#আমার_তুমি ❤️
#লেখিকা:-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤️
#পর্ব:-২৮
—“দেখেছ তো কি হলো ? তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে পাঁ টা কেটে কি করলা একটুও দেখে চলতে পারো না।”
—আরুশিকে নিয়ে রুমে এলো রাইয়্যান বেডের এর উপর বসিয়ে দিয়ে ফাস্ট ওয়ারের বক্স এনে জায়গাটা ব্যান্ডেজ করে দিল । এমন ভাবে ব্যান্ডেজ করলো যেন ব্যাথাটা আরুশি না রাইয়্যান নিজে পেয়েছে।
আরুশি চোখ খিচে বন্ধ করে আছে ।
—“খুব বেশি ব্যথা করছে!!”
—আরুশি রাইয়্যানের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে ও চিন্তিত হয়ে তাকিয়ে আছে তাই বলল,,,
—“না একটু একটু আপনি এত চিন্তা কইরেন না ঠিক আছি আমি।”
—“তুমি বললে আমাকে বিশ্বাস করতে হবে । আর এরকম বাড়াবাড়ি করবে না চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ো ।কাল সকালে উঠে আঙ্কেলের কাছে দিয়ে যাব।”
আরুশি কিছু বলার সাহস করে না আর। ও মাথা নাড়িয়ে সায় জানিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। রাইয়্যান লাইট অফ করে দরজা চাপিয়ে নিজের রুমে ফিরে আসে।
,,
—“একটুর জন্য আজ আমার হাত থেকে বেঁচে গেলি তুই আরমান!! নেক্সট টাইম তোকে মরতে হবে তুই ঠিক হয়ে খুব ভুল করছিস । তুই একবার কথা বলতে পারলে আমার সবকিছু ফাঁস হয়ে যাবে আর আমি সেটা কখনোই হতে দেবো না। তুই মুখ খোলার আগেই আমি তোর মুখ চিরকালের জন্য বন্ধ করে দেবো। ভেবেছিলাম আধমরা হয়ে বেঁচে থাকবি এজন্য প্রথমে কোন স্টেপ নেইনি। কিন্তু তুই তো ধীরে ধীরে একদম সুস্থ হয়ে উঠছিস এটা যে আমার জন্য বিপদ হয়ে আসছে আর আমি নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনতে পারি না । পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই তোকে আমি শেষ করে দেবো। এই নার্সটার জন্য আমার সমস্ত প্লান নষ্ট হয়ে গেল। নার্সটা এখন না আসত তাহলে তুই আজ আমার হাতে শেষ হতী ।”
ঘড়ির কাঁটায় সারে চারটা বাজে এই সময় আরুশির বাবা আরমান সাহেবকে একটা ইনজেকশন দিতে হয় এজন্য নার্স ইঞ্জেকশন দিতে আসে আর এই সময় ওই লোকটা লুকিয়ে পড়ে দরজার আড়ালে । নার্সটা ভিতরে ঢুকে আরমানের কাছে গিয়ে দাঁড়ায় এই লোকটা হচ্ছে হসপিটালের স্পেশাল রোগী এনার ওষুধে যদি একটু ভুল হয় তাহলে তার চাকরি থাকবে না এইজন্য সে রাতে ভালোমতো ঘুমোতে পারে না। বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে আছে লোকটার দিকে কিন্তু তার রাগ বিরক্ত হওয়া কারো আসে যায় না কারণ সে একজন সামান্য কর্মচারী। এদিকে লুকিয়ে পড়া লোকটা দেখে নার্সটা আরমানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এই সুযোগে সে দরজার আড়াল থেকে মুখের কাপড় টা ভালো করে পেয়েছে বেরিয়ে আসে হসপিটাল থেকে।
একটুর জন্য ধরা পরতে পরতে বেঁচে গেছে। ডক্টরের সাথে কথা বলে সে জানতে পেরেছে যে আরমান খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে । এজন্য সে আজকে রাতে তাকে মারতে এসেছিল কিন্তু মারতে পারল না। কিন্তু সে হাল ছাড়েনি নেক্সট দিন আরমানকে তার হাত থেকে কেউ বাঁচতে পারবে না।
—“কিগো কই গেছিলা এত রাতে?”
—“একটা দরকারি কাজ সারতে গিয়েছিলাম।”
–“এত রাতে আবার কিসের কাজ তোমার??”
—“সে তুমি বুঝবে না তুমি ঘুমাও!!”
