আজও ভালোবাসি তোমায়❤ পর্ব -০২

#আজও_ভালোবাসি_তোমায়❤
#Writer_মাহিয়া_মিতু
#Part_2
🍁
.
.
.
🍁
ফারহান চৌধুরী, দেশের নাং ওয়ান বিজনেস ম্যানদের মধ্যে একজন চৌধুরী গ্রুপ অব কোম্পানির মালিক ফারহাদ চৌধুরীর একমাত্র ছেলে। বর্তমানে ঢাকা ভার্সিটিতে মাস্টার্স করছে। ভার্সিটির সব টিচার দের প্রিয় স্টুডেন্ট, ভার্সিটি টপার,এন্ড সব মেয়েদের ক্রাস। কারণ সে দেখতে অনেক সুন্দর। তার চেহারা, কথা বলার এটিটিউট ইস! সব মেয়েকে পাগল করার জন্য যতেষ্ঠ।
ছয় ফুট উচ্চতা, হলদে ফর্সা গায়ের রং, ডার্ক গোলাপি ঠোঁট, স্পাইক করা চুল, এক কথায় কোনো হিরোর থেকে কোনো অংশে কম নয় বরং বেশি।
অন্য দিকে মিতু, মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। দেখতে একদম পরির মতো, গায়ের রং উজ্জ্বল ফর্সা, চোখ দুটো টানা টানা, লম্বা ৫.৪” বাবা আরমান সাহেব একজন সরকারি কর্মকর্তা, আর মা মোহিনী বেগম গৃহিণী। মিতু তার বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। মধ্যবিত্ত পরিবারের হলেও খুব হ্যাপি তারা।মিতু এবার অনার্স ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আর আজকে ওর ভার্সিটির প্রথম দিন।তাই ও তাড়াতাড়ি ভার্সিটি যাওয়ার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে ওর বেস্টু দিনার জন্য ওয়েট করছে। ও দাঁড়ানোর প্রায় আধঘন্টা পর দিনা এলো, মিতু তো রাগে বোম হয়ে আছে। তা দেখে দিনা ভয়ে ভয়ে বললো
—- স সরি দোস্ত, আর কোনো দিন দেরি হপপে না আমার😥
—– তোর সরির কাঁথায় আগুন, বান্দরানি, শয়তান, উগান্ডার টিকটিকি কোনহানকার😡, তোর জন্য প্রথম দিন ই লেট হয়ে গেছে।
—- সরি বললাম তো আমি, এবার তাড়াতাড়ি চল না, তা নাহলে আরো দেরি হয়ে যাবে।
—- ঠিক আছে চল, আজকে হাতে সময় নাই বলে বাইচা গেলি, নাহলে তোরে আজকে আমি এক মগ পানিতে চুবিয়ে মারতাম😠
—- ঠিক আছে, এবার চল মেরি মা।
—— চল😈
তারপর ওরা ভার্সিটি চলে যায়, ওদের দেরি হয়ে গেছে বলে ওরা তাড়াতাড়ি কলেজের গেট দিয়ে ঢুকছিলো তখনই পিছনে থেকে কেউ একজন মিতুর ওড়না ধরে টান দেয়, মিতু কে তার ওড়না ধরলো তা দেখার জন্য পিছনে ফিরে দেখে একটা ছেলে ওর ওড়না হাতে ধরে ওর দিকে খুব বাজে ভাবে তাকিয়ে আছে। তা দেখে মিতু বলে
—– ওঠনাটা ছাড়ুন😡
—–আরে কিউট বেবি রাগ করছো কেন।
তখন পাশ থেকে দিনা বলে ওঠে
—— রাগ করবে না তো কি করবে না তো কি করবে, আপনি ওর ওড়না ধরে রেখেছেন কেন, ওর ওড়না ছাড়ুন বলছি😈
—– যদি না ছাড়ি তো কি করবে
এবার মিতু বলে ওঠে
—- সেটা দেখার আগে আবার ও ভালো ভাবে বলছি আমার ওড়না ছাড়ুন।
—– আমি ও বলছি সোনা ছাড়বো না, এরকম একটা মাল হাতে পেয়ে কি কেউ ছেড়ে দেয় বলে ও আর ওর সাথী রা হাসতে শুরু করলো।
তখনই ঠাসসসসস করে একটা চড় পড়লো ওই ছেলেটার গালে, ছেলেটা গালে হাত দিয়ে সামনে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মিতুর দিকে।
হ্যা, চড়টা মিতুই মেরেছে।
মিতুর চড় মারা দেখে আশেপাশে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, কারণ এই ছেলেটা টনি, একে সবাই খুব ভালো মতো চেনে, খুব বাজে একটা ছেলে, ভার্সিটির সব মেয়েরা ওর জন্য অতিষ্ঠ, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারে না কারণ টনি একটা বড় মাফিয়া গ্যাং এর সাথে জড়িত। একমাত্র ফারহান ছাড়া ওকে কেউ কিছু বলে ও না।
মিতুর চড় খেয়ে টনি তো খুব রেগে যায় আর বলে
—- তোর এত বড় সাহস, তুই আমার গায়ে হাত তুলেছিস, টনির গায়ে😠, আমার ক্ষমতা সম্পর্কে তোর কোন ধারণা আছে, আজ দেখ আমি তোর কি অবস্থা করি বলে যেই না ওর ওড়না ধরে সম্পূর্ণ টান দিবে তখনই ফারহান এসে টনির নাক বরাবর একটা ঘুসি মারলো, আর টনি ছিটকে যেয়ে নিচে পড়লো।
