অপেক্ষার প্রহর পর্ব ৩+৪

#অপেক্ষার_প্রহর
#writerঃআরিফা_ইসলাম
#পর্বঃ৩

“”নিকুঁচি কলেছি আপনাল গার্লফ্রেন্ডকে!আমাল বয়ে গেছে আপনাল গার্লফ্রেন্ডকে দেখতে,আমি না দেখেই কুঁ নজল দিলাম,আপনাল গার্লফ্রেন্ডেল সাথে আপনাল ব্রেক আপ হয়ে যাক,আপনাল বউ হবো শুধু আমি,অন্য কেউ নয়””

সুজন তুলিকে অনেক বার মৃদুস্বরে ডাকলো কিন্তু তুলি কোনো সাড়া দিলোনা,,,সুজন তুলির চিন্তিত মুখ দেখে ভ্রু কুঁচকে কর্কশ কন্ঠে বললো,,,

“”এই তুলি!কি ভাবছিস বলতো!সেই কখন থেকে তোকে ডেকে যাচ্ছি,কোনো সাড়াই দিচ্ছিস না””

তুলি সুজনের কর্কশ কন্ঠ শুনে ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে মাথা নিচু করে মৃদুস্বরে বললো,,,

“”কিছুনা সুজন ভাই,কিন্তু!আপনি ঘুমোবেন কোথায়!আপনি কি ছাঁদেই ঘুমাবেন!””

সুজন তুলির কথা শুনে কপাল কুঁচকে মৃদুস্বরে বললো,,,

“”তুই কি ভূলভাল কথা বলছিস বলতো!এই কুয়াশার ভিতর আমি ছাঁদে ঘুমোতে যাবো কেনো!তোর মাথা কি গ্যাছে না কি!””

তুলি সুজনের কথা শুনে মৃদু স্বরে বললো,,,

“”সুজন ভাই!বাসাল সবাই তো যাল যাল ঘলে ঘুমিয়ে পড়েছে,আপনি কোথায় ঘুমাবেন!””

সুজন ভ্রু কুঁচকে তুলির দিকে চেয়ে রইলো,,,তুলি সুজনের চাহনি দেখে মৃদু হেঁসে বললো,,,

“”আজতো লিদান ভাইয়াল বাসল লাত,লিদান ভাইয়াল কাছে তো এখন থেকে আপনাল আল জায়গা হবেনা!””

সুজন তুলির কথা শুনে কপালে সুক্ষ ভাঁজ ফেলে মনে মনে বললো,,,

“”এই রেহ্!আমি তো ভূলেই গিয়েছিলাম,সত্যি তো!বাসা ভর্তি মেহমান,আমি এখন ঘুমাবো কোথায়!””

তুলি সুজনের চিন্তিত মুখ দেখে মৃদু হেঁসে বললো,,,

“”সুজন ভাই!আপনি আমাল ঘলে সোফায় শুতে পালেন,আমাল কোনো সমস্যা নেই,আপনি কি কলবেন আপনাল ইচ্ছে””

সুজন তুলির কথা শুনে চোখ দুটো রসগোল্লার মতো করে চোখ রাঙিয়ে কর্কশ কন্ঠে বললো,,,

“”পাগল নাকি তুই!আমি তোর সাথে একঘরে ঘুমাবো!তোর মাথা ঠিক আছে তুলি!ওহ্ গড!আমার গার্লফ্রেন্ড এই কথা জানতে পারলে আমার সাথে নিশ্চিত ব্রেক আপ করে দিবে””

তুলি সুজনের দিকে গম্ভীর মুখ করে চেয়ে আছে দেখে সুজন তুলির চাহনি দেখে কপাল কুঁচকে ব্যাস্ত স্বরে বললো,,,

“”তুই কি রে তুলি!আমার গার্লফ্রেন্ডের সাথে ব্রেক আপ করানোর জন্য শেষমেষ এই ফন্দি এঁটে বসলি,আমি ভূল করেও তোর পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছি না,তুই গিয়ে ঘুমিয়ে পড়””