—“বল আমাকে এত রাতে আবার তুমি অঘটন ঘটাতে গিয়েছিলে । তুমি কি কোনো খারাপ কাজ করতে গিয়েছিলে নাকি।”
—-“বেশি কথা বলো না মেশমি চুপচাপ ঘুমাও আর আমাকে ঘুমাতে দাও সারারাত জেগে ছিলাম।”
বলেই সে শুয়ে চোখ বন্ধ করে পড়ে ফেলল,,,
মিশমি স্বামীর দিকে তাকিয়ে আছে সে নিশ্চিত আজও একটা খারাপ কাজ করতে গিয়েছিলো। এত রাতে কি ভালো কাজ করতে যায় নাকি লোকটা কেন এমন। তার সবচেয়ে বেশি চিন্তা হয় আরুশিটার জন্য না জানি আবার কোন খারাপ কিছু করে ফেলে লোকটা ওর সাথে।
,,
—“ডক্টর আঙ্কেল আমার বাবা পুরোপুরি ঠিক কবে হবে। উনি নিজের পায়ে দাঁড়াবে কবে , কথা বলবেন কবে ডাক্তার আংকেল।”
—“তুমি চিন্তা করো না মামনি তোমার বাবা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে। আল্লাহকে ডাকো আল্লাহ চাইলে সবকিছু হয়।”
রাইয়্যান ডক্টরের সাথে আরুশির বাবাকে নিয়ে আরও কিছুক্ষণ কথা বলে বাসায় ফিরে আসে। সকাল সকাল উঠে আরুশিকে নিয়ে হসপিটালে আসে।
বাবাকে নিয়ে চিন্তাটাও বুঝতে পারে বাবা মাকে নিয়ে কতটা কষ্ট পাই সেটা সবাই বুঝে। হসপিটালে চলে আসে। আরুশি ওর বাবার সাথে কথা বলে কিন্তু আরশির বাবা শুধু মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে পেয়েছে একটু আর কিছুই করেনি। ডাক্তার বলেছে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হবেন তারপর আরুশিকে ঠান্ডা করে বাসায় ফিরে আসে ।
এসে রাইয়্যান আবার শুয়ে পড়ে।
আরুশি এখন শান্ত হয়ে সোফায় বসে আছে। পা ব্যথা কমে এসেছে। ডাক্তারের কাছে এসে পা দেখিয়েছে রাইয়্যান। ডাক্তার বলেছে , একটা ওষুধ খেলে হবে সকালে খাবার খেয়ে ওষুধ খেতে হবে । আঙ্কেল আমার পাশে এসে বসল , আমি আঙ্কেলের দিকে তাকিয়ে বললাম,,
— “কে গুড মর্নিং আংকেল ।”
আংকেল ও আমাকে” —গুড মর্নিং বলে ”
আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে,,” কি হয়েছে ” বলে “ব্যথা কিভাবে পেলাম”
আমি বললাম ,,, না কিছু
চুপ করে আছি কি বলবো আসলে রাতে কি পাগলামি করলাম। স্বপ্ন দেখে এতটা পাগলামি করা আমার উচিত হয়নি । স্বপ্ন কখনো সত্যি হয় না এটা আমার বোঝা উচিত ছিল। রাইয়্যান এতবার বারণ করা সত্বেও কি পাগলামি করলাম হসপিটালে গিয়েও।
রাইয়্যান বলেছো,, দেখেছো আঙ্কেলের সুস্থ আছে তুমি অযথা টেনশন করলে বল। স্বপ্ন সত্যি হয় না এটা নিয়ে এত ডেস্পারেট হইও না তবুও কি পাগলামিটা না করলেই শেষে কিনা পা কেটে বসলে।
আসলে তখনকার কথা ভেবে লজ্জায় মাথা নিচু করে ছিলাম। তবু খুব ভাল লেগেছে যে বাবা সুস্থ আছে এর থেকে আর কিছু বড় হতে পারেনা। আঙ্কেল’কে এসবের কিছু থেকে বললাম না।
তাকে বললাম,,, যে এমনি একটু অসাবধানতায় পা কেটে গেছে।
আংকেল বলে,,” সাবধানে থাকতে পারো না । রান্নাঘরে যাবে না । তোমার কাজ করার দরকার নেই কাজ করার যথেষ্ট মানুষ আছে।
আমি মাথা নেড়ে সায় জানালাম।
খাবার টেবিলে বসে আছি আঙ্কেল একপাশে , আরেক পাশে আমি। একটু পরে রাইয়্যান এসে আমার পাশে বসলো।
এসেই আগে আমার দিকে প্রশ্ন ছুরলো,,,
—” এখন পা কেমন আছে ব্যাথা কমেছে??”
