অশ্রুসিক্ত নয়নে তুমিই আছো পর্ব-১৪+১৫

#অশ্রুসিক্ত_নয়নে_তুমিই_আছো
#সুবহী_ইসলাম_প্রভা
#পর্ব – ১৫

নিথু বের হয়েই দেখে একটা লোক মুখে মাস্ক পরে হাতে অনেক গুলো বেলুন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। লোকটা নিথুর সামনে এসে বেলুনসহ একটা চিরকুট দিয়ে সামনে রাস্তা দেখিয়ে চলে যায়।নিথু চিরকুট খুলে দেখে আবির লিখে রেখেছে,,,,,

—– একবার ভাবির কাছে শুনেছিলাম তোমার নাকি বেলুন খুব ভালো লাগে তাই তোমার জন্য এতো গুলো বেলুন।আর হে যেদিক ইশারা করল চুপ চাপ ওদিকে চলে এসো।

নিথু মুচকি হেসে সোজা হাটা শুরু করল। কিছুদুর গিয়েই একটা গাছে একটা চিরকুট লাগানো দেখলো। চিরকুটে লেখা আছে,,,,,

—- সামনের রেস্টুরেন্টে ঢুকে যাও। আর বেলুন গুলো পাশে রেখে যাও।

নিথুর একটু রাগ হলো।লোকটা দেখা করতে এতো ঘুরাচ্ছে কেন?সোজা সাপ্টা বলে দিক। আর বেলুন গুলো যদি রাখতেই হয় তাহলে দিলো কেন?নিথু অভিমানী মনে বেলুন গুলো রেখে সামনের একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে পড়ল।

নিথু সামনের রেস্টুরেন্টে ঢুকলেই দেখে রেড কোর্ট পড়ে কেউ পিছনে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে। এতক্ষন সাহস থাকলেও এখন নিথুর ভয় করছে। নিথু ধীর গতিতে লোকটার পিছনে থেকে কাধে হাত দিলেই লোকটা পিছনে ফিরে তাকায়।

—- ওহ গড আপনি?জানেন আমি এখানে এসে কত্তো ভয় পেয়ে গেছিলাম।

আবির মুচকি হেসে বলে,,,,

—- কেন? আমি বাঘ নাকি ভাল্লুক।

—- আরে না,,,ছাড়ুন কথা। এখন বলুন এখানে হটাৎ এতো জরুরি তলব আর এতো গিফট?

—– এমনি দিতে ইচ্ছে হলো হটাৎ। কেন কোন সমস্যা?

—- না কি সমস্যা থাকবে?

—- নিথু,,, আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।

—- জ্বি বলুন।

আবির হাটু মুড়ে নিথুর সামনে একটা রিং এগিয়ে দিয়ে বলে,,,,,

—- আমি সবার মতো ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি না।জানি না কবে থেকে তোমার সাথে ঝগড়া করতে করতে তোমার প্রমে পড়ে গেছি,,,,প্রেমে পড়ে গেছি তোমার ওই দুষ্টু বুদ্ধির,,,,,প্রেমে পড়েছি তোমার ওই চঞ্চল স্বভাবের,,, প্রেমে পড়েছি তোমার সাহসিকতার।তুমি কি পারবে তোমার ঝগড়া সঙ্গী হিসেবে আমাকে গ্রহন করতে,,,, পারবে সব ক্রাইমের সঙ্গী বানাতে?নিথু আই লাভ ইউ,,,,,ডু ইউ লাভ মি।

নিথু আশা করেছিল যে আবির তাকে কোন একটা সারপ্রাইজ দিবে কিন্তু এতো বড় একটা সারপ্রাইজ পাবে সে ভাবতেও পারে নি। আবিরের এরকম প্রপোজালে নিথু পুরো থ হয়ে গেছে।

