অন্ধপ্রেম পর্ব -৪৯+৫০

#অন্ধপ্রেম
Writer:Shabnaj Hossain Moon
Part_49
(
রাজ দরজা ধাক্কা দিচ্ছে আর ভাবছে একটু আগের কথা…
যেখানে রাজ শীতলকে একটা সি সি টিভি ফুটেজ দেখানো হয়েছিলো…
শীতল সেটা দেখার পর রুমে গিয়ে দরজা লক করে আছে…
.
.
.
শীতলকে ঐ দিন রাতের ফুটোজ দেখানো হয়েছিলো…
শীতল তখন ফুটেজ দেখে কিছু বলেনি বাট মনে মনে ভেবেছে…
এটা না দেখালেও চলতো বিকোজ শীতল তো রাজকে চেনে সে কখনোই শীতলকে ধোকা দেবেনা…
মুখে মুখে রাজকে অবিশ্বাসের কথা বলার একটাই কারণ সেটা হলো রাজকে নিজের থেকে দূরে সরানোর একটা পথ ….
.
.
.

কাজলের বেশ লজ্জা লাগছে…হিমালয় এগুলো কি বলছে…কাজলের মুখ লাল হয়ে গিয়েছে…হিমালয় হাসতে হাসতে বললো…
তোমার তো এখনি যা অবস্থা বাকি জিবন তোমাকে নিয়ে চলবে কি করে…
কাজল অবাক হয়ে তাকালো হিমালয়ের দিকে….
হিমালয় কথা ঘুরিয়ে বললো…
_আচ্ছা এতো বোঝার কাজ নেই এখন এই সুপ খাও…
কাজল মাথা নিচু করে সুপ খেলো কিছুটা…কাজলের কেমন যেনো সব উল্টো পাল্টা লাগছে…
কাজলের মাথা ঘুরছে আর ঘুম পাচ্ছে…
.
.
.
কাজল ঝিম ঝিম চোখ নিয়ে শেষ বারের মতো হিমালয়ের দিকে তাকিয়ে তার হাসিময় মুখ খানি দেখলো….
.
.
.
রাজ দরজা টা জোরে জোরে ধাক্কা দিয়ে ওপেন করলো…
রাজ দেখলো শীতল শাড়ি পরছে…
শাড়ি পরছে বলতে শাড়ি পরার চেষ্টা করছে…
রাজ কিছুটা নিশ্চিত হলো যে শীতল ভুল কিছু করছে না…
.
.
.
রাজের তো ভয়ে প্রায় মরে যাওয়ার মতো সিচুয়েশন হয়েছিলো…
রাজ বললো…
_কি ব্যাপার তুমি শাড়ি পড়ছো কেনো ???
কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে কি ???
আমাকে বলতে আমি তোমাকে শাড়ি পরিয়ে বাহিরে নিয়ে যেতাম…
_আপনাকে কেনো বলবো ??
তাও শাড়ি পরাতে…আপনি আর কখনো যেনো আমাকে শাড়ি পরাতে না পারেন এজন্যই আমি শাড়ি পরা শিখছিলাম…
সব সময় শাড়ি পরানোর নাম করে আমাকে টাচ করার কোনো মানেই হয়না…আমার ঘৃনা লাগে আপনার ছোয়ায়….
রাজ কিছু বলতে চেয়েও বললো না…
রাজের প্রচন্ড রাগ উঠলো …সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে করিডরে চলে গেলো….
.
.
.
শীতল বসে বসে বোর হচ্ছিলো তাই সে টেলিভিশনের সামনে বসলো একটু চ্যানেল ঘোরাঘোরি করতে…
আজকাল চ্যানেলে চ্যানেলে কি সব বাজে বিজ্ঞাপন দেয় …
রাজ শীতলের পাশে বসে বসে পায়ের উপর পা তোলে ল্যাপটপে অফিসের কাজ করছে…
শীতল একটা চ্যানেলে দেখলো চিকন মোটা হওয়ার বিজ্ঞাপন…সব সময় হারবাল ঔষধের বিজ্ঞাপন কেনো দেখানো হয় সেটাই শীতল বুঝতে পারেনা…
রাজ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে বললো…
_শীতল তোমার তো মেদ কমানোর প্রয়োজন নেই…তুমি তো এমনিতেই মাশ আল্লাহ স্লিম ফিট বডির গার্ল…
বলেই রাজ হাসি দিলো…
শীতলের বেশ রাগ হলো…সে অন্য চ্যানেল দিলো….