একটু আগে এদিকের অবস্থা দেখে ফারহানের একজন বন্ধু ফারহান কে যেয়ে খবর দেয় যে টনি একটা মেয়েকে আবার টিস করছে, এটা শুনে ফারহান খুব রেগে যায় কারণ টনিকে এতোবার বারণ করার পরও টনি আবার এসব শুরু করেছে।
তারপর ফারহান ওখানে যায় আর ওকে মারতে শুরু করে।
টনিকে মারতে মারতে ও প্রায় আধমারা করে ফেলে, টনির অবস্থা খুব খারাপ দেখে সবাই ওকে ফারহানের কাছ থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নেই।
টনি তো ছাড়া পেয়েই ছুট, সাথে ওর চেলা গুলো ও।
ফারহান টনি চলে যাওয়ার পর নিজের রাগ কনট্রোল করে মিতুর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়, মিতু ওকে দেখে বলে
—– অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আজ আপনি না থাকলে কি যে হতো।
—– ইট’স ওকে। এট’স মাই ডিউটি🙂
তারপর ফারহানের সাথে কথা শেষ করে মিতু আর দিনা ক্লাসের দিকে যায়।
আর ফারহান সেতো অপলক তাকিয়ে আছে মিতুর যাওয়ার দিকে, মুহূর্তেই যেন ওর চোখ দুটো আটকে গেছে মিতুর সৌন্দর্যে। ওর চোখে মিতুকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী এবং মায়াবতী মেয়ে বলে মনে হচ্ছে। ওতো এখন মিতুর সৌন্দর্যে বিভোর হয়ে গেছে, ওর আশেপাশে কি হচ্ছে সেদিকে ওর কোন খেয়াল নেই।
এদিকে ওর বন্ধু রা সমানে ওকে ডাকছে
—– দোস্ত, ওদিকে কি দেখছো, এমন করে😆
—— বিউটি( ঘোর লাগা কন্টে)
—– কোথায় বিউটি বন্ধু, আমরা তো কেউ দেখতে পাচ্ছি না, সপ্ন দেখছো বুঝি, তাই না😃
বলে সবাই একসাথে হেসে উঠলো। এবার ফারহানের ঘোর কাটলো যে ও এতক্ষন কি করছিলো।
তারপর আবার ওর বন্ধু নয়ন বললো
—- কি ব্যাপার বন্ধু প্রেমে পড়লে নাকি🤣
নয়নের কথা শুনে ফারহান বললো
—- এরকম একটা মায়াবতী কে দেখলে যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে রে।
ফারহানের কথা শুনে ওর বন্ধু রোহান মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নিলে রাকিব ওকে ধরে নেই আর বলে
—– আরে কি হলো তোর
—— আবার জিগায়, আরে এটা শুনে এটা শোন যে আমি ফারহানের কথা শুনার পরোও এহোনো বাইচা আছি কি কইরা, তুই শুনলি না ফারহান কি বললো ও নাকি প্রেমে পড়ছে, এটাও সম্ভব, ।
ওর কথা শুনে ফারহান তো রেগে ওকে মারতে শুরু করে
—– শয়তান কি বললি তুই, প্রেম কি শুধু তুই একা করতে পারিস নাকি
—– দোস্ত বিশ্বাস কর, আমি তা বলিনি, মানে তুই তো কোনো মেয়ের দিকে তাকাস ই না, আর হঠাৎ এই মেয়ের প্রেমে পড়ে গেলি হের লাইগা বলছিলাম।
——😠😠😠😠😠😠
—– আচ্ছা, বাদ দে তুই যে এতো দিনে কাউকে পছন্দ করেছিস এতে আমরা হগগোলেই খুব খুশি, এখন তুই শুধু বল তোর কি হেল্প লাগবো, ভাবি কে পটাতে, আমরা জান দিয়ে দেব তোর প্রেমের লাইগা😎, কি বল সবাই।
—– একদম😁
—–😶😶😶😶😶
তারপর ওরা ও ওদের কাজে চলে যায়।
এদিকে
মিতু ও ক্লাস শেষ করে বাড়ি চলে আসে।তারপর রাতে খেয়েদেয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে, কিন্তু কিছু তেই ঘুম আসছে না। ওর ও বার বার ফারহানের কথায় মনে পড়ছে।
কি মায়বি চেহারা, কথা বলার এটিটিউট, তাকানোর ইস্টাইল ইস সবকিছু যেন একদম মন কেড়ে নেওয়ার মতো।
ও কিছুতেই পর কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছে না, প্রথম দেখাতেই ফারহান যেন মিতুর মনটা কেড়ে নিয়েছে।
এসব ভাবতে ভাবতে ও একসময় ঘুমিয়ে পড়ে। তারপর সকালে উঠে আবার রেডি হয়ে নাস্তা করে ভার্সিটি চলে যায়।
.
.
.
.
.
চলবে………….
(কেমন হচ্ছে জানাবেন, আপনাদের সাড়া পেলে পরের পর্ব তাড়াতাড়ি দিবো, ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙂)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here