আমার তুমি পর্ব ৯+১০

#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ৯

আরুশি সোজা ভেতরে এসে কফি করতে লাগলো, [ কফি না চা করে কফি বলে খাওয়াবে রাইয়্যানকে আরুশি শয়তানি হাসি দেয়]
এদিকে রাইয়্যান আরুশির পেছনে আসে ভেতরে আরুশি রান্নাঘরের দিকে যেতে দেখে রাইয়্যান সোফার উপরে বসে পরে।

–কফি,

মাথা উচু করে দেখে আরুশি কফি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। এর জন্য ওই ভাবে চলে এসেছে রাইয়্যান কিছু না বলে কফি নিয়ে এক চুমুক দিতে কাশি দিয়ে ফেলে দেয়।

–এটা কি?

–চা,

–হোয়াট তুমি আমাকে চা দিয়েছো কেন? জানো না আমি চা খাইনা !

–জানি কিন্তু এখন কফি পাবেন না।

–মানে তুমি কি বলতে চাইছো!

–কিছুই না,

–যাও কফি করে নিয়ে এসো।

–নাহহ

–আমার সাথে তর্ক করছো,

–হ্যাঁ আপনাকে আজ কফি দেব না?

–আরুশি তুমি কিন্তু বেশি করছো?

–আপনি ও করেছেন? অাপনার জন্য আমার দশ টাকা গচ্ছা গেছে মনে আছে। টাকা না দিয়ে পালিয়ে গেছিলেন।

–দশটাকার জন্য তুমি আমাকে কফি দিচ্ছো না।

–হ্যাঁ দিচ্ছি, আপনার জন্য আমি সেদিন ফুসকা খেতে পারিনি। শুনেছি অনেক টেস্ট আপনার জন্য খেতে পারিনি আর আপনার কফি পছন্দ তাই সেটা আজ খেতে পারবেন না।

–ইউ যাও কফি নিয়ে আসো আমার মাথা খারাপ করো না। তোমার দশটাকা এখন ই দিচ্ছি?

বলেই পকেটে হাত দেয়। একটা কার্ড বের করে দেয় এই নাও যত খুশি এমাউন্ট বসিয়ে নিয়ো।

–দশটাকার জন্য কার্ড?

–আর ও বেশি নিয়ো,

–নাহ আমি বেশি নেই না দশটাকা দেন তাহলেই কফি পাবেন।

–দশটাকা কোথায় পাব। ওকে দাড়াও

বলে পকেটে থেকে এক হাজার টাকার নোট দেয়।

–নাও

–আমি দশটাকা চাইছি এতো টাকা দিচ্ছেন কেন? আমি আগে ও বলছি আবার ও বলছি টাকার গরম দেখানো আমি পছন্দ করিনা। আমার যা তাই দিন।

–ও গড পাগল করে ফেলবে তুমি? আমার কাছে আর খুচরা টাকা নাই। এটাই নিতে হবে।

–তাহলে চা ই খান। আর না হলে কফি ছাড়াই থাকেন। অন্য কারে থেকে খাইতে চাইলে খেতে পারেন।

-বলেই আরুশি চলে গেল আরেক কাপ চা নিয়ে নিজে খেতে।

রাইয়্যান বুঝতে পেরেছে এটা ইচ্ছে করে করেছে ওর কাজ না করতে আজ কফি খাবোই না ধ্যাত।

রাইয়্যান রেগে উঠে রুমে যায়। দশটাকা খুচরা কই পাবো এই টকা ভাঙাতে হবে তারপর ওর টাকা ফেরত দেবো।

আরুশি বিকেলের দিকে ছাদে আসে আগে থেকে ছাদে জেসমিন আছে দেখে। ও উঠে সোজা জেসমিনে পাশে দাড়ায়,

–হাই আপু,

জেসমিন তাকিয়ে আবার চোখ ঘুরিয়ে নেয়। ওর সাথি কথা বলতে চায় না বুঝলো ও আর কথা বলল না,

ঠান্ডা বাতাস বইছে আরুশি মাথায় ওরনা টেনে ধরে আছে পরে যায় যদি সে জন্য। এতো বাতাস যে মনে হচ্ছে উড়ে যাবো।
চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে। সব খুব ভালো লাগছে মাঝে মাঝে মামা দের বাসায় ও ছাদে দাড়ায় আরুশি। অনেক দিন পর এই আবহাওয়া টা খুব ভালো লাগছে। একটা দোলনা আছে ছাদে আর কোনায় দুইটা ক্যাকটাস গাছ এ ছাড়া ছাদে কিছু নাই ফাকাঁ।

–এই ধরো তোমার টাকা !

