অশ্রুসিক্ত নয়নে তুমিই আছো পর্ব-১৬+১৭

#অশ্রুসিক্ত_নয়নে_তুমিই_আছো
#সুবহী_ইসলাম_প্রভা
#পর্ব – ১৬

সায়েদের এমন কথায় ইসরার কি রিয়েক্ট করা উচিত ঠিক বুঝছে না,,, লজ্জায় মাথা উপরেই উঠাতে পারছে না। এদিকে সায়েদ ইসরার অবস্থা বুঝতে পেরে ওকে আরেকটু লজ্জায় ফেলার জন্য বলে,,,,,,,

—– তুমি এভাবে আমার মতো একটা নিস্পাপ ছেলেকে কিস করতে পারলে? আমি তো এখনো শিশু।

ইসরা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলে,,,,

—– ইসসস,,,দুদিন পর একটা বাচ্চার বাবা হবে আর উনি নাকি এখনো শিশু।

কথাটা ইসরা মুখ ফসকে বেরিয়ে যায়। যখন সে বুঝতে পারে যে ভুল জায়গায় কথাটা বলেছে তখনই ইসরা হাত দিয়ে মুখটা বন্ধ করে নেয়। আর সায়েদ ইসরার কথা শুনে হা হয়ে তাকিয়ে আছে। ইসরা সায়েদের হাত থেকে বাঁচতে রুম ত্যাগ করে বারান্দায় চলে যায়। ইসরা চলে যাওয়ার সাথে সাথেই সায়েদ মুচকি হেসে শুয়ে পড়ে। সায়েদ এখন আর ইসরার উপর আগের মতো বিরক্ত হয় না,, ইসরাকে আঘাতও করে না। কিন্তু কেন যে সায়েদ ইসরার বিরক্ত করা সহ্য করে তা সে নিজেও জানে না।

~~~~~~~~~~

দেখতে দেখতে এক মাস চলে গেছে। কাল নিথুর গায়ে হলুদ তাই নিথু ইসরাকে নিয়ে তার বাসায় চলে এসেছে।হে সেইদিনের পরেই আবির নিথুর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়।নিথুর পরিবারও আবিরকে মেনে নেয়। এই সুখবর নিথু যখন ইসরাকে দেয় ইসরা তো খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। কারণ একমাত্র নিথুই যে ইসরা সব পরিস্থিতিতে ইসরার সাথে ছিলো।নিথু সায়েদের মা মিসেস পারভীনকে বলেই ইসরাকে নিয়ে এসেছে। বলেছে যতদিন না বিয়ের আমেজ শেষ হবে ইসরার তার সাথেই তার বাড়ি থাকবে।

সন্ধ্যো সায়েদ এসে সারা বাড়ি খুজেও ইসরাকে খুজে পায় না। সায়েদ খুব অবাক হয়।

—– মম,,,ইসরা কোথায়?

—– ও তোকে তো বলাই হয় নি,,,নিথু আর আবিরের বিয়ে না তাই নিথু আজই ইসরা কে নিয়ে গেছে। কাল তো নিথু আর আবিরের গায়ে হলুদ। ভুলে গেছিস?

—– হুম কাজের প্রেসারে ভুলে গেছিলাম।আর এই বিয়ের জন্য তো ছুটিও নিয়েছি।কাল থেকে ছূটি আর আবিরের বিয়ের কাজ এ দৌড়াও।কিন্তু নিথুর আজকেই ইসরাকে নিয়ে যেতে হতো কেন কাল নিলেই তো পারতো আমরা একসাথেই যেতাম।

—– আরে ইসরা আর নিথু ছেলেবেলার বান্ধুবী না তাই নিথু যখন এসে অনুরোধ করল আমিও আর না করতে পারি নি।একটা দিনেরই তো ব্যাপার বউকে ছাড়া থাকতে পারবি না নাকি?

কথাটা মিসেস পারভীন দুষ্টুমির ছলেই বলে। সায়েদ বুঝতে পারে যে এখানে ইসরাকে নিয়ে আর কিছু বললেই তার মা তাকে লেগ পুল করা শুরু করবে তাই সায়েদ বিনা বাক্য নিজের রুমের দিকে অগ্রসর হলো।

সায়েদ নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে কাজে বসে পড়ল।কাজ করতে করতে কখন যে রাত হয়ে গেছে খেয়ালই করে নি। হটাৎ-ই সায়েদ বলে বসে,,,,,

—– ইসরা পানি দেও তো।

কথাটা বলার সাথে সাথেই সায়েদের মনে পড়ে যে ইসরা তো বাড়ি নেই। সায়েদের মনটা খারাপ হয়ে যায়। তখনই একটা কল আছে যা দেখে আপনা আপনি সায়েদের মুখে হাসি ফুটে।

—– এখনো তো কাজ করছেন তাই নাহ?যান আগে খেয়ে নিন তারপর নাহয় আবার কাজ করবেন।

ইসরা কথায় সায়েদ খুশি হলেও গম্ভীর স্বরে বলে,,,,

—– আমার এতো নজর তোমাকে রাখতে হবে না। ওখানে যাওয়ার সময় আমাকে একবার বলে গেছো। এখন আসছে দরদ দেখাতে।

—– ওলে বাবালে,,,আমার বরটা তো ভীষণ রাগ করেছে দেখি।তা মশাই একটু নিজের ফোনটা চেক করে দেখুন তো আমি আপনাকে কতবার কল করেছি।

সায়েদ ফোন চেক করে দেখলো সত্যি ইসরা অনেকবার তাকে কল করেছে কিন্তু একটা মিটিং এ থাকায় সায়েদ ফোন তুলতে পারে নি।

—– ও তো ফোন সাইলেন্টে ছিল তাই শুনতে পারি নি।

—- তাহলে দোষ টা কার হুমমম

সায়েদ মিনমিন করে বলল,,,,,

—– কার আবার আমার কপালের।

—– কিছু বললেন?

—– কই না তো।

—– যান কাজ থেকে উঠে খেয়ে নিন তারপর আমাকে কল দিবেন।

—– তোমাকে কল দিতে আমার বয়েই গেছে। আমার এতো টাইম নেই।

—– ওহহহ,,,আচ্ছা।তাহলে বরং রাখি।

—– কেন?

—– না আমার সাথে কথা বললেও তো আপনার টাইম নষ্ট হবে।

—– হুম৷ হবেই তো,,,,বলছি তুমি খেয়েছো।

—– উহুউউ না।

—– তাহলে আমায় কেন বলছো খেতে। নিজে যাও আগে খেয়ে নেও।

—– মিস করছেন আমায়?

হটাৎ করেই ইসরার আবেগী প্রশ্নে সায়েদ অবাক হয়ে বলে,,,,

—– কেন?

—– বলুন,, নাহ।মিস করছেন আমায়?

—– তোমাকে মিস করার আমার কোন প্রয়োজন নেই।বরং তুমি গিয়ে আমার ভালো হয়েছে।আমাকে এখন কেউ জ্বালাতন করছে না।

—– ওহহহ,,,,,,আমি খুব আপনাকে মিস করছি।

—– কিইইই

—– কিছু না। গুড নাইট।

সায়েদ কিছু বলার আগেই ইসরা ফোনটা কেটে দেয়।সায়েদ ভাবছে,,,,

—– কি হলো? হটাৎ ইসরা এমনভাবে কেন কথা বলছে?তাহলে কি ইসরা সত্যিই আমাকে মিস করছে। আচ্ছা আমিও কি ইসরাকে মিস করছি?কেন এসব আমি বুঝতে পারছি না?

সায়েদ আর প্রেসার না নিয়ে খেতে চলে যায়।

