অজানা অনূভুতি পর্ব -১১

Story writer official ツ
#গল্পঃঅজানা_অনূভুতি
#লেখীকাঃফারহানা_জান্নাত
#পর্বঃ১১

মম বুঝতে পারে তার কথা কেও শুনতে পারতিছে না সেই জন্য ফোন বের করে আবির কে ফোন দেয়, আবির ফোন হাতে নিয়ে দেখে মম ফোন দিসে বাড়িতে থেকেই ফোন দিচ্ছে সেটা কিছুটা ঘটকা লাগে পরক্ষণেই ভাবে আয়ান আছে কিছু করলো না তো। তারাতাড়ি রুমে গিয়ে দরজা ধাক্কায় মম দরজা খুলে দিয়ে কান্না করতে শুরু করে। আবির একবার মমের দিকে তাকায় একবার আয়ান এর দিকে তাকায় পড়ে কিছু না ভেবেই আয়ান এর কাছে ছুটে গিয়ে দেখে আয়ান সেন্স হারায়ছে আর হার্ড বিট দ্রুত চলতিছে। আয়ান কে অনেক ডাকা ডাকি করে ও না ওঠায় তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যায়। মম যেতে চাইলে আবির বারন করে আবির তার বাবা আর কয়েকজন মিলে আয়ান কে হসপিটাল নিয়ে যায়। হসপিটালে এসে তাড়াতাড়ি আইসিইউ তে নিয়ে যাওয়া হয়। সাথে আবির ও যায় একজন ডাক্টার হওয়ায় কেও বাঁধা দেয় না। আয়ান এর সেন্স ফিরছে কিন্তু নিশ্বাস খুব দ্রুত নিচ্ছে। আয়ান মুখ থেকে অক্সিজেন মাক্স খুলে আবির কে বলে।

আয়ানঃ ভা-ভাই-ভাইয়া আমাকে মাফ করে দেস কোনো ভুল করে থাকলে। আর মমকে বলিস আমি ওকে এখন ও ভালেবাসি। সত্যি আমি ভাবছিলাম তোমার আর মমের মাঝে সম্পর্ক আছে তাই, ভাইয়া প্লিজ মমকে কখন ও কষ্ট দিও না। আমি মেনে নিতে পারি নাই ভাইয়া যে এতো ভালোবাসার পড়ে ও কেনো বিশ্বাস করতে পারলাম না আমি মমকে। তুমি মমকে দেখে রেখো ভাইয়া প্লিজ। আ-আমি আমার খুব কষ্টে হচ্ছে ভাইয়া বাবা-মাকে বলো কোনো ভুল করে থাকলে মাফ করে দিতে।

আয়ান আর কিছু বলতে পাড়ে না আবির এর কোলে ঢলে পড়ে। আবির ঝাকাতে লাগে পড়ে বুঝতে পাড়ে আয়ান আর নেই। তাই জোরে চিল্লিয়ে উঠে।

আবিরঃ এই ভাই উঠ নারে দেখ এই ভাই দেখ না সবাই তোকে কতো ভালোবাসে এই ভাই তুই যদি মমকে চাস তাও দেব উঠ নারে ভাই এই ভাই,

আবির আর কিছু বলতে পাড়ে না কেঁদে দেয়। আবির এর চিল্লানোর শব্দে সবাই ভিতরে ঢুকে দেখে আয়ানকে কোলে নিয়ে আবির কান্না করতিছে। পড়ে একজন ডক্টর জানায় আয়ান আর বেঁচে নেই। সবাই সেখানেই কান্না করে দেয়। বাসা থেকে অনেক বার ফোন আসসে কিন্তু কেও রিসিভ করে নাই। প্রায় ৩ ঘন্টা পর আয়ানকে নিয়ে সবাই বাসায় ফিরে। আবির এর মা আর ও অনেক এ আবির কে দেখে এগিয়ে আসে সাথে মম ও আসে। সবাই দেখে গাড়ি থেকে একটা সাদা কাপড়ে মোড়ানো লাশ বের করতিছে কারো বুঝতে বাকি নেয় যে আয়ান আর বেঁচে নেই। মম সেখান থেকে দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে হাটুটে মাথা গুঁজে কান্না করতে থাকে। দুপুরে আয়ানকে মাটি দেওয়া হয়। সব কিছু শেষে আবির বিকালে রুমে যায়। তার মনে ছিল না সারাদিন এ মমকে একবার ও দেখা যায় নাই। শুধু আরুহিকে দেখছে মমের আম্মু কাছে। আবির রুমে এসে দেখে মম মেঝেতে পড়ে আছে। কাছে গিয়ে বুঝতে পারে সেন্স হারাইছে। আবির মমকে বিছানায় শুয়ে দেয়। আর ভাবতিছে শিমুর কথা কেমন ভালোবাসে যে আয়ান মারা যাওয়ার তার বাবা-মা তাকে নিয়ে যেতে চায় একবারে আর সে চলে গেছে। এখন রাত ১১ টা সবাই কিছুটা হলে ও সান্ত আছে। মমের এখন ও সেন্স ফিরে নাই। আবির কাওকে কিছু বলে নাই শুধু বলছে মমের শরীর খারাপ তাই শুয়ে আছে। আরুহিকে রুমে এনে মমের পাশে শুয়ে দেয় আবির। কিছুক্ষণ পর আবির বুঝতে পারে মম তাকে জরায় ধরে কান্না করতিছে তখন আবির মমের দিকে তাকায় নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে বলে।

