অপ্রত্যাশিত ভালোবাসা পর্ব -২১+২২

গল্প : #অপ্রত্যাশিত ভালোবাসা
লেখক : #কাব্য মেহেরাব
পর্ব : ২১

মেঘা : এই দাঁড়ান দাঁড়ান দাঁড়ান দাঁড়ান দাঁড়ান(জোরে চিল্লিয়ে বলল)

প্রবীশ মেঘার এমন ভাবে কথা বলায় হঠাৎ করে গাড়ির ব্রেক কষে। অমনি প্রবীশ সম্পূর্ণ সামনের দিকে ঝুঁকে পরে। মেঘা ও সামনের দিকে ঝুকে যায় মেঘার কপালে লাগবে তার আগেই প্রবীশ একহাত মেঘার কপাল স্পর্শ করবে যে জায়গায় সেখানে হাত রাখে। হাত রাখার সাথে সাথে খুব জোরে মেঘার কপাল পরে হাতের উপর। প্রবীশ নাক মুখ খিচে ধরে, মেঘা চোখ বন্ধ করে দিয়ে হাতের মুঠোর শক্ত করে নিজের ঝুল সামলানোর চেষ্টা করে কিন্তু তার আগেই বাজখাঁই ধমক এর সুর ভেসে আসে প্রবীশের মুখ থেকে। আড়চোখে প্রবীশের দিকে তাকাতেই প্রবীশ বলে ওঠে_

প্রবীশ: আর ইউ গোয়িং টু ম্যাড মেঘা? এইভাবে কি কেউ চিল্লায়, কি হয়েছে কি?

মেঘা :(প্রবীশের এমন ধমক শুনে মেঘা আমতা আমতা করে বলল) না মানে__ ঐযে একটা দোকান দেখা যাচ্ছে, সেজন্য ই বললাম।

প্রবীশ মেঘার মাথাটা হাত দিয়ে হালকা সরিয়ে দেখে দূরে একটা ছোট্ট বাতি জ্বলছে যেখানে কিছু বৃদ্ধ মানুষ চা খাচ্ছে। খাবার জন্য তেমন কিছু আছে বলে বোঝা যাচ্ছে না। এবার প্রবীশ রেগে গেল, এই ছোট্ট একটা দোকান দেখে মেঘা এমনভাবে চিৎকার দিয়ে গাড়ি থামাতে বললো? যদি এখন অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেত তাহলে..? রেগে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে প্রবীশ মেঘা কে বলল_

প্রবীশ : আর ইউ ক্রেজি? তুমি ওই দোকান দেখে এই ভাবে গাড়ি থামাতে বললে?

মেঘা : ওইখানে খাবার পাওয়া যায় ওই দেখেন খাবার ঝুলছে।

প্রবীশ : জাস্ট শাট আপ! খাবার ঝুলছে মানেটা কি ?তুমি ঐ ফুটপাত থেকে এইসব জাঙ্কফুড খাবে?(ধমকের সুরে জোরে চিল্লিয়ে বলল)

প্রবীশের এই ভাবে বলাতে মেঘার চোখে পানি চলে আসলো ।মেঘার প্রিয় খাবার ছিল এটা যা ওখানে ঝুলছে রুটি আর কলা। যা খেয়েছে এখান থেকে আরো ৩ থেকে ৪ বছর আগে।

প্রবীশ এবার বুঝতে পারলো তার এমন ধমকের হয়তো মেঘা কষ্ট পেয়েছে। তাই নিজের রাগটা একটু কন্ট্রোল করে মেঘা কে বলল_

প্রবীশ : দেখো মেঘা এগুলা রাস্তার খাবার ।রাস্তায় প্রতিদিন কত যানবাহন যাওয়া আসা করে তার কোনো হিসাব নেই ।সেখান থেকে কত জীবাণু ধুলাবালি ওই খাবারের লেগে থাকে তুমি জানো? এগুলা খেলে পেট খারাপ করে। অসুস্থ হয়ে পড়বে তুমি। প্রতিটা মানুষের নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি একটু পজিটিভ হওয়ার প্রয়োজন , বুঝতে পারছ আমি কি বলছি তোমাকে?

