আমায় একটু ভালবেসো পর্ব -০৪+৫

#আমায়_একটু_ভালবেসো
#জান্নাতুল_ফেরদৌস_কেয়া

(৪)

,,,পরদিন বউভাতে যাবার সময় হয়ে গেছে। অর্ণার কিছুই ভালো লাগছে না। ওখানে গেলেই পর্ণা আর আদনানাকে একসাথে দেখতে হবে। যেটা তার জন্য, পো ড়া ঘা য়ে নুনের ছিটা দেয়ার মতো। কিন্তু এছাড়া কোনো উপায় নেই। মিতু আর ইরা এসে দেখল, অর্ণা এখনও তৈরি হয়নি।তাই ওরা দুজন মিলে অর্ণাকে সাজিয়ে দিল। সাদা রঙের একটা চুড়িদার।আর হালকা কিছু সাঁজ। ব্যস্ এটুকুতেই অর্ণাকে দারুণ লাগছে।বাড়ির সব ছেলে-মেয়েরা সবাই এক গাড়িতে ওঠেছে।গাড়িতে উঠার সময় আয়ান চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
,বাহ্ অর্ণা! আজকে তো তোকে দারুণ লাগছে। মনে হচ্ছে আমিই তোর প্রেমে পড়ে যাচ্ছি। তা চান্স দেয়া যায় নাকি আমাকে”এক চোখ টিপে(আয়ান)
,আয়ানের বাচ্চা! দেব এক বা রি তোর মাথায়। দিনদিন লা গা ম ছাড়া হয়ে যাচ্ছিস।
,এই সবাই একটা জিনিস খেয়াল করেছিস?(ইশান)
,কি?(মিতু
,ছেকা খাওয়ার পর অর্ণা আরো সুন্দর হ’য়ে গেছে! তাই না?
সবাই হো,হো করে হেসে উঠলো। ওদের কথা শুনে অর্ণার মাথা ধরে গেল । সে উঠে গিয়ে অন্য গাড়িতে বসল। গাড়ি ছুটে গেল তার গন্তব্য স্থলে।

,,আদনানদের বাড়িতে হু লুস্থু ল কান্ড। খাবারের গন্ধে সাড়া বাড়ি ম,ম করছে। লোকজনের সমাগমে গরমের হার বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। অর্ণা তার ছোট মার সাথেই বসে রয়েছে। স্টেজের মধ্যে পর্ণা আর আদনান বসে আছে। পর্ণার মুখে ভারী সাঁজ। পরনে গোল্ডেন কালারের লেহেঙ্গা। আদনানের সাথে কী বিষয় নিয়ে যেন হাসছে। বেশ মানিয়েছে দুজনকে। অর্ণা মুখে হাসি নিয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। নিয়তি বড় অদ্ভুত।
একসময় এইদিন গুলো কে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখা হয়েছিল। আজও তা স্বপ্নই রয়ে গেল।
অর্ণা ওঠে চলে গেল বাড়ির পিছন দিকটায়। বাগান হওয়ায় এদিক টা বেশ নিরিবিলি। অর্ণা আনমনে হয়ে কি যেন ভাবতে লাগল।

,এক্সকিউজ মি’
অর্ণা ঘুরে তাকালো। একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে, হাতে শরবতের গ্লাস নিয়ে। অর্ণা ঘুরতেই তার দিকে গ্লাস টা বাড়িয়ে দিল।
,জুস!আপনার জন্য। যা গরম পড়েছে খেয়ে নিন। ভালো লাগবে।
অর্ণা ভ্রু কুঁচকে দাঁড়িয়ে রইল। মনে,মনে বলল,
এই উ ট কো আ পদ টা আবার কে?এখানে কি চাই?
ছেলেটা বোধ হয় লাজুক স্বভাবের। সে বারবার এদিক, সেদিক তাকাচ্ছে। বেশ কিছুক্ষণ গ্লাস নিয়ে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকার পর। বেশ অনুনয় করে বলল,
,আপনি কি জুসটা খাবেন না?
লোকটা কথার ধরন দেখে অর্ণার বেশ হাসি পেল।
নিজেকে সামলে নিয়ে অর্ণা হাত বাড়িয়ে জুসটা নিল।
তা দেখে লোকটা খুশিতে গদগদ হয়ে বলল,
,আমার নাম তুহিন। আমি আদনান ভাইয়ার মামাতো ভাই হই। আপনি পর্ণা ভাবির বোন। তাই না?
,হুম।
,আমি আপনাকে বিয়ের দিন দেখেছিলাম। আচ্ছা আপনি এখানে কেন?আপনার সব কাজিন রা তো ওখানে আড্ডা দিচ্ছে। আপনি একা,একা এখানে কি করছেন?
,আমার হইচই ভালো লাগে না।
,ও আচ্ছা। তাহলে চলুন পুকুর পাড়ে যায়। ঐদিক টা আরো সুন্দর।
,ধন্যবাদ। তার কোনো প্রয়োজন নেই । আমি এখানেই কমফোর্ট ফিল করছি। আর আপনি যদি চলে যান, তবে আরো ভালো লাগবে।
অর্ণার কথায় ছেলেটার মুখ থমথমে হয়ে যায়।তার জীবনে বোধহয় এমন অপমানের মুখোমুখি হয়নি।মুখের উপর কেউ যে এভাবে বলতে পারে, তা তার জানা ছিল না।সে গম্ভীর মুখে গ্লাস নিয়ে জায়গা ত্যাগ করলো।
অর্ণা বিরক্তিকর চাহুনি নিয়ে ছেলেটার যাওয়ার পানে চেয়ে রইল।
‌,কি অসহ্যকর গায়ে পড়া ছেলে রে বাবা।

