অনুভূতির_সুপ্ত_কোণে পর্ব ২+৩

#অনুভূতির_সুপ্ত_কোণে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:২
ঘুম থেকে উঠে নিজেকে কারও বেডরুমে আবিষ্কার করেই অবাকের চরম সীমান্তে পৌঁছে গিয়েছে মেহেরর। এখনও লাল বেনারসী পড়া সে। মেহের মনে করতে থাকে যে সে তো রাতে ছাদে ছিলো ; তাহলে এখানে এলো কিভাবে?রুমটির একপাশে আদ্রাফের কিছু ছবি দেখে বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা আদ্রাফেরই রুম আর সেই তাকে নিয়ে এসেছে ।
.
মেহের শুধু পারছে না রেগে-মেগে নিজের চুলগুলো ছিড়ে ফেলতে।আদ্রাফ কেন তাকে নিয়ে এলো ; এটা ভাবতেই মেহেরের মন চাচ্ছে আদ্রাফকে জাস্ট খুন করে ফেলতে। ওর পাশে নিশ্চিন্তেই ঘুমিয়ে আছে আদ্রাফ। মেহেরের মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি চাপে।
বিড়বিড়িয়ে বলে ওঠে………..
.
—আমার কথা না শুনে শেষমেষ আমায় এখানে এনে এখন আরামের ঘুম ঘুমাচ্ছিস ব্যাটা ! দেখাচ্ছি মজা।
.
মেহের এবার ওয়াশরুম থেকে এক মগ পানি নিয়ে পুরো মগের পানিটা আদ্রাফের ওপর ঢেলে দিলো। সাথে সাথেই উঠে যায় সে। ওর টিশার্ট , কম্বল , বিছানা অনেকটাই পানি দিয়ে চুপসে গেছে। আদ্রাফের এ দৃশ্য দেখে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে মেহের।
আদ্রাফ কটাক্ষ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকলেও গম্ভীর গলায় বলে ওঠে……..
—এসব কি মেহের? সকাল সকাল কি শুরু করেছো?
.
—যা করেছি……..ঠিক করেছি। আমায় রুমে নিয়ে আসার শাস্তি এটা।
.
আদ্রাফ শুধু পারছে না এই পাগলটার মাথা ফাটিয়ে দিতে। এত সহজে রাগে না সে। কিন্ত এখন রাগটা কন্ট্রোল করা খুবই কঠিন হয়ে গিয়েছে ওর জন্য । একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে বলে ওঠে……….
.
—পাগলামীটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না?
.
—মোটেও না।
.
ব্যস আদ্রাফকে আর পায় কে। মেহেরকে কোলে নিয়ে একেবারে বাথটাবে ফেলে দিতেই মেহের ভিজে টুইটুম্বুর হয়ে যায়। চোখের পলকে আদ্রাফের এমন কাজে হতভম্ব হয়ে গিয়েছে সে। আর আদ্রাফ তো ডোণ্ট কেয়ার ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ওর দিকে তাকিয়ে। মেহের গর্জে বলে ওঠে……
.
—এটা কি করলে তুমি?তোমারে আমি একমগ পানি ঢেলে দিয়েছিলাম আর তুমি আমায় বাথটাবে ফেলে দিলে?
.
আদ্রাফ বাকা হাসি দিয়ে ঝুকে পড়ে মেহেরের দিকে । তারপর প্রতিউত্তরে বলে ওঠে……….
.
—তুমি যেমন দুস্যুরাণী আমিও তো সেই দস্যুরাণীর বর। আদ্রাফ এহসানকে এতই কাচা খেলেয়ার মনে করো মেহু?
.
বেচারী মেহের তো চুপসে গেসে। এতক্ষণ জ্বলন্ত গ্যাসের ন্যায় থাকলেও এখন হয়ে আছে ভিজা বিড়াল। গায়ে বেনারসীটা লেপ্টে থাকার কারনে আদ্রাফ তা দেখে অদ্ভুদ হাসি হাসে। তারপর বলে ওঠে……….
.
