মিশে_আছো_আমার_অস্তিত্বে❤️ পর্ব ১৪+১৫

#মিশে_আছো_আমার_অস্তিত্বে❤️
#মেঘ পরী🍀🍀
#Part-১৪💞
.
.

তৃষা নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না রিনা যে এতটা নিচু মানসিকতার হবে তা তৃষার ধারনার‌ও বাইরে ছিল।রিনা একটা অচেনা ছেলের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে,,গায়ে তাদের এক বিন্দুও কাপড় নেই।ছেলেটি রিনার আঙুল গুলো পেঁচাতে পেঁচাতে বলছে-;

-:ডার্লিং আর কিছুদিন থাকো না আমার কাছে।

-:না তা হয় না বেবি,,আকাশের ঝামেলাটা আগে মিটুক তারপর তোমার কাছে আসবো বেবি।

-:আকাশ কে সামনে পেলে আমি খুন করবো।

-:করবা,,বারন করেছে কে,,হুম।

-:ঠিক আছে এখন আসো তো আমার কাছে,,তোমাকে আরও একটু আদর করি।

জানালাটা বেডের এক সাইডে হ‌ওয়ায় তৃষা রিনা এবং ছেলেটিকে খুব ভালোভাবেই দেখতে পারছে কিন্তু তারা তাদের পাপ কর্মে এতটাই বিভর যে আশেপাশে কি হচ্ছে তা দেখার হালেই নেই।তৃষা নিজের ফোনটা আস্তে করে বের করলো,,তারপর তাদের দুজনের কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও করতে লাগলো।ভিডিও করার সময় তার হাত একটু কেঁপে ছিল,,নিজের আপুর এমন মুহূর্ত ভিডিও করতে একটু খারাপ লাগলেও নিজেকে প্রমাণ করার জন্য এই ভিডিও করতে তার একটুও খারাপ লাগছে না।

ভিডিও টা প্রায় শেষ করে তৃষা সেখান থেকে চলে আসার জন্য পিছন ফিরবে ঠিক তখনই রিনার বলা কিছু কথা তৃষার কানে এল।

-:বেবি তুমি যে ছেলেটাকে ফিট করে ছিলে না তৃষার সাথে অসভ্যতামি করার জন্য তার সাথে আমাকে কাল একবার দেখা করতে যেতে হবে।

-:ওকে সে নয় যাবে?কিন্তু তুমি তো বললে আমার সাথে দু’দিন থাকবে?

-:আব্বু এক্ষুনি মেসেজ করেছে কাল বাসায় যেতে বলল,,কাজটা আগে শেষ করতে বলল।প্লিজ সোনা রাগ করো না।

-:ওকে।

-:আমি জানতাম তুমি আমাকে বুঝবে,,আই লাভ ইউ রাসেল।

-:আই লাভ ইউ টু রিনা।আচ্ছা ওই ছেলেটার সাথে কোথায় দেখা করতে যাবে?

-:আব্বু বলল আশেপাশে কোথাও গেলে রিস্ক হয়ে যাবে,,তৃষা কিংবা আকাশের চোখে পড়ে যেতে পারি তাই আমাকে শহরের বাইরে কোনো একটা প্লেসে মিট করতে বলেছে।

-:কোন প্লেসে?

-:রয়েল তাজ রেস্টুরেন্টে।

-:ওও আমিও যেতাম তোমার সাথে বাট আমার একটা দরকারি কাজ আছে তাই তোমার সাথে যেতে পারবো না জান।কাল কখন যাবে?

