অন্ধপ্রেম পর্ব -৪৫+৪৬

#অন্ধপ্রেম
Writer:Shabnaj Hossain Moon
Part_45
রাজন আর শীতল পাশাপাশি বসে আছে…
শীতল আগের থেকে কিছুটা সুস্থ…
শীতল চুপচাপ বসে আছে কিছু বলছেনা…
_কিছু তো বলো শীতল??
শীতল চমকে তাকালো…
_আপনি আমার সম্পর্কে কি জানেন ??
_যেটুকু জানার সেটুকু জানি…
মানে তুমি একজন অবিশ্বাস্য ভয়ংকর সুন্দরি বুদ্ধিমতি মেয়ে…
যাকে নিয়ে গর্ব কারা যায়…
_আপনি আমার অতীত সম্পর্কে কি জানেন ???
কতটুকু জানেন ??
_আমি বর্তমান জানি…
আমার মতো ইন্টারন্যাশনাল বিসনেজ ম্যানের সাথে তোমার মতো মেয়েকে মানায়…ঐ রাজের সাথে না…
রাজ তো তোমার সাথে অন্যায় করেছে…
যা হয়েছে তা নিজের ইচ্ছে তে হয়নি তোমার …
কাজেই এতে তোমার দোষ নেই…
রাজ তোমার যোগ্য না…
ওকে তো জেলে দেওয়া উচিৎ ছিলো….
.
.
.
শীতল উঠে দাড়ালো…
_রাজকে নিজের সাথে তুলনা করে দেখেন তো …
আপনিও পার্টিতে আমার সাথে মিসভিহেব করেছিলেন …
আপনাকে তাহলে কি করা উচিৎ ছিলো ???
_মানে ???
কি বলতে চাও…
(রাজন কিছুটা ভয়ে বললো কথাটা )
_আপনাকে জুতাপেটা করা দরকার ছিলো তখন..
সমস্যা নেই এখন করে দিই…
রাজন শীতলের হাত ধরে ফেললো কারণ শীতল তার জুতো নিয়ে রাজনকে আঘাত করতে আসছিলো।
_আমাকে রাজ ভেবোনা শীতল বাবু …
আমি রাজ নয় যে তোমার সকল কিছু ক্ষমা করে দেবো….
পার্টিতে তখন যা করতে চেয়েছিলাম তা তো দুই দিন পর করবোই…
তখন তো আমাকে আটকাতে পারবেনা তুমি তাইনা???
রাজ শয়তানের মতো হাসি দিলো…
শীতল রেগে থাপ্পর বসালো ।
রাজন বেশ অবাক হয়েছে…
থাপ্পরের আওয়াজ শুনে রোদ এলো…
রোদ রাজনের গালে হাত দেওয়া দেখে বুঝতে পারলো কি হয়েছে…
রোদ ফুলিকে বললো শীতলকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিতে…
শীতলকে মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে…
.
.
.
রোদ রাজনের কাছে ক্ষমা চাইলো…
রাজনকে বললো…শীতলের মানসিক অবস্থা ভালো না…
রাজন রোদকে অভয় দিয়ে বললো…কোনো ব্যাপার না…
শীতল পাগল উন্মাদ হয়ে গেলেও তাকেই বিয়ে করবে…
আর রাজকে উচিৎ শিক্ষা দিয়ে ছাড়বে….
এটা নিয়ে রোদ যেনো টেনশন না করে…
রোদ মনে মনে অভয় পেলো….
.
.
.
রাজ সোফায় বসে টি টেবিলে পা দিয়ে চোখ বন্ধ করে ভাবছে…
এতোদিন অনেক সহ্য করেছে সে…
মানছে সে জঘন্য কাজ করেছে বাট সেটার জন্য সে তো অনুতপ্ত…
তার মানে এই নয় যে সে তার ভালবাসা হারাবে…
শীতলের মুখের দিকে তাকিয়ে তার পরিবারের অন্যায় অপমান সব সহ্য করেছে…
কিন্তু আর না….
রাজকে এর উল্টো জবাব দিতে হবে…
এতো দিন রাজ তার অন্যায়ের জন্য প্রাশ্চিত্য করেছে চুপ থেকে সব অন্যায় সহ্য করেছে…
.
