অন্ধকার পল্লী পর্ব ৪

#অন্ধকার_পল্লী
#Tabassum_Riana
Part:৪

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,অবনীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে আফিন।বাসার গলি ভালো না?তারমানে নিশ্চয়ই কোন সমস্যা হয়।এই মেয়ে জীবন ও মুখ খুলবেনা যা করার আমাকেই করতে হবে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ফোন বের করলো আফিন।একটা নম্বরে কল দিয়ে ফোন কানে ধরলো।হ্যালো স্যার!!!!!!অপর পাশ থেকে আফিনের বডিগার্ড বলে উঠলো।ইয়েস।লিসেন যে মেয়েটাকে আনতে যাই তোমরা ওর গলিতে পাহাড়া দিবে এবং আপডেট আমাকে জানাতে থাকবে।ওকে।কথা গুলো বলে ফোন কেঁটে দিলো আফিন।পকেটে ফোন ঢুকিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো আফিন।বাসায় ঢুকতেই মামুন কে দেখতে পেলো।ওর দলের আরো দুজন বসে আছে রহমত সাহেবের সামনে।বাহির থেকেই অবনী রহমত সাহেবের গালাগালি শুনতে পায়।বুঝতে পারছিলো না অবনী বাবার এমন গালাগালির কারন।এখন ঘরে ঢুকেই বুঝতে পারলো অবনী।মা অবনীকে ইশারা করে দ্রুত রুমে যেতে বলছিলো কিন্তু মামুন আর ওর লোকদের দেখে অবনীর পা আটকে গেছে।হাঁটতে পারছেনা।শরীর ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছে অবনীর।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,অবনীকে দেখে মামুন উঠে ওর দিকে এগোতে লাগলো।অবনী তখনই দ্রুত হেঁটে ওর রুমের দিকে এগোলো।বারবার পিছে তাকাচ্ছিলো অবনী মামুন ওর পিছনে আসছে কিনা সেটা দেখার জন্য।অবনী কই যাচ্ছো সোনা?তোমাকে দেখার জন্যই তো এসেছি!!!প্লিজ কাছে আসো আদর দেই।উমমাহ!!!অবনীর দিকে তাকিয়ে বলছিলো মামুন আর আজে বাজে শব্দ ও করছিলো জানোয়ারটা।রহমত সাহেব আর সহ্য করতে পারলেননা।আমার মেয়েকে যদি আর কিছু বলেছিস তোকে,,,,,,,,,, তেড়ে এসে মামুন কে মারতে গেলেন।রহমত সাহেবের হাত ধরলেন মামুন।গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করবিনা।তোর মেয়ে এখনো ভালো আছে।যদি আমার গায়ে একটা ও টোকা লাগেনারে?তাহলে মনে কর তোর পরী মেয়ে দুটোই শেষ।বলে উঠলো মামুন।রহমত সাহেব হাত নামিয়ে নিলেন।মেয়ে দুটো যে ওনার জানের টুকরা।অনেক বেশি ভালোবাসে মেয়ে দুটোকে।

,,,,,,,,,,,,,,,, রুমে এসে খাটে বসে কাঁদতে লাগলো অবনী।এসব আর কতোদিন সহ্য করতে হবে?এতো দিন বাহিরে জ্বালাতো এখন ঘরে চলে এসেছে তারপর তো ওরা,,,,,,, না না কি ভাবছি এসব আমি?কিছু করতে পারবেনা ওরা।কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলো ভাবছিলো অবনী।হঠাৎ আফসানা রুমে আসায় চোখ মুছে নিলো অবনী।মামুন আর ওর লোকেরা চলে যেতেই রহমত সাহেব মাথায় হাত দিয়ে সোফায় ধপ করে বসে পড়লেন।আমেনা বেগম রহমত সাহেবের পাশে বসে স্বামীর কাঁধে হাত রাখলেন।দেখো ওনারা অনেক খারাপ মেয়েটাকে কখন কি করে বসে?এভাবে আর কতোদিন চলবে?তাই বলছিলাম যে বিয়ে দিয়ে দাও।আমেনা বেগম বলে উঠলো।বিয়ের কথা শুনে রহমত সাহেব স্ত্রীর দিকে তাকালেন।চোখের নিচে ভিজে আছে।আমার অবনী পড়াশুনা কমপ্লিট করবে।ওই শুয়োরের বাচ্চারা কি করবে দেখবো তো?কঠিন গলায় বললেন রহমত সাহেব।তারপর উঠে রুমের দিকে পা বাড়ালেন।আমেনা বেগম গজরগজর করতে করতে স্বামীর পিছু নিলেন।আপু মামুনরা বাসায় কি করছিলো?অবনীর দিকে তাকিয়ে কিছুটা চিন্তিত মুখে জিজ্ঞেস করলো আফসানা।জানিনা রে। কি চায় ওরা?কেন এমন করছে?আর কতোদিন সহ্য করবো এগুলা?বিড় বিড় করে বলতে লাগলো অবনী।বোনের পাশে বসে পড়লো অাফসানা।আপু ওরা তোকে বিরক্ত করে না তো?প্রশ্ন করে উঠলো অাফসানা।আফসানা আমি ফ্রেশ হতে যাচ্ছি,এসব কথা বলার একদমই সময় নেই আমার।আফসানার পাশ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো অবনী।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,সবসসময় এ প্রশ্ন করলে এমন করিস কেন আপু?আফসানা বলে উঠলো।আফসানা প্লিজ চুপ থাক!!!বলেই বাথরুমে ঢুকে পড়লো অবনী।
খাটে আধশোয়া হয়ে ল্যাপটপে কাজ করছিলো অাফিন।”আমাদের বাসার গলিটা ভালো না”হঠাৎ অবনীর কথাটা মনে পড়তেই আফিন আর কাজে মন দিতে পারলোনা।ফোন হাতে নিয়ে বডিগার্ড কে কল দিলো অাফিন।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,, হ্যালো স্যার।বলে উঠলো বডিগার্ড।