শশুর বাড়ির সব নিয়মকানুন পালন করে পর্ণাকে গাড়িতে ওঠালো।পাশে বসেছে আদনান, তার বোন আঁখি, কাকাতো বোন মাইশা আদনানের কলিগ, বন্ধুবান্ধব। এরা ছেলের বাড়ি থেকে যাচ্ছে মেয়ের বাড়িতে । আয়ানরা ও আছে সেখানে। অর্ণা উঠেছে বড়দের গাড়িতে। যদিও পর্ণা বলেছিল তাদের সাথে যাবার জন্য। তবে অর্ণা রাজি হয়নি। সে জানি পর্ণা ইচ্ছে করেই এসব করছে। তাকে কষ্ট দেবার জন্য।
,কিরে অনি তুই এখানে কি করছিস? ঐ গাড়িতে যা!ঐখানে সবাই মজা করবে তোর ভালো লাগবে।
,না ছোট বাবা। আমি এই গাড়িতেই যাব! ওখানে আমার ভালো লাগে না।
,আচ্ছা ঠিক আছে। তোর যা পছন্দ।শুধু একটা কথায় বলব। মন খা রা প করে থাকিস না মা। তাহলে যে আমাদের ভালো লাগে না।
অর্ণা হাসি দিয়ে বলল,
,ঠিক আছে।
,অর্ণা মা তুই যে ছেলেটাকে পছন্দ করেছিলি, সে দেখতে কেমন ছিল রে?
অর্ণা জোরপূর্বক হেসে বলল,
,তার কথা বলতে আমার ভালো লাগে না ফুপি।আমি চাই তাকে ভুলে যেতে। আশা করি তার বিষয়ে আর কিছু জিজ্ঞেস করবে না তোমরা।
,আচ্ছা! আর কখনো বলব না। তুই ভুলে যা এসব। আগের মতো হয়ে যা।

বাড়িতে এসেই নিজের রুমে দরজা বন্ধ করে ফ্লোরে বসে পড়ল অর্ণা। অঝোরে কাঁদতে লাগলো সে।
কেন তার সাথেই এমন হলো। অর্ণা কান্না করছিল। এর মাঝেই তার ফোনে একটা মেসেজ এলো।দু’হাতে চোখটা মুছে। ওঠে গিয়ে দেখলো আয়ান একটা ভিডিও শেয়ার করেছে। অর্ণা সেটাতে ক্লিক করতেই একটা মেয়ের জীবনের গল্প লেখা। পুরোপুরি অর্ণার সাথে না মিললেও। বেশ কিছু ঘটনা সাদৃশ্য রয়েছে। এখানে লেখা ছিল, মেয়ে টা একটা ছেলের সাথে প্রেম করে। একসময় ছেলেটা মেয়েটা ধোঁকা দিয়ে চলে যায়। মেয়েটা মানসিক ভাবে ভে ঙে পড়ে। সু ই সা ই ড করার পথ বেছে নেই। কিন্তু লাস্ট মূহুর্তে সে নিজেকে শক্ত করে নেই । নিজেকে এমন ভাবে তৈরি যে শেষে মেয়েটা কে দেখে ছেলেটা আপসোস করে।
অর্ণা ভিডিও টা দেখে বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকে। শুরু থেকে শেষ অবধি ভাবতে থাকে। যে নিজের সাথে কি কি হয়েছে। পরে সিদ্ধান্ত নেই নিজেকে শক্ত করবে। আর এভাবে নিজেকে তিলে,তিলে কষ্ট দেবে না।

চলবে,,,,#আমায়_একটু_ভালবেসো
#জান্নাতুল_ফেরদৌস_কেয়া

(৫)