আরুশি মাথা নেড়ে জানালো ‘ হ্যা ‘ জানালো।
খাওয়ার মাঝে আরুশির ফোনটা বেজে উঠলো ফোন হাতে নিয়ে দেখে মামি কল করেছে।
ব্রু কুঁচকে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে এই সময় মামি কল করলো কেন??
—“কে কল করেছে আরু!”[রাইয়্যান খাওয়ার মাঝে আরুশির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল]
—“মামি কল করেছে। হঠাৎ মামি কল করল কেন বুঝতাছিনা!”
—“রিসিভ করো না হলে বুঝবে কিভাবে দরকার হতে পারে কোনো।”
–আরু ফোন রিসিভ করল;
—হ্যাঁ মামী কেমন আছো?
—ভালো আছি রে ।
তুই কেমন আছিস?
—আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
—আরুশি মা তোর সাথে আমার কিছু জরুরী কথা আছে ।
আরুশি ভাবনায় পড়ে গেল আমি আবার কি জরুরী কথা বলবে!
—হ্যাঁ মামী বল কি জরুরী কথা । সবাই ঠিক আছে তো রিমন, আপু, মামা সবাই ভালো আছে?
—সবাই ভালো আছে।
—কি জরুরী কথা ??
—অনেক জরুরি কথা আছে তোর সাথে আমার। কথাগুলো তোর জানা দরকার আগে আমি বলতে পারি নাই তোকে কোনো বিষয়ে। কোনো কিছুই কিন্তু এখন আমার মনে হচ্ছে তোকে বলাটা উচিত।
আরুশি বুঝতে পারছে না মামী কি কথা বলতে চাইছে কি বলে নাই কি বলা উচিত।
—মামি আমিতো খাচ্ছি তোমার সাথে আমি পরে কথা বলি।
—কথাটা খুব জরুরী এখনই জানাটা দরকার।
–দাঁড়াও আমি খাবারটা শেষ করি তোমাকে ফোন দিচ্ছি। তুমি খেয়েছ?
—আরুশির মামি আর কিছু বলল না সে শুধু আচ্ছা বলে ফোন রেখে দিল।
হাত-পা কাঁপছে তার ভয়ে সামনে লোকটার তার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আরুশির
মামি ভাবতেই পারে নাই এই সময় লোকটা এখানে এসে যাবে।
—-তুমি এখানে কি করছো তুমি না অফিসে গেলে!!
[ভয় তোতলাতে তোতলাতে কথাটা বলল]
–আরুশি মামা কিছু না বলেই আরুশির মামীর কাছে এসে ঠাস করে তার গালে চড় বসিয়ে দিল তারপর ফোনটা কেড়ে নিয়ে ছুড়ে মারল ফ্লোরে।
চুলের মুঠি ধরে বলে উঠলো,,,
—ঘর শত্রু , তোর এত বড় সাহস তুই আমার বিরুদ্ধে কলকাঠি নাড়ছে। এখন বাসায় না আসলে তো আমি জানতেই পারতাম না। আমি দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পুসচ্ছি সে আমার পিছন থেকে ছুরি বসানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
—ছাড়ো আমাকে আমার লাগছে। আমি আরুশিকে সব বলে দেবো যে তুমি ওর বাবাকে মারতে চাইছ।
—কথাটা শুনে আরুশির মামা আরুশির মামীকে ছুড়ে মারল ফ্লোরে । তিনি নিচে পড়ে ব্যথায় কুঁকড়ে আহ করে উঠলো।
—তোর সাহস তো কম না তুই এখনো বলছি সব বলে দিবি তোকে আজকে মেরে ফেলবো।
—তুমি এমন কেন করছো আরুশি বাবা তোমার কি ক্ষতি করেছে। মা মরা মেয়ে তাকে তো আগে তুমি দেখে রাখতে আমি তোকে সহ্য করতে পারতাম না এখন তুমি ওর বাবাকে ওর কাছ থেকে কেড়ে নিতে কেন চাইছ। কি ক্ষতি করেছে তোমার লোকটা । উনিতো আধমরা হয়ে বেঁচে আছে । আরুশির বাবা কে তুমি কেন মারতে চাইছ কি শত্রুতা তার সাথে তোমার?? কাল রাতে তুমি ওনাকে কেন মারতে গিয়েছিলি!
