আমার তুমি পর্ব ৭+৮

#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ৭

–হুয়াট দ্যা হেল, ইউ ইচ্ছে করে ফেললে তাই না। ইডিয়েট মেয়ে,

–আরুশি চোখ বন্ধ নিজেকে শক্ত করলো প্রচণ্ড জ্বলছে জায়গাটা দাতেদাত চেপে চোখ খুললো,, আপনি কি বলতে চান আমি ইচ্ছে করে আপনার কফি ফেলছি??

–বলতে চাইনা বলছি? তোমাকে কে বলছে আমার জন্য কফি আনতে যা পারো না তা করতে আসো কেন? উফফ আববু কি জন্য তোমাকে রাখলো কে জানে যতসব এখন আমি কী খাবো?

বিরক্ত হয়ে তাকালো রাইয়্যান আরুশির দিকে আরুশি,,
কিছু বলল না চুপ করে নিচে হয়ে ভাঙা কাপ উঠাতে লাগলো হঠাৎ আরুশি চমকে হাতের দিকে তাকালো রাইয়্যান ওর পোড়া জায়গা ধরে দেখছে,

–এটা কি করে হলো? তুমি তো আমাকে শায়েস্তা করতে কফি ফেলছো তাহলে নিজের হাতে লাগলো কি ভাবে?

–আমি আপনাকে কোন শায়েস্তা করতে ফেলি নি। আপনার জন্য কফি টা পরে গেছে।

–তুমি কি মিন করছো, আমি ফেলছি মানে কি? কফি তুমি আনছো আর তোমার হাতে থেকে পরেছে এতে আবার আমাকে দোষারোপ করছো কেন, আর ইউ ম্যাড?

–আমি এনেছি ঠিক আছে। কিন্তু ফেলছেন আপনি আপনার হাতের বারি খেয়ে এটা পরেছে।

–তো এতে আমার দোষ কোথায় তোমাকে কে বলেছিল হাতে তলে আসতে।

–দেখুন ঝগড়া করবেন না আমার সাথে। আমি এই জন্য আপনার কফি আনতে চাইনি চাচি বলল তার মাথা ব্যাথা করছে তাই না হলে আপনার সামনে ও আসতাম না।

—এমন ভাবে বলছো যেন তোমাকে দেখার জন্য আমি পাগল হয়ে ছিলাম।

–সেটা আমি কখন বললাম, আপনি আসলেই অসভ্য লোক ছারুন হাত আবার হাত ধরেছেন কেন? আরে টানছেন কেন হাত ব্যাথা করছে !

–কি বললে আমি অসভ্য?

–হ্যাঁ ছারুন আমি আপনার কফি আবার নিয়ে আসি? আমার জন্য আপনি কেন কফি না খেয়ে থাকবেন?

–লাগবে না এখানে বসো আমি বরফ নিয়ে আসি।

–বরফ দিয়ে কি হবে? দেখুন আমি সত্যি হচ্ছে করে ফেলিনি এটা,

–সেটা পরে শুনছি,

বলেই রাইয়্যান উঠে গেল এসে আরুশির হাতে বরফ ধরে রাখলো কাটা জায়গার ঠান্ডা পরতেই আরুশি ওরনা চেপে ধরলো,

–সরান কি দিচ্ছেন ওফ সরান দেখুন আমি আপনার কাছে সরি চাইছি বলে এভাবে আমাকে কষ্ট দিচ্ছেন।

–আমি তোমার মতো ঝগড়ুটে না ওকে আর তোমার মনে হচ্ছে আমি তোমার ক্ষতি করছি। এটা তোমার ভালোর জন্য দিচ্ছে।

–দরকার নাই ভালো ছারুন।

আরুশি হাত ছারিয়ে উঠে কাচেঁর টুকরো নিয়ে বেরিয়ে এলো।
খাটের উপর শুয়ে আছে আন্কেলের রুমে উকি দিয়ে এসেছে। আন্কেল ঘুমিয়েছে বিধায় এসে পরেছে আর তো কিছু করার নাই। হাত টা উঠিয়ে ফূ দিচ্ছে জ্বলাটা কমছে বরফ দেওয়ায় মনে হচ্ছে কমেছে। তবুও বুঝলো না বকে আবার যত্ন নিলো কেন?

