অতঃপর সন্ধি পর্ব -১৩+১৪

#অতঃপর_সন্ধি (১৩)
রূপন্তি রাহমান (ছদ্মনাম)

বাংলা নববর্ষ! দেশজুড়ে চলছে বিশাল আয়োজন। রমনার বটমূলে নানান বয়সের মানুষের আনাগোনা। মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাঁটছে ছোট বড় সবাই।

নববর্ষ উপলক্ষে আফসানা হক বিশাল আয়োজন করেছেন। বান্ধবীর পরিবারকে দাওয়াত দিয়েছেন। আর সাথে মায়ানকেও বলেছেন আসতে। ফারদিনকে পড়ানোর সুবাদে সেও এখন এই পরিবারের সদস্যের মতো।

তানজিফের পরিবার উপস্থিত হয়েছে বেশ কিছুক্ষণ হয়েছে। আশহাব শেখ আর তাজওয়ার নওশাদ নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতা চালাচ্ছে। তানজিফ ফারদিনের সাথে। পুষ্পিতার বিছানায় শুয়ে পায়ের উপর পা তুলে কার্টুন দেখছে তিতির। আশেপাশে কি হচ্ছে এতে তার কোনো খেয়াল নেই। আজ সুযোগ পেয়েছে কার্টুন দেখার। সেই সুযোগ টাকে কাজে লাগাচ্ছে সে।

সুমনা এহমাদ আর আফসানা হক রান্নাঘরে। হাতে হাতে এটা ওটা এগিয়ে দিচ্ছে পুষ্পিতা। পুষ্পিতা কাজের ফাঁকে এক ছুটে নিজের রুমে এসে মায়ানকে মেসেজ পাঠালো,

‘আপনার আসতে আর কতক্ষণ?’

সঙ্গে সঙ্গে ওপাশ থেকে উত্তর আসলো,

‘এইতো রাস্তায়।’

উত্তর পেয়ে পুষ্পিতা মোবাইল রেখে বিছানার দিকে তাকাতেই থতমত খেয়ে গেলো। তিতির তার দিকে কেমন সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তিতির বাচ্চা মেয়ে তবুও পুষ্পিতার চোরের মন পুলিশ পুলিশ। তিতির কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই মেকি হাসি দিয়ে দ্রুত গতিতে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায়।

‘পুষ্পি তাড়াতাড়ি পেঁয়াজ দু’টো কে’টে দে। বেরেস্তার জন্য লাগবে।’ বলে পেঁয়াজ দু’টো পুষ্পিতার হাতে দেওয়ার আগেই আফসানা হকের হাত থেকে সুমনা এহমাদ ছোঁ মে’রে নিয়ে যান।

‘তুই গোসল করে নতুন জামা পড়ে আয় পুষ্পিতা। আমি কে’টে দিচ্ছি।’

আফসানা হক কিছু বলার ধমকে উঠলেন সুমনা এহমাদ।

‘দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় হচ্ছে। মেয়েটা এখনো রেডি হয়নি তারপর একটু সাজগোছ করবে। আর তুই ওকে খাটাচ্ছিস? এই পুষ্পি যা তো তুই।’

পুষ্পিতাও বাধ্য মেয়ের মতো চলে এলো।

____________________

গোসল শেষে পুষ্পিতা মাথায় তোয়ালে পেঁচিয়ে ড্রয়িংরুমে পা রাখে। রান্নাবান্না প্রায় শেষ। এক এক করে সবগুলো খাবার ডাইনিং টেবিলের উপর রাখা। ড্রয়িংরুমে সবাই থাকলেও পুষ্পিতা খুঁজলো মায়ানকে। চারপাশে নজর বুঝতে পারলো মায়ান এখনো আসেনি।

‘সেকি তোর এতোক্ষণ লাগল গোসল সারতে?’ সুমনা এহমাদের কথায় মাথা উঁচিয়ে তাকায় তানজিফ। একমনে মোবাইল চাপছিল সে। পুষ্পিতার দিকে তাকাতেই নজর আটকে যায় তার।
গোসলের পর মানুষ স্নিগ্ধ হয়ে যায়। না থাকে সৌন্দর্য বাড়ানোর বাহ্যিক আস্তরণ আর থাকে ধুলোবালির প্রলেপ। চোখমুখ থাকে প্রফুল্ল। পুষ্পিতাকে স্নিগ্ধ, সতেজ দেখে তানজিফের চোখের তৃষ্ণা যে আরো কয়েক গুন বেড়ে গেলো। ব্যাকুল, তৃষ্ণার্ত চোখে তাকিয়ে রইলো অনিমেষ। আচমকা কলিংবেলের আওয়াজে সম্বিত ফিরে পেল। সামলে নিলো নিজেকে তারপরও বেহায়া চোখ শুধু পুষ্পিতার দিকে চলে যায়।