.
.
রাজের জিবনে কোনো কিছু পাওয়া সহজ ছিলোনা…
তাই শীতলকেও সহজে পাওয়া যাবেনা…
এবার রাজ দেখাবে সে কি করতে পারে….
.
.
.
ফুলি রাজকে ফোন করে সব জানালো …
কি কি বলেছে রাজন শীতলকে…
রাজ ফোনটা কেটেই ফ্লোরে ছূরে মারলো…
রাজ ভালো হয়েছে বলে পুরো পৃথিবী খারাপ হয়ে গেলো…
একেক জন নিজের নিজের রং দেখাতে শুরু করেছে…
.
.
.
রোদ আর রাজন শীতলকে নিয়ে শপিংয়ে গেলো…
শীতলকে রোদ অনেক কষ্টে নিয়ে গেলো শপিংয়ে…
রাজও গেলো পেছন পেছন…
শীতল একটা চেয়ারে বসে আছে…
তার কিছুই ভালো লাগছেনা…
মনে হচ্ছে দূরে কোথাও পালিয়ে যেতে পারলে মনে কিছুটা শান্তি আসবে…
.
.
.
শীতল কে অবাক করে দিয়ে রাজন একটা শাড়ি শীতলের গায়ে জরিয়ে দিলো…
শীতলের ইচ্ছে করছে রাজনের গালে দুইটা থাপ্পর দিতে…
হঠাৎ শীতল রাজকে দেখতে পেলো…
শীতলের সেই দৃশ্যটা ভেসে উঠলো চোখের সামনে…
শীতলের এমন রাগ উঠলো রাজের উপর….
রাজ যদি অন্য মেয়েকে নিয়ে থাকতে পারে তাহলে শীতল কেনো পিছিয়ে থাকবে…
.
.
.
রাজকে কষ্ট দেওয়ার জন্য শীতল শাড়িটা নিলো…
ধন্যবাদও দিলো…
রাজন ভাবলো ঔষধ কাজে দিয়েছে…
রোদ ভাবছে সেই ঘটনার পর শীতল রাজকে ঘৃনা করে রাজনকে লাইক করতে শুরু করেছে…
রাজ এই দৃশ্য দেখে রাগে ফায়ার হয়ে গেলো…
রাজ হাত মুঠো করলো শক্ত করে…
ইচ্ছে করছে রাজনে জ্যান্ত পুতে ফেলতে…
কত বড় সাহস রাজের ওয়াইফ তার জিবনকে শাড়ি সিলেক্ট করে দেওয়া…
.
.
.
শীতল রাজকে তোয়াক্কা করলো না…
রাজন আর রোদ বিল পে করতে গেলো…
শীতলের মাথা ব্যথা করছে তাই সে কার পার্কিংয়ের দিকে গেলো….
সেখানে গিয়েই রাজকে দেখতে পেলো শীতল…
রাজ চোখ লাল লাল করে দুই হাত পকেটে দিয়ে শীতলদের গাড়িতে হেলান দিয়ে আছে…
শীতল না দেখার ভান করে কারের ডোর খুললো…
খোলা মাত্রই রাজ শীতলকে কারের সামনে চেপে ধরলো….
রাজ শীতলের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলো…
শীতল এসব তোয়াক্কা করলো না…
_আমার হাত ছাড়ুন …
নইলে আপনাকে এর মূল্য দিতে হবে…
_আমার প্রোপার্টিকে আমি ধরবো না ছাড়বো তা তুমি বলার কে….
_আমি আপনার প্রোপার্টি না…
আপনার প্রোপার্টি হলো ঐ সব সস্তা বাজারের মেয়ে….
আশা করি আমি ঐ ধরনের মেয়ে না…
_শীতললল…
চুপ করো ….
নইলে…..
_নইলে কি ???
কি করবেন আপনি ???
ছাড়ুন আমাকে….
