শাওয়াম পর্ব -২১+২২

#শাওয়াম
পর্ব ২১
Suvhan Arag

২১

“হয়তো পুরো দুনিয়া ভাবে আমি শুদ্ধ, পবিত্র। কিন্তু আমি জানি আমি অপবিত্র, আমি একজন ধর্ষিতা।”

ব্যস এই দুটো লাইন বিড়বিড় করতেই ফাইরাজের বুকের ভেতরটা কেমন ধক করে ওঠে। কৌতুহলের পাহাড় জমে মনের কুঠুরিতে। তারপর ই ডায়েরিটা আলতো করে বন্ধ করে রিকশা নিয়ে রওনা হয় বাড়ির উদ্দেশ্যে।

ঘড়ির কাটা আড়াইটা ছুইছুই। মধ্যরাত। ফাইরাজ বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। ডান হাত দিয়ে বেলকনির গ্রিল আকড়ে ধরে আছে অপর হাতে শাওয়ামের সেই ডায়েরি আঁকড়ে ধরা। চশমার মধ্য দিয়ে চোখ বুলাচ্ছে ঘুমন্ত শহরের দিকে।

“এ শহর, ইট বালুর ইমারত, রাস্তার পিচে
না জানি কতশত জীবনের গল্প ছড়িয়ে আছে আনাচে কানাচে!”

ফাইরাজের ভেতরটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে, বুকভরা হাহাকার। চোখে ভাসছে শাওয়ামের নিষ্পাপ চাহনি, সরল হাসি, ইষৎ ক্রোধমিশ্রিত মুখভঙ্গি। মেয়েটাকে দেখে ফাইরাজের কখনো মনে হয়নি তার জীবনে এমন কুৎসিত অতীত থাকতে পারে। আচ্ছা শাওয়াম যে নিজেকে অপবিত্র বলে আখ্যায়িত করল কিভাবে! ফাইরাজের চোখে তো তাকে পবিত্র মনে হয়, একদম শুদ্ধতায় পরিপূর্ণ। ফাইরাজের ভেতরটা শুধু হাহাকার পূর্ণ নয় মাথার রক্ত যেন টগবগ করে ফুটছে। সাদাফকে পেলেই একদম জ্যান্ত কবর দিয়ে ছাড়তো মনে হচ্ছে।

সাদাফের সাথে সাথেও ডায়েরির ভাজের আরো কিছু নাম সাদাফের ক্রোধের কারণ হয়ে যাচ্ছে। সায়েমকে যে শাওয়াম অনেক ভালোবাসে সেটা ফাইরাজ বেশ বুঝতে পারছে। পুরো ডাইরির অর্ধেকটা জুড়ে যদি থাকে সাদাফের জন্য ঘৃণার লিপিবদ্ধ প্রকাশ তো বাকি অর্ধেক জুড়ে আছে সায়েমের প্রতি শাওয়ামের ভালোবাসার প্রকাশ। সায়েম সম্বন্ধে আগেই অবগত ছিল ফাইরাজ। কিন্তু শাওয়াম যে এতটা গভীরভাবে সায়েমকে ভালোবাসে সেটা জানা ছিল না।

সবকিছু কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে ফাইরাজের। শাওয়ামকে সে প্রেমিকা হিসেবে নয় বরং লাল বেনারসি পরিহিত বধূর সাজে দেখার স্বপ্ন দেখে এসেছে। আজ শাওয়ামের পুরো অতীত ফাইরাজের সামনে। শাওয়ামকে ভালোবাসা কি তবে ফাইরাজের ভুল ছিল নাকি ঠিক? সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে ফাইরাজ। তার ভেতরটা কেবল খচখচ করছে।

ফাইরাজ সিদ্ধান্ত নিল এক সপ্তাহ পর নয় কালই শাওয়ামের সাথে দেখা করবে সে, ফিরিয়ে দেব শাওয়ামের ডায়েরিটা। আর রইল ভালোবাসার কথা সে বিষয় নিয়ে ফাইরাজ বড্ড দোটানায় পড়েছে। সব সময় শুধু ভালোবাসা দ্বারা সব কিছু পরিমাপ করলেই হয়না, থাকে পরিবার, পরিজন, সমাজ। মানুষের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত কখনোই কেবল তার জন্য ব্যক্তিগত হয়ে থাকে না, এর ভালো বা খারাপ যে কোন প্রভাব পারিপারশ্বিক সকলের ক্ষেত্রে পড়বে।