~~~~~~~~~~

—– কেন সায়েদ,,, নিজের মনের কথা গুলো আমাকে খুলে বলেন না?আমার কি আপনার মনের কথা জানার কোন অধিকার নেই?আমি জানি সায়েদ আপনিও আমাকে অনেক মিস করছেন তাহলে কেন সেটা স্বীকার করলেন না?জানেন সায়েদ,,,আমি জানি আপনার মনের কথাগুলো আমি বুঝি সেই কথা কিন্তু আপনি মুখে যা বলেন তা তো ব্রেন মেনে নেয় কিন্তু মন মানতে চায় না। যার ফলে এই অশ্রুর কণাগুলো আপনা আপনি বেরিয়ে আছে?আমি আপনার সামনে যতই শক্ত থাকতে চাই না কেন আমি সেটা পারি না?আমি যে খুব ক্লান্ত হয়ে গেছে মন আর ব্রেনের যুদ্ধে।মন বলে একদিন ঠিক আপনি আমায় মেনে নিবেন কিন্তু ব্রেন বলে সায়েদ মুখেই তো বলে আর আমাকে মেনে নিবে না তাহলে কিসের এতো প্রতিক্ষা কিসের এতো অশ্রু?আপনি তো একবার আমাকে আপনার মনের কথাগুলো বলতে পারেন শুধু একবার?