_ছাড়বোনা…
আমার কথা শোনো প্লিজজজ…ঐ মেয়েকে চিনিনা পর্যন্ত আমি…
আমি তুমি ছাড়া কারো দিকে তাকায়না পর্যন্ত…
আমি শুধু তোমাকেই এই বুকে জায়গা দিয়েছি আর কাউকে না…
.
.
.
_এসব মিথ্যে কথা ছাড়ুন …
আমাকে যেতে দিন….
_দেবোনা যেতে…
কি করবে ???
চিৎকার করবে ???
তাহলে করো প্লিজজজ ??
আমিও দেখি আমার হাত থেকে কে তোমাকে ছাড়ায়…
_আপনাকে আমি এখন শুধু ঘৃনা করি….
আপনার টাচ আমার কাছে জলন্ত আগুন মনে হয়…
আমার থেকে দূরে থাকুন…
নইলে সত্যি সত্যি চিৎকার করবো….
_কি বললে আমার টাচ তোমার কাছে….
এভাবে বলতে পারলে ???
আমি ভালো হয়ে গিয়েছিলাম শীতল বাট তোমারা কেউ আমাকে ভালো থাকতে দিলেনা….
ধৈর্যের পরিক্ষা নিয়ো না শীতল….
খুব খারাপ হবে কিন্ত…
এখনো সময় আছে আমার কাছে ফিরে এসো…
শীতল জোরে বললো…
আমি ডিবোর্স পেপারে সাইন করে দিয়েছি….
কয়েক মাস পর এমনিতেই ডিবোর্স হয়ে যাবে….
আপনি যা করেছেন তাতে আপনার সাথে থাকা অসম্ভব…
আমি দরকার পড়লে ঐ রাজনকেই বিয়ে করবো….
আমার সাথে যা করেছেন এটাই হবে আপনার শাস্তি….
রাজের রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে….
রাজনের নাম শুনলেই রাজের মাথায় আগুন জ্বলে….
_তাহলে আমাকে ভালো থাকতে দিলেনা তুমি ???
আমার জঘন্য রুপ দেখতে চাও তুমি ???
_আপনি ভালো না জঘন্য থাকবেন তা আপনার ব্যাপার…
আমার হাত ছাড়ুন…
শীতল একটা ধাক্কা মেরে রাজকে সরিয়ে দিলো…
রাজ প্রচন্ড ক্ষোভে শীতলের চুল মুঠি দিয়ে ধরে ঠোটে ডিপ কিস করলো…
_আরেকবার যদি আমাকে দূরে সরাতে চাও তাহলে এটার কথা মনে রাখবে….
শীতলও তার আসল রুপ দেখালো…
রাজের গালে দুটো থাপ্পর বসালো শীতল…
পাশে থাকা লোকজনেরা সব ছুটে এলো আওয়াজ শুনে….
.
.
.
রাজ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে গালে হাত দিয়ে…
বেশ লোক জরো হলো…
সবাই মনে করলো রাজ শীতলকে টিচ করছে…
এক লোক রাজের কললার ধরলো…
রাজ লোকের দিকে তাকাতেই লোক কলার ছেড়ে দিলো….
কয়েকটা গার্ড এসে সবাইকে রাজের পরিচয় দিলো…
সবাই ঘাবরে গিয়ে চলে গেলো….
রোদ আর রাজন কোথা থেকে এসে যেনো হাত তালি দিলো…
_এই না হলে আমার বোন …
সাবাস শীতল বোন‌ আমার..

রাজন রাজের দিকে তাকিয়ে কানে কানে ফিস ফিস করে বললো…
_আমার বিসনেজে ভাগ বসিয়েছো তুমি…
এবার তোমার ওয়াইফের উপর ভাগ বসাবো আমি…
রাজ রেগে কলার ধরে ফেললো রাজনের…
রোদ কলার ছাড়াতে পারলোনা…
শীতল এসে রাজের হাত থেকে রাজন কে ছাড়ালো….
রোদ আর রাজন কারে বসলো…
শীতল কারে বসার আগে রাজকে বললো…
_সময় শেষ হলে ডিবোর্স হবে তারপর রাজনকে আমি বিয়ে করবো….
আপনার দাওয়াত রইলো মিঃ রাজ …
.
.
.