,,,,,,,,,,,,,, কই তোমরা?জিজ্ঞেস করলো অাফিন।
,,,,,,,,,,,,,স্যার ম্যাডামের বাসার গলির সামনে।বলেই হালকা কাশলো বডিগার্ড।

,,,,,,,,,,,,,,, কোন খবর পেলে?ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো অাফিন।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,না স্যার তেমন কিছু পাইনি।তবে কিছু বখাইটটা পোলা অবনীর বাসার ভিতর থেকে বাহির হলো।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আশেপাশে থেকে খবর নেয় ওরা কে?আর অবনীর বাসায় কেন গেলো?আমি ইনফরমেশন চাই ওদের সম্বন্ধে রাইট নাও।কঠিন গলায় বলে ফোন কেঁটে খাটের ওপর জোরে ফোনটাকে রাখলো অাফিন।
ল্যাপটপ অফ করে বসে বডিগার্ডের কলের ওয়েট করতে থাকলো অাফিন।কেমন একটা অদ্ভুত অস্থিরতা কাজ করছে আফিনের ভিতর।কিছুক্ষন বারান্দায় হেঁটে রুমে এলো আফিন।ফোনে কল পেয়ে ফোনের কাছে দৌড়ে গেলো আফিন।বডিগার্ড কল করেছে।
পরদিন আফিনের গাড়ি দেখতে পেয়ে অবনী গাড়িতে এসে বসে। আফিন সামনে তাকিয়ে আছে।গায়ে ধূসর কালারের কোট সাথে ব্ল্যাক ডেনিম প্যান্ট,চোখে সানগ্লাস পুরাই হিরো।লোকটা আজ পাশে তাকাচ্ছেনা কেন?কেউ একজন পাশে বসলে মানুষ অন্তত একবার দেখবে তার পাশে ভূত বসে আছে নাকি মানুষ?অবনী ভিতরে এসে বসতেই আফিন গাড়ি স্টার্ট দিলো।অবনী আড়চোখে আফিনকে দেখছে।আজ এমন করছে কেন এই লোকটা?কথা ও বলছেনা।কিছুটা বিরক্ত হয়ে অপরদিকে ফিরে বসে থাকে অবনী।কেন জানি খুব হাসি পাচ্ছে ওর।বাসার গলির সামনে আসতেই থামান থামান!!!বলে উঠলো অবনী।গাড়ি থামালো আফিন।গাড়ি থেকে বের হতেই আফিনের ডাকে থেমে গেলো অবনী।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,, এই যে শুনুন।বলে উঠলো আফিন।
জি!!!!বলে উঠলো অবনী।কাল থেকে আপনাকে কলেজে নিয়ে যাবো আমি।সামনে তাকিয়ে বলল অাফিন।ক কেন?কিছুটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো অবনী।যা বলেছি শুনো।কাল থেকে আমার অপেক্ষা করবে।বুঝলে?দাঁতে দাঁত চেপে বলল অাফিন।অবনী কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আফিন গাড়ি চালিয়ে চলে গেলো।আশপাশ তাকিয়ে অবনী হাঁটতে লাগলো।ওর পিছন কালো।ইউনিফরম পরা ৭জন লোক হেঁটে যাচ্ছে।এদের আগে কখনো দেখেনি অবনী।কেমন যেন ভয় ভয় করছে অবনীর।দ্রুত হেঁটে বাসার ভিতর ঢুকে পড়লো অবনী।
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here