অভিমান পর্ব ২১+২২

#অভিমান
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
পর্ব-২১
শ্যাতশ্যাতে মাটি…বৃষ্টিস্নিগ্ধ সকাল.. চারিপাশে ফুরফুরে ঠান্ডা বাতাস…কোলাহলহীন…একদম চুপচাপ। বৃষ্টিমুখর পরিবেশে ঝুমকো তখনো হাটুতে দু হাত রেখে বসে ছিলো মাথা নিচু করে। পড়নের শাড়ি এখনো এলোমেলো। চুল শুকিয়ে অগোছালো ঝট পাকিয়ে পিঠময় ছড়িয়ে আছে। শুকনো ঠোঁট দুটো খয়েরি বর্ণ ধারন করেছে। চোখের নিচে পানি শুকিয়ে মোটা স্তর পরেছে। হঠাৎ একটা হাত এগিয়ে এলো। ঝুমকো ফিরে তাকালো।

ঝুমকোর দিকে একটা ওষুধের পাতা এগিয়ে দিলো রাহান। সারারাত ঘরে ফিরেনি এই ছেলেটা। কাল রাতের প্রকৃতির ঝড়টা এসে সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেলো। ঝুমকোর জীবনটা আরো অগোছালো করে গেলো। রাহান নরম এবং অতি সুক্ষ্ম স্বরে বলল,

‘এই ওষুধটা খেয়ে নেও। আর কাল রাতের জন্য স্যরি।’

ঝুমকো ওষুধের পাতাটা হাতে নিয়ে উলোটপালোট করে একবার ভালো করে দেখলো। এরপর রাহানের চোখে চোখ রাখলো। চার চোখ মিল হলো। থমকে গেলো বাতাস। হৃদয় কাপানো অনুভূতির সৃষ্টি। কেটে গেলো অনেকগুলো মুহুর্ত। রাহান চোখ সরিয়ে নিলো খুব সূক্ষ্মভাবে। ঝুমকোর চোখ আগুনের মতো জ্বলে উঠলো। উঠে দাঁড়িয়ে রাহানের কলার দু হাত দিয়ে চেপে ধরে দাঁত কিড়িমিড়ি করে বলল,

‘জোর করে বিয়ে করতে পারিস। ফিজিক্যাল রিলেশন করতে পারিস। অথচ বাচ্চার দায়িত্ব নিতে পারবি না? কেনো বাচ্চার দায়িত্ব নিতে ভয় পাস?’

ঝুমকোর আচরনে রাহান অবাক হয়ে গেলো। সে অদ্ভুত ভাবে ঝুমকোর আগাগোড়া পর্যবেক্ষণ করলো। ঝুমকোর আচরন দেখে মনে হচ্ছে সে এখনি প্রেগন্যান্ট। রাহান ঝুমকোর হাত নিজের কলার থেকে ছাড়িয়ে নিতে নিতে বলল,

‘আমি তো তা বলিনি একবারো। আমি বলেছি চাইলে পিল খেতে পারো। বাচ্চা নেওয়ার দরকার নেই। আর আমাদের বিয়েটা তো কেউ জানে না। রিস্ক নিতে হবে না।’

‘হলে হোক। তোর চিন্তা না করলেও চলবে। ও আমার বাচ্চা। আমি মানুষ করবো তোকে আমার প্রয়োজন নেই।’

‘কি আশ্চর্য! তুই তোকারি কেনো করছো?’ রাহান বলল কটমট দৃষ্টি ফেলে।

ঝুমকো কিছু বলতে চেয়েও বলল না। উল্টে বলল, ‘উই নিড সেপারেশন। ‘

রাহান হাসলো। তাচ্ছিল্য হাসি হেসে বলল, ‘উই কেনো বলছো ঝুমকোলতা..? বলো আই। তোমার প্রয়োজন আমার প্রয়োজন নেই। আচ্ছা ঠিকাছে ডিভোর্স দিয়ে দিবো। কিছুদিন টাইম দেও।’

রাহান চলে যেতে নিলো। ঝুমকোর প্রচুর রাগ হলো। রাগে অন্ধ হয়ে গেলো। চোখ ফেটে পানি গড়িয়ে পরতে লাগলো। বুকটা হাহাকার করে উঠলো। এরপর আর এক মুহুর্ত বিলম্ব না করে দৌড়ে গিয়ে পেছন থেকে ঝাপটে ধরলো বহুকাঙ্ক্ষিত সেই মানুষটাকে। আর একটু হলে রাহান মুখ থুবড়ে পরে যেতো। বুকের মাঝ বরাবর আড়া আড়ি ভাবে দুটো হাত খেলে গেলো। পিঠের উপর ভারী বস্তুটা জোরে জোরে শব্দ করে কেদে উঠলো।

রাহান ঘুরে দাড়ালো। তার চোখ লাল। সারারাত ঘুমায়নি। চোখ ছলছল করছে। ঝুমকোর মুখটা দু হাত দিয়ে ধরলো। চোখের পানি মুছিয়ে দিলো। তবুও আবার ভিজে গেলো। রাহান স্নিগ্ধ কাতর গলায় বলল, ‘চলে যাবে নাতো জান?’

