সেদিন দেখা হয়েছিলো পর্ব -১৫

পর্বঃ১৫
গল্পঃ #সেদিন_দেখা_হয়েছিলো
লেখনীতেঃ #ঈশিতা_ইশা
(কার্টেসি ছাড়া গল্প কপি নিষেধ।)

রাইদা মনে অনেকটা সাহস সঞ্চয় করে পিছনে ঘুরে তাকায়।

‘আপা তুমি এহানে?’,মারিয়া রাইদাকে দেখে অবাক হয়ে প্রশ্ন করে।

মারিয়াকে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে রাইদা। সায়নের টি-শার্ট আর শার্ট লাগেজ রেখে দেয়।

‘দরজা চাপিয়ে এখানে দাঁড়া পরে বলছি সব।’,সায়নের কাপড় লাগেজে ভরে বলে রাইদা।

মারিয়া দরজা চাপিয়ে টেবিলের পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে রাইদার কর্মকান্ড দেখতে থাকে। সব গুছিয়ে লাগেজটা যেখানে ছিলো সেখানে রেখে নিজের টাওয়ালটা নিয়ে বের হয়। রাইদার পিছন পিছন মারিয়াও বের হয়।রাইদা সায়নের রুমের দরজা লাগিয়ে নিজের রুমে ঢুকে যায়। বিছানায় বসে হাঁপাতে থাকে রাইদা।

‘সায়নরা এসেছে?’,মারিয়াকে প্রশ্ন করে রাইদা।

‘না আপা এহনো আহে নায়।’,মারিয়া উত্তর দেয়।

‘তুই সায়নের রুমে কেনো গিয়েছিলি?’,রাইদা সন্দিহান দৃষ্টিতে মারিয়াকে জিজ্ঞেস করে।

‘মনিরা মামি কইলো বিছানাডা ঠিক না থাকলে গুছাইতে তাই গেছিলাম।’,আমতা আমতা করে জবাব দেয় মারিয়া।

‘শোন বড় হচ্ছিস তাই বলছি সায়নের আশেপাশে কম ঘুরাঘুরি করবি।সায়ন ছেলেটা একদম সুবিধার না।পড়ালেখা রেখে অন্য দিকে যেনো মন না যায় কথাটা মাথায় রাখবি।’,মারিয়াকে শাসনের স্বরে বলে রাইদা।

‘আচ্ছা আপা।’,মারিয়া মাথা নাড়িয়ে বলে।

‘কালকে আমরা হলুদে যাবো তখনই বাড়ি ফিরবো।তুই রাকিবকে ডেকে লাগেজটা নেওয়ার ব্যবস্থা করাবি।আর এখন কাউকে বলবি না আমরা যে ফিরছি কালকে। বুঝেছিস? ‘

‘হ আপা বুঝছি।’

‘যা গিয়ে আড্ডা দে আমি একটু কাজ সেরে আসি।’

রাইদা ল্যাপটপে ভিডিও গুলো চেক করায় ব্যস্ত হয়ে যায়।মারিয়া দরজা চাপিয়ে রুম থেকে বের হয়। ভেবেছিলো সায়নের রুম খালি তাই গিয়েছিলো একটু দেখতে কিন্তু সে তো রুমে গিয়ে নিজের বোনকে দেখে প্রচন্ড অবাক হয়।রাইদাকে সায়নের কাপড় ঘাটতে দেখে মারিয়ার মনে প্রশ্ন এসেছিলো, ‘আপা কি সায়ন ভাইকে পছন্দ করে?’

প্রশ্নটা আবার মাথায় আসতেই রাইদার রুমের দরজার দিকে তাকায় মারিয়া। বসার ঘরের দিকে গিয়ে দেখে রুবেল আর আরাফ বসে আড্ডা দিচ্ছে।সায়নকে দেখতে না পেয়ে মারিয়া এদিক ওদিক তাকায়। বুঝতে পারে একটু আগেই ফিরেছে তারা। যামিনী ডাক দিলে মারিয়া গিয়ে পাশে বসে আড্ডায় যোগ দেয়।

মিনিট বিশেক পর সায়ন ঘরে প্রবেশ করে কোনোদিকে না তাকিয়ে নিজের রুমের দিকে যায়।মারিয়া সায়নকে এক পলক দেখে।তার কাছে সায়নকে রহস্যময় লাগে।মানুষটাকে সে কখনো হাসতে দেখেনি সবসময় গম্ভীর মুখে দেখেছে।না কারো সাথে তেমন কথা বলে না আড্ডা দেয়। সায়নের এমন চরিত্রটা মারিয়ার মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি করে দিয়েছে।সায়ন ভেতরে যেতেই জাহিদ এসে বসে।

