আকাশেও অল্প নীল পর্ব -১০+১১

#আকাশেও_অল্প_নীল
#পর্বঃ১০
#আর্শিয়া_ইসলাম_উর্মি

২৬,
স্নেহার কথার উত্তরে সাহিরা বেগম বললেন,

“আবদার টা অন্যায় না ন্যায় বিষয়টা তেমন নয় মা। রাইমা আর দিগন্ত বাবা রাজী হবে কিনা! এটাও ভাববার বিষয়।”

“হ্যাঁ স্নেহা, রাইমার তো অনেক স্বপ্ন আছে। সেগুলো পূরণ না করে ওতো বিয়ের কথা ভাববেও না বলে জেদ করে বসে আছে। এসময় বিয়ের কথা বললে, বাড়িতে তোলপা”ড় শুরু করে দিবে।”

শাহনাজ বেগম বোনের কথার সাথে তাল মিলিয়ে কথাটা বলেন। মাহাদ কিছু সময় চিন্তা ভাবনা করে তার মা আর খালামনির দিকে তাকিয়ে বললো,

“আমরা একবার রাইমাকে বলে দেখতে তো পারি? দিগন্ত রাজী থাকলে বিয়ের বিষয়ট ভাবা উচিত আমাদের। রাইমার এমনিতেও কোনো ছেলের সাথে সম্পর্ক নেই৷ আর এখন কার মনের মাঝে কি থাকে বোধা দায়! মানুষ নিজের মন নিজে বুঝতে পারেনা। সেখানে অপরিচিত একজন ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে ভালো থাকবে নাকি খারাপ থাকবে! সেই চিন্তায় দিন কাটানোর থেকে দিগন্তের সাথে বিয়ের ব্যাপারটা একবার রাইমাকে বুঝিয়ে বলা উচিত।”

শাহনাজ বেগমের মাহাদের কথাটা পছন্দ হলেও মেয়ের কথা ভেবে দোনামনা করতে লাগলেন। স্নেহা তাদের কথার মাঝে বললো,

“বিয়েটা এখনই হতে হবে! বিষয়টা এমন নয় আন্টি। আপনারা সময় নিন! দেখুন রাই কি বলে! যদি সম্ভব হয় দুই বিয়ে একসাথেই হয়ে যাবে। ঝামেলাও কম হবে।”

সাহিরা বেগম আর শাহনাজ বেগম মুচকি হাসলেন স্নেহার কথায়। মাহাদ একটু চিন্তিত স্বরে বললো,

“সব কথাই তো বুঝলাম, আমাদের রাই ম্যাম কিচেনে গিয়ে কি করছেন দিগন্তের সাথে, এটাই তো চিন্তার বিষয়৷ যে দস্যি মেয়ে, দিগন্তের অবস্থা না নাজেহাল করে দেয়।”

“ওদেরকে ওদের মতো ছেড়ে দাও৷ দুজনে কথাবার্তা বলে যদি ঝগড়াও করে, তবুও সই। ওদের ঝগড়া দিয়ে শুরু সম্পর্কটা যদি বিয়ে অব্দি গড়ায়! দারুণ হবে।”

স্নেহা হেসে কথাটা বললো। সাহিরা বেগম হেসে বললেন,

“ভাইয়ের বিয়ের জন্য একেবারে দেখছি তাড়াহুড়ো শুরু করে দিয়েছো! বলি নিজের বিয়েটা তো আগে শেষ হতে দাও।”

“ঠিক সময়টায় বিয়ে করলে আপনাদের ২-৪টা নাতি-নাতনী উপহার দিতে পারতাম আন্টি। ভাগ্যিস আপনারা মানুষগুলো অত্যন্ত উদার মনের। নয়তো তিরিশ উর্ধ্ব নারীকে কেউ পুত্রবধু করতে চায়! বয়স বেশি, এই কারণই তো যথেষ্ট ছিলো মেনে না নেওয়ার!”

স্নেহার কথায় সাহিরা বেগম প্রথমে হাসলেও পরে একটু রেগে যান। স্নেহার দিকে তাকিয়ে থমথমে গলায় বলেন,

“বয়স শব্দটা দিয়ে দুজন ভালোবাসার মানুষকে আলাদা করার মানে হয়? কি হয়ে এই বয়স নামক শব্দটার বেড়াজাল মেনে? যদি আমার ছেলেই ভালো না থাকে?”