–আচমকা আওয়াজে ভ য় পেয়ে যায় আরুশি তারাতারি চোখ খুলে পেছনে তাকিয়ে দেখে রাইয়্যান দাড়িয়ে আছে হাত দশটাকার একটা নোট ধরে আছে। কচকচা একটা নোট।

–এভাবে তাকিয়ে আছো কেন এই নাও তোমার টাকা এখন তো কাজে মানা নাই তাই না।

–আরুশি টাকাটা হাতে নিলো,
এতো চকচকে নোট কোথায় পেলেন? এটা তো আমি ব্যাংকে রাখত পারবো। কিন্তু এখন তো ব্যাংক নাই আগের টা তো ওই বাসায় ই ভেঙে এসেছি।

— ব্যাংকে তুমি দশটাকা রাখবে,

অবাক হয়ে আরুশির দিকে তাকিয়ে,

–হুম আচ্ছা একটা হেল্প করতে পারবেন।

–কি?

–কোন দোকান আছে এখানে আশেপাশে ব্যাংক কিনতে পাওয়া যায়? দশটাকায় একটা ব্যাংক কিনবো?

–হোয়াট কি বলছো ব্যাংক আবার কেনা যায় নাকি তাও দশটাকায়!

–হুম কতো অবশ্য বিশটাকা ও আছে তিশ টাকার ও আছে কিন্তু আমি দশটাকায় ই কিনবো । আর আমাকে এমন কিছু চকচকে নোট এনে দিয়েন রাখার জন্য।

রাইয়্যান হা হয়ে আছে ওর মাথা খারাপ হচ্ছে কি বলছে এই মেয়ে ব্যাংক কিনবে আবার দশটাকায় একটা আবার য়াতে দশটাকা রাখবে।

— সত্যি আরুশি আমার মনে হচ্ছে সত্যি তুমি পাগল হয়েছো নাহলে কেউ,

–আপনি আবার পাগল বলছেন। অসভ্য লোক একটা আর কখনো আপনার সাথে ভালো ভাবে কথা বলবো না।

রাইয়্যান কে রেখেই আরুশি নিচে নেমে আসে।

একটু পরে আবার এসে আরুশি রাইয়্যানকে কফি দিয়ে চলে যায়।

চারদিন পর

আরুশি রান্না করেছে আজ। না করেছিল শুনে নি।
সাথে চাচিটা ও ছিলো।

— ওয়াও মানি তোমার রান্না তো আজ অন্যরকম হয়েছে। মনে হচ্ছে তুমি রাধই নি কিন্তু টেস্ট টা কিন্তু সেই। এখন থেকে এভাবেই রেধো।

সাথে সাথ মানি[ জেসমিনের মা কে মানি বলে] উওর দেয়।
–আজ তো আমি রাধিঁনী আরুশি রেধেঁছে।

রাইয়্যান আরুশির দিকে তাকায়। আরুশি নিজের মতো খাচ্ছে।

–আরুশি মা তুই তো খুব ভালো রাধঁতে পারিছ সত্যি খুব ভালো হয়েছে মাঝে মাঝে এমন খাবার হলে ভালোই হয় কি বলিস রাইয়্যান?