মেঘা : (মাথা নিচু করে ছোট ছোট করে বলল)আমার অনেক ক্ষুধা পেয়েছে , আর রুটি কলা আমার খুব প্রিয় খাবার । বহুদিন এই খাবারটা খেতে পারি নাই তাই খাবারটা দেখে খুব লোভ হচ্ছিলো। সেজন্যই বললাম_

মেঘার এমন কথা শুনে প্রবীশের প্রচন্ড রাগ হলো। লাইক সিরিয়াসলি এই খাবার আবার কারো প্রিয় খাবার হয় নাকি কখনো। মেঘার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলো মেঘার চোখ ছল ছল করছে এখনই হয়তো চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়বে । পরক্ষনে মেঘার এমন ভাবে বলাতে প্রবীশের খুব খারাপ লাগলো তাই প্রবেশ বলল_

প্রবীশ : ঠিক আছে তুমি বস আমি নিয়ে আসছি।

(কথাটি বলে প্রবীশ গাড়ি থেকে নেমে সোজা রাস্তা পার হয়ে সেই দোকানের দিকে যেতে লাগলো। যেতে গিয়েও পরলো আরেক বিপদে, রাস্তা পার হওয়ার পর অনেকটা জায়গা কাদা দিয়ে ভরা।কাদার মাঝে মাঝে একটি করে ইট ১হাত দের হাত পরপর দিয়ে দোকানে যাওয়ার রাস্তাটা করে দেওয়া। এমন একটা ইটের উপর দিয়ে যাওয়ার অভ্যাস প্রবীশের কোনো দিনই ছিল না। ৩-৪ টি ইট পার হলে তারপরের ইটের একটি পা দিতেই ওমনি পা ফসকে পড়ে যায় কাদার উপর।

পরে যাওয়ার সাথে সাথে দেখে দোকানের কিছু লোক এগিয়ে আসছে প্রবীশকে উঠিয়ে তোলার জন্য। প্রবীশ উঠে দাঁড়িয়ে নিজের গাড়ির দিকে তাকাতেই দেখে মেঘা মুখ টিপে হাসছে। এইবার প্রবীশের মেজাজটা বিগড়ে গেল। দোকানের একজন কে উদ্দেশ্য করে বলল_

প্রবীশ : আমাকে রুটি আর কলা প্যাক করে দিন।

দোকানের একটি লোক: রুটি কলা প্যাক আবার কেমন করে?

প্রবীশ : লাইক সিরিয়াসলি ?প্যাক করা বুঝেন আপনারা?

দোকানের লোকটি: এইসব ব্যাক প্যাক বুঝি না এই নিন এক থোরা কলা আর এই যে কাগজে মোড়ানো রুটি। টাকাটা দেন আর গিয়া কাপড় পাল্টায় নেন।

প্রবীশ কাগজে মোড়ানো রুটির দেখে মেঘার দিকে রাগি চোখে তাকাতেই মেঘা মাথাটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিল। মানিব্যাগ থেকে 500 টাকার একটি নোট বের করে দিল।

দোকানি: খুচরা নাই বাপু? খুচরা টাকা দেন এইসব বড় নোট সারাদিন ইনকাম করেও হয় না ভাংতি কোইত্থেকে দেবো?

প্রবীশ : ফেরত দিতে হবে না পুরোটাই রেখে দেন।

প্রবীশের হাতে কাপড়ে কাদাতে টইটুম্বর। দোকান থেকে একটু পানি দিয়ে হাত ধুয়ে কাগজে মোড়ানো রুটি কলা নিয়ে মেঘার সামনে এসে দাড়ালো। মেঘার সামনে রুটি কলা ধরতেই মেঘা খপ করে ধরে নিয়ে তা খাওয়া শুরু করে দিল। প্রবীশ অবাক হয়ে দেখছে মেঘা কেমন করে সামান্য রুটি কলা পেয়ে আনন্দে সেটা খাচ্ছে ‌। মেঘার প্রতি রাগ হলেও মেঘার এমন কাজে প্রবীশের সব রাগ পানি হয়ে গেল। হালকা একটু হেসে পকেটে হাত দিতেই দেখে পকেটে ফোন নেই , হয়তো তখন কাদায় পড়ে যাওয়ায় ফোনটা নিচে পড়ে গেছে।
প্রবীশ মেঘাকে বলল_

প্রবীশ : গাড়ির ভিতরে ছোট বক্স টা খুলে দেখো ওখানে একটা মোবাইল আছে । অমিত কে ফোন করে জিজ্ঞেস করো গাড়ির ভেতর কোন ড্রেস আছে কি না?এই কাঁদা আর নোংরা কাপড় পরে আমি ড্রাইভ করতে পারবো না।

আমি প্রবীশ বাবুর বলা বক্সে খুলতেই একটা মোবাইল পেলাম , কিন্তু সেটা বন্ধ। বার বার খোলার চেষ্টা করেও পারলাম না।

প্রবীশ : কি হলো কল দাও আমিত কে..

মেঘা : আপনার মোবাইলে আপনার মত ডেমেজ হয়ে গেছে । মানে চার্জ নেই তাই বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রবীশ : জাস্ট সেটাপ। আমি এখন ডেমিজ হয়েছি শুধু তোমার জন্য । আর তুমি গাড়ির ভিতরে বসে আরাম করে খাচ্ছ..