‘মনে হয় মায়ান এসেছে।’

‘ফারদিনের টিচার?’ প্রশ্ন করলেন সুমনা হক।

‘হুম’ বলে সদর দরজার দিকে এগিয়ে গেলেন আফসানা হক।

‘ওহ’ বলে তিনি পুষ্পিতার হাতটা শক্ত করে ধরলেন। আদেশের স্বরে পুনশ্চ বললেন,

‘পহেলা বৈশাখ বলে আমি তোর জন্য একটা শাড়ি এনেছি। সেটাই পড়বি এখন তুই।’ বলেই টেনে নিয়ে গেলেন রুমে।

_______________________

খোলা চুল, ছেড়ে দেওয়া আঁচল৷ লাল জামদানিতে বেশ মানিয়েছে পুষ্পিতাকে। সুমনা এহমাদ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে পুষ্পিতার কনিষ্ঠ আঙুলে আস্তে করে কামড় দিলেন।

‘কি করলে এটা আন্টি?’

‘নজর কাটালাম। যেন কারো নজর না লাগে তোর উপর। লাল শাড়িতে তোকে পুরো বউ বউ লাগছে।’

বউ বউ কথাটা শুনতেই লজ্জায় মিইয়ে গেলো।

‘লজ্জা না পেয়ে তাড়াতাড়ি চল। এখনি ডাক পড়ল বলে।’

দ্রুত পায়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন সুমনা এহমাদ। পুষ্পিতার ভীষণ লজ্জা করছে শাড়ি গায়ে সবার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে। মায়ানের কথা মনে হতেই লজ্জায় আরো আড়ষ্ট হয়ে গেলো।

ধীরস্থির পায়ে ড্রয়িংরুমে এসে দাঁড়াল সে। তার উপস্থিতি এখনো কেউ টের পায়নি। পুষ্পিতা তিতিরের দৃষ্টিগোচর হতেই প্রশ্ন করলো,

‘আপু আজ কি তোমার বিয়ে?’

পিলে চমকে উঠে তার। প্রগাঢ় ত্রপায় মাথা নুইয়ে মেঝে খুঁটতে থাকে। সবার দিকে তাকাতে তার কেমন অস্বস্তি হচ্ছে।

কয়েক সেকেন্ডের জন্য যেন তানজিফের হৃদ ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলো। নিঃশ্বাস নেওয়ার গতি সে টের পাচ্ছে না। নিঃশ্বাস যেন থেমে গিয়েছে কোথাও। পুষ্পিতা মাথা উঁচিয়ে মায়ানের দিকে চাইল। পুষ্পিতার দৃষ্টি অনুসরণ করে তানজিফও সেদিকে দৃষ্টিপাত করল। মায়ানের দিকে চোখ যেতেই বুক গলিয়ে বেরিয়ে এলো দীর্ঘ নিঃশ্বাস। চোখ বুঁজে নিজেকে নিজে বলল, ‘নিষিদ্ধ বস্তুর দিকে ঝোঁক বাড়াস না। শেষে কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পাবি না।’

‘কেন বিয়ে ছাড়া কি শাড়ি পড়তে মানা?’ সুমনা এহমাদ নিজের মেয়েকে প্রশ্ন করলেন।

‘তাহলে আপু লাল শাড়ি কেন পড়েছে?’

সেইদিকে মন নেই মায়ানের। শাড়ি পরিহিত পুষ্পিতাকে দেখে থমকে গেলো মায়ান। এক মুহুর্তের জন্য যেন থেমে গেল তার ঘড়ির কাঁটা। মায়ানের খুব ইচ্ছে করছে তার পুষ্পিতা নামক মেয়েটাকে একটু ছুঁয়ে দিতে। কপালে ছোট্ট একটা উষ্ম স্পর্শ দিয়ে আবেগী গলায় বলতে, ‘আমি রোজ আপনার প্রেমে পড়তে চাই নতুন করে নতুনভাবে। থাকবেন শেষ পর্যন্ত?’ তবে জনসমম্মুখে এসব করা যাবে না ভেবেই তপ্ত শ্বাস ফেলে । সে কখনো পুষ্পিতাকে শাড়িতে দেখেনি। আর না কখনো আবদার করেছে শাড়ি পড়ার। এমনিতেই পুষ্পিতার প্রেমে সে আ’হ’ত। শাড়িতে পুষ্পিতাকে দেখে সে নি’হ’তই হ’য়ে যাবে।