সেখানেও নাম্বার ওয়ান আরেকটি বিজ্ঞাপন দেখতে পেলো শীতল….
হর্স পাওয়ার নামের বিজ্ঞাপন একজন বলছে…স্বামি স্ত্রির মধ্যে প্রেম কমে গিয়েছে তাহলে হর্স পাওয়ার সেবন করুন…
.
.
.
শীতল আড় চোখে রাজের দিকে তাকালো….
রাজের তো এমনিনেই কোটি কোটি প্রেম আকাশ থেকে পরে…
আচ্ছা এমন কোনো কিছু নেই যা দিয়ে প্রেম ভালোবাসা কমে যায়…
এই ঔষধ হলে ভালোই হতো তাহলে তারা দুজন খেয়ে নিতো আর দুজনেরই কষ্ট কমে যেত…
_শীতল এই ঔষধ জিবনেও তৈরি করা হবেনা…বৃথা ভাবনা ভেবোনা…একটু আমার কথা ভাবো…
আর এই বিজ্ঞাপন টা কিন্তু বেশ…ভাবছি হর্স পাওয়ার জন্য অর্ডার করবো….
তাহলে আমার প্রতি তোমার একটু ভালোবাসা তৈরি হবে…
এই লাইফে তো কখনো নিজে থেকে আমাকে একটুও আদর করবে বলবে মনে হয়না…এটার হেল্প আমাকে নিতেই হবে দেখছি…
শীতল রাজের দিকে রেগে তাকালো…তারপর সোফায় থাকা কুশন দিয়ে রাজের মাথায় মেরে করিডরে চলে গেলো….
রাজ ল্যপটপে কাজ করা অবস্থায় কিছুক্ষন হাসলো…..
কাজলের জ্ঞান ফিরলো…
সে নিজেকে একটা বেডে আবিষ্কার করলো…
পাশে তাকিয়েই কাজল হিমালয়কে দেখতে পেলো…
হিমালয় একটা পানির গ্লাস কাজলকে খেতে দিলো…
কাজল গ্লাসটাকে ফ্লোরে ছূরে মারলো….
_আপনার কি উদ্দেশ্য…???
আমাকে এভাবে এখানে আনা হয়েছে কেনো ????
আপনি সুপে কিছু মিশিয়র ছিলেন…
কাজল বেড থেকে উঠে দরজায় নক করলো…দরজা বাহির থেকে লাগানো ছিলো…
কাজ বেশ ভয় পেয়ে গেলো…
_প্লিজজ কাজল ভয় পেয়ো না…তোমার কোনো ক্ষতি আমি করবোনা…
এখানে বস…
তোমাকে কিছু কথা বলার আছে…
কাজল ভাদ্য হয়ে বেডে বসলো…
হিমালয় তার চোখের সান গ্লাস টা খোলে ফেললো…
_কাজল ভালো করে দেখো আমার এই চোখ নড়ছেনা কারণ চোখটা মোটামোটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে….
তোমার কাজিন রাজ এই কান্ড ঘটিয়েছে….
কাজল চমকে উঠলো…
হিমালয় আবার বলতে লাগলো…
_স্কুলে থাকা কালিণ রাজ আমার এই কষ্ট টা দিয়েছে…
রাজ নিজের ভুল বুঝতে পেরে আমাকে কথা দিয়েছিলো তার বোনের সাথে আমার বিয়ে দেবে….
একদিন রাজের সাথে তোমাকে আমি দেখেছিলাম…
বিশ্বাস করো সেদিন থেকে তোমাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছিলাম…
প্রথমে তোমাকে রোজা ভেবেছিলাম …ভেবেছিলাম রাজের বোনকে বিয়ে করে প্রতিশোধ নেবো…কিন্তু তোমাকে দেখার পর থেকে আমার মাইন্ড পাল্টেছে…
.
.
.
হিমালয় কিছুক্ষন থেমে আবার বলতে শুরু করলো….
