অন্ধপ্রেম পর্ব -৪৭+৪৮

#অন্ধপ্রেম
Writer:Shabnaj Hossain Moon
Part_47
রোদকে আজ আইজি সাহেব থ্রেড দিয়েছে….তিনি জানিয়েছে রাজ নামের এক ব্যাবস্যায়িক কে অবৈধ আইন ব্যাবহার করে অযথা হেনস্তা করা হয়েছে এই অভিযোগ সয়ং ভিক্টিম করছেন তার কাছে…
পুরো ডিপার্ট ম্যান্টের সামনে তাকে লাস্ট চান্স দেওয়া হয়েছে…
রোদের সম্মানের পুরো ফালুদা বানিয়ে ফেলেছে রাজ…
রোদ এই জব করে শখ বসত এবং নিজের ভরণ পোষনের জন্য…
তার বাবার থেকে এক কানা কুড়িও রোদ নিজের জন্য ব্যায় করেনা….
রোদ তার বাবাকে এখনো ক্ষমা করেনি..
.
.
.
শীতল ডাইনিংয়ে চুপচাপ বসে আছে…
রাজ তার ঠিক পাশে বসেছে…
_তুমি ভাবছো এই বাংলোতে আমারা দুজন তাহলে তাহলে এই খাবার গুলো কিভাবে এখানে এলো….
আসলে আমি এখানে শুধু তোমার সাথে একান্তে সময় কাটাতে চাই তাই আমাদের যেনো বিরক্ত না করে কেউ এজন্য কোনো সার্ভেন্ট সার্ভিসে রাখিনি…
আমার একজন পরিচিত লোক আছে যে প্রতিদিন তিন বার করে খাবার সার্ভিস দিবে…
.
.
.
শীতল কিছু বললো না …
সে চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালো…
শীতল এক পা বাড়াতেই রাজ শীতলের হাত ধরে নিজের কোলে বসিয়ে নিলো….
_খেয়ে দেয়ে তারপর এখান থেকে যেতে পারবে …
এর আগে না…
_আমাকে ছাড়ুন…আমি আপনার হাত থেকে খাবো না…
আমার ঘৃনা লাগে আপনাকে…
কেনো বুঝতে পাচ্ছেন না আমি আপনাকে সহ্য করতে পারিনা…
.
.
.
_শীতল আমারো এক কথা…তুমি কেনো বুঝতে পাচ্ছোনা আমি তোমাকে ভালবাসি…আমি তোমার সাথে থাকতে চাই সারা জিবন…
_আমি সারা জিবন দূরে থাক এক মিনিটও আপনার সাথে থাকতর চাইনা …
ছাড়ুন আমাকে আর যেতে দিন আমার নিজের বাড়িতে…
.
.
.
রাজ শীতলের গলায় নাক ঘষে বললো…
_এখান থেকে যাওয়ার কথা ভুলে যাও…
এখন চুপচাপ খেয়ে নাও প্লিজজজ.
.
.
.
_আমি খাবোনা কিছুই…
আমাকে এখন বাসায় দিয়ে আসুন…
ভাইয়া আমাকে খুজে বের করলে আপনার কি অবস্থা করবে সেটা ভেবেছেন ???
রাজের চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে রোদের নাম শুনে…
রাজ শীতলকে শক্ত করে ধরে বললো…
_তুমি ওদের কাছে ছিলে বলে আর তোমার কথা ভেবে ওদের কিছু বলিনি…
তা না হলে দুনিয়ায় এমন কারো বুকের পাঠা নেই যে রাজের গায়ে হাত তোলে…
কলিজা টা ছিড়ে ফেলতাম রোদের বাট তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলিনি আমি…
.
.
.
আমি এখন বিন্দু মাত্র সহ্য করবোনা কোনো কিছু…
_আপনি কি সহ্য করবেন আর না করবেন তাতে আমার কিছু যায় আসেনা…
আমাকে ছাড়ুন…
শীতল অনেক চেষ্টা করেও রাজের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারলোনা…
শীতল এবার পায়ের হিল দিয়ে খুব শক্ত করে জোরে চাপ দিলো….
শীতলের মনে হলো সে চাপ টা খুব জোরে দিয়েছে…
রাজ ব্যথা পেয়ে ছেড়ে দেবে…
.
.
.
