অতঃপর_ভালোবাসি পর্ব ৭+৮

অতঃপর ভালোবাসি
Sumon Al-Farabi
৭ম পর্ব

আজ আঁচল আর রাহির বিয়ে। আঁচল শুধু একটা কথাই ভাবছে এটা কি সত্যি নাকি তার স্বপ্ন? তার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না যে আজ তার বিয়ে।

সারাদিন কিভাবে যেন কেটে গেলো। এখন রাত প্রায় ১০ টা। আঁচল ঘরে ঘোমটা দিয়ে বসে আছে। তখন ও তার মনে একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে সত্যি কি আমার বিয়ে হয়ে গেলো?
হঠাৎ তার মনে পড়লো অধরা আর আসরির কথা। রুম থেকে মাথা বের করে উঁকি দিয়ে দেখে রাহি, আরসি আর অধরাকে নি তার সকল বন্ধু কে বিদায় জানাচ্ছে । আঁচল আবার এসে বসে পড়লো।

একটু পরেই রাহী অধরা আর আসরি কে নিয়ে রুমে আসলো – আরসি আর অধরা কি এখানেই ঘুমাবে নাকি অন্য রুমে?
রাহীর কথা শুনে আঁচল রাহীর দিকে তাকালো। আঁচলের এখন কি বলা উচিত সত্যি সে জানে না।
আঁচলকে চুপ থাকতে দেখে রাহী বললো- তোমরা কি এখানে ঘুমাবে?
আরসি বললো- আমি আপুর সাথে ঘুমাবো।
আঁচল কিছু বলছে না, আরসি আর অধরা কে কাছে ডেকে নেওয়ার সাহস ও পাচ্ছে না ।
হঠাৎই রাহী বললো- একপাশে সরে বসুন এরা ঘুমাবে।
আঁচল একপাশে সরে বসলো। অধরা আর আরসি শুয়ে পড়ছে। আঁচল শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহীর দিকে নিজের বাসররাতে সে তার বোনদের প্রতি যে ভালোবাসা দেখালো সেটা যদি সব সময় থাকে তবে তার জীবনে রাহীর কাছে আর কিছু চাওয়ার থাকবে না ।
” আপনি ওদের ঘুম পাড়িয়ে দিন আমি ড্রয়িংরুমে আছি।
রাহী ড্রয়িংরুমে এসে টিভি অন করলো।
একটু পরেই রুম থেকে মাথা বের করে আঁচল ডাকলো- আসুন ওরা ঘুমিয়ে গেছে ।
রাহী টিভি বন্ধ করে চলে আসলো।
আঁচল রাহীর পাশে দাঁড়িয়ে আছে আর রাহী আরসি আর অধরার দিকে তাকিয়ে আছে – এই বিছানায় তো চারজনের জায়গা হবে না।
” হুম ।
” এখন কি করবো?
আঁচল কোনো কথা বললো না।
” ছাঁদে যাবেন? এখানে কথা বললে ওরা জেগে যাবে।
” হুম ।
আঁচলকে অবাক করে দিয়ে রাহী আচলকে কোলো তুলে নিলো। আঁচল এটার জন্য একেবারে প্রস্তুত ছিলো না ।

ছাঁদে এসে নামিয়ে দিলো। রাহী আজই প্রথম আঁচলকে লজ্জা পেতে দেখলো। নয়তো এতদিন শুধু লজ্জা লুকিয়ে নিজেকে বেহায়া প্রমাণ করতে ব্যাস্ত ছিলো।
লজ্জায় আঁচলের গালে হালকা লাল স্তরন পড়ে গেছে যেটা রাহীকে নিমিষেই মুগ্ধ করে দিচ্ছে ।