–আরুশি খুশি হয়ে তাকায় তার কষ্ট র্সাথক। মামি কখনো মজা বলতো না কিন্তু মামা বলতো আমার হাতের রান্না নাকি অসাধারণ লাগে।

–মুটামুটি, তেমন মানির মতো এতো ভাল না।

আরুশি ভেংচি কেটে তাকালো, ঢং

রাইয়্যান আর আরুশি পাশাপাশি বসেছে তাই আরুশির কথাটা রাইয়্যানের কানে যায়। রাইয়্যান আরুশির দিকে তাকতেই আরুশি বলে উঠে,

–মুটামুটি তাহলে খাচ্ছেন কেন যান উঠে যান।

–আমাকে না খাইয়ে রাখার চেষ্টা তাই না।

–নো আপনি তো বলনেন মুটামুটি কিন্তু খাচ্ছেন তো রাক্ষসের মতো।

–রাইয়্যান খাওয়া বাদ দিয়ে রেগে তাকালো, আমি রাক্ষসের মতো খাচ্ছি।

–হুম তার থেকে ও বেশি।

–রেগে তাকিয়ে রইল আরুশি ভেংচি দিয়ে খাওয়ায় মন দিলো।

রুমে যাচ্ছে নিচের সবার খাওয়া শেষ। আন্কেল এর রুমে একটু পর যাবে খাওয়া শেষ হয় করে নিচে বসে ফোনে কথা বলছে। হঠাৎ কেউ হাত টেনে ধরলো। টেনে শান্ত না সোজা রাইয়্যানের রভে এনে ছেড়ে দিলো।

–আপনি আমাকে এভাবে টেনে আনলেন কেন?

–তখন কি বললে আমি রাক্ষসের মতো খেয়েছি।

–কেন কান বয়ড়া নাকি তখন শুনেন নাই।

–তুমি আমাকে রাক্ষস বললে হাউ ডেয়ার ইউ আমি যথেষ্ট কম খায়। আর নিজে তো রাক্ষসীর মতো খাওয়া খাওয়ার সময় আশেপাশে খেয়াল থাকে না আবার আমাকে বলো।

–আপনি আমাকে রাক্ষসী বলছেন আমাকে দেখে কি কেউ বলবে আমি বেশি খায় আমাকে যে দেখে সেই বলে মেয়েটা খায় না বেশি। বেশি করে খেতে বলে আর আপনি বলছেন বেশি খায়।

–সবাই তোমার খাওয়া দেখে নাকি জানবে কি করে তুমি খাও তত রাক্ষসীর মতো কিন্তু মোটা হও নাই বলে বুঝে না কেউ।

–আমি মোটে ও বেশি খায় না। আপনি বেশি খান,

হঠাৎ রাইয়্যানর ফোন বেজে উঠে,
–যাও ছেড়ে দিলাম এখন।

আরুশি মুখ বেকিয়ে বেরিয়ে এলো বিরবির করে বকতে বকতে।

–আরুশি মা কাল তোমার রেজাল্ট দিবে কলেজে গিয়ে জেনে এসো।

আরুশি চমকে আন্কেলের দিকে তাকালো। মাঝে আর ও সাত দিন কেটে গেছে। রাতে আরুশি খেয়ে আন্কেলের রুমে আসতেই আন্কেল এই কথা বলে কলেজের কথা শুনতেই অবাক হয়ে থাকিয়ে থাকে।
আন্কেল জানলো কি করে আমি কলেজে পরতাম এই বিষয়ে এ তো আমি তাকে কিছু বলি নি।

–আন্কেল আপনি জানলেন কি করে আমি কলেজে পরতাম।

আন্কেল দরজায় দিকে কাকে যেন ইশারায় কিছু বলছে আমি পেছনে ফিরে দেখি কেউ নেই।

–আন্কেল আপনি কার সাথে কথা বললেন।

–কই কারো সাথে না ভয় পায় তার কথায় ভয় দেখলাম।

–অহ আচ্ছা, বললেন না তো কি করে জানলেন।

–আসলে মা তোমার বয়স দেখে মনে হচ্ছে তুমি কলেজেই পরবে তাই আরকি। আর কালকে ঢাকার সব কলেজে ফাস্ট ইয়ার এর রেজাল্ট ও সাথে পরশো ভর্তি। তাই আর কি তুমি কি পরা লেখা করতে চাও না আমি চাই লেখা পড়া করো।

–করতে চাই কিন্তু টাকা কোথায় পাবো। আর আপনাদের কাছে থেকে আমি টাকা নিতে পারবো না। অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে আমি আর খোটা শুনতে চাইনা।