রাজ এমন একটা ভাব করলো যে কিছুই হয়নি…
উল্টো সে শীতলকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলো…
শীতল কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা….
_আচ্ছা তুমি তো আমাকে ভালবাসো তাহলে এমন কেনো করছো…
_ভালবাসি মানে ???
কখন বললাম আমি আপনাকে ভালবাসি ???
_তার মানে আমাকে ভালবাসোনা আর…
_জি হ্যাঁ
_আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলো এই কথা…
শীতল চোখের দিকে তাকালো না…
_আমি আপনাকে ঘৃনা করি….
এবার তো ছাড়ুন আমাকে…
রাজ শীতলকে ছেড়ে দিলো…
শীতল উঠে দাড়াতেই রাজ বললো…
_তাহলে গত এক বছর কি ছিলো ???
আমাকে এতো কেয়ারিং কেনো করেছিলে…???
আমি যেভাবে তোমাকে চাইতাম সেভাবে কেনো নিজেকে প্রেজেন্ট করতে ???
শীতল কিছু ক্ষন চুপ থেকে বললো …
_তখন আমার পাশে কেউ ছিলো না …
তাই ভাগ্যকে মেনে নিয়ে ছিলাম…
আপনার কথায় উঠতাম আর বসতাম…
সারক্ষন আপনার মন জয় করার চেষ্টা করতাম…
এখন আমার পাশে সবাই আছে ???
তাই দূর্ভাগ্য মেনে নেবো না…
আমি কোনো অবলা অসহায় মেয়ে নয়…
রাজ এমন কথা আশা করেনি শীতলের থেকে…
রাজের মনে হলো …শীতলের কথায় যুক্তি আছে…
রাজের মনে খুব কষ্ট লাগলো….
এরকম সত্যিটা এতোদিন তার অজানা ছিলো…
শীতল এতোদিন তাহলে ভাগ্যকে মেনে নিয়ে স্ত্রির দায়িত্ব পালন করেছে ….
.
.
.
রাজ বললো…
_আমাকে সত্যি ভালবাসোনি কোনোদিন ??
_না … আপনার মতো মানুষকে কখনো ভালবাসা যায়না…
আপনি জঘন্য মানুষ আর জঘন্যই থাকবেন…
আপনার মতো মানুষকে করুনা করে ছিলাম এতোদিন…ভেবেছিলাম আপনাকে মানুষ বানাবো কিন্তু আমি ব্যর্থ…
আপনার আসল রুপ ভাইয়া আমাকে দেখিয়েছে…
সেদিন থেকে আপনার জন্য আমার মিনিমাম মানবিকতাও মরে গেছে…
.
.
.
শীতল সহজ ভাবে এই কথা গুলো বলে উপরে চলে গেলো….
রাজ চেয়ার থেকে দাড়িয়ে পড়লো…
বুকে হাত দিয়ে মনে মনে ভাবলো সে কি কোনো খেলনা নাকি…????
আগেই তো সে ভালো ছিলো…
শীতল তাকে মায়া মমতা ভালবাসা কি সেটা বুঝিয়ে দিয়ে এখন নিজেই সরে গেলো…
শীতল এটা করতে পারেনা…রাজের মনে জায়গা করে নিয়ে এখন জায়গা থেকে সরে যাবে সেটা কখনো হতে পারেনা…
রাজ শীতলের সাথে জঘন্য কাজ করেছে কিন্তু শীতল তো আরো বেশি জঘন্য কাজ করছে রাজের সাথে…
.
.
.
রাজ হাতে থাকা প্ল্যাটটা ফ্লোরে ছূরে মারলো…
.
.
.
রাগে তার গা জ্বলছে…
রাজ নিজের মাথা ঠান্ডা করে চোখ বন্ধ করে রিলেক্স হওয়ার চেষ্টা করছে…..
রাজ কল্পনাও করতে পাচ্ছেনা শীতলকে ছাড়া কিছু..
শীতলের ভালবাসা সে কি করে ভুলবে…ভোলা সম্ভব না…
রাজের প্রথিবীতে শুধু একমাত্র শীতল আর শীতল…
রাজ হাল ছাড়লো না…সে একবার যেটা ভাবে সেটা করেই ছাড়ে….
শীতল রাজের লাইফ রাজের ভালবাসা নিয়ে এমন করতে পারেনা…
.
.
.