সব সময় ঝগড়া অসভ্য লোক প্রথম দিন থেকে আমার সব কিছু লন্ডভন্ড করেছে।

🍁
প্রথম যেদিন ফাস্ট আরুশির সাথে দেখা হয় রাইয়্যানের।
আরুশি বাসা থেকে বের তেমন একটা হতে পারে না খুব দরকার ছাড়া। এক্মামের খবর জানতে পারে আর দুই সপ্তাহে আছে এক্মামের যার জন্য কলেজে যেতেই হবে। মামি কে বলে ও লাভ নেই কাজের পর কাজ দিয়ে ই রাখে অনেক কষ্ট লুকিয়ে যায় নোট আনতে। টাকা এক্মটা না থাকায় হেটে যায় আর কলেজ বেশি দূরে না। হেটে হেটে যাচ্ছে মাঝে মাঝে পানি জমে আছে রাস্তায়। বৃষ্টি হয়েছে কাল কে সেই পানি রয়ে গেছে।

হেলে দূলে কলেজে যাচ্ছে ঠিক এক মাস পর যাচ্ছে কলেজে। তেমন বেসট ফ্রেন্ড কেউ নেই আরুশির। তাই নিজে একাই থাকে কলেজে। কলেজে এসে গেছে আর একটু রাস্তায় হঠাৎ একটা বাইক আরুশি পা ছুয়ে যায় পায়ে হালকা ব্যাথা ও পায় সাথে সামনে পানি জমে থাকে কাদা পানি যা আরুশির ড্রেস সিটে আসে আর আরুশি কাঁদায় ভরে যায়।

আরুশি সাথে সাথে চিৎকার করে উঠে। বাইক থেমে গেছে একটা ছেলে আরুশির দিকে খুব এটিডিউট নিয়ে তাকায় চোখে সানগ্লাস খুলে। আরুশি রাগে লাল হয় তাকিয়ে আছে তার দিকে। ছেলেটা ভাব নিয়ে তাকিয়ে আছে আরুশি পা থেকে মাথা পযর্ন্ত স্ক্যান করে সামনে তাকায়।

–এটা কি করলেন আপনি দেখে গাড়ি চালাতে পারেন না। আমার পুরো জামাটা নষ্ট করে দিলেন এখন আমি কলেজে যাবো কি করে?

–ছেলে টা কিছু বলল না পেছনে একটা ছেলে সরি বলে,
আরুশি আর ও রেগে যায় যে গাড়ি চালাচ্ছে দোষ তার সে সরি না বলে পেছনের জন কে দিয়ে বলাচ্ছে। এতো দিন পর কলেজে যাচ্ছে আর আজকেই এই অবস্থা হলো এভাবে কলেজে যাওয়া কি সম্ভব।

–আপনি বলছেন কেন, এই মিস্টার ওই ভাবে সামনে তাকিয়ে আছে কেন? আমার কথা কি কানে যায় না কি করলেন আপনি এখন আমি কলেজে যাবকিভাবে?

–আবার পেছনের জন্য বলে উঠলো, সরি বললাম তো আমরা দেখি নি। আর……

–আপনি আবার কথা বলছেন, আমি কি আপনাকে বলেছি যে গাড়ি চালাচ্ছে তাকে বলেছি, আপনি এত কথা বলছেন কেন উনি কি কথা বলতে পারেন না বোবা নাকি।

–এবার রাইয়্যান রেগে তাকালো,,,, ও সামনে ফিরে গেছিলো কিন্তু মেয়েটা তো সেই বেয়াদব এভাবে কথা বলছে আমাকে কি চিনে নি নাকি রাইয়্যান স্টাইল করে তাকালো আরুশির দিকে না আরুশির মুখের ভাব চেজ্ঞ হলো না উল্টো বকে যাচ্ছে।

–তোমাকে সরি বলেছে শুনো নি। আর আমাকে কি বলবে তুমি আমাকে দেখেও তুমি এভাবে কথা বলছো আমাকে কি চেনো নি তুমি?