আয়নায় নিজেকে খুঁটিয়ে,খুঁটিয়ে দেখছে অর্ণা। মারিয়া বেগম এসে দরজায় টোকা দিল,
,কি করিস অর্ণা?
হাতে থাকা কাজলটা রেখে। ঘুরে তার দিকে তাকালো। মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
,আমাকে কেমন লাগছে, বলো তো ফুপি!
মারিয়া বেগম ভাইজি কে দেখে অবাক হলেন। কিছু প্রশ্ন করতে গিয়ে ও থেকে গেলেন। দুহাতে অর্ণার মুখে রেখে বলল,
,মাশা-আল্লাহ! কি সুন্দর লাগছে আমার মা টা কে।কারো নজর যেন না লাগে।
,ধন্যবাদ ফুপি।
,চল মা নিচে চল।ওরা সবাই খেতে বসেছে। তোর বাবা ডাকছে তোকে!
,হ্যাঁ চলো।
মারিয়া বেগম কাচুমাচু করে বলল,
,একটা কথা জিজ্ঞেস করি অর্ণা?
,হ্যা ফুপি বল না’
,না মানে! আজ তোকে অন্যরকম লাগছে।
,কি রকম?
,সুন্দর লাগছে। তুই কি আবার আগের মতো হয়ে গেছিস মা?
অর্ণা মুচকি হাসলো। মারিয়া বেগম খুশিতে অর্ণাকে জরিয়ে ধরল।আনন্দিত সুরে বলল,
,আজ যে আমি কি খুশি হয়েছি তা বলার বাইরে। উফ্ আমার অর্ণা আবার সেই আগের মতো হাসিখুশি থাকবে ভাবতেই খুশি, খুশি লাগছে আমার।
ফুফুর ভালবাসা দেখে চোখ ভিজে গেল অর্ণার। মানুষ গুলো নিঃস্বার্থ ভাবে ভালবাসে তাকে। এদের দিকে তাকিয়ে হলেও তাকে শক্ত হতে হবে।

লম্বা এক সারি করে দস্তরখানা বিছানো হয়েছে। তার মধ্যে সবাইকে খেতে দেয়া হবে। যদিও ডাইনিং টেবিল আছে। তবে দাদুর আমল থেকেই এই নিয়ম।সকলে তা পালন করে।
পর্ণার শশুরবাড়ির লোকেদের ডাইনিং এ বসানো হয়েছিল। কিন্তু তারাও নিচে বসে খাবে বলেছে। অর্ণা সিড়ি দিয়ে দোতলা থেকে নেমে। সোজা রান্নাঘরে চলে গেল। সেখানে বাড়ির সব বউয়েরা খাবার তৈরি করছে।
অর্ণা গিয়ে জিজ্ঞেস করল,
,মা আর কি,কি কাজ আছে আমাকে বল।আমি করে দিচ্ছি।
সকলেই হাতের কাজ ফেলে অর্ণার দিকে নজর দিলো। বাড়ির প্রত্যেকটা লোকই অবাক হলো। অর্ণা উপস্থিতিতে। যে মেয়ে দু’দিন আগে ও ঘরের ভিতর গুমরে ম র ছি ল। তার এতো স্বাভাবিক আচারণ। ব্যাপারটা মারিয়া বেগম বুঝতে পেরে সবাই কে ইশারায় চুপ থাকতে বললেন। অর্ণার বাবার ভাই চারজন। আর বোন দুইজন। সবাই একসাথেই আছে। মেঝো কাকার বউ রাবেয়া বলে উঠলো,
,এই না,না। তোকে কিছু করতে হবে না। তুই যা ওখানে গিয়ে বস।আমরাই সব করতে পারব। যা ”
অর্ণা আর কথা বাড়ালো না। হল রুমে গিয়ে বাবার পাশে বসলো। এরশাদ সাহেব মেয়ের মাথায় হাত রাখলো। আদুরে সুরে বলল,
,খানা খাবে না আম্মাজান?
,হুম খাব বাবা।
,তাহলে চলো। ওরা তো সবাই বসে পড়েছে।
অতঃপর বাবা,মেয়ে খাবার খেতে গেল। দূর থেকে এসব দেখে জ্ব লে পু ড়ে ছারখার হচ্ছে পর্ণা। অর্ণা যে নিজেকে এতো তারাতাড়ি গুছিয়ে নেবে।তা ভাবতে পারেনি পর্ণা। অর্ণা কাছে আসতেই তার দিকে অ গ্নিচ ক্ষু নিয়ে তাকালো। তা দেখে মুচকি হাসলো অর্ণা।
,কি অর্ণা “কেমন আছো?আজকাল তো তোমার দেখা পাওয়া যায় না।
আদনানের কথা শুনে বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো অর্ণার। পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
,আমি ভালো আছি! আপনি কেমন আছেন স্যার?
,হুম ভালো। তা পড়ালেখার কি খবর চলছে তো সব ঠিকঠাক?
,জ্বি স্যার।
,আহ্ তোরা কি শুরু করলি বলতো। এখানেও কি তোরা ছাত্রী আর স্যার নাকি যে, জ্বি স্যার,জ্বি স্যার করছিস।
,তাহলে কি বলে ডাকবো ছোট বাবা?
,কেন” দুলাভাই ডাকবি!এমনিতে ও তো তোরা দু’মিনিটের ছোট বড়।আজকাল কি তা ধরে নাকি। যেহেতু পর্ণার আগে বিয়ে হয়ে গেছে। তাই তুই ছোট। আর তাই আজকে থেকে দুলাভাই ডাকবি আদনানকে।
,না আংকেল। অর্ণা আমাকে স্যারই বলুক। আমার কোনো সমস্যা নেই ।
,আচ্ছা ‘তোমরা কথা বন্ধ করে খাওয়া শুরু করো তো।
সবাই খেতে আরম্ভ করলো। কেউ আর কোনো কথা বললো না। রা গে পর্ণা কিছুই খেল না। প্লেট ভর্তি ভাতের মধ্যে পানি ঢেলে উঠে পড়লো । এরশাদ সাহেব অনেক বার সাধলেন মেয়েকে। কিন্তু সে আর খেল না। খাবার খাওয়ার সময় এসব কিছুই দেখেছে অর্ণা। কিন্তু সে কিছু বলেনি।নিজের খাওয়া শে ষ করে উঠে চলে গেল নিজের রুমে।