_একদিন জানতে পারি তুমি রোজা না …রোজার মৃত্য হয়েছে…
রোজা একজনকে ভালোবেসে আত্মহত্যা করেছে…
রোজা ভালোবাসার মূল্য দিয়েছে নিজের জিবন দিয়ে…
রোজার ভালোবাসা তাকে অন্ধ করে দিয়েছিলো…
.
.
.
এরপর থেকে আমি তোমাকে ফলো করতাম…
আমি তোমার আশে পাশে থাকতাম…
তোমার মনে আছে…
ভিবিন্ন জায়গা থেকে তোমার নামে পার্সেল আসতো…আসলে ওগুলো আমি পাঠাতাম…
সরাসরি তোমাকে ভালোবাসি বললে তুমি মানতে না…
তুমি তো যে সে মেয়ে নও…
তার উপর রাজও এটা মেনে নিতো না…
তাই তো একটা প্ল্যান করলাম…
তোমার মনে ধীরে ধীরে চিঠির মাধ্যমে আমার জন্য জায়গা করে নিলাম…
তুমি তো সাইকোলজির স্টুডেন্ট …তাই তোমার মাঝে কৌতোহূল কাজ করে খুব…
তুমি পেপারের বিজ্ঞাপন গুলো পড়তে ভালোবাসো…
বিষেশ করে হলুদ কালারের লেখা বিজ্ঞাপন…
তাইতো আমি প্ল্যান করে শুধু তোমার জন্যই একটা বিজ্ঞাপন বানালাম একটা পেপারে…যেটা তোমার কাছে গিয়ে পড়লো…
তুমিই প্রতিদিন পেপার কালেক্ট করো পেপার ওয়ালা থেকে‌…
ধীরে ধীরে তোমাকে ইমোর্সোনালি ফাসালাম…
যেনো আমার কাজ সহজ হয়…
কাজল ভাবতেই পারছেনা এই লোকটাকে বিশ্বাস করে দেখা করতে এসেছিলো ময়মনসিংহে…
মানুষকে আসলেই বিশ্বাস করা যায়না…
একটা মেয়ের অনুভূতির কথা একটা মেয়েই বুঝতে পারে…
এভাবে তার মনকে নিয়ে খেলতে পারলো হিমালয়…
.
.
.
_কাজল তুমি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো সেটা তোমার ফেস দেখেই বোঝা যাচ্ছে…
এজন্যই তোমার চোখ থেকে পানি পড়ছে কারণ যাকে ভালোবাসে মন সে যদি বিশ্বাস ভাঙে তাহলেই তোমার মতো চোখের পানি পড়ে…
যেমনটা আমাকে বিশ্বাস করে তোমার চোখ থেকে পড়ছে…
.
.
.
কাজল বললল…
_আমার সাথে এমন নাটক করার মানে কি ???
_আগেই তো বললাম তুমি সরাসরি মানবেনা আমার ভালোবাসা…কারণ তোমার মতো হেলেনাস্টিক বুদ্ধিমতি মেয়েরা আসল ভালোবাসা বুঝতে পারেনা….
তাই তোমাকে ট্রেপে ফেলে কাজটা করতে হয়েছে খুব সাবধানে…
আমি চাই…#অন্ধপ্রেম
Writer:Shabnaj Hossain Moon
Part_50
_দেখো কাজল আমি চাইলে সবকিছু লুকাতে পারতাম বাট লুকায়নি কারণ আমি চাইনা নতুন রিলেশনে কোনো লুকানো সত্যি থাকুক…
_কিসের নতুন রিলেশন ???
_নতুন রিলেশন মানে আমাদের বিয়ে…
এজন্যই তো এতোকিছু প্ল্যান করলাম।
তোমাকে এমন ভাবে আমার মায়ায় জরিয়েছি যে তুমি চাইলেও এখন আমাকে ভুলতে পারবেনা।
কোনো কিছুতে মানাও করতে পারবোনা।
_আপনাকে আমি কেনো বিয়ে করবো ???
_আমি তোমাকে ভালোবাসি আর তুমি আমাকে ভালোবাসো এখন তাই বিয়ে করবে…
_আমি কখন বললাম আপনাকে ভালোবাসি ???