সুজন তুলির কাছ থেকে সরে গিয়ে ছাঁদের রেলিং ধরে দাঁড়ালো,,,তুলি সুজনের পিছু গিয়ে দাঁড়িয়ে মৃদু স্বরে বললো,,,

“”সুজন ভাই!আমি আপনাল গার্লফ্রেন্ডকে কিছুই বলবোনা,পাক্কা প্রমিজ,আমাল লুমে আমি একা নয়,ইভা আমাল লুমে ঘুমিয়ে আছে,তাই আপনাল ভয় পাবাল কোনো কালন নেই””

সুজন তুলির কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে স্মিত হাসলো,,,হাসলে সুজনকে অসম্ভব সুন্দর লাগে দেখতে,,,তুলি অনেক দিন পর সুজনের হাসি মুখটা দেখে মনে মনে বললো,,,

“”সুজন ভাই!আপনি সব সময় এমন হাসি খুশি থাকবেন,আপনাকে হাসতে দেখলে আমাল খুব ভালো লাগে,কিন্তু আপনাল মুখে হাসি দেখা তো আমাল কাছে লংধনুল মতো””

তুলি চুপ করে আছে বুঝতে পেরে সুজন ঘাড় ঘুরিয়ে তুলির দিকে চেয়ে দেখলো তুলি কিছু একটা ভাবছে,,,সুজন তুলির দিকে চেয়ে কপাল কুঁচকে কর্কশ কন্ঠে বললো,,,

“”তুলি!তুই আবার কি ভাবছিস বলতো!সারাক্ষণ তুই কি শুধু ভাবতেই থাকিস নাকি””

তুলি সুজনের দিকে চেয়ে স্মিত হেঁসে বললো,,,

“”কিছুনা সুজন ভাই,আপনি চলেন,আমাল লুমে ঘুমাবেন””

সুজন তুলির দিকে চেয়ে কপালে সুক্ষ ভাঁজ ফেলে মৃদুস্বরে বললো,,,

“”হুম যাবো,কিন্তু তার আগে তুই আমায় একটা কথা বলতো,তুই কি র কে ল বলা বন্ধ করবিনা,তুই স্পষ্ট কথা বলা শিখবি কবে বলতো!””

তুলি সুজনের কথা শুনে স্মিত হেঁসে মনে মনে বললো,,,

“”আমি স্পষ্ট কথা বলতে জানিতো,শুধু আপনাল কথা মনে হলেই র ল হয়ে যায়,আপনাল নাম শুনলেই ভয়ে আমাল কথা অস্পষ্ট হয়ে যায়””

সুজন তুলির হাসিমাখা মুখটা দেখে মনে মনে খুশি হলো,,,তবুও একরাশ বিরক্তি নিয়ে কর্কশ কন্ঠে বললো,,,

“”তুলি!তুই কবে থেকে এতো অবাধ্য হয়েছিস,আমি তোকে কিছু বলেছি তার উত্তর কে দেবে আমায়!এ্যানসার মি ডেমিড””

তুলি সুজনের ধমক শুনে ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে মনে হাজারটা সাহস নিয়ে কপাল কুঁচকে বললো,,,

“”আপনি সালাক্ষণ আমাল সাথে ধমক দিয়ে কথা কেনো বলেন!আপনাল জন্মেল সময় ফুপি আপনাল মুখে মধু দেইনি নাকি!সালাক্ষণ লাক্ষসেল মতো লেগে থাকেন””

সুজন তুলির কথা শুনে চোখ দুটো রসগোল্লার মতো করে চোখ রাঙিয়ে কর্কশ কন্ঠে বললো,,,

“”তুলি!তোর সাহস কি করে হয় আমার সাথে এভাবে কথা বলার,তুই আমার সাথে চোখ রাঙিয়ে কথা বলছিস!আমার সাথে””