—-বিয়ের শোকে এখনো বেনারসী পাল্টাতে মন চাচ্ছে না নাকি? আমি জামা এনে দিচ্ছি তোমার ব্যাগ থেকে জলদি ফ্রেশ হয়ে আসো।
.
.
.
সারা বাড়িতে গমগম করছে মেহমান। আর মেহের তো পুতুলের ন্যায় এককোণে বসে আছে। আর থাকবেই না কেন? পাড়ার আর বিয়ে বাড়ীর সকল মহিলা যে ওকে ঘিরে বসে আছে।কেউ ওর গাল টিপছে তো কেউ ওর হাতে উপহার তুলে দিচ্ছে। এসব কাজ শেষ করে এখন মেহের সম্পূর্ণ ক্লান্ত।
.
—কি গো ভাবিজান………..রাতে কি হলো?
.
ডাইনিং রুমে একাই বসে ছিলো মেহের। পেছনে ঘুরে দেখে ১৬-১৭ বছর বয়সী তিনটি মেয়ে। ওদেরকে মেহের ভালোমতোই চিনে। আদ্রাফ আর নাদিয়ার চাচাতো বোন।আর এগুলো ভারি দুষ্টু। মেহেরও কম কিছু না। একটু দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে ওঠে ,
.
–শুনতে চাও।
.
–শোনার জন্যই তো এসেছি।
একথা বলতে বলতেই চেয়ার পেতে বসে পড়ে তিনজন।মেহের এবার বলা শুরু করে…………
.
—বাসররাত ! বাসররাত ! বাসররাত ! কথায় বলে মেয়েদের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাত এটা।
এমন কিছুই খাটে বসে ভাবছিলাম আমি। আশেপাশে গোলাপের সুগন্ধে যেন সারা ঘর মৌ মৌ করছে। আমার ভাবনার মধ্যে কখন যে আদ্রাফ এসে পড়েছিল আমি বুঝতেই পারিনি। আমি সাথে সাথেই যেন লজ্জায় কুকড়ে যাই। তোমাদের আদ্রাফ ভাই আমার হাতে আলতো করে নিজের হাত রেখে বলে……”ছাদে যাবে”
.
মেহের এবার ওদের তিনজনের দিকে তাকায়। ওদের উৎসুক দৃষ্টি দেখে কেউ বুঝতেই পারবে না যে মেহের ডাহা মিথ্যা কথাগুলো বলছে। একজন তো অধৈর্য হয়ে বলে ওঠে………
.
—তারপর কি ভাবি?
.
—ছাদে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর আমরা রুমে এসে পড়ি।সময়টা যেন কেমন যেন থমকে গিয়েছিলো। আদ্রাফ আমার দিকে তাকানো আর আমি আদ্রাফের দিকে। হঠাৎ বাতাসের দাপড়ে সারা ঘরের মোমগুলো নিভে যায়।😁
.
ওদের উৎসুক দৃষ্টি দেখে মেহের শুধু পারছে না মাটিতে গড়াগড়ি করে হাসতে। এই নাদান মেয়েগুলো আসলেই ওর কথাগুলো সত্যি মনে করছে।
.
—আমাদের কাহিনী শোনানো হয়েছে?
.
আদ্রাফের কন্ঠ পেয়ে চোখগুলো বড় বড় করে ফেলে মিহির। পিছে ঘুরি দেখে আদ্রাফ গম্ভীর চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। ওরা তিনজন বিরক্তসুরে বলে ওঠে………
.
—উহ্ ভাই ? কত সুন্দর তোর বাসররাতের কাহিনী শুনছিলাম।
.
—তাই নাকি মেহু?
দাঁত চেপে বলে ওঠে আদ্রাফ।মেহের তো এবার শেষ। কোনোমতে আমতা আমতা করে বলে ওঠে……….
.
—মা…..মা….মানে ওরা শুনতে চ…….চেয়েছিলওওও।
.
মেহেরকে আর কোনো কথা বলতে না দিয়ে ওর হাত চেপে রুমে নিয়ে আসে আদ্রাফ। মেহেরকে দেয়ালের সাথে চেঁপে দাঁড় করিয়ে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে সে।আদ্রাফ মিহি গলায় বলে ওঠে………
.