ঝুমকো কান্নার মাঝে হেসে দিয়ে মাথা ঝাকালো। নাক টেনে টেনে বলল, ‘যাবোই তো। কেনো থাকবো হ্যাঁ? যে আমার বাচ্চাকে মেরে ফেলতে চায় তার কাছে থাকবো না।’

রাহান মুচকি হেসে ফিসফিস করে বলল, ‘মনে হচ্ছে আমার ঝুমকোলতা এখনি মা হয়ে যাচ্ছে।’

লাজে রাঙা ঝুমকো ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো রাহানকে। রাহান ঝুমকোর কাধে মুখ গুজলো। চোখ বন্ধ করে ঝুমকো মাতাল কন্ঠে বলল, ‘এভাবে ঝুমকোলতা ডেকো না। বুকে কাপন ধরে। তোমার এই ডাক আমার মৃত্যুর সমান। মনে হয় মৃত্যু আমায় কাছে ডাকছে। খুব কাছে। ডেকো না ঝুমকোলতা। আমি মরে যাই।’

রাহান ঝুমকোর কপালে চুমু দিলো। এরপর দু গালে, তারপর নাকে, তারপর থুতনিতে, তারপর ভিজিয়ে দিলো ঝুমকোর ঠোঁট জোড়া। পেটে হাত রাখলো শক্ত করে। ঝুমকোর চোখ দিয়ে তখনো পরছে পানি। সে জড়িয়ে ধরলো রাহানকে নিজের সাথে। আজ হারিয়ে যাওয়ার প্রবল বাসনা। শুধুই রাহানের মাঝে হারাতে চায়! হারিয়ে যাক! হারাক এই পৃথিবী! ভাঙুক অভিমান!

________________________________

সকাল দশটা। ঝুমকোকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে রাহান চলে গেছে। কাল রাতেই রাহান ঝুমকোর ফোন থেকে কামিনী বেগমের নাম্বারে মেসেজ পাঠিয়ে দিয়েছিলো যে, ঝুমকো প্রাপ্তির সাথে থাকবে আজ। তাই আর কোনো জবাবদিহি করতে হয় নি। নিজের ঘরে গিয়ে লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে চুলে তোয়ালে পেচিয়ে বেড়িয়ে এসেছে ঝুমকো। শরীর চলতে চাইছে না। ভীষণ দূর্বল।

ঘরে প্রবেশ করলো তখন রুম। এ সময় ভাইকে ঘরে দেখে ঝুমকো বেশ অবাক হলো। সচরাচর রুম ঝুমকোর ঘরে আসে না। ঝুমকো আদুরে গলায় বলল, ‘কিছু বলবি ভাই?’
‘হুম আপু।’
‘বল।’
হাতের মুঠোয় একটা সবুজ কাগজ ঝুমকোর দিকে এগিয়ে দিয়ে রুম বলল, ‘এই কাগজটা নিয়ন ভাইয়া দিয়ে গেছে।’

ঝুমকো অবাক হলো। নিয়নের কথা শুনলে এখন তার রাগ করা উচিত কিন্তু রাগ হচ্ছে না। হচ্ছে অভিমান। কেনোই বা রাগ হবে। প্রিয় মানুষগুলোর সাথে যে রাগ করা যায় না। শুধুই অভিমান করা যায়৷ এটাই নিয়ম! তবুও ঝুমকোর ভ্রু জোড়া রাগে কুটি হয়ে গেলো। রুষ্টভাবাপন্ন গলায় জিজ্ঞেস করলো,

‘নিয়ন এসেছিলো?’

রুম মাথা ঝাকিয়ে বলল, ‘হুম। নয়টার দিকে এসেছিলো। এসে আমার হাতে এই কাগজটা ধরিয়ে দিয়ে বলল, তোমার আপুকে দিয়ে দিও। আমি বললাম, আপু বাড়িতে নেই। সে কেমন করে জানি একটা হাসি দিয়ে বলল, এর জন্যই তো দিয়ে গেলাম।’

ঝুমকো ভ্রু কুচকে রুমের হাত থেকে কাগজটা নিতে নিতে বলল, ‘তুই খুলে দেখছস?’