-: ইটস ওকে রাসেল আমি একা যেতে পারবো।সকাল দশটায় মিট করতে বলেছি।

-: তুমি আমার গাড়িটা নিয়ে যেও,,তোমারটা আসতে আসতে অনেক লেট হয়ে যাবে।

-: হুম।

তৃষা আর এক মুহূর্তও দাঁড়িয়ে করলো না সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে এলো সেখান থেকে।এমনিতেও এখান থেকে অনেক বেশি প্রমাণ জোগাড় করে ফেলেছে সে আর বাকি প্রমাণের খোঁজ ও রিনা নিজের অজান্তেই তাকে দিয়ে ফেলেছে।এখন তাকে বাসায় ফিরতে হবে তারপর কাল রয়েল তাজ রেস্টুরেন্টে যেতে হবে তাকে।
.
.
পরের দিন তৃষা রেডি হলো রয়েল তাজ রেস্টুরেন্টে যাওয়ার জন্য।বাট সে আজ নরমাল লুকে বের হয়নি,,একটা কালো কালারের বোরকা পরে বের হয়েছে।এতে রিনা তাকে চিনতে পারবেই না আর তার কাছে প্রমাণ কালেক্ট করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।তৃষা সকল আটটার মধ্যে বেড়িয়ে পড়লো নিজের বাসা থেকে।প্রায় একঘন্টা কুড়ি পর সে পৌঁছে গেল রয়েল তাজ রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্ট থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে সে অপেক্ষা করতে লাগলো রিনার জন্য।প্রায় পনেরো মিনিট পর একটা ছেলে রেস্টুরেন্টের সামনে এসে দাঁড়ালো,,তৃষা ছেলেটির দিকে বেশ ভালোভাবে তাকিয়ে দেখলো এটা সেই হোটেলের ছেলেটা।ছেলেটা আসেপাশে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ভিতরে ঢুকে গেল।

তৃষা ভাবলো রিনা হয়তো আগে থেকেই ভিতরে আছে,,তাই সে আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ভিতরে ঢুকে গেল।ভিতরে গিয়ে চারিদিকে তাকিয়ে দেখলো সামনের দিকে দুটো সিটের পরে একটা টু-টেবিল সিটে ছেলেটা বসে আছে,, কিন্তু রিনাকে সে কোথাও দেখতে পেল না।তৃষা ছেলেটার টেবিলের একদম পাশের একটা টেবিলে এসে বসলো,,এতক্ষন তৃষা যদি বোরকা ছাড়া অন্য কোনো পোশাকে আসতো তাহলে ছেলেটা তৃষাকে অনায়াসে চিনে ফেলতো।রিনা এখনো আসেনি তাই তৃষার একটু সুবিধা হলো,,তৃষা নিজের মোবাইলটা পার্সের সাথে হেলান লাগিয়ে এমনভাবে রাখলো যাতে পাশের টেবিলের সব কিছুই তার মোবাইলে রেকর্ড হবে কিন্তু কেউ সন্দেহ করবে না যে তৃষা কোনো কিছু ভিডিও করছে।

একটু পর রিনা এলো,,এসে সেই লোকটির পাশে বসেই বলে উঠলো-;

-:ফারুক তুমি এই শহর থেকে যত দ্রুত সম্ভব বেরিয়ে পড়ো।

-:কিন্তু কেনো ম্যাডাম?

-:কোনো প্রশ্ন নয়।আমি তোমাকে আশি লক্ষ টাকা দেবো,,শর্ত একটাই যত তাড়াতাড়ি পারো এই শহর থেকে তোমায় চলে যেতে হবে।রাজি

ফারুক কিছুক্ষণ ভেবে বলল-;

-:ওকে ম্যাম কিন্তু আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

-:কোন প্রশ্নের।

-:আপনি আমাকে হোটেলে আপনার নিজের বোনের সাথে বাজে ব্যবহার করার জন্য এতো গুলো টাকা‌ দিলেন কেন??এতে তো আপনার বোনের‌ই বদনাম হবে।

-:হোক সেটাই তো আমি চাই,,আর ও আমার সৎ বোন। তোমাকে এত প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে বাধ্য ন‌ই।এই নাও এখানে আশি লক্ষ টাকা আছে,,আর এখান থেকে চলে যাওয়ার পর আমার সাথে আর কোনোদিন যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করবে না,,মনে থাকবে।

-:জ্বি।

-:এখন আমি উঠি।

-:কিছু খাবেন না।

-:না।

এই বলে রিনা সেখান থেকে চলে গেল, কিছুক্ষণ পর তৃষাও বেরিয়ে এলো সেখান থেকে।
.
.

সন্ধ্যা সময় তৃষা বসে বসে সমস্ত প্রমান একসাথে জড়ো করলো। দুটো ভিডিও এবং কিছু ছবি একটা অরেঞ্জ কালারের এনভেলাপে ঢুকালো।ঠিক সেরকমই আরোও একটা কপি অন্য একটা এনভেলাপে ঢুকিয়ে আলমারিতে রেখে দিল।তারপর ফোন হাতে নিয়ে কাকে যেন ফোন করলো।

.
.
.

