অজানা অনূভুতি পর্ব -শেষ

#গল্পঃঅজানা_অনূভুতি
#লেখীকাঃফারহানা_জান্নাত
#পর্বঃশেষ_পর্ব

মমঃ আয়ান তুমি, তুমি এখানে কি করতিছো এখন, তোমার না খালামুনির বাসায় যাচ্ছো। আমি ও যেতাম এখানে আসার জন্য যাওয়া হলো না। তুমি যাওনাই কেনো আবার, আর এখানে আসসো কেনো হুম।

আয়ানঃ আমার বউ কে ছাড়া কিভাবে যাই বলো। যাও তারাতাড়ি রেডি হও তোমাকে নিয়ে যাব ভাইয়াকে দার করাই রেখে আসসি। বাইক এ যাব আমরা সবাই চলে গেছে যাও রেডি হও।

বর্তমানঃ

মম একা একা সব ভাবতে লাগে, আয়ান কে কতো খারাপ ভাবছিলো সেখানে। আর আবির বা হুট হাট এমন ব্যাবহার করে কেনো সেটা ও মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে মমের। মম আর কিছু ভাবতে পারলো না মাথা ব্যাথা উঠছে তাই চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করে। হঠাৎ করে সব নিজে নিজে মনে মনে বিরবির করে।

মমঃ ছি আমি আসলেই খারাপ মেয়ে, বিয়ের পর কতো বার আয়ান এর কথা ভাবছি। একটা মেয়ের স্বামী ছাড়া অন্য কাওকে নিয়ে ভাবার অধিকার নেই। আমি পাপ করছি আয়ান কে ভেবে, আমার উচির ছিল সব আগেই ঠিক করে নেওয়া কিন্তু না আমি তখন ও আয়ান এর প্রতি আকিস্ঠ ছিলাম। এমন কি মাঝে মাঝে আয়ানকে নিয়ে ভাবি আমার এটা উচিত হয়নাই। হ্যা আমি আয়না কে পাগল এর মতো ভালোবাসতাম কিন্তু সেটা বিয়ের আগে বিয়ের পর কখন পর পুরুষ কে নিয়ে ভাবতে নেই। আল্লাহ মাফ করে দিও। কিন্তু কি করবো, ভেবেছিলাম বিয়ের প্রথম রাতেই যে আয়ান কে সম্পূর্ণ ভুলে আবির কে নিয়ে সুখে থাকবো সুখি হবো। ঠিক সেই সময় থেকে আবির আমাকে অবহেলা করতে শুরু করছে এমনকি বিয়ের পর ৬টা মাস আমার সাথে কথা বলে নাই।

মমঃ এতো অবহেলার মাঝে আমার আয়ান এর কথায় মনে হতো, কারণ আয়ান আমাকে কখন ও কষ্ট পেতে দেয় নাই নিজে ও কষ্ট দেয় নাই। তাই যখনই আবির অবহেলা করে অত্যাচার করে তখন আয়ানকে মনে হতো। হয়তো এখনো হবে ২ বছর এর রিলেশন ছিল, এখন হয়তে হাজার আয়ান এর কথা ভাবলে কেও কিছু বলবে না সে তো আর বেঁচে নেই। আল্লাাহ আমাকে ধৈর্য দিও একটা মেয়ে আছে আমার আমি যেন পর পুরুষ কে না ভাবি নিজের স্বামী কে নিয়ে যেনো সারাটা জীবন পার করতে পারি ইনশাআল্লাহ।

এরপর মম আবির এর দিকে তাকায় তারপর নিজে ঠিক ভাবে চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করে। এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে। এই দিকে আবির এখন ও ঘুমায়নি আয়ান এর কথা ভাবতিছে। আয়ানের হার্ড ফেইল হয়ছিল সাথে ব্রেন স্টক। দুইটা এক সাথে হওয়ায়র জন্য আয়ান মারা যায়। অতিরিক্ত চিন্তার কারনে এমন হয়ছে। আবির আর ও ভাবে, আয়ান তো তাকে বলছে যাতে করে মমকে কষ্ট না দেয়। হয়তো বা এটা আয়ান এর অধিকার ছিলো না কিন্তু এখন সে আর বেচেঁ নেই। তার থেকে বড় কথা আবির তো মমকে ভালেবাসে তাহলে মমকে কষ্ট দেওয়া মানেই বোকামি। এতে করে মমের মন বিষিয়ে যাবে আরো।আবির আর কিছু না ভেবে আরুহি কে আলতো ভাবে জরায় নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে মম ঘুম থেকে উঠে নামাজ পরে নিচে গিয়ে রান্নায় হেল্প করে। কিছুক্ষণ পর আবির আরুহিকে সাথে নিয়ে নিচে আসে মম আরুহিকে নিজের কোলে নেয়। আবির খাওয়া দাওয়া করে হসপিটালে যায় আর মম রেডি হয়ে তার মায়ের বাসায় যায়। আসার পড় থেকে একবার ও তাদের বাসায় যায় নাই। বাসায় এসে সবার সাথে একটু গল্প করে রুমে গিয়ে গোসল করে নেয়। রাতে মম ফোনের দিকে তাকায় আছে হয়তো একটা বারের জন্য হলে ও আবির ফোন দিবে কিন্তু না একবার ও ফোন দেয় না।