শীতল চলে গেলো…
রাজ নিজের হাত মুঠি করে একটা দেয়ালে ঘুষি দিলো…
রাজ চিৎকার করে বললো…
_কাজটা ঠিক করলে না তুমি ….
এতোদিন আমার ভালো রুপ দেখেছো…এখন থেকে আসল রুপ দেখবে আমার…
ভালো হতে চেয়েছিলাম দিলে নাতো…
এবার জঘন্য কঠোর রাজকে দেখবে…
তোমাকে আমার করতে যদি তোমাার সাথে অন্যায় করতে হয় তাই করবো বিকোজ ভালবাসা আর যুদ্ধে সব কিছুই জায়েয….
তৈরি থাক শীতল আমার জঘন্য রুপ দেখার জন্য….
.
.
.
শীতল দরজস বন্ধ করে কাদছেঁ…
রাজকে ভালবাসতে পারছেনা সে আবার ঘৃনাও করতে পারছেনা…
.
.
.
শীতল দরকার পড়লে সারাজিবন একা থাকবে তবুও রাজের কাছে হার মানবেনা…
শীতলের বার বার শুধু ঐ দৃশ্য ভাসছে চোখে…
.
.
.
সন্ধ্যার দিকে ছোটখাটও এরেন্জম্যান্ড করেছে রোদ রাজন আর শীতলের জন্য…কারণ পার্রটিতে শীতলের আকধ হয়নি…
আর রাজের ভয়েই রোদ ঘরোয়া আয়োজন করেছে…
.
.
.
শীতল সুন্দর করে সেজেছে…
পার্লালের মেয়েরা তাকে সাজিয়ে দিয়েছে…
লাল শাড়ি সোনালি পাথরের পড়েছে শীতল…
হাতে লাল রেসমি চুরি.. গলায় ফিরেজে পথরের হার… চোখে মোটা করে কাজল দেওয়া…
ঠোটে কড়া করে লিপস্টিক দিয়ে চুল গুলো শ্যামপু করে ছড়িয়ে দিয়ে সাজিয়েছে শীতলকে…
.
.
.
শীতলের গায়ে একটা পারফিউম দেওয়া হলো…
সুভাসটা জাস্ট মোহনীয়…
রোদ শীতলকে দেখে মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করলো…
আজকে নিজের বোনকে দেখে নিজেই চোখ সরাতে পারছেনা…
রোদ শীতলকে ভীষন ভালবাসে…
শীতলের ভালোর জন্যই রোদ নানা কিছু করে শীতলের কাছে রাজকে জঘন্য প্রমাণ করেছে সেই সাথে নিজের ভালবাসার প্রতিশোধও নিয়েছে …
.
.
.
রোদ সবাইকে নিয়ে চলে এলো রুম থেকে…
শীতল একা একা রুমে বেডের মাঝখানে শুয়ে রইলো চোখ বন্ধ করে…
শীতল চোখ বন্ধ করে রাজকে দেখতে পেলো…
শীতল তাড়াতাড়ি চোখ খোলে ফেললো…
চোখ খুলে রাজকে সত্যি দেখতে পেলো…

শীতল বেড থেকে উঠবে তার আগেই রাজ শোয়া অবস্থায় শীতলের দুই হাত মুঠো দিয়ে ধরে ফেললো…
_তোমাকে নতুন বউয়ের মতো লাগছে বউ…
ইচ্ছে করছে এখনি বাসর করি….শীতল কিছু বলবে তার আগেই রাজ একটা রুমাল শীতলের নাকে ধরলো….
_দুঃখিত বউ …তোমাকে এইভাবে কষ্ট দেওয়ার জন্য…
শীতল কয়েক সেকেন্ডেত মধ্যে জ্ঞান হাড়ালো…
রাজ শীতলের নাকে নাগ ঘষে কপালে ঠোটের পরশ দিলো….
.
.
.
কিছুক্ষন পর বাসায় হৈ চৈ পড়ে গেলো…
শীতলকে পাওয়া যাচ্ছেনা…
.