” আপনি লজ্জা পেলেও আপনাকে ভালো দেখায় সেটা জানেন কি?
” উহু।
” কেন আপনার আপনিকে সব সময় লুকিয়ে রাখতে চেষ্টা করেন?
” জানিনা। আপনি যে একজন যৌনকর্মী কে বিয়ে করলেন যখন সবাই জানতে পারবে আপনার লজ্জা করবে না?
” নাহ তো।
” কেন?
” লজ্জা হচ্ছে নারীর ভূষণ। সেটা যদি আমি পাই তবে নারী আর আমার মাঝে পার্থক্য থাকলো কি?
” এরমানে আপনি লজ্জা পান না?
” না। কারণ আমি সেই কাজটা করি যেটা আমার ভালো লাগে।
” বুঝলাম না ঠিক আপনার কথাটা?
” আমি কোনো কাজ করার আগে বা পরে আমি নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেস করি নিজের কাজ নিয়ে নিজেই সমালোচনায় মেতে উঠি। যদি এতে আমার মন থেকে কোনো অনুতাপ বা অনুসূচনা না আসে তবে সেই কাজটা নিঃসন্দেহে সঠিক । আর এমন কখনো হয় নি যে আমার কাছে নিজের কাজের জন্য আমার হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর লজ্জা তো সেই পুরুষ পায় যে জানে সে যে কাজটা করছে সেটা সঠিক নয়। আমি তো সঠিক কাজটাই করেছি তবে লজ্জা পেতে হবে কেন?
” একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
” হুম বলুন।
” বিয়েতে তো অনেকেই আসলো৷ সবাই শুনি আপনার বন্ধু।
” হুম
” আপনার বাবা মা?
” ওনারাও ছিলো তো।
” কই দেখলাম না তো।
রাহী আকাশের দিকে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিলো – ঐ যে ঐখানে।
” মানে?
” মানুষ যখন সবার কাছে প্রিয় হয়ে যায় তখন আল্লাহ ও তাকে নিজের প্রিয় করে নিজের কাছে ডেকে নেন। যেমন আব্বু আম্মুকে নিয়ে নিয়েছে ।

আঁচল আর কিছু বলতে পারলো না। আঁচল শেষ তার বাবাকে কান্না করতে দেখেছিলো যখন সে ক্লাস নাইনে। এরপর আজ রাহীকে কান্না করতে দেখছে সে।
আঁচল কাঁপা কাঁপা হাতে রাহীর চোখ মুছে দিতে যেই গালে স্পর্শ করলো আবার রাহীর শরীর কাটা দিয়ে উঠলো।
” কাঁদবেন না। জানেন তো ছেলেদের কাঁদতে নেই।
আঁচলের কথা শুনে রাহী আঁচলের হাত ধরে নামিয়ে দিলো।
” কেন? ছেলেদের কাঁদতে নেই কেন?
” ছেলেদের কান্না মানায় না.
” কেন? ছেলেদের কি মন নেই? ছেলেদের কি আবেগ অনুভূতি নেই। মেয়েদের থেকে ছেলেদের আবেগ অনুভূতিটা একটু বেশি। কিন্তু তারা কখনো প্রকাশ করতে পারে না। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে তারা প্রকাশ করে না। সমাজে যখন একটা নারী কান্না করে তখন তাকে নিয়ে কোনো মজা করা হয় না। কিন্তু একজন পুরুষ কান্না করলেই তাকে নিয়ে মজা করা হয়। তামাশা করা হয়। দেখো ছেলেটা মেয়েদের মতো কান্না করছে। কেন? ছেলেদের কষ্ট হয় না? যেখানে নারী কান্না করলে সহানুভূতি দেখানো হয় সেখানে পুরুষ কান্না করলে তামাশা । কিন্তু নারীরা অল্পতেই কান্না করে পুরুষ তখনেই কান্না করে যখন তার পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়। তবুও সে কোনো সহানুভূতি পায় না।
” হুম।
” জানেন বর্তমানে দেশে প্রতিদিন গড়ে ২৮ জন সুইসাইড করছে। যার মাঝে ৭৫% পুরুষ । এর কারণ শুধু একটাই । নারীরা কান্না করে নিজের মনটাকে হালকা করতে পারে কিন্তু পুরুষ সেটা পারে না। কান্না লুকিয়ে হাসতে থাকা যে কতটা কষ্ট সেটা খুব কম সংখ্যক নারী জানে। কিন্তু প্রতিটা পুরুষ প্রতি নিয়ত এই কাজটা করে। যখন সে নিজের মাঝে নিজেই দুমড়ে মুচড়ে যায় তখন সে বাধ্য হয়ে নিজের জীবন থেকে নিজেই নিজেকে মুক্তি দেয়। প্রতিটি মানুষ জীবনের কোনো না কোনো এক সময় একবার হলেও নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানে থেকে অনেকেই ফিরে আসতে পারে আবার অনেকে মৃত্যু কে কাছে টেনে নেয়।
” কিন্তু সুইসাইড তো কখনো কোনো সমাধান হতে পারে না তাই না?
চোখের পানি এখনো শুকায় নি তবুও আঁচলের কথায় হেসে দিলো রাহী।
” আপনি এই কথা বলছেন? আপনি নিজেও সুইসাইড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