_বলতে হয়না ….বুঝে নিতে হয়….
তোমার আমাকে ভালোবাসতে বাধ্য করেছি….
তোমার এই কারণেই কষ্ট লাগছে….ভালোবাসার মানুষ যদি মিনিমাম বিশ্বাস ভাঙে তখন চোখের পানি কথা বলে…যেমনটা তুমি চোখের পানি কথা বলছে…
_আমি আপনাকে বিয়ে করবো না মানে করবোনা…
আমার কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা আছে….
আমার ইমোর্শনাল নিয়ে খেলোয়ারের সাথে আমি থাকতে চাইনা…
এখন আমি এখনি চলে যাবো এখান থেকে…
.
.
কাজল বেড থেকে উঠতেই হিমালয় কাজলকে বেডের সাথে চেপে ধরলো…
_আমাকে না বলার সাহস হলো কি করে তোমার ???
আমি না শুনতে পারিনা…
আমি কয়েক বছর তোমার পেছনে পড়ে আছি সবকিছু বাদ দিয়ে আর এক বছর ধরে এতো প্ল্যান করলাম …এতো কষ্ট করে ট্রাপে ফেলে তোমার ভালোবাসা আদায় করলাম ….আর তুমি কিনা চলে যাবে…
_ছাড়ুন আমাকে প্লিজজজজ,,,,কাজল বেশ ভয়ে আছে,ভয়ে সে নিজের চোখ বন্ধ করে দিলো,,,,
.
.
.
_ছাড়ার জন্য তোমাকে ধরিনি ,,,,
আজকের পর এমনিতেই তুমি আমার হয়ে যাবে,,,,,
কারণ আজকে রাত তুমি আমার সাথে এখানে কাটাবে,,,,এক রাত বাহিরে কাটানোর পর আমি ছাড়া তোমার কোনো অপশন থাকবেনা,,,,
কখনো অন্য কোথাও তোমার বিয়ে হতে দেবো না,,,সবাইকে আমি বলবো তোমার সাথে এক রাত কাটিয়েছি,,,,
প্ল্যান টা অনেক সুন্দর তাইনা ???
কাজল গায়ের জোরে হিমালয়কে জোরে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে একটা থাপ্পর দিলো,,,,
হিমালয় শান্ত গলায় বললল,,,,
_থাপ্পরটা তুমি ছাড়া অন্য কেউ দিলে তার হাত ভেঙে গুড়ো করে দিতাম,,,,
এটা তোলা রইলো,,,
_আপনি এতো জঘন্য লোক,,,আমার ভাবতেও ঘৃনা লাগছে।
_আমি জঘন্য হতে চাইনা ,,,,তুমি রাজি হয়ে যাও ,,,তাহলে আমায় এতো কিছু করতে হবেনা,,,,
সকালে তোমার সাথে এখানে আমার বিয়ে হবে,,,,
এখন রেস্ট নিয়ে মাথা ঠান্ডা করো।
এখন থেকে আমি হলাম তোমার সবকিছু …
.
.
.
হিমালয় হাসতে হাসতে চলে গেলো রুম থেকে…

কাজল বেডে বসে কাদতে লাগলো,,,,,
এই ঝামেলা থেকে উপরওয়ালার কাছে মুক্তি চাইলো কাজল ….
কাজলের ভীষন কষ্ট লাগছে….
কেউ তাকে এভাবে ফাসালো আর সে ফেসে গেলো….
এতো বড় গর্ধভ সে হলো কি করে…
.
.
.
রাজ শীতলকে খাওয়াচ্ছে নিজের হাতে…
রাজ শীতলকে জোর করেই খাওয়াচ্ছে…
শীতলের পছন্দের সব খাবার অর্ডার দেওয়া হয়েছে…
রসালো ঝাল ঝাল কাকড়া ভাজা,রুই মাছের কালিয়া,এন্ড মৌচার ঘন্ড ….
