“অবশেষে_তুমি (পর্ব ১১)

#অবশেষে_তুমি (পর্ব ১১)
#Mohua_Afrin_Mim
·
·
·
অর্ণব রুমে এসে খাটের উপর বসে ভাবছে মিমের কথা।। কেনো কান্না করছে…… কি এমন কারণ আছে যার জন্য ও কান্না করছে।। অর্ণবের অনেক কষ্ট হচ্ছে মিমকে কান্না করতে দেখে……..মিমের কান্না করাটা ও মেনে নিতে পারছে না।। কিন্তু ওর কেনো এতো খারাপ লাগছে মিমের জন্য…….. ও তো মিমকে পছন্দ করেনা…….তবে কেনো বুকের মদ্ধে এক চাপা কষ্ট অনুভব করছে।।আর ও এখনো রুমে আসছে না কেনো।।

বৃষ্টির মদ্ধে দাড়িয়ে ভাবছি কেনো আমার সাথে এমনটা হলো…… আমি কি দোষ করেছিলাম যে আমার সাথেই এমনটা হতে হলো।। উনি যদি অন্য কাউকে পছন্দ করেই থাকেন তাহলে কেনো আমাকে বিয়ে করলো।। আর বিয়ে করে এখন আমাকে মেনে নিতে পারবে না।। উনি কি প্রমাণ করতে চাচ্ছেন……….. মায়ের কথামতো বিয়ে করে কি উনি মহান সাজতে চাচ্ছেন……. আমাকে এভাবে কষ্ট দিয়ে।। আমকে এইভাবে কষ্ট দিয়ে উনার কি লাভ হচ্ছে……. উনি কি মজা পাচ্ছেন।। আমি আর মেনে নিতে পারছিনা এসব।।

আধাঘন্টা পর মিম নেমে এলো ছাদ থেকে।। মিমকে রুমে ঢুকতে দেখে অর্ণব জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মিমের দিকে।। আর মিম সেদিকে পাত্তা না দিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো।। অর্ণব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে হয়েছেটা কি মেয়েটার।। মিম ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার পর অর্ণব মিমের দিকে তাকালো।। ভালো ভাবে তাকিয়ে ভাবছে—এতক্ষণ তো খেয়ালই করেনি সে……… মিম এতক্ষণ কাঁদাতে মিমের চোখ মুখ ফুলে আছে আর চোখ নাক লাল হয়ে আছে।। মেয়েটাকে এই মুহূর্তে অনেক বেশি সুন্দর লাগছে…… অনেক কিউট লাগছে।। কাঁদলে বুঝি মানুষকে এতো সুন্দর লাগে আগে জানা ছিলো না।।

মিম অর্ণবের পাশ কাটিয়ে এসে শুয়ে পড়লো আর অর্ণব হা করে তাকিয়ে আছে।। একটু পর অর্ণবও শুয়ে পড়লো।। রাতে কারো কাঁপুনিতে ঘুম থেকে উঠে যাই।। ভালো করে খেয়াল করে দেখি মিম কাঁপছে।। বুঝতে আর বাকি রইলো না বৃষ্টিতে ভিজার ফলে জ্বর আসছে।। তাই একটা কাথা ওর গায়ে দিয়ে দিলাম কিন্তু তাও ওর কাঁপুনি বন্ধ হচ্ছে না।। তাই আর কিছু না ভেবে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।। জড়িয়ে ধরাতে কাঁপুনি কিছুটা কমেছে।। উষ্ণতা পেয়ে মিম মনে হচ্ছে আরো ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে আর অর্ণবও আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।।

সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি মিমকে জড়িয়ে ধরে আছি।। তাই ওকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিলাম।। মিমের দিকে তাকিয়ে আছি…….. অনেক ভালো লাগছে ওকে দেখতে………. কি সুন্দর করে ঘুমাচ্ছে!! অনেক কিউট লাগছে ওকে।। এই মুহূর্তে ওকে অনেক ছুতে ইচ্ছা করছে তাই ওর কপালে আলতো করে চুমু এঁকে দিলাম।। তারপর তাড়াতাড়ি উঠে এলাম সেখান থেকে আর নইতো মিম যদি টের পেয়ে যায় কি না কি ভাববে।।

অনেক্ষণ ধরে ফোনটা বাজছে।। দেখতে ইচ্ছে করছেনা কে ফোন করেছে।। কিছুই ভালো লাগছে না।। ফোনটা কেটে গিয়ে আবার যখন বাজতে লাগলো তখন হাতে নিয়ে দেখি আম্মু ফোন দিয়েছে।। অনেকটা বিরক্তি নিয়ে ফোনটা ধরি

আম্মুঃ হ্যালো মিম।।

মিমঃ হ্যা আম্মু বলো।।

আম্মুঃ সেই কখন থেকে ফোন দিয়েই যাচ্ছি ধরছিস না কেনো??