আঁচল আর কিছু বললো না ।
” আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ নিয়ামত হচ্ছে জীবন। সেটা মানুষ কিভাবে নিজের হাতে শেষ করে দেয়? আজ খারাপ যাচ্ছে কিন্তু আগামী কাল সূর্য তো উঠতেও পারে। সারাদিন বৃষ্টি ঝড় হওয়ার পর যখন সবাই ভাবে আগামী কয়েকদিন সূর্যের দেখা পাওয়া দায় সেখানে বিকেলেই আবার শরীর পোড়ানো রোদের দেখা মেলে। আজ হয়তো আল্লাহ কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছে। কিন্তু তাই জন্য এটা নয় যে সারাজীবন একরকম থাকবে। আমাদের বাবা মা যারা আমাদের পৃথিবীতে নিয়ে এসেছে তারা আমাদের ভালোবেসে কতো কিছু করে তবে যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তিনি আমাদের কতটা ভালোবাসতে পারেন একবার কল্পনা করা দরকার । তাই আপনাকে শুধু একটা কথাই বলবো পরবর্তী জীবনে যতই কষ্ট আসুক না কেন কখনো সুইসাইড করার সিদ্ধান্ত নিবেন না।
” আপনি সব কিছু এতটা সহজ ভাবে কি করে নেন?
” কারণ জীবন আমার সহজ ভাবে সব কিছু নিলে জীবন সহজ হয়ে যাবে আর কঠিন করে নিলে জীবন কঠিন হয়ে যাবে তাই কি দরকার জীবন কঠিন করার।
” হুম। ঘুমাবেন না?
” আপনি গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। ওখানে তো চারজনের জায়গা হবে না। আমি না হয় অন্য রুমে গিয়ে শুয়ে পড়বো।
” আচ্ছা ।
আঁচল চলে গেলো। একটু পরে রাহীও চলে আসলো।
একবার রুমের দিকে উঁকি দিয়ে দেখলো আঁচল চোখ বুজেছে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে পাশের রুমে চলে আসলো।
অতঃপর ভালোবাসি
Sumon Al-Farabi
৮ম পর্ব

কি যেন একটা স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে গেলো রাহীর। চোখ খুলতেই সামনে আঁচল কে দেখতে পেলো। আঁচল তো কাল ঐ রুমে ঘুমিয়েছিল। হয়তো রাতে আসছে। জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে আবছা আলোর আভা আসছে ।
মেয়েটা গুটিশুটি হয়ে শুয়ে আছে। রাহী কাথাটা আঁচলের গায়ে মুড়িয়ে দিয়ে ছাঁদে চলে আসলো।
কখনো ১০ টার আগে ওঠা হয় না। আজ যখন এতো সকালে ঘুম ভেঙে গেলো তাই সকালের মনোরোম আবহাওয়া টা হাতছাড়া করতে চাইলো না রাহী।

ছাঁদে এসে দুই হাত মেলে দাঁড়ালো। মুক্ত বিহঙ্গ। ইশশ যদি উড়তে পারতাম তবে এক পলকে এই মৃত শহরের এক পাশ থেকে অন্য পাশ ছুয়ে আসতাম ।

অনেক দিন বুক ডাউন দেওয়া হয় না। আজ দেখি কয়টা দিতে পারি। কিন্তু না তিনবার দেওয়ার পর ওখানেই শুয়ে পড়লো রাহী। এগুলো প্রতিদিন অনুশীলনের ব্যাপার হঠাৎ হবে না ।