দরজা খুলে রুমের সুইচ টিপ দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় সায়ন,পুরো রুমটা আলোতে ভরে যায়।রুমের দরজা লাগিয়ে না তাকিয়েই চেয়ারে হাত দেয় টাওয়ালটা নেওয়ার জন্য কিন্তু টাওয়ার না পেয়ে চোখ তুলে সেদিকে তাকায় সে। হাত মুখ ধুয়ে এসেছে সবে কিন্তু মুখ মোছার জন্য টাওয়াল না পেয়ে বিরক্ত হয়।তার যতদূর মনে পড়ে টাওয়ালটা এখানেই রেখেছিলো এবার সায়ন গম্ভীর মুখে পুরো রুমে চোখ বুলায় এরপর লাগেজের দিকে তাকায়। কেউ রুমে এসেছিলো এটা বুঝতে সায়নের সময় লাগে না আর মানুষটা কে এটাও ভালো করে বুঝতে পারে।ঐ অবস্থায় দরজা খুলে রুম থেকে বের হয় সায়ন।

ফাহিমের পাঠানো ভিডিও গুলো চেক করছে রাইদা। কানে হেডফোন গুঁজে মন দিয়ে ভিডিও য়ের সাউন্ড কোয়ালিটি শোনায় ব্যস্ত সে। সায়ন রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিয়ে তার সামনের চেয়ারে বসে আছে সে দিকে রাইদা খেয়ালই করেনি।
অনেকক্ষণ ধরে টানা ভিডিও দেখে রাইদা ব্রেক নেওয়ার জন্য আড়মোড়া ভেঙে উঠে।আড়মোড়া দেওয়া অবস্থায় সামনে তাকিয়ে দেখে সায়ন পায়ের উপর পা তুলে চেয়ারে তারই টাওয়াল গায়ে বসে আছে।আবার একটু পরপর তার পানির বোতল থেকে পানি খাচ্ছে।

‘এই আপনার এতো সাহস আমার জিনিসে হাত দেন? বের হন আমার রুম থেকে।’,বিছানায় বসা অবস্থায় রাইদা সায়নকে ধমকে বলে।

‘তুমি এতো মনোযোগ দিয়ে কি কাজ করো বলো তো,অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি তুমি আমাকে খেয়ালই করলা না। কাজে মনে হচ্ছে অনেক সিরিয়াস তুমি।’,চেয়ার থেকে উঠে রাইদার পাশে বসে ল্যাপটপের স্কিনে তাকিয়ে বলে সায়ন।

‘আপনার লজ্জা করে না এভাবে অন্যের রুমে আসতে তাও অনুমতি ছাড়া? আপনার মতো বেহায়া লোক আমি দেখিনি আর।’,সায়নের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে বলে রাইদা।

‘হবু বউয়ের রুমে আসতে আবার অনুমতি লাগে নাকি? হবু বউয়ের সামনে আবার লজ্জা কিসের? আর তুমি ও তো আমার রুমে আমার অনুপস্থিতিতে অনুমতি ছাড়া গিয়েছো আমিও অনুমতি ছাড়া আসলাম শোধবোধ। ‘,নিচু স্বরে কথাগুলো বলে সায়ন।

‘আমি গিয়েছিলাম আমার জিনিসগুলো ফেরত নিতে যা আপনি চুরি করেছেন।আমার পায়েলটা এক্ষুণি ফেরত দিয়ে রুম থেকে বের হন।অসভ্য লোক।’,সায়নের দিকে ডান হাত বাড়িয়ে বলে রাইদা।

রাইদার বাড়ানো হাতটা টেনে হাতের তালুকে চুমু দেয় সায়ন। রাইদা সাতে সাথে হাত টেনে নেয়।

‘প্রেয়সীর সাথে অসভ্যতা করবো না তো তার বোনের সাথে করবো? ছেলেরা নিজের সকল অসভ্যতা জমিয়ে রাখে নিজের প্রেয়সীর জন্যই আর আমি তো আট বছর ধরে জমিয়ে দেখেছে।যখন থেকে তুমি জীবনে এসেছো তখন থেকে আমার সকল ভাবনা চিন্তা তোমায় ঘিরে।’,রাইদার দিকে তাকিয়ে ভরাট গলায় বলে সায়ন।

‘দেখুন আপনার সাথে এ বিষয়ে আমি কথা বলতে মোটেও ইচ্ছুক না তারপরও আপনি বারবার বিষয়টা টেনে আনছেন।যতই বিষয়টা চুইংগামের মতো লম্বা করেন না কেনো আমার উত্তর তখনও না ছিলো এখনো না। আমার আপনাকে তখনো পছন্দ ছিলো না এখনো পছন্দ না।পেয়েছেন নিজের সকল প্রশ্নের উত্তর? এবার আমার পায়েলটা দিয়ে রুম থেকে বের হন।’,দরজার দিকে ইশারা করে বলে রাইদা।