—কাহিনী তো গতরাতে কম করো নাই। আবার বারিয়ে বানিয়ে কি শুনাচ্ছো ওদের? আগে আমায় বলো। মোম নিভে যাওয়ার পর কি হয়েছিলো?
.
মেহেরতো না পারছে পালাতে আর না পারছে সরে আসতে। আদ্রাফ ওর মুখের কাছে মাথা নামিয়ে বলে.
.
—গতকাল যে তুমি আমায় কিস করেছিলে এটা বললে আরও বেশি ভালো হতো। যাইহোক ! মিথ্যা বলা মহাপাপ। এখন তোমার বলা কথাগুলো আমি নাহয় সত্য করে দেই?😁
.
.#অনুভূতির_সুপ্ত_কোণে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:৩
.
আদ্রাফের কথা শুনে চোখ দুটো আপনাআপনি বড় হয়ে যায় মেহেরের। হঠাৎ ওকে এত কাছাকাছি অনুভব করাতে মেহের যেন স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আমতা আমতা স্বরে বলে ওঠে………..
.
—ম…মানে ক….কি? কি সত্য ক….করতে চাও!
.
আদ্রাফ বুঝেছে এবার হয়েছে কাজ। এমন একটা দস্যু মেয়েকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এর থেকে ভালো উপায় আর পাবে না। মেহেরের মুখেরর কাছে ঝুঁকে কিছুটা তীক্ষ্ণ গলায় বলে ওঠে……….
.
—তুমিই তো বলেছিলে যে তুমি কচি খুকি না? তাহলে এতটুকু কথাও বুঝতে পারো না। তুমি তো ওদের কাছে আমাদের বাসরের গল্পই শোনাচ্ছিলে? তো আমি ওই কাজটা প্র্যাকটিকাল করে দেখাবো নাকি?
.
—একটুওওও না !
.
মেহের এই কথাটা এতই জোরে বললো যে আদ্রাফের কানের পর্দা তো ছিড়ে যাওয়ার উপক্রম। মেহেরের চোখ গুলো তো ভয়ে কুচকে গিয়েছে। আদ্রাফ এবার একটা ঠোঁট কামড়ানো হাসি হেসে বলে………
.
—নেক্সট টাইম যে কোনো উদ্ভট কাজ করতে আমি তোমাকে না দেখি। নাহলে কি হবে…………..তা তো ভালো করেই জানো। এখন লক্ষী মেয়ের মতো নিচে চলো।
.
একথা বলেই সিটি বাজাতে বাজাতে আদ্রাফ চলে যায়। মেহেরও এতক্ষণে যেন একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে। এই ছেলেটা যতই শান্ত হোক না কেন ; মাথায় ভয়ঙ্কর সব বুদ্ধিগুলো কিলবিল কিলবিল করে। মেহের তো চেয়েছিলো এই আদ্রাফের শান্তশিষ্টতার সুযোগ নিয়ে অতিষ্ঠ করে ফেলতে। কিন্ত সেদিকে হলো উল্টো ; বরং আদ্রাফই ওর অবস্থা কাহিল করে দিলো।
.
.
.
বিকেলের দিকে নাদিয়া ওর বরকে নিয়ে নিজের বাড়িতে এসেছে। বিয়ে হওয়ার পরের দিনই বরকে নিয়ে নিজের বাড়িতে আসতে লাগে এটা এহসান বাড়ির একপ্রকার নিয়ম। নাদিয়াকে ফিরে আসতে দেখে মেহেরের খুশি এবার দেখে কে? যতই এখন ওর ননদ হোক না কেন ; সবার আগে বেস্টু বলে কথা।
ড্রইংরুমে সবাই একমনে বসে খুশির আলাপচারিতা চালাচ্ছে তবে নাদিয়া আর মেহের সেই আলাপচারিতার ধার কাছেও নেই। নাদিয়ার নিজের প্রাক্তন ঘরেই দুজনে বসে হাসি-ঠাট্টায় মেতে আছে।মেহের তো খুশিতে টগবগিয়ে বলে ওঠে……….