রাজ আর কিছু ভাবতে পাচ্ছেনা…
সে দুই হাত নিজের কানে দিয়ে হাটু ঘেরে ফ্লোরে বসে পড়লো…
চিৎকার দিয়ে কান্না করতে ইচ্ছে খুব রাজের…
.
.
.
চিৎকার দিয়ে শুধু বলতে ইচ্ছে করছে ….শীতল আমাকে একটু ভালবাসো প্লিজজজ…
আমার তুমি ছাড়া আপন বলতে কেউ নেই যে…
কেনো আমার মনে ভালবাসা জাগিয়ে এভাবে দূরে সরে যাচ্ছো….
আমাকে ক্ষমা করো আর একটু ভরসা করে বিশ্বাস করো….
.
.
.
কাজ হিমালয়ের কথা অনুযায়ি ময়মনসিংহের সার্কিট হাউসের উদ্দেশ্যে রওনা হলো…
হলুদ শাড়ির সাথ কালো চুরি …কালো টিপ আর চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে…
কাজল এমনিতেও সেরা সুন্দরি তার মধ্যে এমন সাজ সেজেছে….
কাজল ভাবছে চিঠির হিমালয় এই সাজে কাজলকে দেখলে স্নেস হাড়িয়ে ফেলবে…
কাজল নিজের মাথায় নিজেই টোকা দিয়ে ভাবলো…ধ্যাত কি সব ভাবছে ও…মাথাটা পুরোপুরি গেছে ওর…
আচ্ছা ওর কি অচেনা লোকের কথায় এখানে আসা ঠিক হয়েছে…
সামান্য চিঠির পরিচয়ে এখানে আসা ঠিক হয়েছে কি …
এখন ফিরে গেলে কেমন হয়….
না ফিরা সম্ভব না…
কথা দিয়ে কথা না রাখার মেয়ে কাজল না…
.
.
.
যা হবে তা দেখা যাবে…
এখন আপাতত ওয়েট করা যাক…
.
.
.
শীতল বেডে আধশোয়া অবস্থায় উপর হয়ে শুয়ে আছদ…
মনে হয় কাদছেঁ…
রাজ খাবারের প্ল্যাট হাতে নিয়ে শীতলের গায়ে হাত দিয়ে বললো…
_অনেক বেলা হয়েছে…কিছু খেয়ে নাও…তোমার শরীর দূর্বল খুব…
_আমি খাবো না…আপনার হাত থেকে তো কখনোই না…
_প্লিজজজ রাগ করোনা…খেয়ে নাও…
তোমার কষ্ট আমার সহ্য হচ্ছেনা…
_সত্যি সহ্য হচ্ছেনা ???
তাহলে আমাকে আমার বাড়ি দিয়ে আসুন…
আমার কষ্ট চলে যাবে…
_এটা সম্ভব না…
তোমাকে আমার সাথে থাকতেই হবে…
_তাহলে আমি খাবোনা…
রাজ শীতলের কথা না শোনে জোর করে কিছুটা সুপ শীতলের মুখে পুরে দিলো…
সাথে সাথে শীতল পুরো খাবারের প্ল্যাট রাজের উপর ছূরে মারলো…
.
.
.
রাজ এমনটা আশা করেনি…
শীতলের এমন ব্যাবহারে রাজ প্রচন্ড রেগে গেলো…
সে আচমকা শীতলকে বেডের উপর চেপে ধরে শীতলের ঠোটে ঠোট বসিয়র দিলো…
এমন জোরে ধরেছে যে শীতলের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে…
শীতল হাত দিয়ে রাজকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো…
কিছুতেই কিছু হলোনা…
রাজ শীতলকে 15 মিনিট পর ছাড়লো…
রাজ বললো..
_এটা এখন আমার সিমানা…যা করবে ভেবে চিন্তে করবে….তোমার প্রতিটি ভিহেবের দিগুন ফিরিয়ে দেওয়া হবে…
.
.
.
শীতলের প্রচন্ড রাগ হলো
সে চিৎকার দিয়ে বললো…
_You bloody buster …How dare you touch me …
আমাকে টাট করে কিস করার অধিকার কে দিয়েছে আপনাকে ???
এই অধিকার আপনার নেই….
রাজের এবার মাথায় আগুন ধরে গেলো …
সে কি করবে বুঝতে পাচ্ছেনা….
রাজ রেগে ফায়ার হয়ে শীতলকে কোলে তোলে বেডের মাঝখানে ছূরে ফেলে দিলো…
রাজ কি করছে নিজেও জানেনা….
