অপ্রত্যাশিত ভালোবাসা পর্ব -২৩

গল্প : #অপ্রত্যাশিত_ভালোবাসা
লেখক : #কাব্য_মেহেরাব
পর্ব : ২৩

দূর থেকে সরে-
আর কত দূরে..গেলে,
বল তো পৌঁছানো যায়,
তোমার ভালো থাকার ঠিকানায়?
তুমি তো ছিলে
আকাশের নীলে-
রাতের নিরব জোছনায় ছিলে,
আমার না লেখা কবিতায়।
শুনে যে কোন আহ্বান,
তুমি যে দিয়েছ উড়ান

বল কিভাবে পৌঁছানো যায়

নীড় হারা পাখির ঠিকানায় ?
আকাশের তারা মাঝে-
তোমায় বেড়াই খুঁজে..
বল ওগো আলোরই নিশানা-
বল, হারানোদের কি ঠিকানা?

খুঁজব তাকে, দেখব একটি বার,
কত সুখে আছে সে পাখি আমার!

রাতের বেলা বসে বসে আমি কাব্যর কথা ভাবছি। কাব্যর সাথে কি আমার আর দেখা হবে না। সেদিন কথা দিয়ে কেন কথা রাখলো না? এই হাতে হাত রেখে কত কথা দিয়েছিল, সব কথা গুলো কি তাহলে মিথ্যা ছিল? উপরওয়ালা কি বেছে বেছে সব কষ্ট আমার কপালে দিয়েছিল?

হাজারো চিন্তার মাঝে হঠাৎ করে দরজা খোলার শব্দ পেলাম । প্রবীশ বাবু এসেছেন, আমার রাগ ভাঙ্গাতে। কিন্তু তার এই এটিটিউড টা এতোই বেশি যে তিনি আমার রাগ ভাঙ্গাতে এসেছেন তিনি নিজেও তা বুঝতে পারছেন না।

আমি রাগ করে অন্য দিকে মুখ করে বসে আছি, তিনি আমার সামনে এসে দাড়ালেন। আমি বেড থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পরলাম। প্রবীশ বাবু আমাকে কিছু বলতে যাবেন তার আগেই আমি তার সামনে থেকে দ্রুত পায়ে বেলকুনিতে চলে আসলাম। বলবো না এই লোকটার সাথে কথা! সব সময় নিজের অ্যাটিটিউড নিয়ে থাকেন, কি হয় আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো থাকতে? তার ভালোর জন্য ই তো এসব করেছিলাম, তাহলে ?

তাকে এইভাবে এড়িয়ে তার সামনে দিয়ে চলে আসায় তিনি অনেক টা রেগে গেলেন। কিন্তু তার রাগের কোন তোয়াক্কা আমি না করেই বেশ স্বাভাবিক আছি। কিন্তু তার এটা সহ্য হলো না। রেগে গিয়ে আমার পিছন পিছন এসে আমার ডান হাতের কব্জি ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে বললেন_

প্রবীশ বাবু : আজ দুই দিন ধরে আমি সরি বলার জন্য তোমার পিছন পিছন বেহায়য়ার মত ঘুরে বেরাচ্ছি, সেটা চোখে পড়ছে না তোমার?

মেঘা : আমার হাত ছাড়ুন….!(হাত ছাড়াতে ছাড়াতে তাকে বললাম)

প্রবীশ বাবু : ছাড়বো না কি করবে তুমি?(আরো জোরে শব্দ করে হাত চেপে ধরলেন)

মেঘা : ছেড়ে দিন আমার হাত, যেতে দিন আমায়..(বেশ জোরে চিল্লিয়ে বললাম আমি)

প্রবীশ বাবু : যেতে দিবো মানে?(কপাল ভাজ করে) বলেছি না আমার জীবন থেকে এক ইঞ্চি দূরে ও যেতে পারবে না তুমি…! তাহলে যেতে দিন ছেড়ে দিন এইসব আসছে কোথা থেকে?(দাঁতে দাঁত চেপে চোখে চোখ রেখে তিনি আমাকে বললেন)

মেঘা : আপনি ভুল করছেন। নিজের জেদের বশে বুঝতে পারছেন না আপনি কি বলছেন?

প্রবীশ বাবু : কি ভুল করছি আমি বলো, ( আমাকে ছেড়ে দিয়ে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বললেন) না আমি কি ভুল করছি বোঝাও আমাকে? তোমাকে আমার আশে পাশে না দেখলে আমি পাগল পাগল হয়ে যায়। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে , তোমার সাথে কথা না বলতে পারলে। আমি খেতে পারছি না , ঘুমোতে পারছিনা। নিশ্বাস নেওয়াটাও যেন দুষ্কর হয়ে গেছে আমার জন্য । এগুলা কে তুমি জেদ বলছো?

মেঘা : কি যা তা বলছেন আপনি? আমার সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন?

প্রবীশ বাবু : আমি কিছু জানতে চাই না। আমি শুধু বোঝাতে চাই তোমাকে আমার প্রয়োজন।
আর আমাকে তোমার সঙ্গ দিতে হবে।(আমার দুই হাতের কবজি ধরে আবারও বললেন)

মেঘা : আবারও বলছি আপনি ভুল করছেন। আর কিসের জোরে এতো অধিকার দেখাচ্ছেন আপনি ?