.#অন্ধপ্রেম
Writer: Shabnaj Hossain Moon
Part_46
রাতের নীল আকাশে নীল চাদনিঁ তে প্রিয় মানুষের সাথে থাকার ফিলিংটা জাস্ট অমায়িক হয়…
রাজ ড্রাইভ করছে …

আর মিট মিট করে হাসছে শীতলের দিকে তাকিয়ে…
এক হাত দিয়ে রাজ স্টেয়ারিং ধরেছে অন্য হাত দিয়ে শীতলকে শক্ত করে নিজের বুকের মাঝে জরিয়ে রেখেছে…
.
.
.
কাজল এখন ময়মনসিংহে আছে…
তার ভার্সিটি অফ তাই সে নিজেদের পুরাতন বাড়িতে এসেছে বেড়াতে….
রাজের বাবার সাথে কাজলের বাবা পাটনার শীপের একটা বিজনেস শুরু করেছিলো…
এই বিষয়ের একটা কাজে কাজলের বাবা লন্ডনে আছেন…
কাজল ঠিক করেছে চিঠির লোক হিমালয়ের সাথে দেখা করবে ময়মনসিংহে বিকোজ হিমালয়ের বাড়ি ময়মনসিংহে…
.
.
.
হিমালয় এখন ময়মনসিংহে আছেন…
.
.
.
শীতলের এখনো জ্ঞান ফিরেনি…
রাজ শীতলকে তার অন্য একটা বাংলো বাড়িতে নিয়ে গেলো…
ময়মনসিংহে রাজের বেশ কয়েকটা বাড়ি আছে…
রাজ আজকে থেকে এখানেই শীতলকে নিয়ে থাকবে বলে ঠিক করেছে…
শীতলকে দূরে রাখলে ঝামেলা বাড়বে বৈকি কমবেনা…
.
.
.
শীতল রাজের কাজে কষ্ট পেলেও রাজের করার কিছু নেই…
রাজ শীতলকে কোলে করে নিয়ে গিয়ে সোজা বাড়িতে ঢুকে গেলো…
রাজ ছাড়া এই বাড়িতে আর কেউ নেই…
রাজ ঠিক করেছে এখানে শীতলের সাথে একা বেশ কয়েকদিন হানিমুনের মতো কাটাবে…
সে শীতল রাজি থাকুক আর না থাকুক…
প্রথিবীতে বউ হলো নিজের প্রোপার্টি…
আর সবচেয়ে আপন হলো বউ বাবা মা ভাই বোন ছেলে মেয়েদের পরে…
রাজের তো কেউ নেই তাই এখন থেকে শীতল হলো সব…
.
.
.
এখানে থেকে রোদকেও উচিৎ শিক্ষা দেবে রাজ সেই সাথে ঐ কুকরের বাচ্চা রাজনকেও..
রাজ শীতলকে নিয়ে বেড রুমে ঢুকে পড়লো…
শীতলকে বেডে শুইয়ে দিয়ে ফোন থেকে রোদকে একটা ম্যাসেজ করলো রাজ…
…শালা বাবু আপনার বোনকে নিয়ে হানিমুনে গেলাম…আপনার জন্য একটা মামা আর আপনার বাবা মার জন্য একটা নানা ভাই নিয়েই ফিরবো…By the way আমার সাথে অন্যায় করার শাস্তির জন্য ওয়েট করুন…
গুনে গুনে সব শুধে আসলে ফেরত দেবো…
.
.
.
রাজ ম্যাসেজ দিয়েই ফোন অফ করে দিলো…
রাজ নিজের কোর্ট শার্ট খুলে চেন্জ করে নিলো..

হালকা নরমাল পোষাক পড়েছে রাজ…
.
.
.
রাজ শীতলের কাছে এসেই কিছু ক্ষন তাকিয়ে থাকলো…
আজ কতদিন পর রাজ শীতলকে মন ভরে দেখবে…
নিজের বিয়ে করা বউকে এতো দিন শান্তিতে দেখতেও পারেনি রাজ…
.
.
.