–আমরা তোমাকে এমনি এমনি তো টাকা দেবো না। তুমি যে কাজ করছো তার জন্য তো টাকা পাওনা আছে সেই টাকায় তোমার পড়া লেখার খরচ চলবে।

— কিন্তু

–কোন কিন্তু না তুই পড়া লেখা কর আরুশি আমি তোকে নিজের মেয়ে ভাবি আমি চাই তুই নিজের পায়ে দাড়াতে পারিস।

— কিন্তু

–আবার কিসের কিন্তু মা।

–আমি একটা এক্মাম দিতে পারিনি।

বলেই চোখের পানি ফেলতে লাগলো,

–সেসব আমি দেখবো তুই কাল তাহলে আর যাস না একেবারে ভর্তি হতে যাস।

–ভর্তি হবো কি করে এক্মাম তো দেয় নি।

–এটা কোন সমস্যা ই না। টাকা দিলেই তোকে সেকেন্ড ইয়ার এ ভর্তি করবে। আর এখন থেকে ভালো করে পরবি নেক্মট ভালো করলেই হবে।

— কিন্তু,

–আর কোন কিন্তু না রা ঘুমিয়ে পর।

আরুশি নিজের রুমে চলে গেল।

–থ্যাংকিউ সো ম্যাচ আববু,

বলেই রাইয়্যান রায়হান চৌধুরীকে জরিয়ে ধরে।

–ইটস ওকে আববু। তোমার জন্য আমি সব করতে পারি । লাভ ইউ পিন্স

–লাভ ইউ টু
#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ১০

কলেজের সামনে দাড়িয়ে আছে আরুশি কতো দিন পর কলেজটা দেখতে পারছে।আর কখনো কলেজে আসতে পারবো কল্পনা ও করে নি। সব হয়েছে আন্কেলের জন্য তার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবো।
চোখের পানি মুছে সোজা হাটা ধরলো এতো খুশি লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না। ক্লাসে ঢুকতেই সবাই কেমন করে যেন সবাই তাকিয়ে রইল কয়েকজন কে চিনি আর কাউকে চিনি নি কারণে নিয়মিত কলেজে আসি নি তাই সবাই আমার কাছে অপরিচিত। এক্মাম আর নোট নিতে আসতাম এছাড়া আসতাম না তাই কেউ আমাকে তেমন চিনে না যাদের সাথে এক্মাম এ বসতাম তারাই চিনে শুধু।
সবার এভাবে তাকিয়ে থাকাতে আরুশি লজ্জা লাগছে কোন দিক না তাকিয়ে সোজা পেছনের একটা ফাকাঁ বলতে একটা মেয়ে বসে ফোন এ কথা বলছে সেখানে বসে পরে।

মেয়েটার দিকে তাকালো আরুশি পরনে ফান্ট আর একটা টপস। ওরনা টা ছোট গলার পেচিয়ে রেখেছে এক ভাবে কথা বলছে পাশে যে কেউ আছে তার খেয়ালই নাই। আরুশি কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলো,

ক্লাস টিচার আসতেই সবাই দাড়িয়ে পরলো কিন্তু মেয়েটা বসেই আছে। স্যার এদিকে তাকিয়ে আছে আরুশি হাত এগিয়ে মেয়েটাকে টেনে দার করালো। মেয়েটা সাথে সাথে হাসি মুখ করে তাকালো আরুশির দিকে সামনে স্যার ওর দিকে তাকিয়ে আছে দেখেই ফোনটি কেটে নিচে রেখে দিলো তার পর আরেকটা হাসি মুখে নিয়ে স্যারের দিকে তাকালো। আরুশি হয়ে আছে মেয়েটির হাসির দিকে কি সুন্দর হাসি? মেয়েটা দেখতে ও মাশাআল্লাহ। হাসলে চোখ দুটো ছোট হয়ে আসে তার কি সুন্দর গালে টুল পরে। হঠাৎ কারো টেনে বসানো তে চমকে পাশে তাকালাম।

–সরি তোমাকে এভাবে টেনে বসানোর জন্য কিন্তু স্যার তো সবাইকে বসতে বলেছে তুমি না বসে দাড়িয়ে ছিলে তাই।

আরুশি আসে পাশে তাকিয়ে দেখলো আসলেই সবাই বসে পরেছে ওই দাড়িয়ে ছিলো। মেয়েটাকে দেখতে দেখতে কখন সবাই বসেছে ও খেয়াল ই করোনি।

—ধন্যবাদ

মেয়েটা আরেকবার ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে উঠলো,

–তোমাকে থ্যাংকস তখনকার জন্য। ইসস স্যার যদি দেখে ফেলতো আমি কথা বলছি ফোনে তাহলে তো শেষ ক্লাস থেকেই বের করে দিতো। আচ্ছা তুমি কি নতুন আগে তো দেখি নি?