রিনা এবং নাঈম সাহেব সকাল বেলায় উঠে ব্রেকফাস্ট করছিল এমন সময় তাদের বাড়িতে পুলিশের লোক এলো,, এসে নাইম সাহেব কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল-;

-: স্যার আপনার আর আপনার মেয়ের নামে এরেস্ট ওয়ারেন্ট আছে আমাদের কাছে।

নাঈম সাহেব বেশ রেগে বলে উঠলেন-;

-:কার এত বড় সাহস আমার নামে এমন কেস করার।

হঠাৎ পুলিশের পিছন থেকে একজন বলে উঠলো-;

-:এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই চাচা আপনার পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়ে গিয়েছে এবার আপনার শাস্তি পাওয়ার পালা।

পুলিশের পিছন থেকে বেরিয়ে এলো তৃষা,,ওকে দেখে রিনা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে উঠলো-;

-:তোর সাহস কি করে হলো আমার আব্বুর বিরুদ্ধে মিথ্যা এলিগেশন আনার,,তুই জানিস আমার আব্বু তোর আর তোর বাবার কি হাল করতে পারে?

-:সাহসের এখনো কিছুই দেখাই নি আপু।আগে আগে দেখো কোথা হে কেয়া।😎😎
.
.#মিশে_আছো_আমার_অস্তিত্বে❤️
#মেঘ পরী🍀🍀
#Part-১৫💞

রিনা প্রচন্ড রেগে চিৎকার করে বলে উঠলো-;

-:কি বলতে চাইছিস তুই??

তৃষার পাশ থেকে পুলিশ অফিসার বলে উঠলো-;

-;মানেটা আমি আপনাদের বুঝিয়ে দিচ্ছি।এই দেখুন এখানে মিস্টার নাজমুল শেখের কিছু পপার্টির পেপারস এগুলো কোর্ট থেকে পাশ করে আনা হয়েছে,,এখানে স্পষ্ট লেখা আছে নাজমুল শেখ কাউকে নিজের পপার্টি দেওয়ার কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করেন নি কিন্তু একটা ভুয়ো দলিল দেখিয়ে দাবি করেছিলেন নাজমুল শেখ এমন চুক্তি করেছিল যাতে লেখা আছে তিনি যদি কোনোদিন কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে একমাত্র আপনি নিজেই পারেন তার পপার্টি কিনতে।আর তাছাড়াও আপনি এই বাসা কেনার সময় কোনো টাকা দেন নি,,বলা যাই জোর জবরদস্তি এই বাসায় আছেন আপনারা।

নাঈম সাহেব রেগে বলে উঠলেন-;

-: অফিসার কি প্রমাণ আছে আপনাদের কাছে??

-:প্রমাণ অনেক কিছু আছে ভাই।

নাজমুল শেখের কথায় নাঈম সাহেব বেশ চমকে উঠলেন। নাজমুল শেখ ভিতরে ঢুকে বলে উঠলেন-;

-:তুই ভেবেছিলি আমি খুব দুর্বল তাই তোর সব অন্যায় মেনে নিয়েছি।কিন্তু তুই ভুল,,আমি আগে থেকেই জানতাম তোর এই নোংরা কুকির্তির কথা কিন্তু তুই শুধু মাত্র আমার ভাই বলে এতো দিন ছেড়ে দিয়েছি কিন্তু আর নয়।তুই আর তোর মেয়ে মিলে আমার মেয়ের অনেক ক্ষতি করেছিস।তোর বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমাণ আমি পুলিশের হাতে দিয়ে দিয়েছি।

-:মিস রিনা আপনার বিরুদ্ধে ও আমাদের কাছে অভিযোগ আছে আকাশ খান নামক একজন ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টকে প্রতারণা করা এবং আপনার বোনকে অন্যজনের দ্বারা হিউমিলেট করার জন্য আপনাকেও আমরা গ্ৰেফতার করবো,,আর এর জন্য যথেষ্ট প্রমাণ‌ও আমাদের কাছে আছে।