রাজের ভাবতেও রাগ লাগছে … রাজ নিজেকে শান্ত করে শীতলের খুব কাছে গেলো…
জানালার ধার থেকে ফুরফুরে বাতাস আসছে…
সে বাতাসে শীতলের শাড়ি উড়ছে…
শীতলের নাভি দেখা যাচ্ছে…
শীতলের পায়ের উপর পর্যন্ত শাড়ি উড়ছে…
রাজের নিজেকে কনট্রোল করতে খুব কষ্ট লাগছে…
রাজ ভাবলো নিজের বিয়ে করা বউ শীতল…শীতলের অনুমতির কি আছে এতে …শীতল অনুমতি ছাড়া ঘুমের মধ্যে কি যে করতো রাজের সাথে সেটা রাজ জানে…
.
.
.
চাদের আলোতে শীতলের মুখটা অসম্ভব সুন্দর লাগছে….
রাজ শীতলের খুব কাছে থেকে তার গায়ের পারফিউমের সুভাস নিলো…
রাজ শীতলের নাভিতে কত গুলো চুমো দিয়ে বললো…এখানেই আছে ছোট শীতল অথবা রাজ…
.
.
.
রাজ শীতলের পায়েও অনেক গুলো চুমো দিলো…
তারপর মুখেও দিলো…
রাজ শীতলকে হঠাৎ জরিয়ে ধরলো খুব শক্ত করে…
রাজের ভয় করছে খুব শীতলকে হাড়ানোর…
রাজ খুব শক্ত করে শীতলকে জরিয়ে ধরলো…
শীতল যখন জেগে যাবে তখন সহজে রাজকে কাছে আসতে দেবেনা …
রাজ তাই এখনই সুযোগে সৎ ব্যাবহার করছে…
রাজের চোখ থেকে পানি পড়ছে…
রাজ শীতলের গলায় মুখ গুজে বললো… প্রথিবীতে একমাত্র নিজের আপন বলতে শীতল ছাড়া আর কেউ নেই তার… শীতল সেটা জেনেও এভাবে পর করে দিচ্ছে…
তবে রাজ শীতলের গা ছয়ে প্রতিজ্ঞা করলো…এতো সহজে সে হার মানবেনা… শীতলকে সত্যিটা বুঝিয়ে শুনিয়ে ভুল ভাঙাবে ওর…
.
.
.
ভোরের আলো ফুটছে …
সৃর্যের আলো শীতলের মুখে পড়ছে…
শীতল ঘুম জরানো চোখ মেলে নিজেকে আবিষ্কার করলো…
এটা যে নিজের বাড়ি না সেটা শীতল বুঝতে পারলো…
শীতল বেড থেকে আধশোয়া অবস্থায় উঠে বসলো…
মাথা টা খুব ব্যাথা করছে…হাত পা খুব ব্যাথা করছে…শাড়িটাও ঠিক নেই…
শীতল ভালো করে তাকাতেই সামনে একটা সোফায় রাজকে দেখতে পেলো…
.
.
.
রাজ টি টেবিলে পায়ের উপর পা দিয়ে কোলে একটা ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে…
পরনে নরমাল ট্রাউজার আর টিশার্ট রাজের…
রাজ হঠাৎ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই বললো…
_Good morning Darling.
সকালের আলোতে তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে…
শীতলের প্রচন্ড রাগ শুরু হলো…
বেড থেকে উঠেই দিলো কয়েক টা চিৎকার…
তারপর রাজের কাছে গেলো…
শীতলের চিৎকারে রাজ একটুও বিরক্ত বলে মনে হলো না… সে আপন মনে কাজ করছে …
শীতল কোমরে হাত গুজে বললো…
_এতো বড় স্পর্ধা আপনার হলো কি করে আমাকে এখানে নিয়ে আসার ???
আমি এখনি বাড়ি যাবো আমার…
রাজ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই বললো…
_তুমি তো তোমার নিজের বাড়ির মধ্যে একটা বাড়ির মধ্যেই আছো …
_মোটেও এটা আমার বাড়ি না…
আপনি আমাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছেন ???