‘কি ব্যপার রি প্রশ্ন করার আগেই উত্তর দিচ্ছো যা মোটেও ভালো লক্ষণ না।সামথিং সামথিং? ‘,ভ্রু উঁচিয়ে রাইদাকে জিজ্ঞেস করে সায়ন।

‘আপনাকে নিয়ে সামথিং ভাবার প্রশ্নই উঠে না,সরুন তো।’,সায়নকে ধাক্কা দিয়ে বলে রাইদা।

হাসতে হাসতে সায়ন বিছানায় শুয়ে পরে।

‘রি তোমার সুন্দর একটা শাড়ি পড়া ছবি দিও তো মা তোমার ছবি চেয়েছে। মা তো তার আদরের হবু বউকে না দেখেই মেনে নিয়েছে দেখো কত ভাগ্যবান তুমি। মা কিন্তু আমাদের ব্যপারে সবই জানে তার অবশ্য তখনো আপত্তি ছিলো না এখনো আপত্তি নেই।’,মাথার নিচে দু’হাতে দিয়ে বলে সায়ন।

‘আপনাকে পাগল ভেবেছিলাম এখন দেখছি রিনা আন্টিও আপনার সাথে থেকে পাগল হয়ে গেছে।আমার মাকে চিনেন? সে আপনাদের চৌদ্দ গুষ্টির সকলকে জে*লে ভরে দিবে এসব শুনলে।’,বিছানা থেকে উঠে সায়নের দিকে বালিশ ছুঁড়ে বলে রাইদা।

‘মিয়া বিবি রাজি তো ক্যা কারে গা কাজি? তুমি একবার হ্যা বলো তারপর দ*জ্জা*ল শাশুড়ীকে রাজি করানো আমার বা হাতের খেল।’,রাইদার ঢিল দেওয়া বালিশটা মাথার নিচে দিয়ে বলে সায়ন।

‘আপনি কি বের হবেন নাকি আমি রুম থেকে বের হবো?আমি বের হলে কিন্তু আর এই রুমে ফিরবো না বলে দিলাম।’,রাগী স্বরে বলে রাইদা।

সায়ন বুঝে যায় রাইদা ক্ষেপেছে। শোয়া থেকে উঠে হাসতে থাকে।

‘আজব তো আবারো হাসতেছেন!আপনাকে না বললাম বের হতে? জলদি বের হন।’,কোমড়ে দু’হাতে গুঁজে বলে রাইদা।

‘আমার বাসায় খালি তোমাকে একবার নেই রি, তারপর দেখবো কীভাবে আমাকে তোমার রুম থেকে বারবার বের করো।’,রাইদার সামনে দাঁড়িয়ে বলে সায়ন।

রাইদা দরজা খুলে সায়নকে আঙুল দিয়ে ইশারা করে বলে বের হতে।সায়নও লক্ষী ছেলের মতোন দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়। রাইদা চোখ গরম করে তাকালে সায়ন বাচ্চাদের মতো ঠোঁট ফুলিয়ে দরজার বাহিরে চলে যায়।

‘শুনুন এদিকে আসুন।’,সায়নকে ডাক দেয় রাইদা।

সায়ন সেকেন্ডের মধ্যে ঘুরে তাকায়।রাইদা সায়নের গলা থেকে টাওয়ালটা টান দিয়ে নিয়ে নেয়। সায়ন কিছু বলার আগেই ধাক্কা দিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়।

দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হাসতে থাকে সায়ন।

‘ঠিক আছে এর প্রতিশোধটা তোলা রইলো।’,দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ধীর স্বরে বলে সায়ন।

দরজা আঁটকে রাইদা সেখানে দাঁড়িয়ে সব শুনতে থাকে আর মুখে হাত দিয়ে হাসতে থাকে। টাওয়ালটা চেয়ারে রেখে আবারো কানে হেডফোন গুঁজে ল্যাপটপে বসে বাকি কাজ সারতে।

সায়ন রাইদার রুমের বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে চুলে গুলো এলোমেলো করে দেয়।ঘাড় ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকালে দেখে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে মারিয়া হা করে তাকিয়ে আছে। সায়ন মারিয়াকে হাতের ইশারায় ডাকে। মারিয়া ঢোক গিলে নেমে আসে।