–না আমি নতুন না আসলে আমি আগে ক্লাস ঠিক মতো করতাম না তো তাই কেউ আমাকে চিনে না।

–অহহ তোমার নাম কি?

–আরুশি, তোমার নাম কি?

–সোনালি।

সোনালির সাথে ক্লাস শেষে গল্প করলাম। খুব ভালো ও আর মিশুক কিছু সময়ের মাঝে তুই করে কথা বলা শুরু করে দিলো। মনে হচ্ছে কতো দিনের বন্ধুত্ব আমাদের। খুব ভালো কাটলো সারাটা সময়।

হাফ ক্লাস হয়েছে আজ। ক্লাস শেষে গেটের বাইরে আসতেই একটা গাড়ি সামনে এসে থামে। রেগে থাকায় আরুশি গাড়িটার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে হঠাৎ কাউকে দেখে থেমে যায়।
জানালা খুলে রাইয়্যান মুখ বের করেছে।

–আপনিইই এখানে,

–গাড়িতে উঠো,

–কেন?

–বাসায় যাবে না।

–যাবো কিন্তু

–তারাতারি উঠো।

কি যেন ভেবে গাড়িতে উঠে বসে আরুশি।

–আপনাকে আমার সন্দেহ হচ্ছে অনেক আপনি আমার জন্য এতো কিছু কেন করছেন বলেন তো?

আচমকা আরুশির মুখে এমন কথা শুনে রাইয়্যান গাড়ি থামিয়ে অবাক হয়ে তাকালো আরুশির দিকে।

–কি হলো চমকে গেলেন নাকি?

–কি সব বলছো? আমি তোমার জন্য আবার কি করলাম?

— মিথ্যা বলে লাভ নাই। কাল রাতে আপনার আর আন্কেলের সব কথা আমি শুনেছি।

এটা শুনা মাএ রাইয়্যান ভয় পেয়ে যায়।সব শুনেছে মানে কি শুনেছে।

–কি শুনেছো?

আরুশি কাল চলে যাবার পর আবার ফিরে আসে এসে একটা কথায় ওর কানে যায় তাতে ও বুঝতে পারে এসব আন্কেল না রাইয়্যান করছে ওর জন্য কিন্তু কেন?

–এই যে কলেজে ভর্তি হওয়া এটা আপনার জন্য হচ্ছে। আন্কেলকে আপনি বলেছিলেন এটা শুনেছি।

–রাইয়্যান ভেবেছে আর ও কিছু শুনে উফফ একটা দম নিয়ে কিছু বলবে তার আগেই আরুশি বলে উঠে,

–কি হলো বলেন আপনি তো সব সময় ঝগড়া করেন এখন এতো কিছু করলেন যে।

–আমি ঝগড়া করি নাকি তুমি করো।

–আমি না আপনি করেন। নাহলে আমি কি কারো সাথে ঝগড়া করতে পারি।
আচ্ছা সেসব বাদ যার জন্যই করেন না কেন এটার জন্য আপনার কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। আমি যে আবার পড়ালেখা করবো এটা সত্যি সপ্নের মতো। আপনার জন্য সেটা ফিরে পেলাম থ্যাংকিউ সো ম্যাচ।

— শুধু থ্যাংকস দিলে হবে না।

–তাহলে আর কি বলেন।

— আমার সাথে ফ্রেন্ডশীপ করতে হবে।

–আপনি আমার ফ্রেন্ড হবেন।[ অবাক হয়ে এটা রাইয়্যান বলবে আরুশি ভাবে নি ভেবে ছে কঠিন কিছু। এতো নাম করা একজন কিনা আমার ফ্রেন্ড হবে।]