–আপনাকে দেখে আমি কিভাবে কথা বলবো, এমন ভাবে বলছেন যেন আপনি মন্ত্রী।

–এবার পেছনের ছেলে বলে উঠলো, মন্ত্রী না কিন্তু তুমি সত্যি ওকে চেনো নি তুমি ফাস্ট মেয়ে যে কিনা রাইয়্যান কে দেখেও এভাবে বকে যাচ্ছে। অন্যরা তো ওকে দেখলে হা হয় তাকিয়ে থাকে তুমি বকছো হাউ, আর রাইয়্যানকে সরি বলতে বলছো কেন আমি তো বলেছি।

–রাইয়্যান বলল,, ওকে টাকা দিয়ে দে যতসব টাকা নেওয়ার জন্য এমন করছে ইডিয়েট।

আরুশি ক্ষেপে উঠে,
–কি বললেন আপনি আমি টাকার জন্য এমন করছি। আপনি আমাকে টাকার গরম দেখাচ্ছে গরীব বলে আমাদের এতো টাকা লোভ নেই ওকে। আর সরি উনি বলবেন কেন সরি আপনি বলেন দোষ আপনার।

–লাইক সিরিয়ালি আমি তোমাকে সরি বলবো হাউ ফানি, তুমি আমাকে চেনো না তাই এমন বলছো আমাকে দেখে মেয়েরা জ্ঞান হারায় একবার দেখতে পাগল হয়ে থাকে আর তুমি আমাকে সামনে পেয়ে ও অপমান করেছে।

–সরি বলেন তারাতারি আপনার জন্য কলেজে যেত পারবো না। সরি বলেন না হলে লোক জরো করে সবাই দিয়ে মার খাওয়াবো এক্মিডেন্ট করার জন্য।

–হোয়াটটটটট,

–চেচিয়ে লাভ নেই সরি বলুন,

রাইয়্যান রেগে তাকিয়ে আছে আরুশির দিকে আরুশি সরি বলতে বলছে। কিন্তু রাইয়্যান তো কখনো সরি বলবে না। হঠাৎ ই আরুশি চেচিয়ে উঠলো আসেপাশের লোক আসতে লাগে, রাইয়্যাই ও ওর ফ্রেন্ড সামি তো হা রাইয়্যান বাইক স্টাট দিতে যায় আরুশি হাত ধরে আটকাতে যায় তার আগেই উধাও। কোন রকম বেচে এসেছে রাইয়্যান মাই গড কি ডেন্জারেস মেয়েরে বাবা আমার সাথে এমন বিহেভ করলো। আমাকে ঠিক মতো খেয়াল ও করলো না, একটুর জন্য পাবলিকের হাতে থেকে বেচে এসেছি। রাইয়্যানকে পাবলিক দেখলে ঘিরে ধরতো অটো গ্রাফ নেওয়ার জন্য এই জন্য নায়ক দের শান্তি নেই কোথায় গিয়ে। এখন রাইয়্যানের সাথেগার্ড ও নাই ও সপ্তাহে একবার বাইক নিয়ে ঘুরে। আর আজকেই এই অবস্থায় পরতে হলো।
এই টুকু ভাবতেই আরুশি ঘুমিয়ে পরলো।

পরদির
আরুশি ঘুম থেকে উঠে মনে হলো তার হাতির ব্যাথা কমে গেছে এত কমলো কেমনে মলম ও তো দেয়নি। হাতে হাত দিয়ে মনে হচ্ছে মলম দেওয়া হয়েছে।
আমি তো দেয়নি নি মলম দিলো কে?
আন্কেলর কাছে গেল তাকে কফি দিতে আজ আর রাইয়্যানের রুমে যায় নি। আন্কেল আন্কেলের কাছে গিয়ে তার প্রশ্নের সমোক্ষিণ হতে হলো হাতে কি হয়ছে তাকে মিথ্যে বললাম, সত্যি টা ইচ্ছে করে বললাম না।

জেসমিন মেয়েটা ফোনে হেসে হেসে কথা বলছে আর লজ্জা পাচ্ছে আরুশি হা করে তাকিয়ে আছে। এখানে আসছে একদিন এর মাঝে হাসতে দেখেনি আজ হাসছে কেন হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে তারাতারি ফোন কেটে দিলো তারপর মুখ ভেংচি দিয়ে চলে গেল। কিছু আমার মাথায় ঢুকলো না দরজায় দিকে চোখ পরতেই দেখলাম রাইয়্যান নীল গেন্জি আর কালো টাউজার পরে আসছে গামে ভেজা শরীর নাক সিটকে তাকালো আরুশি রাইয়্যান তাকাতেই ভেংচি কাটলো,