‘এই যে বাচ্চা মেয়ে তুমি কিছু দেখছো?’,গম্ভীর মুখে মারিয়াকে জিজ্ঞেস করে সায়ন।

মাথা নাড়িয়ে না সূচক জবাব দেয় মারিয়া।

‘এই তো গুড গার্ল। শোনো তোমার বোনের মতো ত্যাড়া মেয়ে হবা না।কেউ ভালোবাসা দিলে তা এক্সেপ্ট করে নিবা বুঝছো?’,মারিয়াকে এমন ভাবে কথাগুলো বলে সায়ন মনে হচ্ছিলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা।

‘আপু আর আপনি?’,মারিয়া প্রশ্ন করে।

‘আমরা ছোট বেলার প্রেমিক প্রেমিকা বুঝছো।আট বছর আগ থেকে আমার সম্পর্ক। একবার একটা মেয়ের সাথে কথা বলেছিলাম এরপর থেকেই তোমার আপু আমার উপর রাগ।এইকথা গুলো কিন্তু সিক্রেট তুমি তোমার আপুকে বলবা না।বিয়ে হলে তুমি তো হবা আমার একমাত্র শালিকা।’,বানিয়ে বানিয়ে মারিয়াকে কথাগুলো বলে সায়ন।

মারিয়া অবাক হয়ে সব বিশ্বাস করে। সে তো কল্পনাই করতে পারছে না নিজের বড় বোনের প্রেমিকের দিকে নজর দিয়েছিলো।

‘এইগুলো নাও আমার এখন লাগবে না।’,মারিয়ার হাতে কতগুলো চুইংগাম দিয়ে বলে সায়ন।

নিজের রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয় সায়ন আর মারিয়া সেখানেই দাঁড়িয়ে ভাবনায় পড়ে যায়। নিজের গালে আলতো থাপ্পড় দিয়ে আসতাগফিরুল্লাহ বলে তওবা কাটে।

‘ছি ছি শ্যাষম্যাষ দুলাভাইয়ের দিকে নজর দিলি মারু এইগুলা রাই আপা শুনলে তোর পিঠের ছাল তুলবে।’,রাইদার রুমের দিকে তাকিয়ে বলে মারিয়া।

..

খাবারের টেবিলে গিয়ে রাইদার চোখ ছানাবড়া। আরাফের পাশের চেয়ারে বসেছে শ্রেয়া। সায়নের এক চেয়ার পরে বসেছে মারিয়া। পুরো টেবিলে সানজিদাকে খুঁজে পায়না।
একমাত্র সায়নের পাশের চেয়ারটা খালি। হতাশ হয়ে সায়নের পাশে বসে রাইদা।

মরিয়া মাথা নিচু করে চুপচাপ খেতে থাকে আর রাইদার কিছু লাগলে তুলে দিচ্ছে।সে তওবা কেটে মনে মনে সায়নকে দুলাভাই ডেকে ফেলেছে।

‘কালকে নাকি হলুদের প্রোগ্রাম? কখন যাবো আমরা?’,যামিনী নিরবতা কাটিয়ে বলে।

‘গ্রামের হলুদ তো বিকাল থেকেই হয়।মেয়েরা বিকালে চলে যাবা আর ছেলেরা খাওয়ার সময় চলে যাবা।’,মহিউদ্দিন জবাব দেয়।

‘তোরা কি পরবি?’,রুবেল যামিনীকে জিজ্ঞেস করে।

‘ড্রেস পরবো।’,যামিনী জবাব দেয়।

‘শাড়ী পর, মাইয়া মানুষ হলুদে শাড়ী ছাড়া জমে না।’,রুবেল উত্তর দেয়।

‘শাড়ী কোথায় পাবো?আমার শাড়ী নেই।’,শ্রেয়া বলে উঠে।

‘আরে বাজারে গেলে সুন্দর সুন্দর শাড়ী পাবা।সকালে বাজারে চলে যাও। ‘,মহিউদ্দিন বলে।

‘রাই তোমার শাড়ী আছে নাকি কিনতে হবে?’,যামিনী প্রশ্ন করে।

রাইদার হঠাৎ নীল রঙের শাড়ীটার কথা মনে পরে।

‘হ্যা আছে তবে নীল রঙের।’,রাইদা জবাব দেয়।

‘হলুদে পরবা হলুদ। হলুদে নীল পরলে লাগবে হারপিকের ডিব্বা।’,রুবেল রাইদাকে বলে।

রুবেলের এমন কথায় রাইদা কেশে উঠে।সায়ন পানির গ্লাসটা রাইদার দিকে এগিয়ে দেয়।রাইদা জলদি পানিটা খেয়ে নেয়।