—তোকে আমি কোন কথা বলতে বাধ্য না। চুপ করে মুখ বন্ধ করে বসে থাকবি যদি কোন কথা আরুশির কানে গেছে তো তোকে মারতে আমি দুইবার ভাববো না। তুই আমার বউ বলে যে পার পেয়ে যাবে ভাবিস না নিজের বোনকে মারতে আমি দুইবার ভাবি নি আর তুই কে?
আরুশির মামি চোখ বড় বড় করে স্বামীর দিকে তাকাল,, কি বলছেন উনি নিরূ আপা (আরুশির মার নাম নিরুপমা)কে মেরেছে তার মানে কি আরুশির মাকে উনি মেরেছে । উনি বিশ্বাস করতে পারছেন না এ আমি কাকে দেখছি এ সব আমি কি শুনছি । সকালে যখন শুনলাম আরুশি বাবাকে রাতে মারতে গিয়েছিল তখন ও উনি থ মেরে বসে ছিলেন শোনার পর থেকেই।
কথাগুলো শোনার পর থেকে উনি ভেবেছে আরুশিকে এসব টা জানিয়ে দেবে তাই স্বামীর অফিসে যাওয়ার জন্য বসেছিলেন । আরশির মামা বাসা থেকে বের হতে উনি আরুশিকে ফোন দেয় কিন্তু আরুশি মামার বাসায় কেন ফিরে আসে নিজেই বুঝতে পারছেন না ।
এমন কি বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলে যায় যদি বেশি মাতব্বর করে বলে দেয় আরুশিকে তাহলে উনি ওনার ছেলের রিমনকে নাকি মেরে ফেলবে এটা শোনার সাথে সাথে উনি পাথর হয়ে যায় নিজের ছেলেকে মারবেন। কি বলছেন কি পাগল হয়ে গেল নাকি লোকটা।
খাওয়া শেষ করে আরুশি মামীকে ফোন দেয় কিন্তু নাম্বার বন্ধ বারবার ফোন দেন কি ব্যাপার একটু আগে আমার সাথে কথা বলল এই টুকু সময়ের মাঝে ফোন বন্ধ হল কেন? হয়তো ফোনে চার্জ নাই আরুশি ওর মামাকে ফোন দেয়??
—হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম , মামা কেমন আছো?
–~~~
—হ্যাঁ আমি ভালো আছি । মামী কোথায় মামীকে দাও তো আমাকে একটু আগে ফোন দিয়ে বলল কি নাকি জরুরি কথা বলবে আমাকে!!
—-~~~~
—ও তুমি অফিসে চলে গেছো। আচ্ছা মামির ফোন তো বন্ধ পেলাম আমি । ফোন দিয়েছিলাম মামিকে বাসায় যেয়ে ফোন দিও । হয়তো মামির ফোনে চার্জ নাই। আচ্ছা ভালো থেকো মামা পরে কথা বলবো নি।
মামি কি জরুরী কথা বলবে হঠাৎ ফোন দিয়ে এসব কথা বলল কেন? আরুশি সে নিয়ে ভাবছে কি এমন জরুরী কথা আমার সাথে বলতে চান মামি আমাকে। ফোনের দিকে তাকিয়ে আরেকবার মামি নাম্বারে ফোন দিল না এখনো বন্ধ বলছে পরে ফোন দিতে হবে।
,,
রাইয়্যান আরুশি হাত ধরে তানিশাদের বাসার ভিতরে ঢুকলো ।
আরুশি চারপাশে হা হয়ে তাকিয়ে আছে অপূর্ব সুন্দর করে বাসাটা সাজানো হয়েছে। চারপাশে ফুল বাতি ক্যানেলা দিয়ে সাজানো হয়েছে মানুষের অভাব নাই অনেক মানুষ মানুষই গিজগিজ করছে পুরো বাসা। কাউকে চিনি না সবার দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছি। তানিশা আপু স্টেজে বসে আছে তার পাশে বসে আছে তার হাজবেন্ড। দূর থেকে তাদের দিকে তাকিয়ে আছি। তার হাজবেন্ড খুব সুন্দর দুজনকে খুব মানিয়েছে। একপাশে কিছু ছেলেমেয়ে ডান্স করছে আরেক পাশে চেয়ারে কিছু লোক বসে আছে। ক্যামেরাম্যান ছবি তুলছে সবার একজন ভিডিও করছে আমি আজকে শাড়ি পড়ে এসেছি আমি শাড়ি পড়তে পারি না তবু রাইয়্যানের কথা শুনে আমায় শাড়ি পড়া হয়েছে। এইখানে কেউ শাড়ি পড়ে নাই সবাই সর্ট সর্ট ড্রেস পড়ে আছে তাদের মাঝে একা শাড়ী পরে কেমন জানি আনইজি ফিল হচ্ছে,,
আঙ্কেল আজকে এসেছেন তানিশা আপু কালকে আসতে বলেছিল কিন্তু আঙ্কেল আসিনি আজকে সে যে শুধু অনেকবার ফোন করে বলাতে আঙ্কেল এসেছে । আঙ্কেল কিছু লোকের সাথে গল্প শুরু করে দিয়েছে। রাইয়্যান আমাকে নিয়ে এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে।এখনো মনে হয় ওনাকে কেউ খেয়াল করেনি।
হঠাৎই সবাই রাইয়্যানের দিকে আসতে লাগলো শুরু করে দিল এ কত লোক আসছে আমি তার পাশে দাঁড়িয়ে আছি সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলেছে হ্যান্ডশেক করছে। কিন্তু কেউ আমাকে কিছু বলছে না?