” আপনার চা।
কথাটা শুনে রাহী রিতীমত ভয় পেয়ে গেছে। পিছনে তাকিয়ে দেখে আঁচল চা হাতে দাঁড়িয়ে আছে ।
” আপনি কখন উঠলেন?
” যখন আপনি উঠেছেন।।
” ওহহ। সকালের পরিবেশ টা সুন্দর না?
” হুম ।
” চলুন না হেঁটে আসি একটু।
রাহী কথাটা বলে আঁচলের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে তার অভয় পাওয়ার জন্য।
আঁচল মুচকি হেঁসে বললো- আচ্ছা চলুন।

ব্যাস্ত শহর ঘুমের কোলে। রাস্তার কুকুরটিও তার পরিবার নিয়ে অঘোরে শুয়ে আছে । মাঝে মাঝে দুই একজন মানুষের দেখা মেলছে তারাও হয়তো তাদের মতো হঠাৎ ভোরের সাথী নয়তো বহুমূত্র রোগ বহন কারী।

শেষ কলেজ জীবনে এভাবে ভোরে রাস্তা দিয়ে হেঁটেছি। রাহী কথাটা বলে আঁচলের দিকে তাকালো।
” এরপর আর কখনো হাটেন নি?
” না। কলেজ জীবনে একটা মেয়ের পিছনে পিছনে আসতাম তাই ভোরে উঠে তার পিছু নিতাম। তখন সে প্রাইভেট যেতো।।
কথাটা শুনে আঁচলের কেন জানি একটু খারাপ লাগছে । রাহী কেন অন্য মেয়ের পিছনে পিছনে যাবে?
আসলে মেয়ে জাতি দুঃখিত মেয়ে জাতি না। ভালোবাসা জিনিসটাই এমন, যার প্রতি বিন্দু মাত্র ভালোবাসা আছে তাকে অন্য কারো সাথে সহ্য করা অসম্ভব। সেটা হোক অতীত বর্তমান বা ভবিষ্যৎ।।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও আঁচল জিজ্ঞেস করলো – তারপর ।।
” মেয়েটার সাথে প্রেম ও হয়ে যায়। ওটা ছিলো আমার জীবনের প্রথম আর শেষ প্রেম। এরপর তো আপনাকে বিয়ে করলাম ।।
” ছাড়াছাড়ি হলো কিভাবে?
” আমি ওকে বলেছিলাম কখনো এটা ভেবে আমার সাথে সম্পর্ক কন্টিনিউ করবা না যে তুমি চলে গেলে আমি কষ্ট পাবো। ততদিন পর্যন্ত ভালোবাসবা যতদিন তোমার মনে আমার জন্য ভালোবাসা থাকবে । আর যদি কখনো তোমার জীবনে অন্য কেউ আসে তবে তুমি প্রথম আমায় জানাবে।
‘ “তারপর
” তারপর একদিন সে এসে বললো তার আমার সাথে থাকা সম্ভব নয়। সে অন্য কাউকে ভালোবাসে।
” আপনি তাকে আটকান নি?
” না।
” কেন?
” কারণ জোর করে আটকালে ভালোবাসা পাওয়া যায় না। আর আমি ব্যার্থ ছিলাম তাকে পর্যাপ্ত ভালোবাসা দিতে পারি নি তাই জন্য হয়তো সে অন্য কারো ভালোবাসায় মায়া জড়িয়েছে ।।
” ওহ।
” তবে সে আমায় ছেড়ে গেছে এটাতে আমার কোনো দুঃখ নেই কিন্তু সে টাকার জন্য আমায় ছেড়ে গেছে এটাতে আমার খুব কষ্ট হয়। যদি সে ভালোবাসার জন্য আমায় ছেড়ে যেতো তবে আমি হাসি মুখে তাকে আজও স্বরন করতাম।
” ওহহ। তাহলে এটাই আপনার প্রাক্তনের প্রতি অভিযোগ?
” উহু। অভিযোগ না।। এটা অভিমান বলতে পারেন।। ভালোবাসায় অভিযোগ বলতে কিছু হয় না।। যা হয় সেটা অভিমান আর অনুভব। আর যদি অভিযোগ থাকে তবে সেটা ভালোবাসার সম্পর্ক হতে পারে না।
” কেন? প্রিয় মানুষটার উপর তো অভিযোগ থাকতেই পারে।
” না, পারে না । অভিযোগ কেবল অপরাধীর উপরেই থাকে।
” হুম
” আচ্ছা আমার কথা বাদ দিন। আপনার স্বপ্ন কি?
” আমার নিজের কোনো স্বপ্ন নেই। তবে যদি কখনো সুযোগ পাই তাহলে পতিতা-দের জন্য কিছু করার চেষ্টা করবো। যাদেরকে সমাজ পতিতা হতে বাধ্য করেছে ।
” কি করতে চান?
” তাদের বসবাসের জন্য আবাসস্থল এবং তাদের জন্য কর্মস্থল।
” আচ্ছা । আমি আপনাকে সাহায্য করবো ইনশাআল্লাহ।
” এটা করতে অনেক টাকা লাগবে। আপনি এতো টাকা কই পাবেন?
রাহী আঁচলের দিকে তাকিয়ে শুধু মুচকি একটা হাসি দিলো।
আঁচল শুধু রাহীর রহস্যময় হাসির দিকে চেয়ে থাকলো। হসিটার মাঝে গভীর রহস্য দেখতে পেলো রাহী। একটু পরেই সে রহস্য টা বাদ দিয়ে শুধু হাসিটা নিয়ে ভাবতে লাগলো। এই ছেলে হাসি দিয়ে হাজারো মন ঘায়েল করতে পারবে।