প্রবীশ বাবু : যদি বলি বন্ধুত্বের অধিকারে, একজন শুভাকাঙ্ক্ষী অধিকারে, একজন গুড উইশার এর অধিকারে? তোমার বর্তমান অভিভাবক এর অধিকারে?

আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম তার কাছ থেকে। শুনতে চাই না এইসব কথা। এইসব কথার মায়ায় পড়ে আজ আমি এখানে এসে দাঁড়িয়েছি।

প্রবীশ বাবু : (এক হাত দিয়ে আমার মুখ তার দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে বললেন)কাল আমার অফিসের একটা বড় প্রজেক্টের ডিল ফাইনাল হয়েছে অন্য একটা কোম্পানির সাথে ।তার জন্য একটা পার্টি থ্রু করেছেন তারা। স্পেশালি কাপল দের জন্য, মূলত এটা একটি ক্লাবে।

মেঘা : এসব আমাকে কেন বলছেন?

প্রবীশ : কাল আমার সাথে তুমি যাবে, আর আমি এতে না শুনবো না। সকালে শপিং এ যাবো আমরা,কাপল ড্রেস এর জন্য। তোমার কোন কিছু প্রয়োজন হলে লিস্ট করে নিও।কাল নিজে চয়েস করে নিও।

মেঘা : আমি যাবো না।

প্রবীশ বাবু : তোমাকে যেতে হবে!

মেঘা : বললাম তো আমি যাবো না।

প্রবীশ বাবু : প্লিজ মেঘা না কোরো না। সেদিন ঐ মেঘা আমাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ করেছে , আমার লাইফের সাথে নাকি কোন মেয়ে যায় না। মেঘা ও ইনভাইট সেখানে তাও ঐ SK এর পার্টনার হিসেবে। আমি মেঘা কে দেখিয়ে দিতে চাই, তাকে ছাড়া আমি অনেক হ্যাপি আছি তুমি আমাকে হেল্প করবে না?( আমার হাত ধরে বললেন)

মেঘা : (এই প্রথম প্রবীশ বাবু আমাকে কোন কিছুর জন্য রিকোয়েস্ট করছে।যে মানুষ টা সব সময় নিজের অ্যাটিটিউড আর দাম্ভিক রুপ নিয়ে থাকে আজ সে আমাকে রিকোয়েস্ট করছে,যে মানুষ টা মেয়েদের প্রতি ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই নেই সেই মানুষটি আজ আমার মত মানুষ মেয়ে মানুষের কাছে অনুরোধ করছে। তাকে না করার স্বাদ্ধি আমার নেই । )তাই মাথা উপর নিচ করে বুঝালাম ঠিক আছে আমি যাবো।

পরদিন সকালে শপিং করে এসে আমি খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। এভাবে হাই সোসাইটিতে শপিং করার অভ্যাস কখনোই হয়ে ওঠে নি আমার। আনকম্ফোর্টেবল বোধ করছিলাম তবে আমাকে সম্পুর্ন সাপোর্ট দিয়েছিলেন প্রবীশ বাবু। আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে প্রবীশ বাবু অফিসের কোন একটা ইম্পর্টেন্ট কাজে বেরিয়ে পড়লেন।

অমিত বাবুর কাছে যতটুকু জানতে পেরেছি, এটা খুব বড় একটা পার্টি কোন একটি ক্লাবে অরগানাইজ করা হবে। আমার লাইফে কখনো এভাবে পার্টিতে যাওয়া হয়নি। যেখানে অনেক হাই সোসাইটির মেয়ে দের আনাগোনা সেখানে আমি নিজেকে তাদের মত করে সাজিয়ে তুলতে পারব না। সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম আমি পার্টিতে যাব না। অমিত বাবুকে আমি জানিয়ে দিলাম, তিনি যেন প্রবীশ বাবুকে বলে দেন যে আমি পার্টিতে যেতে পারব না।

আমি পার্টিতে যেতে পারব না এটা জানার পর অমিত বাবুর কপাল মাথা দিয়ে যেন তীর ঘাম ছুটছিল। প্রবীশ বাবু যখন জানতে পারবে, আমি তাকে না করে দিয়েছি। তিনি আমার উপর নয় এই পুরো বাড়িটা উপর টর্নেডো চালিয়ে দেবে খুব ভালো বুঝতে পেরেছিলেন অমিত বাবু।

অমিত বাবু আমার এভাবে বারবার না করাতে তিনি প্রচুর টেনসনে পড়ে গেলেন। প্রবীশ বাবুকে বিষয়টা এখনই না জানালে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। ফোন দেয় প্রবীশ বাবুকে ,কিন্তু অফিসের কোন একটা মিটিং-এর কারণে তিনি ফোন রিসিভ করছেন না। ঘন্টাখানেক প্রবীশ বাবুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যখন ফোনে কোন ভাবে কন্টাক করতে পারেন নি, তখন তিনি অফিসে প্রবীশ বাবুর সাথে সাক্ষাত করার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন।

মিটিং শেষে প্রবীশ বাবু যখন হল রুম থেকে বের হচ্ছিলেন, তখনই দেখা হয় অমিত বাবুর সাথে। প্রবীশ বাবু কে সব খুলে বললে তিনি রেগে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে অমিত কে বলেন_