সে নিজের শার্টের বোতাম একটা একটা করে খোলছে…
আর শীতলের এটা দেখে প্রান যায় যায় অবস্থা…
সে ভাবছে এতোটা না করলেও হতো…
রাজের রাগ সম্পর্কে সে ভালো ভাবেই জানে…
রাজ নিজের শার্ট খোলে ফ্লোরে ছূরে মারলো…
তারপর সোজা শীতলের উপর উঠে পড়লো…
দুই হাত দিয়ে শীতলের দুই হাত চেপে ধরলো রাজ…
রাজ শীতলের কানে কানে বললো…
_অনেক হয়েছে ডার্লিং আর না…
আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছো…কিন্তু আর না…
নিজের জিনিস কিভাবে নিজের করতে হয় সেটা আমার জানা আছে…
ভালো হতে চাইলাম হতে দিলেনা…
এখন থেকে রোজ আমার জঘন্য রুপ দেখবে তুমি…
প্রতিদিন আমার জঘন্য রুপ দেখবে তুমি…
এগুলোর জন্য দায়ি তুমি…
আমাকে অপমান করার শোধ আমি নেবো…তোমার পুরো পরিবারকে রাস্তায় নামাবো আর রোদকে তো আমি আমার পায়ের নিচে ফেলবো…
রাজের চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে…
.
.
.
রাজ শীতলের শাড়ির আচল টা টেনে ফেলে দিলো….
.
.
.
এবার তোমাকে দেখাবো ব্লাডি বাস্টার কাকে বলে….আর আমার টাচ কিভাবে তোমার ভালো না লাগে…
শীতলের প্রায় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার অবস্থা হলো ভয়ে…
.
.#অন্ধপ্রেম
Writer :Shabnaj Hossain Moon
Part_48
(আমার সৃত্মি শক্তি লোপ পেয়েছে কিছুই মনে থাকেনা ।এই কারণে আমি সব ভুলে যাচ্ছি গল্প ভালো হচ্ছেনা কেমন উল্টো পাল্টা হয়ে যাচ্ছে)
.
কাজল অনেক ক্ষন দাড়িয়ে ওয়েট করলো তবুও হিমালয় এলো না।
কাজল রাগে দুঃখে চলে এলো বাসায় ।
কাজলের মন ভীষন খারাপ ইচ্ছে করছে চিঠির ভেতর ঢুকে লোক টা কে মাডার করতে…
কেনো এমন করলো লোকটা…এভাবে অপেক্ষা করানোর মানে কি হতে পারে…
.
.
.
শীতলকে সোফায় বসিয়ে মলম লাগিয়ে দিচ্ছে রাজ…
হাত পায়ে আরো অনেক জায়গায় চোট লেগেছে শীতলের…
শীতলের ঠোট অসম্ভব রকমের ফুলে গেছে…ঠোট মরিচের মতো লাল হয়ে ফুলে আছে শীতলের…
রাজের অবস্থা আরো বেশি খারাপ …শীতল তার লম্বা লম্বা নেইল দিয়ে রাজের বুক পুঠ ফেস সব আচরে দিয়েছে রাজের সাথে না পেরে…
রাজের ঠোটে ইচ্ছে মতো কামড় দিয়েছে শীতল যার কারণে রাজের ঠোটও লাল হয়ে জ্বলছে….
.
.
.
রাজ শীতলকে জোর করে মলম লাগিয়ে দিলো….
শীতল রাজকে অবাক করে দিয়ে বললো…
আপনিও মলম লাগিয়ে নিন…
রাজ আচমকা ধাক্কা খেলো…
শীতল সোফা থেকে উঠতেই রাজ শীতলের হাত ধরে বললো…
_তুমি তো আমাকে ভালবাসো না তাহলে কেনো কেয়ারিং কথা বলছো???
শীতল প্রশ্নটা করে নিজেই নিজের কাছে ধরা খেয়েছে…
_আপনি তো ডিবোর্স পেপারে সাইন করেন নি…আইনত আমি আপনার ওয়াইফ এজন্য এতোদিনের করা দায়িত্ব হঠাৎ মনে পড়লো….
তাছাড়া আমি আপনার মতো জানোয়ার না মানুষ…আমার মধ্যে মানবিকতা আছে ….হাজার হলেও আপনি মানুষ আর আমার কারণে আপনি চোট পেয়েছেন এজন্যই বললাম মলম লাগাতে….
