অন্তঃসন্তা_মেয়েকে_বিয়ে পর্বঃ২

0
1948

অন্তঃসন্তা_মেয়েকে_বিয়ে
পর্বঃ২
লেখকঃ রাইসার আব্বু
!
— রাজ প্লিজ চুপ করো। আমি আর এগুলো শুনতে পারছিনা। ( কথা)
— ওকে। তাহলে শুন অপশন নাম্বান ২.আমাকে যদি বিয়ে করো তাহলে তোমার গর্ভের সন্তানটা পৃথিবীর আলো দেখবে আর কেউ তাকে জারজ সন্তান বলবে নাহ্। আর তোমার বাবা অপবাদের হাত থেকে বেঁচে যাবে। এখন তোমার ইচ্ছা?
!
— হুম! বাবা – মা, আর আমার নয়নের মনি কলিজার টুকরা তোবার কথা এবং গর্ভের সন্তানের জন্য নিজেকে কুরবাণী দিলাম। তবে আমার কিছু শর্ত রয়েছে।(কথা)
— আচ্ছা তোমার যেকোন শর্তে রাজি। বলতে পারো কী এমন শর্ত সুইটহার্ট? ( আমি)
!
–আমার শর্ত হচ্ছে আমার উপর আমি না চাইলে স্বামীর অধিকার দেখাতে পারবেন না । আর কখনো আমার ইচ্ছা ব্যতীত আমাকে ছুঁয়ে দেখতেও পারবেনা। বলেন শর্তে রাজি? (কথা)
!
— হুম তোমার সব শর্তে রাজি! কিন্তু আমারো শর্ত আছে। ( আমি)
!
— তোমার আবার কি শর্ত?
!
— হা, হা, আমি তোমাকে অন্তঃসন্তা থাকার পরও বিয়ে করছি শুধু কি ভালবাসি বলে। নিশ্চয় কারণ আছে।( আমি)
!
— মানে কি বলছো তুমি? তোমার অন্য কোন ধান্দা নেই তো? আচ্ছা তোমার শর্ত বলো?( কথা)
!
— আমার একটাই শর্ত আমি যে খুন করেছি সজিবকে তা তুমি জানো আর কেউ জানেনা। আমি চাইছে তুমি ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ জেনে এ কথা না জানে, তোমার গর্ভের সন্তানের কসম করে বলো? (আমি)
!
— “রাজ তুমি কি আমার শরীলটাকেই ভালোবাসতে যার জন্য নিজের ভাইয়ের মতো বন্ধুটাকে খুন করলে। তোমার এতই আমার শরীলের প্রতি লোভ তাহলে সজিবকে না খুন করে আমাকে জোর করে তো ধর্ষণই করতে পারতে”! কথাটা বলে কথা কেঁদে দিলো
!
— আমার শর্তে রাজি কিনা?
!
— হুম! তোমার শর্তে রাজি। কথা মনে মনে ভাবছে রাজ যেমন করে তার স্বামীকে তার জীবন থেকে সরিয়ে ফেলেছে, তেমনি রাজকেও কথা খুন করে তার স্বামী হত্যার প্রতিশোধ নিবে। তাই গর্ভের সন্তানের কসম করে বললো সজিবকে খুন করার কথা কাউকে বলবে। কথা নিজের হাতে তার স্বামী হত্যার প্রতিশোধ নিবে।
!
— হুম! ধন্যবাদ। তবে আমার আর একটি ছোট্ট শর্ত রয়েছে? ( আমি)
!
—-হ্যা বলো তোমার ছোট্ট শর্ত হচ্ছে! আমার সাথে শারীরীক সম্পর্ক করবে! আমার শরীলের কোথায় কোথায় তিল আছে কি রকম তা নিজ চোখে দেখবে
।শরীলটাই তো চাও। আচ্ছা বলো কখন কোথায় করবে? কি চাও তুমি বিয়ে করতে চাইলা তাও রাজি হয়ে গেলাম। আর কী চাও বলো? ( কথা)
!
— আপনি যতটা খারাপ ভাবছেন ততটা খারাপ আমি না। আপনাকে ভালবাসি আর ভালবাসার জন্য একটা নাহ্ হাজারটা খুন করতে পারি!