অর্ণা রুমে ঢুকতেই পর্ণা এসে হাজির। সা পে র মতো ফোঁস ফোঁস করতে, করতে বলল,
,ড্রামা,!ড্রামা করছিস তাই না। আমার সুখ দেখে তো তোর স হ্য হচ্ছে না। তাই এসব করে বাবা মায়ের কাছে ভালো হবার জন্য ডং করছিস!
,হাসালি পর্ণা। তোর সুখ দেখে আমার সহ্য হচ্ছে না। নাকি আমাকে স্বাভাবিক দেখে তুই মেনে নিতে পারছিস না।কোনটা সত্য বলতো।
,হ্যা,হ্যা।তোকে স্বাভাবিক দেখেই আমি অবাক হচ্ছি। আচ্ছা আদনানকে তো এতো ভালবাসতি।তা সেই ভালবাসা কি দুদিনের মাথায়ই শেষ। এ কেমন ভালবাসা রে। অন্য কেউ হলে তো গলায় দড়ি দিতো। অথচ তুই তা না করে। আমার সুখে ভাগ বসাচ্ছিস
অর্ণা হাসলো। দাঁড়িয়ে আয়নার সামনে গিয়ে। আয়নায় পর্ণার প্রতিবিম্বর উপর হাত রেখে বলল,
,ভালবাসা কখনো শেষ হবার জিনিস নয় পর্ণা। তবে হ্যা! আদনান স্যার ততদিন পর্যন্ত আমার ছিল। যতদিন তুই তার জীবন না এসেছিল। কিন্তু এখন আর নেই। কারণ সে এখন তোর। আর আমি নিজেকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে এসেছি।তার যথেষ্ট কারণ আছে। তুই তো জানিস, ব্যবহার করা জিনিসের প্রতি। আমি অর্ণা কখনো নজর দেই না।
রা গে, অপ মানে মুখ থমথমে হয়ে গেল পর্ণা। পারছে না সামনে থাকা মানুষ টাকে চি বি য়ে খেয়ে ফেলতে।
,কি করা হচ্ছে দু বোন মিলে?
,ও স্যার। আসুন না ভেতরে আসুন। নিন বসুন
,হুম বসলাম । কিন্তু পর্ণা চেহারা এমন হয়ে আছে কেন। কিছু কি হয়েছে?
,আসলে স্যার পর্ণা তার এক্সের কথা মনে করে কান্না করছিল তাই চেহারা এমন হয়ে আছে।
অর্ণার কথা শুনে আদনান বেশ অবাক হলো। আর পর্ণা হাসার চেষ্টা করল।
,পর্ণার এক্স আছে? কই আমাকে তো কিছু বলেনি।
,হুম ছিল তো!
,এই অর্ণা। তুই চুপ করবি । আসলে অর্ণা আপনার সাথে মজা করছে । আমি তো প্রথমে আপনাকে বলেছি যে আপনি আমার প্রথম এবং শে ষ ভালবাসা।
এই বলে পর্ণা আদনানকে জরিয়ে ধরল,,,

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here