কাথার নিচে মুখ লুকিয়ে ফোন হাতে নিয়ে কাঁদছে শাওয়াম। সায়েমের সাথে আবার মনোমালিন্য হয়েছে তার। এইতো সেদিন ঠিকঠাক হলো সবকিছু যদিও শাওয়ামই যেচে ঠিকঠাক করেছে। শত হলেও সায়েমকে প্রচন্ড ভালোবাসে শাওয়াম। সায়েম যত যাই করুক শাওয়ামের কাছে সাত খুন মাফ হয়ে যায়। রুমমেটদের কাছে এই কথা শেয়ার করতে গিয়ে নির্লজ্জ, বেহায়া, ছ্যাচড়া এমন কম কথা শোনেনি শাওয়াম। সবার এক কথা শাওয়ামের কোন আত্মসম্মান নেই, নেই মান অপমান বোধ। যেই ছেলেটা সব সময় তার পরিবারকে, তাকে এভাবে ছোট করে তাকে কিভাবে ভালোবাসা যায়? সবার একই প্রশ্ন শাওয়ামের কাছে। কিন্ত ঐ যে কথায় আছে না ভালোবাসলে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। আসলেই তাই।নইলে বার বার দোষ না করে অপমানিত হয়ে আবার সায়েমের মতো ছেলের কাছে কেউ যেচে ছুটে যায়? শাওয়াম বোঝে রুমমেটরা সবাই ঠিকই বলছে। ভালোবাসতে গিয়ে আত্মসম্মান সব খুইয়ে ফেলেছে সে। তবু শাওয়ামের কষ্ট নেই, সায়েমকে তার চাই। তার বিশ্বাস সায়েম তাকে আসলেই ভালোবাসে। হয়তো সায়েম মানুষটা অন্যরকম, পৃথিবীর সব মানুষ যে ভালো হবে এমন তো নয়, নয় সবার ভালোবাসার প্রকাশভঙ্গি একই। এক প্রকার মিছে মিছে সান্ত্বনা দেয় শাওয়াম নিজেকে। ফলস্বরূপ আজ আবার সায়েমের অকথ্য ভাষা শুনতে হল তাকে।

এদিকে ফাইরাজের মেসেজ। ফাইরাজ আধ ঘন্টা আগে শাওয়ামকে মেসেজ করেছে এক সপ্তাহ পর নয় কালই সে শাওয়ামের সাথে দেখা করবে এবং সেটা কার্জন হলের সামনে। ফাইরাজের মেসেজ টা পড়ে শাওয়ামের মনটা আরো বিষিয়ে গেছে। ফাইরাজ তার অনেক ভালো বন্ধু হয়ে গেছে। যেচে আজ ফাইরাজের চোখে হয় তো চিরকালের মতো খারাপ হয়ে গেল শাওয়াম। ফাইরাজকে ডায়েরিটা দেওয়ার কোন ইচ্ছে ছিলনা শাওয়ামের। কিন্তু ঐ যে ফাইরাজের চোখে নিজের জন্য ভালোবাসা দেখেছে শাওয়াম, ফাইরাজ তাকে নিয়ে অনেক আগাম স্বপ্ন দেখে ফেলেছে এটাও তার অজানা নয়। ফাইরাজকে সরাসরি অসম্মতি জানালেও ফাইরাজ কিছুতেই তার পিছু ছাড়তে রাজি নয়। এমনকি সায়েমের সাথে তার সম্পর্কের কথা জানার পরেও।যেহেতু ফাইরাজ এত কিছুর পরেও শাওয়ামকে ভুলতে নারাজ তাই বাধ্য হয়েই শাওয়াম নিজের বিশ্রী অতীতটা ফাইরাজের সামনে তুলে ধরল। ফাইরাজ আজকের পর থেকে আর তাকে সম্মান করবে না ভালোবাসবে। ফাইরাজ নিজেই চলে যাবে তার জীবন থেকে। ফাইরাজ শাওয়ামের জীবন থেকে চলে যাবে এটা ভাবতেই যেন শাওয়ামের বুকের ভেতরটা কেমন করছে। ফাইরাজকে সে অন্য চোখে দেখে বন্ধু বললে হয়তো কম হবে তার চেয়ে বেশি কিছু, আলাদা কিছু। কিন্তু কি শাওয়াম জানেনা। যতবার সায়েমের তাচ্ছিল্য শাওয়ামকে কষ্ট দেয় ততবার যেন সেটা ভুলতে ওষুধের মতো কাজ করছে ফাইরাজ। মানুষটা তাকে অনেক সম্মান করে, সম্মান দিয়ে কথা বলে। আজ অবধি সায়েম ও তার সাথে এত সুন্দর করে কথা বলেছে বলে শাওয়ামের মনে পড়েনা। কি অদ্ভুত না? আমরা যাদের কাছে ভালোবাসা চাই তারাই করে প্রত্যাখ্যান আর যাদের থেকে কিছুই চাইনা তারাই করে গ্রহণ।
#শাওয়াম
পর্ব ২২
Suvhan Arag