কাশির শব্দে গাঢ় চিন্তায় ছেদ পড়ে মায়ানের। বার কয়েক পলক ফেলে তানজিফের দিকে তাকাল। তানজিফ একগাল হেসে বলল,

‘কোথায় হারিয়ে গেলেন স্যার?’ তানজিফের প্রশ্নে বিস্তীর্ণ হাসলো মায়ান।

‘কোথায় হারাবো এখানেই তো আছি।’

তানজিফ পুষ্পিতার দিকে চেয়ে শুঁকনো কন্ঠে বলল,

‘তা তো দেখতেই পাচ্ছি। কখন থেকে ডাকছে খাওয়ার জন্য চলুন।’

মায়ান লাজুক হেসে জবাব দিল,

‘চলুন।’

______________________

কানে মোবাইল ঠেকিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে পুষ্পিতা। মায়ানও কিছু বলছে না আর সেও না। নিঃশ্বাসের আধ্বান কর্ণকুহরে ধাক্কা দিচ্ছে বারংবার। নিস্তব্ধতাকে বিদায় জানাল মায়ান। খুব নরম স্বরে প্রশ্ন করলো,

‘তানজিফ নামের ছেলেটাকে আপনাকে পছন্দ করে। তাই না ফুলবানু?’

মায়ানের প্রশ্নে স্তম্ভিত পুষ্পিতা। হকচকিয়ে গেল সে। জবাব না দিয়ে একেবারে নিসাড়া রইলো।

‘উত্তর দিচ্ছেন না যে?’

নির্জীব পুষ্পিতা বিষন্ন স্বরে জবাব দিল, ‘হুম।’

‘একে তো ছেলেটা বেশ স্মার্ট। আপনাদের স্ট্যাটাসের সাথে যায়। তার উপর ছেলেটা আন্টির বান্ধবীর ছেলে। বাবা ব্যবসায়ী। পারিবারিক ভাবে সচ্ছল। এমন একটা ছেলেকে ছেড়ে আমাকে কেন চয়েজ করলেন?’

‘দেখতে স্মার্ট আর বাবার টাকা থাকলেই যে ভালোবাসতে হবে এমনটা তো কোনো সংবিধানে লেখা নেই। তাই না? আমি যাকে অনুভব করবো নিশ্চয়ই তাকেই ভালোবাসি। চোখ বন্ধ করলে আমি যাকে অনুভব করি তার সাথেই আছি আমি’

‘কতদিন হলো আপনাকে পছন্দ করে?’

‘অনেক বছর। সেই কলেজ লাইফ থেকে।’

‘এতোদিন বলেন কেন আমাকে উনার কথা?’

‘আপনি যদি,,,,,,,,,

‘ইনসিকিউরড ফিল করবো তাই?’

‘হয়তো বা।’

শব্দবহুল হাসলো মায়ান।

‘এতোটা বোকা আমি নই। তাকে পছন্দ করার হলে ভালোবাসার হলে নিশ্চয়ই আমার কাছে আসতেন না। আমার হতেন না কখনো।’

‘আপনি বুঝলেন কি করে তানজিফ যে আমাকে পছন্দ করে?’

‘আমি উনার চোখে কখনো দেখেছি মুগ্ধতা। আবার কখনো দেখেছি চোখ জোড়ায় তৃষ্ণা। আবার কখনো ভেসে উঠেছে হাহাকার।’

‘এক আকাশসম মুগ্ধতা আপনি তাকিয়ে ছিলেন না?’

‘কিন্তু আমি যে দেখলাম কেউ তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে।’

হাসলো মায়ান।

‘আমাদের ব্যপারে উনি জানেন?’ প্রশ্ন করলো সে

‘হুম।’

‘হয়তো সেজন্য নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করেছেন তবে শত চেষ্টা করেও নিজেকে আটকে রাখতে পারেনি।’

‘ আপনার চোখে পড়েই গেলো। বাদ দিন এসব কথা। শিমুলের বিয়ের দিন তো চলে এলো।কবে বাড়ি যাচ্ছেন?’

‘বরের জন্য পছন্দ করা আংটি টা এখনো বানানো হয়নি। ওটা বানানো হলেই যাবো। কয়েকদিন আগেই যাওয়া লাগবে। আব্বা একা সব সামলে উঠতে পারবে না।’

‘তবে তাই করুন।’

‘ফুলবানু?’

‘জ্বি।’

‘আন্টি আঙ্কেল একটু বুঝিয়ে চলে আসুন না বিয়েতে।’

‘ওরে বাপরে। আমি কিছু বলতে গেলে মা টের পেয়ে যাবে। বলবে আমার এতো আগ্রহ কেন যাওয়ার জন্য। এমনিতে কোনো দাওয়াতে গেলে আমি আনইজি ফিল করি। এখন আগ্রহ দেখালে সন্দেহ করতে পারে।’

‘ওকে, আপনাকে একটা কথা বলা হয়নি ফুলবানু।’

কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে পুষ্পিতার। উদ্বিগ্ন, অধীর প্রশ্ন করলো,

‘কি কথা?’