রুম তাড়াতাড়ি মাথা নাড়িয়ে বলল, ‘আরে না আপু। আমি কেনো দেখবো? কারোর পারসোনাল বিষয়ে এতো ইন্টারেস্ট নাই আমার। আমার নিজের ই কতো পারসোনাল গল্প চিঠি পইরে আছে। আর তোমার এই সো কল্ড চিঠি দেখতে যাবো?’

রুম ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলল। ঝুমকো চোখ রাঙিয়ে বলল, ‘এক থাপ্পড় দিবো। বড্ড বেশি পেকে গেছিস। যাহ..রুমে যা।’

রুম চলে গেলো। ঝুমকো হাতের তোয়ালে টা এক পাশে রেখে সবুজ চিঠি চোখের সামনে মেলে ধরলো। সাথে সাথে গোটা গোটা অক্ষরে ভেসে উঠলো লাল কালিতে লেখা গুলো,,,,,

প্রিয় ঝুমকো,

তুই বরাবরই আমার প্রিয়। একটু না…বেশি প্রিয়। আরেকটু সহজ ভাবে বলতে গেলে তুই আমার ভালোবাসা। তুই যখন এই চিঠি পড়বি তখন হয়তো আমি এই শহরে আর থাকবো না। কারন তোর মুখোমুখি দাড়ানোর সাহস আমার হবে না রে দোস্ত। তোর সাথে সময় কাটাতে কাটাতে কখন যে তোর ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিলাম টের ও পেলাম না। ভয়ানক ঝুম অসুখে আসক্ত হয়ে গেলাম। জানিস..? তোকে রাহান ভাইয়ার সাথে দেখলে জ্বলতো পুড়তো আমার এই অবুঝ বুক। আমি আর থাকতে পারছিলাম না রে…খুব কষ্ট হচ্ছিলো..খুব। তাই মিথ্যা কথাগুলো বলেছিলাম। রাহান ভাইয়াকে বানোয়াট ছবি দেখিয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম রাহান ভাইয়া তোর জীবন থেকে সরে গেলে তুই আমার হয়ে যাবি। কিন্তু আই ওয়াজ রং। তুই শুধু রাহান ভাইয়ার জন্যই বরাদ্দ। তোর ভালোবাসা শুধু রাহান ভাইয়ার জন্যই সীমাবদ্ধ। তিনটা বছর আমি খুব চেষ্টা করেছি তোকে আমার করতে। পারি নি রে…উলটে তোকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছি। তুই আরো নষ্ট হয়ে গেলি। বার, ক্লাব, মদ, সিগারেট নেশা জাতীয় সকল দ্রব্যে আসক্ত হয়ে গেলি । তোর কষ্ট দেখলে আমার বুকটা আরো বেশি পুড়তো রে। একটা সময় আর পারলাম না তোর কষ্ট সহ্য করতে। নাম্বার জোগাড় করে ফোন লাগালাম রাহান ভাইয়ার নাম্বারে। ভাইয়াকে সব সত্যি বললাম। এরপর ভাইয়া যেইদিন দেশে আসলো সেইদিন সকালে আমি চলে গেলাম। কারন আমি অন্যকারো সাথে তোকে সহ্য করতে পারিনা রে। আমার খুব কষ্ট হয়। খুব…। বুক ফেটে কান্না বের হয়। কিন্তু ছেলেদের যে কাদতে নেই।

এরপর আবার ফিরে এলাম তোদের কাছে। এসে শুনলাম তোর বিয়ে হয়ে গেছে। আমার বুকটা ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো। মন চাইলো নিজের কবর নিজে খুড়ি। তারপর যখন শুনলাম বিয়ে করেও তুই খুশি না। কষ্টে আছিস। তখন মাথা এলোমেলো হয়ে গেলো। রাহান ভাইয়া তোকে এখনো কিছু জানায় নি? আমি ভেবেছিলাম জানিয়েছে তাই তো তোর সামনে আসার সাহস পাচ্ছিলাম না। কাল যখন রাহান ভাইয়া জোর করে কোলে নিয়ে তোকে গাড়িতে তুলছিলো আমি দেখে ফেলেছিলাম। তাই রাতেই আমি রাহান ভাইয়াকে ফোন করে বলি, যাতে তোকে সব সত্যি বলে দেয়।

জানিস, আমি যে এই চিঠি লিখছি না আমার খুব কান্না আসছে। খুব…। কি করবো বলতো? কিছুতেই কন্ট্রোল করতে পারছি না।

যাই হোক, রাহান ভাইয়াকে কষ্ট দিস না রে। সে খুব ভালো মানুষ। তুই খুব সুখী হবি দেখিস। আমি সবসময় তোর জন্য দোয়া করি। তুই আমার দোস্ত, আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। সারাজীবন তাই থাকবি। তোর থেকে দূরে থাকলেও তুই আমার কাছেই থাকবি সবসময়।

জানিস ঝুমকো….পৃথিবীটা না বড্ড অবুঝ…! কেনো বুঝে না এই পৃথিবী যে আমরা যাকে ভালোবাসি তাকে না পেলে বড্ড অসুখী থাকি। কেনো বুঝে না?