শীতলের এই খাবার গুলো দেখে বেশ লাগলো…
শীতলের খুব ইচ্ছে করছিলো খেতে বাট ইগোর কারণে সে খেতে চাচ্ছিলো না…
রাজ শীতলের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে শীতলকে নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছে জোর করে…
শীতল খাচ্ছে আর রাজের হাতে কামর দিচ্ছে…
রাজ তবুও কিছু না বলে শীতলকে খাওয়াচ্ছে…
শীতলের হঠাৎ কক্সবাজের অপমানের কথা মনে পড়লো…
সেখানে রাজ শীতলকে সবার সাথে গার্লফ্রেন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো….
রাজ হঠাৎ বললো…
_তুমি ঐ কথা ভাবছো ???
_কোন কথা ??
_তোমাকে গার্লফ্রেন্ড হিসেবে পরিচয় করে দিয়েছিলাম…
_আপনার কাছ থেকে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না…
_দেখো শীতল তুমি হলে একের ভেতর সব…
তুমি আমার ওয়াইফ এন্ড তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড…
রাজ মুচকি একটা হাসি দিলো…
.
.
.
_আপনার যে বিয়ের আগে কত কত গার্লফ্রেন্ড ছিলো কে জানে ???
রাজ খাওয়ানো বাদ দিয়ে বললো…
_আমার কোনো কিছু ছিলো না বিয়ের আগে…
তবে বিয়ের পর একটা গার্লফ্রেন্ড হয়েছে…মানে তুমি কারণ তুমি একের ভেতর সব যেটা একটু আগে বললাম…
.
.
.
_আমার ভিলিব হয়না…
আপনি কোনো না কোনো কান্ড ঘটিয়েছেন ….
যেমন ঐ দিন…
শীতল কিছু বললো না…সে থেমে গেলো…
_যেমন ঐ দিন ???
মানেটা কি ???
আমি তো তোমাকে সি সি টিভি ক্যামরেরা দেখিয়েছি…
তুমি তো দেখেছো আমি কিছু করনি…
রোদ আগে থেকেই রুমে পানিতে কিছু মিশিয়ে ছিলো…
তারপর ঐ মেয়ে তোমার শাড়ি পড়েছে…
তারপর আমার যখন সেন্স ছিলো না ঐ মেয়ে সেই সুযোগে আমার গায়ে লিপস্টিক এর দাগ বসিয়েছে….
তারপর আমার শার্টের বোতাম…
শীতল চিৎকার দিয়ে বললো…
_স্টপ ইট প্লিজজজজ.
আমি আর নিতে পাচ্ছিনা…
শীতল রাজকে বিশ্বাস করে …..
প্রমাণ না দিলেও রাজকে সে বিশ্বাস করতো…
প্রথমে ঐ মেয়েকে এভাবে রাজের বুকে দেখে শীতল বেশ রেগে গিয়েছিলো…
কিন্তু পরে সে ভাবে এই একটাই রাস্তা রাজকে নিজের থেকে দূরে সরানোর…
রাজের দুঃখ শীতল আর দেখতে পাচ্ছেনা…
শীতল কখনো বাবা মা ভাই কে খুন করতে পারবেনা…
শীতল স্বইচ্ছায় রাজের সাথে থাকলে সবাই আত্মহত্যা করবে…
শীতলের কাছে এগুলো খুন বলেই মনে হবে…
.
.
.
শীতল রোদকেও ক্ষমা করবেনা…
এজন্যই সে রাজন কে বিয়ে না করে লুকিয়ে চলে যাবে এদেশ ছেড়ে…
সজল সবকিছু এরেজন্ড করে রেখেছে…
এখান থেকে চলে গেলেই রোদের শিক্ষা হবে …এই জিবনে কখনো বোনের মুখ দেখতে পারবেনা সে…মা বাবাও না …
রাজের কষ্ট অপমানও শীতলকে দেখতে হবেনা…
শীতল চলে গেলেই রাজের মুক্তি…
কিছুদিন গেলেই রাজ শীতলকে ভুলে যাবে তখন নতুন কাউকে নিয়ে রাজ সুখি হবে…
প্রথিবী উল্টে গেলেও শীতল কখনো রাজের হতে পারবেনা …
শীতল নিজের সুখের জন্য কখনো পরিবারের খুনি হতে পারবেনা…
.
.
.