‘এই অভাবের জীবনে আলহামদুলিল্লাহ যা চেয়েছি তাই কোনো না কোনোভাবে পেয়েছি। জীবনে আরো একটু সফলতা পাওয়ার জন্য আপনাদের কাউকে না জানিয়ে আরো একটা কাজ করেছি।’

‘কি কাজ?’

‘আপনার জন্য এটা বিগেস্ট সারপ্রাইজ ফুলবানু। আমি আপনাকে সামনা সামনি বলতে চাই । আমি দেখতে চাই খবরটা শোনার পর খুশিতে ছলছল করা আপনার দু-চোখ।’

‘চাকরি পেয়েছেন আপনি?’

‘ওহ্।’

‘তাহলে আমরা কাল দেখা করি।’

‘আগে বাড়ি থেকে আসি তারপর আপনার এক্সপ্রেশন আমি দেখবো।’

‘আপনি তো টেনশনে ফেলে দিলেন। যতদিন না বলবেন ততদিন শান্তিতে ঘুমোতেও পারবো না।’

‘সবুরে মেওয়া ফলে। একটু সবুর করুন। হয়তো পরিবর্তন আসবে আমাদের সম্পর্কে।’

____________________

শিমুলের বিয়ে শেষ অনেক দিন। মায়ান ঢাকা ফিরেছে আজ পাঁচদিন। গত পাঁচ দিনে মায়ানের মাঝে অনেক পার্থক্য খেয়াল করেছে পুষ্পিতা। সহজে কল রিসিভ করে না। নিজেও কল দেয় না। কখনো কখনো রিসিভ করে হা না বলে কল কেটে দেয়। ফারদিনকে পড়াতে আসে। পড়ানো শেষ হলে আবার চলে যায়। পুষ্পিতার দিকে তাকায় না অবদি। পুষ্পিতা কাতর নয়নে চেয়ে থাকে মায়ানের যাওয়ার পানে।

নিস্তব্ধ রজনী! আগে এই সময়টায় দুজন প্রেমালাপে মত্ত থাকতো। ভেবেই দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল পুষ্পিতা। মায়ানের নাম্বারটা কল লিস্ট থেকে বের করে ডায়াল করলো। রিং হলো কিন্তু রিসিভ হলো না। পুষ্পিতা আবার ডায়াল করলো। এবারও রিসিভ হলো না। একের পর এক কল দিয়েই গেলো সে। পুষ্পিতা দেখতে চায় মায়ান কতক্ষণ কল রিসিভ না করে থাকতে পারে। এক পর্যায়ে কল রিসিভ হলো। এক মুহুর্ত দেরি করলো না পুষ্পিতা। ভণিতা ছাড়াই জিজ্ঞেস করলো,

‘আপনি বলেছিলেন বাড়ি থেকে আসার পর আমাকে সারপ্রাইজ দিবেন। এটাই বুঝি সেই সারপ্রাইজ? আমাকে একটু একটু আপনার থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া?’

মায়ান নিশ্চুপ। কন্ঠনালী গলিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। গলা ধরে আসছে তার।

‘আমি আপনার কাছে কিছু জানতে চেয়েছি মায়ান। এভাবে চুপ করে থাকবেন। আপনার এই স্তব্ধতা আমাকে একেবারে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিচ্ছে। এমন সারপ্রাইজ আমার দরকার নেই মায়ান। আপনাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। আমাকে আপনার থেকে দূরে সরিয়ে দিবেন না। আমার ভীষণ কষ্ট হয় ভীষণ।’ বলতে বলতে কেঁদে দিলো পুষ্পিতা।

পুষ্পিতার কান্নার নিনাদ মায়ানের বুকে প্রকান্ড প্রলয়ের সূচনা করছে। হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নিরস গলায় বলল, ‘আপনি কাল দেখা করত পারবেন?’

চোখ মুছে নিলো পুষ্পিতা। স্বাভাবিক গলায় বলল,

‘কখন কোথায় আসতে হবে বলেন।’

‘বিকেলে আসবো কোনো একটা রেস্টুরেন্টে।’

কথা শেষ করে কপালে হাত ঠেকিয়ে শুয়ে রইলো মায়ান। অকস্মাৎ কারো হাতের স্পর্শে চমকে উঠে সে। হাত সরিয়ে আতিক কে দেখলো। উঠে বসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আতিক কে। আতিক সযত্নে মায়ানে পিঠে রাখল।

‘তুই মেয়েটাকে ছাড়া থাকতে পারবি?’