আমাকে এর থেকেও বেশি কষ্ট দেওয়া হয়েছিলো ….আমি নীরবে সহ্য করেছি।কিছু বলেনি..বাট সবকিছু মনে রেখেছি…
.
.
.
রাজ হাতে থাকা মলম টা ছূরে মারলো….
রাজের একটা ভুলের জন্য আজকে এমন দিন দেখতে হচ্ছে তাকে…
শীতলের জন্য এতো কষ্ট পেতে হবে আজকে জানলে কখনো শীতলের সাথে জঘন্য ব্যাবহার গুলো করতো না ….
রাজ তো এখন ভালো হতে চায়…সে তো ভালো হয়ে গিয়েছিলো বাট শীতল তাহলে কেনো এমন করছে….
আল্লাহ কেনো শীতলের মন থেকে রাজকে মুছে ফেলছে….
.
.
.
যত কিছয়ই হয়ে যাক রাজ ঠিক করলো শীতলের ভুল ভাঙিয়ে সবাইকে শাস্তি দিয়ে শীতলের কাছ থেকে ভালবাসা আদায় করবে করবেই…
.
.
.
বেশ কয়েক দিন হয়ে গেলো…
রাজন আর রোদ রাজের ঠিকানা বের করতে পারলোনা…শীতলকে নিয়ে রাজ কি বিদেশে চলে গেলো নাকি…বাট শীতলের পাসপোর্ট তো রোদদের বাসায়….
রাজের কাছে সব সম্ভব …ও পারেনা এলম কিছু নেই…
রোদ কসম খেয়েছে সে রাজ আর শীতলকে এক হতে দেবেনা কিছুতেই জীবিত থাকতে…
.
.
.
শীতল অনেক বার চেষ্টা করেছে পালানোর বাট কিছুতেই পারলোনা…
কখনো করডিরে শাড়ি ফেলে নিচে নামার চেষ্টা করছে….
ছাদে দড়ি বেধে চেষ্টা করছে…
জানালা দিয়ে চিল্লা চিল্লি তো আছেই…
রাজ কিভাবে যেনো শীতলের সামনে দাড়িয়ে পড়ে এসব করার সময়…
রাজ শীতলকে একদিন বললো পুরো বাড়িতে সি সি টিভি ক্যামেরা আছে…আর সবকিছু রাজের ফোন থেকে দেখা যায়…
.
.
.
রাজ সারাক্ষন শীতলের সাথে ঝাপটে থাকে…যার কারণে শীতল পালানোর রাস্তা খুজতে পারেনা…
বাংলো তে একটা টেলিফোনও নেই…
শীতলের ফোন তো তাদের বাসায়…আর রাজের ফোন থাকে তার কাছে….
রাজ যখন ওয়াস রুমে যায় তখনই সে পালানোর বৃথা চেষ্টা করে….
শীতলের রাজকে দেখলে ঐ মেয়ের দৃশ্য ভেসে উঠে…
শীতলের ভীষন কষ্ট হয় ঐ কথা মনে পড়লে….
শীতল এখন কারো সাথে থাকতে চায়না…সে সব ছেড়ে দেশের বাহিরে চলে যেতে চায়…..
সজল তাকে এই বিষয়ে সাহায্য করেছে…
রাজের সাথে সারা জিবন থাকতে পারবেনা সে বাবা মা ভাইয়ের জন্য….শীতল নিজের খুশির জন্য তার বাবা মা ভাইয়ের ক্ষতি চায়না…
তাদের কবর দেখতে চায়না…
আত্মহত্যা মহা পাপ তাই শীতল মুক্তির জন্য এই দেশ ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে…
.
.
.
তাহলেই শীতলের সব কষ্ট চলে যাবে…কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা শীতলের আছে…তা না হলে রাজের সাথে এক বছর থাকতে পারতোনা…
.
.
.
হঠাৎ ওয়াস রুমের ডোরে রাজ লক করলো… _শীতল কোথায় তুমি ???
কি করছো ???
_আমি বেড রুমে ঘুমাচ্ছি…
_ধ্যাত মজা করছো ???