স্নেহা সাহিরা বেগমের কথায় খুশিতে কেঁদে দেয়। চোখের কোণে তার জলেরা ভীর জমায়। আবেগে স্নেহা জড়িয়ে ধরে সাহিরা বেগমকে। সাহিরা বেগম মুচকি হেসে স্নেহাকে আরও কিছু টা শক্ত করে ধরে। শাহনাজ বেগম পাশে বসেই বললেন,

“শাশুড়ী বউমা মিলে গেলো, খালা শ্বাশুড়ি এখানে গড়াগড়ি খাচ্ছে।”

স্নেহা হেসে সাহিরা বেগম কে ছেড়ে বসে। মাহাদ মুগ্ধ হয়ে নিজের জীবনের দুই শ্রেষ্ঠ নারীকে দেখছে। এক নারী তার মা, অন্য নারী তার ভালোবাসার মানুষ।তাদের এই মুহূর্ত আজীবন অটুট থাকুক। সাহিরা বেগম স্নেহার হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলেন,

“শোনো মা, আমি মানুষ, কোনো ফেরেশতা নয়। অতিরিক্ত ভালো মানুষও আমি নই। আমার ছেলের কোনো সমস্যা দেখলে হয়তো তোমা মেজাজ হারিয়ে রাগে দুঃখে দুই চারটা কড়া কথা শুনিয়ে দিবো। কারণ সংসার জীবন, কেউ বলতে পারবেনা যে তার সংসার জীবনে অশান্তি হয়নি! যতো ভালোই হোক। এটা কখনও সম্ভব না যে সংসার জীবনে ঠুকঠাক কিছু হবেনা। তাই কখনও কিছু বললে, নিজের মা বলেছে মনে করে রাগ ফেলে আমায় একটু এভাবেই জড়িয়ে ঠান্ডা করে দিও। বুঝলে!”

স্নেহা মাথা দুদিকে হেলিয়ে হ্যাঁ বোঝায়। এরপর সবাই টুকটাক গল্প করতে ব্যস্ত হয়ে পরে।

২৭
“একি আপনি? সবাইকে ছেড়ে আমি কিচেনে আসতে গেলেন কেনো এসব নিয়ে?”

দিগন্ত রাইমাকে দেখে প্রশ্নটা করে। রাইমা হাতের ট্রে-টা বেসিনের একপাশে রেখে দেয়। এরপর দিগন্তের দিকে ফিরে বলে,

“আমি তো অস’ভ্য মেয়ে। অস’ভ্য মেয়ের কাজই তো অস’ভ্যতামি করা। সেজন্য আসলাম একটু অসভ্যতামি করতে।”

দিগন্ত এক ভ্রু উঁচিয়ে রাইমার দিকে তাকায়। তবে উত্তর দেয় না। আপাতত ত্যাড়ামি করতে তার একটুও ভালো লাগছেনা। হাতের কাজগুলো চটপট সেরে নেয় সে। রাইমা বুকে হাত বেঁধে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দিগন্তের কার্যকলাপ দেখছে। দিগন্ত রান্না করা সব খাবার, কাঁচের বাটি, গামলায় বেড়ে ডাইনিং টেবিলে সুন্দর করে সাজাচ্ছে। সবকিছু নেওয়া শেষ প্রায়। দুটো বাটি বাকি আছে আর টেবিলে নেওয়ার জন্য। দিগন্ত যখন নিতে আসে রাইমা তখন দু পা এগিয়ে দিগন্তের দিকে পা বাড়ায়। দিগন্ত একটু থেমে রাইমার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করে,

“কোনো দরকার আছে এখানে থাকার? না থাকলে আপার কাছে গিয়ে বসে থাকতে পারেন।”

“দরকার তো অবশ্যই আছে মি: দিগন্ত আহসান।”

“তা কি দরকার আপনার মিস রাইমা খন্দকার?”

দিগন্ত কাজ ফেলে বুকে হাত বেধে কড়া চাহনীতে রাইমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটা করে৷ রাইমা দিগন্তের গম্ভীর চাহনী দেখে একটু ঘাবড়ে যায়। তবুও নিজেকে শক্ত রাখার চেষ্টা করে। দিগন্তকে পাশ কা’টিয়ে যেতে যেতে বলে,

“আপনার প্যান্টের চেইন খোলা।”

রাইমার কথাটা কর্ণগোচর হতেই দিগন্তের দৃষ্টি এক লোহমায় নিজের প্যান্টের দিকে যায়। না সব ঠিকঠাকই তো আছে। তবে এই মেয়ে এমনটা বললো কেনো? দিগন্ত চট করে পিছ ফিরে তাকায়। রাইমা যায়নি। কিচেনের দরজায় দাড়িয়ে মিটমিট করে হাসছে। দিগন্ত নিজের দিকে তাকিয়ে পা থেকে উপর অব্দি যতোটুকু দেখা যায় দেখে নেয়৷ সব ঠিকই তো আছে। তবে এই মেয়ে তাকে দেখেই হাসছে কেনো? আর কি বললো একটু আগে! কথাটা মনে পরতেই দিগন্ত রাইমাকে রাগী স্বরে তেজ নিয়ে জিগাসা করে,

“আপনি মিথ্যা কথা বললেন কেনো? আর আমায় এভাবে স্ক্যানিং করারই মানে কি?”