রাইয়্যান রাগী চোখে তাকিয়ে উপরে চলে গেল।
আরুশি আন্কেলের খাবার নিয়ে তার রুমে গেল তারপর আন্কেশের পাশে বসে রইলো।

–যা তুই ও খেয়ে নে রাইয়্যানকে ও ডেকে নিয়ে যাচ্ছ। ছেলেটা ঠিক মতো খায় না আমি তো দেখতে পারি না কি করে তুই একটু দেখিস ছেলেটাকে।

–আরুশি চোখ বড় করে তাকালো আমাকে দেখতে বলছে কেন? উফফ যত দূরে থাকতে চাই তত ওই অসভ্যের কাছে যেতে হয়।

কিছু বলল না আরুশি আন্কেল কেও যথেষ্ট সম্মান করে। তার জন্য থাকাল জায়গা হয়েছে তার মুখের উপর কিছু বলতে পারবে না।

রাইয়্যানের রুমের কাছে এসে দাড়িয়েছে ডাকতে এসেছে।

–আমার রুমে আবার উকি জুকি মারছো তোমার মতলব টা কি বলো তো।

পেছনে থেকে রাইয়্যানের কন্ঠ পেয়ে চমকে তাকালো আরুশি,

–কি ব্যাপার আরি পাত ছিলে নাকি আমার রুমে !!

–আরি পাততে যাব কোন দুঃখে, আমি তো আপনাকে খেতে ডাকতে এসেছি।

— সত্যি নাকি অন্য কিছু ,

— দেখুন আপনি অামাকে কি মনে করুন বলেন তো আমার কি মতলব থাকতে পারে জাস্ট ডাকতে এসেছি ওকে।

–দেখি তোমার হাত।

–কেন?[ ব্রু কুচকে]

— কাল না ব্যাথা পেলে সেটাই দেখতে চাইছি।

— বলেই হাত টেনে দেখতে লাগলো, আরুশি টেনে হাত সরিয়ে ফেলল,

–দরদ দেখাতে হবে না।

–আমি তোমাকে দরদ দেখাচ্ছি কে বলল,

রাইয়্যান আরুশির হাত মুচড়ে ধরলো আমাকে তুমি ভেংচি দিয়েছো তোমাকে এর জন্য শাস্তি পেতে হবে।

–কীহহ দেখুন

–কি দেখবো?

–আমি এখন কিন্তু আপনার জন্য এসেছিলাম আর আপনি আমার সাথে এভাবে ঝগড়া করছেন।

–শুনো আমার ঝগড়া একদম পছন্দ না কিন্তু তুমি আগে আমাকে ভেংচি দিয়েছো এতে তোমার দোষ সো শাস্তি তো পেতেই হবে।

–মানে

যাও আমার রুমে গিয়ে দেখে ড্রেস আছে যা দেখে তুমি নাক ছিটকেছিলে তা ধুয়ে দাও।

–চোখ আপনা আপনি বড় হয়ে গেল আরুশির , অসম্ভব কখনো না আমি আপনার কাজ করতে পারবো না আমি শুধু আন্কেলের কাজ করব।

–ওহহ আববুর থেকে পারমিশন নিয়ে আসলে তো করবে ওকে নিয়ে আসছি।

হাত ছেড়ে রাইয়্যান যেতি লাগলো হঠাৎ আরুশি রাইয়্যানকে থামিয়ে দিলো কারণ ও জানে আন্কেল
রাজি হবে একটু আগেই তো বলেছে এল কথা শুনতে।

আরুশি মুখটা ফুলিয়ে যেতে লাগলো ঘরে,

— এখন না আগে খেয়ে আসো।

বলেই রাইয়্যান চলে গেল।

আরুশি রেগে তাকিয়ে আছে কেন যে ভেংচি দিতে গেলাম। এখন নিজেই ফেসে গেলাম দূর,,

জেসমিন সারাদিন ফোনে কথা বলে বুঝিনা এতো কার সাথে কথা বলে। খাওয়া শেষে থালা বাসুন ধূতে যেতে চায় কিন্তু চাচিটা করতে দেয় না অন্য সার্ভেন্ট রা করছে কি অবস্থা কাজ করতে থাকলাম কিন্তু কাছেই নাই। আন্কেলকে খেতে দেওয়া আর ঔষধ সময় করে মনে করিয়ে দেওয়া।