আর নাজমুল শেখকে ফ্রট করার জন্য এই বাসা এবং নাজমুল শেখের সমস্ত পপার্টি আবার তিনি ফেরত পাবেন।

রিনা আর নাঈম সাহেব আর কিছু বলতে পারলেন না,,তাদের সমস্ত পর্দা আজ ফাঁস হয়ে গিয়েছে,, পুলিশ তাদের গ্ৰেফতার করে নিয়ে গেল।

নাজমুল শেখ তৃষার দিকে তাকিয়ে বলল-;

-: আমার থেকে খুশি আজ আর কেউ নেই,,আমি আজ সব পেয়েছি তৃষা।এবার তোর আর আকাশের মাঝে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেলেই আমি শান্তি পাবো।

তৃষা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলো-;

-:তা হয় না বাবা।

-:কেনো মা?

-: তুমি ভুলে গেছো কাল আমি তোমাদের কি বলেছিলাম??

-:হ্যা কিন্তু তুই কি পারিস না সব ভুলে গিয়ে আকাশকে ক্ষমা করে,, আবার সুখে শান্তিতে সংসার করতে?

-:বাবা যে সংসারে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর বিশ্বাস নেই সেখানে সংসার করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় বাবা।কাল যদি অন্য একজন আমার একটা ছবি এডিট করে আকাশকে দেখায়,,তাহলে হয়তো দেখা গেল সে তখনও তাদের বিশ্বাস করলো আর আমাকে ভুল বুঝলো।

-:তুই যখন নিজেই চাস না আকাশের সাথে সংসার করতে তাহলে আমি আর তোকে জোর করবো না।

-:আমি জানতাম আব্বু তুমি আমাকে বুঝবে।

আকাশ অফিসে বসে আছে এমন সময় একজন লোক এসে তার কেবিনে ঢুকলো।আকাশ লোকটাকে দেখে বলে উঠলো-;

-:আপনি!!

-:জ্বি,,তৃষা ম্যাডাম আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন।

আকাশ ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলো-;

-:তৃষা আপনাকে এখানে পাঠিয়েছে?

-:হুম।

আকাশ মুখের চোয়াল শক্ত করে বলে উঠলো-;

-:কেন আপনাকে এখানে সে পাঠিয়েছে?আমার সাথে তার আর কোনো সম্পর্ক নেই আর যতো টুকু সম্পর্ক আছে তা কিছুদিনের মধ্যেই শেষ করে দেবো।

-:আজ্ঞে তার জন্য‌ই এখানে আসা,,যাতে আপনাকে বেশি ঝামেলা না করতে হয়।

-:মানে!!

-:এই নিন ম্যাডাম আপনার জন্য একটা পার্সেল পাঠিয়েছেন।

আকাশ একবার পার্সেলের দিকে তাকিয়ে আর একবার লোকটার দিকে তাকিয়ে পার্সেলটা খুলল। পার্সেলের ভিতর কয়েকটা ছবি,,একটা পেন ড্রাইভ আর একটা সাদা কাগজ দেখতে পেল।ছবি কটা হাতে নিয়ে দেখতেই আকাশের চোখ কপালে উঠে গেল,,ছবিতে রিনাকে একটা ছেলের বাহুর মাঝে দেখা যাচ্ছে আর একটা ছবিতে তৃষার সাথে যে ছেলেটাকে আকাশ ছবিতে দেখেছিল,,সেই একই ছেলের সাথে রিনাকে একটা রেস্টুরেন্টে বসে গল্প করতে দেখা যাচ্ছে।এসব দেখেই আকাশের মাথা ভোঁ ভোঁ করছে,,এবার সে তারাতাড়ি পেন ড্রাইভটা বের করে লেপটপের সাথে কানেক্ট করল,,ফাইল ওপেন করতেই আকাশ আরেক দফা অবাক হলো।সেখানে রিনার সাথে রাসেলের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের একটা ছোট্ট ভিডিও ক্লিপ আর ফারুকের সাথে কথা বলার একটা ভিডিও ক্লিপ ছিল।সব দেখার পর আকাশ মাথায় হাত দিয়ে চেয়ারে বসে পড়লো-:এ কি করলো সে??