“আপনাকে ঘাবড়ানোর জন্য। একটু মজা করার জন্য। কেমন ফিলিংস হলো বলুন তো! আপনিও যখন আমায় সেদিন স্ক্যানিং করার মতো আপাদমস্তক চোখ ঘুরিয়েছেন আমার উপর! আমার অসস্তি লেগেছিলো, যেমনটা আপনার আজ লাগলো। আর বলেছিলেন না আমার সালোয়ার উল্টো! সেই কথার হিসেবে বললাম প্যান্টের চেইন খোলা। কারণ জানিই এই কথা বললে মানুষ নার্ভাস হয়ে পরে। আপনালে সবসময় তেজের সাথে দেখে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলাম। তাই নার্ভাস হলে কেমন লাগে দেখে নিলাম।”

রাইমা একদমে কথাগুলো বলে জোড় কদমে কিচেন ছেড়ে বেরিয়ে যায়। দিগন্ত হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে ভাবে, এই মেয়ে পাগল নাকি! কার কপালে জুটবে রব জানেন! যার কপালে জুটবে, তার জীবন শে’ষ। দিগন্ত হাফ ছাড়ে। কেমন একটা বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছিলো। আসলেই অস’ভ্য বলে ভুল করেনি সে। নামটা সুন্দর, মেয়েটা একদম অস”ভ্য। দিগন্ত বিরবির করে এসব বলে বাকি কাজগুলো দ্রুত শেষ করে। তার বোন পুরো রেস্টুরেন্ট বানিয়ে ফেলেছে কিচেন টাকে। কয়েকজন মানুষের জন্য এতো আইটেম কেউ রান্না করে! কম হয়েছে, আরও কিছু আইটেম রান্না করতে হতো। দিগন্ত বিরক্ত হয়ে সব কাজ সেরে সবাইকে ডেকে নেয়। এরপর হাসি ঠাট্টায় খাওয়া দাওয়া শেষ করে মাহাদরা স্নপহা আর দিগন্তকে বিদায় জানিয়ে বাসায় ফিরে যায়৷

২৮,
মাঝখানে কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকদিন। আজ বৃহস্পতিবার। শার্লিন আর রাইমা ভার্সিটি শেষে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে বাসার সামনের রাস্তাটা দিয়ে হাটতে হাটতে গল্প করছে। দুজনেরই উদ্দেশ্য মহল্লার এক পাশে বাচ্চাদের খেলার মাঠটায় সবুজ ঘাসের উপর খালি পায়ে হাটবে। শীত পেরিয়ে বসন্তের ছোয়ায় মাতবে প্রকৃতি। চারদিকে বসন্ত বসন্ত আমেজ। শার্লিন হাঁটতে হাঁটতেই বলে উঠে,

“দিগন্ত ভাইকে তোর কেমন লাগে?”

আচমকা এমন প্রশ্ন করায় হকচকিয়ে যায় রাইমা। শার্লিনের দিকে তাকিয়ে চোখ দুটো ছোটো-ছোটো করে বলে,

“কেমন লাগে বলতে? কি বোঝাতে চাচ্ছিস?”

“তুই যা ভেবেছিস, তাই বুঝিয়েছি।”

“আমি কি ভাবলাম আজব?”

“তুই কি ভেবেছিস, আমি কি করে জানবো?”

“তাহলে বললি কেনো! আমি যা ভেবেছি, তুই তা বুঝিয়েছিস?”

“ওটা তো কথার কথা।”

“রাখ তোর কথার কথা, ব্যাঙের মাথা। ঐ আজাইরা লোকের কথা আমার সামনেও উচ্চারণ করবিনা। মাহাদ ভাইয়ের বিয়ের সময় বনবাসে যাবো আমি। ঐ লোককে কি করে যে সহ্য করবো, চিন্তায় পরে আছি আমি।”

রাইমা রেগে হনহনিয়ে আগে আগে যেতে যেতে কথাটা বলে। শার্লিন খানিকটা দৌড়ে রাইমাকেমধরে হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,

“দিগন্ত ভাই তো ভালোই আছে। তোর এতো কেনো বিরক্তি মানুষটার প্রতি!”