এভাবে বিনা কাজে এ থাকা যায় না সকালে থেকে শুধু খাবার রুমে নিয়ে গেছে আনতেও হয় নাই। এভাবে বসে খাওয়া পছন্দ না আরুশির তখন ভেবেছে এতো বড় বাসা কাজ অনেক থাকবে কিন্তু তার জন্য তো কাজই নেই। আর থাকলে ও করতে দেয় না কেউ একজন না একজন করে নেই।

জেসমিন আজ আর আমার আশেপাশে আসে নি জানি না কাল তো কেমন করে কথা বলল আজ তাও কিছু ই বলে নি।

ঘড়ির দিকে তাকালো তিনটা বাজে একটু আগে খাবার দিতে গেছিল। আন্কেল খাওয়ার পর আমি ও খেয়েছি আর কাজ নেই বসে আছি আর বাগানে তাকিয়ে আছি। ভালো লাগছে না একবার মামার সাথে কথা বললে ভালো লাগতো। রাইয়্যানের বিহেভ ও বুঝি না কাজ দিল আবার তা করতেও দিলো না আমি নাকি ধুতে গেলে নষ্ট হয়ে যাবে। তখন তো বলল আমাকে দিয়ে ধুয়াবে পরে পাল্টি খেলো। কাজ করছে আগে তাই বসে থাকতে আরুশির এভাবে বসে খেতে ভালো লাগে না।
খালি খালি লাগছে সব।

রাতে রুমে শুয়ে আছি মনে হচ্ছে কেউ হাতে নরম স্পর্শ দিচ্ছে কিন্তু ঘুমের জন্য তাকাতে পারছিনা।

সকালে চোখ মেলে তাকালাম রাতের কথা মনে পরতেই হাতের দিকে তাকালাম আজ ও কেউ মলম দিয়েছে। দূর কি হচ্ছে এসব কে জানে।কে মলম লাগবে কিছু বুঝছি না।

খাবার টেবিলে বসে আছি সবাই আন্কেল ও আজ নিচে এসেছে।

–আন্কেল একটা কথা বলি।

–বলো,

–আমার এভাবে কাজ ছাড়া ভালো লাগে না। আপনাদের ঘারে এভাবে বসে আছি কোন কাজ ই তো আমাকে করতে হয় না।

–লোক অনেক তো তাই ওতো কাজ পাই। আর তুমি কাজ করো তো এই যে আমাকে দেখা শুনা করো আর কি করবে বাচ্চা মেয়ে একটা।

–ওইটা কোন কাজ হলো সারাদিন তো বসেই থাকি।

–রাইয়্যান বলে উঠে,, আববু ওর তো খুব কাছের দরকার তুমি ওকে বলো আমার কাজ করতে আমি যা বলবো তাই যেন করে তাহলে আর বসার টাইম পাবে না।

— আরুশি তুমি রাইয়্যানের হয়ে কাজ করো কেমন। আমি উঠি,

বলেই চলে গেলেন,,,

আমি আর ও কিছু বলতে চাইছিলাম না শুনেই চলে গেল।

–আমি আপনার কাজ করবো না।

— আববু বলেছে তাও করবে না।

–আমি এই বাসায়ই থাকবো না। আরেকটা বাসা ঠিক হলেই চলে যাবো।

রাইয়্যান সাথে সাথে আরুশি কে টেনে ধরে বলল, আমার কাজ তোমাকে করতেই হবে কোথায় ও যেতে পারবে না।

বলেই উঠে গেল।

আরুশি হা হয়ে তাকিয়ে আছে রাগলো কেন?

রুমে বসে ভাবছি এই রাইয়্যান লোকটা কেমন জানি সন্দেহ জনক।

🍁

দ্বিতীয়বার যখন দেখা হলো।

মামাতো ভাই রিমনের এক্মাম ছিলো ওর সাথে ওর স্কুলে গিয়েছিলো।
হাতে সেদিন বিশটাকা ছিলো। বাইরে দাড়িয়ে ওর জন্য অপেক্ষা করছে আরুশি দাড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে না তাই একটু হেটে সামনে যায় একটা লেক পরে দারণ জায়গা টা। পাশে কিছু বিক্রি হচ্ছে সবাই খাচ্ছে আরুশির ও খেতে মন চাইলো এটার নাম ফুসকা আমাদের কলেজে ও আছে সবাই খায় অনেক মজা শুনেছে টাকা ছিলো তাই আর না ভেবে খেতে এগিয়ে গেল।
দশটাকার কিনলো খুব আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে কি করে বানায় দেখছে। হাতে পিলেট দিতেই একটা মুখে পুরতে যাবে হঠাৎ কেউ দৌড়ে এমন ভাবে আসে হাতের ফুসকা সহ পিলেট ঠাস করে নিচে পরে যায়।
#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ৮