প্রবীশ বাবু : আই সুয়ের! যদি আজ মেঘা পার্টিতে না আসে আমি কি করবো নিজেও জানিনা! কিভাবে মেঘাকে আনবে আমি জানিনা, কিন্তু পার্টি তে আমার মেঘা কে চাই মানে চাইইইইই!(নিজের হাতে থাকা ফোনটি সজোরে এক আছাড় মেরে দিলেন)

অমিত বাবু:(ভয়েতে সিঁটিয়ে জান অমিত বাবু) যদি কিছু মনে না করেন আপনি একবার বাসায় গিয়ে দেখবেন? আমার মনে হয় আপনি তাকে বুঝালে সে অবশ্যই বুঝবে…

প্রবীশ বাবু : আমি নিজেই যেতাম মেঘা কে আনতে ,কিন্তু এখন যাব না। সন্ধ্যা ছয়টা ! জাস্ট সন্ধ্যা ছয়টায় আমি পার্টিতে অপেক্ষা করবো। তুমি যেভাবে পারো মেঘাকে সেখানে উপস্থিত করবে যদি আমার কথার হেরফের হয় বুঝতেই পারছ আমি কি করতে পারি?

অমিত বাবু : কিন্তু…

প্রবীশ বাবু : নো মোর এ ওয়াডস…. ওকে ?

অমিত বাবু : জি স্যার!(মাথা নিচু করে বললেন)
*
*
*
*
*
*
সন্ধ্যায়___

অমিত বাবু দাঁড়িয়ে আছেন ক্লাবে প্রবীশ বাবুর সামনে।আর প্রবীশ বসে বসে সফট ড্রিঙ্ক পান করছে। তার সামনেই ওয়েস্টিন ড্রেসে তার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে SK কোম্পানির মালিকের সাথে ডান্স করছে মেঘা রয় । প্রবীশকে দেখিয়ে দেখিয়ে ড্রিংক করছে আর গায়ে পড়ে কথা বলছে SK এর সাথে। মাঝে মাঝে প্রবীশকে দেখে তুমুল হাসিতে মেতে উঠছে দুজন।

কিন্তু এতে প্রবীশের ভাব টা ছিল 😏 যাস্ট ডোন্ট কেয়ার! প্রবীশের এখন একমাত্র চিন্তা মেঘাকে নিয়ে। যেন এখন মেঘাই সবথেকে বেশি ইম্পরটেন্ট প্রবীশের কাছে বাকি সবকিছু তুচ্ছ।

অমিত বাবু আর রামু চাচা মিলিয়ে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে আমাকে রাজি করিয়েছেন পার্টিতে যাওয়ার জন্য। তাছাড়াও প্রবীশ বাবুর রাগ সম্পর্কে আমার যথেষ্ট অনুমান করা হয়ে গেছে তিনি কি করতে পারেন আর কি করতে পারেন না। না চাওয়া সত্ত্বেও রাজী হয়ে গেলাম আমি।

প্রবীশ বাবু প্রচন্ড ক্ষেপে আছেন এই মুহূর্তে,তাই তাকে একা ছাড়বেন না বলে অমিত বাবু তার সাথেই থেকে গেলেন ।আর আমাকে ফোনে জানিয়ে দিলেন গাড়ি পাঠিয়ে দেবে আমি যেন সময় মতো চলে আসতে পারি।

প্রবীশ বাবুকে এইভাবে চুপচাপ ড্রিঙ্কস করতে দেখে অমিত বাবু কিছু একটা বলতে চাইছিলেন।

অমিত বাবু কিছু একটা বলতে চায় প্রবীশ বাবু বুঝতে পেরেছেন ।তাই তিনি বললেন_

প্রবীশ: কিছু বলতে চাও অমিত….

অমিত: না মানে….

প্রবীশ বাবু : বলে ফেল , মনে র ভিতরে কথা পুষে রাখতে হয় না_

অমিত বাবু : একটা কথা জিজ্ঞেস করব যদি রাগ না করেন_

প্রবীশ বাবু ওনার কথা শুনে মুচকি হাসে….

প্রবীশ বাবু : তুমি খুব ভালো করেই জানো আমি তোমাকে সেই ছোট বেলা থেকে চিনি। তাছাড়াও বিগত ৮ টি বছর ধরে আমার সাথে কাজ করছো। তোমার মনে কখন কি চলে তার উদিস কিন্তু আমার জানা আছে।

অমিত: জি স্যার…

প্রবীশ বাবু : যদিও আমি কিছু টা আন্দায করতে পারি, তবুও বলো কি বলতে চাও.।।।

অমিত বাবু : (গলাটা ভিজিয়ে নিয়ে বললে)আপনি কি ডালিয়াকে ভালোবাসেন ..?

প্রবীশ কিছু বলল না শুধু মুচকি হাসল। যেন সে আগেই আন্দায করতে পেরেছিলো, এই কথাটাই সে বলবে..

অমিত বাবু : কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি, আপনার আর ডালিয়ার মাঝে কিন্তু আকাশ-পাতাল ব্যবধান। আপনি বিচক্ষণ মানুষ সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন আশা করি।

প্রবীশ বাবু : …….(চুপ করে রইলেন)

অমিত বাবু : স্যার মেঘা কে আপনি কোথা থেকে নিয়ে এসেছেন, এবং মেয়েটা মুসলিম এটা ভুলে যাবেন না।

প্রবীশ বাবু: জানি তো….