‘যা কথা বলার খাবার শেষ করে বল।’,শান্ত গলায় রুবেলকে বলে সায়ন।

রুবেল আর কথা না বাড়িয়ে খেতে থাকে।বাকিরাও আর কিছু বলে না।রাইদা আরাফের দিকে তাকিয়ে খেয়াল করে আরাফের মুখ কালো দেখেই বোঝা যাচ্ছে কোনো কিছু নিয়ে অনেক মন খারাপ। টেবিলে বসে কারো সাথে কোনো কথাই বলে না আরাফ। রাইদা ইশারায় জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে আরাফ কিছু না বলে জবাব দেয়।
আরাফের মন খারাপ দেখে রাইদারও মন খারাপ হয়।

ঘুম থেকে আজকে একটু দেরি করে উঠে রাইদা।গতরাতে ফাহিমের সাথে ভিডিও গুলো নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে অনেক দেরিতে ঘুমিয়েছিলো।ফোন হাতে নিয়ে দেখে সকাল এগারোটা বাজে। বিছানা ছেড়ে উঠে দেখে পায়ে ব্যথা নেই বললেই চলে।পায়ের হালকা ব্যথটাকে পাত্তা দেয় না।রুম থেকে বের হয়ে কল পাড়ের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়। বাড়িতে কারো কোনো শব্দ না পেয়ে রাইদা অবাক হয়। বসার ঘরে,উঠানে কাউকে দেখতে পায় না।রান্না ঘরে গিয়ে উঁকি দিলে দেখে সোনিয়া আর মনিরা রান্নায় ব্যস্ত।

‘উইঠা গেছো তুমি?যাও হাত মুখ ধুইয়া নাশতা খাও।’,সোনিয়া রাইদাকে দেখে বলে।

‘সবাই কোথাও গেছে?’,রাইদা প্রশ্ন করে।

‘গত রাইতে কইছিলো না বাজারে যাইবো শাড়ী কিনবার সবাই হেইখানেই গেছে।’,সোনিয়া জবাব দেয়।

রাইদার এতক্ষণে গতরাতের কথা মনে পড়ে। কলপাড়ে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে এসে নাশতা খেয়ে নেয় রাইদা।বসার ঘরে গিয়ে ফোন টিপতে থাকে সেই সময় সায়নের নানা এসে বসে সামনে।

‘কি গো মাস্টারের নাতনী তোমারে তো খুইজ্জাই পাই না গপ্প করবার লইগ্গা।’

সায়নের নানার কথা শুনে হেঁসে দেয় রাইদা।

‘বুড়া বয়সে প্রেম করতে চাচ্ছো চেয়ারম্যান সাহেব?’

‘এই বয়সে যদি রাজি হও আমার সমস্যা নাই।’

নানার কথা শুনে রাইদা হাসতে থাকে তখনই ঘরে যামিনী, রুবেল,মারিয়া,সানজিদা প্রবেশ করে। পিছন পিছন আরাফ,শ্রেয়া, জাহিদ আর সায়ন ও আসে। সকলে বসার ঘরে বিশ্রাম নিতে থাকে। সানজিদা গিয়ে সকলের জন্য সরবত নিয়ে আসে।
যামিনী একটা কাঁচা হলুদ রঙের শাড়ী বের করে রাইদার হাতে জোর করে দেয়।সকলের জন্য এক রঙের এক ডিজাইনের শাড়ী পছন্দ করে এনেছে যামিনী। প্রথমে নিতে না চাইলেও পরে হাসিমুখে শাড়ীটা নেয় রাইদা।

..

দুপুর বেলা কোনো রকম খেয়ে মেয়েরা সাজতে বসে। রাইদাকে মারিয়া শাড়ী পরিয়ে দেয় তারপর নিজেও পরে নেয়। যামিনী আর শ্রেয়াকে সোনিয়া, মনিরা মিলে শাড়ী পরিয়ে দেয়। রাইদা সেজেগুজে মারিয়াকে সাজিয়ে দেয়। সাজগোছ শেষ করে লাগেজ গুছিয়ে রাখে রাইদা।

বেলা গড়িয়ে বিকাল হতেই সবাই হলুদে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়।রাইদা নিজের সাইড ব্যাগটা মারিয়াকে দিয়ে দেয়। রুমের দিকে আরেকবার তাকিয়ে দেখে কিছু বাকি রয়েছে কিনা লাগেজে ভরা এরপর বের হয় রুম থেকে।সিঁড়ির পাশে দাঁড়িয়ে সায়ন ফোনে কথা বলছিলো রাইদাকে বের হতে দেখে মুখ তুলে তাকায়। সায়নকে দেখে রাইদা কোনো রিয়াকশন দেয় না।রুমের দরজা লাগিয়ে হাঁটতে থাকে।

‘মনে হচ্ছে আজকে রি ম্যাডামের হলুদ।’,বিরবির করে বলে সায়ন।

রাইদা সায়নের দিকে তাকিয়ে ভেংচি দেয়।সায়নও ঠোঁট দুটো এক করে চুমু দেওয়ার ভঙ্গি করে। সায়নকে থাপ্পড় দেখিয়ে বসার ঘরে চলে যায় রাইদা। ফোন কানে সায়ন ও আসে।
..