.
—দোস্তোওওও……….তোর বাসরটা কেমন হলো রে?
.
নাদিয়া আর আদ্রাফ দুজনের স্বভাব বরাবরই শান্তশিষ্ট ধরনের। তবে নাদিয়া যেমন একটু বোকাসোকা টাইপের তাই মেহেরের উদ্ভট কথায় মাঝে মাঝে লজ্জায় একেবারে নুইয়ে পড়ে। হঠাৎ মেহেরের এমন প্রশ্ন শুনে নাদিয়া তো লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে।
(আর মেহেরকেই দেখো ! কি সুন্দর বানানো বাসর কাহিনী মানুষকে শোনায়🙈)
.
নাদিয়া মিহি গলায় বলে ওঠে…….
.
—ছিঃ মেহু? এসব কথা না তোরে বলছি আমারে জিজ্ঞেস করবি না?
.
নাদিয়ার এ কথা শুনে বিরক্তি প্রকাশ করে মেহের। এই মেয়েটারে জীবনেও শুধরাতে পারলো না সে। ভ্রু কুচকে মেহের বলে ওঠে…….
—এত লজ্জা কই রাখস রে নাদিয়া? আমিই তো। আমারে বলতেও সমস্যা হবে?
.
—এখন কিন্ত তুই আমার ভাইয়ের বউ আই মিন ভাবি। আচ্ছা আগে তোর ঘটনা বল না? গতকাল কে জানে কি হলো? আঙ্কেল আর আব্বু মিলে হুট করে তোর আর ভাইয়ের বিয়ে করিয়ে দিলো। সব ঠিকাছে তো?
.
—মোটেও না । তোর খাটাইশ ভাইটা আমার জীবন ত্যানা ত্যানা করে দিসে………….জানোস আজ সকালে ওই বদ পোলায় আমারে বাথটাবে ফেলে দিসিলো?
.
—আদ্রাফ ভাই এমনি এমনি এমন করে নি আগে তুই বল তুই কিছু করেছিলি?
.
সন্দিহান কন্ঠে বলে ওঠে নাদিয়া। মেহের এদিক ওদিক তাকিয়ে বলে ওঠে……
.
–ইয়ে……আসলে……উনার গায়ে একমগ পানি ঢেলেছিলাম।
.
—আমিও তো বলি……….আদ্রাফ ভাইরে যেমন আমি চিনি ; তোরে তার থেকে আরও ভালো করে চিনি। সে যে এমনি এমনি তোরে বাথটাবে ফেলেনাই তা আমি বুঝেই গিয়েছিলাম।
.
—-এইযে? বিয়ে হলো একদিনও হয়নি আর তুই আমার সাথে টিপিক্যাল ননদ টাইপ বিহেভ শুরু করে দিসোস?এটা কিন্ত ঠিক না।
.
নাদিয়া কিছুক্ষণ বোকার মতো তাকিয়ে থাকে মেহেরের দিকে। এই মেয়েটা ছোটবেলা থেকেই এমন। ওর সাইডে কেউ কথা না বললে সবসময়ই এমন করতো। কিছু একটা ভেবে নাদিয়া ছোট ছোট চোখ করে বলে ওঠে……….
.
—আমার তো ভাইয়ের থেকে তোর জন্য বেশি মায়া লাগছে রে। তোরে সাইজ করতে ভাইয়ের যদিও কাঠখড় পোড়াতে হবে তবেই তোরে সাইজ করতে পারবো। ভাইযে কত স্ট্রিক্ট আমি জানি।
.
নাদিয়ার কথা শুনে মেহের ভ্রু কুচকে ফেলে। কেননা আদ্রাফের নামটা শুনলেই মেহেরের কেমন যেন পিত্তিটা জ্বলে ওঠে।
.
—আল্লাহর ওয়াস্তে তোর ভাইটার নাম এখন আমার সামনে নিবি না; নইলে…………..
.
—নইলে কি?
.