–আপনিইইইইই,

রাইয়্যান কানে হাত দিয়ে,
–ও গড এতো জোরে কেউ চিৎকার করে কানটা মনে হয় ফেটে গেল।

–আপনি আবার আমার সামনে এসেছেন। শুধু সামনে এসে ক্ষান্ত হননি সব ফেলে ও দিলেন অসভ্য লোক। ওই দিন আপনার জন্য আমি কলেজে যেতে পারিনি। আবার আপনি আমাকে টাকা সেধেছেন এতো টাকার গরম দেখিয়েছেন। একটা সরি বলতে বললাম ভাব নিয়ে চলে গেলেন যেন সরি বললে মহা ভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। সেদিন পালিয়েছিলেন আবার আজকে জামেলা করতে চলে এলেন।

–ইউ তুমি আমাকে বকছো রাইয়্যান চৌধুরী কে বকছো সামান্য ফুসকার জন্য। সেদিন তোমার জন্য আমায় বিপদের হাত থেকে একটুর জন্য বেচেঁছি আজ আবার তোমার সাথে দেখা হলো উফফ, এই বাচাল মেয়েটার সাথে আবার কেন দেখা হলো আমার!!

–ও হ্যালো আপনি আমাকে কি বললেন আমি বাচাঁল?
রেগে আঙুল উঠিয়ে রাইয়্যানকে বলল,

–অবর্কোস তোমার মতো বাচাঁল আর ঝগড়ুটে মেয়ে আমি কখনো দেখি নি।

–এই যে মিস্টার আমাকে বাচাঁল আর একবার বললে কিন্তু আমি আপনাকে,,

–কি করবে বাচাঁল না হলে এভাবে এতো কথা কেউ বলে তোমার জন্য ওই বিপদে পরতেছিলাম আবার আজকেও শুরু করে দিলে, ঝগড়ুটে মেয়ে একটা।

–আমি বাচাঁল, আমি ঝগড়ুটে তাই তো ঔইদিন তো পালিয়ে ছিলেন কিন্তু আজকে কিছু তেই পারবেন না। দুইদিনে দোষ আজ আমি তুলবোই।

–হোয়াট?

রাইয়্যান কিছু বুঝে উঠার আগেই আরুশি ওর হাত টেনে ধরে রাইয়্যান তো হা এই মেয়ে করছে টা কি?

–ওইদিন পালিয়ে ছিলেন আজ পালাতে পারবেন না। আজকে আপনাকে আমি পাবলিক প্লেসে মার খাওয়াবো।

–হোয়াট আর ইউ ম্যাড, কি হচ্ছে কি? হাত ছার আজ কিন্তু চিৎকার করবে না বলে দিচ্ছি।

— করবোই আপনার জন্য আমার দশ টাকা ফালানো গেছে।

–দশ টাকার জন্য আমাকে বিপদে ফেলবে?

–দশ টাকার জন্য কেন একটা হলে ও ফেলতাম দশ টাকা কি টাকা মনে হয় না আপনার?

–দেখো এমন করবে না পাবলিক ঘিরে ধরলে বিপদে পরতে হবে ওকে তোমাকে আমি টাকা দিচ্ছি।

–আবার টাকা দেখাচ্ছেন, গরীব হলে ও টাকার লোভ নেই বলেছিনা? আমাকে একদম টাকার গরম দেখাবেন না।

–রাইয়্যান পরেছে বিপদে এই মেয়ের সামনে কেন পরলো আজ এখন কি ভাবে পালাবে এদিকটায় মানুষ কম তাই টিকতে পারছে ফুসকা ওয়ালার দিকে তাকাতে রাইয়্যান চোখ ঘুরিয়ে নিলো এক হাতে মুখ ঢেকে আছে ফুসকা ওয়ালা কেমন যেন ওকি জুকি মারছে মুখ দেখতে। এ মেয়ের থেকে ছাড়া পেতে হবে যে ভাবে ই হোক হাত শক্ত করে ধরে আছে ছারছেই না।

–দেখো তোমাকে আমি টাকা দেখাচ্ছি না। আমার জন্য টাকা নষ্ট হয়েছে সেটা নাও।

আরুশি কি যেন ভেবে বলল ওকে দেন,

–হাত ছারু,

–না হাত ছারবো না।

–কেন?