“কচু ভালো তোর দিগন্ত ভাই। কচুর মতোই চুল*কানি আছে লোকটার। রাগী, এটিটিউড খড়ের গাদার মতো মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে উনার ভেতর। গম্ভীর হয়ে থাকা যেনো তার বউ লাগে। বউ ছাড়া যেমন বেডা মানুষ বিয়ের পর থাকতে পারেনা, এই লোকটারও সেইম অবস্থা। গম্ভীর না হয়ে কখনও থাকতেই পারেনা। কিছু মানুষ থাকে অকারণেই তাদের বিরক্ত লাগে। দিগন্ত লোকটাও তেমন। কারণ ছাড়াই উনাকে আমার ভালো লাগেনা।”

শার্লিন রাইমার উত্তরে কপাল চাপড়ে বলে,

“হায় কপাল! এই লোক তোর কপালে জুটলে দেখছি দিন দুপুরে চাঁদ তারা দেখিয়ে দিবি তুই?”

“ঐ লোক আমার কপালে জুটতে যাবে কেনো? হুঁশ থাকতে উনাকে আমি বিয়ে করবো নাকি?”

“আর আমার হুঁশ থাকতে আমি খুব আপনাকে বিয়ে করবো তাইনা?”

শার্লিন আর রাইমা তাদের দুজনের কথার মাঝে গম্ভীর গলায় পুরুষালী কণ্ঠে কথাটা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। তাকিয়ে দেখতে পায় দিগম্ত পকেটে হাত গুঁজে গাম্ভীর্যের সহিত দাড়িয়ে এক ভ্রু উচিয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। রাইমা আর শার্লিনের আখিদ্বয় যেনো এখনই বেরিয়ে আসবে, এমন বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে দিগন্তকে দেখছ। রাইমা বিরবির করে শার্লিনকে জিগাসা করে,

“আমাদের কথার মাঝে এই লোক কোত্থেকে আসলো শালু?”

“তুই যেখানে দাড়িয়ে, আমিও সেখানেই। কিভাবে বলবো বল?”

রাইমার মতোই ফিসফিস করে উত্তর দেয় শার্লিন। দিগন্ত ওদের বিরবির করতে দেখে বলে,

“আপনারা দুজনে কি বিরবির করছেন?”

রাইমা নিজেকে ধাতস্থ করে বললো,

“কিছু না, যাই বলি আপনাকে কেনো বলবো? আর আপনি আমাদের দুজনের কথার মাঝে কোত্থেকে ভুতের মতো উদয় হলেন?”

চলবে?#আকাশেও_অল্প_নীল
#পর্ব:১১
#আর্শিয়া_ইসলাম_উর্মি

২৯,
“এলাকা কি আপনার নামে দলিল করা যে আসা যাবে না?”

রাইমার প্রশ্নে গা ছাড়া ভাবে উত্তর দিলো দিগন্ত। রাইমার মেজাজ খারাপ হয়ে দিগন্তের গা ছাড়া ভাবে। সে তিরিক্ষি মেজাজে বললো,

“এলাকা আমার নামে দলিল করা নয়। কিন্তু দুজন মানুষের মাঝে কথা তো আমাদের ব্যক্তিগত। কথার মাঝে নাক কে গলায়?”

“রাস্তায় ফাটা বাঁশের মতো অন্য একজনের পার্সোনালিটি নিয়ে বিনা মাইকে চিল্লালে তো তার নাক গলাতেই হয়। অস’ভ্য মেয়ে নামটা বিফলে যায়নি।”

দিগন্ত কথাটা বলেই হনহন করে হাঁটা ধরে রাইমা আর শার্লিনকে ছাড়িয়ে। রাইমা ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে দিগন্তের যাওয়া দেখছে। শার্লিন রাইমার হাত চেপে ধরে বলে,

“এরকম বোবা হয়ে গেলি কেনো?”

“আরেক দিনও এই লোক আমাদের মহল্লায় এসেছিলো। আজও এসেছে। এই লোকের আত্মীয় স্বজন ঢাকায় আছে বলে তো শুনিনি৷ তবে এখানে আসে কোথায়? আরেকদিন গাড়ি সাথে ছিলো, আজ হেঁটেই যাচ্ছে! কি এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ চিন্তা করছি। উনাকে ফলো করবো আমি, তাতে যা হবার হবে।”

রাইমা উত্তর দিয়েই হনহনিয়ে হাঁটা ধরলো দিগন্তের পিছু পিছু। শার্লিন আহাম্মকের মতো ওদের দুজনের যাওয়া দেখছে। কি হচ্ছে এসব মাথায় ঢুকছেনা তার। যতক্ষণে দেখলো রাইমা কিছু টা দূরে চলে গিয়েছে, সেও ছুট লাগায় রাইমার পিছু। রাইমার পাশাপাশি হতেই সে জিগাসা করে,

“যেভাবে হাঁটছিস, কখন জানি দিগন্ত ভাই থেমে দুজনকে ধমক দেয়। ভয় করছে তো! আস্তে হাঁট মহিলা।”

“আপনারা আমার পিছনে আসছেন কেনো?”

