#রোদ_বৃষ্টির_প্রেম
#Nishi_khatun
#part_17
খান বাড়িতে ছেলে-মেয়ের বিয়ের তোরজোড় চলছে খুব দ্রুতগতিতে। মনে হচ্ছে কোনো কাজে একটু এদিকে ওদিকে হলে ট্রেন মিস হয়ে যাবে।
রিনির তো এই বিয়ের খবর শুনে সেই আকারে আনন্দিত। আহা কতো বছর পর সে তার মনের মানুষকে নিজের স্বামী হিসাবে গ্রহণ করবে এটা তো ভাবেই খুশিতে ছাদ থেকে লাফিয়ে প্লেনে উড়তে ইচ্ছা করছে।
তবে এসব কিছুর বিপরীতে বড় কোনো অঘটনীয় ঘটনা আগমনের জন্য রেডি হচ্ছে তা খান বাড়ির কেউ জানে না।
হয়তো অঘটন নিজেও জানে না সে কি ভাবে আঘাত হনবে খান বাড়িতে।
এদিকে ভার্সিটি তে বেশ কিছুদিন ধরে রিনির অনুপস্থিতি দেখে বিহান রিনির এক বান্ধবী কে জিজ্ঞাস করে, রিনি ভার্সিটি আর আসছে না কেনো? সামনে তার পরিক্ষা আর পরিক্ষার আগে এভাবে ভার্সিটি ফাঁকি দেওয়া মোটেই উচিৎ কাজ নয়।
রিনির বান্ধবী বলে,”সার রিনির বিয়ে শুক্রবার! সেই জন্য রিনি ভার্সিটিতে আসে না আর। ”
বিহান বলে,”ছাত্রীর বিয়েতে সার দের দাওয়াত পাওয়াটা জাতি গত অধিকার। কিন্তু কোনে স্টুডেন্ট বিয়ের সময় স্যার দের দাওয়াত দেয়-না। তাতে কি হয়ছে বিনা দাওয়াতে ছাত্রীর বিয়েতে এটেন্ড করা যায়।”
বিহান – আচ্ছা রিনির হবু বর কি করে? কোথায় থাকে?
রিনির বান্ধবী – স্যার রিনির চাচাতো ভাই সাদিকের সাথে রিনির বিয়ে। সাদিক ভাই কোনো কিছু করে না। সে আমাদের ভার্সিটি তে পরে।
বিহান – ওহ,আচ্ছা।
এদিকে রিনিদের বাড়িতে রিয়ানার বাবা- মা চলে আসছে কিন্তু রিয়ানা আসে নাই। তার জন্য রিয়ার মা কে সবাই নানারকম প্রশ্ন করতে থাকে। রিয়ানার মা বলে,”বিয়ের আয়োজনে রিয়ানার কি কাজ? সে তো কোনো কাজ করবে না। কাজ তো আমরা করবো তাই আমরা আগে আগে চলে আসছি। বিয়ের আগের দিন না হয় রিয়ানা আসবে। তাছাড়া হবু শ্বশুরের বাড়িতে বেশি আসতে নেই। তাই আমার কন্যা আসে নাই।”
রিয়ানা আসে নাই সে কথা শুনে সাদিক মনে মনে বলে,”ঐ বেয়াদব মেয়ে বিয়েরদিন না আসলে আরো ভালো হয়। ওর আমাদের জীবনে কোনো দরকার নেই। আগাছা একটা। যেখানে যাবে ঝামেলা ঘাঁড়ে করে নিয়ে যাবে। ওহ বিয়েতে থাকলে শিউর কোনো না কোনো ঝামেলা বাধিয়ে ছাড়বে। আপদ একটা। কি বুঝে যে রোদ ভাই ওরে সহ্য করে আল্লাহ মালুম! ”
রোদ- বোনের বিয়ের কাজে এতো ব্যস্ত হয়ে পড়ছে যে বৃষ্টির কথা ভুলে গেছে। হঠাৎ করে রিনির হলুদে আগের দিন বিকালে শিকদার মির্জা রোদ কে কল দিয়ে বলে আমরা হলুদে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পাড়বো না। বিয়ের দিন ইনশাআল্লাহ উপস্থিত হবো।”
রোদ বলে,”তাহলে বৃষ্টি তার বান্ধবীর বিয়ের দিন আসবে?”