কিছুক্ষণ পর মনে হলো ওখানে একটা সাদা খাম‌ও ছিল,,তাই তাড়াতাড়ি করে সেটা খুলতেই দেখলো সাদা কাগজের উপর কালো কালি দিয়ে লেখা তৃষার আবেগ পূর্ণ একখানি চিঠি।

প্রিয়,-;

আপনাকে কি বলে সম্বোধন করবো বুঝতে পারছিলাম না,,তাই অবশেষে অনেক চিন্তা করে ঠিক করলাম প্রিয় বলে সম্বোধন করাটাই আমার পক্ষে উপযুক্ত হবে।ক্ষমা করবেন আপনার জীবনে কালো অন্ধকারের মতোন এসে আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট করে দেওয়ার জন্য।নিজের বাবাকে আরও একটু পৃথিবীর আলো দেখানোর লোভ সামলাতে না পেরে একদিন এক অসহায় মেয়ে আপনার পায়ে পড়ে ভিক্ষা চেয়েছিল কিছু টাকার জন্য।আপনি সেদিন তাকে নিরাশ করেন নি,,তাকে অনেক উপকার করেছিলেন সেদিন,,তার বাবার অপারেশন সমস্ত খরচ দেওয়ার বিনিময়ে তাকে কিছুদিনের জন্য কিনে নিয়েছিলেন।সেদিনের সেই অসহায় মেয়েটা,,আমি ছিলাম,,তাই নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে করি,,ভাগ্যিস সেই মেয়েটা আমি ছিলাম,,ন‌ইলে আপনার মায়ের মতোন মা পেতাম কিভাবে?

মাত্র অল্প কদিনেই আমাকে নিজের স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে এটাই বুঝিয়েছিলেন যে তিনি চলে যাওয়ার পর আপনাকে আর ওই সংসারটাকে আমাকেই সামলাতে হবে। সংসার করার লোভ এতটাই আমার মনের মধ্যে বাসা বেঁধে নিয়েছিল যে নিজের জীবনের চরম ভুল কাজটা একদিন করেই ফেললাম,,আপনাকে ভালোবেসে ফেললাম আকাশ।তাই এটাও ভুলে গেলাম যে আমাদের মতোন মেয়েদের জীবনে ভালোবাসা বলে কোনো অধ্যায়‌ই নেই।আর যেখানে আমাদের সম্পর্কটাই ছিল‌ একটা ভিত হীন সম্পর্ক।

রিনাপু এর সম্পর্কে আমি কিছুই বলবো না,,যা প্রমাণ পেয়েছেন আশা করি তাতেই আপনি বুঝতে পারছেন রিনাপু আপনাকে নয় আপনার সম্পত্তিকে ভালোবেসে এসেছিল এতো দিন।তার যোগ্য শাস্তি এখন সে পাচ্ছে।আমার বাবাকে চিট করার জন্য আর আপনাকে মিথ্যা প্রেমের জালে ফাঁসানোর জন্য সে আর তার বাবা এখন জেলে।

আপনার সাথে আমার সম্পর্ক এইটুকু পর্যন্ত‌ই ছিল।মামণিকে কথা দিয়েছিলাম রিনাপু এর থেকে আপনাকে রক্ষা করবো আর সারাজীবন আপনার পাশে থাকবো। দ্বিতীয় কথাটা পূরণ না করতে পারলেও প্রথম কথাটা পূরণ করতে পেরেছি এটা ভেবেই আমি শান্তি পাচ্ছি।

আপনাকে কোনোদিন‌ও ডিভোর্স দিতে পারবো না,,কারন আপনি মিশে আছেন আমার অস্তিত্বে,, কিন্তু আপনাকে আমি কথা দিচ্ছি কোনো দিন‌ও আপনার জীবনের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াবো না।ভালো থাকবেন,,,দোয়া রইল আমার তরফ থেকে আপনি যাতে খুব তাড়াতাড়ি একটা সুন্দরী মেয়ে দেখে বিয়ে করেনেন।জানি আমাকে আপনি খুঁজবেন না তাও বলে রাখি আমাকে খোঁজার বৃথা চেষ্টা করবেন না প্লিজ,,কারণ আমি এই দেশ ছেড়ে সারা জীবনের মতো চলে যাচ্ছি।

ইতি-;
আপনার এক কালো অধ্যায়
.
.
.
[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here