_খুব সিম্পল হানিমুন করতে…যদিও কক্সবাজারে ছোটখাট একটা হানিমুন সেরে ছিলাম…
_আপনার যাকে খুশি তাকে নিয়ে করুন হানিমুন…
আমার শখ নেই…
আমি যাচ্ছি…
শীতল সরাসরি রুম থেকে বের হয়ে গেলো…
বের হয়ে সামনে কয়েকটা সিড়ি দেখতে পেলো শীতল…
এখন সমস্যা হলো সে কোনটা দিয়ে নিচে যাবে…
শীতল বুঝতে পারলো এই বাড়িটা একটা প্রকান্ড রকমের বাড়ি…
.
.
.
বাড়িটা তে অনেক গুলো দরজা… একটাতে ঢুকলে আরেকটা দিয়ে বের হতে হয়…
শীতল কিছুতেই কিছু করে মেইন ডোর পর্যন্ত যেতে পারলোনা…
বাড়িটাতে প্রচুর আসবাব পত্র…
নানা ধরনের বিদেশি শপিজ…
শীতল একটা একটা করে দরজায় লক করছে …
একটাও‌ খুলছেনা…
.
.
.
শীতল এক পর্যায়ে একটা ফুল দানি ফ্লোরে ছুরে মেরে জোরে চিৎকার দিলো…
রাজ শীতলকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে শয়তানি হাসি দিয়ে বললো…
পুরো বাড়ি একটা গোলক ধাধা…
এই বাড়ির ডিজাইন বই না দেখলে কিছুই বুঝতে পারবেনা…
.
.
.
আর এই বাড়িতে আমি ছাড়া কেউ নেই….
এই বাড়ির বিষেশ্ত্ব হলো পুরো বাড়ি সাউন্ডপ্রফ…বাড়ির ভেতরের আওয়াজ বাহিরে যাবেনা আর বাহিরের আওয়াজ ভেতরে আসবেনা…..
একটা প্রকান্ড জঙগলের ভেতরে এই বাড়ি অবস্থান করেছে…
.
.
.
শীতল ঝটকা দিয়ে রাজকে সড়ালো…
_আপনি আস্তো একটা শয়তান …
আপনি কোনো মানুষের পর্যায়ে পরেননা…
_সেটা জানি আমি…
_আমি থাকবোনা আপনার সাথে …কেনো এই সহজ কথা বুঝতে পাচ্ছেন না…
আমাকে যেতে দিন…
থাকবোনা আপনার মতো ধোকাবাজ বাজে ক্যারেক্টারলেস রেপিষ্টের সাথে…
রাজ শীতলের কথা শোনা মাত্রই দেয়ালের সাথে শীতলকে চেপে ধরলো…
_তুমিও‌ একটা কথা শুনে রাখো…
তোমাকে আমার সাথেই থাকতে হবে…
আমি তোমাকে কোনো ধোকা দিইনি সেটা আমার জানা আছে…এবার তোমার জানা থাকলেই হলো….
আমার সাথেই তোমাকে সারা জিবন থাকতে হবে…
তুমি চাইলেও আর না চাইলেও…
.
.
.
কথা গুলো মাথায় ঢুকিয়ে নাও ভালো করে….
এতো দিন অনেক সহ্য করেছি আর না…
আমার ভালো রুপ তোমার ভালো লাগেনা তাই বাজে রুপ দেখবে….
.
.
.
শীতল আহহ করে বললো…
_আমার লাগছে খুব..আমায় ছাড়ুন অমানুষ জানোয়ার…
রাজ দেখলো শীতলের হাত লাল হয়ে গেছে…
রাজ হালকা ভাবে ছেড়ে দিলো শীতলকে…
তবে পুরোপুরি ছাড়লোনা…
_আজকে প্রমান করে দিলেন আপনি আসলেই অমানুষ…
সবকিছু জোর করে পেতে চান আপনি তাইনা???
আজ পর্যন্ত লাইফে কত কত জঘন্য কাজ করেছেন তার কোনো হিসেব নেই….
আমি ভুল করেছি আপনাকে স্বামি হিসেবে একদিন ভালবেসে….
লেট হলেও এখন সবটা পরিষ্কার বুঝতে পেরেছি আমি….
আমার সামনে থেকে যান আপনি….
শীতল এই বলে রাজের কাছ থেকে সোজা রুমে গেলো….