–আজকের টাকা না হয় ফিরত দিবেন কিন্তু ওইদিনের জন্য তো সরি পাওনা আছে।

–রাইয়্যান রাগে লাল হয়ে তাকালো আরুশির দিকে সাথে সাথে রাইয়্যান বিপদ দেখতে পেল। চারপাশ থেকে লোক জরো হয়ে আসছে ওকে চিনে ফেলেছে এটা সিউর। কয়েক সেকেন্ডে ঘিরে ধরলো সবাই রাইয়্যানকে ও তো সবার দিকে একবার তাকিয়ে আরুশির দিকে আগুন চোখে তাকালো আরুশির মাথায় কিছু আসছে না কি হচ্ছে সবাই এখানে আসছে কেন? অবাক হতে হতে ওর হাত আলগা হয়ে এলো সবাই রাইয়্যানকে ঘিরে ধরেছে না প্রশ্ন মেয়েরা তো হা হয়ে আছে এখানে রাইয়্যানকে দেখতে পাবে সেটা শুধু সপ্নের মতো। ছেলে মেয়ে বাচ্চারা বয়ষ্ক সবাই হা করে রাইয়্যাকে দেখছে। ভীরের মধ্যে আরুশি পরলো জালায় ওরম মাথায় কিছু আসছে না।

সবাই এমন করছে কেন এই ছেলে কি চোর নাই না চোর হলে মারতো এমন প্রশংসা করছে কেন রাইয়্যান বিরক্ত হচ্ছে কিছু বলতে পারছে না সবার দিকে হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে কথা বলছে।

আরুশি সবার পেছনে এসে পরেছে হঠাৎ ওর চোখ যায় রাস্তায় পাশে সবাই রাইয়্যানকে গিরে আছে একটা বাচ্চা ও এদিকে আসছে রোডের মাঝে আছে একটা গাড়ি শো করে আসছে যা দেখে আরুশির মাথায় হাত কি করবে হাতের পাস টা ফেলেই দৌড় দেয়। সাথে চিৎকার সবাই রাইয়্যানকে রেখে আরুশির দিকে তাকায় রাইয়্যান ও দেখে একটা বাচ্চা একটুর জন্য গাড়ির তলে পরেনি ছোট বাচ্চা টা তাকে বাচিয়েছে আরুশি রাইয়্যান দেখলো ওই ঝগড়ুটে মেয়েটা বাচিঁয়েছে ওর ও কেন জানি এটা দেখে মুখে হাসি ফুটলো। মেয়েটা ওতটাও খারাপ টা। ভির ঠেলে একটা মহিলা কান্না করতে করতে সেদিকে গেলল সাথে সাথে মেয়েটা আরুশির কোল থেকে নেমে মহিলাটিকে মা বলে জরিয়ে ধরলো।

মহিলাটি রাইয়্যানকে দেখে মেয়ের কথা ভুলে একি এই পাশে চলে এসেছিল। কি পাবলিক রে বাবা আরুশি কড়া কিছু কথা শুনিয়ে দিলো মহিলাটিকে মহিলা মাথা নিচু করে ক্ষমা চেয়ে আরুশি কে ধন্যবাদ জানালো। রাইয়্যান ও এই সুযোগ হাত
ছাড়া করে নি সবাই ওদের দিকে খেয়াল দিয়েছে এই সুযোগ ও পালিয়ে এসেছে।

তীব্র চিৎকার শুনে ধরফরিয়ে উঠে বসলো আরুশি সামনে দাড়িয়ে আছে রাইয়্যান।

–আপনি এখানে কি করছেন?

–এতো বেলা করে পরে পরে ঘুমালে আমার দেখাশুনা করবে কখন শুনি। কাল তো আববু কে বললে কাজ ছাড়া ভালো লাগে না এখন দশটা পযর্ন্ত ঘুমাচ্ছো কেন??