‘জানি না আমি কিছু জানি না। আমি শুধু জানি আমাকে থাকতে হবে।’ কন্ঠ কাঁপছে মায়ানের।

আতিক কে ছেড়ে দূরে বসল। পুনরায় বলল,

‘মেয়েটাকে ভালোবাসাই আমার দোষ ছিলো। যাদের কাঁধে দায়িত্ব থাকে তাদের ভালোবাসতে নেই।’

_______________

রেস্টুরেন্টের কাপল জোনে বসে আছে মায়ান আর পুষ্পিতা। খুব কাছাকাছি। যতটা কাছাকাছি থাকলে নিঃশ্বাস আছড়ে পড়ে গায়ে। প্রগাঢ় ত্রপায় আড়ষ্ট পুষ্পিতা। মাথা তুলে তাকাতে পারছে না।হাত কচলে চলেছে সমানে।

‘একটু দূরে গিয়ে বসুন। আর কাপল জোনে এনেছেন কেন?’

‘ভয় পাচ্ছেন আমার সাথে একান্তে সময় কাটাতে? যদি আমি উল্টো পাল্টা কিছু করে বসি তাই?’

‘তা না। আসলে আমার অস্বস্তি হচ্ছে। বাদ দিন। আমার সারপ্রাইজ কোথায়?’

‘সারপ্রাইজ দিলেই তো সবকিছু শেষ।’

‘বুঝলাম না?’ ভ্রু কুঞ্চিত করে বলল পুষ্পিতা।

মায়ান কিছু না বলে আচমকাই পুষ্পিতাকে বলিষ্ঠ হাতে শক্ত করে আঁকড়ে ধরলো।

দৃঢ় আলিঙ্গনে থমকে গেলো পুষ্পিতা। চোখ দু’টো কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম। নিঃশ্বাস উঠানামা করছে খুব দ্রুত গতিতে।

‘আপনার কিছু হয়েছে?’

মাথা ঝাকায় মায়ান।

‘তাহলে এমন অদ্ভুত ব্যবহার করছেন কেন আপনি? আমার কিন্তু ভালো ঠেকছে না। আমার কিন্তু এখন চিন্তা হচ্ছে।’

পুষ্পিতাকে ছেড়ে দিলো মায়ান। একটু দূরে গিয়ে বসল। পুষ্পিতার আঙুলের ভাঁজে আঙুল গলিয়ে দৃঢ়নিষ্ঠ, পোক্ত হাতে ধরল হাত। দৃষ্টি নিবদ্ধ করল পুষ্পিতার চোখে। পুষ্পিতা অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। দৃষ্টি নত করতেই অনুরোধ করল মায়ান।

‘চাহনি নত করবেন না প্লিজ। তাকিয়ে থাকুন। আপনার এই চাহনি আমার পুঁজি।’

মায়ানের কথার মানে বুঝলো না পুষ্পিতা। বিমূঢ় চোখে তাকিয়ে মায়ানের চোখের দিকে।

______________________

ভিসা পাসপোর্ট হাতে নিয়ে এয়ারপোর্টে বসে আছে মায়ান। আতিক ছাড়া কেউ নেই তার সাথে। এনাউন্সমেন্ট হলো আতিক মায়ানের পিঠে হাত রাখল।

‘এটাই আমাদের শেষ দেখা দুস্ত। আর কখনো আমাদের এক রুমে থাকা হবে না। নিজের যত্ন নিতে ভুলিস না। আমিও হয়তো পাড়ি জমাবো জীবিকার তাগিদে অন্য কোথাও। যদি বেঁচে থাকি দেশে আসলে কল করিস দেখা করবো।’

‘আমার ফুলবানু আতিক। ওকে ছেড়ে যাচ্ছি আমি। আর কখনো আহ্লাদ করে ডাকা হবে না ফুলবানু।’

‘মেয়েটাকে সব খুলে বললেই পারতি। হয়তো কোনো বুদ্ধি দিতো।’

‘আমার মতো স্বার্থপর ছেলেকে ও ডিজার্ভ করে না।
ও বেস্ট কাউকে ডিজার্ভ করে। যে সবকিছুর উর্ধে গিয়ে শুধু ওকেই চাইবে। আমি তো হেরে গেলাম নিজের ভালোবাসার কাছে।’

মোবাইল থেকে পুষ্পিতার একটা ছবি বের করলো মায়ান। ছবিটার দিকে তাকিয়ে বিষন্ন হাসলো সে।