সাহস করে এই প্রথম একটা কথা বলি দোস্ত? রাগ করবি তুই? কখনো তো বলা হলো না। এখনো যদি নিজের মুখে না বলতে পারি তাহলে আমি মরেও শান্তি পাবো না রে।

“ঝুমকো আমি তোমাকে ভালোবাসি। খুব ভালোবাসি।”

রাগ করলি? রাগ করিস না দোস্ত। তুই না হয় ভেবে নে আমি বন্ধু হয়ে তোকে বললাম।

“বন্ধুদের মাঝে ভালোবাসতে নেই।” চরম কষ্টের বাক্য! না পারা যায় ছাড়তে আর না পারা যায় ধরতে।

ভালো থাকিস আমার কলিজা। আমার সুখ টুকুও তোর হক। স্বামীর ভালোবাসায় ভরে উঠুক তোর আঁচল।

ইতি,
তোর গর্দভ বন্ধুটা।

———

চিঠিটা শেষ করে ঝুমকো হাউমাউ করে কেদে উঠলো। বুকের সাথে ঝাপটে ধরলো চিঠিটা। অস্ফুটস্বরে বলল,

‘তুই কোথায় চলে যাচ্ছিস নিয়ন? আমিও তোকে ভালোবাসি। কিন্তু সেই ভালোবাসা বন্ধুত্ব পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। আমরা কি পারতাম না বন্ধু-ভালোবাসা দিয়ে সারাজীবন কাটাতে? কেনো তুই আমাকে ভালোবাসলি কেনো? তুই আমাকে ভালো না বাসলে আজ এতো কিছু হতো না। তুই চলে যাস না নিয়ন। যাস না….। তুই যে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তুই চলে গেলে আমি খুব অভিমান করবো। খুব….।’

ঝুমকো বিছানা খামচে কাদে। চাদর বালিশ সব ফ্লোরে ছুড়ে মারে। নিজের চুল এলোমেলো করে খামচে ধরে । ঝুমকোর এখন মনে হচ্ছে, ‘কেনো নিয়ন তার জীবনে এলো? কেনো তাকে ভালোবাসলো? কেনো এই তিন বছরেও ঝুমকো নিয়নকে ভালোবাসতে পারলো না? কেনো? রাহানকে ছেড়ে থাকার ক্ষমতা কি আদেও তার মাঝে আছে? অন্য কাউকে জীবন সাথী করার কল্পনাও যে করতে পারে না ঝুমকো।’

যখন-তখন, জানা-অজানায় ভালোবাসতে নেই।ভালোবাসার ছলনায় ফুটফুটে জীবনগুলো বরবাদ হয়ে যায়। ভালোবাসা থাকাতে যেমন পৃথিবী সুন্দর। ভালোবাসা না থাকলেও বোধ হয় পৃথিবী সুন্দর হতো। কারন সুখের চেয়ে কষ্ট দ্বিগুন ব্যাথাতুর। সুখ তো এই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু কষ্ট সারাজীবন মনের মাঝে গেথে যায়।
#অভিমান
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
পর্ব-২২
ঝলঝক শব্দ তুলে তুমুল বেগে একটি ট্রেন চলে গেলো। সকাল এগারোটার সূর্য মাথার উপর ভীষণ ভাবে কড়া তাপ দিচ্ছে। না… সেই তাপ সরাসরি নিয়নের মাথার উপর লাগছে না ইট সিমেন্টের ছাউনিটার জন্য। কিন্তু সেই তেজীওয়ালা সূর্যের তেজিয়ান ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরছে বিরূপ ভাবে। ঘেমে ভিজে হয়ে যাচ্ছে বেহাল দশা। এতো মানুষের কোলাহল, ব্যস্ত পথচারীদের হাক-ডাক, গরমে ঘামের দুর্গন্ধ সব মিলিয়ে নিয়নের এখন মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এগুলোর কোনোটি তাকে ছুতে পারছে না। তার মাথা ঘুরছে না, বুক ব্যথা করছে না, সূর্যের তেজি রূপ তাকে স্পর্শ করছে না। সে কিন্তু ঘামে ভিজে একাকার তবুও তার কোনো গরম অনুভূতি অনুদিত হচ্ছে না। কেবল মাত্র শূন্যতা আর নিস্তব্ধতা ঘিরে ধরেছে তাকে।