এতো ক্ষন লাগে তোমার ???ওয়াস রুম থেকে বের হও প্লিজজজ…
শীতল ডোর খোলে চিৎকার করে বললো…
_কি হয়েছে আপনার জন্য কি ভালো করে গোসলও করতে পারবোনা…
রাজ হেসে বললো…
_তাই বলে এতোক্ষন ???
আমার বুকের মধ্যে চিন চিন ব্যথা করে তোমাকে কিছু ক্ষন না দেখলে….
.
.
.
শীতলরও প্রচন্ড ব্যথা করে রাজের ভালবাসার জন্য…
বাট কি করবে ও….
ও তো প্রতিজ্ঞাবদ্থ…কখনো রাজের সাথে ভালবেসে তার সাথে জিবন কাটানোর ভাগ্য ওর নেই…
আসল কথা হলো শীতলের প্রথমে ঐভাবে রাজের বুকে ঐ মেয়েকে দেখে মাথা নষ্ট হয়েছিলো…যার কারণে সে প্রায় পাগলের মতো ভিহেব করেছে….
কিন্তু ঠিক বুঝতে পেরেছে রাজ কখনো শীতল ছাড়া অন্য কাউকে বুকে জরিয়ে ধরতে পারেনা…
সে তো কখনো শীতল কে ছাড়া অন্য কাইকে তাকিয়ে পর্যন্ত দেখেনা…
.
.
.
রাজের ছোয়াতেঁ শীতল বাস্তবে ফিরে এলো…
.
.
.
শীতল টাওয়াল নিয়ে ডেসিং টেবিলের সামনে বসলো চুল মুছতে…
রাজ হঠাৎ শীতলের হাত থেকে টাওয়াল নিয়ে চুল মুছে দিতে লাগলো শীতলের…
শীতল চোখ বন্ধ করে আছে…
তার অসম্ভব কষ্ট লাগছে….
শীতলকে দূর্বল হলে চলবেনা…
তাকে যেভাবেই হোক না কেনো রাজকে দূরে সরিয়ে পালাতে হবেই…
তার জন্য রাজের সাথে যত রকম দূর্ব্যাবহার করতে হয় তাই করবে….
.
.
.
শীতল রাগি লুক নিয়ে টাওয়াল টা দূরে ছূরে মারলো…
_আমার কারো হেল্পের দরকার নেই…
শীতল বারান্দায় চলে গেলো…
রাজও বারান্দায় গিয়ে শীতলকে বললো….নাইট গ্রাউন ছেড়ে শাড়ি পড়তে…
নাইট গ্রাউন রাতের জন্য তাই রাতে পড়তে…
আর শাড়ি দিনের জন্য তাই দিনের বেলা শাড়ি পড়তে…
শীতল শাড়ি পড়তে জানেনা তাই নাইট গ্রাউন পড়ে আছে এটা রাজ বেশ বুঝতে পাচ্ছে…
.
.
.
শীতল রেগে তাকিয়ে রাজকে বললো…
_আমি শাড়ি পড়তে জানিনা বলে আপনি বার বার শাড়ি পড়ানোর নামে আমার সুযোগ নিন…আর আমায় টাচ করেন সুযোগ বুঝে…
এটা আর হবেনা…
রাজ শীতলকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে রাজ বললো….
_আমি সুযোগ নিই তোমার ???
আমার ছুতো লাগবে তোমাকে টাচ করতে ???
কেনো আমি এমনিতে পারবোনা তোমাকে টাচ করতে ????
আমি কি পারি আর না পারি সেটা নিঃশ্চয় জানোনা ????
.
.
.
.
শীতলের চোখ বন্ধ হয়ে গেলো রাজের কথার ভয়ে…
রাজ কি করতে পারে আর না পারে সেটা শীতল ভালো করে জানে…
.
.
.
_কি হলো কথা বলছো না কেনো ???
_কি বলবো ???
_শাড়ি পড়বে নাকি পড়বেনা ???
_আমি দরকার পড়লে সুইমিংসুট পড়ে থাকবো তাতে আপনার কি ?????
রাজ হেসে বললো…
_আসলেই আমার কিছুনা…বাট সুইমিংসুটে তোমাকে কি যে হট সেক্সি লাগবে আমার তো ভেবেই সেই লেভেলের খুশি লাগছে….
আচ্ছা দাড়াও এখনি সুইমিংসুটের অর্ডার দিই আমার আর তোমার জন্য…এই বাংলোতে তো একটা সুইমিং পুল আছে …আমারা দুজন মনের সুখে সাতার কাটবো ঠিক আছে ডার্লিং…
.