মেঘা : সামান্য রুটি কলা কিনে খাইয়ে আবার খোটা দিচ্ছেন? ঠিক করে হাঁটতে পারেন না সেটা না বলে আমাকে দোষারোপ করছেন। ঠিক আছে চলুন আমার সাথে।(বলেই আমি গাড়ি থেকে নেমে আসলাম)

প্রবীশ : কোথায় যাবো তোমার সাথে এখন এই অবস্থায়?

মেঘা : দেখি আশে পাশে কোনো কিছু পাই কিনা? মানে পুকুর বা পানির কোন ব্যবস্তা আছে কিনা।

প্রবীশ : আমি যাব না কোথাও। পারলে তুমি গিয়ে জল নিয়ে এসো।

মেঘা : সিরিয়াস আপনি আমাকে এই রাতে একা যেতে বলছেন পানি আনতে,তাও এই অচেনা জায়গায়?

প্রবীশ চারপাশে তাকিয়ে দেখে ওরা একটা নির্জন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। আশেপাশে কয়েক কিলোমিটারে বাড়ি আছে বলে মনে হয় না। দূরের ঐ দোকান টাও বন্ধ করে চলে যাচ্ছে।

প্রবীশ আর কোন কথা না বাড়িয়ে মেঘার সাথে পানির সন্ধানে সামনে যেতে লাগলো।বেশ অনেকক্ষন হয়ে যায় কিন্তু কোথাও পানির উৎস খুঁজে পাইনি। মেঘা ঠিক করল এবার রাস্তা দিয়ে নিচে সরু রাস্তায় হেঁটে যাবে যদি কোন প্রকার পুকুর বা পানি পাওয়া যায় কিনা সেটা দেখতে। তখনি শিয়ালের ডাক শুনে আতকে উঠে মেঘা।

হঠাৎ দুরে অন্ধকারের মাঝে কিছু জলতে দেখে। মেঘা বেশ ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ দেখে জলন্ত আলো গুলো ওর দিকে আসছে মেঘা কি করবে ভেবে না পেয়ে প্রবীশের হাত ধরে নেই। এতে করে প্রবীশ একটু অপ্রস্তুত হয়ে যায়।

হঠাৎ করে কয়েকটি শিয়ালের ডাক মেঘার কানে আসতেই,প্রবীশকে ঝাপটে ধরে মেঘা।
মেঘা এতটাই ভয় পেয়েছে কোন দিক না পেয়ে প্রবীশকে জড়িয়ে ধরে প্রায় কান্না করে দেয়।মেঘার এমন স্পর্শে প্রবীশের চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। তবে এতটুকু বুঝতে পারে মেঘা এখন প্রচুর ভয় পেয়েছে…..

প্রবীশ : cool down… মেঘা। শান্ত হও……

মেঘা তখনি প্রবীশকে ছেড়ে দাঁড়ায়….

মেঘা: সরি আসলে…..

প্রবীশ : সরি বলতে হবে না আমি কিছু মনে করিনি…

মেঘা : ……..(লজ্জায় কিছু বলতে পারছিনা)

প্রবীশ. আচ্ছা এত ভয় পাও,তাহলে এতদুর আসার দরকার ছিল কি?

মেঘা : দেখুন আপনার গায়ে অনেক কাদা ছিল আর আপনি এই অবস্থায় ড্রাইভ ও তো করতে পারতেন না ।আমরা বাসায় কিভাবে ফিরব সেটা ভেবেই আমি…(নিজের দিকে তাকিয়ে খেয়াল করি প্রবীশের গায়ের অর্ধেক কাদা নিজের বোরকাতে লেগে গেছে।এবার রাগী চোখে প্রবীশের দিকে তাকালাম)

প্রবীশ : ( হেসে বলল) আসলেই তো দেখার মত….

মেঘা : what…. 😡😡😡

প্রবীশ: উহুহ… ওদিকে দেখো (আমার পিছনে কিছু ইশারা করে বললেন)….

আমি পিছনে তাকাতেই দেখি একটা পুকুর। সেই পুকুরে পুর্নিমার চাদের ছায়া পরেছে। তার সাথে হাজার জোনাকির আলোতে অপরুপ রুপে সাজিয়েছে সবটা. ….. আমি অবাক চোখে দেখতে লাগলাম প্রাকৃতির এই সৌন্দর্য…. একটু সামনে এগিয়ে গেলাম

প্রবীশ বাবু আমার পিছনে পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়….

মেঘা : যাবেন ওখানে……?