শীতল রাজের হাতে কামর দিয়ে উঠে চলে গেলো ওয়াস রুমে…
রাজ শীতলের যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকলো…
রাজ মনে মনে ভাবছে সবকিছু কত তাড়াতাড়ি বদলে গেলো…
যে শীতল রাজের অপমান সহ্য করে রাজের জন্য শত শত ভালোবাসা উপহার দিতো আর সব সময় খাবার নিয়ে বসে থাকতো রাজের জন্য ….সেই শীতল কিনা রাজকে ঘৃনা করে …একবারও জিজ্ঞেস করেনা রাজ খেয়েছে কিনা…
রাজ রাগে দুঃখে সামনে থাকা গ্লাসটা ফ্লোরে ছূরে মারলো…
শীতল আওয়াজ শুনে রাজের সামনে এসে গ্লাসের টুকরো দেখলো…
_আপনি আসলেই জানোয়ার …
কখনো মানুষ হবেন না…দুঃখজনক…
শীতল আবারও সামনে থেকে চলে এলো…
রাজ এবার সামনে থাকা প্ল্যাট টা ছূরে মারলো …
রাজ মাথায় হাত দিয়ে বললো…
_Yes yes আমি জানোয়ার আমি অমানুষ …কেউ আমাকে ভালো মানুষ বানাতে পারলোনা…
আমি এরকমই থাকবো …
আমি আমার ভালোবাসার জন্য যতটা নিচে নামতে হয় ততটা নামবো নিচে…
.
.
.
কেউ শীতলকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতে পারবেনা…
.
.
.
রাজকে অনেক ক্ষন ধরে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা…
শীতল এই সুযোগে ভাবলো এখান থেকে পালানো যাক..
শীতল নিচে নামতেই রাজকে দেখতে পেলো…
রাজ সবে বাহির থেকে এসেছে…
_কি ব্যাপার পালানোর চেষ্টা করা হচ্ছিলো বুঝি ???
রাজের থেকে পালানো এতো সহজ নয়…
একটা কাজে গিয়েছিলাম…
আমাকে দেখতে না পেয়ে মিস করছিলো বুঝি ???
তোমার হার্ট ধক ধক করছিলো বুঝি ???
দেখি দেখি কোথায় ???
_Don’t touch me …সব সময় আমাকে ছোয়ার টেনশনে থাকুন তাইনা ???
রাজ হেসে বললো…
_তোমাকে ছোবো নাতো কাকে ছোবো ডার্লিং ???
তুমি তো আমার সবকিছু.
থার্ড ক্লাসের মতো আমাকে ডার্লিং ডার্লিং ডাকবেননা খবরদার…
_আমি তো থার্ড ক্লাস …কবে ফাস্ট ক্লাস ছিলাম বলোতো ???
তুমি আমাকে একটু ভালোবাসা দিলে তো আমি তোমার মতো ফাস্ট ক্লাস হয়ে যেতে পারতাম…
.
.
.
সন্ধ্যায় শীতল বেডে শুতেই রাজ পেছন থেকে তাকে জরিয়ে ধরলো…
রাজের পরনে কোনো শার্ট ছিলোনা…
এভাবে খালি গায়ের কি মিন সেটা শীতল বুঝতে পারলো…
_আমাকে ছাড়ুন প্লিজজজ…
আমার থেকে দূরে থাকুন…
টাচ করবেন না আমাকে…
রাজ হেসে বললো…
_শুধু টাচ নয় আরো অনেক কিছু করবো তোমার সাথ…
রাজ শীতলের চুল গুলো ধরে শীতলের ঠোটে চুমো দিলো…
রাজ শীতলকে বেডে শুইয়ে দিয়ে শীতলকে আদরে ভরিয়ে দিতে শুরু করলো…
শীতল রাজকে আটকানোর চেষ্টা চালিয়েও পাচ্ছেনা আটকাতে…
.
.
.
শীতল ইচ্ছে মতো রাজর পিঠে খামছি দিচ্ছে…
রাজের মতো বডি বিল্ডারের কাছে এগুলো সুরসুরির মতো লাগছে…
সে শীতলের খামছি গুলোতে আরো পাগল হয়ে গেলো…
শীতলের মন এমনিতেই খারাপ তার উপর রাজ এমন করছে জোর করে…
শীতলের শাড়ি প্রায় খুলে ফেলেছে রাজ …তখনি শীতল রাজকে খুব জোরে নিজের থেকে একটু দূরে সরিয়ে জোরে জোরে বললো…
_আর কত রেপ করবেন আমাকে ???