অমিত বাবু : তারপরও আপনি কিভাবে??? তারপরও মেয়েটা কিন্তু প্রচন্ড জেদী…

প্রবীশ বাবু : তুমি একটা জিনিস খেয়াল করেছ ? আমার সামনে ওর রাগ টিকে থাকে না। কারনটা হলো আমি ওর রাগের পরিমাপ অনুযায়ী নিজের রাগ প্রয়োগ করি।আর এতে করে ও ওর রাগ টাই ভুলে যায়।

অমিত বাবু : জানিনা আপনি কি করতে চাইছেন বা কি করবেন। সমাজ কিন্তু এটা কে খারাপ দৃষ্টিতে দেখবে।

কথাটা শুনে প্রবীশ বাবু শুধু হাসে……

প্রবীশ বাবু : ভালো খারাপ নিয়েই মানুষ অমিত। কেউ কখনো 100% ভালো হয় না। প্রতিটি মানুষের ভিতর ভালো খারাপ দুটোই থাকে….. বুঝতে পেরেছো..?

অমিত বাবু : জ্বি স্যার….

প্রবীশ বাবু : আচ্ছা আমি আসছি…… [ বলে চলে যায় ]

অমিত বাবু : আসলেই সবার সামনে ওনাকে যতটা কঠোর লাগে ওনার সাথে এভাবে মেশার সুযোগ না পেলে হয়ত জানতেই পারতো না। এই রাগী মুখের পিছনে এতটা ইমোশন লুকিয়ে আছে।

প্রবীশ বাবু অমিত বাবুর সাথে কথা বলে ক্লাবের উপর তালাতে কোন একটা রুমে গিয়ে নিজের ড্রেস চেঞ্জ করে নেই। তিনি রাগ করে বাসায় আসেন নি । তাই সকালে শপিং থেকে আনা তার জন্য ওই ড্রেসের মত সেম ড্রেস অর্ডার করেন। সেটাই পড়েছেন তিনি।

এদিকে অমিত বাবু টেনশনে শেষ, কারন তিনি প্রবীশকে খুব ভালো ভাবে চেনে। আজ যদি মেঘা না আসে তবে প্রবীশ কি করবে তা অমিত নিজেও জানে না। ইদানিং খুব একটা রাগ না করলেও হুট হাট রাগলে তার ভয়ার্ত রুপটা অমিতের অদেখা নয়…..

এই তো সেদিন মেঘাকে অমিতের সাথে বেশি হাসা হাসি করতে না করেছে,তবুও অমিত একটা মেয়ে কে প্রপোজ করার সময় অমিত প্রবীশের ফোন আসায় তা ধরতে গিয়ে তাড়াহুড়ো তে ফোন টা পরে যায়। তখন সেই মেয়েটি অমিত কে বলে যে একটা ফোন কল রিসিভ করতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যায় তার সাথে আর তাই হোক প্রেম করা যায় না। এটা বলাতে মেঘা প্রচুর হেসেছিল। প্রবীশ অন্য কিছু মনে করে রুমে গিয়ে সব কিছু ভাঙচুর শুরু করে দিয়েছিলো,এমন কি নিজের শরীর এ পর্যন্ত আঘাত করতে গিয়েছিলো, কপাল ভালো মেঘা সে সময় তাকে সামলে নিয়ে ছিলো।

অমিত : ওহ ভগবান মেঘাকে এখানে তাড়াতাড়ি নিয়ে আসো। ৬: ১০ বেজে গেছে ওলরেডি আর আমার প্রান বাচাও…..

অমিত দেখে সিঁড়ি বেয়ে প্রবীশ নিজের হাত ঘড়ি দেখছে আর কপালে ভাঁজ করে দরজার দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে নিচে নামছে। প্রবীশের দিকে তাকিয়ে অমিতের গলাটা যেন শুকিয়ে যাচ্ছে। নিচে এসে আবার মিউজিক গ্ৰান্ডে গিয়ে একটা উঁচু চেয়ারে বসে স্থীর চাওনিতে ড্রিংসের গ্লাসটাকে দেখছে……..

অমিত : ভগবান… প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ…

,
,
,
,
ঠিক তখনি অমিত গেটে একটা গাড়ি থামতে দেখে…. গাড়িটা প্রবীশের ,মেঘা এসেছে কিনা সেটা দেখার জন্য যেতেই চোখে মুখে শান্তি ফিরে আসে…… গাড়ি থেকে মেঘা নামছে……. আজকে মেঘাকে অন্য রুপে দারুন মানিয়েছে। সাদা কার্লারের একটা গ্রাউন পরে চুলগুলোকে কার্ল করে ছেড়ে এসেছে। তেমন কোন সাজ নেই তবে পার্টির জন্য পারফেক্ট………

অমিত : সেই আসলে কিন্তু এত দেরি হলো….যে আমার জান টা বেড়িয়ে যাবে এমন সময়..

মেঘা: জ্যামের কারনে…..