‘আপনার আর আমার দূরত্ব দেশান্তরের না। এই দূরত্ব আমাদের আজন্ম। আমাদের সন্ধি মেয়াদ হয়তো এতটুকুই ছিলো। আপনার বিশ্বাস ভেঙেছি। আপনার কষ্টের কারণ হয়েছি। আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।’
#অতঃপর_সন্ধি (১৪)
#রূপন্তি রাহমান (ছদ্মনাম)

আফসানা হক তেলের বোতল নিয়ে এলেন পুষ্পিতার রুমে। পুষ্পিতা মোবাইল সামনে রেখে অনিমিখ তাকিয়ে আছে। চোখে মুখে চিন্তার ছাপ। মায়ানের সাথে কথা হয় না বেশ কয়েক দিন। সেজন্য অনলাইনেও তেমন একটা যাওয়া হয় না।

‘পুষ্পি আয় মাথায় তেল দিয়ে দিবো। তোর চুলগুলো কেমন উড়ছে।’

অকস্মাৎ আফসানা হকের ডাকে চমকে উঠে সে। নাক সিটকে বলে,

‘তেল ফেল নিয়ে যাও তো মা। তেল দিলে আমাকে কেমন আবুল আবুল লাগে।’

‘তেল দিলে মাথা ঠান্ডা থাকে। চুল ভালো থাকে। চুলের খাবারই তো তেল।’

‘উফ্ যাও তো মা৷ আমি তেল দিবো না।’

‘হালকা করে দিয়ে দিবো। আয়।’

‘দিবো না আমি।’

আফসানা হক চোখ রাঙানি দিতে পুষ্পিতা মুখ কালো করে উনার সামনে এসে বসল।

আফসানা হক সযত্নে, পরম মমতায় পুষ্পিতার মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছেন। আরাম বোধ হতেই আবেশে চোখ বুঁজে রইলো পুষ্পিতা। ঘুম পাচ্ছে তার।

‘মা, ফারদিনের টিচার কেন আসছে না? কয়দিন পর তো ওর অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা।’

আফসানা হক বিলি দিতে দিতে জবাব দিলেন,

‘মায়ান তো আর আসবে না। ও তো স্কলারশিপে জাপান গেল পরশু সন্ধ্যায়।’

পুষ্পিতা স্তম্ভিত, বিস্মিত, হতবাক। মাথা কিঞ্চিৎ উঁচু করে বিমূঢ় চোখে আফসানা হকের দিকে তাকিয়ে রইলো। আফসানা হক যত সহজে বললেন কথাটা পুষ্পিতার জন্য ততটা সহজ ছিলো না কথাটা শুনা। হতবিহ্বল হয়ে প্রশ্ন করলো,

‘কি বলছো তুমি?’

‘যা সত্যি তাই বলছি।’

মুখ পাংশুটে বর্ণ ধারণ করে পুষ্পিতা। উদাসীন, আবেগশূন্য, নির্লিপ্ত কণ্ঠে বিড়বিড় করে আওড়াল,

‘আমাকে যে বলল এই কয়েকদিন কাজের ভীষণ চাপ থাকবে। কথা বলতে পারবে না একদম।’

আফসানা হক কপালে ভাঁজ ফেলে প্রশ্ন করেন, ‘কিছু বললি কি?’

নিষ্প্রাণ হেসে জবাব দিল,

‘কিছু না তো। তুমি তো বললে না উনি যে স্কলারশিপ পেয়েছে।’

‘তোকে এসব বললেই তো তুই বলবি আমি অন্যের সাথে তোর তুলনা দেই। অন্যের সন্তানকে আমি মেধাবী মনে করি। আরো কত কি। সেজন্য কিছু বলেনি।’

পুষ্পিতা পুনরায় আফসানা হকের হাঁটুতে মাথা রাখল। মস্তিষ্কের ভাবনা, কল্পনা সবকিছু যেন মুহুর্তেই শূন্যে মিলিয়ে গেলো তার। অনুভূতিশূন্য চক্ষে চেয়ে রইলো দেয়ালে থাকা টিকটিকির দিকে।

_____________________

ভরসন্ধ্যা! আফসানা হক পুষ্পিতার মাথায় তেল দিয়ে গিয়েছেন ঘন্টাখানেক হবে। তেল দেওয়ার জন্য কারনে ভ্যাপসা গরম লাগছে তার। বার বার মায়ানের ব্যপারটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এতোকিছু করে ফেলল তাকে একবার জানালো না পর্যন্ত। স্কলারশিপের জন্য নিশ্চয়ই অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিল। আর তাকে বুঝতে অব্দি দিলো না। ইতোমধ্যে পুষ্পিতা মায়ানের বাংলাদেশের নাম্বারে কল দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছে। নাম্বার বন্ধ থাকবে জেনেও দিয়েছে। যদি কেউ রিসিভ করে তাহলে তো একটু হলেও খবর জানতে পারবে।