মেয়েরা সবাই কনের রুমে গিয়ে বসে।ছেলেরা বাহিরে বাকিদের সাথে আলাপ করতে শুরু করে।

কনেকে সাজাতে পার্লার থেকে মহিলা এসেছে সেই সাজাচ্ছে কিন্তু যামিনী আর শ্রেয়ার কাছে সাজ পছন্দ না হওয়ায় তারা নিজেরা সাজাতে বসে যায়।

সাউন্ড বক্সে গ্রাম্য বাংলার ডিজে গান গুলো বাজতে থাকে। গান শুনে রাইদা হাসতে হাসতে ডিজের চেহারা দেখতে যায়। ডিজেকে সরিয়ে হলুদের পরিবেশ ঠিক করতে নিজের ফোন থেকে ভালো গান গুলো বাজাতে থাকে।

সন্ধ্যা নেমে এলে কনেকে এনে স্টেজে বসানো হয়। একে একে নাচ গানের মধ্যে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্টেজের পাশে বসে আশেপাশে তাকিয়ে আরাফকে খুঁজতে থাকে রাইদা। দূরে চোখ গেলে দেখে আরাফ কারো সাথে মুখ কালো করে ফোনে কথা বলছে।

কনেকে হলুদ লাগিয়ে খানিকটা হলুদ হাতে নিয়ে নেয় রাইদা। কল কেটে আরাফ অন্য কাউকে কল দেয় তখনই রাইদা হুট করে এসে ডান গালে হলুদ মাখিয়ে দেয়।রাইদার আকর্ষিক কাজে আরাফ হেঁসে দেয়। কল কেটে রাইদার হাত টেনে হাতে লেগে থাকা বাকি হলুদ গুলো রাইদার বাম গালে লাগিয়ে দেয় আরাফ।

‘আপনার কোনো সমস্যা হয়েছে? চিন্তিত লাগছে?’,হাসি থামিয়ে রাইদা প্রশ্ন করে।

‘তেমন কিছু না।তুমি যাও আনন্দ করে রাতে এ বিষয়ে কথা বলবোনি।’,আরাফ হাসিমুখে বলে।

‘আর ইউ শিওর সব ঠিক আছে?’

‘হ্যা একদম শিওর তুমি যাও পরে কথা হবে।’

আরাফের কথায় ভরসা না পেয়েও রাইদা সেখান থেকে চলে যায়।রাইদা যেতেই আরাফের মুখ আবারো কালো হয়ে যায়। আরাফের কিছু একটা হয়েছে বুঝতে পারে রাইদা কিন্তু কি হয়েছে সেটা আরাফ না বললে সে জানবে না। স্টেজের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে ভাবনায় ডুব দেয় সে।

‘আপা আপনেরে ডাকতাছে।’,মনি এসে রাইদার কানে কানে বলে।

‘কে ডাকে?’

‘সায়ন ভাই কইলো আপনার কোন জিনিস নাকি তার কাছে সেইডা ফেরত দিতে ডাকতাছে।’

‘সায়নের কথায় কান দিস না কত কিছুই বলে।’

‘সত্যি আপা ভাই কইলো তোমার খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস তার কাছে হেইডা ফেরত দিবার চায় সে।এই বাড়ির পুকুর পাড়ের লগে যে গাছ গুলা আছে ঐখানে দাঁড়াইয়া আছে।তোমার ইচ্ছা হইলে যাও নেইলে থাক।’

মনির কথা শুনে সেদিকে যায় রাইদা। ঝাপসা আলোতে কাউকে দেখতে না পেয়ে ফিরে আসতে নিলে কেউ হাত ধরে টান দেয়।

‘কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি আর তুমি এখন এলে?আমার জন্য তোমার মনে একটুও দয়ামায়া নেই রি?’,রাইদার দুই হাত নিজের দুই হাতে তালুবন্দি করে বলে সায়ন।

‘আপনার জন্য আমার কোনো কালেই দয়ামায়া ছিলো না আর হবে ও না।ছাড়ুন কেউ দেখলে অন্য কিছু ভাববে।মানুষ তো আর বুঝবে না আপনি অসভ্য লোক যে ইচ্ছে করে আমার গায়ে পড়েন এসে।’,সায়নের থেকে হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে বলে রাইদা।