সবাইয়ের রাইয়্যানের সাথে গল্প করছে হাসি তামাশা করছে এর মাঝে আমার সবথেকে অদ্ভুত ভাবে কাটছে। চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি আর তাদের কথা শুনেছ চলেছি।
সাংবাদিকরা আমাদের ছবি তুলে যাচ্ছে একের পর এক অসহ্য লাগছে। আমি এবার জোরে তার হাত চাপ দিলাম সাথে সাথে রাইয়্যান আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল ,,,
—কি হয়েছে?
—হাত ছাড়ুন তো আমার আমি ওই দিকটায় যাব।
—ওইদিকে যাবি কেন তোমার কিছু লাগবে তাহলে বল আমাকে?
—আমার কিছু লাগবে না আপনি আমার হাত ছাড়ুন তো আমার ভাল লাগছে না সবাই কেমন ছবি তুলছে আমাদের একসাথে।
—আরে ওখানে সমস্যা কি তুলতে দাও তো তুমি চুপ করে দাড়িয়ে থাকো!
—না আপনি আমার হাত ছাড়েন তো । আমি তানিশা আপুর সাথে কথা বললো। তার সাথে তো আমি কথাই বলতে পারলাম না। আসার পর থেকে এখানে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি। আপনি তো ওনাদের সাথে গল্প করছেন আমি এখানে থেকে কি করব?
—আচ্ছা চলো আমিও যাব।
—আপনার যেতে হবে না আমি একাই যেতে পারবো। আপনি ওনাদের সাথে গল্প করেন বেশি করে!
—বাপরে আমার আরু জানটা আমার উপর রাগ করেছে । আচ্ছা যাও আর কারো সাথে গল্প করবো না শুধু তোমার সাথে গল্প করবো।
(ফিসফিস করে কানে কাছে গিয়ে কথাটা বলল)
ওরা দুজন ফিসফিস করে কথা বলছে দেখে সামনের লোকটা চলে গেছে।
রাইয়্যান আরুশির কোমর জড়িয়ে ধরে একহাতে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে।
—-কি হচ্ছে আমি কিন্তু এসব পছন্দ করিনা হাত সরান।
—উফ নিজের বউকে একটু ছুঁতেও পারব না কি দর্জ্জাল বউ আমার।
—আরুশির অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো রাইয়্যানের দিকে,,
কি বললেন?
—কই কি বললাম? আমি তো বললাম কি মিষ্টি বউ আমার কি সুন্দর করে কথা বলে মিষ্টি মিষ্টি করে?
বলেই টপ করে আরুশির গালে চুমু দিয়ে বসলো,, সাথে সাথে আরুশি গালে হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে রাইয়্যানকে দূরে সরিয়ে দিল।
—ছি ছি ছি কি করলেন এটা কেউ দেখে ফেলে নি তো। আশেপাশে তাকাতে লাগলো আরুশি তারপর হাত উঠিয়ে বলল ,,,
—-আপনি আমার থেকে ১০ হাত দূরে থাকবেন।
বলে আরুশি তানিশা আপুর দিকে চলে যেতে লাগলো কথা শুনে বাঁকা হেসে রাইয়্যান ওর পেছনে পেছনে গেল।
চলবে ❤️