নিয়ন উপরে তাকালো ঠিক সূর্যের দিকে। কিন্তু সূর্যের এতো তেজ এই কমতেজি চোখ সইতে পারলো না।কুচকে এলো চোখ জোড়া। রোদের ঝিলিকে সব সাদা সাদা মনে হলো। সূর্যের আশেপাশের আকাশটুকুও সাদা এবং ঝিলিক দেওয়া। যেনো সেই জায়গাটুকু কেবল মাত্রই সূর্যের একান্ত ব্যক্তিগত। নিয়ন হা করে অনেক বড় করে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। সে পা ঝুলিয়ে বসে আছে ধুলাময় প্লাটফর্মে। এদিক ওদিক এবং নিজের পাশে তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো পরক্ষনেই আবার চমকে পাশ ফিরে তাকালো। বিস্ময় চেপে ধরলো চোখদুটোতে। শূন্যতা নিস্তব্ধতা সব কিছু ঝাপিয়ে গেলো এই বিস্ময়তা।

প্রাপ্তি নিয়নের এমন চাহনি দেখে হেসে ফেলল। ও মা সে কি হাসি! মনে হচ্ছে না জানি কত মজার কান্ড ঘটেছে। নিয়ন তখনো বিস্ময় নিয়েই এই পাগলী মেয়ের হাসি দেখছে। প্রাপ্তি হাসি থামিয়ে নিয়নের মুখ ঘুরিয়ে দিয়ে বলল, ‘এমন ড্যাবড্যাব কইরে তাকায় থাকস কেন? অন্যদিকে তাকা।’

নিয়ন প্রাপ্তিকে ছাড়িয়ে আবারও প্রাপ্তির দিকে তাকালো। সে ভেবেছিলো আজকের সাড়ে এগারোটার ট্রেনে চট্টগ্রাম ফিরে যাবে। কিন্তু এই মেয়ে এখানে কি করছে? প্রাপ্তির তো জানার কথা ছিলো না যে এই স্টেশনে নিয়ন থাকবে। প্রাপ্তি আবার বলল, ‘কি রে এমন কইরে চাইয়া আছোস কেন? ভীষণ বোকা বোকা লাগতাছে তোরে? চোখ ঘুরা।’

নিয়ন তাকিয়েই থাকলো। বিস্ময়ে সে আরো নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। নিস্তব্ধতা যেনো তাকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো। সামনের দিকে সে মুখটাকে কিঞ্চিৎ হা করে তাকালো।

প্রাপ্তি আস্তে করে মাথা রাখলো নিয়নের কাধে। নিজের গায়ে স্পর্শ পেয়ে নিয়ন চমকে তাকালো। প্রাপ্তি ভীষণ অভিমানী গলায় বলল, ‘চলে যাচ্ছিস?’

নিয়নের চোখে আরো দ্বিগুন অবাকতা। এই মেয়েকে জ্বীনে আছড় করলো না কি? সবকিছু জানে কীভাবে? প্রাপ্তি আবারো কেমন জানি গলায় বলল, ‘কেনো যাচ্ছিস? প্রেমটাই সব? বন্ধুত্ব কিছু না?’

এরপর প্রাপ্তি নিয়নের চোখের দিকে তাকালো। ক্ষণিকের জন্য অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো। প্রাপ্তির চোখে খেলে গেলো পানিরা। নিয়ন মাথা নিচু করে নাড়িয়ে বলল,
‘হচ্ছে না আমাকে দিয়ে? কিচ্ছু হচ্ছে না। তাই তো ফিরে যাচ্ছি নিজের শহরে।’

‘এটা কি তোর শহর নয়? মনে রাখবি আমরা যদি কোনো জায়গায় এক মিনিটের জন্যও থাকি তাহলে সেটাই আমাদের শহর। আফটার অল আমরা এই দেশের স্বাধীনচেতা নাগরিক। ‘

প্রাপ্তি বলল প্রাউড ফিল করে। নিয়ন ফিচেল হেসে প্রাপ্তির মাথার সাথে নিজের মাথা ঠেস দিলো। এরপর বলল,

‘হুম সব জায়গা আমাদের। কিন্তু নিজের জন্মস্থানের মতো আপন কোনো জায়গা আমাদের নেই। নাড়ির টান বলে একটা কথা আছে না!’

‘চট্রগ্রাম ফিরে যাচ্ছিস?’

‘হুম’

‘আমি কি কেউ নই তোর? ঝুমকো ই সব? ঝুমকোর জন্য সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে হবে?’

নিয়ন মাথা উঠালো। অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো, ‘কীভাবে জানিস তুই?’