—-নিথু

আবিরের ডাকে নিথুর হুস ফিরে। নিথু আবিরকে উঠে দাঁড় করিয়ে বলে,,,,,,

—– যেঁচে কিন্তু নিজের জীবনে বিপদ বয়ে আনছেন।

—– সমস্যা নেই,,,,এই বিপদটার সাথে জীবন পাড় করতে চাই যদি সে রাজি থাকে।

নিথু নিশ্চুপে আবিরের কাছ থেকে রিং টা নিয়ে পড়ে বলে,,,,,

—– যাই বলুন,,, আমার হাতে রিং টা মানিয়েছে কিন্তু।

আবির তার উত্তর পেয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সে নিথুকে জড়িয়ে ধরে সাথে নিথুও আবিরকে জড়িয়ে ধরে।

~~~~~~~~~

আজ সায়েদ তাড়াতাড়ি বাড়ি এসে পৌছিয়েছে,,,,,মুখটা বেশ গম্ভীর। সায়েদ ল্যাপটপে কাজ করছে ইসরা এসে যথারীতি সায়েদকে জ্বালাচ্ছে। একবার পাশে বসছে তো একবার শুয়ে পড়ছে মেইনলি ইসরার ইনটেনশন সায়েদ এখন এসেছে তো আগে একটু রেস্ট নেক তারপর নাহয় আবার কাজ করবে। সেটা ভালো ভাবে সায়েদকে বলায় সে তো মানে না তাই ইসরার এমন জ্বালানি শুরু করেছে।

—— কি হয়েছে ইসরা এভাবে বিরক্ত কেন করছো?

রাগী স্বরে বললেও ইসরার উপর কোন প্রভাব পড়ে না ইসরা জ আবার দ্বিগুন তেজে বলে,,,,,,

—– কোথায় বিরক্ত করছি?আমি তো আমার কাজ করছি?আপনি রেস্ট নিন না,,,,রেস্ট নিতে বললে তো নেন না।দিনে দিনে রোবট হয়ে যাচ্ছেন।

—– বেশ করছি কাজ করছি। আমার কাজ আমি করছি আর রোবট হলে আমি হচ্ছি তোমার তাতে কি?

—– বাহ রে,,,,,বরটা তো আমারই।

—– উফফফ,,,,,,বর বর আর বর বলে মাথা খেয় ফেলো তুমি। এই বরটাকে তাহলে পানিতে চুবিয়ে মেরে ফেলো,,,ইস্টুপিট গার্ল।

—-ঠিক আসে ওয়াসরুমে চলুন আপনাকে এক বালতি পানির মধ্যে চুবাচ্ছি।

সায়েদ অতি অবাকতায় ভাষা হারিয়েছে।ইসরা যে এতো সহজে তার রাগকে ইগনোর করে এমন জবাব দেবে তা তার বোধগম্য ছিলো না। ইসরা সায়েদের হাত জোরে টেনে বলে,,,,,

—– চলুন চলুন আপনাকে পানিতে ডুবাই।

সায়েদ রাগে হাতটা ঝাড়ি দিয়ে বলে,,,,,

—– হোয়াট আর ডুয়িং। ছাড়ো।

ইসরা যেহেতু জোরে ধরে ছিলো আর সায়েদও হাত ঝাড়ি দিয়েছে তাই ইসরা তাল সামলাতে না পেরে সায়েদের বুকের উপর পড়ে যায়।

ইসরা এতোক্ষন এতো বকবক আর ছটফট করলেও সায়েদের বুকের উপর থেকে পুরো চুপ হয়ে যায়। সায়েদ তো বিছানায় পড়ে যায় আর ইসরা যে তার বুকের উপর পড়েছে এটা খেয়াল না করেই সায়েদ গম্ভীর স্বরে বলতে থাকে,,,,,

—– কি হলো এতোক্ষন তো খুব ছটফট করছিলে এখন চুপ কেন?যে আমার এক হাতের ভরই সামলাতে পারে না সে নাকি আবার আমাকে পানিতে ডুবাবে হাও ফানি।

ইসরা এতোক্ষন স্বাভাবিক থাকলেও এখন চেতে যায়। ইসরা সায়েদের বুকে কিল ঘুষি দিয়ে বলে,,,,,,,