অমিত : ওকে চলো এবার, তোমার জন্য স্যার সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছে…

মেঘা : কিন্তু আমার না খুব আন ইজি লাগছে।

অমিত বাবু : আরে বাবা প্রবীশ স্যার আছে আমি আছি এতো হেজিটেড ফিল করো না।

মেঘা : হিমম

অমিত বাবু : এবার চলো ভিতরে ..

আমি ভিতরে ঢুকতেই চারপাশটা দেখতে থাকি। আমার লাইফে এই প্রথম আমি এমন জায়গায় এসেছি। ছোট ছোট ড্রেস পরা মেয়ে গুলো কত বাজে ভাবে ছেলে মানুষের গায়ে ঢলে পড়ছে অন্ধকার গলি থেকে ও কত বাজে একটা জায়গা বলে মনে হলো আমার।

এতক্ষন পরে মেঘাকে দেখে প্রবীশের যেন প্রান ফিরে পায়….. মেঘার দিকে তাকিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে প্রবীশ। প্রথম যেদিন মেঘাকে দেখেছিল সেদিন একটা ঢোলা ঢোলা থ্রি পিস পরা ছিল। তারপর থেকে প্রবীশের বাসায় আসার পর শাড়ি পরেছে আর থ্রীপিস পরেছে মেয়েটা। এই প্রথম অন্য সাজে দেখলো মেঘাকে প্রবীশ। মেঘার দিকে তাকিয়েই ড্রিংসের গ্লাসে একটা সিপ দেয়….. প্রবীশ এতটুকুই বুঝতে পেরেছে আজ এই মেয়েটা তার হৃদয়ের অনেক কাছে একটা জায়গা করে নিয়েছে।এটা কে হয়তো বলে #অপ্রত্যাশিত_ভালোবাসা।

মেঘা ভিতরে আসতেই SK মেঘার সামনে এসে দাঁড়ালো। মেঘা তাকে দেখে শুধু অবাক নয় অবাক এর চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেল। গলা শুকিয়ে গেল মেঘার। চোখ দুটো ছল ছল করছে, এখনই হয়তো অশ্রু গড়িয়ে পড়বে। যখনই একটু ভালো থাকতে চাই তখনই অতীত পিছু ছাড়ে না,তাড়া করে বেড়ায়।
গল্প : #অপ্রত্যাশিত_ভালোবাসা
লেখক : #কাব্য_মেহেরাব

#বোনাস_পর্ব

যতই ভালো থাকতে চাই,অতিত আমার পিছু ছাড়ে না। এখানে আমার আসল পরিচয় সবাই জানতে পারলে প্রবীশ বাবুর মানসম্মান সব ধুলোয় মিশে যাবে।যা আমি কিছু তেই চাইবো না। আমার আকাশ পাতাল ভাবনার মাঝে SK বলে উঠলেন_

SK : কত খুঁজেছি তোমায় তুমি জানো? ওহ মাই গড! এখানে এভাবে তোমাকে পাবো ভাবতে পারিনি আমি..!

মেঘা : পথ ছাড়ুন আমার ..

SK : ওহ ডালিয়া মাই সুইট হার্ট ! অভিমান করেছো বুঝি? তাহলে আগেই বলে দেই আমি দেশে ছিলাম না।ব্যাবসার উন্নতির জন্য দেশের বাইরে যেতে হয়, সে জন্য তোমার সাথে দেখা করে যেতে পারিনি। তবে … তবে রহিমা খালা কে বলেছিলাম তোমাকে দেখে শুনে রাখতে। কিন্তু ঐ মহিলা…

মেঘা : চুপ করুন। আর মাতলামো বন্ধ করুন।

SK : নাহ ! না না না তা তো হচ্ছে না। এতো দিন পরে যখন তোমায় পেয়েছি ,তবে আর ছারছি না। এখন আমার টাকা পয়সা ধন দৌলত কোন কিছুর অভাব নেই। এখন চাইলে তোমার মত ১০টা মেয়ে কে ঐ অন্ধকার গলি থেকে কিনে আনতে পারি। সেই ক্ষমতা এখন আমার আছে।

মেঘা : বাজে কথা বন্ধ করুন!

SK : আরে বাহ্ এখনো দেখি, তোমার আগের মতো ঝাঁঝ রয়ে গেছে। তবে যাই বলোনা কেন আগে থেকে কিন্তু তোমাকে এখন হেব্বি সেক্সি লাগছে( কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো)। মনে হচ্ছে…..

প্রবীশ বাবু এতক্ষণ চেয়ারে বসে আমাদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ড্রিঙ্ক করে যাচ্ছিলেন। অমিত বাবুর সাথে কথা বলা তিনি সহ্য করতে পারেন না, সেখানে আমি অন্য একজনের সাথে এতক্ষণ ধরে কথা বলছি সেটা সে কিছুতেই সহ্য করতে পারছেন না। তবে এত মানুষের ভিড়ে কোন সিন ক্রিয়েট করতে চাই না বলে চুপচাপ দাঁতে দাঁত চেপে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার জন্য ড্রিনং করছেন।

প্রবীশ বাবু : জানি মেঘা আমার ফিলিংস টা তোমাকে বলতে অনেক তাড়াহুড়ো করছি কিন্তু আমি তো অপারগ তাই চেয়েও পারলাম না। তবে আমি চাই না তোমার লাইফে আমি ছাড়া অন্য কেউ থাকুক। তাই আজ তোমাকে আমার মনের কথা বুঝতে হবে……. (বলেই পুরো গ্লাসের ড্রিংস শেষ করে দেয় )
,
,
,
,
,

আমি প্রবীশ বাবুর দিকে তাকাতে হঠাৎ করেই লাইট অফ হয়ে যায়। আবার হঠাৎ করেই নিজের হাতে টান খেলাম … আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই কেউ আমাকে টেনে ডান্স ফ্লোরে নিয়ে যায়……..