তুলি সুজনের ধমক শুনে ভয়ে একটু কেঁপে উঠলো,,,তবুও সাহস করে স্বাভাবিক স্বরে বললো,,,

“”কেনো!আপনি কে হ্যাঁ!আপনাল সাথে কথা বলতে আবাল সাহসেল দলকাল হয় নাকি!আমি কি আপনাল বিয়ে কলা বউ!নাকি আপনাল গার্লফ্রেন্ড!যে আপনাকে দেখে ভয়ে নেতিয়ে যাবো””

কথাটি বলে সুজনকে মুখ ভেঙচি কাটলো,,,সুজন তুলির এমন হঠাৎ পরিবর্তনে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো,,,হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠতে পারছেনা,,,তুলি সুজনের এমন স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মৃদুস্বরে বললো,,,

“”সুজন ভাই!আমি লুমে যাচ্ছি,ইচ্ছে হলে আমাল সাথে আসতে পালেন,নয়তো আমি দলজা লক কলে দিবো,তখন এই ছাঁদে শুয়েই আপনাল আজকেল লাত কাটাতে হবে””

কথাটি বলে তুলি গটগট করে হেঁটে ছাঁদ থেকে নেমে গেলো,,,সুজনের চোখের আঁড়াল হয়ে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বুকে বাম হাত দিয়ে ঘনঘন কয়েকটি দীর্ঘ শ্বাস নিলো,,,

সুজনের সাথে কথা বলতে গিয়ে ভয়ে তুলির হাত পা ঠান্ডা হয় যাচ্ছিলো,,,সুজন ছাঁদে দাঁড়িয়ে তুলির যাবার পথে চেয়ে স্মিত হেঁসে মনে মনে বললো,,,

“”এটা কে ছিলো!এটা কি সত্যি আমার তুলি রূপী আলেয়া ভার্ট ছিলো!নাকি অন্য কেউ!কি ঝাঁঝে কথাগুলো বললো,ওহ্ গড!এতো তো দেখছি আমায় পাগল করে ছাড়বে””

তুলি রুমে এসে দরজা হালকা চাপিয়ে একটা বালিশ আর ব্লাংকেট নিয়ে সোফায় রেখে দিলো,,,দ্রুত পায়ে হেঁটে বেডে এসে শুয়ে পড়লো,,,সুজন ছাঁদ থেকে নেমে সোজা তুলির রুমে গিয়ে দরজা লক করে দিলো,,,

ডিম লাইটের আবছা আলোয় স্পষ্ট দেখলো দুজন ব্যাক্তি বেডে শুয়ে আছে,,,তুলি চোখ পিটপিট করে সুজনকে রুমে ঢুকতে দেখলো,,,সুজনের কাপড়ের ব্যাগ অন্যরুমে থাকায় পরনের পোশাক পড়েই শুতে হবে,,,

সুজন ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে এসে পাঞ্জাবি খুলে আলনায় ছড়িয়ে রাখলো,,,ব্লাংকেট নিয়ে গায়ে জড়িয়ে সোফায় শুয়ে পড়লো,,,তুলি পাশ ফিরে সোফার দিকে চেয়ে স্মিত হেঁসে মনে মনে বললো,,,

“”সুজন ভাই!আজ আমলা এক লুমে শুয়ে আছি,আমাল স্বপ্ন ছিলো আপনাল বউ হবো আপনাল পাশে ঘুমাবো,কিন্তু জানিনা আমাল স্বপ্ন কখনো সত্যি হবে কি না””

কথাগুলো মনে মনে ভেবে তুলি দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো,,,সিলিং ফ্যানের দিকে চেয়ে হালকা হেঁসে মনে মনে বললো,,,

“”সুজন ভাই!আপনাল পাশে শুয়ে ঘুমাতে পালিনি তো কি হয়েছে,আপনাল সাথে এক লুমে ঘুমাতে পেলেছি এটাই আমাল কাছে অনেক””