—– কিইইই আমি তোমার এক হাতের ভর নিতে পারি না দাঁড়াও আজ তোমায় মেরে কি করি দেখো।

ইসরার মুখে তুমি শুনে সায়েদ একটু অবাক-খুশিও হয়। পরে ইসরাকে থামানোর জন্য ইসরা হাত আটকিয়ে ইসরাকে আরও কাছে টেনে নেয়। এখন ইসরা ছটফট করছে।

—– শীইইইই,,,,,এতো ছটফট কেন করছো তুমি একটু শান্ত থাকতে পারো না।

সায়েদ এমন লো ভয়েজ শুনে ইসরা কেঁপে উঠে। সায়েদের দিকে তাকিয়ে দেখে সায়েদ তার অনেক কাছে যে সায়েদের নিশ্বাসটাও ইসরা মুখে পড়েছে। সায়েদকে এতো কাছে দেখে ইসরা নার্ভাস হয়ে পড়ে।

—– মা…মানে?

—– মানেটা হলো,,,,,

বলেই সায়েদ ইসরার আরো কাছে যায়। ইসরার তো হার্টবিট পুরা দমে বেড়ে গেছে,,,,, মনে হচ্ছে এক্ষুনি হার্ট এট্যাক করবে।ইসরা নিজেকে শান্ত করতে চোখ বন্ধ করে নেয়।তা দেখে সায়েদ মুচকি হেসে ইসরার কানের কাছে এসে বলে,,,,

—— আমার উপর থেকে উঠলে খুব ভালো হয়। তুমি নাহ বড্ড ভারী,,,,,ডায়েট তো করতে পারো।

সায়েদের এমন কথা শুনে ইসরা অবাক হয়ে সায়েদের দিকে তাকালে ইসরা ঠোঁট সায়েদের গালে লেগে যায়।তা দেখে দুজনের চোখই বড় হয়ে যায়। ইসরা তাড়াতাড়ি সায়েদের উপর থেকে উঠে বলে,,,,,,,

—– সর‍্যি, সর‍্যি সর‍্যি আসলে আমি ইচ্ছে করে করি নি ভুলে হয়ে গেছে।

সায়েদ এখনো গালে হাত দিয়ে শুয়ে আছে। তার কাছে এখনো পুরো বিষয়টা ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না। সায়েদ উঠে বসে বলে,,,,

—– আর ইউ কিস মি?সিরিয়াসলি?#অশ্রুসিক্ত_নয়নে_তুমিই_আছো
#সুবহী_ইসলাম_প্রভা
#পর্ব – ১৬

সায়েদের এমন কথায় ইসরার কি রিয়েক্ট করা উচিত ঠিক বুঝছে না,,, লজ্জায় মাথা উপরেই উঠাতে পারছে না। এদিকে সায়েদ ইসরার অবস্থা বুঝতে পেরে ওকে আরেকটু লজ্জায় ফেলার জন্য বলে,,,,,,,

—– তুমি এভাবে আমার মতো একটা নিস্পাপ ছেলেকে কিস করতে পারলে? আমি তো এখনো শিশু।

ইসরা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলে,,,,

—– ইসসস,,,দুদিন পর একটা বাচ্চার বাবা হবে আর উনি নাকি এখনো শিশু।

কথাটা ইসরা মুখ ফসকে বেরিয়ে যায়। যখন সে বুঝতে পারে যে ভুল জায়গায় কথাটা বলেছে তখনই ইসরা হাত দিয়ে মুখটা বন্ধ করে নেয়। আর সায়েদ ইসরার কথা শুনে হা হয়ে তাকিয়ে আছে। ইসরা সায়েদের হাত থেকে বাঁচতে রুম ত্যাগ করে বারান্দায় চলে যায়। ইসরা চলে যাওয়ার সাথে সাথেই সায়েদ মুচকি হেসে শুয়ে পড়ে। সায়েদ এখন আর ইসরার উপর আগের মতো বিরক্ত হয় না,, ইসরাকে আঘাতও করে না। কিন্তু কেন যে সায়েদ ইসরার বিরক্ত করা সহ্য করে তা সে নিজেও জানে না।