এভাবে জোর করে কতদিন ???
আমাকে কবে মুক্তি দিবেন ???
কতবার বলবো আপনাকে আমার থেকে দূরে থাকুন …
.
.
.
রাজ ভাবতেও পারেনি শীতল এমন কথা বলবে এই মূহুর্তে…
রাজকে এখন অপমান করলেই পারতো শীতল…
এই অবস্থায় নিজের স্বামিকে এভাবে অপমান কোনো স্ত্রি করেনা…
রাজের কাছে প্রচন্ড অপমান বলে মনে হলো শীতলের কথা গুলো…
বার বার রাজকে শীতল জঘন্য কথা কেনো মনে করিয়ে দেয়…
রাজের কতটা কষ্ট হয় এই কথা গুলো শুনলে সেটা রাজ জানে…
.
.
.
রাজের বুক ফেটে যাচ্ছদ কষ্টে…
স্ত্রির মুখ থেকে এমন কথা শুনে রাজের মাথা পুরো রাগে ফেটে যাচ্ছে…

.
.
.
রাজ বেড থেকে উঠেই পাশে থাকা বিশাল সোপিজের কাচের বক্সটায় লাথি দিয়ে সেটা ভেঙে ফেললো…
শুধু এটাই নয় রাজ পাশে থাকা কাচের টেবিলটাও ভেঙে ফেললো…
.
.
.
রাজের মাথায় রক্ত উঠে গিয়েছে সে নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পাচ্ছেনা …
সামনে যা পাচ্ছে তাই ভেঙে গুড়িয়ে ফেলছে রাজ…
প্রতিটা জিনিস পত্রের ভাঙার আওয়াজে শীতল কেপে উঠছে…
শীতল ভয়ে কাপছে..
এগুলো এই মূহুর্তে বলা ঠিক হয়নি রাজকে সেটা শীতল বুঝতে পেরেছে…
শীতল ঘুমন্ত বাঘ কে জাগিয়েছে…
এবার শীতলকে এই বাঘ হারে হারে মজা দেখাবে…
শীতল কি করবে তা বুঝতে পাচ্ছেনা …
কিভাবে সে রাজের হাত থেকে আজ রাতে নিজেকে বাচাতে…
রাজ আজ তাকে ছিন্ন ছিন্ন করেই ফেলবে …
রাজের এই ধরনের রাগের সাথে শীতল বেশ পরিচিত…
.
.
.
রাজ শীতলের দিকে তাকিয়ে নিজের প্নান্টের বেল খুলতে লাগলো…
শীতলের প্রান যায় যায় অবস্থা…
শীতল এক লাফে বেড থেকে উঠে ওয়াস রুমে ঢুকে গেলো…
শীতল ওয়াস রুমে ঢোকার আগে রাজ শীতলকে ধরতে গিয়ে শাড়িটা ধরলো…
শীতলের শাড়ি রাজের হাতে এখন…
শীতল শাড়ি রেখে নিজেকে বাচালো..
রাজ ওয়াস রুমের দরজায় জোরে জোরে চাপ দিলো আর বললো…
_শীতল ভালো হবেনা …দরজা খোলো আর আমার কাছে এসো …
আমি দরজা খুললে ভালো হবেনা কিন্তু…
শীতল ভয়ে একাকার হয়ে আছে সে কিছুতেই দরজা খুলছেনা…
শুধু কাদছেঁ আর আল্লাহকে স্বরন করছে…
রাজের রাগ যেনো ঠান্ডা হয়ে যায় এই দোয়ায় করছে শীতল…
শীতলের খুব শীতক করছে…
এই শীতে এভাবে থাকা যায়না…
শীতল খুব আফসোস করছে এভাবে ঘুমন্ত বাঘকে জাগিয়ে দিয়ে …
এবার শীতলকে এই ভুলের মাশুল দিতে হবে…
.
.
.
রাজ রেগে জোরে জোরে শীতলকে বলছে দরজা খুলতে…
.
.
.
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here