প্রবীশ মাথা নাড়িয়ে না বলে। কিন্তু তার মুখ দেখে আমি যতদূর বুঝতে পারলাম সে যেতে চায় , কিন্তু নিজের অ্যাটিটিউড এর কারণে হ্যাঁ বলতে পারছেন না।

মেঘা : আচ্ছা আপনার যেতে হবে না আমি যাচ্ছি….. আপনি এখানে দাঁড়িয়ে শিয়ালের ডাক শুনেন….

আমি পুকুরের দিকে যাচ্ছি, আমি জানি প্রবীশ বাবু আমাকে একা ছাড়বে না,বাধ্য হয়ে তিনি ও আসবেন। আমি দুই পা এগিয়ে যেতেই প্রবীশ বাবু আমার পিছু পিছু যায়……

প্রবীশ বাবু পুকুর পারে গিয়ে ধপ করে বসে পরে আমার আগেই। আমি একটু অবাক হয়ে গেলাম।এত বড় বিসনেসম্যান যে সব সময় দাম্ভিক এবং নিজের এটিটিউট নিয়ে চলে ,যে এখানে আসতে আসতে চাইছিলো না অথচ আমার আগেই এখানে বসে পরলো?

কোন কিছু না ভেবে আমি ও প্রবীশ বাবুর পাশে বসে পরলাম।পুকুর পাড়ে বসে প্রবীশ বাবু মাটির টুকরো পুকুরের পানিতে ফেলতে থাকে….

প্রবীশ: তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। তুমি জেদ না করলে এই সুন্দর রাতটা আমি পেতাম না। অনেক আগেই এটা আমার লাইফ থেকে চলে গেছে যেটা আজ তোমার জন্য আমি পেয়েছি……

তার এই কথার মানে আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি তবুও কিছু না বলে গুটি মেরে বসে রইলাম …. আমার খুব শীত করছে। প্রবীশ বাবুর গায়ের কাদা আমার কাপড়ে লেপ্টে আছে। হালকা শীতে ও আমার দাড়ি কাঁপছে। এটা খেয়াল করে প্রবীশ বাবু আমাকে বলে_

প্রবীশ বাবু : যদিও আমার কোটে কাদা লেগে গেছে তবে তুমি চাইলেই কোটা নিয়ে পড়তে পারো একটু শীত কম লাগবে।

আমি: ধন্যবাদ তবে লাগবে না আমার।

প্রবীশ : নিয়ে নাও…. নয়তো ঠান্ডা লেগে যাবে।(বলতে বলতেই কোট টা খুলে আমার গায়ের উপর জড়িয়ে দিল)

আমি রেগে গিয়ে তার দিকে তাকালাম। এটা দেখে প্রবীশ বাবু মুচকি হাসেলেন…. তার হাসি টা কিন্তু অনেক সুন্দর। তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে দেখি প্রবীশ বাবু চোখ বন্ধ করে চারপাশ ফিল করতে থাকে….

প্রবীশ বাবু : জানো তো মাঝে মাঝে এমন পরিবেশে থাকতে হয়….. নাহলে জীবনের মুল্য থাকে না। আমারো মন চায় এভাবে থাকতে কিন্তু কি করব বলো, ফরমাল লাইফে বেচে থাকতে থাকতে এমন সময় পায় না। কিন্তু ওই লাইফে দম বন্ধ হয়ে আসে আমার। তিক্ততা ভরে গেছে এতে…..।এমন মুহূর্ত আমার লাইফে কখনো পায়নি ।প্রিয় মানুষ কে নিয়ে ও এমন সময় কাটাতে পারিনি [ বলেই ঘাসের উপর শুয়ে পরে হাতে মাথা রেখে তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা গোনার বৃথা চেষ্টা করে ]

মেঘা : তাহলে এভাবে না থাকলেই তো পারেন….

এটা শুনে প্রবীশ বাবু একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়।

প্রবীশ বাবু: You know what মেঘা…. লাইফে আর যাই হোক মানুষ কখনো একা থাকতে পারে না। কিন্তু দেখ আমি একাকি কি ভাবে বেঁচে আছি। আমি কিন্তু একা থাকতে চাই নি আমার লাইফেও কেউ এসেছিল কিন্তু সে আমাকে ধোঁকা দিয়েছে। তারপর থেকেই কোন মেয়েকে আমার আর বিশ্বাস করতে মন চায় না। কোন মেয়ের সামনে আসলে আমার পুরোনো ক্ষতটা আবার নতুন করে তাজা হয়ে যায়।তবে আজ আমার এই মুহুর্তটা খুব ভালো লাগছে কারন তুমি আছো বলে কিন্তু এই সময়টাই যদি তুমি না থাকতে তবে এটা ও বিষাদময় লাগত।

মেঘা: ও তারমানে আপনার কারো company চাই….. তাইত ? যাতে আপনার একাকিত্ব দূর হয়?