— কয়টা বাজে এখন?

–আমাকে দেখে কি তোমার সেক্রেটারি মনে হয়।

–কেন🙄

–আমাকে জিগ্গেস করছো এমন ভাবে যেন আমি তোমার দেখাশোনা করার জন্য তুমি না।

— আমি নিজের কাজ নিজে করতে পারি কাউকে দরকার নাই ওকে। আর টাইম জিগ্গেস করছি কারণে আমার ফোন নাই আর ঘড়ি ও এই ঘরে নাই তাই।

রাইয়্যান কি যেন ভাবলো তারপর বলল,

–তারাতারি আমার রুমে আসো।

–কেন?

–তোমার সাথে প্রেম আলাপ করতে ডাকছি না কাজের জন্য ডাকছি!

–আমি কখন বললাম যে প্রেম আলাপ করতে ডাকছেন। যতসব ফালতু কথা বার্তা!

–তাহলে সব কিছু তে কেন কেন করো ক্যা? কফি করে নিয়ে এসো !

–আমি কেন, চাচি বা জেসমিন আছে না।

–কালকের কথা কি তুমি ভুলে গেছ?

–আনছি।

–গুড দ্রুত।

বলেই বেরিয়ে গেল। আরুশি বিরবির করে বকতে বকতে ফ্রেশ হতে গেল তারপর নিচে গিয়ে দেখলো জেসমিন কফি নিয়ে যাচ্ছে।

–আপু আমাকে দাও আমি নিয়ে যায়।

–তোমাকে কেন দেব দেখছো না আমি নিয়ে যাচ্ছি?

–আসলে আমাকে তার কাজ করতে বলা হয়েছে তাই,

–তুমি অন্য কাজ কর।

বলেই চলে গেল আরুশি মনে মনে খুশিই হলো। শয়তান টার সামনে যেতে হলো না কি করবো হঠাৎ বাইরে যেতে ইচ্ছে হলো আরুশির কফি তো জেসমিন ই নিয়ে গেছে আমি এই সুযোগ বাগানে একটু ঘুরে আসি। দুই দিন হলো আছি এখন ও বাইরে যাওয়া হয় নি।
বাগানে ঘুরে বেরাচ্ছে আরুশি এখানে আসলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। প্রথম দিনই জায়গাটা খুব ই ভালো লেগেছে প্রতিটা ফুলের সুভাস নিচ্ছে। রাইয়্যান আরুশির দিকে তাকিয়ে আছে বারান্দায় থেকে রাগে লাল হয়ে আছে। জেসমিনকে এক ধমক দিয়ে কফি সহ পাঠিয়েছে।

–এখানে কি করছো?

আচমকা কারো কথায় আওয়াজে চমকে তাকায় রাইয়্যান লাল চোখে থাকিয়ে আছে ওর দিকে?

–দেখুন আজ শুধু বাগান টা দেখছি ফুল ছিড়িনি।

–তোমাকে আমি একটা কাজ দিয়েছিলাম তুমি এখানে কিকরছো?

–অহহ কফি, জেসমিন তো নিয়ে গেল।

–আমি তোমাকে নিতে বলেছিলাম।

–হুম কিন্তু একজন তো নিয়ে গেছে আমার নেওয়ার কি দরকার।

–আমার সমস্ত কাজ তোমাকে করতে বলেছি সেটা কি ভুলে গেছ। জেসমিন বলল আর তুমি যেতে দিলে হুয়াই নেক্মট এমন করলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। কাজে ফাকিঁ দিয়ে এখানে ঘুরতে আসা বের করবো।

ফাকিঁর কথা শুনেই আরুশির চোখ টলমল করে উঠে। মামির কথা মনে পরে গেল মামি এভাবেই বলতো কাজে ফাকিঁ দেয় আমি এখানে ও সেই ভাবে। আপন লোকের কাছে এমন কথা শুনেছি আর এরা তো পরই।

আরুশি সরি বলে সোজা বাসার ভেতরে চলে এলো। রাইয়্যান তো হা ও ভেবেছিলো আরুশি ঝগড়া করবে কিন্তু এভাবে চুপ করে চলে যাবে ভাবেনি। যাওয়ার সময় ওর চোখে পানি দেখেছে কেন জানি মনে হচ্ছে বেশি বলে ফেলেছে।

চলবে❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here