কথাগুলো ইসরা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলছিলো। বলতে বলতে যে কখন ইসরার চোখ ভিজে গেছে তা তার হুসই নেই।

—– জানেন সায়েদ আজকাল মনও আপনার মুখের কথাগুলোই মেনে নেয় তাই তো এই অশ্রু আমি আটকাতে পারি না আপনা আপনিই বেরিয়ে আছে।

—– ইসু বেবিইইই।

নিথুর ডাকে ইসরা তাড়াতাড়ি চোখ মুছে নেয়।ইসরা কাউকে বুঝতে দেয় না যে সায়েদ আর তার মধ্যের সম্পর্ক আর পাঁচটা স্বামী স্ত্রীর মতো নয়।

—– কি রে ইসু বেবিইই,,,সারাঘর অন্ধকার করে ওই বারান্দায় তুই কি করিস?

ইসরা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে,,,,,,,

—– ক….কই কিছু না তো।

—– হে রে,,,দুলাভাইয়ের সাথে কথা হলো তোর?সে আবার তার একমাত্র শালির উপর রেগে নেই তো যে তার শালি তার বউকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এসেছে এই জন্য।

—– আরে নাহ বোকা,,,বরং ও অনেক খুশি হয়েছে। কারণ এখানে একটু আনন্দ করতে পারব তাই।

—– ওহহহ

—–ওই কাল না তোর গায়ে হলুদ। জানিস কাল কত্তো কাজ?এখন তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়।

—– ধুর আমার আবার কিসের কাজ আমি তো বউ।যতো কাজ সব তো তোর। তাই তো তোকে নিয়ে এলাম।

—– তবে রেএএ,,,,

বলেই ইসরা নিথুকে একটা দৌড়ানি দিল।এভাবে দুই বান্ধুবী মজা করে সারা রাত আড্ডা দিয়ে রাত পার করলো।#অশ্রুসিক্ত_নয়নে_তুমিই_আছো
#সুবহী_ইসলাম_প্রভা
#পর্ব – ১৭