!
— ভালবাসা নামক পবিএ শব্দটি তোমার মুখে মানায় না রাজ। আচ্ছা বাদ দাও তোমার শর্ত বলো কী এমন শর্ত? তোমার সব শর্তেই এখন আমার রাজি হতে হবে কেননা তা নাহলে তুমি তো আমায় ব্লেকম্যাল করবে। ( কথা)
!
— তাহলে শুন, আমি জানি তুমি আমাকে মন থেকে স্বামী হিসেবে মানবেনা বিয়ের পর কিন্তু তবুও আমার কোন আফসোস নেই। কিন্তু আমি চাইনা আমাদের জন্য মা বাবা কষ্ট পাক! তুমি আমার, মা – বাবা সবার সামনে স্ত্রীর অভিনয় করবে কেমন? (আমি)
!
— হুম তোমার শর্তে রাজি! আমি এখন আসি। ( কথা)
!
— আচ্ছা যাও বাবাকে তোমাদের বাসায় পাঠাবো বিয়ের কথা বলে! ( আমি)
!
— কথা বাসায় আসতেই দেখে সবাই ড্রয়িংরুমে বসে আছে। বাবাকে রাগি রাগি দেখাচ্ছে!
!
— কোথায় গিয়েছিলে? ( কথার বাবা)
!
— ভয়ে ভয়ে বললো বান্ধবীর বাসায়! (কথা)
!
— আচ্ছা বাদ দে! তোর বিছানায় নিচে একটা ডাক্তারে পেসক্রিপশন পেলাম। তুই নাকি অন্তঃসন্তা? কিভাবে পারলি আমাদের মুখে চুনকালি দিতে! আমাদেরকে তো বলতে পারতি তোর কাউকে পছন্দ! কিংবা তোর ছোট বোনকে বলতে পারতি বিয়ে দিয়ে দিতাম। তোবার মা নষ্টা মেয়েকে বলো আমার বড় মেয়ে কথা মারা গেছে। আর কোন দুশ্চরিএা মেয়ের জায়গা হবে না আমার বাসাতে! এটা বলে বের হয়ে গেলো ( কথার বাবা)
!
— কথা তার বাবার মুখে এসব শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। কথা কেমনে বলবে কথা নষ্টা না তাদের গর্ভে বৈধ সন্তান। কিন্তু সজিব তো মারা গিয়েছে। কেমনে বিশ্বাস করাবে সজিবকে ভালবেসে বিয়ে করে। আর সজিবের সন্তানই কথার পেটে।
!
— একবার ও আমাদের কথা ভাবলি না? (কথার মা)
!
— মা বিশ্বাস করো তোমরা যা ভাবছো তা আমি না! ( কথা)
!
— যাহ্ আমার চোখের সামনে থেকে দূর হয়ে যাহ্! ( কথার মা)
!
—- কথা তার মায়ের কথা শুনে দৌড়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে বালিশে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে লাগলো।আর মনে মনে বলতে লাগলো আল্লাহ্ কি এমন অপরাধ করেছি আমি যার কারণে আমাকে এমন শাস্তি দিচ্ছো। আমি আর বাঁচতে চাইনা। আল্লাহ সুসাইড করা পাপ তবুও এছাড়া আর কোন উপায় নেই! একথা বলে ব্লেড দিয়ে হাতের শিরা কাটতে যাবে তখনি! ক্রিং ক্রিং করে মোবাইলটা বাজতে লাগলো। বিরক্তি নিয়ে ফোনটা তুলতেই “””
!
— হাই সুইটহার্ট কেমন আছো?( রাজ)
!
—-কথা কোন কথা বলছেনা। শুধু কাঁদছে। আজকে এই রাজের জন্যই কথার এই পরিস্হিতি। মনে হচ্ছে খুনিটাকে খুন করি কথা!
!
— আমার সুইটহার্ট কাঁদছে কেনো? ( রাজ)
!
— বাবা যেনে গিয়েছে আমি অন্তঃসন্তা। বাসা থেকে বের হয়ে যেতে বলছে। কি করবো বলো? বাবাকে কি বলবো? (কথা)
!