তখনি আমার উপর লাইট পরে। এখন আমি লোকটাকে দেখতে পায়। লোকটা অন্য কেউ নয় প্রবীশ বাবু নিজেই ছিলেন……

মেঘা: আপনি……

প্রবীশ বাবু আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ দেয় না তখনি বেজে ওঠে মিউজিক। আমি নিজেকে প্রবীশ থেকে সরাতে চেয়েও পারল না প্রবীশ বাবু আমাকে শক্ত করে ধরে নিজের মধ্যে মিশিয়ে নিলেন। পুরো পার্টির ফোকাস এখন যেন মনে হচ্ছে আমাদের দিকে……. আমি এখন চেয়েও কিছু করতে পারছি না। কারন এখন প্রবীশ বাবু কে কিছু বলা মানেই এখানে একটা সিনক্রিয়েট হবে। যা প্রবীশ বাবুর রেপিটেশন এর জন্য মোটেও নেগেটিভ কিছু ইঙ্গিত করবে।আর আমাদের দুজনের জন্য ও অসন্মানের……. তবুও আমি প্রবীশকে ছাড়াতে ছাড়াতে বললাম…..

মেঘা : দেখুন প্রবীশ বাবু এখানে সবাই আমাদের দেখছে। ছাড়ুন আমাকে। ব্যাপারটা খুব খারাপ হতে পারে……

প্রবীশ বাবু: এতে আমার কিছু যায় আসে না…….(কথাটা বলেই প্রবীশ বাবু আমাকে নিয়ে নাচাতে শুরু করল……..

অন্য দিকে প্রবীশ বাবু আর আমাকে ডান্স ফ্লোরে নাচতে দেখে মেঘা রয় আমার দিকে রাগী চোখে কটমট করে তাকিয়ে আছে। প্রবীশ বাবু তা খেয়াল করলেও আমি এখনো তাকে দেখিনি।

আমার চোখ তো SK নামের ঐ লোক টার দিকে। হ্যাঁ এই সে ই লোক যে ঐ অন্ধকার গলিতে থাকা কালীন আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। প্রতিদিন রাতে তাকে আমি মনোরঞ্জক করতাম। আমাকে তিনি ঐ অন্ধকার গলি থেকে বের করে আনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আমি ই আসি নি(অনেকেই বুঝতে পারছেন না তাইতো? তাহলে বলি পর্ব ৫ এ বলেছিলাম ডালিয়াকে অনেকেই সেখান থেকে বের করতে চেয়েছিল এবং একজন ডালিয়া কে বিয়ে করতে চেয়েছিলো সেই । যার নাম টা পর্যন্ত ডালিয়া জানতো না। কারণ তার প্রতি ডালিয়ার কোন ইন্টারেস্ট ছিল না। দুই এক লাইনে বলেছিলাম তাই হয়তো আপনাদের মাথা থেকে বিষয় টা বেড়িয়ে গেছে।) এখন ভয় হচ্ছে লোকটার চাহুনি দেখে। এ ভাবে আমাকে এখানে প্রবীশ বাবু আনাতে ঐ লোক টাও রেগে ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ করে মিউজিক বেজে উঠল_

Music………

Aaj zid kar raha hai dil [ 2 ]
Karna hai bas tujhe hasil
Aaj zid kar raha hai dil
Ho mujhme tu ho bhi ja shamil
Aaj zid kar raha hai dil……….

প্রবীশ বাবু আমার সাথে ডান্স করছে। ডান্স এর মাধ্যমে প্রবীশ বাবু আমাকে নিজের ফিলিংসের কথা জানান দিচ্ছে কিন্তু আমার চোখ অন্য কোথাও। আমার সাথে খুব ক্লোজলি ডান্স করছে প্রবীশ বাবু। আমি বার বার দুরে সরিয়েও দিলেও প্রবীশ বাবু আমাকে নিজের মাঝে টেনে নিচ্ছেন……..

Kahin khud ko mujhme tu
Chhod ja, chhod ja
Tere sath mujhko tu
Jod ja, jod ja
Yeh jo kanch ke jaisi
Ek deewar hai
Meri baahon mein use
Tod ja, tod ja

Yeh jo ik adhuorapan hai
Ik duosre se bhar de
Jise umar bhar na bhulein
Woh lamhe mil jaayein