প্রাপ্তি মুচকি হেসে নিয়নের নাক টেনে বলল, ‘পৃথিবীতে তুমি একাই চালাক না? আসলে তুমি ভীষণ বোকা। আর তার চেয়েও বোকা ঝুমকো। আমি তো প্রথম দিন ই বুঝে গিয়েছিলাম যে তুই মারাত্মক ভাবে ঝুমকোতে আসক্ত।’

‘কীভাবে বুঝলি?’ নিয়ন হালকা হেসে বলল।

পা নাড়াতে নাড়াতে প্রাপ্তি উদাশ হয়ে বলল, ‘তোমার প্রতি ওর কেয়ার দেখে। ইউ নো আমি সবার মন বুঝি। ইটস মাই সিক্রেট টেলেন্ট।’

নিয়ন হাসলো। অন্যদিকে তাকিয়ে একটু ফিচেল হাসি। যেই হাসি মৃত। প্রাপ্তি নিয়নের হাতের মাঝে হাত ঢুকিয়ে আবারো কাধে মাথা রেখে বলল, ‘কি করবি চট্রগ্রাম গিয়ে?’

নিয়ন একটু ভাবার ভান করে বলল, ‘উমমম…বিয়ে করে ফেলবো।’

প্রাপ্তি অবাক হয়ে বলল, ‘বিয়ে করে ফেলবি?’

‘হুম ফেলবো তো। মা কাল রাতে বলল আমার জন্য না কি একটা পাত্রী দেখেছে অনেক ভালো।’

‘তুই কি বললি?’

‘হ্যা বললাম।’

প্রাপ্তি সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলো। নিয়ন একটু মৃদুমন্দ হেসে বলল, ‘তোর না মনোবিজ্ঞানী হওয়ার দরকার ছিলো।’

প্রাপ্তি একটু আগ্রহ নিয়ে বলল, ‘কেনো কেনো?’

‘এই যে মানুষের মন পড়তে পারিস। ইটস আ ভেরি মাচ ইমপ্রেসিভ টেলেন্ট। আমার মনটাও কি সুন্দর বুঝে গেলি!’

প্রাপ্তি একটু হাসলো। এরপর চলল কিছুক্ষন নিরবতা। নিরবতা কাটিয়ে নিয়ন অত্যন্ত মর্মাহত গলায় বলল, ‘ঝুমকোও বুঝতো।’

প্রাপ্তি ঝট করে তাকালো নিয়নের দিকে। অপূর্ণ কন্ঠে বলল, ‘কি মন?’
‘হুম’

বন্ধুর এমন অসহায়ত্ব পূর্ণ কথায় প্রাপ্তির মনটা হুহু করে উঠলো। অনেক দিন বাদে ভীষণ ভাবে কান্না পাচ্ছে। মনে হচ্ছে ঝুমকোকে ধরে নিয়ে এসে নিয়নের কাছে দিয়ে দিতে আর বলতে, ‘ঝুমকোরে.. দোস্ত আমার…তুই তো আমার কলিজা তেমনি নিয়ন ও তো আমার ফুসফুস প্লিজ তুই ওর হয়ে যা।’ কিন্তু রাহান ভাইয়ার কি হবে? রাহান ভাইয়াও তো প্রাপ্তির অতি প্রিয় একজন মানুষ হয়ে উঠেছে এই কয়দিনে। ধ্যাত, প্রাপ্তি তো কাউকেই ঠকিয়ে ভাবতে পারছে না। বেশ কিছুক্ষন পর প্রাপ্তি খুব বিজ্ঞ সুরে বলল,

‘আচ্ছা তুই যাকে বিয়ে করবি সে যদি তোকে না বুঝতে পারে?’

‘না বুঝলে না বুঝবে। আমাকে ওতো বুঝার দরকার নেই কারোর। আমাকে যে যত বেশি বুঝবে সে তত বেশি কষ্ট পাবে।’

প্রাপ্তি ভাবুক হয়ে বসে থাকলো। ভাবনা চিন্তা এমন যে, কি করা যায়.. কি করা যায়? নিয়ন পেছনে দু হাত দিয়ে ঠেস দিয়ে বসে আবারো সূর্যটার দিকে চোখ কুচকে তাকিয়ে বলল,

“বন্ধুদের প্রেমে পরতে নেই।”

প্রাপ্তি নখ কামড়াচ্ছিলো। কামড়াতে কামড়াতেই তাকালো নিয়নের দিকে। নিয়ন প্রাপ্তির মুখ থেকে আঙ্গুল টা বের করে দিয়ে বলল, ‘বিশ্বাস করিস এ কথাটা?’