শার্লিনের বলতে দেরি, দিগন্ত দাড়িয়ে পিছন ফিরে কথাটা বলতে দেরি নেই। রাইমা থতমত খেয়ে যায়। এই লোক এতো তাড়াতাড়ি তাদের ধরে ফেলবে বুঝতে পারেনি৷ রাইমা খানিকটা তুতলিয়ে বলে,

“আমরা আপনার পিছনে যাচ্ছিনা। এই রাস্তার শেষে একটা মাঠ আছে। সেখানে যাচ্ছি আমরা। সেই একই পথে আপনিও যাচ্ছেন। সেখানে আমাদের কি দোষ?”

দিগন্ত গম্ভীর চাহনীতে দুই বান্ধবীকে পর্যবেক্ষণ করলো। রাইমা তা দেখে বিরক্তি নিয়ে বললো,

“আপনি আবার আমাদের স্ক্যানিং করছেন?”

৩০,
দিগন্ত উত্তর দিলো না। সে নিজের কাজে চলে যেতে পা বাড়ালো৷ রাইমাও এবার ধীর কদমে দিগন্তের পিছু ছুটলো। শার্লিনের মন টানছেনা যেতে, না যেয়েও উপায় নেই৷ সেজন্য রাইমার এক হাত আকড়ে হাঁটছে সে। প্রায় ৭-৮মিনিট হাঁটার পর দিগন্তও মাঠের এক কিনারায় থামলো, রাইমা আর শার্লিনও দিগন্তের বিপরীত পাশে দাড়ালো। মাঠে বাচ্চারা ছুটছে, খেলছে। বড়ো বড়ো ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে। হইচই মুখোর পরিবেশ৷ রাইমা মুক্ত বাতাস পেয়ে দীর্ঘ ভাবে নিঃশ্বাস নিলো চোখ বন্ধ করে। দিগন্ত একবার আড়চোখে রাইমাকে দেখলো। যাক প্রথমবারের মতো কোনো শান্ত মেয়ের প্রতিচ্ছবি দেখলো এই মেয়ের মাঝে। এছাড়া তো যখনই দেখে হয় রাগী নয়তো তেজী। এই মেয়ে যে কি! দিগন্তের মাথায় ঢোকে না। সে চারদিক টা একটু দেখে নিয়ে মাঠ ছাড়িয়ে নতুন তৈরি হওয়া একটি বাড়ির মূল ফটক পেরিয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে গেলো। রাইমা তাকিয়ে দেখলো, কিন্তু একটা বাড়ির ভিতর কি করে ঢুকবে? তাছাড়া বাড়িটাও বা কার? সে শার্লিনের দিকে তাকিয়ে বললো,

“এটা কার বাড়ি রে শালু! অনেকদিন ধরে দেখলাম তৈরি হচ্ছে। এখন দিগন্ত সাহেব এসে ঢুকে পরলো। কার বাসা জানিস কিছু? ”

“আমার জানা নেই। চল গিয়ে দেখি!”

শার্লিনের ভেতর জানার আগ্রহ তৈরি হওয়ায় সে রাইমার হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে হাটা ধরে। রাইমার জবাবেরও অপেক্ষা করেনা৷ দুজনে মিলে বাড়ির মূল ফটক খোলা থাকায় হনহনিয়ে ঢুকে পরে। কিন্তু বাসায় ঢুকতেই দু’জনেই বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে চারদিক দেখতে থাকে৷ বাড়ির ভেতরে অনেক বড়ো ফাঁকা জায়গা মতোন, সেখানে অনেকগুলো বাচ্চা ছুটোছুটি করছে। আর দিগন্ত তাদের মাঝে দাড়িয়ে হাসছে। দিগন্তকে ঘিরে কতোগুলো বাচ্চা প্রশ্নের ফোয়ারা বইয়ে দিয়েছে৷ দিগন্ত হেঁসে হেঁসে তাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে৷ রাইমা অবাক হয়ে তুতলিয়ে শার্লিনকে জিগাসা করে,

“এই লোক হাসতেও পারে রে শালু! আমি যা দেখছি, তুইও কি তাই দেখছিস?”

“তোর চোখও দুটো, আর আমারও। তাহলে এখানে তুই যা দেখছিস, আমি তার থেকে বেশি কিছু দেখবো নাকি?”