Maan le mujhe tere kabil……

( প্রবীশ বাবু এই প্রথম আমার এতো ক্লোজে আসছেন,কেমন একটা অস্বস্তি বোধ করছি। হঠাৎ করে মনে পরলো এখানে তো প্রবীশ বাবুর স্ত্রী মেঘা ও এসেছে সে কোথায়? SKএর জন্য আমি তো এটা একদম ভুলেই গেছিলাম।তাহলে ঐ মেঘাকে দেখানোর জন্য আমার এতো ক্লোজ হচ্ছে? কিন্তু প্রবীশ বাবু কে আমার কেমন অন্য রকম লাগছে। কিছু বলতেও পারছিনা আর না সহ্য করতে পারছি। শুধু এতটুকু বুঝতে পারছি প্রবীশ বাবু এমনি এমনি এমন করছেন না অন্য কোনো আলাদা এক্সপেক্টেশন আছে হয়তো আমার কাছে।

এই কয়দিনে আমার মনে একটা সন্দেহ বাসা বেধেছিল আজ তা যেন সত্যি বলে প্রমান হচ্ছে ।প্রবীশ বাবুর যে আমার প্রতি কতটা আসক্ত হয়েছেন এতো দিনে, তার প্রতিটি নেশাক্ত ছোয়া আমাকে বলে দিচ্ছে…….

Bepanah tujhpe fida hoon
Bepanah tujhe chaahta hoon
Bepanah tujhe maanta hoon
Bepanah, bepanah

Tu nasha tu khumar
Tera junun sar pe sawar
Aaj tu khud ko mere yaar
De pila, de pila

ওলরেডি আমাদের সাথে সাথে আরো কয়েক জন কাপেল, ডান্স ফ্লোরে নাচতে শুরু করে দিয়েছে। তাদের মধ্যে SK ও ছিল আর SK এর সাথে যে মেয়ে টা ডান্স করছে তাকে চিনতে আমার একটু ও অসুবিধা হয় নি । ইনিই প্রবীশ বাবুর সেই কঠিন হৃদয়নী, যে নিজের সন্তানের কয়েক টুকরো টুকরো করে উপহার দিয়েছিলো প্রবীশ বাবু কে।

Mujhe sirf teri lagan hai
Use mil ke pura kar de
Meri itni si hai khwaahish
Tera pyar mil jaye

Ban bhi ja tu meri manzil
Aaj zid kar raha hai dil

Ho mujhme tu ho bhi ja shamil
Aaj zid kar raha hai dil x (2)

গান শেষ হতেই প্রবীশ বাবু আমার ঘাড়ে একটা কিস করেন। আমার শরিরে যেন বিদ্যুত খেলে গেল।এমন ছোঁয়া আমার কাছে নতুন না হলেও প্রবীশ বাবুর এই ছোঁয়া আমাকে কেমন অদ্ভুত নেশার মত মনে হলো।এমন ছোঁয়া পেতেই তো চেয়েছিলাম যেই ছোঁয়া তে কোন কামুকতা থাকবে না।থাকবে অফুরন্ত ভালবাসা,যা কাব্য ছাড়া কেউ আমাকে দিতে পারবেনা। কিন্তু প্রবীশ বাবুর এই ছোঁয়া আমাকে এতো ভাবাচ্ছে কেন? আবার ও মনের অজান্তেই আমার চোখে পানি এসে গেল।

প্রবীশ বাবু আমার দিকে তাকাতেই দেখে আমার চোখে পানি টলটল করছে। আর তা যে কষ্টের কারনে সেটা বুঝতে প্রবীশ বাবুর বাকি থাকে না।

আমার চোখে পানি দেখেই প্রবীশ বাবুর আমার ধরে রাখা হাত হালকা হয়ে আসে। এতক্ষণে প্রবীশ বাবুর হুশ ফেরে তিনি কি করছিলেন । তার পর চারপাশে তাকালেন। সবাই অবাক চোখে যেন আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। অস্বাভাবিক চাহনি সবার, থাকবেই বা না কেন? যেখানে নিজের প্রক্তাতন স্ত্রী সয়ন সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেখানে প্রবীশ বাবু অন্য একটি মেয়ের সাথে ডান্সে নেশায় বুঁদ হয়ে ছিল।

প্রবীশের মনে এবার কিছু টা ভয় কাজ করছিলো, কিন্তু ভয়টা নিজের জন্য নয় বরং মেঘার চোখে পানি দেখে। মেঘা প্রবীশের এমন ছোঁয়া কে ঘৃণার দৃষ্টি তে দেখবে না তো? যদি ভুল বোঝে তাহলে??

প্রবীশ বাবু আমার হাত ছেড়ে দিতেই তাকে আমি বলি_

মেঘা : আই নীড এ ওয়াশ রুম!
,
,
,
লেডিস ওয়াশ রুমে আয়নার সামনে গিয়ে নিজেকে দেখতেই বারবার প্রবীশ বাবুর ছোঁয়া মনে পরছে। এই ছোঁয়া কাব্য কে বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছে,কান্না করে দিলাম আমি। নল থেকে চোখে মুখে পানির ছিটা দিতেই বের হবো তখনই আমার সামনে মেঘা রয় এসে দাড়ালেন।

মেঘা রয় : বাহ্। দেখতে শুনতে তো বেশ ভালোই…! নাম কি তোমার??

মেঘা : (প্রবীশ বাবুর স্ত্রীকে দেখে আমার বুকের ভেতর ছ্যাত করে ওঠে)কাপা কাঁপা গলায় আমি বললাম জি আমার নাম মে… (একটু থেমে) ডালিয়া।

মেঘা রয় : তা কতদিন ধরে চলছে এসব?

মেঘা : সরুন সামনে থেকে….