একটু পরে যখন সূর্য উঁকি দিয়ে তাকালো। আঁচল ও রাহী বাসায় ফিরে আসলো।
এসে দেখে অধরা আর আরসি বসে টিভি দেখছে।
” তোমরা কখন উঠলা?
“একটু আগেই।
আরসি আঁচলকে বললো- আপু ক্ষুধা পাইছে
রাহীও আরসির সাথে বললো- আমারও ক্ষুধা পাইছে কিন্তু।
আঁচল রাহীর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। বাচ্চাদের সাথে তাল দিতে দেখে।
” তোমরা টিভি দেখো আমি রান্না করছি।

সকালের খাওয়া শেষ করে রাহী আঁচল অধরা আর আরসি কে নিয়ে বাইরে গেলো। সারাদিন ঘুরলো আসার আগে আগে রাতের খাবার বাইরে খেয়ে শপিং করে বাসায় আসলো।
রাহী এর মাঝে একটা খাটও নিয়ে নিয়েছে যেটাতে চারজন একসাথে থাকতে পারবে।

আরসি আর অধরা শুয়ে পড়ছে। সারাদিন ঘুরাঘুরির জন্য শরীর খুবই ক্লান্ত তাই শোয়ার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়ছে।
” আপনি ঘুমাবেন না?
” এখন না। আপনি ঘুমান আমি একটু আব্বু আম্মুর সাথে দেখা করে আসি।
আঁচল আর কিছু বললো না । রাহী চলে গেলো।
রাহীর পিছনে পিছনে আঁচল ও ছাঁদে চলে আসলো।
” আপনি কি প্রতিদিন এখানে দাঁড়িয়ে থাকেন?
” হুম। আব্বু আম্মুর সাথে দেখা করি।।
” হুম ।
” আচ্ছা আপনি কি আমায় মন থেকে স্বামী হিসাবে মেনে নিয়েছেন?
” হুম । কেন?
” তাই জিজ্ঞেস করলাম ।। আমি যদি আপনার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করি তবে কি আপনি সেটা মন থেকে মেনে নিবেন নাকি স্বামী জন্য মেনে নিবেন?
” মন থেকেই। আবার স্বামী হিসাবেও। কিন্তু এসব জানতে চাচ্ছেন কেন?
রাহী কিছু বললো না। আঁচলের দিকে তাকিয়ে আঁচলের কাছে চলে আসলো। আঁচলের এতটাই কাছে চলে আসলো যে আঁচলের নিঃশ্বাসের শব্দ রাহীর কানে আসছে।
To be continue….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here