আবিরঃ মম আমি তোকে বকাবকি করতে চাচ্ছি না তাই যা বলতেছি শোন। তোর জন্য আয়ান মারা গেছে সম্পূর্ণ দোষ তোর। আমার কাছ থেকে সরে যা একদম আমার কাছে আসবি না। আমার ভাই তোর জন্য আর নেই। ও তোর কাছে তখন না আসলে এতক্ষণ ভালো থাকতো।

মম কিছু বললো না। আবির এর কাছ থেকে সরে আসে। আর ভাবতে থাকে হয়তো তারই দোষ আয়ান মারা যাওয়ার পিছনে। আরুহিকে নিজের সাথে জরায় নিয়ে মম নিরবে কান্না করে। আর এদিকে মম ভাবে কেনো সে আয়ান কে মমের কাছে পাঠালো। তখন শিমু আছিলো তাদের পাশে সে জন্য আয়ান আবির এর ফোনে একটা টেক্স করছিলো যাতে লিখা ছিলো”ভাইয়া প্লিজ আমি একটা বার মমের সাথে কথা বলি যাস্ট সরি বলবো আর কিছু না। অনেক ভুল করছি ওর সাথে আমি জানি তুমি ও মমকে পাগলের মতো ভালোবাসো তাই যাস্ট আমি দেখা করে সরি বলবো নয়তো আমার কেমন যানি লাগতিছে নিজের কাছে গিল্টি ফিল হচ্ছে খুব। বিলিভ করতে পারো যাবো আর সরি বলে চলে আসবো আর কিছু না। ৫ মিনিট ও সময় নিব না আমি, না করো না ভাইয়া আর আমি বিকালে শিমুকে নিয়ে ঢাকা চলে যাব এখানে থাকলে মমকে দেখবো হয়তো খারাপ লাগবে যতই হোক ভালেবাসতাম। আর এখন সে তোমার বউ তাই আমি চাইনা তার দিকে খারাপ নজর এ তাকাই” মেসেজ দেখে আবির ও আর কিছু বলে নাই সে এটা যানে মম কখন ও আয়ান এর কাছে ফিরবে না। তার উপর তাদের একটা সন্তান আছে মম নিষ্ঠুর না। আয়ান প্রথম ভালোবাসা সে জন্য ভুলতে পারে নাই সহজে তবুও ভুলে থাকার চেষ্টা করছিলো যখন বুঝলো আয়ান সম্পূর্ন ভুল বুঝে গেছে তখন সে কষ্ট পাইছে তাই আয়ান ভাবলো দুইজন একটু ভুলটা সুধরে নেক তাছাড়া আয়ান তো কথা দিয়েছে যে আজ ঢাকা চলে যাবে। আবির নিজের মনে এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে। খুব সকলে মমের ঘুম ভাঙ্গে আয়ান এর কথা মনে হতে আপনা আপনি চোখ থেকে পানি পড়ে। কিছু না ভেবে নিচে যায় আর ভাবে হয়তো কাল থেকে কেও খাওয়া দাওয়া করে নাই। মম নিজে গিয়ে রান্না করে। এভাবে ১৫ দিন চলে গেলো এখন সবাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে কিছুটা কিন্তু মম ভিতরে গুমড়ে মরতিছে। একদিকে আবির এর অপবাদ যে মমের জন্য আয়ান মারা গেছে। তার উপর আবির মমের আশেপাশে ও আর থাকে না। আবির এখন ইগ্নোর করতে শুরু করছে। মম ভাবতিছে সে নিজে আবির এর সাথে কথা বলে সম্পর্ক ঠিক করে নিবে এভাবে কতো দিন চলে। রাতে আবির হসপিটাল থেকে এসে খাওয়া দাওয়া না করেই বিছানায় গা এলিয়ে দেয় এর মাঝে আরুহি এসে আবির এর সাথে দুষ্টামি করতে শুরু করে। তখন মম এসে আরুহি নিয়ে খাওয়ায় দেয় তারপর আবির এর দিকে পাশ ফিরে বলে।