২২

কার্জন হলের সামনের সবুজ ঘাসের ওপর বসে আছে শাওয়াম। অনেকক্ষণ থেকে অপেক্ষা করছে। ফাইরাজ এখনো আসেনি। শাওয়ামের কেমন যেন লজ্জা লাগছে ফাইরাজের সামনে দাঁড়াতে হবে এটা ভেবে। ইশ মানুষটার চোখে কতটাই না খারাপ হয়ে যাবে সে। একদম নষ্ট মেয়ে হিসেবে আখ্যায়িত হবে। বিচ্ছিরি ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

শাওয়ামের ভাবনার ছেদ ঘটল পাশে কারোর বসে পড়ার আওয়াজে। শাওয়াম ইষৎ চমকে ওঠে পাশে ঘুরে তাকায়। ফাইরাজ এসে তার পাশে বসেছে। পাশে বলতে দূরত্ব বজায় রেখে পাশ বরাবর বলা যায়। ফাইরাজের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। হয়তো খুব তাড়াহুড়ো করে আসতে হয়েছে তাকে। চাকরি করে সেখান থেকে ছুটি নিয়ে আবার এতদূর আসা। আজ একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করেছে শাওয়াম, ফাইরাজ এসে একবার ও শাওয়ামের দিকে তাকায়নি। হয়তো ঘেন্নায় অথবা লজ্জায়। ফাইরাজের হাতে একটা শপিং ব্যাগ হয়তো ব্যাগের ভেতর করে শাওয়ামকে কালো ডায়েরিটা ফিরিয়ে দিতে এসেছে।

“এই তোমার একটা বফ আছে না আই মিন ছ্যাচড়া মার্কা বয়ফ্রেন্ড। তার ফোন নাম্বার টা দেও তো।”

হুট করে ফাইরাজের মুখে এমন ধরনের কথা শুনে চমকে গেল শাওয়াম। বলা নেই কওয়া নেই হুট করে এমন ঠাট্টার সুরে কথা বলার কি হলো শাওয়াম বুঝতে পারেনা।

“আরে এভাবে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে বলিনি শাওয়াম। আমি জানি আজকাল ফেয়ার এন্ড লাভলি মেখে আমি যথেষ্ট সুন্দর হয়েছি আগের থেকে তাই বলে এতোটাও না যে এভাবে তাকিয়ে থাকবে।”

ফাইরাজের ঠাট্টা শুনে শাওয়ামের কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছে। আচ্ছা ঠাট্টার সুরে ফাইরাজ শাওয়ামকে অপমান করছে নাতো? করতেই পারে এটাই তো কামনা করা যায় এই পরিস্থিতিতে। শাওয়াম নিজেকে সামাল দিয়ে বলল,

“আমার বয়ফ্রেন্ডের ফোন নাম্বার আমি আপনাকে দেব কেন? আপনি যেই জিনিসটা দিতে এসেছিলেন সেটা দিয়ে চলে যান।”

“সেটাই তো বলছি। আগে তোমার পেয়ারি সায়েমের ফোন নম্বর দেও তার পর তোমার জিনিস নেও সিম্পল। আর যদি ফোন নম্বর না দেও আমি তোমার এই ডায়েরি ফাঁস করে দেব শাওয়াম। একদম ভাইরাল করে দেব। তারপর তুমি তোমার মা বাবা সহ মুখ দেখাতে পারবে তো?”