‘তোমার পায়েলটা ফেরত চাও?’,রাইদার কথার জবাব না দিয়ে উল্টো প্রশ্ন করে সায়ন।

‘পায়েল খুঁজতে খুঁজতে আমি হয়রান।ফেরত দিলে দেন না হলে যাদুঘরে রেখে দেন।’,সায়নের দিকে তাকিয়ে বিরক্ত হয়ে বলে রাইদা।

‘আমার গালে হলুদ মাখিয়ে দাও তারপর ফেরত দিবো,চাইলে টুকুস করে একটা চুমুও খেতে পারো আমি মাইন্ড করবো না।’,নিজের গাল এগিয়ে দিয়ে বলে সায়ন।

‘আমার বয়েই গেছে আপনাকে হলুদ লাগাতে কিংবা চুমু খেতে।’,সায়নকে ভেঙ্গিয়ে বলে রাইদা।

‘ঠিক আছে তুমি যখন দিলে না আমি নিজেই লাগিয়ে নিচ্ছি।’

রাইদার ডান হাত ছেড়ে চিবুক ধরে রাইদার গালের সাথে নিজের গাল ঘষা দেয় সায়ন এর ফলে রাইদার গালে লাগানো হলুদ সায়নের গালেও স্থান পায়। রাইদার বাম হাত টেনে হাতের উল্টো পিঠে গভীর চুম্বন দিয়ে রাইদাকে ছেড়ে দিয়ে সায়ন স্থান ত্যাগ করে। রাইদা সেখানেই দাঁড়িয়ে নিজের গাল ঘষতে থাকে।

..

হলুদের প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার আগেই মারিয়াকে নিয়ে রাইদা নানুবাড়ি ফিরে আসে।আসার আগে যামিনীকে বলে এসেছে সে আজকে ফিরবে না তাদের সাথে। বাড়ি ফিরে দেখে রাকিবও তার লাগেজটা নিয়ে এসেছে। তবে রাইদার জন্য বাড়িতে যেই সারপ্রাইজটা অপেক্ষা করছিলো সে হলো মারিয়ার মা। রাইদার ছোট মামার বউও বাপের বাড়ি থেকে ফিরেছে।ছোট মামা ঢাকায় চাকরি করে গ্রামে টাকা পাঠায়। ছোট মামার বউই আলেয়া বেগমের দেখাশোনা করে।

‘কেমন আছো খালামনি?’,মারিয়ার মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে রাইদা।

মাইমুনা কোনো জবাব দেয় না রাইদার প্রশ্নের।

‘তুমি না হয় তোমার বোনের উপর রাগ কিন্তু আমি কি করেছি?’,রাইদা আবারো জিজ্ঞেস করে।

‘তোরা তোগো মতো থাক আমগো জ্বালাইস না।’,মাইমুনা তেঁতো মুখে বলে।

‘আপা তুই কিন্তু মাইয়াডার লগে বেশি বেশি করতাছিস।’,সাবিনা মাইমুনাকে বলে।

‘তোরে কত বেতন দেয় তুই যে ওগো ওকালতি করতাছস?’,মাইমুনা তেড়ে এসে জিজ্ঞেস করে সাবিনাকে।

মারিয়া এক পাশে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে সব শুনছে।ছোট বেলা থেকেই তার মা রাইদার মাকে দেখতে পারে না। মারিয়ার মায়ের ধারণা রাইদার মা বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়েছে তাই তার ভালো ঘরে বিয়ে হয়েছে আর সে সুযোগ সুবিধা পায়নি তাই গ্রামের মধ্যবিত্ত ঘরে তার সংসার।

রাইদা বিরক্ত হয়ে ঘর থেকে বের হয় বাহিরের ঠান্ডা বাতাস খেতে। পুকুরের সামনে দাঁড়িয়ে এক ধ্যানে পুকুরের পানির দিকে তাকিয়ে ছিলো রাইদা।

‘রাই!এতো রাতে এখানে কি করছো?’

রাইদার ধ্যান ভাঙে আরাফের কথায়।

‘আরাফ আপনি?বাসায় যাননি?’

‘সবার সাথে গিয়ে আবার চোরের মতো তোমার সাথে শেষ দেখা করতে এলাম।’

‘মানে?’