~~~~~~~~~~

দেখতে দেখতে এক মাস চলে গেছে। কাল নিথুর গায়ে হলুদ তাই নিথু ইসরাকে নিয়ে তার বাসায় চলে এসেছে।হে সেইদিনের পরেই আবির নিথুর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়।নিথুর পরিবারও আবিরকে মেনে নেয়। এই সুখবর নিথু যখন ইসরাকে দেয় ইসরা তো খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। কারণ একমাত্র নিথুই যে ইসরা সব পরিস্থিতিতে ইসরার সাথে ছিলো।নিথু সায়েদের মা মিসেস পারভীনকে বলেই ইসরাকে নিয়ে এসেছে। বলেছে যতদিন না বিয়ের আমেজ শেষ হবে ইসরার তার সাথেই তার বাড়ি থাকবে।

সন্ধ্যো সায়েদ এসে সারা বাড়ি খুজেও ইসরাকে খুজে পায় না। সায়েদ খুব অবাক হয়।

—– মম,,,ইসরা কোথায়?

—– ও তোকে তো বলাই হয় নি,,,নিথু আর আবিরের বিয়ে না তাই নিথু আজই ইসরা কে নিয়ে গেছে। কাল তো নিথু আর আবিরের গায়ে হলুদ। ভুলে গেছিস?

—– হুম কাজের প্রেসারে ভুলে গেছিলাম।আর এই বিয়ের জন্য তো ছুটিও নিয়েছি।কাল থেকে ছূটি আর আবিরের বিয়ের কাজ এ দৌড়াও।কিন্তু নিথুর আজকেই ইসরাকে নিয়ে যেতে হতো কেন কাল নিলেই তো পারতো আমরা একসাথেই যেতাম।

—– আরে ইসরা আর নিথু ছেলেবেলার বান্ধুবী না তাই নিথু যখন এসে অনুরোধ করল আমিও আর না করতে পারি নি।একটা দিনেরই তো ব্যাপার বউকে ছাড়া থাকতে পারবি না নাকি?

কথাটা মিসেস পারভীন দুষ্টুমির ছলেই বলে। সায়েদ বুঝতে পারে যে এখানে ইসরাকে নিয়ে আর কিছু বললেই তার মা তাকে লেগ পুল করা শুরু করবে তাই সায়েদ বিনা বাক্য নিজের রুমের দিকে অগ্রসর হলো।

সায়েদ নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে কাজে বসে পড়ল।কাজ করতে করতে কখন যে রাত হয়ে গেছে খেয়ালই করে নি। হটাৎ-ই সায়েদ বলে বসে,,,,,

—– ইসরা পানি দেও তো।

কথাটা বলার সাথে সাথেই সায়েদের মনে পড়ে যে ইসরা তো বাড়ি নেই। সায়েদের মনটা খারাপ হয়ে যায়। তখনই একটা কল আছে যা দেখে আপনা আপনি সায়েদের মুখে হাসি ফুটে।

—– এখনো তো কাজ করছেন তাই নাহ?যান আগে খেয়ে নিন তারপর নাহয় আবার কাজ করবেন।

ইসরা কথায় সায়েদ খুশি হলেও গম্ভীর স্বরে বলে,,,,

—– আমার এতো নজর তোমাকে রাখতে হবে না। ওখানে যাওয়ার সময় আমাকে একবার বলে গেছো। এখন আসছে দরদ দেখাতে।

—– ওলে বাবালে,,,আমার বরটা তো ভীষণ রাগ করেছে দেখি।তা মশাই একটু নিজের ফোনটা চেক করে দেখুন তো আমি আপনাকে কতবার কল করেছি।

সায়েদ ফোন চেক করে দেখলো সত্যি ইসরা অনেকবার তাকে কল করেছে কিন্তু একটা মিটিং এ থাকায় সায়েদ ফোন তুলতে পারে নি।

—– ও তো ফোন সাইলেন্টে ছিল তাই শুনতে পারি নি।

—- তাহলে দোষ টা কার হুমমম

সায়েদ মিনমিন করে বলল,,,,,

—– কার আবার আমার কপালের।

—– কিছু বললেন?

—– কই না তো।

—– যান কাজ থেকে উঠে খেয়ে নিন তারপর আমাকে কল দিবেন।

—– তোমাকে কল দিতে আমার বয়েই গেছে। আমার এতো টাইম নেই।

—– ওহহহ,,,আচ্ছা।তাহলে বরং রাখি।

—– কেন?

—– না আমার সাথে কথা বললেও তো আপনার টাইম নষ্ট হবে।

—– হুম৷ হবেই তো,,,,বলছি তুমি খেয়েছো।

—– উহুউউ না।

—– তাহলে আমায় কেন বলছো খেতে। নিজে যাও আগে খেয়ে নেও।

—– মিস করছেন আমায়?