আরুহিঃ মা,মা,মা বাবাই বাবাই যাব বাবাই যাব য়ামি বাবাই ততা বববো।

মমঃ বাবাই নাই চিল্লিও না তো, ঘুমাও, তোমার বাবাই আমাদের ভুলে গেছে তার কি আর আমাদের কথা মনে হবে। আুপ চাপ লক্ষি মেয়ের মতো ঘুমাও কেমন।

আরুহি কোনো কথা শোনে না। আর ও জোরে কান্না করতে থাকে, তাই ভিডিও কল দিয়ে আরুহির দিকে করে ফোন নিয়ে তাকাই আছে। আরুহি আবির কে দেখে কান্না বন্ধ করে হুদায় আবল তাবল বলতে শুরু করে। কিছুক্ষন পর ফোনে কেটে দেয় আবির। তখন সেইদিকে মুখ করে তাকাই মম, এতোক্ষণ অন্য দিক করে মুখ করে ছিল। এবার আরুহি সান্ত মেয়ের মতো ঘুমিয়ে পড়ে। মম ৫-৭ দিন তার মায়ের বাসায় থাকে সে লক্ষ করলো আবির একটা দিন ও তার সাথে কথা বললো না। মম ভাবলো হয়তো আবির তাকে চায় না আর।

তাই সিদ্ধান্ত নিলো যে এবার গিয়ে একবার এ নয়তো ডিভোর্স এর কথা বলে দিবে এভাবে আর কতো দিন চলবে। রাতে মম যখন ঘুমায় আছপ বুঝতে পারে কেও তার পেটে হাত দিয়ে নিজের কাছে টেনে নিচ্ছে। মম তারাতাড়ি উঠে নাইট জালায় পাশে তাকায় দেখে আবির চোখে হাত দিয়ে আছে হয়তো আলো চোখে লাগতিছে। মম আলো বন্ধ করে দেয় তখন আবার মমকে আবির শুয়ে দিয়ে জরায় নেয়। কিছুক্ষন পর মম বুঝতে পারে তার ঘারে গরম পানি পরতিছে তখন সে ও আবির কে আকড়ে ঘরে বলে।

মমঃ কি হয়ছে এভাবে কান্না করতিছো কেনো। আমি তে কিছু বলি নাই। ওহ বোঝা হয়ে গেছি বুঝি সে জন্য, আচ্ছা সমস্যা নাই আমি ভাবলাম সকালে বাসায় যাব ডিভোর্স এর ব্যাপারে কথা বলতে তার আগে তুমি তে আসসো ভালোই হয়ছে নেও। আর জালাবো না আমি আর বিরক্ত ও করবো না তোমাকে।

আবিরঃ চুপ, সরি বউ সব কিছুর জন্য রাগ উঠে ছিল আমার তোমার প্রতি সেজন্য এমন খারাপ ব্যাবহার করছিলমা। আর সিঙ্গাপুর থেকে এসে খারাপ ব্যাবহার করতাম না। তুমি প্রথম দিন ফোন রিসিভ করো নাই আমি ভাবছিলাম আয়ান এর জন্য তাই রাগ লাগছিল। সে জন্য এসে তোমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করছিলাম মাফ করে দেও আমাকে প্লিজ।

মমঃ তুমি সারাজীবন ভুল করবে আর আমি মাফ করবো এটা তো হয়না। আমি তো তোমার ডাইরি পড়ে জানছি তুমি নাকি আমাকে ভালেবাসো কই গেলো এতো ভালোবাসা। ভালোবাসলে কেও এতো অত্যাচার করতো না। তুমি অত্যাচারি জামাই আমার এমন কাওকে চাই না ঘুমাতে দেও দূরে গিয়ে ঘুমাও যাও।