প্রবীশ বাবু : কিছুটা তেমনি। কারন একা একা কিছু দেখা আর কাউকে সাথে নিয়ে দেখায় পার্থক্য আলাদা।

মেঘা : তাহলে…. এমন কাউকে নিলেই তো হয় যার সাথে নিজের অনুভূতি গুলো শেয়ার করতে পারবেন?

প্রবীশ বাবু : চেষ্টা করেনি এমন তো নয় চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু ধোঁকা পেলাম। তার পর সারাজীবন এতটা দৌড়েছি যে এসব নিয়ে ভাবার সময় পায়নি। তাছাড়াও মেয়েদের প্রতি একটা তিক্ততা কাজ করতো আমার তখন।

মেঘা: এরকম মুহুর্ত আমিও অনেক কাটাতে চেয়েছি কিন্তু পারিনি। আচ্ছা এখন তো আর মেয়েদের প্রতি আপনার তিক্ততা নেই তাই না…

প্রবীশ: থাক আর বলতে ইচ্ছে করছে না। একটু নিজের মত থাকতে চাই….

প্রবীশ বাবুর এমন কথায় আমি আর কোনো কথা বললাম না। আসলেই পরিবেশটা এতটা সুন্দর যে কারো মন শান্ত করে দেবে। আমি ও আমার চোখ দুটো বন্ধ করে আছি।কেন যেন মনে হচ্ছে কাব্য আমার আশে পাশে ই আছে। আমাকে দেখছে।

এভাবেই কেটে যায় অনেকটা সময়। ঠান্ডা বাতাসে কেপে উঠছিলাম আমি। কেমন ঘুম ঘুম পাচ্ছিল। আমার এমন কাঁপা কাপি দেখে প্রবীশ বাবু আমার দিকে তাকিয়ে দেখে আমি হঠাৎ করেই ঢলে পরতে ধরি। তখনি প্রবীশ বাবু আমাকে ধরে নেয়। বুঝতে পারেন আমি ঘুমিয়ে গেছি। এটাই স্বাভাবিক কারন সারাদিন না খেয়ে থাকার কারনে শরীর ক্লান্ত তাই…… ।প্রবীশ বাবু আমার মাথাটা ওনার বুকের ডান পাশের কাধে রাখে। আর আমাকে ডান হাত দিয়ে ধরে রাখে….

প্রবীশ বাবু : সত্যি বলতে তোমার প্রতি আমার এখন যেই ফিলিংস টা কাজ করে এটা ঐ মেঘার প্রতিও আসেনি কখনো। হয়তো তুমি ই প্রথম যার জন্য আমার মনে একটা নতুন অনুভুতি সৃষ্টি হয়েছে যাকে অনেকে ভালোবাসা বলে যদিও আমার কাছে এতদিন সেটা মুল্যহীন একটা Word ছিল। কিন্তু তোমাকে দেখার পর সেটাই লাইফের মিনিং হয়ে গেছে…. [ বলে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে ] আমি তোমার সাথে আমার দিনগুলো রাতগুলো এই ভাবে কাটাতে চাই। জানি তোমার আমার মাঝে আকাশ পাতাল ব্যবধান তবুও। জানিনা এতে তোমার জবাব কি হবে….. কিন্তু আমি কি পারব তোমাকে ছেড়ে দিতে…….,

,
,
,
,,
এভাবে আমাকে বুকে রেখে বসে থাকে প্রবীশ। হঠাৎ খেয়াল করে প্রবীশ বাবু আমার হাত মুখ ঠান্ডা হয়ে গেছে। এই ঠান্ডা বাতাসে এমনটা হয়েছে।

প্রবীশ বাবু : এভাবে থাকলে সমস্যা হয়ে যাবে। নাহহহ……

প্রবীশ বাবু আমাকে কোলে তুলে নেয়। তারপর গাড়ির মধ্যে আমাকে শুইয়ে দেয়। গাড়ির কাচ বন্ধ করে দেয় যাতে বাতাস না আসে…. প্রবীশ বাবু চেয়েও আমার থেকে দুরে থাকতে পারছেন না। তাই আমার মাথাটা নিজের বা পাশে রেখে আমাকে দেখতে দেখতে কখন যেন তিনি ও ঘুমিয়ে পরেন নিজেও জানেনা……

সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি দেখি, আমি আর প্রবীশ বাবু খুব কাছাকাছি। আমি দ্রুত তার থেকে দুরে সরে যায়…..এতে করে প্রবীশ বাবুর ও ঘুম ভেঙে যায়।

প্রবীশ বাবু : কিহল তোমার। [ হাই তুলে ]

মেঘা : আমি এখানে কিভাবে???