হটাৎ করেই ইসরার আবেগী প্রশ্নে সায়েদ অবাক হয়ে বলে,,,,

—– কেন?

—– বলুন,, নাহ।মিস করছেন আমায়?

—– তোমাকে মিস করার আমার কোন প্রয়োজন নেই।বরং তুমি গিয়ে আমার ভালো হয়েছে।আমাকে এখন কেউ জ্বালাতন করছে না।

—– ওহহহ,,,,,,আমি খুব আপনাকে মিস করছি।

—– কিইইই

—– কিছু না। গুড নাইট।

সায়েদ কিছু বলার আগেই ইসরা ফোনটা কেটে দেয়।সায়েদ ভাবছে,,,,

—– কি হলো? হটাৎ ইসরা এমনভাবে কেন কথা বলছে?তাহলে কি ইসরা সত্যিই আমাকে মিস করছে। আচ্ছা আমিও কি ইসরাকে মিস করছি?কেন এসব আমি বুঝতে পারছি না?

সায়েদ আর প্রেসার না নিয়ে খেতে চলে যায়।

~~~~~~~~~~

—– কেন সায়েদ,,, নিজের মনের কথা গুলো আমাকে খুলে বলেন না?আমার কি আপনার মনের কথা জানার কোন অধিকার নেই?আমি জানি সায়েদ আপনিও আমাকে অনেক মিস করছেন তাহলে কেন সেটা স্বীকার করলেন না?জানেন সায়েদ,,,আমি জানি আপনার মনের কথাগুলো আমি বুঝি সেই কথা কিন্তু আপনি মুখে যা বলেন তা তো ব্রেন মেনে নেয় কিন্তু মন মানতে চায় না। যার ফলে এই অশ্রুর কণাগুলো আপনা আপনি বেরিয়ে আছে?আমি আপনার সামনে যতই শক্ত থাকতে চাই না কেন আমি সেটা পারি না?আমি যে খুব ক্লান্ত হয়ে গেছে মন আর ব্রেনের যুদ্ধে।মন বলে একদিন ঠিক আপনি আমায় মেনে নিবেন কিন্তু ব্রেন বলে সায়েদ মুখেই তো বলে আর আমাকে মেনে নিবে না তাহলে কিসের এতো প্রতিক্ষা কিসের এতো অশ্রু?আপনি তো একবার আমাকে আপনার মনের কথাগুলো বলতে পারেন শুধু একবার?

কথাগুলো ইসরা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলছিলো। বলতে বলতে যে কখন ইসরার চোখ ভিজে গেছে তা তার হুসই নেই।

—– জানেন সায়েদ আজকাল মনও আপনার মুখের কথাগুলোই মেনে নেয় তাই তো এই অশ্রু আমি আটকাতে পারি না আপনা আপনিই বেরিয়ে আছে।

—– ইসু বেবিইইই।

নিথুর ডাকে ইসরা তাড়াতাড়ি চোখ মুছে নেয়।ইসরা কাউকে বুঝতে দেয় না যে সায়েদ আর তার মধ্যের সম্পর্ক আর পাঁচটা স্বামী স্ত্রীর মতো নয়।

—– কি রে ইসু বেবিইই,,,সারাঘর অন্ধকার করে ওই বারান্দায় তুই কি করিস?

ইসরা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে,,,,,,,

—– ক….কই কিছু না তো।

—– হে রে,,,দুলাভাইয়ের সাথে কথা হলো তোর?সে আবার তার একমাত্র শালির উপর রেগে নেই তো যে তার শালি তার বউকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এসেছে এই জন্য।

—– আরে নাহ বোকা,,,বরং ও অনেক খুশি হয়েছে। কারণ এখানে একটু আনন্দ করতে পারব তাই।

—– ওহহহ

—–ওই কাল না তোর গায়ে হলুদ। জানিস কাল কত্তো কাজ?এখন তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়।

—– ধুর আমার আবার কিসের কাজ আমি তো বউ।যতো কাজ সব তো তোর। তাই তো তোকে নিয়ে এলাম।

—– তবে রেএএ,,,,

বলেই ইসরা নিথুকে একটা দৌড়ানি দিল।এভাবে দুই বান্ধুবী মজা করে সারা রাত আড্ডা দিয়ে রাত পার করলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here