কথা গুলো বলেই ফাইরাজ কেমন বাকা হাসি ফুটিয়ে তুললো মুখে। ফাইরাজের কথা শুনে মুহূর্তেই শাওয়ামের মুখটা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে গেল। ফাইরাজকে ডায়েরিটা পড়তে দিয়ে তবে কি সে ভুল করেছে? ফাইরাজ তাকে এখন ব্লাকমেইল করছে! ফাইরাজের এমন আচরণ শাওয়ামের বড্ড অচেনা লাগছে। এই মানুষটা তাকে ব্লাকমেইল করছে শাওয়াম বিশ্বাস করতে পারছে না। শাওয়ামকে চুপ থাকতে দেখে ফাইরাজ কিছুটা ধমকের সুরে বলল,

“কি হলো? দিতে বললাম না। তুমি কি ভালোয় ভালোয় দেবে নাকি আমি,,,”

“না। স্টপ ইট ফাইরাজ। আপনি আমার সুযোগ নিচ্ছেন?”

“হুম। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই শাওয়াম। সাদাফ না কি যেন নাম সে তোমার সুযোগ নিয়েছে, তার পর কি যেন তোমার বয়ফ্রেন্ড সায়েম সে ও। তাহলে আমাকে কেন সুযোগের থেকে বঞ্চিত করবে বলো? আমার ও সুযোগ নেওয়ার অলিখিত আইনত অধিকার আছে বলতে হয়।”

“ফাইরাজ!”

“অবাক হওয়ার কিছু নেই। তোমার থেকে শুধু সায়েমের ফোন নম্বর চেয়েছি সায়েমের মতো ইনবক্সে ন্যুড পিক চাইনি যে এভাবে চোখ জোড়া ছানাবড়া করে রেখেছো। সায়েম ন্যুড পিক চাইলে ও তার সাথে যদি ভালো ব্যবহার করতে পারো আমার সাথে কেন নয়? ইটস নট ফেয়ার শাওয়াম।”

শাওয়াম চোখ থেকে পানি ঝড়ছে। মনে হচ্ছে জীবনের আরো বড় ভুল আজ সে করে ফেলল। ফাইরাজ এই সুযোগে তার অতীত নিয়ে তাকে খোটা দিচ্ছে। শাওয়াম ফোন বের করে সায়েমের নাম্বার দিল আর ফাইরাজ সেটা নিজে ফোনে তুলে নিল। তারপর হাতের শপিং ব্যাগটা শাওয়ামের কোলের ওপর ছুড়ে মারলো। শাওয়াম ব্যাগটা নিয়ে উঠতে যাবে তার আগে ফাইরাজ শাওয়ামের হাত ধরে তাকে টেনে আবার জায়গায় বসিয়ে দিল।

“হচ্ছে টা কি ফাইরাজ?”

“কিছুই হয়নি এবার হবে। আমি একটা ফোন করব আর তুমি যাস্ট ততক্ষণ আমার পাশে বসে থাকবে।”

“কেন?”

“তোমার ডায়েরিটা ফটোকপি করে রেখেছি আমি। তাই বেশি কথা না বলে যেটা বলছি সেটা করো। একদম চুপ করে বসে থাকবে। আমি যার সাথে কথা বলছি সেটা শুধু শুনবে। ঠিকাছে?”

শাওয়াম ঝাঁঝালো কন্ঠেডেস্ক উত্তর দিল,

“হ্যাঁ ঠিকাছে।”

ফাইরাজ সায়েমের নাম্বারে কল করলো। দ্বিতীয় বার কল হতেই সায়েম রিসিভ করল,

“হ্যালো, কে বলছেন?”

ফাইরাজ ফোনটা লাউড স্পিকারে দিল। এদিকে সায়েমের কন্ঠ শুনে শাওয়াম ভয়ে জমে যাচ্ছে। ফাইরাজ সায়েমকে কেন করলো? শাওয়াম বুঝতে পারছে না। এদিকে ফাইরাজ সায়েমের সাথে কথোপকথন শুরু করে দিয়েছে।

“হ্যালো,আপনি কি সায়েম বলছেন?”

“জি। আপনি কে?”

