাসে।তৃষাকে তার বাবা অনেকবার জিজ্ঞাসা করছে যে আকাশের সাথে তার কি হয়েছে??কিন্তু প্রতিবারই তৃষা নিশ্চুপ থেকেছে।
প্রতিদিনের মতোন আজও তৃষা ব্যালকনিতে বসে ছিল হঠাৎ করে সে অনুভব করলো তাকে কেউ পিছন থেকে আস্টেপিস্ট জড়িয়ে ধরে আছে।পিছনে উপস্থিত ব্যাক্তিটিকে দেখার জন্য নিজের মাথাটা ঘুরানোর চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই ঘরাতে পারছে না সে।
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]
.
.
“”পোস্ট রিচেক করা হয়নি তাই ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন। আমার তরফ থেকে সবাইকে জানাই “”ঈদ মোবারক।””❤️❤️😊😊
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]
“”ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।কাল লাস্ট পর্ব দেবো,,এটা সিওর।।””