প্রবীশ বাবু: আমি নিয়ে এসেছিলাম। আসলে তুমি ঘুমিয়ে গিয়েছিলে তাই ডাকিনি।

মেঘা:…….

প্রবীশ বাবু নেমে গাড়ি থেকে পানির বোতল বের করে নিজের চোখে মুখে পানি দিয়ে বোতলটা আমার দিকে এগিয়ে দেয়। আমি প্রবীশ বাবুর হাত থেকে বোতলটা নিয়ে নিজেও মুখে পানি দিয়ে নি।

মেঘা: ইসসস সারা রাতে কাঁদা গুলো কাপড়ে শুকিয়ে গেছে…..

প্রবীশ বাবু : কিছু করার নেই ..
গল্প : #অপ্রত্যাশিত ভালোবাসা
লেখক : #কাব্য মেহেরাব
পর্ব : ২২

সেদিনের রাতটা ছিল আমার জীবনের সবথেকে সুন্দর রাত। অমন মনোরম পরিবেশে যে কোন মানুষের মনকে শান্ত করে দিতে পারে না। সেদিন সকালে বাসায় ফেরার পর অমিত বাবু আমাদের দেখে যাস্ট হা হয়ে গিয়েছিলেন। প্রবীশ বাবুর কাপড়ে কাদা আমার গায়ে কাদা দেখে অমিত বাবু আর রামু চাচা সেটা অন্য রকম ভাবে নিয়েছিলেন। অমিত বাবুর চাহনি দেখে আমি অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলাম। প্রবীশ বাবু এই সবকিছু কোনো তোয়াক্কা না করেই ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে গট গট করে লম্বা পা ফেলে উপরে উঠে চলে গেলেন।

আমিত বাবু আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন_

অমিত বাবু : ব্যাপারটা কি বলতো ডালিয়া না মানে..স সরি মেঘা?

মেঘা : কই কি ব্যাপার🙄🙄? আমি তো কোন ব্যাপারই দেখছিনা! 😏(কথাটি বলে আমিও লম্বা পা ফেলে উপরে সিঁড়ি বেয়ে উঠে চলে আসলাম।)

অমিত বাবু:🤨 ………..(আমার যাওয়ার পানে তাকিয়ে দেখে বললেন) ব্যাপারটা কি বলতো রামু জেঠু🤔? আমারতো সুবিধা ঠেকছে না!

রামু জেঠু : সে তুমি যাই বলো, বহুদিন পর আমার প্রবীশ বাবার মুখটা দেখার মত ছিল। ছেলেটা সারাজীবন কষ্টই পেয়ে গেল। মামুনির জন্য যদি ছেলেটার মুখে একটু হাসি ফুটে ওঠে তাহলে সেটাই সই।

অমিত বাবু : সব ই ঠিক আছে, কিন্তু ভুলে গেলে হবে না রামু জেঠু, মেঘা কিন্তু মুসলিম এবং একজন প্রস্টিটিউট ।

রামু জেঠু : আহ্ অমিত বাবা! ভালোবাসার ক্ষেত্রে জাত মান বিবেচনা কোরে ভালোবাসা হয় না। আমার কিন্তু মেয়েটাকে বেশ ভালো লাগে। তাছাড়াও আমার দীর্ঘ বিশ্বাস প্রবীশ বাবার সুখ একমাত্র এই মেয়েটার মাঝেই আছে।

আমিত বাবু : সমাজ বলেও তো একটা কথা আছে তাইনা জেঠু?

রামু জেঠু : কোন সমাজের কথা বলছো তুমি? যেই সমাজ আমার প্রবীশ বাবার ছোট বেলাকে কেড়ে নিয়েছে সেই সমাজ? যে সমাজ আমার প্রবীশ বাবা কে ছোট করে দিয়েছে সেই সমাজ?নাকি সেই সমাজ ,যে আমার প্রবীশ বাবার সব কিছু কেড়ে নিয়েছে সেই সমাজ?

অমিত বাবু : সব থেকে বড় কথা ওই মেয়েটা কি সব মেনে নেবে ? তার ও তো একটা মতামত আছে তাইনা? আমার কিন্তু মনে হয় না মেয়েটা মেনে নিবে। তাছাড়াও স্যার মেয়েটার উপর যে পরিমাণ অত্যাচার করেছে, এরপর আমার মনে হয় না এমন কিছু ঘটবে।