মেঘা রয় : এরিয়ে যাচ্ছো? পোশাক আশাক আর তোমাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে এই সবে তুমি অভ্যস্ত নও। একটা কথা মাথায় রাখবে, বামুন হয়ে চাঁদ ধরতে যেও না। শেষে না হাত টাই হাড়ালে..

মেঘা : ধন্যবাদ আপনাকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। ( কথাটি বলেই তাকে সাইট করে আমি বাহিরে চলে এলাম।)

বড় হলরুম তার ভিতরে এক পাশ লেডিসদের জন্য অন্য পাশ জেনসদের জন্য।লেডিস ওয়াশ রুম থেকে বাহিরে বেড়িয়ে আসতেই SK আমার সামনে এসে দাড়ালো । আমার হাত ধরে টেনে এক কোনায় নিয়ে দাড় করালেন।

SK : (আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত বিচ্ছ্রি ভাবে তাকিয়ে বলল) মাত্র দুই বছরে অনেক পরিবর্তন এসেছে তোমার যৌবনে। তরুণ যুবতি থেকে পূর্ণ যুবতী হয়েছো। বিশ্বাস করো তোমার কে দেখে এখনো আমি লোভ সামলাতে পারছি না। ( বুকে হাত দিয়ে মুখ টা একটু অন্য রকম করে বললেন)ওফফফফ কি মধুর রাত কাটিয়েছি আমরা তাই না? বিশ্বাস করো তোমার মাঝে আমি যা পেয়েছি তা অন্য কারোর মাঝে পাইনি। তাইতো তোমাকে বিয়ে ও করতে চেয়েছিলাম। যাতে করে প্রতিটা রাত হতো আমার সুখময় ।

মেঘা : তার এমন কথায় আমার বুক ফেটে কান্না আসছে। নিজের করা কাজে নিজেরই লজ্জায় মুখ লুকোতে মন চাইছে। কেন যে রামু চাচা আর অমিত বাবুর কথাতে এখানে আসলাম ,এখন নিজের ই কান্না করতে মন চাইছে।

SK : তোমার এই ( এক আঙ্গুল দিয়ে কপাল থেকে ঠোট পর্যন্ত স্লাইড করে বলল) চোখ ঠোঁট মুখ বলে দিচ্ছে তুমি ও আমাকে খুব মিস করছো। চলো না আমরা আবার ও একে অপরের রাতের সঙ্গি হয় , বিশ্বাস করো এখন তো তোমাকে আমি টাকার উপর শোয়াতে পারবো। টাকা দিয়ে ঢেকে দেবো তোমার শরীর টা ,আই শোয়েয়ার ( গলার কন্ঠ নালীর উপরিভাগ ছুঁয়ে বলল)

মেঘা : এতোক্ষণ তার কথা সহ্য হলেও এবার তা আর সহ্য করতে পারলাম না, সজোরে এক চড় বসিয়ে দিলাম তার বাম গালে।
,
,
,
,
বাহিরে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন প্রবীশ বাবু ।আমার এতো সময় লাগছে দেখে তিনি ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে আসলেন। লেডিস ওয়াশ রুমে ঢুকা টা ঠিক হবে না তাই তিনি জেনস ওয়াশরুমের পাশে আসতেই জোরে চড় দেওয়ার শব্দ পেলেন। শব্দের উৎস খুঁজতে ই দেখেন দুটি অবয় দেখা যাচ্ছে। একটু এগিয়ে আসতে দেখেন SK মুখে হাত দিয়ে মাজা টা হালকা কাত করে আছেন, আর আমি তার সামনে ।

আমাকে দেখেই প্রবীশ বাবু বললেন_

প্রবীশ বাবু : মেঘা…? (কপাল ভাঁজ করে)

মেঘা : আমার নাম শুনতেই পিছনে ঘুরে দেখি প্রবীশ বাবু দাঁড়িয়ে আছেন। কোন শব্দ মুখ থেকে বের না করে আমি নিজের বাম হাত দিয়ে চোখ মুছে বাহিরে বেড়িয়ে আসি।

আমার চোখ মুখ এবং SK কে এভাবে দেখে প্রবীশ বাবুর বুঝতে অসুবিধা হয় নি কি হয়েছে এতোক্ষণ এখানে। প্রবীশ হাতে রাখা ফোন নিয়ে অমিত বাবু কে কল করে _

প্রবীশ বাবু :ওয়াশ রুমের দিকে এগিয়ে এসে দেখো মেঘা বাহিরে বেড়িয়েছে । ওকে বাসায় ঠিক মতো পৌঁছে দাও।

অমিত বাবু: কিন্তু স্যার আপনি?

প্রবীশ বাবু : আমি পরে আসছি , একটু বোঝা পড়া বাকি আছে SK এর সাথে। তুমি মেঘা কে নিয়ে বাসায় দিয়ে আবার এখানে ব্যাক করো fast .

আমিত বাবু : ওকে স্যার…

প্রবীশ বাবু চোখ বন্ধ করে মনে মনে বললো আমার ই ভুল হয়েছে , তোমাকে উপরে না নিয়ে গিয়ে এই খানে এনে। রক্ত চক্ষু নিয়ে SK এর দিকে তাকিয়ে……

#চলবে………
#চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here