‘আমি কিছু কথা বলতে চাই শুনবে রাই?’,ক্লান্ত ভঙ্গিতে বলে আরাফ।

‘হ্যা বলুন শুনছি।’

‘আমি খুবই মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। বাবা ছোট বেলায় মারা যাওয়ার পর মা আর ভাইয়ের কাছে মানুষ হয়েছি। আমি কলেজে উঠলে মা মারা যায় এরপর টিউশন করে কিংবা পার্ট টাইম চাকরি করে পড়াশোনা করেছি।ভাইয়াও নিজের চেষ্টায় ভালো চাকরি পায়। ভালো ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম সবই ঠিক চলছিলো ভাইয়ার বিয়ের আগ পর্যন্ত। ভাবী আমাকে অপছন্দ করেন তাই ভাইয়ার বিয়ের পর বাধ্য হয়ে আলাদা হয়ে যাই। গ্রাজুয়েশন শেষ করে চাকরি নেই আস্তে আস্তে নিজের যোগ্যতায় আরো ভালো চাকরি পেয়ে যাই।এখন ঢাকায় নিজেই ছোট্ট একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকি।গত কাল দুপুরে অফিস থেকে ফোন দিয়ে জানায় আমার যে আরো চারদিনের ছুটি ছিলো সেটা ক্যান্সেল করে দিয়েছে তাই শনিবারই আমাকে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এটেন করতে হবে। গতকাল থেকে এতো চেষ্টা করলাম কিন্তু তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল।এখন যদি আমি না যাই আমার প্রমোশন আটঁকে যাবে আবার আমার যেতেও ইচ্ছে করছে না।প্রমোশনটা আমার জীবনে এই মূহুর্তে অনেক দরকার।’

‘যাচ্ছেন না কেনো?গিয়ে আগে কাজ সারেন।’

‘তুমি বুঝতে পারছো না রাই আমার একদমই মন টানছে না কু ডাকছে বারবার।’

‘এগুলো সব কুসংস্কার যা বিশ্বাস করা পাপ।আর আমি শনিবার ঢাকায় ফিরবো।’

রাইদার বলা শেষের কথাটা শুনে আরাফের মুখে হাসি ফুটে উঠে। আরাফের হাসিমুখ দেখে রাইদাও হেঁসে দেয়।

‘এইবারের ট্রিপটা আমার কাছে অনেক স্মরণীয় হয়ে থাকবে।প্রথমে তো আমরা কেউই এখানে আসতে রাজি ছিলাম না।’

‘তাহলে শেষমেশ কীভাবে আসলেন?’

‘কীভাবে আবার রুবেল আর যামিনীর জোরাজোরিতে আমরা ঠিক করলাম শেষবারের মতো একটা ট্যুর দিবো। প্লেস ঠিক করতে গিয়ে দেখি প্রায় সব জায়গাতেই আমাদের দর্শন শেষ।যামিনী নিজে দায়িত্ব নিয়ে খুঁজে বের করলো আমরা কখনো কুয়াকাটা যাইনি তখনই সায়ন বললো ওর মামা বাড়িও এদিকে।ব্যস দু’দিনের প্লানে বেরিয়ে গেলাম।’

‘অফিস থেকে লম্বা ছুটি দিলো?হঠাৎ চেয়ে বসলেন আর এতো লম্বা ছুটি তো কোনো অফিস থেকেই দেওয়ার কথা না।’

‘চাকরি নেওয়ার পর ছুটি খুব কম কাটিয়েছি।ট্যুরে গেলেও দু’দিনের বেশি থাকিনি।এবার একেবারে চৌদ্দ দিনের ছুটি নিয়ে বের হয়েছিলাম।বস তো তখন বলেছিলো সমস্যা নেই কিন্তু এখন তার আর্জেন্ট কাজে নাকি আমাকেই লাগবে। চাকরি করলে এমন অবস্থা বিয়েতে বসলে কবুল বলার সময় কল দিয়ে বস বলবে আরাফ জলদি আসো খুবই আর্জেন্ট মিটিং এটেল করতে হবে তোমাকে।’

আরাফের কথা শুনে রাইদা হেঁসে দেয়।

‘আশা করছি খুব শীঘ্রই আবার আমাদের দেখা হবে। আমি দুপুরের আগেই বের হবো তুমি কিন্তু আমায় বিদায় দিতে ঐ রাস্তায় দাঁড়াবা যেখানে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিলো।’
আরাফের কথায় রাইদা হেঁসে মাথা নাড়ায়।

এরপর আর দু’জনের মধ্যে কোনো বাক্য বিনিময় হয় না।পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দু’জনে পুকুরের দিকে তাকিয়ে থাকে। রাতের আঁধারে না বলা কিছু কথা হাওয়ায় মিলে যায়।

(চলবে..)

(গল্প পড়ে চুপিচুপি লাইক, কমেন্ট না করে যাবেন না অনুরোধ রইলো। কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন কেমন লাগলো।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here