মিমঃ এমনি ভালো লাগছিলো না।।

আম্মুঃ কেনো কিছু হয়েছে!!

মিমঃ না কিছু হয়নি।। বলো কি বলবে!!

আম্মুঃ মিম তুই ভালো আছিস তো সুখে আছিস তো!!

মিমঃ হ্যা ভালো আছি।। ভালো থাকবো না কেনো এতো ভালো ছেলের কাছে বিয়ে দিয়েছো।।

আম্মুঃ এমন করে বলছিস কেনো!! আমরা কি তোর ভালো চাই না!!

মিমঃ হ্যা ভালো চাবে না কেনো।। এতো ভালো ছেলে তো পাওয়াই যায় না এজন্য বিয়ে দিয়েছো।। তাই ভালো না থাকার তো কোনো প্রশ্নই উঠে না।। ভালোই আছি অনেক ভালো আছি।।

আম্মুঃ এমন করে কথা বলছিস কেনো তুই!! কিছু হয়েছে তোর!!

মিমঃ না কিছু হয়নি আমার।।

আরো কিছুক্ষণ কথা বলে রেখে দেই।। কোনো কিছুই ভালো লাগছেনা বিরক্তিকর লাগছে সব কিছু।। ইচ্ছা করছে কতক্ষণ চিল্লাই।।

.
.
.
.
.
.
.

এক সপ্তাহ হয়ে গেছে মিম অর্ণবের সাথে ভালো করে কথা বলে না।। এই এক সপ্তাহ ধরে মিম অর্ণবকে ইগনোর করে চলেছে।। আর অর্ণব সেটা ভালো করেই বুঝেছে।। অর্ণবের সাথে তো ভালো করে কথা বলেই নি অর্ণবের সব কথায় শুধু হু হা করেছে।। কিন্তু অর্ণবের এটা মোটেও ভালো লাগছে না।। মিম এমনিতেও কম কথা বলে তাই বলে অর্ণবের সাথে এইভাবে কখনো কথা বলেনি।। অর্ণব কেনো যেনো মিমের এই ব্যবহার মেনে নিতে পারছে না অনেক কষ্ট হচ্ছে ওর।। কিন্তু মিমের এসব কিছুতেই এখন আর যায় আসে না।। মিমের কথা হলো ও এখন নিজেকে অর্ণবের থেকে দূরে সরিয়ে রাখবে………. ও ওর মতো চলবে আর অর্ণব অর্ণবের মতো।।
.
.
.
.

রাতে খাবার শেষে রুমে গিয়ে দেখি অর্ণব রুমে নেই।। অনেক্ষন হয়ে গেছে কিন্তু উনি রুমে আসছে না।। তাই উনাকে খুঁজতে গেলাম।। কিন্তু বাড়ির কোথাও পেলাম না।। হঠাৎ খেয়াল এলো ছাদে তো দেখাই হয়নি।। এখন শুধু ছাদই বাকি আছে।। গিয়ে দেখি ছাদে আছে নাকি।। ছাদে গিয়ে দেখি উনি দাড়িয়ে আছেন।। উনি উল্টা দিকে মুখ করে দাড়িয়ে আছে বিধায় উনার মুখটা দেখতে পারছিনা।। আমি উনার কাছে গেলে খেয়াল করলাম উনি কান্না করছেন।। উনার কন্নার আওয়াজ শুনা যাচ্ছেনা কিন্তু উনি যে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন সেটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।।

আমি উনার কাধে হাত রাখতেই উনি পিছন ফিরেই আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।। উনার এমন কাজে আমি অনেক অবাক।। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি।। কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছিনা।। ছেলে মানুষ নাকি সহজে কান্না করে না।। ছেলেদের মন নাকি অনেক শক্ত।। কিন্তু উনি এইভাবে কান্না করছেন কেনো!! আমি উনাকে বাধা দিলাম না।। উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেই যাচ্ছেন।।

কিছুক্ষণ পর উনি আমাকে ছেড়ে দিলেন।। আমাকে ছেড়ে দিয়ে উনি অনেক ইতস্তত বোধ করছেন।। কান্না করাতে উনার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।। বুঝাই যাচ্ছে অনেক্ষন ধরে কান্না করেছেন।। আমি জিজ্ঞাসা করলাম

মিমঃ কি হয়েছে আপনার??

অর্ণবঃ……………

মিমঃ কিছু কি হয়েছে আপনার??

অর্ণবঃ……………

মিমঃ কিছু বলছেন না কেনো??
·
·
·
চলবে……………………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here