প্রাপ্তি সাথে সাথে মাথা নাড়িয়ে বলল, ‘একদম না। ফ্রেন্ডস আর দ্য বেস্ট কাপল ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। বন্ধু জীবনসাথী হওয়া ভাগ্যের ব্যপার। বন্ধু বন্ধুর প্রেম ইজ আ নাইচ কম্বিনেশন। বাট যদি তোমার সেই বন্ধুর কোনো রিলেশনশিপ না থাকে তাহলে। মানে, সে যদি সিংগেল থাকে দেন এভরিথিং ইজ অলরাইট। বাট জেনে শুনে এংগেজ কারোর প্রেমে পরে দেবদাসী হওয়া… ওহ মাই গড..কেমনে পারিস তোরা?’

প্রাপ্তি বলল নাক ছিটকে। নিয়ন হাসলো। প্রাপ্তির কাধে এক হাত রেখে বলল,

‘পাগলী, ভালোবাসা কি আর ওতো আয়োজন করে হয় না কি রে?’

‘জ্ঞান দিস না তো সর। কতো তোর মতো রোমিও-জুলিয়েট দেখলাম! এখন গিয়ে দেখ সবগুলো এখন বাপ মায়ের পছন্দের মেয়েরে বিয়া কইরে হাড়ি হাড়ি বাচ্চা পয়দা করতাছে।’

প্রাপ্তি বলল ভাব মেরে। নিয়ন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,

‘আমার হবে না রে..।’

নিয়নের এহেন কথায় প্রাপ্তির মনটা আবারো খারাপ হয়ে গেলো। বন্ধুর কষ্টে আজ তার ভীষণ কষ্টে হচ্ছে। সে ভাবতে বসলো কি করা যায়। ভাবার মাঝে একবার বিরবির করে বলল, ‘এই ভালোবাসার মাঝে যে কি আছে মাঝেমাঝে খুইলে দেখবার মন চায় আমার।’

এরপর আবার ভাবতে বসলো প্রাপ্তি। ঘড়িতে বাজে এগারোটা বিশ…আর দশমিনিট এর মাঝেই ট্রেন এসে পরবে। প্রাপ্তির তাড়াতাড়ি কিছু একটা বুদ্ধি বের করতে হবে নিয়নকে আটকানোর। এই ছেলেটা যদি কষ্টের বশে বিয়ে করে ফেলে তাহলে নিজের জীবন তো নষ্ট হবেই সাথে যাকে বিয়ে করবে তার জীবন ও নষ্ট হবে। কিছুক্ষণ প্রাপ্তি ভাবতে ভাবতে কিছু পেয়ে গেছে এমন ভাবে চোখ বড় বড় করে চিল্লিয়ে বলল,

‘ইউরেকা…’

নিয়ন একটু চমকে বলল, ‘আস্তে.. মানুষ আছে আশেপাশে। কি হয়েছে?’

প্রাপ্তি হাসিহাসি মুখ করে বলল, ‘আমাকে বিয়ে করবি নিয়ন?’

সাথে সাথে যেনো বজ্রপাত ঘটলো নিয়নের মাথায়। মনে হলো সূর্যের তাপ বেড়ে গেছে। মনে হলো…কোনো বিশাল ভারী ট্রেন নিয়নের উপর দিয়ে এই মাত্র চলে গেলো। নিয়ন হা করে তাকিয়ে থাকলো। এরপর স্বগতোক্তির মতো বলল,

‘ওহ মাই গড…ইউ আর টোটালি মেড…চল তোকে হসপিটালে নিয়ে যাই।’

নিয়ন উঠে দাঁড়িয়ে প্রাপ্তির হাত ধরে টানে। প্রাপ্তি নিয়নকে বসিয়ে দিয়ে বলল,

‘আরে শোন না। চল না আমরা বিয়ে করে ফেলি। আমাকে বিয়ে করলে তোর আর কষ্ট হবে না।’

নিয়ন অবাক হয়ে বলল, ‘কেনো হবে না?’

প্রাপ্তি নিয়নের চোখে চোখ রেখে বলে, ‘এই যে তুই বললি আমি না কি মানুষের মন বুঝতে পারি, তাই হবে না। আমি তোর মন বুঝে সবসময় তোকে ভালো রাখবো।’

নিয়ন তার গলাটাকে ভিষণ মাত্রায় সিরিয়াস করে তুলে বলল, ‘আর ইউ সিরিয়াস প্রাপ্তি? ইফ ইজ ইট আ প্রাঙ্ক?’