–হুম আগে যতবার দেখা হয়েছে আমাদের ঝগড়া হয়েছে হয় দোষ তোমার ছিলো না হলে……

কথার মাঝে থামিয়ে দিয়ে,
–আমার ছিলো না আপনার ছিলো। সব সময় আপনি আমাকে জামেলা দিয়েছেন।

–আবার আমার পুরো কথা না শুনে কথা বলো না প্লিজ তাহলে আবার ঝগড়া হবে।

–হুম বলেন।

–বলছিলাম হয় তোমার দোষ ছিলো না হয় আমার তাই সেসব ভুলে এখন থেকে আমরা আর ঝগড়া করবো না ফ্রেন্ডের মতো থাকবো কেমন?

— আচ্ছা।

বাসা ফিরে এসে। আরুশি ফ্রেশ হয়ে আগে আন্কেলের রুমে যায় তার সাথে দেখা করে।

রাতে খাবার খেয়ে সব কাজ শেষে আরুশি বসে আছে হঠাৎ রাইয়্যান রুমে ঢুকে হাত তার বই। সব এনে সামনের টেবিলের উপর রাখে।

–তোমার বই দেখো তো ঠিক আছে কিনা।

–বই এনেছেন।

–হ্যা না হলে পরবে কি ভাবে তাই বিকেলে আনতে গেছিলাম।

আনন্দে আরুশি কেদেঁ দেয়,,

— কাদঁছো কেন?

কাদঁতে কাদঁতে কথা বলতে পারছেনা।

–উফফ ঝগড়ুটে মেয়ের এতো কাদঁতে ও পারে।

— কান্নার রেশ কমিয়ে কান্নার মাঝেইবলে,

–আবার ঝগড়ুটেবলছেন তখন না বললেন আমরা ফ্রেন্ড ।

–হুম ফ্রেন্ড তো কিন্তু আমার ফ্রেন্ড তো খুব ঝগড়ুটে তার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করেছি কিন্তু তুমি তো কাদছো সে তো কাদে নি।

–তার মানে আমি ফ্রেন্ড না।

–কাদঁলে না।

–কাদঁবোই আমার কতো আনন্দ হচ্ছে জানেন তাই তো কাদছি।

— আনন্দে আবার কেউ কাদেঁ নাকি।

–আমি কাদিঁ আর কেউর টা জানি না। হূহ

–ভালো কান্না অফ করো। আর যাও পরো গিয়ে।

বলেই রাইয়্যান বেরিয়ে আসে।

আরুশি বইয়ের কাছে এসে হাত দিয়ে শুয়ে দিচ্ছে। তার সপ্ন সত্যি হবে সে নিজের পায়ে দাড়াতে পারবে। সব হচ্ছে রাইয়্যানের জন্য খুশি হয়ে রাইয়্যানের কথা একটু ভাবে।

তিনদিন পর।

বিকেলের দিকে আরুশি বাগানে আসে বেরাতে। রাইয়্যানের কথা শুনে আর আসে নি আজকে আবার এসেছে খুব টানে এই বাগানটা আরুশিকে। ফুল গুলো দেখছে হঠাৎ মনে হচ্ছে বাগানের পাতা নড়ছে ভেতরে কেউ আছে আরুশি এক পা একপা করে এগুতে থাকে আর যা দেখে তাতে চোখ বড় বড় হয়ে যায়।

জোপে জেসমিন আর একটা ছেলে হাত ধরে দাড়িয়ে আছে। আমাকে দেখেই দুজন হাত ছেড়ে দূরে সরে দাড়ায় সাথে চোখে মুখে ভয় দুজনের ই।

ছেলেটাকে চেনা লাগছে ও হ্যা রাইয়্যানের গার্ড।
আমি ওদের দিকে এগিয়ে গেলাম।

— এসব কি জেসমিন আপু।

ভয়ে কথা বলতে পারছে না। আমি তার কাছে গিয়ে কাধে হাত দিয়ে নির্ভয় দিয়ে বলতে বললাম।