“আমাকে আপনি চিনবেন না। আপনার সাথে একটা দরকার ছিল আমার।”

“কি দরকার? আপনি আমার নাম্বার কোথা থেকে পেলেন?”

“বলছি সব। আচ্ছা আপনি কি শাওয়ামকে চেনেন?”

“হ্যাঁ। কিন্তু কেন?”

“বলছি বললাম তো। শাওয়াম আপনার কি হয়? মানে সম্পর্কে কি হয়?”

“ঐ তো একি এলাকার লোক আমরা। কেন কি হয়েছে বলতে পারেন?”

“আসলে কি বলুন তো গতকাল রাতে শাওয়াম আমার সাথে ছিল। ইয়ে মানে বোঝেন ই তো। আমি তো জানতাম শাওয়ামের কোন বয়ফ্রেন্ড নেই। কিন্তু কাল ওর ফোনে কল লিস্টে আপনার নাম্বার দেখি। আরো নামের পাশে জান লিখে সেভ করা। তাই আপনার নাম্বারটা তখন আমার ফোনে নিয়ে নিয়েছি। আপনি যদি শুধু পরিচিত হন তাহলে জান লিখে কেন সেভ করবে?দেখুন আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। প্লিজ আমাকে সব বলুন।”

এদিকে ফাইরাজের কথা শুনে শাওয়াম অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে। ফাইরাজ এত বড় অপবাদ কিভাবে দিল তাকে? তার সাথে সারা রাত ছিল মানে টা কি? আর সায়েম তাকে এলাকার লোক কেন বললো? শাওয়াম অবাক না হয়ে পারছে না। শাওয়ামের আরো অবাক হবার পালা সায়েমের পরবর্তী জবাবে।

“কিহ! আপনি ঐ খা* মা* সাথে রাট কাটিয়েছেন। আসলেই ঐ মেয়ে একটা বেশ্যা বুঝলেন তো। ওকে যে কজন খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে আপনি জানেন না। এলাকার এক ছেলে তো ওকে রেপড ও করেছে। আর তারপর আর কার কার সাথে শুয়েছে কে জানে। আমার পিছেও ঐ মেয়ে লেগে ছিল। এখনো আছে। আরে ভাই ঐ মেয়ে বলে ওকে বিয়ে করতে আপনিই বলেন বিয়ের আগে যে মেয়ে এভাবে অন্য ছেলের সাথে রাত কাটায় তাকে খেয়ে ছেড়ে দেওয়া যায় তবু কি বিয়ে করা যায়? ঐ নষ্টা মেয়েকে কে বউ করে তুলবে। আমি ঠিক ধরেছিলাম ঢাকা গিয়ে আবার শুরু করবে। আমার তো মনে হয় পুরো ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে ঐ মেয়ে। ভাই আপনি ঐ মেয়েকে ছেড়ে দিন। শুধু মজা করতে চাইলে করুন ঐ মেয়ে আপনার মজা দেওয়ার যোগ্য। ওকে ভালোবাসার মতো ভুল জীবনে করবেন না। নষ্ট মেয়ে একটা।”

” অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনি তো দেখছি আমাকে বড় বাঁচানো বাচালেন।”

“ভাই শুনুন। আপনি দেখছি আসলেই একখান জিনিস। এত আগেই ওর সাথে সারা রাত। আমি তো এত চেষ্টা করেও পারলাম না। ঐ নষ্টা খালি বিয়ের দোহাই দেয়। এখন দেখেন ঠিকই নষ্টামি করে বেড়াচ্ছে। পারলে একা এনজয় না করে একদিন আমাকে ডাকেন। দুজনে একসাথে ওকে এনজয় করব। ঐ শালীর ফিগারটা যা জোস না।”

“আচ্ছা ঠিকাছে ভাই রাখি তাহলে। পরে আপনাকে কল করে জানাব।”

“আচ্ছা।”

ফাইরাজ ফোন কেটে দিল। পাশে শাওয়ামের দিকে তাকালো। শাওয়াম শুধু জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে, চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে শাওয়ামে। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। এত বড় ধাক্কা শাওয়াম হজম করতে পারেনি। সায়েম এইভাবে তাকে কারোর সামনে উপস্থাপন করতে পারলো!

চলবে———-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here