কথাগুলো মনে মনে ভেবে চুপটি করে চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো,,,সুজন ব্লাংকেটে নিজেকে আঁড়াল করে তুলির ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে মনে মনে বললো,,,

“”তোতলা রানী!আমাদের দুজনের দূরত্বটা কি কখনোও ঘুচবেনা!তুমি কি বুঝবেনা আমার না বলা কথা!কবে তোমাকে একাকি ভাবে কাছে পাবো!ওহ্ গড!কবে শেষ হবে আমার সেই #অপেক্ষার_প্রহর””
#অপেক্ষার_প্রহর
#writerঃআরিফা_ইসলাম
#পর্বঃ৪

“”তোতলা রানী!আমাদের দুজনের দূরত্বটা কি কখনোও ঘুচবেনা!তুমি কি বুঝবেনা আমার না বলা কথা!কবে তোমাকে একাকি ভাবে কাছে পাবো!ওহ্ গড!কবে শেষ হবে আমার সেই #অপেক্ষার_প্রহর””

তুলি কিছুসময় চোখ দুটো বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে রইলো,,,জার্নি করে আসার ক্লান্তিতে সুজনের চোখে রাজ্যের ঘুম এসে ভর করলো,,,ব্ল্যাংকেটে নিজেকে পেঁচিয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো,,,সুজনের গার্লফ্রেন্ডকে দেখার আাশায় তুলির মনটা খচখচ করতে লাগলো,,,

সুজনের গার্লফ্রেন্ডকে না দেখা অবদ্ধি তুলি কিছুতেই শান্তি পাচ্ছেনা,,,কিছু সময় পর নিঃশব্দে বেড থেকে নেমে মৃদু পায়ে হেঁটে সোফার কাছে গেলো,,,সুজনের মুখের দিকে হালকা ঝুঁকে ঘনঘন শ্বাস পড়ছে বুঝতে পেরে সোজা হয়ে বুকে হাত রেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো,,,

চুপিচুপি সুজনের ফোন খুঁজতে লাগলো,,,চারদিকে ভালো করে খুঁজে ফোনটা না পেয়ে কপাল কুঁচকে মনে মনে বললো

“”ফোনটা কোথাও তো পাচ্ছিনা!নিশ্চয়ই বালিশেল পাশে লেখেছে””

তুলি নিঃশব্দে বালিশের পাশে সুজনের ফোন খুঁজতে লাগলো,,,সুজন জেগে যাবে সেই ভয়ে বালিশ উঁচু করেও দেখতে পারছেনা,,,ফোনটা না পেয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে সুজনের ঘুমন্ত মুখের পানে চেয়ে রইলো,,,তুলি সুজনের ঘুমন্ত মুখের পানে চেয়ে মুখ ভেঙচি কেটে মনে মনে বললো,,,

“”জেগে থাকলে তো আস্ত একটা লাক্ষসেল মতো লাগে দেখতে,কিন্তু এখন দেখে মনে হচ্ছে কতোটা শান্তশিষ্ট,যেনো ভাঁজা মাছ উল্টে খেতে জানেনা””

তুলি অপলকভাবে সুজনের ঘুমন্ত মুখের পানে চেয়ে রইলো,,,এতো কাছ থেকে ঘুমন্ত সুজনের কপালে ঠোঁট ছোঁয়ানোর লোভটা কিছুতেই সামলাতে পারলো না,,,সুজন যদি জেগে যায় সেই ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে আলতো করে সুজনের কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো,,,

মুখের উপর গরম নিঃশ্বাসের শব্দের সাথে কপালে ঠান্ডা স্পর্শ পেয়ে সুজনের ঘুম ভেঙে গেলো,,,দ্রুত চোখ মেলে চেয়ে দেখলো তুলি ওর মুখের উপর ঝুঁকে আছে,,,সুজন দ্রুত চোখ মেলে তাকাতেই তুলি থতমত খেয়ে গেলো,,,

ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে দ্রুত সোফার পাশ থেকে সরে দাঁড়ালো,,,সুজন শোয়া থেকে দ্রুত উঠে সোফায় পা ঝুলিয়ে বসে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে চাঁপাস্বরে বললো,,,

“”তুলি!তুই এখানে কি করছিলিস!তোর মতলবটা কি বলতো!কি চুরি করতে আসছিলিস আমার কাছে””

তুলি সুজনের কথা শুনে ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে স্মিত হেঁসে মনে মনে বললো,,,

“”সুজন ভাই!আমি চুলি আল কলতে পাললাম কোথায়,সেই তো ধলা পলে গেলাম,কিন্তু আপনি আমাল থেকেও বলো চোল,আপনি আমাল মন চুলি কলেছেন,আপনাল মনটাও আমি চুলি কলে শোধ নিয়ে নিবো””

সুজন তুলির চাহনি দেখে ধমক দিয়ে কিছু বলতে যেতেই তুলি সুজনের কথার মাঝে ফোঁড়ন কেটে মৃদুস্বরে বললো,,,

“”আমাল বাড়ি আমাল ঘল,আমি আবাল কি চুলি কলবো!আমি তো আপনাল ফোন খুঁজতেছিলাম,কয়টা বাজলো তাই দেখাল জন্য””

সুজন তুলির কথা শুনে কপাল কুঁচকে রাগী লুক নিয়ে তুলির দিকে চেয়ে চাঁপাস্বরে বললো,,,

“”তুলি একদম মিথ্যা বলবিনা আমায়,তুই মুখে যা বলছিস তোর চোখ কিন্তু সেটা বলছেনা,তুলি তুই এতো মিথ্যা বলা কার থেকে শিখলি!””

তুলি সুজনের কথা ধপ করে সুজনের পাশে বসে পড়লো,,,সুজন কপালে সুক্ষ ভাঁজ ফেলে একটু দূরে সরে বসলো,,,তুলি দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে মৃদুস্বরে বললো,,,

“”যদি বলি মিথ্যা বলা আমি আপনাল কাছ থেকে শিখেছি””

সুজন রাগী লুক নিয়ে চোখ রাঙিয়ে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে বললো,,,

“”তুলি!মাঝরাতে মজা করছিস আমার সাথে!আমি কখন মিথ্যা বললাম তোকে””

তুলি সুজনের রাগ দেখে স্মিত হেঁসে মৃদুস্বরে বললো,,,

“”সুজন ভাই!আপনাল চোখ যা বলে আপনাল ঠোঁট সেটা বলে না,আপনাল মন যা বলে আপনি তাল উল্টো কথা বলেন,তাহলে আপনাল কাছে আমি মিথ্যাবাদি হলে আপনি কি!””

সুজন তুলির কথা শুনে রাগী লুক নিয়ে চোখ রাঙিয়ে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে চাঁপাস্বরে বললো,,,

“”তুলি!তুই বড্ড পেকে গেছিস কিন্তু,চোখের ভাষা বোঝার ক্ষমতা তোর এখনো হয়নি,চুপচাপ বেডে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়,শুধু শুধু আমার ঘুমটা নষ্ট করলি,যত্তসব!””

কথাগুলো বলে সুজন সোফায় শুতে গেলে তুলি সুজনের হাত টেনে দু’হাতে সুজনের গলা জড়িয়ে ধরে কাঁপা কাঁপা স্বরে বললো,,,

“”সুজন ভাই!চোখেল ভাষা মনেল ভাষা সব ভাষায় বোঝাল ক্ষমতা আমাল হয়েছে,আপনাল চোখ বলে আপনি আমায় ভালোবাসেন,কিন্তু আপনাল মুখ অন্য কথা বলে,কিন্তু কেনো সুজন ভাই””

সুজন তুলির এমন কান্ডে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো,,,কি বলতে কি বলবে সব ভাষা মনের মধ্যে গুলিয়ে গেলো,,,তুলির কাছে ধরা পরে যাবার ভয়ে সুজন তুলিকে হ্যাচকা মেরে সরিয়ে দিয়ে চাঁপা স্বরে বললো,,,