“ধুর, তুই সবসময় মুড স্পয়েল করিস আমার৷”

“এটা আমি ভালো পারি।”

শার্লিন আর রাইমার দুজনে যখন নিজেদের মাঝে কথা বলতে ব্যস্ত, তখনই সামনের দিকে নজর বুলাতেই দেখে দিগন্ত দুজনের সামনে বুকে হাত বেঁধে ভ্রুকুটি করে তাকিয়ে আছে। রাইমা দিগন্তের দিকে তাকিয়ে কয়েকটা ফাঁকা ঢোক গিলে। এই লোক কিছু বলবে নাকি আবার! ধুর কি বলবে! তারা তো কোনো অন্যায় করেনি যে ভয় পাচ্ছে। শুধু অনুমতি ছাড়াই বাসায় ঢুকে পরেছে এই যা। রাইমা আনমনে এসবই ভাবছে।রাইমা আর শার্লিন দুজনেই দিগন্তের চাহনী অনুসরণ করে মুচকি হাসার চেষ্টা করে। দিগন্ত গলার স্বরটা একটু ভারী ভাবে প্রশ্ন করে,

“এই নাকি আমাকে ফলো করছেন না! আবার এখানে কি?”

“আসলে নতুন বাসা দেখে আগ্রহ হলো, কার বাসা জানার জন্য।”

শার্লিন হেঁসে উত্তর দেয়। দিগন্ত উল্টোদিক ফিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়ে উত্তর দেয়,

“সাহস ভালো, অতিরিক্ত সাহস ভালো নয়। কারোর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ঘাটাঘাটি না করাই বেটার।”

“এখানে ব্যক্তিগত কি দেখলেন?”

রাইমা চেঁচিয়ে প্রশ্ন করে৷ দিগন্তর পা থেমে যায় রাইমার প্রশ্নে। পিছন দিকে তাকিয়ে উত্তরে বলে,

“আমি কি করতে আসছি, এটা জানার জন্যই আপনাদের এখানে আসা। আর আমি কি করতে আসছি, এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। আপনি মাহাদ ভাইয়ের খালামনির মেয়ে না হলে বা আপনার মা আমার মাথায় মায়ের পরশ না ছোয়ালে আপনাদের এতোক্ষণে হাত পা ভে’ঙে বাইরে ফেলে আসতে বলতাম। আমি আমার ব্যক্তিগত বিষয়ে বাইরের মানুষের নাক গলানো পছন্দ করিনা।”

দিগন্ত কথাটা বলেই বাসার উত্তর দিকে শেষ রুমটায় ঢুকতে দেখে। রাইমা নিস্তেজ হয়ে দাড়িয়ে বাচ্চাদের দেখছে। মানলো তারা ভুল করেছে, তাই বলে এভাবে অপমান করবে!শার্লিন রাইমার উদ্দেশ্যে বলে,

“এখানে এতো বাচ্চা কেনো রাই? কিছু তো বুঝতে পারছিনা।”

“এটা দিগন্ত সাহেবের বানানো এতিমখানা। যতোদূর আমি গেইজ করতে পারলাম, এটাই হবে। ৮দিন পর মাহাদ ভাই আর স্নেহা আপুর বিয়ে, আগামী শুক্রবারে। এই বাচ্চাগুলো অন্য জায়গায় ছিলো, সেখান থেকে এই এতিমখানা তৈরি হয়ে যাওয়ায় হয়তো বাচ্চাদের শিফট করে নিয়েছেন ইনি। আর এই কারণেই হয়তো উনাকে সেইদিন আমাদের এলাকায় দেখেছিলাম। মানুষ টা রাগী, গম্ভীর হলেও বাচ্চাদের সাথে একদম বাচ্চা। দেখে যতোদূর বুঝলাম এটাই মনে হলো।”

৩১,
শার্লিন রাইমার কথার জবাবে জিগাসা করে,

“সবই বুঝলাম, কিন্তু আচমকা বাচ্চাদের এখানে শিফট করলো বুঝলাম না! আগে কোথায় ছিলো বাচ্চাগুলো?”

রাইমা দিগন্তের মায়ের বিষয়ে সবকিছু খুলে বলে শার্লিনের প্রশ্নের উত্তরে। সব শুনে শার্লিন দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। কাঁপা স্বরে বলে,

“জীবন টা এমন না হলেও পারতো।”

“মা মানুষ টাই এমন রে শালু, সন্তানকে গড়ে নিতে পারেন, বিপথেও চালাতে পারেন। মায়ের যখন প্রয়োজন ছিলো উনার, উনি তা পাননি। বদমেজাজি হয়ে গেছেন। মা বিহীন দুনিয়া সবথেকে কঠিন। কঠিন দুনিয়ার সাথে লড়তে গিয়ে বদমেজাজির খোলশ টা ধারণ করেছেন উনি।”

রাইমা মৃদু হেসে দিগন্ত যেই রুমে গিয়েছে, সেদিকে লক্ষ্য করে কথাগুলো বললো। শার্লিন রাইমার কাঁধে হাত রাখে। এক সারি করে শার্লিন গুনে দেখলো ২০টা রুম বানানো হয়েছে। সবগুলো রুমে বাচ্চাদের যা যা প্রয়োজনীয় অনেকগুলো লোক মিলে গুছিয়ে দিচ্ছে। বাচ্চারা অবাক নয়নে রাইমা আর শার্লিনকে দেখছে, কিন্তু কাছে ঘেষছেনা। হয়তো চিনেনা, এজন্য কাছে আসছেনা। রাইমা হাতের ইশারায় একটা বাচ্চা মেয়েকে ডাকলো। মেয়েটা ছোট্ট কদমে তার দিকে আসলে সে হাটমুড়ে বসে নরম সুরে জিগাসা করে,

“তোমার নাম কি পিচ্চি?”