.
.
শীতলের তো চোখ কপালে উঠে পড়েছে রাজের কথা শুনে…
শীতল তো এমনিই এই কথা বলেছে আর রাজ তো সিরিয়াসলি নিচ্ছে…
.
.
.
শীতল এক চিৎকার দিয়ে বললো…
_আমি শাড়ি পড়বো …
আমাকে শাড়ি পরিয়ে দিন প্লিজজজ…
রাজ হেসে বললো…
_এই তো লাইনে এলে আমার লক্ষি যাদু বউ…
.
.
.
.
শীতলকে একটা সবুজ শাড়ি পরিয়ে দিলো রাজ…
শীতলকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে…
রাজ শীতলের থেকে চোখ ফেরাতে পাচ্ছেনা…
শীতলকে বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখতে ইচ্ছে করছে রাজের…
.
.
.
শীতল শাড়ি পরতেই বারান্দায় চলে গেলো…
রাজ সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছে আর শীতলকে দেখছে….
এই মূহুর্তে শীতলকে সবচেয়ে সুন্দরি লাগছে পুরো মহা বিশ্বের মধ্যে…
এরকম একটা চমৎকার মেয়ের জন্য সারা জিবন অপেক্ষা করে লড়াই করতে পারবে পৃথিবীর সাথে…
.
.
.
রাজ ভাবছে শীতলের জন্য সারা জিবন সব ছেড়ে এখানেই পরে থাকবে দরকার পড়লে…
এই জায়গা খুব নিরাপদ রাজ আর শীতলের জন্য…
.
.
.
শীতল ভাবছে রাজকে এতো অপমান করা হয়েছে এখনো অপমান করা হচ্ছে তবুও কেনো রাজ তাকে ছূরে ফেলে দিচ্ছেনা…
রাজ তো শীতলকে নিজের করে পেয়েছে কতবার‌…রাজের কাছে শীতলের প্রয়োজন নেই তাহলে কেনো সে শীতলকে নিয়ে পড়ে আছে…
রাজ তো দেখতে পুরো হিরোর মতো…রাজের কি নেই …সব আছে রাজের…
রাজের পেছনে মেয়েরা লাইন লাগিয়ে রয়েছে…
রাজ তো চাইলে কারি কারি সুন্দরিদের নিজের প্রেমে ফেলতে পারে…
রাজের শুধু একটাই ভাবনা ।
শীতল যতটা সুন্দরি ততটাই ওর মন সুন্দর তা না হলে যার কাছে নিজের সম্মান হাড়িয়েছে তাকে স্বামি হিসেবে মেনে কেনো ???
শীতল রাজের কোমল হ্রদয় বলে কিছু আছে সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে রাজকে…
শীতল সমপূর্ননিষ্ঠা দিয়ে স্ত্রির কর্তব্য পালন করেছে…
এমন একটা মেয়েকে পাওয়া ভাগ্যবানের হয়…
শীতল শত শত অপমানের পরেও রাজকে ছেড়ে যায়নি…
সব সময় শত শত ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছে রাজকে…
তাহলে রাজ কেনো পারবেনা শীতলের অভিমান রাগ ভাঙাতে…
শীতল যে কোনো চাপে পড়ে এমন করছে রাজের সাথে সেটা রাজ বুঝতে পাচ্ছে…
.
.
.
রাজের দূর্ভাগ্য এখনো সেই গোপন কথা বের কেতে পাচ্ছেনা….
রাজ শীতলদের বাড়ির সব জায়গায় সিকিউরিটি লাগিয়ে রেখেছে …
রাজন আর রোদের সাথেও গার্ড লাগানো আছে…
রাজ ইচ্ছে করলে শীতলের বাবাকে পথে বসাতে পারে…
বাট সেটা সে করবেনা…
একবার শীতল রাজের মন শুদ্ধ করে দিয়েছে সেই মনে আর কোনো কালিমা লাগাবেনা…
এমনিতেই রাজ আগে অনেক অন্যায় করেছে…
বাট রাজ রোদকে কঠোর শাস্তি দিয়েই ছাড়বে….
রোদের জন্য আজকে তারা দুজন এভাবে কষ্ট পাচ্ছে….
রোদকে রাজ তার পায়ের কাছে ফেলবে রাজ…
এতে কোনো সন্দেহ নেই…..