আজ সকাল থেকে ইসরা কাজ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।যতই হোক একটা বিয়েতে তো আর কম কাজ নয়। যদিও ইসরার সাথে নিথুর কিছু কাজিনও হেল্প করছে।কিন্তু নিথুর কাজিন গুলো একেবারে নিথুর মতো,,, কাজে অকর্ম্য।নিথু তো সকাল থেকে আয়েশ করে বসে ইসরাকে দেখছে। বেচারির জন্য কষ্ট হচ্ছে তাই তো মাঝে মধ্যে তার কাজিনদের বলছে হেল্প করতে কিন্তু তারা এক একটা কাজ করতে গিয়ে তিনটে কাজ বাড়িয়ে আসে।

~~~~~~~

কাল সারা রাত সায়েদের ঠিক মতো ঘুমই হয় নি।বার বার মনে হচ্ছে এই ইসরা এসে বলছে,,,,,,

—– শুনছেন,, আপনি এখানে এসে শুন। এই যে,,সারা রাত কাজ না করলে হয় না তাই না।আপনি বড্ড আজব আমি আপনাকে কই জ্বালালাম।

এইসব কথা ভেবেই সায়েদ আরও বেশি করে ঘুমাতে পারে নি।সায়েদ বুঝে গেছে যতখানি ইসরা তাকে মিস করেছে ঠিক ততোখানি সায়েদও করেছে,মিস করেছে তার জ্বালানি তার কথা তার ভাবনা,, খালি সায়েদ মুখে স্বীকার করে নি। তাই সায়েদ সকাল সকাল উঠেই নিথুদের বাসায় ছুটে গেছে একবার তার প্রেয়সীকে দেখার জন্য। সায়েদ ঠিক করে রেখেছেই আজ যে করেই হোক যতই বাধা আসুক সায়েদ ইসরাকে তার মনের কথা বলবেই। আর ইসরাকে অবহেলা করবে না, তাকে আঘাত করবে না।

সায়েদ গাড়ি নিয়ে নিথুদের বাসায় পৌছে যায়।ভিতরে ঢুকেই সায়েদের রাগ উঠে যায়। ভেবেছিল ইসরার সাথে সব ঝামেলা ঠিক করে নিবে কিন্তু এখন মনে হচ্ছে মেয়েটা তার ভালো নিজেই চায় না।

সায়েদ ভিতরে ঢুকে দেখে ইসরা একটা ছেলের সাথে খুব হেসে হেসে কথা বলছে। সায়েদ মনে মনে ভাবছে,,,, কই তার সাথে তো এতো মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে না তাইলে অন্যের বেলায় কেন?এটা ভেবেই সায়েদ ইসরা দিকে তেড়ে যায়।

—– ধন্যবাদ ভাইয়া।আপনি আমার অনেক হেল্প করলেন।

—– আরে তুমি আমার বোনের মতো। নিথু যেমন আমার বোন তুমিও তো আমারই বোন।

ইসরা কোন কথা বলে না। শুধু মুচকি একটা হাসি দেয়।ঠিক সেই মুহুর্তেই কেউ ইসরার হাত খপ করে ধরে বসে।ইসরা যখন হাতের মালিককে দেখে তখন ৪৪০ ভোল্ট শর্ক খায়।

—– সা…সায়েদ আপ..আপনি?

সায়েদ কোন কথা না বলে ইসরাকে টেনে রুমে নিয়ে যায়।

—– আরে আরে কি করছেন? এভাবে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন কেন?

সায়েদ নিশ্চুপ।রাগে কোন কথা বলছে না। রুমে ঢুকেই সায়েদ দরজা লাগিয়ে দিলো।

—– সায়েদ হয়েছে টা কি আপনার?

সায়েদ ইসরার দিকে মুখ করলে ইসরা অবাক হয়ে যায়।রাগে সায়েদের চোখ গুলো লাল হয়ে গেছে। ইসরা সায়েদের এমন রুপ দেখে ভয় পেয়ে যায়।

—– সা…সায়েদ আপনি সুস্থ আছেন তো?

সায়েদ কোন কথা না বলে ইসরার দিকে আগাতে থাকে আর ইসরা
পিছাতে থাকে।পিছাতে পিছাতে ইসরা পুরো দেওয়ালের সাথে আটকে যায়,সায়েদ ইসরা এতো কাছে চলে আছে যে সায়েদের শ্বাস প্রশ্বাস ইসরার মুখের উপর পড়ছে।সায়েদ রাগী স্বরে বলে,,,,

——ওই ছেলের সাথে এতো হেসে হেসে কি কথা হচ্ছিল শুনি?

—– কো…কোন ছেলের সাথে?

সায়েদ ইসরার আরেকটু কাছে গিয়ে বলে,,,,,,

—–কেন?বুঝতে পারছো না?একটু আগে তো খুব হেসে হেসে কথা হচ্ছিল কই আমার সাথে তো এমন হেসে হেসে কথা বলো না।

ইসরা বুঝতে পারে যে সায়েদ রেগে গেছে তাই ইসরা হাত দিয়ে সায়েদকে দূরে সরিয়ে শান্ত করতে গেলে সায়েদ ইসরার হাত টা জোরে চেপে ধরে। যার ফলে ইসরার হাতের কাচের চুড়ি গুলো ভেঙে যায়।

—– সায়েদ আমার লাগছে ছাড়ুন প্লিজ।

—– এখন লাগছে?ওই ছেলের সাথে কথা বলার আগে মনে ছিলো না যে লাগতে পারে।

—– সায়েদ আমি আপনাকে সব বুঝিয়ে বলছি,,,, আপনি শুনুন।

—– কি বলতে চাও তুমি?আমি তো কিছু শুনতেই চাই না।

কথাগুলো বলার সময় সায়েদ ইসরার হাতে খুব জোরে চাপ দেয়। যার ফলে ভাঙা চুড়ি ইসরার হাতে ঢুকে যায়। ইসরা ব্যাথায় চোখ বুজে হালকা আর্তনাদ করে উঠে।

—– আহহহহ্

ইসরা আর্তনাদে সায়েদের চোখ ইসরার হাতে গিয়ে আটকায় আর দেখে ইসরার হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে। সায়েদ ইসরার দিকে তাকালে দেখে চোখের পানিতে ইসরার চোখের পাপড়ি ভিজে গেছে কিন্তু চোখের পানি পড়তে দিচ্ছে না। ইসরা ছলছল চোখে সায়েদের দিকে তাকিয়ে আছে। সায়েদ ইসরার হাতটা ছেড়ে দিলেই ইসরা বলে,,,,

—– ওটা আসলে নিথুর কাজিন ছিলো। আমি ডেকোরেশনটা ঠিক মতো বুঝাতে পারছিলাম না দেখে ভাইয়া হেল্প করেছে। আর ভাইয়া আমাকে নিথুকে যেই চোখে দেখে আমাকে ঠিক সেই চোখেই দেখে। আশা করি,এখন আপনার আর কোন প্রশ্ন নেই।

সায়েদ কিছু বলার আগেই ইসরা নিজের চোখের পানি আড়াল করতে রুম ছেড়ে বেড়িয়ে আছে। সায়েদের এখন নিজের উপর খুব রাগ উঠছে। যাকে মানাতে এতো দূর এলাম তাকে সেই আবার আঘাত করে ফেললো।এটা ভেবেই সায়েদ সজোরে দেওয়ালে একটা ঘুষি দিল।