ব্যর্থ হয়ে সে আতিকের আইডিতে মেসেজ দিলো। মেসেজ ডেলিভারড হলো, সীন হলো কিন্তু রিপ্লাই আসলো না। কোনোদিক থেকেই কোনো আশানুরূপ ফল পেলো। অশান্ত, উদ্বিগ্ন মনকে সান্ত্বনা দিতে লাগল এই বলে যে, মায়ান বলেছিল তাকে সারপ্রাইজ দিবে।হয়তো ক্ষনস্থায়ী দূরত্বে তার চোখ ভিজবে বলে কিছু বলেনি।

তবে চিন্তিত মন যে উত্তর জানার আশায় ব্যাকুল তা কি মায়ান জানে? হয়তো জানে না।

পুষ্পিতার ভাবনাচ্ছেদ হয় রিংটোনের শব্দে। রিসিভ করে মোবাইল কানে ঠেকাতেই ওপাশ থেকে ভেসে এলো জারিনের কর্কশ গলার স্বর।

‘এই ফাজিল বেডি, এতো ভালো খবরটা আমার থেকে কেমনে চেপে গেলি?’

নিরস স্বরে পুষ্পিতা ফিরতি প্রশ্ন করলো,

‘কি ভালো খবর?’

‘মায়ান ভাই যে স্কলারশিপে জাপান গেলো বললি না কেন? ট্রিট চাইবো বলে?’

‘তুই জানলি কেমন করে?’

‘তুই কি ভেবেছিস তুই না বললে আমি জানতে পারবো না? মায়ান ভাই একটু আগে তার আইডিতে পোস্ট করেছে।’

জারিনের বলতে দেরি আর পুষ্পিতার কল কে’টে ফেসবুকে লগইন করতে দেরি হলো না। এই তো মিনিট পঁচিশ আগে মায়ান পোস্ট করেছে। ক্যাপশন; স্বপ্ন কে ছুঁয়ে দেওয়ার আশায় ভিনদেশের মাটিতে পা রাখলাম।

মায়ানকে ছবিতে বড্ড প্রফুল্ল লাগছে। স্বপ্ন পূরণের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে বলে চোখে মুখে উপচে পড়া আনন্দ। পুষ্পিতার চোখ ছলছল করে উঠলো। আর একটা সেকেন্ডও ব্যয় করলো না। মেসেঞ্জারে গিয়ে সোজা কল দিলো মায়ানকে। পুষ্পিতার বুক দুরুদুরু করছে। শরীর কাঁপছে ক্ষীণ। একেবারে শেষ মুহুর্তে গিয়ে রিসিভ করলো মায়ান।

‘খবরটা জানার অধিকার বোধ হয় আমারও একটু ছিলো। তাই না মায়ান?’

নিরুত্তর রইলো মায়ান। শুধু মায়ানের নিঃশ্বাসের আধ্বান শুনা যাচ্ছে। কাঁপা কাঁপা গলায় পুনরায় বলল,

‘চুপ না থেকে জবাব দিন না মায়ান। আমার না বড্ড ভয় হচ্ছে। আপনাকে হারিয়ে ফেলার ভয়।’

মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না মায়ানের। গলাটা তৃষ্ণার্ত পথিকের মতো শুকিয়ে কাঠ। মনে হচ্ছে কেউ সেই গলায় চেপে ধরেছে শক্ত করে। ছলছল চোখ জোড়া বন্ধ করে নিতেই গাল ছুঁয়ে দিলো অশ্রুকণা। নিজের কান্নামাখা কন্ঠ শুনাতে চাইলো না পুষ্পিতা। রুমে চোখ বুলিয়ে পানি খুঁজলো। পেয়েও গেলো। কান থেকে মোবাইল দূরে সরিয়ে ঢগঢগ করে খেয়ে নিলো পানি টা।

‘আপনাকে জানানোর অধিকার মানে? আপনি আমার রক্তের কেউ?’

‘আপনি কি আমার সাথে ফাইজলামি করছেন?’