রামু জেঠু : ভগবানের কৃপায় যেন সবকিছু ভালো হয়।(দুই হাত একসাথ করে কপালে ঠেকিয়ে বললেন) রাম রাম রাম রাম রাম ‌‌।
*
*
*
*
*
*
এভাবে কেটে গেছে আর কিছুদিন।প্রবীশ বাবুর সাথে আমার সম্পর্কটা এখন অনেকটা বন্ধু সুলভ। তার লাইফের বেশ কিছু অভ্যাস আমি চেঞ্ছ করে ফেলেছি অতি যত্নে, সেও নির্দ্বিধায় মেনে নিয়েছে।এই যেমন খাওয়া দাওয়ার আইটেম গুলো পরিবর্তন হয়ে বাঙালি খাবার এখন নাকি প্রিয় খাবার হয়েছে। আগে ভোরে নামাজ আদায় করে কোরআন তেলাওয়াত করতাম তখন রামু চাচা এসে পাশে বসে চুপ করে শুনতো। এখন রাতে এশার নামাজ আদায় করে কোরআন তেলাওয়াত করি,আর প্রবীশ বাবু আমার সামনে বসে খুব মনোযোগ দিয়ে তা শুনেন। একদিন তো তিনি আমাকে প্রশ্ন করে বসলেন_

প্রবীশ বাবু : আচ্ছা মেঘা তুমি যে এটা পড়ো ,এর বাংলা অনুবাদ করে আমাকে বুঝাতে পারবে?

মেঘা : কেন পারবো না , এইতো নিচে এর অর্থ দেওয়া আছে ।

প্রবীশ বাবু : তাহলে এই বই টা আমাকে পুরো বাংলায় বুঝিয়ে দাও।

মেঘা : এটা বই নয় পবিত্র গ্রহন্ত এটা আল্লাহ তায়ালা শয়ন নিজে নাজিল করেছেন আমাদের নবী দের উপর যা চিরন্তন সত্যে।

এরপর থেকে তাকে আমার কোরআন তেলোয়াত বাংলায় অনুবাদ করে পড়ে শুনাতে হতো আর তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে সেটা শুনতেন।

তার কাপড়-চোপড় এও কিছুটা পরিবর্তন এসেছিল। পাঞ্জাবি পড়তো গোল গলার আর নিচে ধুতি পরতো, যা আমার একদমই পছন্দ নয় । সেজন্য তাকে একটি পাঞ্জাবি উপহার দিয়েছিলাম আমি নিজের হাতে তার নকশি করে। এখন তার এই পোশাকটা চেঞ্জ হয়ে পুরা মুসলিম যেভাবে পাঞ্জাবি পরে ঠিক সেইভাবে তিনিও পাঞ্জাবি পরেন। উঠা গলা পাঞ্জাবি।আমি নিজের হাতে নকশি করে দিয়েছিলাম তাকে একটা পাঞ্জাবী। আর এই পাঞ্জাবীটা নাকি তার জীবনের পাওয়া বেস্ট উপহার ছিল।

সময় করে এখন আমরা দুজন একসাথে কফি খেতে বসি বিকালে, মাঝে মাঝে অমিত বাবু ও আমাদের সঙ্গি হয় । অমিত বাবুর সাথে এখন আমার বন্ধুত্বের থেকে ভাই বোনের মত সম্পর্ক বেশি। মাঝে মাঝে কোন একটা বিষয় নিয়ে আমি আর অমিত বাবু হেসে কুটিকুটি হয়ে যাই।প্রবীশ বাবু কিছু বুঝতে না পেরে রেগে ফ্লোরে মগ টা ছুড়ে কতবার যে ভেঙ্গেছে তার হিসেব নেই। অমিত বাবুর সাথে আমার এই হাসা হাসিতে প্রবীশ বাবু দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতেন,মূলত তিনি আমার এই হাসাহাসি অন্য কারোর সাথে সেটা সহ্য করতে পারেন না।

সেদিন তো অমিত বাবু কে সোজাসুজি বলে দিয়েছেন, সে যেন উপরতলায় না আসে। তার যা প্রয়োজন হবে প্রবীশ বাবু যখন নিচে নামবে তখনই সে তাকে সেটা বলবে বা দেখাবে। তবুও ভুল করেও যেন উপরে না আসেন। অমিত বাবু খুব ভালোই বুঝতে পেরেছেন তিনি জেলাসি ফিল করছেন আমার প্রতি।

মাঝে মাঝে আমি নিচে এসে অমিত বাবুর সাথে কথা বলি, তখন প্রবীশ বাবু আমার উপর প্রচুর রেগে যায় ।আর তিনি তার সেই পুরাতন রুমে গিয়ে মন মত ড্রিঙ্কস করে ,যেন এইটা পান করলে তার আমার উপর সমস্ত রাগ ঠান্ডা হয়ে যাবে। এ ভাবেই নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেন।

তবে তার এই গম্ভীরভাবে টা এখনো কাটেনি । সব সময় নিজের অ্যাটিটিউড থাকেন। কথা খুব ই কম বলেন, রেগে গেলে এখন আর আমার গায়ে হাত তোলেন না ঠিকই , কিন্তু কিছু কিছু জিনিসপত্র ভেঙ্গে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন।