আবির অনেক কিছু বুঝায় কিন্তু কোনো কথা মম কানে উঠায় না। আবির বিরক্ত হয়ে আরো খামচে ধরে তবুও মমের কোনো রেসপন্স নাই। এবার আবির কিছুটা রেগে গিয়ে কিছু না বলে অন্য পাশ হয়ে শুয়ে পড়ে। সকালে আরুহির ঘুম ভেঙে গেলে তার বাবাই কে দেখে খুশি হয়। আর হাত তালি দেয়। মম সেটা দেখে বদমাইশি করে আরুহি কে শিখে দেয় যাতে আবির এর চুল ধরে টানে। আরুহি আবির এর চুলে হাত দিলে মম জোরে একটা টান দেয়। আবির আহ শব্দ করে চোখ খুলে দেখে আরুহি চুলে হাত দিয়ে আছে আর পাশে মম ঘুমিয়ে আছে। আবির ভালো ভাবে আরুহিকে লক্ষ করে এই টুকু মেয়ে এতো জোরে চুল কেমনে টানবে। পরে বুঝতে পারে এটা মমের কাজ কিছু না বলে আরুহিকে বুকে উঠায় নেয় আবির।

একটু পড় মম ও নড়েচড়ে উঠে শোয়া থেকে উঠে পড়ে। সেদিকে আবির তাকাই একটা রাগি লুক নেয়। মম ভেঙ্গচি কেটে নিচে নেমে যায়। সকালেই তারা আবিরদের বাসার উদ্দেশ্য রওনা হয়। আবির সেখান থেকে হসপিটালে যায়। রাতে আরুহি ঘুমিয়ে গেলে মম ফোনটা নিয়ে ফেবুতে ঘোরাঘুরি করে একটু পর আবির এসে নিচে গিয়ে একাই খেয়ে এসে মমের ঘারে একটা কামড় বসায় দেয় মম হালকা চিল্লিয়ে উঠে।

মমঃ কি শুরু করছো শুনি তো। দূরে যাও তোমার মতলব ভালো লাগতিছে না। একদম কাছে আসবে না বলে দিলাম নয়তো কিন্তু চিল্লাবো আমি। যাও সরো ঘুমাবো বিরক্ত করবা না পাশে কিন্তু মেয়ে আছে। যানো তোমার মেয়ে আমাকে বাবাই বাবাই বলে পাগল করে তুলতো। তুমি তো ঠিকি মেয়ের সাথে কথা বলতা আমার সাথে একটা বার কথা বলার প্রযোজন মনে করো নাই মানলাম অনেক ভুল করছি আমি তাই বলে।

মমের আর কোনো কথা না শুনে আবির মমের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে পাশে রেখে দেয়। তারপর মমের জামা উপরে উঠায় পেটে স্লাইড করতে লাগে। মম প্রথমে হাত সরাতে চাইলে ও এখন অজানা একটা অনুভূতি অনুভব করে সে জন্য চোখ বন্ধ করে আবির এ কলার চেপে ধরে। আবির যখনই মমের ঠোটের কাছে যাবে তখন মম আবির এর মাথার চুল জোরে চেপে ধরে। আবির তারাতাড়ি মমের হাত থেকে নিজের চুল ছাড়ায় নিয়ে রাগি চোখে তাকায়।

আবিরঃ এই বদমাই এটা কেমন ব্যাবহার। সকালে একবার মাথার ব্যাথা উঠায়ছো এখন কি শুরু করছো। রোমান্টিক মুডটাই নষ্ট করে দিলা। কতোদিন পর কাছে আসতে চাইলাম। সর যাও আর বিরক্ত করবো না আমি। আমি কাছে আসলেই তোমার দূরে সরাই দিতে মন চায়।

আবির রেগে অন্য দিকে মুখ করে শুয়ে পড়ে। মম মিটিমিটি হেসে পিছন থেকে আবির কে জরায় ধরে কিন্তু আবির এর রেসপন্স না পেয়ে বিরক্ত হয়ে আবির এর কাধে কামড় দেয় এবার আবির মমের দিকে হয়ে মমকে কাছক টেনে নিয়ে গলায় মুখ বসায় দেয়। একটু পর মমের ঠোঁটে ঠোঁট স্পর্শ করায়। মম চোখ বন্ধ করে বসে” আমার অজানা অনুভূতির সন্ধান পেয়ে গেছি” আবির মুচকি হেঁসে মমের মাঝে ডুব দেয়। দুইজনে হারিয়ে যায় গভির ভালোবাসায়।

★সমাপ্তি★

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here