— তুমি কোন চিন্তা করোনা। আমি বাবাকে সব বলবো। তুমি বিয়ের জন্য রেডি হও বলে ফোন কেঁটে দিলো রাজ”
!
— রিও মা কোথায় রে? ( রাজ)
!
— রান্না ঘরে আছে। হঠাৎ মাকে কেন ভাইয়া? (রিও)
!
–দরকার আছে। তুই যা এখন। মার কাছে গিয়ে সব খুলে বললাম। মা বললো বাবা তুই কিছু ভাবিস নি বলে আবারো রান্না ঘরে চলে গেলো!
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
— রাতে খাবার পর বাবার রুমে ডেকে পাঠায় । খুব ভয় পাচ্ছি। কি যে বলবে ভাবতে পাচ্ছিনা। ভয়ে ভয়ে বাবার সামনে যেতেই ঠাস – ঠাস করে দুইটা থাপ্পর দিতেই কলিজাটা কেঁপে ওঠলো। মনে হচ্ছে আজকেই আমার শেষ দিন।
!
— হঠাৎ, তুই এমন একটা কাজ করবি কখনো ভাবতে পারিনা। তোর পছন্দ আগেই বলতে পারতি। তাই বলে এই কাজ ছিঃ তোকে নিজের ছেলে ভাবতে লজ্জা করছে। ( বাবা)
!
— বাবা ক্ষমা করে দাও ভুল করে, করে ফেলেছি।( আমি)
!
— মেয়ের বাসার ঠিকানা দে হারামজাদা। ভুল যেহেতু করছিস। আমাদের রক্ত এখন ওই মেয়ের পেঁটে।( বাবা)
!
— বাবা এতো সহজেই মেনে নিবে ভাবতে পারিনি। বাবা কথার বাবার সাথে কথা বললে কথার বাবা এসব ষুনে আর না করতে পারেনি। ধুম- ধাম করে বিয়েটা হয়ে যায়।
!
— বাসর রাতে শর্ত মতো একটা বালিশ আর একটা কম্বল নিয়ে সোফাতে শুয়ে পড়ি। মাঝরাতে কথার চিল্লানিতে ঘুম ভেঙে যায়। আর বাকিটা তো আপনারা শুনলেন।
!
— সরি, আমি স্বপ্নে ওইসব দেখে তোমাকে থাপ্পর দিয়েছি।সে জন্য আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। ( কথা)
!
–মনে মনে ভাবছি চড় মেরে আবার ঢং!
!
— কি কিছু বলছোনা যে আর বিড় বিড় করে কী বলো? ( কথা)
!
— না ঠিকআছে কোন ব্যাপার না! (আমি)
!
— ধন্যবাদ! যাও তিনটা বাজে ঘুমিয়ে পড়ো।রাজ সুফায় চলে গেলে কথা শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো যাক স্বপ্নের ঘুরে হলেও খুনিটাকে থাপ্পর দিতে পেয়েছি। ( কথা)
!
— এদিকে সুফায় শুয়ে শুয়ে ভাবছি বাসর রাতে বউয়ের বুকে ঘুমাবো। পুড়া কপাল আমার সুফাতে ঘুমাতে হচ্ছে এখন। হায়রে ভালবাসা বানালে খুনি আমায়! এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে যায়। সকাল হতেই দরজায় কে যেনো সমানে নর্ক করছে! অনেক বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলতেই দেখি নুসরাত! এতোদিন পর নুসরাত কে দেখতে পাবো কল্পনাতেও ভাবতে পারিনি।
!
– হঠাৎ নুসরাত আমাকে ধাক্কা দিয়ে সুফাতে ফেলে দিয়ে বলতে লাগলো। তুই আমাকে ঠকিয়ে বিয়ে করেছিস অন্য একটা মেয়েকে। তোর সাথে ৮ বছরের সম্পর্ক কি মিথ্যে ছিল। তুই না আমাকে প্রমিজ করেছিস। এই তোর প্রমিজ, I hate you. i just hate you raj ( নুসরাত)
!
— কি বলছিস নুসরাত তোর এখন এসব বলার সময়! পিছন দিকে তাকাতেই দেখি কথা রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে!
চলবে——–
বিঃদ্রঃ ভুলক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here