‘মোটেও না। যখন আমি জাপানে আসার উদ্দেশ্যে প্লেনে উঠেছি তখনই আমাদের মাঝে থাকা সম্পর্কের ইতি ঘটেছে।’

‘ স্যরি হাসতে পারলাম না। খুব বাজে জোক্স ছিলো।’

‘ইট’স নট আ জোক। যে আপনাকে হাসতে হবে পুষ্পিতা। আই’ম সিরিয়াস। আপনার আর আমার করা সন্ধির বিচ্ছেদ ঘটেছে। এন্ড এটাই রিয়েলিটি।’ হৃদয় দ্বিখণ্ডিত একেকটা কথা বলতে বুক কাঁপছে মায়ানের। বিচ্ছেদের অসহনীয় যন্ত্রণায় হাহাকার করছে অন্তঃস্থল।

‘আপনি বলেছিলেন আমাকে সারপ্রাইজ দিবেন। এটাই যদি সারপ্রাইজ হয় তবে বলবো খুব লেইম সারপ্রাইজ এটা।’

‘এই আপনি বাংলা বুঝেন না?’ চিৎকার করে বলল মায়ান।

‘আপনি আমার সাথে সম্পর্ক ছেদ করলেন অথচ আমিই জানি না। এটা জোক্স নয়?’

‘আপনার কাছে জোক্স মনে হতে পারে তবে আমার কাছে এটাই বাস্তবতা।’

‘মায়ান,নারীর অভিমান কিন্তু খুব গভীর হয়। এরা একবার অভিমান করলে বছর লেগে যায় অভিমান ভাঙতে।’

নিস্তবদ্ধ হাসলো মায়ান। হাসির শব্দ পুষ্পিতার কান পর্যন্ত পৌঁছালো না। ভিনদেশে মায়ানের হৃদয়বেদনা পুষ্পিতা কখনো দেখবে না আর না কখনো জানবে। শুধু দেখবে মায়ানের উপরের কঠিন, শক্ত খোলস। নিজের কন্ঠ গম্ভীর রাখার যথেষ্ট চেষ্টা করছে মায়ান। কন্ঠ আর মনের দূর্বলতা বুঝতে দিলে চলবে না পুষ্পিতাকে। দূরে সরাতে হবে। যতটা দূরে সরালে আবারও সন্ধি হওয়ার ভয় থাকবে না।

‘আপনি অভিমান করেন আর যাই করেন আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আপনি আর আমি এখন ভিন্ন পথের পথিক। রাস্তা আলাদা আমাদের। কোনো এক সময় হয়তো ভুলক্রমে এক হয়ে গিয়েছিল।’

‘আসলেই আপনার কিছু যায় আসে না?’

মায়ান খুব করে বলতে চাইলো, ‘যায় আসে আমার যায় আসে। আপনি অভিমান করলে আমার পাগল পাগল লাগে। আপনার মাতাল করা কন্ঠস্বর যে আমার মন ভালো করার ঔষধ।’ তবে তা মুখে প্রকাশ করতে পারলো না। মুখে প্রকাশ কঠিন একটা শব্দ। ‘না।’

স্তব্ধ হয়ে গেলো পুষ্পিতা। বোকা বনে গেলো সে মায়ানের উত্তরে। মুখে আর কোনো রাঁ নেই তার। এতো বড় মানসিক চাপটা সে আর নিতে পারছে না। মাথাটা ভীষণ ব্যথা করছে তার।

‘দেখুন মায়ান, আমি কখনো আপনাকে প্রশ্ন করবো না কেন আপনি আমাকে স্কলারশিপের ব্যপারে বলেননি। কেন আমাকে না জানিয়ে দূরদেশ চলে গেলেন। মাঝপথে আমাকে একা করে দিবেন না। ম’রে যাবো আমি। একটু একটু করে ম’রে যাবো। সহ্য করতে পারবেন?’

ধঁক করে উঠলো মায়ানের অন্তর্দেশ।কান্নারা দলা পাকিয়ে ঠেলে বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইছে। তবে তাদের বাইরে আসতে দেওয়া যাবে না। দুচোখ বন্ধ করে মনে মনে আওড়াল, ‘বেঁচে তো থাকবেন আপনি।আপনার বিরহে একটু একটু করে ম’রে যাবো আমি। ভিনদেশে না পাবো পরিবার আর আপনার সঙ্গ। কেউ আমার অসুস্থতায় অস্থির হয়ে যাবে না। আর না কেউ আমাকে লুকিয়ে দেখবে। আমার চোখের মুগ্ধতা কে বিদায় জানিয়ে দিয়েছি ফুলবানু।’

‘আপনি দেশে আসা অব্দি আপনার জন্য অপেক্ষা করবো মায়ান।’

পুষ্পিতার কথায় ভাবনাচ্যুত হয় মায়ান।চোখ জোড়া বুঁজে কর্কশ, ঠেঁটা গলায় বলল,

‘অপেক্ষা করবেন কেন? আপনি অপেক্ষা করলে আমি আপনাকে বিয়ে করবো? নাকি আমার ব্রাইট ফিউচার দেখে আমাকে ছাড়তে চাইছেন না? আপনার বাবা মাও নাচতে নাচতে রাজি হয়ে যাবে?’

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here