শিকদার মির্জা বলে,”তুমি যদি বলো তাহলে বৃষ্টিকে আমি হলুদের দিন পাঠিয়ে দিবো।”
রোদ – হলুদের দিন রিনি ব্যস্ত থাকবে।বান্ধবীর সাথে যদি একটু খোশগল্প করতে না পারে তাহলে কি হয় বলেন? যদি অনুমিত দেন তাহলে আমি বৃষ্টিকে আজ বিকালে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসতে চাই। যদি আপনার আপত্তি না থাকে তাহলে। ”
শিকদার মির্জা কিছু সময় চিন্তা ভাবনার পর বলে,”আচ্ছা আমি বৃষ্টিকে বলে দিচ্ছি তুমি সাথে করে আনবে।”
এদিকে শিকদার মির্জা বৃষ্টিকে কল করে বলে,”রোদ তাকে নিয়ে যেতে আসবে। সে যেনো রেডি হয়ে রোদের সাথে চলে যায়। বিয়ের দিন তারা যাবে তখন বৃষ্টিকে তাদের সাথে করে নিয়ে আসবে। অনেকদিন ধরে তো বাড়িতে একা আছে। বড় ভাবী বাবু হবার পর তার বাবার বাড়িতে চলে গেছে। এদিকে ডায়না মির্জা আর শিকদার মির্জাও নেই। তাই সব চিন্তা করে বৃষ্টিকে রোদের সাথে যাবার অনুমিত দেয়।”
বৃষ্টি নিজের কাপড়চোপড় গুছিয়ে রেডি করে নেয়। তারপর বসে বসে ভাবতে থাকে,রিনি তোমার সুখের মূর্হত্ব গুলো আমার উপস্থিতিতে বিষাক্ত হয়ে যাবে। না পারবে আমাকে গিলতে না পারবে ফেলতে। তোমার সেই বিষাক্ত মূর্হত্বের চেহারার রং বদলানোর দৃশ্য আমি মনের তৃপ্তিজনক ভাবে উপভোগ করবো। আমার উপস্থিতিতে তুমি সারাবেলা ভয়ে ভয়ে কাটাবে না জানি কখন কি হয়। তবে যা হবার তা তো হইবে সোনা ময়নাপাখি। অন্যের জীবনে আগুন লাগতে পারলে কেউ বড়লোক হয় না। আমি তোমার মতো নয়! তবে হ্যাঁ আমি চাই-ছি তোমার বিয়ের পুরোটা সময় মন খারাপের কারণ হতে। দেখো মেয়ে আমি নিজে যেচে যাচ্ছি না তোমার বাড়িতে। তোমার আদরের বড় ভাই আমাকে নিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে রোদ বৃষ্টির বাড়িতে এসে বৃষ্টিকে সাথে করে নিয়ে যাবার সময় রিনির কাছে কল করে।
রিনিকে বলে,”রিনি আমি তোর জন্য বড় একটা সারপ্রাইজ সাথে করে নিয়ে আসছি। তুই সারপ্রাইজ পেয়ে খুব খুশি হবি।”
রিনি শুনে বলে,”ভাইয়ারে আমি সারপ্রাইজ ভালোবাসি! আমি অপেক্ষা করতে পারছি না দ্রুত সারপ্রাইজ নিয়ে আসে।”
রোদ- একটু সবুর কর আমি সাথে করে আনছি।
বৃষ্টি রোদ কে বলে,”আমার কথা আপনার বাড়ির লোকেরা জানে না?”
রোদ- নাহ!
বৃষ্টি- আমাকে দেখে যদি তারা খুশি না হয় তখন কি করবেন?
রোদ- এক বান্ধবীর বিয়েতে আরেক বান্ধবী যাবে এতে খুশি না হবার মতো কিছু দেখছি না।
বৃষ্টি- আমরা সব সময় যা ভাবি তাই হবে এর কোনো মানে নেই।
রোদ- রিনির বান্ধবী হিসাবে তাদের গ্রহণ করতে সমস্যা হলে আমার প্রেয়সী হিসাবে গ্রহণ করতে সমস্যা হবে না আশা করি?
বৃষ্টি -মানে কি? কী বলতে চাইছেন আপনি?
রোদ- আমার বান্ধবী তো আপনি। তাছাড়া শিকদার আঙ্কলের সাথে আমার সম্পর্কটা অনেক ভালো। তাই জন্য তার পরিবারের সদস্যদের আমার পরিচেয় আনতেই পারি।
বৃষ্টি আশ্চর্যজনক ভাবে রোদের দিকে তাকিয়ে থাকে।
এদিকে রোদ বাড়িতে একাই প্রবেশ করে। তা দেখে রিনি ভ্রু কুঁচকে বলে,”আমার সারপ্রাইজ কোথায় ভাইয়া?”
রোদ- আমার সারপ্রাইজ যদি তোর পছন্দ না হয় তাতে আমার করার কিছু নেই। তবে হ্যাঁ পছন্দ হলে ভালো কথা না হলেও ভালো কথা।
রিনি – এটা আবার কেমন ধরণের কথা!
(রিনির কি হবে বৃষ্টির সাথে দেখা হবার পর🤔🤔)
‘
‘
‘
চলবে……