“মিত্যিয়া।”

“ইশ কি কিউট নাম। আমার একটা সাহায্য করতে পারবে?”

“কি সাহায্য?”

“তোমাদের দিগন্ত ভাইয়াকে একটু ডেকে দিবে?”

মিত্যিয়া মেয়েটা জবাব না দিয়ে দৌড়ে গিয়ে কয়েক মুহুর্তের মাঝে দিগন্তের হাত ধরে টেনে এনে রাইমার সামনে দাড় করিয়ে দেয়। রাইমা মেয়েটা চলে যেতেই উঠে দাড়িয়েছিলো। দিগন্ত আসতেই সে দিগন্তকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বলে,

“আ’ম এক্সট্রিমলি স্যরি৷ আপনার অনুমতি ব্যতিতই এখানে ঢুকে পরেছিলাম। একচুয়ালি জানার আগ্রহ ছিলো অনেক। আগ্রহের বশবর্তী হয়ে আপনার ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলিয়ে ফেললাম। মাফ করবেন আমায়।”

রাইমা দিগন্তের জবাবের অপেক্ষা করে না। শার্লিনের হাত ধরে বেরিয়ে যায় এতিমখানা থেকে৷ দিগন্ত অবাক নয়নে তাকিয়ে রইলো রাইমার যাওয়ার পানে। আনমনে ভাবলো,

“নারী চরিত্র, বড়ই বিচিত্র। কখন কি মনে হয়, ঠিক নেই। এই চরিত্রকে বুঝতে গেলে জীবন পেরিয়ে যাবে, তবু বোঝা দায়।”

৩২,
মাঝখানে কেটে যায় আরও দুটি দিন। এক সুন্দর রবিবারের সকাল। হ্যাঁ রাইমার কাছে তো সুন্দরই লাগছে। ব্যালকনিতে দাড়িয়ে এক মগ গরম ধোয়া উঠা কফি, সকালের ঠান্ডা পরিবেশ। মনটা সতেজতায় ভরে উঠেছে রাইমার। সকাল সকাল ফজর নামাজ পর মায়ের হাতে হাতে নাস্তা বানাতে সাহায্য করে কফির মগ নিয়ে সে দাড়িয়েছে স্নিগ্ধ সকাল উপভোগ করতে। কফির মগে চুমুক দিচ্ছে, আর ব্যলকনিতে থাকা গোলাপ গাছটায় হাত বুলাচ্ছে রাইমা। কয়েকটা কলি এসেছে গাছে, ফুটে যাবে৷ কয়েকদিনে৷ বসন্তও যে এসে গেছে। প্রকৃতি নানান রঙে মেতে উঠবে দুদিন পর৷ রাইমা কফি খাওয়া শেষ হতেই রুমে আসে ভার্সিটির জন্য তৈরি হবে বলে। তখনই শাহনাজ বেগম রাইমার ঘরে আসেন। রাইমা মাকে দেখে প্রশ্ন করে,

“কিছু বলবে মা?”

শাহনাজ বেগম মেয়ের হাত ধরে খাটে বসিয়ে দেন। রাইমা মায়ের এহেন আচরণে একটু অবাক হয়। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা থাকলেই তা মা এরকম হাত ধরে কথা বলতে বসেন। রাইমা মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে জিগাসা করে,

“কোনো সিরিয়াস ইস্যু মা?”

“আচ্ছা রাইমা, আমি আর তোমার বাবা যদি তোকে এখন বিয়ে দিতে চাই? তুমি বিয়ে করবে?”

রাইমা অবাক হয় মায়ের প্রশ্ন শুনে। ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায় সে। মায়ের প্রশ্নের পিঠে উত্তর না দিয়ে সে-ই প্রশ্ন করে বসে,

“এটা কেমন কথা মা? তোমরা যদি বিয়ে দিতে চাও, আমার সমস্যা নেই। বিয়ের উপযুক্ত যখন হয়েছি, বিয়ে দিতেই পারো। কিন্তু কোনো পা’গল-ছা”গলকে ধরে এনে বিয়ে দিয়ে দিও না। আমায় বুঝবে অন্তড এমন একজনকে এনে দিও। ঠিক বাবার মতো, বাবা যতোটা তোমায় বুঝে, ঠিক ততোটা বুঝলেই চলবে।”

“পাত্র এমন পেয়েছি রাইমা। কিন্তু তোমার মতামত জানা জরুরী ছিলো।”

“পাত্র টা কে? সন্ধান কে দিলো?”