–প্লিজ তুমি কাউকে বলো না।

–কি বলবো না।

–সাথে সাথে জেসমিন আপু আমার হাত আকড়ে ধরে বলতে লাগে, ছেলেটার নাম জুনায়েদ দুজন দুজনকে ভালোবাসা। এটা কেউ জানে না। আমি যেন ওদের একসাথে দেখেছি এটা কাউকে না বলি সাথে ক্ষমা চাইলো আমার সাথে খারাপ বিহেভ করেছে তার জন্য।

–আচ্ছা বলবো না কিন্তু এটা তো সবাইকে জানানো উচিত তাই না সবাই তো মেনে ও নিতে পারে।

–আমার খুব ভ য় করে যদি না মানে।

— না মানার কি আছে মানবে বলে তো দেখো।

পেছনে থেকে রাইয়্যানের ডাক কানে আসতেই ছেলেটা দৌড়ে পালায়।

–আরু এখানে কি করছো তোমাকে কখন থেকে খুজছি।

–এমনি আমি আর জেসমিন আপু বেরাচ্ছিলাম।

কেমন করে যেন জেসমিনের দিকে তাকায়।

–চলো

–কোথায়,

–আরে আসো তো।

বলেই হাত ধরে টেনে নিতে লাগে রাইয়্যান আরুশির হাত ধরেছে ও তো হা হয়ে হাতের দিকে তাকিয়ে আছে। এভাভবে টেনে নিচ্ছে কেন?

–হাত ছারুন এভাবে টেনে নিচ্ছে কেন?

–দরকার তাই তারাতারি চলো।

রুমে এনেই হাতে ফোন দেয়।

–কি করবো ফোন দিচ্ছেন কেন?

–ফোন দিয়ে মানুষ কি করে?

–কথা বলো।

–তাহলে বলো।

–কার সাথে?

–কানে নিয়ে দেখো।

হ্যালো বলতেই অপরপাশ থেকে মামার কন্ঠ পায় আরুশি।

–মামা তুমি?

–হ্যা মা কেমন আছো?

–ভালো মামা কিন্তু তুমি কিভাবে ফোন দিলে তুমি জানলে কি করে আমি এখানে আছি।

–সেসব পরে শুনিস এখন বল তোর কোন অসুবিধা হচ্ছে নাতো ওখানে।

–না কিন্তু

–সাবধানে থাকিস মা। রাখি তোর মামি আসছে।

বলেই ফোন কেটে দিলো।

–মামা আপনাকে ফোন দিলো কি ভাবে।

–সরি আরু না পরে বলবো।

বলেই বেরিয়ে গেল আমার মাথার উপর দিয়ে গেল সব। এখন আমি সিউর মামা জানে আমি এখানে আছি কিন্তু কিভাবে আর রাইয়্যান ই ফা মামাকে চিনে কিভাবে দূর কি বুঝতে পারছিনা।

রাতে

–আরু আসো ছাদে যাই?

–আপনি আগে বলেন মামাকে চিনলেন কি করে?

–ছাদে চলো।

-,ছাদে গেলে বলবেন।

–হুম

আরুশি খুশি হয়ে ছাদে যেতে রাজি হয়। দুজনে ছাদে আসে এসে শক দুজনেই সামনে জেসমিন আর জুনায়েদ একজন আরেকজনকে জরীয়ে ধরে আছে।

রাইয়্যান তো রেগে উঠে এসব দেখে কিছু বলতে যাবে আরুশি হাত আটকে ধরে।

–চলুন নিচে যাই।

–নাহ ছারো এসব কি হচ্ছে এখানে আমার জানতে হবে।

–আমার সাথে চলেন বলছি।

রাইয়্যান কে টেনে নিচে নিয়ে আসে আরুশি তারপর সব বলে। রাইয়্যান সব শুনে নিজেকে ঠান্ডা করে কারণে আরুশি সুন্দর করে বুঝিয়েছে। রাইয়্যান রেগেছিল কারণ জেসমিনকে ও বোনের মতো ভালোবাসে এতো দিন ধরে আছে এখানে হঠাৎ এসব দেখে রেগ উঠে গেছিলো ওর। মাঝখান থেকে আরুশির মামার কথাটা ভুলে গেল।

পরদিন

জেসমিন আর জুনায়েদ সবার সামনে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে।

চলবে❤

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here