প্রাপ্তি নিয়নের কাধে মাথা রেখে অনেক উৎফুল্ল হয়ে বলল, ‘নো ইটস নট আ প্রাঙ্ক। আই এম 100% সিরিয়াস।’

প্রাপ্তি এতো উৎফুল্ল হয়ে বলল যেনো একটা বাচ্চা। যেনো বিয়ে করার মতো মজা ব্যপার আর একটাও নেই। কিন্তু সত্যি অর্থে অবুঝ প্রাপ্তির ভীষন ভালো লাগছে এই ভেবে যে তার বন্ধু আর তাকে ছেড়ে চলে যাবে না। সবসময় তার কাছে থাকবে। নিয়ন গলার স্বর মোটা করে বলল,

‘ওকে তুই যদি সিরিয়াসি হস। তাহলে বিয়ে করলে আজ ই করতে হবে। এখনি।’

প্রাপ্তি উৎফুল্ল হয়ে বলল, ‘ডান…ওহ মাই গড…ঝুমকোও পালিয়ে বিয়ে করেছে। আমিও করবো। কি যে মজা লাগতাছে ভাই…’

নিয়ন ফিচেল হেসে প্রাপ্তির হাত ঝাড়া মেরে উঠে পড়লো। একটু অবাক হয়ে প্রাপ্তি ও উঠে দাড়ালো। নিয়ন রেগে বলল,

‘গো টু হেল। কি আমার জীবন নরক করতে চাইছিস? বাচ্চামোর বশে বিয়ে করতে চাইছিস? গ্রো আপ প্রাপ্তি। বিয়েটা ছেলেখেলা নয়। সারাজীবনের বিষয়। পারবি আমি যখন সারাক্ষণ ঝুমকোকে মনের মাঝে বসিয়ে রাখবো তখন আমার কাধে হাত রাখতে? এই একটু আগে যেমন কাধে মাথা রেখেছিলি তেমন ভাবে সারাজীবন থাকতে পারবি?’

নিয়নের এতো কড়া কথায় প্রাপ্তির চোখে পানি এসে গেলো। এরপর চুপ হয়ে গেলো। নিয়ন তাচ্ছিল্য হেসে বলল, ‘আমি জানতাম তুই পারবি না।’

কিছুক্ষন চুপ থেকে চোখ মুছে প্রাপ্তি দৃঢ় গলায় বলল,

‘পারবো….আমি পারবো।’

নিয়ন অবাক হলো। তবুও প্রশ্ন করলো, ‘কখনো বরিং হয়ে যাবি না তো? আমাকে ছেড়ে চলে যাবি না তো। আমাকে আগলে রাখবি? আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি জেনেও ভালোবাসতে পারবি আমায়?’

প্রাপ্তি হালকা হেসে বলল, ‘পারবো। একটু আগে বললাম না ফ্রেন্ডস আর দ্য বেস্ট কাপল ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। আমরাও বেস্ট কাপল হবো।’

বলতে বলতে প্রাপ্তি কেদে দিলো। নিয়নকে জড়িয়ে ধরলো। জোরে জোরে কেদে বলল,

‘আমি তবুও আমার বন্ধুদের কষ্টে দেখতে পারবো না রে…তোর দেওয়া চিঠি আমি পড়েছি। ঝুমকো আমাকে ছবি তুলে পাঠিয়েছে। ঝুমকো মারাত্মক ভাবে ডিপ্রেশনে চলে গেছে। আমার দুই বন্ধুর কষ্ট আমি সহ্য করতে পারবো না। কখনোই না। আমি বিয়ে করবো তোকে। বিয়ে করবো। তুই শুধু একটু ভালো রাখিস আমায়। আমি তোকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দেবো। যদিও আমি তোকে ভালোবাসি না তবে জোরে করে ভালোবাসাকে টেনে আনবো। দেখি কেমন করে ভালোবাসা আমাদের মাঝে ধরা না দেয়। তবুও তোরা কষ্ট পাস না।’

আশেপাশের অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তখন দেখছে প্রাপ্তির কান্না। কিছু কিছু মানুষের চোখে পানি তো কিছু মানুষের মুখে বিদগুটে হাসি। নিয়ন প্রাপ্তির মাথায় হাত রেখে বলল,

‘চল তাহলে আজই বিয়ে করবো। এখনি।’

নিয়ন হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো প্রাপ্তিকে। প্রাপ্তি নিয়নের দিকে তাকিয়ে ঠকঠক শব্দ তুলে হেটে যাচ্ছে। তার মন শুধু একটা কথা বলছে খুবই নরম এবং গভীর সুরে,

“জানি না কি হচ্ছে..জানিনা কি হবে? আমার জীবনে? শুধু এইটুকুই জানি যা হবে ইনশাআল্লাহ ভালো হবে। আমার বন্ধুরা ভালো থাকবে। আর আমি…? আমার তো কোনো পিছুটান ই নেই। আমি আরো ভালো থাকবো। আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে ভালো থাকবো। যেখানে থাকবে না কোনো অভিমানের অযাচিত গল্প।”

চলবে❤️

🤪🥳💥
চলবে❤️

কেনো যেনো আজকের পার্ট টা লিখে আমারও চোখে পানি এসে গিয়েছিলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here