অনেক সাহস নিয়ে সেদিন একটা কাজ করেছিলাম। রামু চাচা সেদিন যে রুমটাই আমাকে নিয়ে গিয়েছিল সেই রুমটাই প্রবীশ বাবুর করা ড্রিংক এর বোতল এবং যাবতীয় নেশা জাতীয় দ্রব্য সব জিনিস পত্র আমি ফেলে দিয়েছিলাম। এতে করে তিনি যে আমার ওপরে সেই লেভেলের রেগে যাবে আমি তা জানতাম। জেনেশুনেই আমি এটা করেছিলাম। রামু চাচা অমিতবাবু সবাই বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও আমি কাজটা করেছিলাম। অনেকটা সাহস সঞ্চয় করে রুমের মধ্যে বসে ছিলাম, জানি এটা দেখার পর আমার উপর টর্নেডো শুরু হয়ে যাবে। আমার উপরে যাই হয়ে যাক না কেন আমি চাইনা প্রবীশ বাবু এই সব ছাইপাশ খাক।

চোখ বন্ধ করে মনে মনে আমি আল্লাহর নাম স্মরণ করছি, সেই মুহূর্তেই প্রবীশ বাবু গটগট করে লম্বা পা ফেলে আমার সামনে এসে দাড়ালেন ‌।

বসা থেকে আমি উঠে দাড়ালেই, তিনি আমার মুখ টা তার এক হাত দিয়ে চেপে ধরে একটু উঁচু করে বললেন_

প্রবীশ বাবু : (দাঁতে দাঁত চেপে বললেন) এতো সাহস কোথার থেকে পেলে তুমি? এখন কিছু বলি না বলে অনেক সাহস পেয়েছে তাই না?(চোখে চোখ রেখে বললেন) এভাবে আমার লাইফের সবকিছু পরিবর্তন করে দিচ্ছো , আমাকে পরিবর্তন করে দিচ্ছো ,সব ই ঠিক আছে। কিন্তু আমাকে চেঞ্জ করে যদি তুমি ভেবে থাকো আমার লাইফ থেকে তুমি এক ইঞ্চি ও দূরে যেতে পারবে, তাহলে তুমি ভুল ভাবছো। আমি দিবো না যেতে।

মেঘা : আহ্ প্রবীশ বাবু, ছাড়ুন লাগছে আমার..

প্রবীশ বাবু : আগে বল আমার ড্রিংকস করা সব জিনিসপত্র কোথায় ফেলেছ?

মেঘা : ওগুলো আমি সব ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছি আর আমি চায়, আপনি ওগুলো আর ছুয়েও দেখবেন না।

প্রবীশ বাবু : তুমি চাইলে সব হবে? কেন চাও তুমি.. উত্তর দাও আমাকে?

মেঘা : কারণ নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করা আমাদের ইসলাম ধর্ম এ হারাম বলে ঘোষণা করেছে । তাই আমি চাই না আপনি কোন হারাম জিনিস সেবন করুন।

প্রবীশ বাবু কে রেগে আমার রুমে আসতে দেখে রামু চাচা এবং অমিত বাবু প্রবীশ বাবুর পিছন পিছন চলে আসে। আমার এবং প্রবীশ বাবুর মাঝে কথা বলতে দেখে না এগোতে চাইলেও আমাকে এইভাবে ধরায় রামু চাচা প্রবীশ বাবুর সামনে এসে দাড়ালে প্রবীশ বাবু আমার মুখটা ছেড়ে সরে দাঁড়ায়।

আমি প্রবীশ বাবুর পাশ দিয়ে দৌড়ে ব্যালকনিতে চলে আসি। বেলকনি ছিটকানি লাগিয়ে দিয়ে দরজায় নিজের পিঠ ঠেকিয়ে শাড়ির দুই পাশে শক্ত করে ধরে কান্না করে দিলাম। এত জোরে মুখ চেপে ধরায় অসহ্য ব্যথা করছে মুখে।

পরক্ষণে মনে পড়ল , আচ্ছা প্রবীশ বাবু কেন এটা বললেন তার লাইফ থেকে তিনি এক ইঞ্চি ও দূরে আমাকে যেতে দিবেন না। এর মানে কি? তিনি কি কোন ভাবে আমার লাইফের সাথে তার জীবন জড়াতে চাচ্ছেন? না না তা কি করে সম্ভব? আমি বিবাহিত আর তিনি হিন্দু ধর্মের এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কি সব আবোল তাবোল চিন্তা আমার মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছে আমি বুঝে উঠতে পারছিনা।

#চলবে…….
#চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here