~~~~~~~~~~

সন্ধ্যাে সব মেয়েরা হলুদ শাড়ি পড়েছে আর ছেলেরা হলুদ পাঞ্জাবী। ইসরা হলুদ শাড়ি, চুল গুলো খোপা করা, দু’হাতে ভর্তি চুড়ি আর হালকা সাজ এতেই যেন ইসরাকে অপ্সরী লাগছে। সায়েদ কনেপক্ষ হয়ে থাকতে চেয়েছিল কিন্তু যেহেতু বর তার নিজের বন্ধু তাই তাকে বরপক্ষ হয়েই আবিরদের বাসায় চলে যেতে হয়।

—– ইসু বেবিইই,,,আজ তোর নাকি আমার গায়ে হলুদ রে?

—– অবশ্যই তোর।

—– তাহলে ম্যাডাম এভাবে সেজেছেন কেন?আপনার হালকা সাজেই তো ছেলেরা পাগল হয়ে যাবে,আমার দিকে কেউ ঘুরেও তাকাবে না।

আফসোস করে বলল নিথু।ইসরা হেসে বলল,,,

—– দাড়া আবির ভাইয়াকে বলছি তুই সেজে ছেলেদের মাথা ঘুরাতে চাস।

—– হুউউউ বল গিয়ে আমি গিয়ে আমার দুলা ভাইকে বলছি।

—– থাক কাউকে কিছু বলতে হবে না। তোরা এখন এখান থেকে যাবি? ওদিকে সবাই যে কনেকে দেখতে চাচ্ছে।

নিথুর মা এসে নিথু আর ইসরাকে নিয়ে স্টেজের দিকে গেল।ইতিমধ্যে সায়েদও বরপক্ষ থেকে উপস্থিত হয়েছে। ইসরা আর নিথু যখন স্টেজের দিকে আসছিল তখন সায়েদ এক দৃষ্টিতে ইসরার দিকে তাকিয়ে থাকল।ইসরা বিষয়টা বুঝতে পেরেও পাত্তা দেয় নি।

—– ওই দেখ তোর বর তোকে কেমন ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়েই আছে।

—– উফফফ নিথু,,,এতো বকবক করিস না তো।নতুন বউদের চুপচাপ থাকতে হয়।

—– এ্যাহহহ এসেছে আমাকে নতুন বউয়ের কাহিনী শিখাতে। বাই দ্য ওয়ে,,, আমি তো এখনো নতুন বউ হই নি তাহলে নতুন বউ বলছিস কেন?

—– আমার ইচ্ছা,,,ছাড় তো।

—– ঠিক আছে,,,ছেড়ে দিলাম।যা আমার দুলাভাইয়ের সাথে গিয়ে কথা বলে আয়।বেচারা অনেকক্ষন থেকে তাকিয়ে আছে,, হয়তো কিছু বলতে চায়।

ইসরা এবার রেগেই বলে,,,,,

—– নিথু তুই চুপ থাকবি।আমার ওনার সম্পর্কে একটা কথা শুনতেও ভালো লাগছে না।

নিথুর এবার ব্যাপারটা খটকা লাগে কিন্তু মুখে প্রকাশ করে না।

—– ওই ইসু বেবিইই,আমার ফোনটা না ঘরে রেখে এসেছি।তুই একটু নিয়ে আয় না প্লিজ।

—– এর মধ্যে তোর ফোন কেন লাগবে?

—– আরে লাইফে ফাস্ট টাইম পুরো ফুলকন্যা হলাম। এখন যদি পিক না তুলি কেমন হবে বল তো।

—– পিক তোলার জন্য ক্যামেরাম্যান আছে তো।

—– না না আমি ফোনে কয়টা পিক তুলতে চাই।যা না বেবি প্লিজ।

—– আচ্ছা তুই থাক আমি নিয়ে আসছি।

ইসরা নিথুর রুমে যায় ফোন আনার জন্য ঠিক তখনই,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here