হঠাৎ পুরুষালি কন্ঠ শুনে থমকে যায় মেহের। ক্রমাগত ঢোক গিলছে সে। যদি আদ্রাফ থাকে তবে তো মেহের শেষ। আয়াতুল কুরসী পড়তে পড়তে মেহের পেছনে ফিরলেই স্বস্তির একটা নিঃশ্বাস ফেলে। নাদিয়ার হাজবেন্ট সাদাত ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে দরজায় হেলান দিয়ে। মেহেরকে পেছনে ঘুরতে দেখে বলে ওঠে……….
.
—আমার একমাত্র আদরের বউয়ের একমাত্র বড় ভাইয়ের বদনাম করা হচ্ছে বুঝি?
.
সাদাতের মুখে আদরের বৌ কথাটা শুনে বেচারি নাদিয়ার তো গালগুলো টমেটোর মতো হয়ে গিয়েছে।মেহের একটা মেকি হাসি দিয়ে বলে…………
—অভ্যাস করে নাও ভাইয়া , এ আর তেমন কিছু না?
.
—তবে আমি এখন একটু কনফিউশনে আছি। এতদিন তো তোমায় শালিকা বলেই জানতাম………..কিন্ত এখন তো তোমায় মনেহয় ভাবি বলতে হবে।
.
—আমায় নাম ধরেই তো ডাকতে পারেন ভাইয়া। আচ্ছা………..অনেক কথা হয়েছে । এখন আমি যাই। আর আপনারা রোম্যান্স শুরু করতে পারেন।
একথাটা বলেই মেহের উঠে চলে যায় ওদের রুম থেকে।
.
.
নিজের রুমে স্টাডি টেবিলে বসে অফিসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে আদ্রাফ ব্যস্ত। প্রায় একঘন্টা ধরে মেহের ওর দিকে উকিঝুকি দিচ্ছে কিন্ত আদ্রাফের যেন সেদিকে কোনো হেলদোই নেই। অনেকটা অধৈর্য হয়ে পড়ে সে। কেননা একজন চঞ্চল মেয়ের এতক্ষণ নীরব থাকা মোটেও সহজ কোনো বিষয় নয়। মেহের এবার আদ্রাফের কাছে গিয়ে বলে ওঠে…….
.
—আদ্রাফ ভাই?
.
আদ্রাফ নিশ্চুপে ফাইল চেক করতে ব্যস্ত।মেহের কিছুক্ষণ চোখ ছোট ছোট করে তার দিকে তাকিয়ে থাকে। কোনো উত্তর না পেয়ে আবার বলে ওঠে……..
.
—আরে ওওওও আদ্রাফ ভাই?
.
—এক থাপ্পড়ে তোমার সব দাঁত ফালায় দিবো। তোমার কোন জনমের ভাই লাগি আমি?
.
মেহেরের এই কথাটা বুঝতে প্রায় দুই মিনিট লাগলো। আদ্রাফ কাজ করতে করতে কথাটা এত গম্ভীরভাবে বলছিলো যেন কেউ বলতেই পারবে না এটা থ্রেড ছিলো নাকি অন্যকিছু।এত ইউনিক স্টাইলে ধমকানোর স্টাইল মেহের কাছে অনেক চোখ ধাধানোর মতো মনে হলো। ঠোঁট উল্টে সে বলে ওঠে………..
.
—আরে……..আগের অভ্যাসটাই রয়ে গিয়েছে।
.
আদ্রাফ এবার চেয়ার থেকে উঠে মেহেরের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। মাথাটা মেহেরের মুখের দিকে হালকা ঝুকিয়ে বলে ওঠে……….
.
—বুঝতে পেরেছি। আমায় দেখে হাজবেন্ট হাজবেন্ট টাইপ ফিলিং আসছে না তোমার। বাট তোমায় দেখে তো আমার বউ বউ ফিলিং আসছে। বিকজ আমায় ফার্স্ট কিসটা তুমিই দিয়েছিলে। এখন আমিও নাহয় দেই। তারপর আমায় দেখে হাজবেন্ড হাজবেন্ড ফিলিং আসবে।
.
.
.
.
~চলবে~
গঠনমূলক মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকবো।
.
.
.
~চলবে~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here