.
.
.
রাজ যতটা পারছে শীতলকে কেয়ার করছে…
শীতলের যাবতীয় কাজ রাজ করে …
শীতলের সাথে কঠোর ব্যাবহার করে হলেও শীতলকে নিজের কাছে সওযত্নে রেখেছে রাজ…
.
.
.
এদিকে ময়মনসিংহের বাড়িতে হিমালয়ে অনেক গুলো চিঠি এসেছে কাজলের কাছে…সে ক্ষমা চাচ্ছে ঐ দিন না আসায়…
.
.
.
হিমালয় লাস্ট বারের মতো অনুরোধ করেছে কাজলের সাথে দেখা করার জন্য…
কাজল অনিচ্ছা সত্বেও ময়মনসিংহের শ্যামলি বাংলো রেস্তোরায় গেলো আগের মতো হলুদ শাড়ি পরে সেজে গুজে…
কাজল সেখানে গিয়ে অবাক হলো…
কাজলের নামে পুরো রেস্তোরা বুকিং করে রেখেছে হিমালয়…
.
.
.
কাজল একটা টেবিলে বসতেই কেউ বলে উঠলো _Hello kajol
কাজল পেছনে তাকিয়ে একটা রাজপূত্র দেখতে পায়…
হলুদ শার্টে কালো সানগ্লাসে লোকটাকে অসম্ভব ভালো লাগছে…
গা থেকে মিষ্টি পারফিউমের সুভাস বের হয়ে আসছে….
.
.
.
.
কাজল আর হিমালয় সামনা সামনি বসে আছে…
কাজল কিছু বলছেনা সে ভীষন লজ্জা পাচ্ছে…
তাকাচ্ছেনা পর্যন্ত….হিমালয় কাজলের সাথে এমন ভাবে কথা বলছে যেনো কাজলকে সে আগে থেকেই চেনে…হিমালয় প্রচুর কথা বলে…
কাজল আর চোখে দেখলো দুটো বিদেশি কোরিয়ান মেয়ে সচ্ছ সর্ট ড্রেস পরে মিউজিক বাজাচ্ছে…
কাজল বেশ মর্ডার তাই বলে অভার স্মার্ট না…
মেয়েগুলোর কাপড় না পড়লেও চলতো এমনিতেই সব দেখা যাচ্ছে…
হিমালয় যদি ঐ মেয়েগুলো কে দেখে তাহলে কাজল বেশ লজ্জায় পড়ে যাবে…
কাজল ময়মনসিংহে আছে বলেউ ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরেনা এখন…ময়মনসিহ হলো একটি শুদ্ধ সংস্কৃতি বিভাগ…
(ময়মনসিংহের মধ্যে বেশি অশ্লিলতা নেই ,এখানে প্রায় মেয়েরা পর্দাশীল…আর কিছুদিন পর ময়মনসিহের বেশিরভাগ মেয়েদের দেখা যাবে ফুলপর্দা করতে,,,,প্রচুর ফুল পর্দা ওয়ালী পাওয়া যায় )
.
.
.
কাজলে অবাক করে দিয়ে হিমালয় বললো…
_এই মেয়ে গুলো কে এভাবে ড্রেস পরানোর মানে হচ্ছে আমাদের মতো কাস্টমারদের রেস্তোরার প্রতি আকর্ষন বাড়ানোর…
তবে এগুলো এই পর্যন্ত কারণ বাহিরে বের হলে আমাদের ময়মনসিংহের অর্ধেক লোক হার্টঅ্যাটাক করবে ,এটা তো আর ঢাকা না ।
কথা গুলো বলেই হিমালয় হাসতে শুরু করলো…
কাজল বেশ লজ্জায় পরে গেলো…
কিভাবে হিমালয় বুঝলো কাজল কি ভাবছে…
কাজল খেয়াল করলো হিমালয়ের একটা চোখ নড়ছেনা…
চোখটা একটা পলকও ফেলছেনা….
.
.
.
এদিকে রাজ শীতলকে বার বার খাওয়ার জন্য ডাকছে…
তবুও শীতল রুমের দরজা ওপেন করছেনা..
রাজ ভয় পেয়ে গেলো….শীতল কি পালালো নাকি…
রাজের প্রচন্ড ভয় আর রাগ লাগতে শুরু করলো…
.
.
.
চলবে………
.
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here