“”তুলি!মাঝরাতে কিসব প্রলাপ বকছিস বলতো!আমি তোকে ভালোবাসতে যাবো কোন দুঃখে!আমার এতো ঠ্যাঁকা পড়েনি যে তোকে ভালোবাসতে যাবো,ইভা রুমে আছে সিনক্রিয়েট না করে ঘুমিয়ে পড়””

তুলি সুজনের কথার কোনো তোয়াক্কা না করে স্থির হয়ে শীতল চাহনিতে সুজনের দিকে চেয়ে রইলো,,,সুজন তুলির শীতল চাহনিতে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে সোফা থেকে উঠে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো,,,তুলি সুজনের যাবার পথে চেয়ে দুফোঁটা অশ্রু ঝড়ালো,,,

সুজন বেলকনির গ্রীল ধরে দূর আকাশের দিকে চেয়ে রইলো,,,নিজের মনে জমানো কথাগুলো তুলিকে বলার এখনো সময় হয়নি,,,কিছুদিন পরই তুলির উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে,,,এখন যদি এসব প্রেম ভালোবাসা নিয়ে পড়ে থাকে তাহলে তুলির পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হবে,,,

তুলির স্বপ্ন তুলি একজন ভালো ডক্টর হবে,,,কিন্তু এখন যদি প্রেম ভালোবাসায় জড়িয়ে যায় তাহলে ওর স্বপ্ন পুরনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে,,,সুজন দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে দূর আকাশে চেয়ে স্মিত হেঁসে মনে মনে বললো,,,

“”তোতলা রানী!আমি চাই না তোমার স্বপ্ন পুরনে বাঁধা হতে,তুমি যখন মেডিকেলে চান্স পাবা তখন আমি নিজেই তোমায় প্রপোজ করবো,আর আমি বিশ্বাস করি!আমার #অপেক্ষার_প্রহর খুব শীগ্রই শেষ হবে,আর তার জন্য আমাকে একটু কঠোর হতে হবে””

সুজন কিছুসময় পর রুমে এসে দেখলো তুলি ফ্লোরে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে,,,সুজন দ্রুত এসে তুলির হাত ধরতেই দেখলো ঠান্ডায় তুলির হাত পা ঠান্ডা বরফের মতো হয়ে আছে,,,তুলির ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে স্মিত হেঁসে মনে মনে বললো,,,

“”তোতলা রানী!বড্ড জেদী হয়ে গেছো তুমি!জানিনা আর কতদিন তোমার থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারবো!তবে আমি চেষ্টা করবো মেডিকেলে এডমিশনের আগ পর্যন্ত আমার ভালোবাসা লুকিয়ে রাখার””

সুজন তুলির পাশে বসে তুলির ঘুমন্ত মাথাটা আলতো করে ধরে নিজের কোলে রাখলো,,,শাহাদাৎ আঙুল দিয়ে তুলির মুখের উপর উপচে পড়া কাঁটা ছেড়া অবাধ্য চুল গুলো সরিয়ে দিলো,,,ঘুমন্ত মুখের পানে চেয়ে থেকে টুপ করে কিস করে দিলো,,,

তুলিকে কোলে নিয়ে বেডে শুয়ে দিয়ে গায়ের উপর ব্ল্যাংকেট ভালো করে টেনে দিলো,,,স্মিত হেঁসে তুলির কপালে গভীর কিস করে সোফায় এসে শুয়ে তুলির দিকে চেয়ে মনে মনে বললো,,,

“”তোতলা রানী!আর তো মাত্র কয়েক মাস,তারপরই আমাদের #অপেক্ষার_প্রহর শেষ হবে,তখন আমাদের দু’জনের মাঝে আর কোনো দূরত্ব থাকবেনা””

চলবে,,,

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here