রাইমা মায়ের কথায় প্রশ্ন করে। মা মেয়ের কথা চলাকালীনই শার্লিন রাইমার রুমে প্রবেশ করে। অসময়ের শার্লিনকে দেখে ফের অবাক হয় রাইমা। শাহনাজ বেগম কথা বললেন না আর। শার্লিনকে দেখে বিধ’স্ত লাগছে একটু। কেমন একটা মনম’রা। শাহনাজ বেগম বুঝলেন শার্লিন দরকারী কোনো কাজেই এসেছে রাইমার কাছে৷ উনি শার্লিনকে দেখে মেয়েকে ছেড়ে উঠে এসে শার্লিনের গালে হাত দিয়ে জিগাসা করেন,

“শার্লিন মা, তোমায় এমন ক্লান্ত লাগছে কেনো? রাতে ঘুম হয়নি?”

“আন্টি এক কাপ কড়া লিকারের চা হবে? আমার মাথা ব্যথা করছে।”

শার্লিন ক্লান্ত ঘুম জড়ানো কণ্ঠে শাহনাজ বেগমকে বললেন। উনি মুচকি হেসে বললেন,

“ফ্রেশ হও। দেখেই বোঝা যাচ্ছে ফ্রেশ হওনি। আমি চা করে আনছি।”

শাহনাজ বেগম চলে গেলেন। রাইমা চট জলদি বিছানা ছেড়ে শার্লিনকে ধরে বিছানায় বসিয়ে দিলো। শার্লিনের তাতে হেলদোল নেই। সে নিস্তব্ধ হয়ে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে। রাইমা চিন্তিত স্বরে প্রশ্ন করে,

“কি হয়েছে তোর! এই অবস্থা কেনো তোর? ঘুমাসনি রাতে?”

“না রে ঘুমাইনি। চিন্তায় ঘুম আসেনি।”

শার্লিন রাইমার কথার উত্তর দিয়েই রাইমাকে হুট করে জড়িয়ে ধরে কেদে দেয়। রাইমা বিস্মিত হয় শার্লিনের এই অবস্থা দেখে। বুঝতে পারে সিরিয়াস কিছু। সে শার্লিনের পিঠে হাত রেখে শার্লিনকে শান্ত করার জন্য বলে,

“কি হয়েছে আমায় বল?”

“আজ আমায় পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে রাই?”

“মানে?”

“মানে যা শুনলি তাই। আমায় পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। অবশ্যই সেই পাত্রপক্ষ ইফরাদ নয়। আর আমি ইফরাদকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে পারবোনা রাই।”

“তুই ইফরাদ ভাইয়ের কথা বলিসনি আংকেল কে?”

“বলেছি। বাবা মানবেনা।”

শার্লিনের কান্নার দমক বেড়ে দমক বেড়ে যায়৷ রাইমা ব্যস্ত হয়ে শার্লিনকে থামাতে ফের প্রশ্ন করে,

“কি জন্য মানবেন না আংকেল? কোনো কারণ বলেছেন উনি?”

“বলেছেন তো! অনেক বড়ো কারণ বানিয়ে ফেলেছেন বাবা ছোট্ট একটা বিষয়কে। সেদিন তোকে ডেকে এমনি এমনি কাঁদিনি। বাবা সেদিন গিয়ে আগে পাত্রপক্ষের ঠিকুজি গুস্টি দেখে পছন্দ করে এসেছেন। আজ উনারা এসে আমায় দেখে পছন্দ করলেই বিয়ে। ইফরাদের কথা সাহস করে বললাম, এমন কারণ বললেন না মানার জন্য! আমার রাগে কষ্টে কান্না করে মাথা ব্যথা ধরে গেছে। তুই তো জানিস আমি কাঁদতে পারিনা। কাঁদলে আমার মাথা ব্যথা করে।”

শার্লিন নাক টেনে টেনে কথাগুলো বলে। রাইমা চট করেই সব বুঝে যায় সেদিন শার্লিনের কান্নার কারণ, আর তাড়াতাড়ি তার কাছে যেতে বলার কারণ টাও৷ সেসব পরে ভাবা যাবে, আগে কি কারণে ইফরাদ ভাইকে মানবেন না আংকেল সেটা জানা জরুরী। রাইমা এই ভেবে শার্লিনকে প্রশ্ন করে,

“ইফরাদ ভাইকে মেনে না নেওয়ার কারণটা বলতো!”

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here