মমঃ আবির এভাবে কতো দিন চলবে বলো আমাকে। তুমি দিনদিন আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছ কেমন গম্ভীর হয়ে উঠতেছো তুমি। আবির সব কিছু ঠিক করে নিলে কি হয়না। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায় না কি। আমি কি আয়ানকে মেরে ফেলছি। তোমার মনে যদি এটাই হয় তাহলে আমি বলবো তোমার দোষ সেদিন যদি তুমি না থাকতে তাহলে আয়ান ভুল ও বুঝতো না।

মম আর কিছু বলতে পারে না আবির মমের গলায় নিজের দুইহাত দিয়ে চাপিয়ে ধরে। মম ছটফট করতিছে তবুও ছাড়ার নাম নেই একসময় মম চোখের পানি ফেলতে লাগে। তখন আবির মমের গলা ছেরে দেয়। মম জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে। সেটা দেখে আবির বলে।

আবিরঃ তুই কি বলতে চাস আমার দোষ তাই না। তুই সেদিন জরায় না ধরলে এসব হতো না তুই আয়ান এর সাথে সুখে থাকতিস। একদম আমার দোষ দিতে আসবি না। আর এখন সম্পর্ক ঠিক করতে মন চাচ্ছে এর আগে তো এমন কথা বলিস নাই তুই। ওহ এখন আয়ান নেই কার কাছে যাবি তাইনা সেটা ভেবে এখন সম্পর্ক ঠিক করার কথা তোর মাথায় আসে।

(মম জোরে জোরে নিশ্বাস নিয়ে বলে)

মমঃ তুমি কখন ও নিজের ভুলটা বুঝতেই পারো না আবির। আল্লাহ যেনো আমাকে ও আয়ান এর মতো নিয়ে যায়। তোমার কাছে থাকার চেয়ে মৃ-ত্যু আমার জন্য অনেক ভালো। বিয়ের প্রথম দিন খুব ভালো বাসতে মন চাইছিলো আমাকে তাই না আর এখন ভালো লাগে না। সত্যি বলতে তুমি মানুষ এর কাতারে পড় না। একটা সময় নিজে আমার কাছে আসবে নিজের ভুল বুঝতে পেরে সেদিনটা যেনো দেড়িতে না হয়।

আবির কিছু বলে না। মম মাঝখানে আরুহি শুয়ে দিয়ে সে অন্য পাশে শুয়ে পড়ে। আজ কেমন যেনো তার আয়ান এর কথা অনেক বেশি মনে পড়তিছে। বিছানা ছেড়ে উঠে বারান্দায় যায় মম গিয়ে ভাবতে থাকে আয়ান আর তার রিলেশন এর ৬ মাস পড়ের কথা। সেইদিনটা ছিলো ঈদের ২ দিন পর। সবাই ঠিক করে মমের বড় খালামুনির বাসায় বেড়াতে যাবে। কিন্তু মম তখন একটা ফেন্ড এর বাসায় ছিলো তাই তাকে ছাড়া সবাই চলে যায়। সকালে মম শুয়ে ছিল সকাল বললে ভুল হবে তংন বেলা ১১ টা বাজে। দরজায় শব্দ হওয়ার কারণে উঠে দরজা খুলে দেয় আর খুলে যাকে দেখে তাকে দেখে সে অবাক হয়ে যায়।

(বোনাস দিলাম, এবার হয়তো বুঝতে সমস্যা হবে না কারো। কমেন্ট করে যাও নয়তো কাল গল্প দিব না😒🥹)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here