.
.
.
শীতলের রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে…
রাজের সাথে এখানে সে কিছুতেই থাকবেনা…
রাজ যা ওর সাথে করেছে তার পরে ওকে স্বামি হিসেবে মানা অসম্ভব….
হঠাাৎ রাজ শীতলের সামনে এলো…
শীতল বিরক্ত হয়ে বললো…
_কি হয়েছে ???
একটু একাও থাকতে পারবো না…
রাজ কিছু বলছেনা শুধু হাসছে…
শীতল রেগে রাজের দিকে তাকালো…..
_রাজ বললো তোমাকে এভাবে হেব্বি জোস লাগছে…
শীতল তক্ষণাক নিজের দিকে তাকালো…
শীতলের শাড়ি শাড়ির মধ্যে ছিলোনা…
ওখান দিয়ে খোলা ওখান দিয়ে খোলা…
আচলটা একেবারে নেই বললেই চলে….
শীতল রাজের থেকে পেছনে ঘুরে গেলো…
রাজ শীতলকে আচমকা কোলে তোলে নিয়ে ওয়াস রুমের দিকে যেতে লাগলো….
শীতল রাজের গলায় খামছি দিচ্ছে যেনো নিচে নামিয়ে দেয়….
রাজ ওয়াসরুমে শীতলকে নিয়ে গিয়ে সোজা ঝরনার নিচে দাড় করিয়ে দেয়…
উপর থেকে টপ টপ পানি পড়ছে…
_তুমি ভালো করে শাওয়ার নাও তাহলে মাথা ঠান্ডা হবে…
এখন এখান থেকে চলে যাচ্ছি বাট এর পর থেকে একসাথে শাওয়ার করবো…
শীতল কিছু বলার আগেই রাজ চলে গেলো…
শীতল শাওয়ার করছে আর কাদছে…
কেনো তার জিবন এমন হলো…
.
.
.
শীতল শাওয়ার শেষে রুমে ভেজা শাড়িতে এলো…রাজকে কোথাও দেখতে পেলোনা শীতল…
বেডে অনেক গুলো শাড়ি…আর প্রচুর গহনা রাখা আছে…
শীতল কোনো মতে শাড়ি জড়ালো গায়ে…
হঠাৎ রাজ কোথা থেকে এসে শীতলকে শাড়ি পড়াতে শুরু করলো…
শীতল রাজকে যথেষ্ট বাধা দিলো….
শীতল বললো সে রাজের হেল্প নেবেনা…দরকার পড়লে সে এলোমেলো শাড়ি পরেই থাকবে…
রাজ বললো….তার সামনে এলোমেলো জিনিস পত্র ভালো লাগেনা… তার সামনে সবকিছু সাজানো গোছানো থাকতেই হবে…
.
.
.
শীতল শাড়ি পড়ানো হলেই আবার কুচি খুলে ফেললো…
এভাবে প্রায় দু ঘন্টা ধরে অনেক কষ্টে অনেক বার রাজ শাড়ি পড়ালো শীতলকে…
রাজ এবার রেগে বললো…
_এখন কুচি খুললেই আমি পুরো শাড়ি খুলে ফেলবো…
তারপর সব সময় শাড়ি ছাড়াই থাকতে হবে….
.
.
.
শীতল জব্দ হলো.এ.সে ভয়ে আরকিছু করলোনা…
.
.
.
রাজ শীতলকে নিয়ে সোজা ডাইনিংয়ে গেলো নাস্তা করতে….
শীতল বেশ অবাক হলো ডাইনিংয়ে গিয়ে….
.
.
.
রোদ আর রাজনের অবস্থা দেখার মতো ছিলো ….রাত থেকে ময়মনসিংহ শহড় তন্য তন্য করে ফেলেছে শীতলকে খুজতেঁ…
তাদের দুজনেরই দুটো ডিল ক্যানসেল হয়েছে রাজের জন্য….
রোদ আরেকটা বাজে খবর পেলো ফোনে…
রোদের রাজের উপর এমন রাগ উঠলো….
.
.
.
চলবে…….
.
চলবে….❤❤❤❤❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here